You are currently viewing Quranic knowledge : সূরা আল বাকারা সম্পর্কিত প্রশ্ন ও উত্তর
Quranic knowledge : সূরা আল বাকারা সম্পর্কিত প্রশ্ন ও উত্তর

Quranic knowledge : সূরা আল বাকারা সম্পর্কিত প্রশ্ন ও উত্তর

সূরা আল বাকারা

প্রশ্ন ১) আল কুরআনের সবচেয়ে দীর্ঘতম সূরা কোনটি?

= সূরা আল বাকারা।

প্রশ্ন ২) সূরা আল বাকারায় কতটি আয়াত আছে?

= ২৮৬ টি আয়াত আছে।

প্রশ্ন ৩) ফুসতাতুল কুরআন (কুরআনের বসতি) বলা হয়?

= সূরা আল বাকারা।

প্রশ্ন ৪) কোন সূরায় কত নম্বর আয়াতে আয়াতুল কুরসি রয়েছে?

= সূরা আল বাকারা ২৫৫ (দুইশত পঞ্চান্ন) নং আয়াতে আয়াতুল কুরসি রয়েছে।

প্রশ্ন ৫) আয়াতুল মুদায়ানাহ কি?

= কুরআনের সবচেয়ে বড় আয়াত “সূরা বাকারা’র ২৮২ নং আয়াত, যাকে আয়াতুল মুদায়ানাহ বলে।

প্রশ্ন ৬) কোন সূরায় এক হাজার আদেশ, এক হাজার নিষেধাজ্ঞা, এক হাজার উপদেশ এবং এক হাজার সংবাদ অন্তর্ভুক্ত রয়েছে?

= সূরা আল বাকারায়

প্রশ্ন ৭) সূরা আল বাকারা কখন কোথায় নাযিল হয়?

= এ সূরার বেশীর ভাগ আয়াত মহানবী-এর মদীনায় হিজরতের পর মাদানী জীবনের একেবারে প্রথম যুগে নাযিল হয়। আর এর কিছু অংশ পরে নাযিল হয়।

প্রশ্ন ৭) সূরা আল-বাকারার নাযিলের অন্যতম উদ্দেশ্য কি?

= সূরা আল-বাকারার অন্যতম উদ্দেশ্য হল উম্মতকে পৃথিবী গড়ার জন্য প্রস্তুত করা, আল্লাহর ধর্ম প্রতিষ্ঠা করা এবং মানুষের প্রকৃতি স্পষ্ট করে দেওয়া এবং এতে রয়েছে ইমানের ভিত্তি এবং শরীয়তের সম্পূর্ণতা

প্রশ্ন ৮) সূরা আল-বাকারার সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ বৈশিষ্ট্যগুলি কি কি?

  1. এটি কোরানের দীর্ঘতম সূরা।
  2. এতে পবিত্র কোরআনের শেষ আয়াত রয়েছে।
  3. এটি কোরানের দীর্ঘতম আয়াত (ঋণের দায়েনা আয়াত) ধারণ করে।
  4. এতে রয়েছে কোরআনের সর্বশ্রেষ্ঠ আয়াত (আয়াতুল কুরসি)।
  5. নবীর জীবনীতে উল্লেখ করা হয়েছে, এ সূরাকিয়ামতের দিন তার পাঠকের পক্ষে লড়বে, এ সূরাতে রয়েছে ইসমে আজম, তাকে এটি দ্বারা ডাকা হলে তিনি উত্তর দেন এবং এটি আকড়ে ধরা আশীর্বাদ এবং এটি ছেড়ে যাওয়া অনুশোচনা, এবং যাদুকরেরা এটি বহন করতে পারে না।

প্রশ্ন ৯) সূরা আল বাকারা এর পরবর্তি সূরা কোনটি?

= সূরা আল ইমরান

প্রশ্ন ১০) কোন সূরায় একটা জাতির উত্থান-পতন, ভূত-ভবিষ্যত এবং তাদের সমগ্র ইতিহাস সম্বন্ধে বলা হয়েছে, আবার সেই সাথে নূতন জাগ্রত জাতি মুসলমানদের সামাজিক রীতিনীতি সম্বন্ধেও বলা হয়েছে ?

= সূরা আল বাকারা ও সূরা আল ইমরান

১১) মহাপবিত্র আল কুর আন এমন এক কিতাব যার মাঝে কোন সন্দেহর অবকাশ নেই এবং ইহা আল্লাহ্‌ ভীরুদের তথা মুত্তাকীদের জন্য পথ প্রদর্শক কোন সূরায় বলা হয়েছে?

= সূরা আল বাকারা

প্রশ্ন: ১২) আল্লাহ্‌ তাদের হৃদয় এবং শ্রবণশক্তির উপরে মোহর করে দিয়েছেন এবং তাদের চক্ষুর উপরে রয়েছে আবরণ; তারা ভোগ করবে মহাশাস্তি। কোন সূরার কত নম্বর আয়াতে বলা হয়েছে?

= সূরা আল বাকারা ৭ নম্বর আয়াতে।

প্রশ্ন ১৩) সত্যকে মিথ্যা দ্বারা আবৃত করো না। জেনে শুনে সত্যকে গোপন করো না।কোন সূরা কত নম্বর আয়াতে বলা হয়ছে?

= সূরা আল বাকারা ৪২ নম্বর আয়াতে।

প্রশ্ন ১৪) আল্লাহ্‌র কুদরতে কোন সাগর দুটি খন্ড হয়েছিলো এবং বনী-ইসরাঈলীরা সাগর পার হয়ে ফেরাউনের হাত থেকে মুক্ত হলো?

= লোহিত সাগর

১৫) হযরত মুসা (আ.)কোন পাহাড়ে ৪০ দিন অবস্থান শেষে তার উপর তাওরাত কিতাব নাযিল হয়?

= তূর পাহাড়

প্রশ্ন ১৬) ইহুদীদের বার (১২)টি উপজাতি কারা ?

=ইহুদীদের বার (১২)টি উপজাতি হচ্ছে ইয়াকুব নবীর ১২ জন ছেলের বংশধরগণ

প্রশ্ন ১৭) পবিত্র কাবা গৃহের ভিত্তি স্থাপন করেন কে?

=  ইব্রাহীম ও ইসমাঈল  ( আ)

প্রশ্ন: ১৮) আল্লাহ্‌র  আনুগত্যের সারমর্ম কি?

আল্লাহ্‌র আনুগত্যের সারমর্ম হলো রিপুর কামনা-বাসনা থেকে আত্মাকে পরিশুদ্ধ করা এবং আল্লাহ্‌র নির্দেশ অনুযায়ী আনুগত্য প্রকাশ করা।

প্রশ্ন ১৯) মুসলমানদের প্রথম কিবলা কোনটি ?

= জেরুজালেমের বায়তুল মোকাদ্দাস

প্রশ্ন ২০) কত হিজরীতে হুদায়বিয়া সন্ধি অনুষ্ঠিত হয়?

= ৬ষ্ঠ হিজরীতে

প্রশ্ন ২১) নারীদের তেমনি ন্যায়সঙ্গত অধিকার আছে, যেমন আছে তাহাদের উপর পুরুষদের।’ কোন সূরা কত নম্বর আয়াতে বলা হয়েছে?

= সূরা আল বাকারা ২২৮ নম্বর আয়াত।

প্রশ্ন: ২২) আল্লাহ্‌ ব্যবসাকে বৈধ ও সুদকে অবৈধ করেছেন । আল কুর আনের কোথায় বলা হয়েছে?

= সূরা আল বাকারা ২৭৫ নম্বর আয়াতে।

প্রশ্ন: ২৩) সূরা বাকারায় কত নম্বর আয়াতে ব্যবসায়িক লেনদেনের শর্তাবলী আলোচনা করা হয়েছে?

= ২৮২ নম্বর আয়াতে

 

*সূরা বাকারা ও সূরা আলে-ইমরানের ফজিলত গুলি কি?

1-রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন :

*“তোমরা দু’টি যাহরাবীন তথা পুষ্প পাঠ কর, যথা সূরা আল-বাকারা ও সূরা আলে ইমরান। কারণ এ দু’টি সূরা কেয়ামতের দিন মেঘমালার মত অথবা দু’দল পাখির ঝাঁকের ন্যায় সারিবদ্ধভাবে উড়বে। এরা উভয়ে পাঠকের পক্ষ গ্রহণ করবে। তোমরা সূরা বাকারা পাঠ কর। কারণ তার পাঠ করা বরকতের কারণ, তার পাঠ ত্যাগ করা হতাশা। অলসরা তা করতে পারবে না। মুআবিয়া বলেন, আমার শ্র“ত হয়েছে যে, বাতালার অর্থ জাদু।”*[মুসলিম]

2-আবু হুরায়রা রাদিআল্লাহু আনহু থেকে বর্ণিত, রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন :

*“যে ঘরে সূরা আল-বাকারা তিলাওয়াত করা হয়, সে ঘরে শয়তান প্রবেশ করে না।”*

[মুসলিম]

শয়তান ঘরে প্রবেশ না করার কারণ হচ্ছে তাতে আয়াতুল কুরসী রয়েছে।

3-আব্দুল্লাহ ইবনে আব্বাস রাদিআল্লাহু আনহু থেকে বর্ণিত :

*জিব্রীল রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর নিকট থাকা অবস্থায় বলেন, দেখুন, এটা আকাশের একটি দরজা যা এই মাত্র খোলা হল। ইতিপূর্বে কখনো তা খোলা হয়নি। বর্ণনাকারী বলেন, এরপর ঐ দরজা দিয়ে একজন ফেরেশতা রাসূলের নিকট এসে বললেন, আপনি দু’টি নূরের সুসংবাদ গ্রহণ করুন, যা আপনার পূর্বে কোন নবিকে দেয়া হয়নি। সেটা হল, সূরা ফাতেহা ও সূরা বাকারার শেষ আয়াতগুলোর সুসংবাদ। আপনি এ দু’টো তিলাওয়াত করে যে কোন হরফ দ্বারা যা চাইবেন, তা আপনাকে দেয়া হবে।*”[ মুসলিম]

4-প্রত্যেক ফরয নামাযের পরে আয়াতুল কুরসী ১ বার (সুরা বাক্বারাহঃ ২৫৫)।

মৃত্যুর পরে জান্নাত + জিন ও শয়তানের ক্ষতি থেকে হেফাজত করবে।

রাসুলুল্লাহ (সাঃ) বলেছেন, *“যে ব্যক্তি প্রত্যেক ফরয নামায শেষে আয়াতুল কুরসী পাঠ করে তার জন্য জান্নাতে প্রবেশ করার জন্য মৃত্যু ছাড়া আর কোন বাধা থাকে না”*

[সুনানে আন-নাসায়ীঃ ১০০, ইবনে সুন্নীঃ ১২১, শায়খ আলবানীর মতে সহীহ, সিলসিলা আস-সহীহাহঃ ২/৬৯৭। ]

5-রাতে ঘুমানোর আগে সুরা বাক্বারার শেষ ২ আয়াত (২৮৫+২৮৬) ১ বার।

তাহাজ্জুদ পড়ার সমান সওয়াব পাওয়া যাবে + যেকোনো ক্ষতি থেকে বাঁচার জন্য যথেষ্ঠ হবে।

রাসুলুলাহ (সাঃ) বলেছেন, *“যে ব্যক্তি রাতের বেলা সুরা বাকারার শেষ দুই আয়াত পড়বে সেটা তার জন্য যথেষ্ঠ হবে”*।

[বুখারি ৫০১০, মুসলিম ৮০৭।]

6-রাসূলুল্লাহ (সঃ) স্ত্রী মায়মূনা (রাঃ)-এর ঘরে *তাহাজ্জুদের ছালাতে উঠে আকাশের দিকে তাকিয়ে তিনি সূরা আলে ইমরানের ১৯০ আয়াত থেকে সূরার শেষ অর্থাৎ ২০০ আয়াত পর্যন্ত পাঠ করেন’* (বুখারি ; মুসলিম)।

7-একবার সফরে রাতে ঘুম থেকে উঠে আকাশের দিকে তাকিয়ে রাসূলুল্লাহ (ছাঃ) সূরা আলে ইমরান ১৯১-৯৪ আয়াত পাঠ করেছেন*

(নাসাঈ)। একবার তিনি (গুরুত্ব বিবেচনা করে) সূরা মায়েদাহ ১১৮ আয়াতটি দিয়ে পুরা তাহাজ্জুদের ছালাত শেষ করেন’ (নাসাঈ)।

[মুত্তাফাক্ব ‘আলাইহ, মিশকাত হা/১১৯৫; নাসাঈ, মিশকাত হা/১২০৯]

 

গাভীর ঘটনাটি

ঘটনাটি সূরা আল-বাকারার ৬৭-৭৩ নং আয়াতে উল্লেখ করা হয়েছেঃ

“স্মরণ কর, যখন মূসা (আ.) স্বীয় সম্প্রদায়কে বলেছিল, ‘আল্লাহ তোমাদেরকে একটি গরু যবহ করার আদেশ দিচ্ছেন’; তারা বলেছিল, ‘তুমি কি আমাদের সঙ্গে ঠাট্টা করছো’? মূসা বলল, আল্লাহর আশ্রয় নিচ্ছি, যাতে আমি অজ্ঞদের অন্তর্ভুক্ত না হই।”

“তারা বলল, ‘আমাদের জন্য তোমার প্রতিপালককে স্পষ্টভাবে জানিয়ে দিতে বল তা কীরূপ’? মূসা বলল, ‘আল্লাহ বলছেন, তা এমন এক গরু যা বৃদ্ধও নয় এবং অল্প বয়স্কও নয়- মধ্য বয়সী। সুতরাং যা (করতে) আদিষ্ট হয়েছ, তা পালন কর’।”

“তারা বলল, ‘তুমি আমাদের জন্য তোমার রবের নিকট দো‘আ কর, তিনি যেন আমাদের জন্য স্পষ্ট করে দেন, কেমন তার রঙ’? সে বলল, ‘নিশ্চয় তিনি বলছেন, নিশ্চয় তা হবে হলুদ রঙের গাভী, তার রঙ উজ্বল, দর্শকদেরকে যা আনন্দ দেবে’।”

“তারা বলল, ‘তুমি আমাদের জন্য তোমার রবের নিকট দো‘আ কর, তিনি যেন আমাদের জন্য স্পষ্ট করে দেন, তা কেমন? নিশ্চয় গরুটি আমাদের জন্য সন্দেহপূর্ণ হয়ে গিয়েছে। আর নিশ্চয় আমরা আল্লাহ চাহে তো পথপ্রাপ্ত হব’।”

“সে বলল, ‘নিশ্চয় তিনি বলছেন, ‘নিশ্চয় তা এমন গাভী, যা ব্যবহৃত হয়নি জমি চাষ করায় আর না ক্ষেতে পানি দেয়ায়। সুস্থ যাতে কোন খুঁত নেই’। তারা বলল, ‘এখন তুমি সত্য নিয়ে এসেছ’। অতঃপর তারা তা যবেহ করল অথচ তারা তা করার ছিল না।”

“আর স্মরণ কর, যখন তোমরা একজনকে হত্যা করলে অতঃপর সে ব্যাপারে একে অপরকে দোষারোপ করলে। আর আল্লাহ প্রকাশ করে দিলেন তোমরা যা গোপন করছিলে।”

“অতঃপর আমি বললাম, ‘তোমরা তাকে আঘাত কর গাভীটির (গোশতের) কিছু অংশ দিয়ে। এভাবে আল্লাহ জীবিত করেন মৃতদেরকে। আর তিনি তোমাদেরকে তাঁর নিদর্শনসমূহ দেখান, যাতে তোমরা বুঝ।”