You are currently viewing তরুণ কবি জবা ইয়াসমিন এর অসাধারণ ৭টি অনন্ত প্রেমের কবিতা
তরুণ কবি জবা ইয়াসমিন এর অসাধারণ ৭টি অনন্ত প্রেমের কবিতা

তরুণ কবি জবা ইয়াসমিন এর অসাধারণ ৭টি অনন্ত প্রেমের কবিতা

তরুণ কবি জবা ইয়াসমিন। জীবন-জগত, মানুষ, মানবতা প্রেম ভালোবাসা দিয়ে লিখেছেন বেশ কিছু অসাধারণ কবিতা। তার কবিতাগুলো পাঠকের হৃদয়ে রেখাপাত করে। পাঠকরে এবার উপহার দিলাম তার প্রেমের কবিতা। এই প্রেমের কবিতা কিংবা ভালোবাসার কবিতাগুলো নয় কোন নষ্ট প্রেমের কল্প কথা। এই প্রেম জীবনের প্রেম, মানবতার প্রেম, হৃদয়ের অনন্ত বেদনার প্রেম ।

ভালোবাসার কবিতা ।  একাকী বর্ষা

 

মুখর বর্ষণের একটি সন্ধ্যে এলে

তুমি এসো,বৃষ্টিভেজা ৩টি কদম্ব হাতে।

মৃদু বজ্রপাতে আমার শঙ্কিত অন্তে

একটু ভরসার হাত রেখো।

বুজে আসা চোখের পলকে ঝড়ে পড়ুক,

মুক্তোমালার মত স্বচ্ছ ধারা।

নহর খেলে যাক শুকনো পাতারা আজ,

আমি সিক্ত হবো মুক্ত মনে।

কল্পনার হাত ধরে চলো পার হোক

সারা বরষার বর্ষ মাস আমার……!!!

ভালোবাসার কবিতা । “নিরন্তর অভিলাষ”

 

তুমি হে প্রেমময়!

জাগিয়ো প্রেম তাই মম হৃদয়ে!

তব অনুরাগ শূন্য বাঁচার অভিপ্রায়-

নিঃশেষ হোক চিরতরে।

বানায়ো আমারে শ্রেষ্ঠ পূজারিনী!

তব প্রেমপূজায় দিবারাতি,

লুটায়ে পড়ি যেন সালাতের শিয়রে!

বিশ্বভবে যা কিছু সকলি

তুমিহীনা,আমি অনস্তিত্বের সাগরে ডুবি!

খুঁজে পাইনা কোন তল।

আলো আঁধারের নিষ্প্রভ খেলায়,

তব স্বীয় আলো তুমি জ্বেলে দিয়ো।

আলোকিত!

আমি আলোকিত,পাগল প্রেমিকা

হয়ে তব পানে ছুটে যেদিন তোমাকে পাই,

সে ক্ষণেই লিখে রেখো_

আমার অন্তিম মহাপ্রয়াণ।

নিজ ইশারায় দিয়ো সে অমিয় সুধা,

আমি এক নিঃশ্বাসে সবটুকু পান করে

মৃত্যু পিয়াস মিটিয়ে ফিরবো!

তোমার সংস্পর্শে,আমার প্রেম হোক ধন্য।

আমায় সে সময় দিয়ো,

যে অনুভবে আমি তোমার প্রেমে পাগল-

প্রিয়ারুপে পরিপূর্ণ হবো।

নিয়ে নিয়ো ওগো,

তখন আমায় তোমার করে নিয়ো!

আরও পড়ুন–খাদিজা ইয়াসমিন এর আধ্যাত্বিক প্রেমের ৫টি বাংলা কবিতা

 

প্রেমের কবিতা । “ফিরে এসো প্রিয়া”

 

তুমি প্রাণময় প্রিয়া তাই,

তোমাতে খুঁজে পাই প্রাণের উচ্ছলতা!

এ বেলায় তোমার বিহনে,

প্রাণহীন প্রান্তরে ভরাট শূন্যতায়,

অপেক্ষমাণ চোখজোড়া খোঁজে তোমায়!

দূরে জেনেও ভ্রম করে টানি কাছে,

কাছে টানি ওই দূরত্বরেখা!

সীমানার বাঁধে খেলি নিষেধের খেলা,

ছুঁই ছুঁই করে তবু না ছুঁয়ে,

তোমার ভ্রম স্পর্শেই কাটুক সারাবেলা!

ফেরার ক্ষণে প্রিয়া ফিরো তুমি,

আমার স্বপ্ন মুষ্ঠি করে।

পবন ও সুরে শুনিয়ে দিও কানে কানে,

আমি ফিরেছি প্রিয়ো,

ফিরেছি তোমার স্বপ্ন সত্যির আহবানে!

আরও পড়তে পারেন– একটি চিঠি ও অব্যক্ত কথা । আলানূর হোসাঈন

গভীর প্রেমের কবিতা – “আমিতো পারি”

 

যতটা ভালবাসতে পারি

তার থেকেও বেশী ভালবাসাটুকু লুকাতে পারি।

যতটা অভিমান করি

তার চেয়েও বেশী অভিমান দেখাতে পারি।

কখনো আবার চুপিসারে

বেজে যাওয়া কিছু অভিমানী সুর,

তুই কোন দিন ও শুনবিনা।

হিস্ হিস্ শব্দে থামিয়ে দেব ওকে,

যেন তোর অব্দি তা না পৌঁছায়।

আমিতো প্রতিটাক্ষনই হাসতে পারি!

ঠোঁটের কোণে আপনা থেকে আসা হাসিটুকু

আমার সাথে লুকোচুরি খেলতে চায়না।

তাই ওকে লুকাতে পারিনা।

আমি চাইলেই পারি

মিছে এক চিলতে অভিমানে অশ্রুতে বুক ভাসাতে।

তবে,

চোখের কোণে একবিন্দু কেন-

রাশি রাশি জলের বন্যা বইলেও

কৃত্রিমতার হাসির বাঁধ-

সে জলের কাছে অনেকটাই দূর্ভেদ্য।

জল গড়িয়ে গেলেও নিস্তব্ধতার সাধ্য নেই

হাসিটুকু ভেদ করে শব্দের ঝংকার তোলার।

হা হা হা!

ভুলতে না পারলেও-

পারি তোকে মনে না করতে।

মনে পড়লেও পারি-

তোকে কাছে না ডাকতে।

আর কি পারি জানিস?

ভুলে যাওয়ার অভিনয় করতে!

দেখেছিস কতোটা লুকাতে পারি আমি?

 

অনুকবিতা-

ফিরে আয় প্রিয়া এ বুকে,

ফিরে আয় ভালবাসার উষ্ণতা নিয়ে!

হিমবাহের প্রলেপ দিয়ে যা মুছে,

বুকের পাড়ের লোমশ বৃক্ষরাজি ছুঁয়ে।

 

অনন্ত প্রেমের কবিতা – “তুমি এসো প্রিয়”

 

প্রিয় তুমি এসো,

আমার একাকী বিকেলের শূন্য পথে,

যখন আমি হাঁটব এক পা দু-পা করে।

আমার হাতের কাশফুলটি,

ঘাসের পরে সাজিয়ে রাখবো,

তার শুভ্র আবেশে উচাটন মনে,

একাকী ক্ষণে এসো প্রিয়…

এসো প্রিয় সেই বাতাস হয়ে,

চুল উড়িয়ে পেছন ফিরে,

এক পলকের স্বপ্ন হয়ে,

তুমি এসো, শোনো মনের ডাক,

মুছে যাক এই একাকী বিকেলের ধূসর অভিশাপ।

এসো প্রিয়, এসো আমার হয়ে…!

ভালোবাসার কবিতা “অপরিবর্তিত প্রত্যাশা”

 

জীবনের কোন ঘনঘটায় দেখেছিনু তারে,

তা আজ ভাবিতেছি না আর।

না ভাবিয়া ও আর তার নিস্তার নাহি,

কিন্তু হায় শুন্য কেন আজি এই জনারণ্যে??

ভারাক্রান্ত,দূঃখ দূর্দশা উপেক্ষা করে,

চেয়েছিনু তোমায় এ জগৎ সংসারে।

জীবনের হাসি-কান্নায় তোমাকেও ডুবাতে চাই,

মন যে চাইনি ছাড়তে তোমায়।

আমার চাওয়া তোমার ও ছিল,

স্বার্থ ও ছিল তোমার।

তবে জানিনা কি ঝড়ে উবে গেল সে সব হায়!

জানিয়াছো তুমি গোলাপের মত কাঁটা না থাকিলেও-

আমার বাধার অভাব নাই।

তোমার জানার সব কি সত্যি ছিল?

তাহার বিচার করিব না আমি।

বোধ করি তাহার সাধ্য আমার নেই,

ইহা পবিত্র,ভালবাসায় তার মীমাংসা।

তবে,

শুধু ক্রোধ নয় দূ:খ কে ও জয় করিয়া-

তোমাকে ভালবাসিতে চায়।

হয়ত ভুল বললাম,

তোমার আমার ভালবাসায়-

আমার ক্রোধ আদৌ তুমি পাবেনা,

আর যা ছিলনা তা পাওয়ার সাধ্য তোমার নেই।

মোর এ সংসারে একদিন তোমায় ফিরতেই হবে,

ভয় নেই সেদিন ও সব আগের মতই পাবে,

তবে হারাবে মাঝখানে ফেলে যাওয়া দিনগুলো।

আফসোস হয়ত বাঁধা মানবেনা তোমার।

ফিরে পেতে চাইবে হারানো চাওয়া গুলো,

যা আর ধরা দেবেনা।

জানিনা আবার বিধাতার ইচ্ছায় কালের স্রোতে-

সব বিলীন ও হতে পারে।

তবে দেখেছো কি বিধাতার এই অবিচার?

আমার সম্মুখে তা আমি দেখিনাই,

তাই আজ ও ভালবাসি তোমায়…!

আরও পড়তে পারেন-চেতনা ব্যবসা, ধর্মব্যবসা ও রাজনীতি — আলানূর হোসাইন

প্রেমের কবিতা ।   “সেই আমি”

 

যেদিন আমাকে দেখেছিলে প্রভাতে,

সেদিন কি আমার হাতের কৃষ্ণচূড়া-

তোমার চোখে পড়েনি?

নাকি আজ তা মনে নেই?

আজ নাহয় সেই কৃষ্ণচূড়া ঝরে গেছে,

কিন্তু তাই বলে আমার মুখময়ে কৃষ্ণচূড়ার-

রক্তিম আভা তুমি খুঁজে পাচ্ছোনা?

আমি কি তবে নিঃশেষ হয়ে গেছি?

নাকি তোমার অনুসন্ধিৎসা আজ আর নেই,

না তা মোড় নিয়েছে অন্যদিকে?

বলবে কি আমায়?

দেখনা সেই আভা পাও কিনা খুঁজে,

হয়ত তোমার জন্য আজ ও-

সেই চিহ্ন রয়ে গেছে।

আমাতে খুঁজতে গিয়ে হতাশ হয়োনা,

তবে আমার ঠিকানা হবে অজানা,

দেখনা নিজেকে খুঁজে,

আমি আছি কিনা তোমার মাঝে!

আজতো তুমি নিজেকেই হারিয়েছ।

তাই আর তোমাকে ফেরানোর সাধ্য-

হয়তোবা আমার নেই।

তবুও, ভালবাসি তোমায়…!

 

Leave a Reply