You are currently viewing যেভাবে শুরু হয়েছিলো শহীদ আল্লামা সাঈদীর (রহ.) মাহফিল জিন্দেগী

যেভাবে শুরু হয়েছিলো শহীদ আল্লামা সাঈদীর (রহ.) মাহফিল জিন্দেগী

যেভাবে শুরু হয়েছিলো শহীদ আল্লামা সাঈদীর (রহ.) মাহফিল জিন্দেগী

সেই স্মরণীয় ঘটনাটি….

১৯৭৪ সাল। রবিউল আউয়াল মাস। ঢাকার রেসকোর্স ময়দান (বর্তমান সরওয়ার্দি উদ্যান)। সাধিন বাংলাদেশে প্রথম সিরাতুন্নবি মাহফিল অনুষ্ঠিত হয় উম্মুক্ত রেসকোর্স ময়দানে।

কওমি অঙ্গনের উসতাজুল আসাতিজা ঢাকার প্রখ্যাত আলেম মুফতি দীন মোহাম্মদ খানের নেতৃত্বে গঠিত হয় সিরাতুন্নবি কমিটি।

সময় নিয়ে ব্যাপক প্রচারণার পর নির্ধারিত দিনে আরম্ভ হয় সীরাত মাহফিল। বিশাল মঞ্চে দেশের বিখ্যাত বিখ্যাত আলেমগণ উপবিষ্ট। মুফতি দীন মোহাম্মদ খানের সভাপতিত্বে এবং ঢাকার অপর জাঁদরেল আলেম মওলানা মুহাম্মদ মাসুম সাহেবের পরিচালনায় শুরু হয় আলেমগণের আলোচনা। ঐ মাহফিলে যুবক সেচ্ছাসেবক হিসেবে মঞ্চের পাশেই আমার উপস্থিত থাকার সৌভাগ্য হয়।

বিশাল উম্মুক্ত ময়দানে মানুষ আর মানুষ। কয়েকজনের আলোচনার পরই ঢাকায় নতুন আসা এক নওজোয়ান আলেমের নাম ঘোষণা করা হয় বক্তব্য রাখার জন্যে।

তিনি মাইকের সামনে দাঁড়িয়ে বক্তব্য শুরু করেন। তিনি বক্তব্য শুরু করেন অন্যদের চাইতে সম্পূর্ন ভিন্ন অতীব আকর্ষণীয় ও বলিষ্ঠ ভাষায়। তাঁর প্রতিটি কথা ছিলো তীর্যক মাধুর্যময়। প্রতিটি কথাই যেন শ্রোতাদের কর্নভেদ করে হৃদয় মনকে করে তুলছিল উদ্বেলিত উজ্জীবিত।

আরও পড়তে পারেন–কার বিচার করলেন আপনারা! ‘শিকদার’ না ‘সাঈদীর’??

রেসকোর্স ময়দান অবিরাম ‘নারায়ে তাকবির আল্লাহু আকবার’ ধ্বনিতে প্রকম্পিত হচ্ছিল। ফাঁকে ফাঁকে ধ্বনিত হচ্ছিল ‘মাওলানা সাঈদী-জিন্দাবাদ জিন্দাবাদ।’

এদিকে মঞ্চে ঘটে যাচ্ছিল ভিন্ন কান্ড। সাঈদী সাহেবের সময় ছিল দশ মিনিট। কিন্তু কোন্ ফাঁকে যে পার হয়ে গেছে ১৫ মিনিট, ২০ মিনিট! সাঈদী সাহেব বক্তব্য রেখেই যাচ্ছিলেন আর শ্রোতারা শ্লোগানে শ্লোগানে কাঁপিয়ে তুলছিল রেসকোর্স ময়দান – এ যেন সেই ৭ই মার্সের রেসকোর্স ময়দান!

পরবর্তী বক্তাগণের চেহারা হয়ে উঠছিল বিষাদময়। কিন্তু সভাপতি মুফতি দীন মোহাম্মদ খানের সাথে কথা বলার সাহস কারোই ছিলনা। তবে পাশের কয়েকজন আল্লামা আজিজুল হক সাহেবকে খোচাচ্ছিলেন মুফতি সাহেবকে বলার জন্যে। কিন্তু তিনি উসতাজের সাথে কথা বলার সাহস করছিলেন না। অতপর তিনি সাহস করে হুজুরের পেছনে এসে হুজুর! হুজুর! কয়েকবার বললেন। কিন্তু মুফতি দীন মোহাম্মদ খান কোনো সাড়া দিলেন না। তিনি তো মন্ত্রমুগ্ধের মত সাঈদী সাহেবের বক্তব্যের শোনছিলেন।

অন্যান্য আলোচকদের ঠেলাঠেলিতে অতপর আজিজুল হক সাহেব পুনরায় হুজুরের পেছনে এসে বললেন: হুজুর ঊনকা ওয়াক্ত তো বহুত পহলেহি গুজার গিয়া—-”

মুফতি দীন মোহাম্মদ খান: “খা মূ শ, দেখতে নেহি ময়দান উনকা হো গিয়া!!!!!(খামুশ, দেখতে পাচ্ছনা – ময়দান তাঁর পক্ষে চলে গেছে!”

অতপর পঁয়ত্রিশ চল্লিশ মিনিট বক্তব্য রাখার পর সাঈদী সাহেব নিজেই তাঁর বক্তব্য শেষ করে দেন। যদিও ময়দান থেকে জোর আওয়াজ আসছিল: হুজুর আরো বলেন, আরো বলেন ———!

ঐ সীরাত মাহফিলে সারা দেশ থেকে মানুষ এসেছিল। রেসকোর্স তখনও খালি ময়দান ছিল।

তারপর থেকে তাঁকে আটক করার আগ পর্যন্ত তিনি সারা দেশে এবং বিদেশে মানুষকে আল্লাহর পথে ডাকার জন্যে অবিরাম দৌড়তে থেকেছেন।

আল্লাহ্ পাক তার সমস্ত প্রচেষ্টাগুলোকে কবুল করুন এবং তাঁকে মুকাররাবিনদের অতর্ভুক্ত করে নিন। – আমিন ইয়া রববাল আলামিন!

——আবদুস শহীদ নাসিম

 

বিশ্বজুড়ে সমাদৃত আল্লামা সাঈদী রহ.। মিশরের ঐতিহাসিক আল-আযহার বিশ্ববিদ্যালয়ে আল্লামা সাঈদীকে নিয়ে বরেণ্য স্কলারদের সম্মেলন।

[ছবি ও তথ্য ইনবক্সে পাঠানো]