You are currently viewing সূরা ফাতিহা সম্পর্কে শর্ট প্রশ্ন ও MCQ  সূরা ফাতিহা বাংলা উচ্চারণ
সূরা ফাতিহা বাংলা অর্থ

সূরা ফাতিহা সম্পর্কে শর্ট প্রশ্ন ও MCQ সূরা ফাতিহা বাংলা উচ্চারণ

সূরা ফাতিহা কুরআন মজিদের প্রথম সূরা এবং এটি একটি গুরুত্বপূর্ণ সূরা। এখানে সূরা ফাতিহার আলোকে কিছু শর্ট প্রশ্ন MCQ ও সূরা ফাতিহা বাংলা উচ্চারণ অর্থ  ব্যাখ্যা দেওয়া হলো:

সূরা ফাতিহা সম্পর্কে শর্ট প্রশ্ন ও উত্তর

প্রশ্ন ১: সূরা ফাতিহা কতটি আয়াত নিয়ে গঠিত?

উত্তর: সূরা ফাতিহা ৭টি আয়াত নিয়ে গঠিত।

প্রশ্ন ২: সূরা ফাতিহার অপর নাম কী?

উত্তর: সূরা ফাতিহার অপর নাম হলো “উম্মুল কিতাব” (কিতাবের মা) এবং “সাবউল মাছানি” (বারবার পঠিত সাত আয়াত)।

প্রশ্ন ৩: সূরা ফাতিহা কেন গুরুত্বপূর্ণ?

উত্তর: সূরা ফাতিহা গুরুত্বপূর্ণ কারণ এটি কুরআনের সারসংক্ষেপ এবং প্রতিটি নামাজের প্রতিটি রাকাতে এটি পাঠ করা obligatory (ফরজ)।

প্রশ্ন ৪: সূরা ফাতিহার প্রথম আয়াত কী?

উত্তর: সূরা ফাতিহার প্রথম আয়াত হলো:

بِسْمِ اللَّهِ الرَّحْمَٰنِ الرَّحِيمِ

(বিসমিল্লাহির রাহমানির রাহীম)

অর্থ: “পরম করুণাময় ও অসীম দয়ালু আল্লাহর নামে শুরু করছি।”

প্রশ্ন : সূরা ফাতিহায় আল্লাহর কোন কোন গুণবাচক নাম উল্লেখ আছে?

উত্তর: সূরা ফাতিহায় আল্লাহর গুণবাচক নামগুলো হলো:

১. الرَّحْمَٰن (আর-রাহমান) – পরম করুণাময়

২. الرَّحِيمِ (আর-রাহীম) – অসীম দয়ালু

৩. مَالِكِ يَوْمِ الدِّينِ (মালিকি ইয়াওমিদ্দীন) – বিচার দিনের মালিক

প্রশ্ন ৬: সূরা ফাতিহায় মানুষের কী ধরনের প্রার্থনা করা হয়েছে?

উত্তর: সূরা ফাতিহায় মানুষের প্রার্থনা করা হয়েছে:

১. হিদায়াত (সঠিক পথ)

২. সিরাতুল মুস্তাকীম (সরল পথ)

৩. আল্লাহর অনুগ্রহপ্রাপ্তদের পথ

৪. পথভ্রষ্ট ও গজবপ্রাপ্তদের পথ থেকে দূরে থাকার প্রার্থনা।

প্রশ্ন ৭: সূরা ফাতিহা কীভাবে নামাজের সাথে সম্পর্কিত?

উত্তর: সূরা ফাতিহা নামাজের একটি অপরিহার্য অংশ। প্রতিটি রাকাতে সূরা ফাতিহা পাঠ করা ফরজ। এটি ছাড়া নামাজ পূর্ণ হয় না।

প্রশ্ন ৮: সূরা ফাতিহার শেষ আয়াত কী?

উত্তর: সূরা ফাতিহার শেষ আয়াত হলো:

صِرَاطَ الَّذِينَ أَنْعَمْتَ عَلَيْهِمْ غَيْرِ الْمَغْضُوبِ عَلَيْهِمْ وَلَا الضَّالِّينَ

(সিরাতাল্লাজিনা আনআমতা আলাইহিম, গাইরিল মাগদুবি আলাইহিম ওয়ালাদ্দাল্লিন)

অর্থ: “তাদের পথ, যাদেরকে তুমি অনুগ্রহ দান করেছ, তাদের পথ নয়, যাদের উপর তোমার গজব নাযিল হয়েছে এবং যারা পথভ্রষ্ট হয়েছে।”

এই প্রশ্ন ও উত্তরগুলো সূরা ফাতিহার মৌলিক বিষয়গুলোর সাথে পরিচয় করিয়ে দেয়।

সূরা ফাতিহার উপর MCQ (বহুনির্বাচনী প্রশ্ন:

১. সূরা ফাতিহা কুরআনের কোন পারায় অবস্থিত?

– A) ১ম পারা

– B) ২য় পারা

– C) ৩য় পারা

– D) ৪র্থ পারা

উত্তর: A) ১ম পারা

২. সূরা ফাতিহার আয়াত সংখ্যা কত?

– A) ৫

– B) ৬

– C) ৭

– D) ৮

উত্তর: C) ৭

৩. সূরা ফাতিহার অপর নাম কী?

– A) সূরা ইখলাস

– B) উম্মুল কিতাব

– C) সূরা ইয়াসিন

– D) সূরা বাকারা

উত্তর: B) উম্মুল কিতাব

৪. সূরা ফাতিহার প্রথম আয়াত কী?

– A) الْحَمْدُ لِلَّهِ رَبِّ الْعَالَمِينَ

– B) بِسْمِ اللَّهِ الرَّحْمَٰنِ الرَّحِيمِ

– C) مَالِكِ يَوْمِ الدِّينِ

– D) إِيَّاكَ نَعْبُدُ وَإِيَّاكَ نَسْتَعِينُ

উত্তর: B) بِسْمِ اللَّهِ الرَّحْمَٰنِ الرَّحِيمِ

৫. সূরা ফাতিহায় আল্লাহর কোন গুণবাচক নাম উল্লেখ নেই?

– A) الرَّحْمَٰنِ (আর-রাহমান)

– B) الرَّحِيمِ (আর-রাহীম)

– C) الْعَزِيزُ (আল-আজিজ)

– D) مَالِكِ يَوْمِ الدِّينِ (মালিকি ইয়াওমিদ্দীন)

উত্তর: C) الْعَزِيزُ (আল-আজিজ)

৬. সূরা ফাতিহায় কোন পথের জন্য প্রার্থনা করা হয়েছে?

– A) সিরাতুল মুস্তাকীম

– B) সিরাতুল জাহান্নাম

– C) সিরাতুল জান্নাত

– D) সিরাতুল মুফলিহুন

উত্তর: A) সিরাতুল মুস্তাকীম

৭. সূরা ফাতিহার শেষ আয়াতে কার পথ থেকে দূরে থাকার প্রার্থনা করা হয়েছে?

– A) নবীদের

– B) ফেরেশতাদের

– C) গজবপ্রাপ্ত ও পথভ্রষ্টদের

– D) মুমিনদের

উত্তর: C) গজবপ্রাপ্ত ও পথভ্রষ্টদের

৮. সূরা ফাতিহা নামাজের কোন অংশে পাঠ করা হয়?

– A) কিয়াম

– B) রুকু

– C) সিজদা

– D) তাশাহহুদ

উত্তর: A) কিয়াম

৯. সূরা ফাতিহায় আল্লাহর কোন বিশেষণটি ব্যবহার করা হয়েছে?

– A) الْعَلِيمُ (আল-আলীম)

– B) الْقُدُّوسُ (আল-কুদ্দুস)

– C) الرَّحْمَٰنِ (আর-রাহমান)

– D) الْخَالِقُ (আল-খালিক)

উত্তর: C) الرَّحْمَٰنِ (আর-রাহমান)

১০. সূরা ফাতিহা কুরআনের কোন সূরার পরে নাযিল হয়েছে?

– A) সূরা ইখলাস

– B) সূরা আলাক

– C) সূরা বাকারা

– D) সূরা ফাতিহা প্রথম সূরা

উত্তর: B) সূরা আলাক

sura fatiha

এই MCQ প্রশ্নগুলো সূরা ফাতিহার মৌলিক বিষয়গুলোর উপর ভিত্তি করে তৈরি করা হয়েছে। এটি আপনাদের জন্য সহায়ক হতে পারে।

সূরা ফাতিহা (সূরাটি কুরআনের প্রথম সূরাহ) এর বাংলা উচ্চারণ নিম্নরূপ:

সূরা ফাতিহা বাংলা উচ্চারণ:

  1. বিসমিল্লাহির রাহমানির রাহীম।
  2. আলহামদু লিল্লাহি রাব্বিল আলামীন।
  3. আর-রাহমানির রাহীম।
  4. মালিকি ইয়াউমিদ্দীন।
  5. ইয়্যাকা না’বুদু ওয়া ইয়্যাকা নাসতাঈন।
  6. ইহদিনাস সিরাতাল মুস্তাকীম।
  7. সিরাতাল্লাযীনা আনআমতা আলাইহিম, গাইরিল মাগদূবি আলাইহিম ওয়ালাদ দাল্লীন।

সূরা ফাতিহা (sura fatiha ) আরবি :

بِسْمِ اللَّهِ الرَّحْمَٰنِ الرَّحِيمِ
الْحَمْدُ لِلَّهِ رَبِّ الْعَالَمِينَ
الرَّحْمَٰنِ الرَّحِيمِ
مَالِكِ يَوْمِ الدِّينِ
إِيَّاكَ نَعْبُدُ وَإِيَّاكَ نَسْتَعِينُ
اهْدِنَا الصِّرَاطَ الْمُسْتَقِيمَ
صِرَاطَ الَّذِينَ أَنْعَمْتَ عَلَيْهِمْ غَيْرِ الْمَغْضُوبِ عَلَيْهِمْ وَلَا الضَّالِّينَ

এই সূরাটি ইসলাম ধর্মের পবিত্র গ্রন্থ কুরআনের প্রথম সূরা এবং এটি প্রার্থনা ও ইবাদতের গুরুত্বপূর্ণ অংশ।

sura fatiha meaning

সূরা ফাতিহা বাংলা অর্থসহ:

  1. বিসমিল্লাহির রাহমানির রাহীম।
    অর্থ: শুরু করছি আল্লাহর নামে, যিনি পরম করুণাময় ও অতি দয়ালু।
  2. আলহামদু লিল্লাহি রাব্বিল আলামীন।
    অর্থ: সমস্ত প্রশংসা আল্লাহর জন্য, যিনি সমস্ত বিশ্বজগতের পালনকর্তা।
  3. আর-রাহমানির রাহীম।
    অর্থ: যিনি পরম করুণাময় ও অতি দয়ালু।
  4. মালিকি ইয়াউমিদ্দীন।
    অর্থ: যিনি বিচার দিনের মালিক।
  5. ইয়্যাকা না’বুদু ওয়া ইয়্যাকা নাসতাঈন।
    অর্থ: আমরা শুধু তোমারই ইবাদত করি এবং শুধু তোমার কাছেই সাহায্য চাই।
  6. ইহদিনাস সিরাতাল মুস্তাকীম।
    অর্থ: আমাদেরকে সরল পথ দেখাও।
  7. সিরাতাল্লাযীনা আনআমতা আলাইহিম, গাইরিল মাগদূবি আলাইহিম ওয়ালাদ দাল্লীন।
    অর্থ: তাদের পথ, যাদেরকে তুমি নেয়ামত দান করেছ, তাদের পথ নয়, যাদের উপর তোমার গজব নাজিল হয়েছে এবং যারা পথভ্রষ্ট হয়েছে।

সূরা ফাতিহা ইসলাম ধর্মে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। এটি কুরআনের প্রথম সূরা এবং প্রতিদিনের নামাজে এটি পাঠ করা হয়। এটি আল্লাহর প্রশংসা, তাঁর কাছে সাহায্য প্রার্থনা এবং সঠিক পথের দিশা চাওয়ার একটি প্রার্থনা।

সূরা ফাতিহার ব্যাখ্যা:

সূরা ফাতিহা কুরআনের প্রথম সূরা এবং এটি ইসলামে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। এটি “উম্মুল কিতাব” (কিতাবের মা) বা “সাবউল মাছানী” (বারবার পঠিত সাত আয়াত) নামেও পরিচিত। এই সূরাটি নামাজের প্রতিটি রাকাতে পাঠ করা হয়, যা এর গুরুত্বকে আরও বৃদ্ধি করে। সূরা ফাতিহার আয়াতগুলোর গভীর অর্থ ও ব্যাখ্যা নিম্নরূপ:

১. বিসমিল্লাহির রাহমানির রাহীম।

  • অর্থ: শুরু করছি আল্লাহর নামে, যিনি পরম করুণাময় ও অতি দয়ালু।
  • ব্যাখ্যা: এই আয়াতটি আল্লাহর নামে শুরু করার মাধ্যমে তাঁর প্রতি সম্মান ও নির্ভরতা প্রকাশ করা হয়। “রাহমান” ও “রাহীম” শব্দ দুটি আল্লাহর অসীম করুণা ও দয়ার প্রতীক। “রাহমান” অর্থ তিনি সমস্ত সৃষ্টির জন্য করুণাময়, আর “রাহীম” অর্থ তিনি বিশেষভাবে মুমিনদের প্রতি দয়ালু।

২. আলহামদু লিল্লাহি রাব্বিল আলামীন।

  • অর্থ: সমস্ত প্রশংসা আল্লাহর জন্য, যিনি সমস্ত বিশ্বজগতের পালনকর্তা।
  • ব্যাখ্যা: এই আয়াতে আল্লাহর প্রতি কৃতজ্ঞতা ও প্রশংসা প্রকাশ করা হয়েছে। তিনি সমগ্র সৃষ্টিজগতের রব (পালনকর্তা), যিনি সবকিছুর দেখাশোনা করেন এবং সকলের প্রয়োজন পূরণ করেন।

৩. আর-রাহমানির রাহীম।

  • অর্থ: যিনি পরম করুণাময় ও অতি দয়ালু।
  • ব্যাখ্যা: এই আয়াতে আল্লাহর করুণা ও দয়ার পুনরুল্লেখ করা হয়েছে। এটি বান্দাদের মনে এই বিশ্বাস জাগ্রত করে যে, আল্লাহর করুণা ও দয়া সর্বত্র বিদ্যমান।

৪. মালিকি ইয়াউমিদ্দীন।

  • অর্থ: যিনি বিচার দিনের মালিক।
  • ব্যাখ্যা: এই আয়াতে আল্লাহর সার্বভৌমত্ব ও ক্ষমতার কথা বলা হয়েছে। তিনি কিয়ামত দিনের একমাত্র মালিক, যেদিন সকল মানুষ তাদের কাজের হিসাব দেবে।

৫. ইয়্যাকা না’বুদু ওয়া ইয়্যাকা নাসতাঈন।

  • অর্থ: আমরা শুধু তোমারই ইবাদত করি এবং শুধু তোমার কাছেই সাহায্য চাই।
  • ব্যাখ্যা: এই আয়াতে তাওহিদের (একত্ববাদের) ঘোষণা রয়েছে। আমরা শুধুমাত্র আল্লাহর ইবাদত করি এবং শুধুমাত্র তাঁর কাছেই সাহায্য প্রার্থনা করি। এটি শিরক (আল্লাহর সাথে অন্যকে অংশীদার করা) থেকে মুক্তির ঘোষণা।

৬. ইহদিনাস সিরাতাল মুস্তাকীম।

  • অর্থ: আমাদেরকে সরল পথ দেখাও।
  • ব্যাখ্যা: এই আয়াতে আল্লাহর কাছে সঠিক পথের দিশা চাওয়া হয়েছে। “সিরাতাল মুস্তাকীম” হলো সত্য ও ন্যায়ের পথ, যা আল্লাহর সন্তুষ্টির দিকে নিয়ে যায়।

৭. সিরাতাল্লাযীনা আনআমতা আলাইহিম, গাইরিল মাগদূবি আলাইহিম ওয়ালাদ দাল্লীন।

  • অর্থ: তাদের পথ, যাদেরকে তুমি নেয়ামত দান করেছ, তাদের পথ নয়, যাদের উপর তোমার গজব নাজিল হয়েছে এবং যারা পথভ্রষ্ট হয়েছে।
  • ব্যাখ্যা: এই আয়াতে দুটি বিষয় উল্লেখ করা হয়েছে:
    1. নেয়ামতপ্রাপ্তদের পথ: এরা হলো নবী, সিদ্দীক, শাহিদ ও সৎকর্মশীলরা।
    2. গজবপ্রাপ্ত পথভ্রষ্টদের পথ থেকে দূরে থাকা: এরা হলো যারা আল্লাহর আদেশ অমান্য করে এবং সত্য থেকে বিচ্যুত হয়।

সূরা ফাতিহার শিক্ষা:

  1. আল্লাহর একত্ববাদ: এই সূরায় আল্লাহর একত্ববাদ, তাঁর করুণা ও ক্ষমতার কথা বারবার উল্লেখ করা হয়েছে।
  2. ইবাদত সাহায্য প্রার্থনা: শুধুমাত্র আল্লাহর ইবাদত এবং তাঁর কাছেই সাহায্য চাওয়ার শিক্ষা দেওয়া হয়েছে।
  3. সঠিক পথের দিশা: আল্লাহর কাছে সঠিক পথ চাওয়ার মাধ্যমে জীবনের প্রতিটি ক্ষেত্রে তাঁর নির্দেশনা অনুসরণের গুরুত্ব প্রকাশ পায়।
  4. জীবনের লক্ষ্য: এই সূরায় মানুষের জীবনের মূল লক্ষ্য হলো আল্লাহর সন্তুষ্টি অর্জন এবং তাঁর দেওয়া পথে চলা।

সূরা ফাতিহা কুরআনের একটি সংক্ষিপ্ত সারাংশ, যা মানুষের জীবনের সকল দিকনির্দেশনা প্রদান করে। এটি আল্লাহর সাথে বান্দার সম্পর্ককে মজবুত করে এবং সঠিক পথের সন্ধান দেয়।

সূরা ফাতিহার ফজিলত

সূরা ফাতিহার ফজিলত (মাহাত্ম্য গুরুত্ব):

সূরা ফাতিহা ইসলামে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ এবং এর অনেক ফজিলত রয়েছে। এটি কুরআনের প্রথম সূরা এবং নামাজের প্রতিটি রাকাতে পাঠ করা হয়। নিম্নে সূরা ফাতিহার কিছু ফজিলত উল্লেখ করা হলো:

১. কুরআনের সর্বশ্রেষ্ঠ সূরা:

  • রাসূলুল্লাহ (সা.) বলেছেন,
    সূরা ফাতিহা হল কুরআনের সর্বশ্রেষ্ঠ সূরা।” (সহিহ বুখারী)
    এটি কুরআনের একটি সারাংশ, যা আল্লাহর প্রশংসা, তাঁর ইবাদত ও সাহায্য প্রার্থনা এবং সঠিক পথের দিশা চাওয়ার শিক্ষা দেয়।

২. নামাজের অপরিহার্য অংশ:

  • সূরা ফাতিহা নামাজের প্রতিটি রাকাতে পাঠ করা হয়। রাসূলুল্লাহ (সা.) বলেছেন,
    যে ব্যক্তি সূরা ফাতিহা ছাড়া নামাজ পড়ে, তার নামাজ পূর্ণ হয় না।” (সহিহ বুখারী ও মুসলিম)
    এটি নামাজের একটি মূল স্তম্ভ।

৩. আল্লাহ বান্দার মধ্যে কথোপকথন:

  • রাসূলুল্লাহ (সা.) বলেছেন,
    আল্লাহ বলেন, ‘আমি নামাজকে আমার আমার বান্দার মধ্যে দুই ভাগে ভাগ করেছি। বান্দার জন্য আছে সে যা চায়।’ যখন বান্দা বলে, ‘আলহামদু লিল্লাহি রাব্বিল আলামীন’, আল্লাহ বলেন, ‘আমার বান্দা আমার প্রশংসা করল।’ যখন বান্দা বলে, ‘আর-রাহমানির রাহীম’, আল্লাহ বলেন, ‘আমার বান্দা আমার গুণবর্ণনা করল।’ যখন বান্দা বলে, ‘মালিকি ইয়াউমিদ্দীন’, আল্লাহ বলেন, ‘আমার বান্দা আমার মর্যাদা বর্ণনা করল।’ যখন বান্দা বলে, ‘ইয়্যাকা না’বুদু ওয়া ইয়্যাকা নাসতাঈন’, আল্লাহ বলেন, ‘এটি আমার আমার বান্দার মধ্যে। আমার বান্দার জন্য আছে সে যা চায়।’ যখন বান্দা বলে, ‘ইহদিনাস সিরাতাল মুস্তাকীম…’, আল্লাহ বলেন, ‘এটি আমার বান্দার জন্য। আমার বান্দার জন্য আছে সে যা চায়।'” (সহিহ মুসলিম)
    এই হাদিসে সূরা ফাতিহার মাধ্যমে আল্লাহ ও বান্দার মধ্যে একটি বিশেষ সম্পর্কের কথা বর্ণনা করা হয়েছে।

৪. রোগ নিরাময়ের উপায়:

  • সূরা ফাতিহা রোগ নিরাময়ের জন্য পাঠ করা হয়। রাসূলুল্লাহ (সা.) একবার এক সাহাবিকে সূরা ফাতিহা পড়ে ফুঁক দেওয়ার নির্দেশ দিয়েছিলেন, যাতে তার রোগ সেরে যায়। (সহিহ বুখারী ও মুসলিম)
    এটি রুকইয়াহ (আল্লাহর নামে ঝাড়ফুঁক) হিসেবে ব্যবহৃত হয়।

৫. জিন শয়তানের ক্ষতি থেকে রক্ষা:

  • সূরা ফাতিহা পাঠ করলে জিন ও শয়তানের ক্ষতি থেকে রক্ষা পাওয়া যায়। এটি একটি শক্তিশালী দুআ, যা নেগেটিভ শক্তি থেকে মুক্তি দেয়।

৬. আল্লাহর নেয়ামত রহমত লাভ:

  • সূরা ফাতিহা পাঠ করলে আল্লাহর নেয়ামত ও রহমত লাভ করা যায়। এটি আল্লাহর কাছে গ্রহণযোগ্য একটি প্রার্থনা, যা বান্দার জীবনে বরকত ও শান্তি আনে।

৭. কিয়ামতের দিন বিশেষ মর্যাদা:

  • সূরা ফাতিহা পাঠকারীকে কিয়ামতের দিন বিশেষ মর্যাদা দেওয়া হবে। রাসূলুল্লাহ (সা.) বলেছেন,
    কিয়ামতের দিন আল্লাহ সূরা ফাতিহা পাঠকারীকে বলবেন, ‘তুমি আমার কাছে যা চেয়েছ, তা পাবে। তুমি আমার কাছে যা প্রার্থনা করেছ, তা দান করব।'”

৮. আত্মশুদ্ধি আধ্যাত্মিক উন্নতি:

  • সূরা ফাতিহা পাঠ করলে আত্মশুদ্ধি ও আধ্যাত্মিক উন্নতি হয়। এটি মানুষের মনকে পবিত্র করে এবং আল্লাহর নৈকট্য অর্জনে সাহায্য করে।

৯. দুঃখ-কষ্ট বিপদ থেকে মুক্তি:

  • সূরা ফাতিহা পাঠ করলে দুঃখ-কষ্ট ও বিপদ থেকে মুক্তি পাওয়া যায়। এটি একটি শক্তিশালী দুআ, যা মানসিক ও শারীরিক কষ্ট দূর করে।

১০. কুরআনের সাথে সম্পর্ক বৃদ্ধি:

  • সূরা ফাতিহা কুরআনের সাথে মানুষের সম্পর্ক গড়ে তোলে। এটি কুরআন তিলাওয়াতের শুরু এবং এর মাধ্যমে কুরআনের গভীর জ্ঞান অর্জনের পথ সুগম হয়।

Transliteration (for pronunciation):

  1. Bismillāhir-Raḥmānir-Raḥīm
  2. Al-ḥamdu lillāhi Rabbil-‘ālamīn
  3. Ar-Raḥmānir-Raḥīm
  4. Māliki yawmid-dīn
  5. Iyyāka na‘budu wa iyyāka nasta‘īn
  6. Ihdināṣ-ṣirāṭal-mustaqīm
  7. Ṣirāṭal-ladhīna an‘amta ‘alayhim ghayril-maghḍūbi ‘alayhim wa laḍ-ḍāllīn

English Translation:

  1. In the name of Allah, the Most Gracious, the Most Merciful.
  2. Praise be to Allah, the Lord of all the worlds.
  3. The Most Gracious, the Most Merciful.
  4. Master of the Day of Judgment.
  5. You alone we worship, and You alone we ask for help.
  6. Guide us to the straight path.
  7. The path of those whom You have favored, not of those who have earned Your anger, nor of those who have gone astray.

Surah Al-Fatiha is the opening chapter of the Quran and is recited in every unit of the Muslim prayer (Salah). It holds immense spiritual and religious significance in Islam.

শেষ কথা:

সূরা ফাতিহা ইসলামে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ এবং এর ফজিলত অপরিসীম। এটি নামাজের অপরিহার্য অংশ, আল্লাহর নৈকট্য অর্জনের মাধ্যম, রোগ নিরাময়ের উপায় এবং আত্মশুদ্ধির পথ। প্রতিদিন সূরা ফাতিহা পাঠ করে একজন মুমিন আল্লাহর রহমত ও বরকত লাভ করতে পারে।