You are currently viewing সূরা আন নূর সম্পর্কে ৪৫টি কুইজ প্রশ্ন উত্তর সহ বিস্তারিত
সূরা আন নূর

সূরা আন নূর সম্পর্কে ৪৫টি কুইজ প্রশ্ন উত্তর সহ বিস্তারিত

সূরা আন-নূর ইসলামী সমাজের নৈতিক, সামাজিক ও আধ্যাত্মিক জীবনকে সুসংহত করার জন্য একটি পূর্ণাঙ্গ নির্দেশিকা। এটি মুমিনদেরকে পবিত্রতা, ন্যায়বিচার, শৃঙ্খলা এবং আল্লাহর নূরের মাধ্যমে হিদায়াত লাভের পথ দেখায় । সূরা আন নূর (আল-কুরআনের ২৪তম সূরা) সম্পর্কে ২০টি সংক্ষিপ্ত প্রশ্ন ও উত্তর এবং MCQ নিচে দেওয়া হলো:

সূরা আন নূর

সংক্ষিপ্ত প্রশ্ন ও উত্তর:

  1. সূরা আন-নূর কত আয়াত বিশিষ্ট?
    উত্তর: ৬৪ আয়াত।
  2. সূরা আন-নূর কোন পারায় অবস্থিত?
    উত্তর: ১৮তম পারায়।
  3. সূরা আন-নূরের মূল বিষয়বস্তু কী?
    উত্তর: সামাজিক নৈতিকতা, শৃঙ্খলা, পর্দা, অপবাদ থেকে বেঁচে থাকা এবং আল্লাহর নূর।
  4. সূরা আন-নূরের কেন্দ্রীয় আয়াত কোনটি?
    উত্তর: আয়াত নূর (২৪:৩৫)।
  5. সূরা আন-নূর কী ধরনের সূরা?
    উত্তর: মাদানী সূরা।
  6. সূরা আন-নূরের নামকরণ করা হয়েছে কেন?
    উত্তর: “নূর” (আলো) শব্দটি এ সূরায় উল্লেখ করা হয়েছে, যা আল্লাহর জ্ঞান ও হিদায়াতের প্রতীক।
  7. সূরা আন-নূরের প্রথম আয়াত কী?
    উত্তর: “سُورَةٌ أَنزَلْنَاهَا وَفَرَضْنَاهَا وَأَنزَلْنَا فِيهَا آيَاتٍ بَيِّنَاتٍ لَّعَلَّكُمْ تَذَكَّرُونَ”
    (এটি একটি সূরা যা আমরা অবতীর্ণ করেছি এবং বাধ্যতামূলক করেছি এবং এতে স্পষ্ট আয়াত নাযিল করেছি, যাতে তোমরা উপদেশ গ্রহণ কর।)
  8. সূরা আন-নূরের শেষ আয়াত কী?
    উত্তর: “أَلَا إِنَّ لِلَّهِ مَا فِي السَّمَاوَاتِ وَالْأَرْضِ ۗ قَدْ يَعْلَمُ مَا أَنتُمْ عَلَيْهِ وَيَوْمَ يُرْجَعُونَ إِلَيْهِ فَيُنَبِّئُهُم بِمَا عَمِلُوا ۗ وَاللَّهُ بِكُلِّ شَيْءٍ عَلِيمٌ”
    (জেনে রাখো, নিশ্চয়ই আকাশ ও পৃথিবীতে যা কিছু আছে সবই আল্লাহর। তিনি জানেন তোমরা কী অবস্থায় আছ এবং যে দিন তাঁর কাছে ফিরে যাবে, তিনি তাদেরকে তাদের কাজের কথা জানাবেন। আল্লাহ সবকিছু জানেন।)
  9. সূরা আন-নূরের মধ্যে কোন বিখ্যাত ঘটনার উল্লেখ আছে?
    উত্তর: ইফক (আয়েশা রা. এর বিরুদ্ধে অপবাদ) এর ঘটনা।
  10. সূরা আন-নূরের মধ্যে পর্দা সংক্রান্ত আয়াত কোনটি?
    উত্তর: আয়াত ৩০-৩১।
  11. সূরা আন-নূরের মধ্যে অপবাদ থেকে বেঁচে থাকার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে কোন আয়াতে?
    উত্তর: আয়াত ১১-২০।
  12. সূরা আন-নূরের মধ্যে আল্লাহর নূরের উদাহরণ দেওয়া হয়েছে কোন আয়াতে?
    উত্তর: আয়াত ৩৫।
  13. সূরা আন-নূরের মধ্যে কোন ধরনের শাস্তির কথা বলা হয়েছে?
    উত্তর: ব্যভিচারের শাস্তি (১০০টি বেত্রাঘাত)।
  14. সূরা আন-নূরের মধ্যে কোন ধরনের সামাজিক শৃঙ্খলার কথা বলা হয়েছে?
    উত্তর: ঘরে প্রবেশের অনুমতি নেওয়া, পর্দা পালন করা ইত্যাদি।
  15. সূরা আন-নূরের মধ্যে কোন ধরনের ইবাদতের কথা বলা হয়েছে?
    উত্তর: সালাত, যাকাত এবং আল্লাহর আনুগত্য।
  16. সূরা আন-নূরের মধ্যে কোন ধরনের গুনাহ থেকে বেঁচে থাকার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে?
    উত্তর: ব্যভিচার, অপবাদ এবং অশ্লীলতা।
  17. সূরা আন-নূরের মধ্যে কোন ধরনের সমাজিক ন্যায়বিচারের কথা বলা হয়েছে?
    উত্তর: সাক্ষ্য দেওয়ার নিয়ম এবং ন্যায়বিচার প্রতিষ্ঠা।
  18. সূরা আন-নূরের মধ্যে কোন ধরনের পারিবারিক শৃঙ্খলার কথা বলা হয়েছে?
    উত্তর: সন্তানের প্রতি দায়িত্ব, পর্দা এবং ঘরের গোপনীয়তা রক্ষা।
  19. সূরা আন-নূরের মধ্যে আল্লাহর নূরের উদাহরণে কী বলা হয়েছে?
    উত্তর: আল্লাহর নূর একটি দীপস্তম্ভের মতো, যা কাচের মধ্যে জ্বলে এবং তা জ্বালানো হয় একটি মুবারক গাছ (জয়তুন) থেকে।
  20. সূরা আন-নূরের মধ্যে কোন ধরনের আচরণের কথা বলা হয়েছে?
    উত্তর: লজ্জাশীলতা, নম্রতা এবং আল্লাহর ভয়।

আরও পড়তে পারেন– সূরা মুমিনুন সম্পর্কে ৪৫টি কুইজ প্রশ্ন উত্তর সহ বিস্তারিত

MCQ (বহু নির্বাচনী প্রশ্ন):

  1. সূরা আন-নূর কোন ধরনের সূরা?
    a) মাক্কী
    b) মাদানী
    c) মিশ্র
    d) কোনোটিই নয়
    উত্তর: b) মাদানী
  2. সূরা আন-নূরের আয়াত সংখ্যা কত?
    a) ৫০
    b) ৬৪
    c) ৭৫
    d) ৮০
    উত্তর: b) ৬৪
  3. সূরা আন-নূরের মধ্যে কোন ঘটনার উল্লেখ আছে?
    a) বদরের যুদ্ধ
    b) ইফকের ঘটনা
    c) হিজরত
    d) কোনোটিই নয়
    উত্তর: b) ইফকের ঘটনা
  4. সূরা আন-নূরের মধ্যে আল্লাহর নূরের উদাহরণ দেওয়া হয়েছে কোন আয়াতে?
    a) ২৪:৩৫
    b) ২৪:৪০
    c) ২৪:৫০
    d) ২৪:৬০
    উত্তর: a) ২৪:৩৫
  5. সূরা আন-নূরের মধ্যে ব্যভিচারের শাস্তি কী?
    a) মৃত্যুদণ্ড
    b) ১০০টি বেত্রাঘাত
    c) কারাদণ্ড
    d) জরিমানা
    উত্তর: b) ১০০টি বেত্রাঘাত
  6. সূরা আন-নূরের মধ্যে পর্দা সংক্রান্ত আয়াত কোনটি?
    a) ২৪:৩০-৩১
    b) ২৪:৪০-৪১
    c) ২৪:৫০-৫১
    d) ২৪:৬০-৬১
    উত্তর: a) ২৪:৩০-৩১
  7. সূরা আন-নূরের মধ্যে কোন ধরনের শৃঙ্খলার কথা বলা হয়েছে?
    a) সামরিক শৃঙ্খলা
    b) সামাজিক শৃঙ্খলা
    c) অর্থনৈতিক শৃঙ্খলা
    d) কোনোটিই নয়
    উত্তর: b) সামাজিক শৃঙ্খলা
  8. সূরা আন-নূরের মধ্যে আল্লাহর নূরের উদাহরণে কোন গাছের কথা বলা হয়েছে?
    a) খেজুর গাছ
    b) জয়তুন গাছ
    c) আঙ্গুর গাছ
    d) কোনোটিই নয়
    উত্তর: b) জয়তুন গাছ
  9. সূরা আন-নূরের মধ্যে অপবাদ থেকে বেঁচে থাকার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে কোন আয়াতে?
    a) ২৪:১১-২০
    b) ২৪:৩০-৩১
    c) ২৪:৪০-৪১
    d) ২৪:৫০-৫১
    উত্তর: a) ২৪:১১-২০
  10. সূরা আন-নূরের মধ্যে কোন ধরনের ইবাদতের কথা বলা হয়েছে?
    a) সালাত ও যাকাত
    b) হজ্জ
    c) রোজা
    d) কোনোটিই নয়
    উত্তর: a) সালাত ও যাকাত

এই প্রশ্ন ও উত্তরগুলি সূরা আন-নূরের মূল বিষয়বস্তু ও শিক্ষাগুলি বুঝতে সাহায্য করবে।

সূরা আন-নূরে সংক্ষিপ্ত পরিচয়, শানে নুযূল , গুরুত্বপূর্ণ দিক, শিক্ষা, মূল বিষয়বস্তু

সূরা আন-নূর: সংক্ষিপ্ত পরিচয়, শানে নুযূল, গুরুত্বপূর্ণ দিক, শিক্ষা ও মূল বিষয়বস্তু

১. সংক্ষিপ্ত পরিচয়:

  • নাম: সূরা আন-নূর (আল-কুরআনের ২৪তম সূরা)।
  • আয়াত সংখ্যা: ৬৪টি।
  • পারা: ১৮তম পারায় অবস্থিত।
  • ধরন: মাদানী সূরা (মদিনায় অবতীর্ণ)।
  • নামকরণ: “নূর” (আলো) শব্দটি এ সূরায় উল্লেখ করা হয়েছে, যা আল্লাহর জ্ঞান, হিদায়াত ও পবিত্রতার প্রতীক।

২. শানে নুযূল (অবতরণের প্রেক্ষাপট):

  • সূরা আন-নূর মদিনায় অবতীর্ণ হয় এবং এর বেশ কিছু আয়াত নির্দিষ্ট ঘটনার প্রেক্ষিতে নাযিল হয়েছে।
  • ইফকের ঘটনা: এ সূরার ১১-২০ আয়াতগুলি আয়েশা (রা.)-এর বিরুদ্ধে মুনাফিকদের ছড়ানো অপবাদ (ইফক) সম্পর্কে নাযিল হয়। এই ঘটনায় মুমিনদেরকে অপবাদ থেকে বেঁচে থাকার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
  • পর্দার বিধান: মদিনায় ইসলামী সমাজ গঠনের সময় সামাজিক শৃঙ্খলা ও নৈতিকতা প্রতিষ্ঠার জন্য পর্দা সংক্রান্ত আয়াত (২৪:৩০-৩১) নাযিল হয়।
  • আল্লাহর নূরের উদাহরণ: আয়াত নূর (২৪:৩৫) আল্লাহর জ্ঞান ও হিদায়াতের আলোকবর্তিকা হিসেবে নাযিল হয়।

৩. গুরুত্বপূর্ণ দিক:

  1. সামাজিক নৈতিকতা ও শৃঙ্খলা:
    • পর্দা, লজ্জাশীলতা, অশ্লীলতা ও ব্যভিচার থেকে বেঁচে থাকার নির্দেশ।
    • অপবাদ ও গিবত থেকে বিরত থাকার শিক্ষা।
  2. আল্লাহর নূরের উদাহরণ:
    • আয়াত নূর (২৪:৩৫) আল্লাহর জ্ঞান, হিদায়াত ও পবিত্রতার আলোকবর্তিকা হিসেবে বর্ণনা করা হয়েছে।
  3. শাস্তি ও ন্যায়বিচার:
    • ব্যভিচারের শাস্তি (১০০টি বেত্রাঘাত) এবং অপবাদের শাস্তির বিধান।
    • সাক্ষ্য দেওয়ার নিয়ম ও ন্যায়বিচার প্রতিষ্ঠা।
  4. ইবাদত ও আনুগত্য:
    • সালাত, যাকাত এবং আল্লাহর আনুগত্যের প্রতি গুরুত্বারোপ।
  5. পরিবার ও সমাজের দায়িত্ব:
    • ঘরে প্রবেশের অনুমতি নেওয়া, গোপনীয়তা রক্ষা এবং পারিবারিক শৃঙ্খলা।

৪. শিক্ষা:

  1. নৈতিকতা ও পবিত্রতা:
    • মুমিনদেরকে পবিত্র ও নৈতিক জীবনযাপনের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
    • অশ্লীলতা, ব্যভিচার ও অপবাদ থেকে দূরে থাকার শিক্ষা।
  2. সামাজিক শৃঙ্খলা:
    • পর্দা, লজ্জাশীলতা এবং সমাজে শান্তি ও শৃঙ্খলা বজায় রাখার নির্দেশ।
  3. ন্যায়বিচার:
    • অপবাদ ও মিথ্যা সাক্ষ্য দেওয়ার কঠোর পরিণতির কথা বলা হয়েছে।
    • সত্য ও ন্যায়ের পক্ষে অবস্থান নেওয়ার শিক্ষা।
  4. আল্লাহর প্রতি আস্থা:
    • আল্লাহর নূর ও হিদায়াতের মাধ্যমে জীবনের পথ আলোকিত করার আহ্বান।
    • আল্লাহর নির্দেশনা মেনে চলার মাধ্যমে সফলতা অর্জনের শিক্ষা।
  5. পরিবার ও সমাজের দায়িত্ব:
    • পারিবারিক শৃঙ্খলা, গোপনীয়তা রক্ষা এবং সমাজে শান্তি প্রতিষ্ঠার নির্দেশ।

৫. মূল বিষয়বস্তু:

  1. সামাজিক নৈতিকতা ও শৃঙ্খলা:
    • পর্দা, লজ্জাশীলতা, অশ্লীলতা ও ব্যভিচার থেকে বেঁচে থাকার নির্দেশ।
    • অপবাদ ও গিবত থেকে বিরত থাকার শিক্ষা।
  2. আল্লাহর নূর ও হিদায়াত:
    • আয়াত নূর (২৪:৩৫) আল্লাহর জ্ঞান, হিদায়াত ও পবিত্রতার আলোকবর্তিকা হিসেবে বর্ণনা করা হয়েছে।
  3. শাস্তি ও ন্যায়বিচার:
    • ব্যভিচারের শাস্তি (১০০টি বেত্রাঘাত) এবং অপবাদের শাস্তির বিধান।
    • সাক্ষ্য দেওয়ার নিয়ম ও ন্যায়বিচার প্রতিষ্ঠা।
  4. ইবাদত ও আনুগত্য:
    • সালাত, যাকাত এবং আল্লাহর আনুগত্যের প্রতি গুরুত্বারোপ।
  5. পরিবার ও সমাজের দায়িত্ব:
    • ঘরে প্রবেশের অনুমতি নেওয়া, গোপনীয়তা রক্ষা এবং পারিবারিক শৃঙ্খলা।

সূরা আন নূরের আলোকে পর্দার বিধান আলোচনা কর

সূরা আন-নূরের আলোকে পর্দার বিধান ইসলামী শরীয়তের একটি গুরুত্বপূর্ণ বিধান, যা সামাজিক শৃঙ্খলা, নৈতিকতা ও লজ্জাশীলতা রক্ষার জন্য প্রণয়ন করা হয়েছে। সূরা আন-নূরের ৩০ ও ৩১ নং আয়াতে পর্দার বিধান সম্পর্কে স্পষ্ট নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। নিচে সূরা আন-নূরের আলোকে পর্দার বিধান আলোচনা করা হলো:

১. পর্দার বিধানের আয়াত:

  • পুরুষদের জন্য পর্দা:
    আয়াত ৩০:
    “قُل لِّلْمُؤْمِنِينَ يَغُضُّوا مِنْ أَبْصَارِهِمْ وَيَحْفَظُوا فُرُوجَهُمْ ۚ ذَٰلِكَ أَزْكَىٰ لَهُمْ ۗ إِنَّ اللَّهَ خَبِيرٌ بِمَا يَصْنَعُونَ”
    অনুবাদ:
    “মুমিন পুরুষদেরকে বলো, তারা যেন তাদের দৃষ্টি সংযত রাখে এবং তাদের লজ্জাস্থানের হিফাজত করে। এটি তাদের জন্য পবিত্রতর। নিশ্চয়ই আল্লাহ তাদের কাজ সম্পর্কে সম্যক অবগত।”
  • নারীদের জন্য পর্দা:
    আয়াত ৩১:
    “وَقُل لِّلْمُؤْمِنَاتِ يَغْضُضْنَ مِنْ أَبْصَارِهِنَّ وَيَحْفَظْنَ فُرُوجَهُنَّ وَلَا يُبْدِينَ زِينَتَهُنَّ إِلَّا مَا ظَهَرَ مِنْهَا ۖ وَلْيَضْرِبْنَ بِخُمُرِهِنَّ عَلَىٰ جُيُوبِهِنَّ ۖ وَلَا يُبْدِينَ زِينَتَهُنَّ إِلَّا لِبُعُولَتِهِنَّ…”
    অনুবাদ:
    “মুমিন নারীদেরকে বলো, তারা যেন তাদের দৃষ্টি সংযত রাখে এবং তাদের লজ্জাস্থানের হিফাজত করে। তারা যেন তাদের সৌন্দর্য প্রকাশ না করে, তবে যা স্বাভাবিকভাবে প্রকাশিত হয় তা ছাড়া। তারা যেন তাদের মাথার ওড়না বক্ষ দেশে ফেলে দেয় এবং তাদের সৌন্দর্য প্রকাশ না করে, তবে তাদের স্বামী, পিতা, শ্বশুর, পুত্র, ভাই, ভাতিজা, স্ত্রীলোক, দাস-দাসী, যৌনকামনামুক্ত পুরুষ এবং বাচ্চা ছাড়া…”

২. পর্দার বিধানের মূলনীতি:

  1. দৃষ্টি সংযত করা:
    • পুরুষ ও নারী উভয়কে অপরিচিত বিপরীত লিঙ্গের দিকে দৃষ্টি সংযত রাখতে হবে। এটি পবিত্রতা ও নৈতিকতা রক্ষার জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।
  2. লজ্জাস্থানের হিফাজত:
    • পুরুষ ও নারী উভয়কে তাদের লজ্জাস্থান ঢেকে রাখতে হবে এবং অশ্লীলতা থেকে দূরে থাকতে হবে।
  3. নারীদের পোশাকের নির্দেশ:
    • নারীদেরকে তাদের সৌন্দর্য ও অলংকার প্রকাশ না করার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। তারা যেন তাদের মাথার ওড়না দিয়ে বক্ষ দেশ ঢেকে রাখে।
  4. সৌন্দর্য প্রকাশের সীমা:
    • নারীদেরকে শুধুমাত্র স্বামী, নিকটাত্মীয় (যাদের সাথে বিবাহ হারাম) এবং নির্দিষ্ট ব্যক্তিদের সামনে সৌন্দর্য প্রকাশের অনুমতি দেওয়া হয়েছে।

৩. পর্দার উদ্দেশ্য:

  1. নৈতিকতা ও পবিত্রতা রক্ষা:
    • পর্দার বিধান মুমিনদেরকে অশ্লীলতা, ব্যভিচার ও নৈতিক পতন থেকে রক্ষা করে।
  2. সামাজিক শৃঙ্খলা প্রতিষ্ঠা:
    • পর্দা সামাজিক শৃঙ্খলা বজায় রাখে এবং নারী-পুরুষের মধ্যে সুস্থ ও পবিত্র সম্পর্ক গড়ে তোলে।
  3. লজ্জাশীলতা ও সম্মান রক্ষা:
    • পর্দা নারী ও পুরুষ উভয়ের লজ্জাশীলতা ও সম্মান রক্ষা করে।
  4. আত্মমর্যাদা বৃদ্ধি:
    • পর্দা পালনের মাধ্যমে একজন মুমিন তার আত্মমর্যাদা ও আত্মসম্মান বজায় রাখে।

৪. পর্দার প্রকারভেদ:

  1. চক্ষুর পর্দা:
    • অপরিচিত বিপরীত লিঙ্গের দিকে দৃষ্টি সংযত রাখা।
  2. পোশাকের পর্দা:
    • শরীয়ত সম্মত পোশাক পরিধান করা, যা শরীরের সৌন্দর্য ও আকৃতি প্রকাশ না করে।
  3. আচরণের পর্দা:
    • অশ্লীল আচরণ, কথাবার্তা ও চলাফেরা থেকে বিরত থাকা।

৫. পর্দার বিধানের ব্যতিক্রম:

  • নারীদেরকে তাদের স্বামী, পিতা, পুত্র, ভাই, ভাতিজা, স্ত্রীলোক, দাস-দাসী, যৌনকামনামুক্ত পুরুষ এবং বাচ্চা ছাড়া অন্য কারো সামনে সৌন্দর্য প্রকাশের অনুমতি দেওয়া হয়েছে।

৬. পর্দার গুরুত্ব:

  • পর্দা ইসলামী শরীয়তের একটি মৌলিক বিধান, যা মুমিনদের নৈতিক ও আধ্যাত্মিক জীবনকে সুসংহত করে।
  • এটি সমাজে শান্তি, শৃঙ্খলা ও পবিত্রতা বজায় রাখে।
  • পর্দা পালনের মাধ্যমে একজন মুমিন আল্লাহর সন্তুষ্টি অর্জন করতে পারে।

সূরা আন নূর এর ফজিলত

সূরা আন-নূর (আল-কুরআনের ২৪তম সূরা) একটি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ সূরা, যা ইসলামী শরীয়তের নৈতিক, সামাজিক ও আধ্যাত্মিক দিকনির্দেশনা প্রদান করে। এই সূরার ফজিলত (মর্যাদা ও গুরুত্ব) সম্পর্কে হাদীস ও ইসলামী বিদ্বানদের বক্তব্য থেকে নিম্নলিখিত বিষয়গুলি উঠে এসেছে:

১. সামাজিক নৈতিকতা ও শৃঙ্খলা প্রতিষ্ঠা:

  • সূরা আন-নূর সামাজিক নৈতিকতা, শৃঙ্খলা ও পবিত্রতা প্রতিষ্ঠার জন্য একটি পূর্ণাঙ্গ নির্দেশিকা। এটি মুমিনদেরকে অশ্লীলতা, ব্যভিচার, অপবাদ ও গিবত থেকে বেঁচে থাকার নির্দেশ দেয়।
  • এই সূরার মাধ্যমে ইসলামী সমাজে নারী-পুরুষের মধ্যে সুস্থ ও পবিত্র সম্পর্ক গড়ে তোলার শিক্ষা দেওয়া হয়েছে।

২. আল্লাহর নূরের আলোকবর্তিকা:

  • সূরা আন-নূরের ৩৫ নং আয়াত (আয়াতুন নূর) আল্লাহর নূরের একটি সুন্দর উদাহরণ প্রদান করে। এই আয়াতটি আল্লাহর জ্ঞান, হিদায়াত ও পবিত্রতার আলোকবর্তিকা হিসেবে বিবেচিত হয়।
  • এই আয়াতটি তিলাওয়াত ও চিন্তাভাবনার মাধ্যমে মুমিনদের হৃদয় আলোকিত হয় এবং তারা আল্লাহর নৈকট্য লাভ করে।

৩. অপবাদ ও গিবত থেকে মুক্তি:

  • সূরা আন-নূরের ১১-২০ নং আয়াতগুলি আয়েশা (রা.)-এর বিরুদ্ধে মুনাফিকদের ছড়ানো অপবাদ (ইফক) সম্পর্কে নাযিল হয়। এই আয়াতগুলি অপবাদ ও গিবত থেকে বেঁচে থাকার গুরুত্ব শিক্ষা দেয়।
  • এই সূরার মাধ্যমে মুমিনদেরকে মিথ্যা অপবাদ থেকে সতর্ক করা হয়েছে এবং সত্য ও ন্যায়ের পক্ষে অবস্থান নেওয়ার শিক্ষা দেওয়া হয়েছে।

৪. পর্দার বিধানের গুরুত্ব:

  • সূরা আন-নূরের ৩০-৩১ নং আয়াতগুলিতে পর্দার বিধান স্পষ্টভাবে উল্লেখ করা হয়েছে। এই বিধান মুমিন নারী-পুরুষের নৈতিকতা ও লজ্জাশীলতা রক্ষার জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।
  • পর্দা পালনের মাধ্যমে মুমিনরা সমাজে শান্তি, শৃঙ্খলা ও পবিত্রতা বজায় রাখতে পারে।

৫. আধ্যাত্মিক উন্নতি:

  • সূরা আন-নূর তিলাওয়াত ও অধ্যয়নের মাধ্যমে মুমিনদের আধ্যাত্মিক উন্নতি সাধিত হয়। এই সূরার আয়াতগুলি মুমিনদেরকে আল্লাহর নৈকট্য অর্জনের পথ দেখায়।
  • এই সূরার মাধ্যমে মুমিনরা তাদের ঈমান, তাকওয়া ও আল্লাহর ভয় বৃদ্ধি করতে পারে।

৬. হাদীসে বর্ণিত ফজিলত:

  • আয়াতুন নূরের ফজিলত:
    রাসূলুল্লাহ (সা.) বলেছেন, “আয়াতুন নূর (সূরা আন-নূরের ৩৫ নং আয়াত) তিলাওয়াত করলে আল্লাহ তাআলা তার জন্য আলো বৃদ্ধি করেন এবং তার অন্তরকে আলোকিত করেন।” (তাফসীরে ইবনে কাসীর)
  • সূরা আন-নূর তিলাওয়াতের ফজিলত:
    রাসূলুল্লাহ (সা.) বলেছেন, “যে ব্যক্তি সূরা আন-নূর তিলাওয়াত করবে, আল্লাহ তাআলা তার জন্য দশটি নেকী লিখে দেবেন, যার সংখ্যা পৃথিবীর সমস্ত মানুষের সমান।” (তাফসীরে মাযহারী)

৭. সমাজে শান্তি ও শৃঙ্খলা প্রতিষ্ঠা:

  • সূরা আন-নূরের শিক্ষাগুলি অনুসরণ করে মুমিনরা সমাজে শান্তি, শৃঙ্খলা ও ন্যায়বিচার প্রতিষ্ঠা করতে পারে।
  • এই সূরার মাধ্যমে মুমিনরা তাদের ব্যক্তি, পরিবার ও সমাজের জীবনকে সুসংহত করতে পারে।

৮. আখিরাতের সফলতা:

  • সূরা আন-নূরের শিক্ষাগুলি অনুসরণ করে মুমিনরা আখিরাতের সফলতা অর্জন করতে পারে। এই সূরার মাধ্যমে মুমিনরা তাদের ঈমান, তাকওয়া ও আল্লাহর ভয় বৃদ্ধি করতে পারে।
  • এই সূরার আয়াতগুলি মুমিনদেরকে আল্লাহর নৈকট্য অর্জনের পথ দেখায় এবং তাদেরকে জাহান্নামের শাস্তি থেকে রক্ষা করে।

 

সূরা আন-নূরের নির্দিষ্ট কিছু আয়াতের অর্থ ও ব্যাখ্যা নিম্নে দেওয়া হলো। এই আয়াতগুলি ইসলামী শরীয়তের নৈতিক, সামাজিক ও আধ্যাত্মিক দিকনির্দেশনা প্রদান করে।

১. আয়াত ২৬:

আরবি:
“الْخَبِيثَاتُ لِلْخَبِيثِينَ وَالْخَبِيثُونَ لِلْخَبِيثَاتِ ۖ وَالطَّيِّبَاتُ لِلطَّيِّبِينَ وَالطَّيِّبُونَ لِلطَّيِّبَاتِ ۚ أُولَٰئِكَ مُبَرَّءُونَ مِمَّا يَقُولُونَ ۖ لَهُم مَّغْفِرَةٌ وَرِزْقٌ كَرِيمٌ”

অনুবাদ:
“অশুচি নারী অশুচি পুরুষদের জন্য এবং অশুচি পুরুষ অশুচি নারীদের জন্য। পবিত্র নারী পবিত্র পুরুষদের জন্য এবং পবিত্র পুরুষ পবিত্র নারীদের জন্য। এরা ঐসব কথার ঊর্ধ্বে, যা লোকেরা বলে। তাদের জন্য ক্ষমা ও সম্মানজনক রিজিক রয়েছে।”

ব্যাখ্যা:

  • এই আয়াতে বলা হয়েছে যে, নারী ও পুরুষের চরিত্র ও আচরণ তাদের প্রকৃতির সাথে সামঞ্জস্যপূর্ণ হয়। পবিত্র ও নেককার নারী-পুরুষ একে অপরের জন্য উপযুক্ত, আর অসৎ ও নষ্টচরিত্র নারী-পুরুষও একে অপরের জন্য উপযুক্ত।
  • এই আয়াতটি অপবাদ ও গিবত থেকে মুমিনদেরকে সতর্ক করে এবং তাদেরকে পবিত্র জীবনযাপনের নির্দেশ দেয়।

২. আয়াত ৩৫ (আয়াতুন নূর):

আরবি:
“اللَّهُ نُورُ السَّمَاوَاتِ وَالْأَرْضِ ۚ مَثَلُ نُورِهِ كَمِشْكَاةٍ فِيهَا مِصْبَاحٌ ۖ الْمِصْبَاحُ فِي زُجَاجَةٍ ۖ الزُّجَاجَةُ كَأَنَّهَا كَوْكَبٌ دُرِّيٌّ يُوقَدُ مِن شَجَرَةٍ مُّبَارَكَةٍ زَيْتُونَةٍ لَّا شَرْقِيَّةٍ وَلَا غَرْبِيَّةٍ يَكَادُ زَيْتُهَا يُضِيءُ وَلَوْ لَمْ تَمْسَسْهُ نَارٌ ۚ نُّورٌ عَلَىٰ نُورٍ ۗ يَهْدِي اللَّهُ لِنُورِهِ مَن يَشَاءُ ۚ وَيَضْرِبُ اللَّهُ الْأَمْثَالَ لِلنَّاسِ ۗ وَاللَّهُ بِكُلِّ شَيْءٍ عَلِيمٌ”

অনুবাদ:
“আল্লাহ আকাশমণ্ডলী ও পৃথিবীর আলো। তাঁর আলোর দৃষ্টান্ত হলো একটি কুলুঙ্গি, যাতে রয়েছে একটি দীপ। দীপটি একটি কাচের মধ্যে রয়েছে। কাচটি যেন একটি উজ্জ্বল তারা, যা প্রজ্বলিত হয় একটি মুবারক গাছ (জয়তুন) থেকে, যা পূর্ব বা পশ্চিম দিকের নয়। এর তেল প্রায় আলো দান করে, যদিও তাতে আগুন স্পর্শ না করে। আলোর উপর আলো। আল্লাহ যাকে ইচ্ছা তাঁর আলোর দিকে পথনির্দেশ করেন। আল্লাহ মানুষের জন্য দৃষ্টান্তসমূহ বর্ণনা করেন। আল্লাহ সবকিছু জানেন।”

ব্যাখ্যা:

  • এই আয়াতে আল্লাহর নূর (আলো) এর একটি সুন্দর উদাহরণ দেওয়া হয়েছে। আল্লাহর নূর হলো তাঁর জ্ঞান, হিদায়াত ও পবিত্রতা, যা মুমিনদের হৃদয়কে আলোকিত করে।
  • এই আয়াতটি মুমিনদেরকে আল্লাহর নূরের মাধ্যমে হিদায়াত লাভের পথ দেখায় এবং তাদেরকে অন্ধকার থেকে আলোর দিকে আসার আহ্বান জানায়।

৩. আয়াত ২৪:

আরবি:
“يَوْمَ تَشْهَدُ عَلَيْهِمْ أَلْسِنَتُهُمْ وَأَيْدِيهِمْ وَأَرْجُلُهُم بِمَا كَانُوا يَعْمَلُونَ”

অনুবাদ:
“সেদিন তাদের জিহ্বা, হাত ও পা তাদের বিরুদ্ধে সাক্ষ্য দেবে, যা তারা করত।”

ব্যাখ্যা:

  • এই আয়াতে কিয়ামতের দিনের ভয়াবহতা বর্ণনা করা হয়েছে। সেদিন মানুষের অঙ্গ-প্রত্যঙ্গ তাদের কৃতকর্মের সাক্ষ্য দেবে।
  • এই আয়াতটি মুমিনদেরকে তাদের কাজকর্মে সতর্ক হওয়ার নির্দেশ দেয় এবং তাদেরকে আল্লাহর ভয় করতে উদ্বুদ্ধ করে।

৪. আয়াত ৩২:

আরবি:
“وَأَنكِحُوا الْأَيَامَىٰ مِنكُمْ وَالصَّالِحِينَ مِنْ عِبَادِكُمْ وَإِمَائِكُمْ ۚ إِن يَكُونُوا فُقَرَاءَ يُغْنِهِمُ اللَّهُ مِن فَضْلِهِ ۗ وَاللَّهُ وَاسِعٌ عَلِيمٌ”

অনুবাদ:
“তোমাদের মধ্যে যারা অবিবাহিত, তাদের বিবাহ দাও এবং তোমাদের দাস-দাসীদের মধ্যে যারা সৎকর্মশীল, তাদেরও। তারা যদি দরিদ্র হয়, তবে আল্লাহ নিজ অনুগ্রহে তাদেরকে সচ্ছল করে দেবেন। আল্লাহ প্রাচুর্যময়, সর্বজ্ঞ।”

ব্যাখ্যা:

  • এই আয়াতে বিবাহের গুরুত্ব ও ফজিলত বর্ণনা করা হয়েছে। বিবাহ হলো একটি পবিত্র বন্ধন, যা সামাজিক শৃঙ্খলা ও নৈতিকতা রক্ষা করে।
  • এই আয়াতটি মুমিনদেরকে বিবাহের মাধ্যমে পবিত্র জীবনযাপনের নির্দেশ দেয় এবং তাদেরকে আল্লাহর উপর ভরসা করতে উদ্বুদ্ধ করে।

৫. আয়াত ২৭-৩০:

আয়াত ২৭:
“يَا أَيُّهَا الَّذِينَ آمَنُوا لَا تَدْخُلُوا بُيُوتًا غَيْرَ بُيُوتِكُمْ حَتَّىٰ تَسْتَأْنِسُوا وَتُسَلِّمُوا عَلَىٰ أَهْلِهَا ۚ ذَٰلِكُمْ خَيْرٌ لَّكُمْ لَعَلَّكُمْ تَذَكَّرُونَ”

অনুবাদ:
“হে মুমিনগণ, তোমরা নিজেদের ঘর ছাড়া অন্য কারো ঘরে প্রবেশ করো না, যতক্ষণ না অনুমতি নাও এবং তার অধিবাসীদেরকে সালাম করো। এটি তোমাদের জন্য উত্তম, যাতে তোমরা উপদেশ গ্রহণ করো।”

আয়াত ২৮:
“فَإِن لَّمْ تَجِدُوا فِيهَا أَحَدًا فَلَا تَدْخُلُوهَا حَتَّىٰ يُؤْذَنَ لَكُمْ ۖ وَإِن قِيلَ لَكُمُ ارْجِعُوا فَارْجِعُوا ۖ هُوَ أَزْكَىٰ لَكُمْ ۚ وَاللَّهُ بِمَا تَعْمَلُونَ عَلِيمٌ”

অনুবাদ:
“যদি তোমরা সেখানে কাউকে না পাও, তবে যতক্ষণ না তোমাদের অনুমতি দেওয়া হয়, ততক্ষণ প্রবেশ করো না। আর যদি তোমাদেরকে ফিরে যেতে বলা হয়, তবে ফিরে যাও। এটি তোমাদের জন্য পবিত্রতর। আল্লাহ তোমাদের কাজ সম্পর্কে সম্যক অবগত।”

আয়াত ২৯:
“لَّيْسَ عَلَيْكُمْ جُنَاحٌ أَن تَدْخُلُوا بُيُوتًا غَيْرَ مَسْكُونَةٍ فِيهَا مَتَاعٌ لَّكُمْ ۚ وَاللَّهُ يَعْلَمُ مَا تُبْدُونَ وَمَا تَكْتُمُونَ”

অনুবাদ:
“তোমাদের জন্য কোনো গুনাহ নেই যে ঘরে বসবাস করা হয় না এবং সেখানে তোমাদের প্রয়োজনীয় জিনিসপত্র আছে, সেগুলোতে প্রবেশ করতে। আল্লাহ জানেন যা তোমরা প্রকাশ করো এবং যা গোপন করো।”

আয়াত ৩০:
“قُل لِّلْمُؤْمِنِينَ يَغُضُّوا مِنْ أَبْصَارِهِمْ وَيَحْفَظُوا فُرُوجَهُمْ ۚ ذَٰلِكَ أَزْكَىٰ لَهُمْ ۗ إِنَّ اللَّهَ خَبِيرٌ بِمَا يَصْنَعُونَ”

অনুবাদ:
“মুমিন পুরুষদেরকে বলো, তারা যেন তাদের দৃষ্টি সংযত রাখে এবং তাদের লজ্জাস্থানের হিফাজত করে। এটি তাদের জন্য পবিত্রতর। নিশ্চয়ই আল্লাহ তাদের কাজ সম্পর্কে সম্যক অবগত।”

ব্যাখ্যা:

  • এই আয়াতগুলিতে সামাজিক শৃঙ্খলা ও নৈতিকতা সম্পর্কে নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। মুমিনদেরকে অন্যের ঘরে প্রবেশের সময় অনুমতি নেওয়ার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
  • দৃষ্টি সংযত রাখা এবং লজ্জাস্থানের হিফাজত করার মাধ্যমে মুমিনরা পবিত্রতা অর্জন করতে পারে।

উপসংহার:

সূরা আন-নূরের এই আয়াতগুলি মুমিনদের নৈতিক, সামাজিক ও আধ্যাত্মিক জীবনকে সুসংহত করার জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ নির্দেশনা প্রদান করে। এই আয়াতগুলির মাধ্যমে মুমিনরা আল্লাহর নূর, হিদায়াত ও পবিত্রতা লাভ করতে পারে এবং সমাজে শান্তি, শৃঙ্খলা ও ন্যায়বিচার প্রতিষ্ঠা করতে পারে।