সূরা জিন এর সংক্ষিপ্ত পরিচয়, শানেনুযূল, সূরাটির গুরুত্বপূর্ণ দিক, সূরাটির শিক্ষা সূরাটির মূল বিষয়বস্তু, সূরাটির ফযিলত, এবং সূরাটির আলোকে ৫টি বিষয়ভিত্তিক আয়াত অর্থসহ প্রতিটি বিষয় আলোচনা এবং সূরা জিন সম্পর্কে ২০টি শর্ট প্রশ্ন ও উত্তর এবং ২৫টি MCQ দেয়া হলো।
সূরা জিন
সূরা জিন সম্পর্কে ২০টি শর্ট প্রশ্ন ও উত্তর এবং ২৫টি MCQ
১. সূরা জিন কুরআনের কত নম্বর সূরা?
উত্তর: ৭২ নম্বর সূরা।
২. সূরা জিন মক্কী না মাদানী সূরা?
উত্তর: মক্কী সূরা।
৩. সূরা জিনে কয়টি আয়াত আছে?
উত্তর: ২৮টি আয়াত।
৪. সূরা জিনের মূল বিষয় কী?
উত্তর: জিন জাতির বিশ্বাস, কুরআন শ্রবণ ও ইসলাম গ্রহণ।
৫. জিনরা কখন রাসূল (সা.)-এর কুরআন তিলাওয়াত শুনেছিল?
উত্তর: রাতে, নাকাহ উপত্যকায়।
৬. জিনরা কুরআন শুনে কী বলেছিল?
উত্তর: “নিশ্চয় আমরা আশ্চর্য কুরআন শুনেছি, যা সৎপথ দেখায়।” (আয়াত: ১)
৭. জিনদের মধ্যে কেমন লোক রয়েছে?
উত্তর: নেককার ও পাপী—উভয় প্রকার। (আয়াত: ১১)
৮. জিনরা আগে কী মনে করত?
উত্তর: তারা মনে করত আল্লাহ কাউকে পৃথিবীতে পাঠাবেন না। (আয়াত: ৫)
৯. জিনরা কীভাবে মানুষের ক্ষতি করার চেষ্টা করে?
উত্তর: তারা মানুষকে বিভ্রান্ত করতে আকাশের সংবাদ চুরি করে শুনত, কিন্তু এখন শাস্তির ভয়ে তা করতে পারে না। (আয়াত: ৯)
১০. সূরা জিনে আল্লাহর কোন গুণের কথা বলা হয়েছে?
উত্তর: তিনি নির্ভরযোগ্য, কারো সন্তান গ্রহণ করেন না। (আয়াত: ৩-৪)
১১. জিনরা কেন আল্লাহর কাছে আশ্রয় চায়?
উত্তর: যাতে তারা শাস্তি থেকে বেঁচে থাকতে পারে। (আয়াত: ২০)
১২. সূরা জিনে কার কথা বলা হয়েছে যে সে আল্লাহর কাছে আশ্রয় নেয়?
উত্তর: আল্লাহর বান্দা (রাসূল ﷺ)। (আয়াত: ১৯-২০)
১৩. জিনরা কিসের উপর ঈমান আনে?
উত্তর: তারা আল্লাহ, কিয়ামত ও রাসূলের প্রতি ঈমান আনে। (আয়াত: ২, ৭)
১৪. জিনদের কেউ কেউ মুসলমান হয়েছে উল্লেখ আছে কোন আয়াতে?
উত্তর: হ্যাঁ, আয়াত ১৪-১৫।
১৫. সূরা জিনে আল্লাহর কী সতর্কতা রয়েছে?
উত্তর: যে আল্লাহর অবাধ্যতা করবে, তার জন্য জাহান্নামের শাস্তি রয়েছে। (আয়াত: ২৩)
১৬. সূরা জিনে আল্লাহর কী ঘোষণা রয়েছে?
উত্তর: তিনি তাঁর রাসূলকে সত্য দিয়ে পাঠিয়েছেন। (আয়াত: ২৩)
১৭. জিনরা কীসের ব্যাপারে অজ্ঞ ছিল?
উত্তর: তারা জানত না পৃথিবীতে শাস্তি আসবে কিনা। (আয়াত: ১০)
১৮. সূরা জিনের শেষ আয়াতে কী বলা হয়েছে?
উত্তর: আল্লাহ তাঁর রাসূলকে যা দিয়েছেন তা সবাই জানবে। (আয়াত: ২৮)
১৯. সূরা জিন পড়ার ফজিলত কী?
উত্তর: জিনের অনিষ্ট থেকে হিফাজত হয় এবং আল্লাহর রহমত লাভ হয়।
২০. সূরা জিনে কার কথা বেশি এসেছে?
উত্তর: জিন জাতি ও তাদের ঈমান আনার ঘটনা।
সূরা জিন সম্পর্কে ২৫টি MCQ (বহুনির্বাচনী প্রশ্ন)
১. সূরা জিন কুরআনের কততম সূরা?
- a) ৭০
b) ৭১
c) ৭২ ✅
d) ৭৩
২. সূরা জিনে মোট আয়াত সংখ্যা কত?
- a) ২৬
b) ২৭
c) ২৮ ✅
d) ২৯
৩. সূরা জিন কোন ধরনের সূরা?
- a) মাদানী
b) মক্কী ✅
c) উভয়টি
d) কোনোটিই নয়
৪. জিনরা রাসূল (সা.)-এর কুরআন তিলাওয়াত কোথায় শুনেছিল?
- a) মক্কা
b) মদিনা
c) নাকাহ উপত্যকা ✅
d) তাবুক
৫. জিনরা কুরআন শুনে কী বলেছিল?
- a) “এটা জাদু”
b) “এটা কবিতা”
c) “এটা আশ্চর্য কুরআন” ✅
d) “এটা পুরানো কথা”
৬. জিনদের মধ্যে কেমন লোক রয়েছে?
- a) শুধু ভালো
b) শুধু খারাপ
c) ভালো ও খারাপ উভয় ✅
d) কেউই নয়
৭. জিনরা আগে কী ভাবত?
- a) আল্লাহ কাউকে পাঠাবেন না ✅
b) আল্লাহ সবাইকে পাঠাবেন
c) তারা সব জানত
d) কিছুই না
৮. জিনরা আকাশের সংবাদ শুনতে গেলে কী হয়?
- a) তারা শুনতে পায়
b) শয়তান তাদের আটকায়
c) উল্কাপিণ্ড দ্বারা আক্রান্ত হয় ✅
d) কিছুই না
৯. সূরা জিনে আল্লাহর কোন গুণ বলা হয়েছে?
- a) তিনি সন্তান গ্রহণ করেন
b) তিনি নির্ভরযোগ্য ✅
c) তিনি দুর্বল
d) তিনি অজ্ঞ
১০. জিনরা কেন আল্লাহর কাছে আশ্রয় চায়?
- a) সম্পদ পেতে
b) শাস্তি থেকে বাঁচতে ✅
c) ক্ষমতা পেতে
d) সুখ পেতে
১১. সূরা জিনে কার কথা বলা হয়েছে যে সে আল্লাহর কাছে আশ্রয় নেয়?
- a) ফেরেশতা
b) নবী ✅
c) জিন
d) সাধারণ মানুষ
১২. জিনরা কিসের উপর ঈমান আনে?
- a) শুধু আল্লাহ
b) আল্লাহ ও কিয়ামত ✅
c) শুধু নবী
d) শুধু ফেরেশতা
১৩. জিনদের কেউ কেউ কী হয়েছে?
- a) মুসলমান ✅
b) নাস্তিক
c) ইহুদি
d) খ্রিস্টান
১৪. সূরা জিনে আল্লাহর কী সতর্কতা রয়েছে?
- a) শাস্তি ✅
b) পুরস্কার
c) ক্ষমা
d) সুখ
১৫. সূরা জিনে আল্লাহ কী ঘোষণা করেছেন?
- a) তিনি রাসূলকে মিথ্যা দিয়েছেন
b) তিনি রাসূলকে সত্য দিয়ে পাঠিয়েছেন ✅
c) তিনি রাসূলকে কিছু দেননি
d) তিনি রাসূলকে শাস্তি দিয়েছেন
১৬. জিনরা কীসের ব্যাপারে অজ্ঞ ছিল?
- a) পৃথিবীর শাস্তি ✅
b) আকাশের সংবাদ
c) মানুষের জীবন
d) ফেরেশতাদের কাজ
১৭. সূরা জিনের শেষ আয়াতে কী বলা হয়েছে?
- a) আল্লাহ কিছুই জানাবেন না
b) আল্লাহ সব গোপন রাখবেন
c) আল্লাহ সব জানাবেন ✅
d) আল্লাহ শাস্তি দেবেন
১৮. সূরা জিন পড়ার ফজিলত কী?
- a) শুধু অর্থ পাওয়া
b) জিনের অনিষ্ট থেকে হিফাজত ✅
c) শুধু সওয়াব
d) কিছুই না
১৯. সূরা জিনে কার কথা বেশি এসেছে?
- a) ফেরেশতা
b) মানুষ
c) জিন জাতি ✅
d) প্রাণী
২০. জিনরা কখন কুরআন শুনেছিল?
- a) দিনে
b) রাতে ✅
c) সকালে
d) সন্ধ্যায়
২১. জিনরা কুরআন শুনে কী অনুভব করেছিল?
- a) ভয়
b) আশ্চর্য ✅
c) রাগ
d) দুঃখ
২২. সূরা জিনে আল্লাহর কী পরিচয় দেওয়া হয়েছে?
- a) তিনি দয়ালু
b) তিনি এক ও অদ্বিতীয় ✅
c) তিনি দুর্বল
d) তিনি অজ্ঞ
২৩. জিনদের কেউ কেউ কীভাবে চলাফেরা করে?
- a) শুধু সত্য পথে
b) শুধু ভুল পথে
c) সত্য ও ভুল উভয় পথে ✅
d) স্থির থাকে
২৪. সূরা জিনে আল্লাহর কী বার্তা দেওয়া হয়েছে?
- a) তিনি কাউকে সাহায্য করেন না
b) তিনি সত্য প্রকাশ করেছেন ✅
c) তিনি শাস্তি দেন না
d) তিনি ভুল করেন
২৫. সূরা জিনের মূল শিক্ষা কী?
- a) শুধু জিনদের কথা
b) আল্লাহর একত্ব ও হিদায়াত ✅
c) শুধু শাস্তির কথা
d) সম্পদের কথা
✅ সঠিক উত্তর
এই প্রশ্নোত্তরগুলো সূরা জিন সম্পর্কে প্রাথমিক ধারণা দেবে এবং পরীক্ষার জন্য সহায়ক হবে।
সূরাটির সংক্ষিপ্ত পরিচয়, শানেনুযূল, সূরাটির গুরুত্বপূর্ণ দিক, সূরাটির শিক্ষা, সূরাটির মূল বিষয়বস্তু, সূরাটির ফযিলত
সূরা জিন: সংক্ষিপ্ত পরিচয়, শানে নুযূল, গুরুত্বপূর্ণ দিক, শিক্ষা, মূল বিষয়বস্তু ও ফযিলত
১. সংক্ষিপ্ত পরিচয়:
- নাম: সূরা জিন (আরবি: الجن)
- অবস্থান: কুরআনের ৭২তম সূরা
- আয়াত সংখ্যা: ২৮টি
- পর্ব: ২৯তম পারার শুরুতে
- প্রকার: মক্কী সূরা (মক্কায় নাযিল হয়েছে)
- মূল বিষয়: জিন জাতির ইসলাম গ্রহণ, আল্লাহর একত্ব ও কুরআনের মহিমা
২. শানে নুযূল (নাযিলের প্রেক্ষাপট):
রাসূলুল্লাহ (ﷺ) একদিন উকাজ বাজারে যাওয়ার পথে নাখলাহ উপত্যকায় ফজরের নামাজে কুরআন তিলাওয়াত করছিলেন। সেখানে একদল জিন কুরআন শুনে মুগ্ধ হয় এবং ঈমান আনে। পরে তারা নিজ সম্প্রদায়কে সতর্ক করে দেয়। এই ঘটনার পরিপ্রেক্ষিতে সূরা জিন নাযিল হয়। (সহিহ বুখারি, তাফসিরে ইবনে কাসীর)
৩. সূরাটির গুরুত্বপূর্ণ দিক:
- জিনদের অস্তিত্ব ও স্বীকৃতি: জিন জাতির সত্যতা ও তাদের মধ্যে মুমিন-কাফিরের বিভেদ।
- কুরআনের শ্রেষ্ঠত্ব: জিনরা কুরআন শুনে তাৎক্ষণিকভাবে হিদায়াত পেয়েছিল।
- আল্লাহর একত্ব: জিনরাও আল্লাহর ইবাদত করে এবং তাঁর কাছে আশ্রয় চায়।
- গায়েবের জ্ঞান: আকাশের সংবাদ চুরির চেষ্টা ও শাস্তির কথা উল্লেখ।
- শিরকের অসারতা: জিনরা স্বীকার করে যে আল্লাহর কোনো সন্তান বা শরীক নেই।
৪. সূরাটির শিক্ষা:
✅ ঈমানের দৃঢ়তা: জিনরাও কুরআনের সত্যতা মেনে নিয়েছে—মানুষের জন্য এটি বড় নিদর্শন।
✅ আল্লাহর কাছে আশ্রয়: রাসূল (ﷺ)-এর মতো আল্লাহর কাছে আশ্রয় চাওয়ার শিক্ষা (আয়াত ২০)।
✅ শিরক থেকে দূরে থাকা: আল্লাহ ছাড়া অন্য কাউকে ভয় বা উপাসনা না করা।
✅ গায়েবের জ্ঞান আল্লাহর হাতে: জিনরাও ভবিষ্যত জানতে পারে না (আয়াত ১০)।
✅ দায়িত্ববোধ: জিনদের মতো সত্য প্রচারে আত্মনিয়োগ করা।
৫. মূল বিষয়বস্তু:
📌 জিনদের ইসলাম গ্রহণ: তারা কুরআন শুনে মুসলমান হয় (আয়াত ১-২)।
📌 আল্লাহর মহিমা: তিনি নির্ভরযোগ্য, কারো সন্তান নন (আয়াত ৩-৪)।
📌 জিনদের ভুল ধারণা: তারা মনে করত আল্লাহ কাউকে পাঠাবেন না (আয়াত ৫)।
📌 আকাশের সংবাদ চুরির চেষ্টা: শয়তানরা শাস্তির ভয়ে তা করতে পারে না (আয়াত ৯)।
📌 শেষ বিচারের সতর্কতা: জাহান্নামের হুঁশিয়ারি (আয়াত ১৫, ২৩)।
৬. সূরাটির ফযিলত (মাহাত্ম্য):
🔹 জিনের অনিষ্ট থেকে হিফাজত: নিয়মিত পাঠ করলে জিনের ক্ষতি থেকে রক্ষা পাওয়া যায়।
🔹 আল্লাহর রহমত লাভ: এটি তিলাওয়াত করলে আল্লাহর বিশেষ মাগফিরাত ও নিরাপত্তা লাভ হয়।
🔹 ঈমান বৃদ্ধি: জিনদের ঈমানের ঘটনা মানবজাতির জন্য শিক্ষণীয়।
🔹 সুরক্ষার আমল: রাসূল (ﷺ) সূরা জিন ও সূরা মু’মিনুন পড়ে আল্লাহর আশ্রয় প্রার্থনা করতেন।
উপসংহার:
সূরা জিন জিন জাতির ইসলাম গ্রহণের মাধ্যমে কুরআনের সত্যতা ও আল্লাহর একত্বের প্রমাণ দেয়। এটি মানুষকে শিরক থেকে বাঁচতে, গায়েবের জ্ঞানের সীমা বুঝতে এবং আল্লাহর কাছে আশ্রয় চাওয়ার শিক্ষা দেয়। নিয়মিত এ সূরা পাঠ করলে রূহানি সুরক্ষা ও ঈমানী শক্তি বৃদ্ধি পায়।
✔️ সূরা জিনের মূল বার্তা:
“নিশ্চয় আমাদের রব এক ও অদ্বিতীয়, তিনি কাউকে সন্তান হিসেবে গ্রহণ করেননি।” (আয়াত: ৩-৪)
সূরাটির আলোকে ৫টি বিষয়ভিত্তিক আয়াত ও তার অর্থ
সূরা জিন থেকে ৫টি বিষয়ভিত্তিক আয়াত ও তার অর্থ
১. জিনদের কুরআন শ্রবণ ও ঈমান আনা
আয়াত:
“قُلْ أُوحِيَ إِلَيَّ أَنَّهُ اسْتَمَعَ نَفَرٌ مِنَ الْجِنِّ فَقَالُوا إِنَّا سَمِعْنَا قُرْآنًا عَجَبًا“
অর্থ:
“বলুন, আমার কাছে ওহী পাঠানো হয়েছে যে, একদল জিন (কুরআন) শুনেছে এবং বলেছে, ‘নিশ্চয় আমরা এক আশ্চর্য কুরআন শুনেছি।’” (সূরা জিন, আয়াত: ১)
ব্যাখ্যা:
এই আয়াতে জিনদের কুরআন শোনার ঘটনা বর্ণিত হয়েছে। তারা কুরআনের গভীরতা ও সৌন্দর্য বুঝতে পেরে মুগ্ধ হয় এবং হিদায়াতের পথ খুঁজে পায়।
২. আল্লাহর একত্ব ও শিরকের অসারতা
আয়াত:
“وَأَنَّهُ تَعَالَىٰ جَدُّ رَبِّنَا مَا اتَّخَذَ صَاحِبَةً وَلَا وَلَدًا“
অর্থ:
“এবং আমাদের রবের মর্যাদা অতি উচ্চ, তিনি কখনও সঙ্গীনি বা সন্তান গ্রহণ করেননি।” (সূরা জিন, আয়াত: ৩)
ব্যাখ্যা:
জিনরা স্বীকার করে যে আল্লাহ সম্পূর্ণ এক ও অদ্বিতীয়। তিনি কারো সহধর্মিণী বা সন্তান নন—এটি শিরকের সকল ধারণাকে খণ্ডন করে।
৩. জিনদের ভুল ধারণা ও সতর্কতা
আয়াত:
“وَأَنَّا ظَنَنَّا أَن لَّن تَقُولَ الْإِنسُ وَالْجِنُّ عَلَى اللَّهِ كَذِبًا“
অর্থ:
“এবং আমরা ধারণা করতাম যে মানুষ ও জিন আল্লাহ সম্পর্কে কখনও মিথ্যা বলবে না।” (সূরা জিন, আয়াত: ৫)
ব্যাখ্যা:
জিনরা আগে মনে করত যে কেউ আল্লাহর নামে মিথ্যা বলার সাহস করবে না। কিন্তু পরে তারা বুঝতে পারে যে শয়তান ও কাফিররা আল্লাহ সম্পর্কে মিথ্যা আরোপ করে।
৪. গায়েবের জ্ঞান শুধু আল্লাহর কাছে
আয়াত:
“وَأَنَّا لَمَسْنَا السَّمَاءَ فَوَجَدْنَاهَا مُلِئَتْ حَرَسًا شَدِيدًا وَشُهُبًا“
অর্থ:
“আমরা আকাশ স্পর্শ করেছিলাম, কিন্তু দেখলাম তা কঠোর প্রহরী ও উল্কাপিণ্ডে পূর্ণ।” (সূরা জিন, আয়াত: ৮)
ব্যাখ্যা:
জিনরা আগে আকাশের গোপন সংবাদ শুনতে চেষ্টা করত, কিন্তু এখন ফেরেশতাদের পাহারা ও উল্কাপাতের কারণে তা অসম্ভব। এটি প্রমাণ করে যে গায়েবের জ্ঞান শুধু আল্লাহর হাতে।
৫. আল্লাহর কাছে আশ্রয় প্রার্থনা
আয়াত:
“وَأَنَّهُ لَمَّا قَامَ عَبْدُ اللَّهِ يَدْعُوهُ كَادُوا يَكُونُونَ عَلَيْهِ لِبَدًا“
অর্থ:
“যখন আল্লাহর বান্দা (রাসূল) তাঁকে ডাকতে দাঁড়ালেন, তখন জিনরা তার চারপাশে ভিড় জমালো।” (সূরা জিন, আয়াত: ১৯)
ব্যাখ্যা:
এই আয়াতে রাসূলুল্লাহ (ﷺ)-এর ইবাদতের সময় জিনদের উপস্থিতির কথা বলা হয়েছে। এটি শিক্ষা দেয় যে আল্লাহর কাছে আশ্রয় চাইলে তিনি নিরাপত্তা দেন।
সারসংক্ষেপ:
বিষয় | আয়াত | মূল বার্তা |
জিনদের ঈমান | ৭২:১ | কুরআনের সত্যতা স্বীকার |
আল্লাহর একত্ব | ৭২:৩ | শিরকের অসারতা |
জিনদের পূর্বধারণা | ৭২:৫ | মিথ্যার বিরুদ্ধে সতর্কতা |
গায়েবের জ্ঞান | ৭২:৮ | আল্লাহই সব গায়েব জানেন |
আল্লাহর আশ্রয় প্রার্থনা | ৭২:১৯ | ইবাদতে নিষ্ঠা ও নিরাপত্তা |
এই আয়াতগুলো ঈমান, তাওহিদ, গায়েবের জ্ঞান ও আল্লাহর আশ্রয় সম্পর্কে গভীর শিক্ষা দেয়।