পোশাক রপ্তানিতে বাংলাদেশের অবস্থান
বাংলাদেশের তৈরীকৃত পোশাক প্রায় ৩০টি দেশে রপ্তানি করা হয়ে থাকে। তবে সবচেয়ে মজার ব্যাপার হলো আমাদের পোশাক রপ্তানির সবচেয় বড় ও প্রথান বাজার হলো যুক্তরাষ্ট্র ও ইইউ । এই দুটি বাজার যদি আমরা মিস করি তালে অন্য যে পোশাক রপ্তানিতে শীর্ষ দেশ রয়েছে তাদের সাথে প্রতিযোগিতায় আমরা হেরে যাবো । ফলে আমাদের অর্থনীতি চাকা এক ধাক্কায় ভেঙ্গে যাবে যা এই দেশের পেশাক শিল্পের বড় দূর্বলতা। পোশাক রপ্তানিতে বাংলাদেশের অবস্থান কোন পর্যায়ে মোটামুটি একটা ধারণা নিতে পারলাম।
পরিসংখ্যান থেকে আমরা জানতে পারি, মোট রপ্তানির ৯০%-এর অধিক যুক্তরাষ্ট্র ও ইইউ বাজারে বিক্রি হয়। এর মধ্যে যুক্তরাষ্ট্রে মোট রপ্তানির ৪০% এবং ইইউতে ৫০% রপ্তানি হয়। আর এই দুই বাজারে বাংলাদেশ ছাড়াও আরো কিছু পোশাক রপ্তানিতে শীর্ষ দেশ রয়েছে যেমন:– চীন, ভারত, শ্রীলঙ্কা, পাকিস্তান, থাইল্যান্ড, ভিয়েতনাম, কম্বোডিয়া, তুরস্ক, মেক্সিকো, পূর্ব ইউরোপের দেশ, ল্যাটিন আমেরিকা ও আফ্রিকা। তাদের সাথে প্রতিযোগিতা করেই বাংলাদেশকে টিকে থাকতে হয়।
এমন কি মেক্সিকো, বেশ কিছু ল্যাটিন আমেরিকার দেশ, আফ্রিকা এবং পূর্ব ইউরোপের দেশ যুক্তরাষ্ট্রের বাজারে শুল্কমুক্ত রপ্তানির সুযোগ পেলেও বাংলাদেশ কিন্তু পায়নি। এই বৈষম্যের কারণে বাংলাদেশকে তীব্র প্রতিযোগিতার সম্মুখীন হতে হচ্ছে। ফলে এই বৈষম্যের কারণে দাম পার্থক্য বাংলাদেশের প্রতিকূলে থাকায় কঠিন প্রতিযোগিতার মধ্য দিয়ে যেতে হচ্ছে।সুতরং যদি আমাদের কোনো ভুলের কারণে কিংবা রাজনৈতিক প্রতি হিংসা কিংবা ক্ষমতায় টিকে থাকতে কোন ভুল সিদ্ধান্ত নিয়ে থাকি তাহলে এই প্রধান বাজারটি আমাদের হাতছাড়া হতে পারে। যা আমাদের দেশের জন্য এক বিশাল ক্ষতি এবং পোশাক শিল্প ধ্বংসের মুখে পরতে
আরও পড়তে পারেন–সিনেমা ধ্বংস হলে দেশের কী ক্ষতি হবে! সাধারণ মানুষের মন্তব্য কী?
বাংলাদেশের পোশাক শিল্পের বর্তমান অবস্থা
বাংলাদেশের তৈরি পোশাক শিল্পকে বাঁচাতে এক গুরুত্বপূর্ণ স্টাটাস দিয়েছেন মাসুদ সাঈদী। বাংলাদেশের অর্তণীতিতে পোশাক শিল্প এক বৈপ্লবিক ভুমিকা রাখে। এর সাথে জড়িয়ে আছে লক্ষ লক্ষ শ্রমিকের রুটি রুজি। দেশের অর্থণীতির চাকাকে সচল রাখতে বাংলাদেশের পোশাক শিল্পের বর্তমান অবস্থা নিয়ে আমাদের ভাবতে হবে। যেহেতু এর সাথে দেশের উন্নয়ন ও জনগণ জড়িয়ে আছে সেহেতু বাংলাদেশের পোশাক শিল্প রাজনীতি মুক্ত রাখতে হবে। মাসুদ সাঈদী বলেছেন, প্লিজ রাগ দেখাতে গিয়ে দেশের ক্ষতি করবেন না! । নিচে তার পোষ্ট হুবহু দেয়া হলো ।
প্লিজ রাগ দেখাতে গিয়ে দেশের ক্ষতি করবেন না!
বাংলাদেশের পোশাক রপ্তানির শীর্ষে রয়েছে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র। গত অর্থবছরে যুক্তরাষ্ট্রের বাজারে তৈরি পোশাক রপ্তানি করে বাংলাদেশের আয় হয়েছে ৯ বিলিয়ন ডলারের বেশি। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে বাংলাদেশের রপ্তানি বেড়েছে ৫১ দশমিক ৫৭ শতাংশ।
অটেক্সার তথ্যানুযায়ী, যুক্তরাষ্ট্রের বাজারে দীর্ঘদিন ধরেই বাংলাদেশ তৃতীয় শীর্ষ পোশাক রপ্তানিকারক দেশ।
বাংলাদেশের রপ্তানী খাত নিয়ে কথা বললে তার মধ্যে সম্ভবত: প্রথমেই আসবে পোষাক শিল্প খাত (গার্মেন্টস সেক্টর)। বাংলাদেশের রপ্তানি বা বিদেশী মুদ্রার রিজার্ভ গার্মেন্টস সেক্টর ছাড়া চিন্তাও করা যায় না। একইভাবে নারী-পুরুষের কর্মসংস্থানের কথা আসলেও গার্মেন্টস সেক্টরের কথাই সবার আগে আসবে।
বছর দেড়েক আগে গুরুতর মানবাধিকার লঙ্ঘনের অভিযোগে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র বাংলাদেশের এলিট ফোর্স ‘র্যাব’ ও র্যাবের ছয় কর্মকর্তার ওপর নিষেধাজ্ঞা (স্যাংশন) আরোপ করেছে। ‘তাদের এসব অভিযোগ মিথ্যা’- তা ডকুমেন্টারী এভিডেন্স দিয়ে প্রমান করে তাদের মুখে ছাই দিয়ে নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহার করার ব্যবস্থা করুন।
শুধু মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র কেন- ভারত, চীন, রাশিয়াসহ পৃথিবীর কোন দেশেরই প্রিয় মাতৃভূমি বাংলাদেশের উপর খবরদারী সহ্য করার মতো নয়। বাংলাদেশের উপর পৃথিবীর বৃহৎ রাষ্ট্রগুলির অন্যায় খবরদারী বন্ধে কুটনৈতিক প্রচেষ্টা অব্যাহত রাখুন। কার্যকর লবিষ্ট নিয়োগ করুন। বিশ্ব জনমত গড়ে তোলার চেষ্টা করুন।
কিন্তু সে সব না করে, ‘যারা স্যাংশন দিয়েছে (মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র) তাদের থেকে কেনাকাটা করবো না’- এমন কথা শুধু অর্বাচিনরাই বলতে পারে বলে মনে করি। আপনাদের এমন কান্ডজ্ঞানহীন কথার প্রেক্ষিতে যুক্তরাষ্ট্র যদি বাংলাদেশ থেকে (আল্লাহ না করেন) পোষাক কেনা বন্ধ করে দেয় তাহলে ক্ষতিটা হবে কার? বাংলাদেশ থেকে কত ডলারের পণ্য মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র কেনে আর বাংলাদেশ কত ডলারের পণ্য মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে রপ্তানী করে তার হিসাব আগে করুন।
‘কেন আপনাদেরকে প্রটোকল দেয়নি, কেন আপনাদেরকে ক্ষমতায় দেখতে চায়না’- সেগুলো আপনারা সমাধান করুন। সেগুলো আপনাদের ব্যাপার। আপনাদের ক্ষমতায় থাকা না থাকার সাথে দেশের জনগনের ভাগ্য জড়িত নয়। তাই আপনাদের ব্যাক্তিগত বা দলগত রাগ দেখাতে গিয়ে দেশের ক্ষতি করবেন না, দেশকে ধ্বংসের মুখে ঠেলে দিবেন না, প্লিজ। এমন অর্বাচিনের মতো কাজ করলে দেশবাসীও আপনাদেরকে ক্ষমা করবে না, মনে রাখবেন।
—মাসুদ সাঈদী আল্লামা দেলাওয়ার হোসাঈন সাঈদীর সুযোগ্য সন্তান। যিনি একজন সফল উপজেলা চেয়ারম্যান ছিলেন।