You are currently viewing জান্নাতে পুরুষরা কতজন করে স্ত্রী পাবেন? -ফাতেমা জাহান লুবনা
জান্নাতী পুরুষরা কতজন করে স্ত্রী পাবেন?

জান্নাতে পুরুষরা কতজন করে স্ত্রী পাবেন? -ফাতেমা জাহান লুবনা

জান্নাতী পুরুষরা কতজন করে স্ত্রী পাবেন?

নারীরা জান্নাতেও কীভাবে সংখ্যাধিক্য হবেন?

-ফাতেমা জাহান লুবনা

***প্রথম রেফারেন্স:-

হাদিস শরিফে এসেছে, রাসূল (সা.) বলেছেন,

أَدْنَى أَهْلِ الْجَنَّةِ الَّذِي لَهُ ثَمَانُونَ أَلْفَ خَادِمٍ وَاثْنَتَانِ وَسَبْعُونَ زَوْجَةً وَتُنْصَبُ لَهُ قُبَّةٌ مِنْ لُؤْلُؤٍ وَزَبَرْجَدٍ وَيَاقُوتٍ كَمَا بَيْنَ الْجَابِيَةِ إِلَى صَنْعَاءَ

‘অতি সাধারণ মর্যাদা সম্পন্ন একজন জান্নাতীরও আশি হাজার খাদিম ও বাহাত্তর জন হুর থাকবে। আর তার জন্য মণিমুক্তা, যমরূদ ও ইয়াকুতের তাবু নির্মাণ করা হবে। সেটা এত বড় হবে যে, তা সিরিয়ার অন্তর্গত ‘জাবিয়া’ হতে ইয়ামানের সানআ’ পর্যন্ত সমান জায়গা জুড়ে বিস্তৃত হবে।’ [সুনানে তিরমিযী, হাদিস: ২৫৬২]

এ হাদিসে সর্বনিম্ন স্তরের একজন জান্নাতীর হুরের সংখ্যা বলা হলেও এর দ্বারা অনুমান করা যায় যে, উঁচু স্তরের জান্নাতীদের হুরের সংখ্যা আরো বেশি হবে।

সহিহ বুখারি, হাদিস: ৩২৫৪

***দ্বিতীয় রেফারেন্স:-

রাসূলুল্লাহু সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম আরও বলেছেন:

“শহীদের জন্য থাকবে ছয়টি বিশেষ বৈশিষ্ট্য,

১)তাকে প্রথমবারেই ক্ষমা করে দেওয়া হবে, জান্নাতে তার অবস্থান তাকে দেখানো হবে,

২)কবরের আযাব থেকে তাকে মুক্তি দেওয়া হবে,

৩)মহা ভীতিপ্রদ সে অবস্থায় তাকে নিরাপত্তা দেওয়া হবে,

৪) তার মাথায় সম্মানের মুকুট পরানো হবে, যার একটি ইয়াকুত পাথর দুনিয়া ও তাতে যা আছে তা থেকে উত্তম, এবং

৫) তাকে বাহাত্তর জন ডাগর নয়না হূর স্ত্রীর সাথে বিয়ে দেওয়া হবে,

৬) আর তার নিকটস্থ সত্তর জন্য ব্যাপারে তার সুপারিশ গ্রহণ করা হবে।”

[তিরমিযী, (হাদীস নং ১৬৬৩); ইবন মাজাহ, (হাদীস নং ২৭৯৯); আলবানী সহীহ আত-তিরমিযীতে তা সহীহ বলেছেন]

আরও পড়ুন–চোখ ভালো রাখার উপায়-চোখ ভালো রাখার খাবার- এবং চোখের ব্যায়াম

*** তৃতীয় রেফারেন্স :-

রাসূলুল্লাহু সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন:

“সবচেয়ে নিম্নমানের সাধারণ একজন জান্নাতের অধিকারী ব্যক্তির ব্যাপারে এসেছে, যার চেহারাকে আল্লাহ্ জাহান্নাম থেকে জান্নাতের দিকে ফিরিয়ে দিবেন, আর তার সামনে একটি ছায়াদার বৃক্ষ দেখাবেন, … তারপর সে তার ঘরে প্রবেশ করবে, তখন তারজন্য সংরক্ষিত জান্নাতী দু’জন হূর স্ত্রী তার কাছে প্রবেশ করে বলতে থাকবে, আল্লাহর প্রশংসা যে তিনি আপনাকে আমাদের জন্য জীবিত করেছেন, আর আমাদেরকে আপনার জন্য জীবিত রেখেছেন, তখন সে জান্নাতী বলবে, আমাকে যা দেওয়া হয়েছে তা কাউকে দেওয়া হয়নি।” [মুসলিম, হাদীস নং ১৮৮]

উপরে বর্ণিত হাদিসগুলো পর্যালোচনা করলে বুঝা যায় যে একজন পুরুষ জান্নাতে গেলে কমপক্ষে দুজন করে স্ত্রী পাবেন আবার কোন কোন হাদিস বিশারদ একজন স্ত্রী দুনিয়া হতে হবেন অন্যজন আখিরাতের হুর হতে হবেন বলে উল্লেখ করেছেন। তবে আসল বিষয় আল্লাহই ভালো জানেন।

পুরুষরা তাদের সম্মান অনুযায়ী দুজন হতে বাহাত্তর জন বা কম/ বেশি স্ত্রী পাবেন। অতএব নারীরা জান্নাতেও কি তাহলে সংখ্যায় অধিক হবেন না?? যারা নারীরা জাহান্নামে অধিক যাবেন বলে থাকেন তাদের এই বিষয়গুলোও জানা কর্তব্য।

আরেকটি হাদীসের দিকে আলোকপাত করা যাক:

রাসূলুল্লাহ(স) বলেছেন:-

‘‘কিয়ামতের আলামত হচ্ছে, নারীর সংখ্যা বৃদ্ধি পাবে এবং পুরুষের সংখ্যা কমে যাবে। এমনকি পঞ্চাশ জন নারীর দেখাশোনার জন্য মাত্র একজন পুরুষ থাকবে।”( বুখারী, অধ্যায় কিতাবুল ইলম)

ইমাম ইবনে হাজার আসকালানী (রঃ) যুদ্ধের কারণে পুরুষের সংখ্যা কমবে এই মতবাদকে প্রত্যাখ্যান করে বলেনঃ হাদীসের প্রকাশ্য অর্থ হলো কোন কারণ ছাড়াই শুধু কিয়ামতের আলামত হিসেবে নারীর সংখ্যা বৃদ্ধি পাবে। আল্লাহ তাআলা আখেরী যামানায় পুরুষের তুলনায় বেশী নারী সৃষ্টি করবেন।

তাই যে জাতি সংখ্যায় অধিক সৃষ্ট হবে স্বাভাবিক কারণেই জান্নাত ও জাহান্নামে উভয়স্থানেই তার সংখ্যাধিক্য ঘটবে।আল্লাহ উত্তম জানেন। তবে এই বিষয়টি নিয়ে পুরুষদের নারীদেরকে হেয় প্রতিপন্ন করার প্রচেষ্টা করা অনুচিত কারণ মহান আল্লাহ পুরুষ ও নারী দেখবেন না ; তিনি দেখবেন আল্লাহভীরু অন্তর এবং সৎকর্ম।

 

Leave a Reply