বাংলা চলচিত্রের সাবেক জনপ্রিয় নায়ক, বিশিষ্ট সাংস্কৃতিক ব্যক্তিত্ব, বাংলাদেশ সংস্কৃতি কেন্দ্রের উপ-পরিচালক,সাহিত্য সংস্কৃতি কেন্দ্রের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি শেখ আবুল কাশেম মিঠুন ভাইয়ের ইন্তেকালের ৭টি বছর পূর্ণ হয়ে গেল । গত ২৫ ” ০৫ “২০১৫ ইং তিনি কলকাতায় চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যান। তিনি বাংলাদেশে ইসলামপন্থী চলচ্চিত্রের একমাত্র নায়ক, নাট্যকার ছিলেন।। শেখ আবুল কাশেম মিঠুন
মৃত্যুকালে শেখ মিঠুন স্ত্রী, মেয়ে, মা ও ভাইসহ অসংখ্য ভক্ত- গুণগ্রাহী রেখে গেছেন। তার গ্রামের বাড়ি
সাতক্ষীরার দরগাপুর গ্রামে। রাজধানী ঢাকার আদাবরে পরিবারসহ ভাড়া থাকতেন মরহুম মিঠুন ভাই।।
তিনি কিডনি ও হৃদরোগে ভুগছিলেন। সেখানে কার্ডিওলজি বিশেষজ্ঞ ডা: বিবি শুকলার
অধীনে তিনি চিকিৎসাধী ছিলেন। হে আল্লাহ ইসলামী আন্দোলনের নিবেদিত এই
দায়ীকে জান্নাতবাসী করো। আমিন!! শেখ আবুল কাশেম মিঠুন
মিঠুন ভাইয়ের সাথে প্রথম পরিচয়
২০০৯ ইং সনে আমার লেখা একটি উপন্যাসের সুত্র ধরে মিঠুন ভাইয়ের সাথে প্রথম পরিচয় হয় ”
উপন্যাসটি পাঠের পর কোনো একদিন রংপুর কম্পন শিল্পী গোষ্ঠীর সাবেক পরিচালক সানি ভাইয়ের সাথে কথা প্রসঙ্গে আমার বিষয়ে কথা উঠলে সানি ভাই তখুনি মুঠোফোনে আমার সাথে মিঠুন ভাইয়ের পরিচয় করিয়ে দেয় ”
পরিচয় ও কথা হয় প্রথম সেদিনই। তারপর ফোন নাম্বার আদানপ্রদান ‘
মিঠুন ভাই আমার উপন্যাসের গল্প ও থিম টা খুবই পছন্দ করেছিলেন বলে জানিয়েছিলেন ”
তিনি বলেছিলেন ‘মেরিন তোমার উপন্যাসটি সুন্দর ও শিক্ষনীয় গল্পে ফিল্মি স্টাইলে লেখা হয়েছে,
তোমার এই উপন্যাস টাকে নাট্যরূপ দিলে সুন্দর একটি ধারাবাহিক নাটক তৈরি করা সম্ভব ”
আরও পড়ুন– বিচিত্র জীবন—
টিভি নাটকের জন্য স্ক্রিপ্ট লেখার অভিজ্ঞতা আমার না থাকায় উনি আমাকে স্ক্রিপ্ট লেখা সম্পর্কে অভিজ্ঞতা অর্জনের পাশাপশি নাটক ও টেলিফ্লীম পরিচালনা ( Director) কোর্স করার পরামর্শ দিলে “” আমি গত ২০১০ ইং সনে বাংলাদেশ সংস্কৃতি কেন্দ্র থেকে ওনার পরিচালনায় টেলিফ্লিম ও নাটক পরিচালনা প্রশিক্ষণ ( Director) কোর্সে এ ভর্তি হই। (১ম ব্যাচ) এর স্টুডেন্ট থাকা অবস্থায় তার সাথে আমার যতেষ্ট আন্তরিকতার সৃষ্টি হয়েছিলো। কোর্স কমপ্লিট শেষে ফিরে আসার পর ফোনে তার সাথে প্রতি সপ্তাহে কমপক্ষে ২/১ বার কথা হতো।। তার শারীরিক অবস্থা সহ. চিন্তা ভাবনার অনেক কিছুই আমার সাথে সেয়ার হতো।।
তার হাজারো জ্ঞানগর্ভ আলোচনা ও আমাকে দেয়া উপদেশের মধ্যে একটি কথাই. আজ খুব বেশি মনে পড়ছে “”
উনি বলতেন, “” মেরিন, তুমি লেখালেখি কর, নাটক পরিচালনা কর কিংবা অভিনয় কর, এক কথায় এই সমাজ ও দেশের স্বার্থে যে কাজই করোনা কেন, তুমি কখনো মানুষের বাহবা পেতে ও এই সমাজের বুকে পরিচিত লাভের লোভে করবেনা।। তাহলে তোমার সমস্ত ভালো কাজগুলো আল্লাহর দরবারে কবুল হবেনা।।
পার্থিব লালসা থেকে সম্পূর্ণ রুপে দূরে থেকে ভালো কাজগুলো শুধুমাত্র আল্লাহর সন্তুষ্টির জন্য করবে।। তোমার কর্মের লক্ষ্য যদি হয় আল্লাহর সন্তুষ্টি তাহলে ইহকালে কিছু না পেলেও পরকালে তুমি তার যথার্থ পুরস্কার পাবে। কেননা আল্লাহ সবচেয়ে বড় ওয়াদা পালনকারী।
আসুন. আমরা সকলেই এই প্রয়াত ইসলামের সৈনিক শেখ আবুল কাশেম মিঠুন ভাইয়ের উপদেশ মেনে সকলে কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে আল্লাহর সন্তুষ্টির জন্য কাজ করে যাই।। আর ওনার এই মহামূল্যবান কথা কটি অন্যের মাঝে প্রচার করি।। কারণ একজন মৃত্যু ব্যক্তির ভালো কথা ও কাজকে অন্যের মাঝে প্রচার করলে যতজন মানবে ততজনের ভালো কর্মের ফলে সদগায়ে জারিয়া হয়ে ঐ মৃত্যু ব্যক্তির আমলনামায় জমা হবে।।
পরিশেষে আল্লাহর দরবারে এই দোয়া করছি “” হে রাহমানুর রাহিম, তুমি তোমার দ্বীনের খাদেম শেখ আবুল কাশেম মিঠুন ভাইকে তোমার জান্নাতুল ফেরদাউসের মেহমান করে নাও,, আমিন।।