You are currently viewing নারী কবিতা। মানুষ নই, আমি নারী। অভিশপ্ত সুশীল। অপয়া তুই
নারী কবিতা। মানুষ নই, আমি নারী। অভিশপ্ত সুশীল। অপয়া তুই

নারী কবিতা। মানুষ নই, আমি নারী। অভিশপ্ত সুশীল। অপয়া তুই

তরণ কবি জবা ইয়াসমিন এর চমৎকার চারটি নারী বিষায়ক কবিতা । প্রতিটি কবিতা একটি নতুন ভাবনার সৃষ্টি করে। নারী কবিতা নারীদের সাথে সমাজের কিছু আচরণের চিত্র তুলে ধরা হয়েছে। নারী কবিতা লিরিক্স

( নারী কবিতা ) মানুষ নই, আমি নারী

জবা ইয়াসমিন শাড়িতে নারী কবিতা

 

তোমাদের হিসেবী সংসারে মানুষ নই,আমি নারী!

সব শেষে পাওনার খাতা কষে কষে

আমার বেলায় সকল সুক্ষ হিসেবে__

অধিকার তাই শূন্যের কোঠায়!

লুটে নিয়ে সব,আমার কাছেই যত জারিচুরি,

কারন মানুষ নই,আমিতো বঞ্চিত নারী!

আমার শরীরের মাংসই কেবল-

উনুনের আগুনে পুড়ে পুড়ে ঝলসে যায়!

তোমাদের মত রক্ত আমার ঝরেনা,

উপচে উপচে পড়ে শুধু অসহায়ত্বের বারি!

কারন আমিতো আজ মানুষ নই,

আমি যে সেই অবলা নারী!

মায়ের গর্ভ হতে অঙ্কুরিত হবার আগেই

আমায় যে তোমরা ফের পুঁতে দিতে,

গেঁথে দিতে মৃত্তিকার অন্ধকার অতল গভীরে!

গুছিয়ে নিতে জিবন্ত শবের সারী!

কারন আমি ছিলাম না কোন মানবী,

ছিলাম এক অবহেলিত নারী!

কখনো আমার শোভা মিলেছিলো

তোমাদের নিন্দিত প্রমোদ সভায়,

তবু দুস্থিতি পুরাতে নন্দিত করেছিলে আমায়!

অবশেষে তোমরাই করেছো আবার-

ঘৃণিত সেই প্রতিতা উপাধিধারী!

কারন আমি নই অর্ধাঙ্গিনী,আমি নারী!

এতো প্রতিবাদী ঝড়েও আজো-

নুইয়ে পড়োনি তোমরা,হওনি বিধ্বস্ত!

নারীবাদীতার নামে মিথ্যে প্রহসন করে

আজো বলো নারীকে দিয়েছি সর্বস্ব!

পুরুষ হওনি তোমরা,রয়েছো আজো অত্যাচারী!

কারন মানুষ নই,আমি নারী!

আরও পড়তে পারেন–চলচ্চিত্রে মরুর দুলাল-আজিজ হাকিম

রাজবন্দীর চিঠি – রাজবন্দীর জবানবন্দী – কাজী নজরুল ইসলাম

বুবু ছিলেন আমার মা-মাহবুবা খন্দকার

(নারী কবিতা) অভিশপ্ত সুশীল

জবা ইয়াসমিনের নারীদের নিয়ে  আরেকটি দারুণ কবিতা অভিশপ্ত সুশীল ।  সমাজের মুখোশ পরা সুশীলরা নারীদের খারাপভাবে উপস্থাপন করে। যারা রুচিশীল পোশাক/ হিজাব পড়ে তাদেরকে তারা মনে করে গেঁয়ো ভুত। তাদেরকে মনে করে তারা সমাজের ভিন্ন প্রাণী । তাদেরকে মনে করা হয় অশিক্ষিত মুর্খ । তরুণ কবি জবা ইয়াসমিন সেই সব তথাকথিত সুশীলতে চিন্তাধারায় কুঠারাঘাত  করেছেন তার কবিতার মাধ্যমে।

“অভিশপ্ত সুশীল”

 

মেয়ে তুমি চেনো?

চেনো ওই সুশীল কে?

তুমি কি চিনবে!

তুমিতো গেঁয়ো ধুড়,

নিজেকে বস্তার মত বোরকায় মুড়ে রাখো!

চক্ষুদুটি কোন রকমে হোঁচট-

না খাওয়ার ভয়ে খুলে রাখো।

নির্বোধ মেয়ে!

তুমি কি শিক্ষিত হবেনা?

এখনো সেকেলেই রয়ে গেলে!

তুমি কি ভুলে গেছ-

নগ্ন আধুনিকা হবার লক্ষ্য নিয়েই তোমার জন্ম?

আমি নই,সুশীল তোমায় বলবে-

যখন,সৃষ্টিকর্তার আনুগত্যতা তোমায়-

মুড়ে দিবে নিরাপত্তার চাদরে।

ওই সুশীলকে চিনতে চাও?

তবে নিজেকে জঙ্গল দ্বারা আবৃত না করে-

বেরিয়ে এসো বাইরে।

নির্বোধ মেয়ে!

যখন তুমি আগুন হয়ে থাকবে আড়ালে,

ওই বারুদের সংস্পর্শ থেকে দূরে!

তখন সুশীল তোমায় টেনে এনে-

তার পুরুষালী হাতের করাল থাবায়

সরিয়ে দেবে তোমার আব্রুকে,

তোমার নারীত্ব নামক আগুন

আর,তোমায় ভোগকারী ভাইয়ের-

ওই লালসায় পরিপূর্ণ বারুদের মাঝখান হতে।

তোমার পর্দা সঙ্গোপনে ভক্ষন করবে সুশীল।

আর তখনই,

তোমার নারীত্বের আগুনের সংস্পর্শে-

জ্বলে উঠবে কুরুচির বারুদ।

সে বেলায়,

তোমার প্রজ্জলিত নারীত্বকে বাহবা দিয়ে-

সুশীল বলবে,

তুমি আধুনিকা!

তুমিই শিক্ষিতা!

দাড়াও মেয়ে,

সুশীলের অপার ক্ষমতা তুমি জানোনি।

যেদিন তুমি তোমার জলন্ত নারীত্বের প্রজ্জলিত শিখায়-

জ্বালিয়ে দেবে পুরুষের সাথে ওই পুরুষালী আধুনিকতা,

তখন সুশীলের যে হাত

তোমার প্রজ্জলিত নারীত্বকে দিয়েছিল বাহবা,

সেই হাতই তোমার দিকে ছুড়বে করাল থাবা।

বলবে, “মেয়ে তুই প্রতিতা!”

অবাক হচ্ছো?

তোমার বিকৃত সুশীল এ উপাধি দেওয়ার আগেই-

তোমার রবের নিষেধাজ্ঞা ছিল,

যেন তুমি ব্যভিচারিনী না হও।

সুশীল তো তোমায় আজ বলছে!

আমার রাসূল (সাঃ) কি তোমায় বলেনি?

“অচিরেই শেষ জামানার উম্মত মাঝে-

আগমন হবে যে রহস্যময়ী কামিনীর-

মস্তকে থাকবে উষ্টরূপ ঝুঁটি তার,

নগ্নপ্রায় হবে ক্ষুদ্র বিবসন গাত্র।

অভিশম্পাত করো তাদের,

যেহেতু তারা অভিশপ্ত।”

অভিশপ্ত এই উপাধি শুনে,

অট্টহাসির হুংকারে কম্পন তুলেছিলে-

খোদার ওই আরশে।

বলেছিলে,

ইহা নিতান্তই ধর্মান্ধতা!

ইসলাম বড্ড সেকেলে!

ইসলাম বড়ই বেয়াড়া!

তাই আব্রু ছেড়ে তুমি হয়েছিলে বেপরোয়া।

বেঁচোনা দুপাড়ের কলঙ্ক নিয়ে।

আবৃত হয়ে পর্দার আবরণে,

ফিরে এসো ইসলামের সুশীতল ছায়াতলে।

আব্রুর শুভ্রতায় শ্রেষ্ঠ রমনী হয়ে-

বেঁচে থাকবে তুমি চিরন্তন মহাকালে।

 

নারী তোমার বক্রতা শুধু সৃষ্টিতেই নয়,

স্তুতির ছলে বলা ঋজু বচনেও তুমি বক্র!

তোমাকে সুসাধ্য ভাবা সেতো পুরুষের

পরম্পরায় করা চিরন্তন এক ভ্রম!

মুখময়ে তোমার দেখাও যে সরলতার ছাপ,

তা কেবল-ই নিত্য করা এক ভনীতা!

তোমার চপলতায় ওষ্ঠে লুকাও বক্রহাসি,

অর্বাচিন পুরুষের চোখে তবু তুমি অবলা!

তোমার মায়ামন্ত্রে মুগ্ধ হয়ে বারবার,

নির্দ্বীধায় বশ্যতা স্বীকার করে প্রেমান্ধ পুরুষ!

মায়াবীনী এঁকেবেঁকে তুমি সহসা চলো যে পথে,

সে পথেও বন্ধুরতা পরাজয় মেনে নেয় নিজে!

ঋদ্ধতার পথে কন্টকশয্যা করার অভিপ্রায়

সেতো তোমার সহজাত মায়া খেলা!

হৃদ্যতা তুমি বোঝোনা হে মায়াবীনী!

হৃদয় নিঃড়ানো অনুরাগে তবু বক্র তুমি!

 

(নারী কবিতা) শর্বরী

জবা ইয়ামসিন

 

অপয়া তুই,

হানিস কেন নিস্তবদ্ধতা?

শঙ্কিত হৃদয় কি তোর কাঁপেনা?

তুই ছন্নছাড়া!

বাঁধিস বাসা নিশিতের বুকে।

বসত কি তোর চিরতরে?

কোলাহলের সে ক্ষন,

ফিরিয়ে দে,

না দিস তো নিস্তব্ধতা-

চিরতরে লিখে দে!

নীলাভ কষ্টটুকু ওকে-

আপন করে নেবে।

অন্দরমাঝে মিলিয়ে যাবে

ওদের আপন বর্ণ।

ফিরিয়ে দে শর্বরী…!

নারী কবিতা, নারী কবি , কবিতা, নারীদের কবিতা , nari Kobita , jaba easmin

নারী কবিতাগুলো ভালো লোগলে কমেন্টে অবশ্যই জানাবেন।  [gs-fb-comments]

Leave a Reply