You are currently viewing বাংলাদেশের জনপ্রিয় ৩৩ প্রকার ফলের পুষ্টিগুণ ও উপকারিতা
৩৩টি ফলের উপকারিতা ও বিভিন্ন পুষ্টি গুণ

বাংলাদেশের জনপ্রিয় ৩৩ প্রকার ফলের পুষ্টিগুণ ও উপকারিতা

’ফল’ মাহান সৃষ্টিকর্তার এক বিশেষ নেয়ামত। আমাদের দেহকে সুস্থ ও সতেজ রাখার জন্য যেসব উপাদান প্রয়োজন বিশেষ করে বিভিন্ন ভিটামিন ও খনিজ উপাদানের দরকার হয় তার একমাত্র প্রাকৃতিক উৎস হলো ফল অথবা শাক সবজি। একেক ফলে রয়েছে একেক পুষ্টিগুন ও উপাদান। আমরা অনেকেই জানি না কোন ফলে কি পুষ্টিগুন রয়েছে এবং তার উপকারিতা কি?

এই আর্টিকেলে আপনারা ৩৩ প্রকার ফলের উপকারিতা ও তার পুষ্টিগুণ সম্পর্কে জানতে পারবেন । আশাকরি আপনাদের প্রত্যেকের জীবনে কাজে লাগবে।

 

আপেল

খুব পরিচিতি একটি ফল যা ছোট বড় সকলেই পছন্দ করে থাকি। কোথাও কোন আত্মীয়ের বাড়িতে বেড়াতে গেলে আপেল ছাড়া যেন চলেই না । কিন্ত আমার কজনই বা জানি এর পুষ্টিগুন সম্পর্কে। কথিত আছে, ’’নিয়মিত আপেল খেলে চিকিৎসকের প্রয়োজন হয় না’’। আপেলে রয়েছে প্রচুর পরিমান ভিটামিন সি, ভিটামিন-এ এবং ভিটামিন-ই। ডায়াবেটিস এবং হৃদরোগীদের জন্য চমৎকার একটি প্রতিষেধক আপেল।

আপেলে কি কি পুষ্টি উপাদান রয়েছে?

আপেলে কি কি পুষ্টি উপাদান রয়েছে?

প্রতি ১০০গ্রাম আছে- আমিষ ০.২৬ গ্রাম, শর্করা ১৩.৮১ গ্রাম, চর্বি ০.১৭ গ্রাম, ভিটামিন-এ ৫৪ মিলিগ্রাম, ভিটামিন সি ৪.৬ মিলিগ্রাম, ভিটামিন-ই ০.১৮ মিলিগ্রাম, পটাশিয়াম ১০৭ মিলিগ্রাম, ক্যালসিয়াম ৬ মিলিগ্রাম, সোডিয়াম ১ মিলিগ্রাম, লৌহ ০.১২ মিলিগ্রাম, জিংক ০.০৪ মিলিগ্রাম, ফসফরাস ১১ মিলিগ্রাম, ম্যাগনেসিয়াম ৫ মিলিগ্রাম, খাদ্যশক্তি- ৫২ কিলোক্যালরি,

আপেলে আরো যেসব উপকারিতা রয়েছে

  • বিভিন্ন ধরনের ক্যান্সার যেমন- স্তন ক্যান্সার, লিভার ক্যান্সার, মলাশয়ে ক্যান্সার, অগ্ন্যাশয়ে ক্যান্সার প্রতিরোধে সহায়াতা করে।
  • নিয়মিত আপেল খেলে হার্ট ভালো থাকে। আপেলে যে ফাইভার থাকে তা কোলেস্টেরল কমাতে ভুমিকা রাখে ফলে হার্টে স্বাভাবিক রক্ত চলাচল করে।
  • আপেল রোগ প্রতিরোধের ক্ষমতা বৃদ্ধি করে।
  • আপেল ওজন কমাতে বেশ উপকারী।
  • নিয়মিত আপেল খেলে দাত মজবুত ও সুন্দর ঝকঝকে করে।
  • আপেল ডায়াবেটিস কমায়।
  • আপেল শরীরের ত্বক ও মুখের উজ্জলতা বৃদ্ধি করে।

 

কমলা লেবু

আমাদের সকলের কাছে খুব একটি পরিচিত এবং পছন্দের ফল। কমলা লেবু খেলে শরীরে বিভিন্ন ভিটামিন এবং মিনারেলের পাশাপাশি অ্যান্টিঅক্সিডেন্টের মাত্রাও বৃদ্ধি পেতে শুরু করে। ফলে ব্রেইনকে শক্তিশালী করে । নানা ধরনের ব্রেইন ডিজেজ আক্রান্ত হওয়া থেকে রক্ষা করে।

কমলা লেবুর বিভিন্ন গুনাগুণ

কমলা লেবুর বিভিন্ন গুনাগুণ

  • আলসারে আক্রান্ত হওয়া থেকে রক্ষা করে। কমলা লেবুর রসে এমন কিছু উপাদান থাকে যা নানা ধরনের পেটের সমস্যা দূর করতে বিশেষ ভুমিকা রাখে।
  • শরীরে রক্ত স্বল্পতার কারনে বিভিন্ন মাথা চাড়া দিয়ে ওঠা, শরীর দূর্বল হওয়া, ওজন কমে যাওয়া ইত্যাদিতে কমলা লেবুর রস পান করালে শরীরে ভিটামিন –সি এবং লোহিত রক্ত কণিকার উৎপাদান বৃদ্ধি পায় ফলে শরীরে শক্তি তৈরি হয় এবং অ্যানিমিয়া রোগ কাছে আসতে পারে না ।
  • কমলা লেবু রক্তচাপকে নিয়ন্ত্রণে রাখে এবং দেহের ভিতর কোলেস্টেরলের মাত্রা কমায় ফলে হার্টের ক্ষমতা বৃদ্ধি করে এবং সুস্থ রাখতে ভুমিকা রাখে।
  • যাদের ঠিকমতো ঘুম হয় না, শরীর ক্লান্ত থাকে, স্মৃতিশক্তি দূর্বল তাদের জন্য কমলা লেবু বেশ উপকারি।
  • বিভিন্ন ধরনের রোগ প্রতিরোধে কমলা লেবু বেশ কার্যকর।
  • কিডনি ভালো রাখতে নিয়মিত কমলা লেবুর রস খাওয়া উচিত।
  • ক্যান্সারকে দূরে রাখতে কমলার রস বেশ উপকারী।
  • ত্বক সুন্দর করে।

 

জাম্বুরা

বাংলাদেশের অনেক বাড়িতেই জাম্বুরা গাছ দেখতে পাওয়া যায়।ছোট বড় সকলেই জাম্বুরা পছন্দ করে থাকি। স্বাদে কিছুটা টক-মিষ্টি হয়। এটা অনেক পুষ্টিগুণসমৃদ্ধ ফল। এতে রয়েছে প্রচুর ভিটামিন-সি এবং ভিটামিন-বি।

জাম্বুরার আরো যেসব গুনাগুণ রয়েছে

জাম্বুরার আরো যেসব গুনাগুণ রয়েছে

  • জাম্বুরা গর্ভবতী মায়েদের জন্য বেশ উপকারী কারন এতে রয়েছে প্রচুর বিটা ক্যারোটিন এবং ফোলিক এসিডের উপাদান। এজন্য গর্ভের শিশুর পুষ্টি বৃদ্ধিতে নিয়মিত জাম্বুরা খান।
  • দাতকে শক্ত করতে জাম্বুরা কার্যকরী। এতে থাকা ভিটামিন সি দাতের ব্যাথা দূর সহ এবং মাড়ি শক্ত করে।
  • জ্বর, কাশি, ঠান্ডায় যারা নাজেহাল তারা জাম্বুরা খেয়ে দেখুন দারুন উপকার পাবেন।
  • হার্টকে সুস্থ রাখতে সহায়তা করে কারন এতে রয়েছে অধিক পরিমান পটাশিয়াম ও পেক্টিন।
  • রক্তস্বল্পতায় জাম্বুরা বেশ উপকারী।
  • জাম্বুরা বয়সের ছাপ দূর করে। এতে স্কিন এবং চুল ভালো রাখে।
  • বিভিন্ন ধরনের ক্যান্সার প্রতিরোধে সাহায্য করে।
  • জাম্বুরা কোষ্ঠকাঠিন্য কমায়, ফাইবার ওজন কময় এবং কোলেস্টেরল কমাতে সাহায্য করে।

 

নাশপাতি

সকলের পছন্দের তালিকায় নাশপাতিও একটি চমৎকার রসালো ফল। যার ৮৩ শতাংশই পানিযুক্ত। নাশপাতিতে রয়েছে প্রচুর পরিমাণে ভিটামিন-এ, ভিটামিন-বি, ভিটামিন-বি২, ভিটামিন-ই, ফলিক এ্যাসিড, ক্যালশিয়াম, পটাশিয়াম, আয়রন, মিনারেল, কপার, আঁশ, অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট রয়েছে।

নাশপাতি ফলে কি কি উপকারিতা রয়েছে?

নাশপাতি ফলে কি কি উপকারিতা রয়েছে?

  • নাশপাতি শরীরের ক্যালশিয়ম যোগায়, হাড়ের ক্ষয় রোধ করে।
  • খুশকি ও চুলপড়া বন্ধ করতে সহায়তা করে ।
  • ডায়াবেটিস প্রতিরোধ করে, রক্তে শর্করা কমাতে ভুমিকা রাখে।
  • নিয়মিত নাশপাতি খেলে করোনারি থ্রম্বোসিস, হার্ট ব্লক, মায়োকার্ডিয়াল ইনফ্যাকশন জাতীয় রোগ থেকে রক্ষা পাওয়া যায়।
  • নিয়মিত রাতে ও বিকেলে খাবার পর নাশপাতি খেলে কোষ্ঠকাঠিন্য দূর হয়।
  • নাশপাতি কোলেস্টেরল মাত্রা কমায় ও শরীরের ওজন কমাতে ভুমিকা রাখে।

 

লেবু

লেবু চিনেন না এমন মানুষ বাংলাদেশে খুঁজে পাওয়া যাবে না। ভিটামিন-সি যুক্ত এই ফল সারা বছর সব যায়গায় পাওয়া যায়। লেবুর রস খাবারের সাথে মেখে খেলে খাবারের স্বাদ বৃদ্ধি করে। লেবুতে রয়েছে অতি উপকারী এসিড, জৈবএসিড, সাইট্রিক এসিড।

অতিগরমে লেবুর সরবত এক অতুলনীয় প্রশান্তি ও সতেজতা এনে দেয়। অনেকেই লেবুর চা খুব খুব পছন্দ করে থাকেন। কারন লেবুতে রয়েছে প্রচুর ঔষধি গুন।

 

লেবুর কি কি স্বাস্থ্য উপকারিতা রয়েছে?

  • লেবুর রস খাদ্য হজম করতে সাহায্য করে। শরীরের বিষাক্ত পদার্থগুলো বের করে দেয়।
  • কাঁচা হলুদ বা নিম পাতার সাথে লেবুর-রস মিশিয়ে ব্যবহার করলে ত্বকের সৌন্দয্য বৃদ্ধি করে এবং ভালো রাখে।
  • লেবু ব্যাকটেরিয়া দমনে কাজ করে ফলে মূত্রথলি ভালো থাকে এবং মূত্রনালিতে ব্যাকটেরিয়া আক্রমণ করতে পারে না।
  • জ্বর, ঠান্ডা এবং শ্বাসকষ্ট হলে ডাক্তাররা লেবু খেতে পরামর্শ দেন।
  • নিয়মিত লেবু খেলে ব্রণ হয় না কারন লেবুর রস ক্ষতিকর ব্যাকটেরিয়ার বিরুদ্ধ কাজ করে।
  • উচ্চ রক্তচাপ কমাতে লেবু বিশেষ ভুমিকা পালন করে।
  • লেবু রক্তের কোলেস্টেরোল ঠিক রাখতে সাহায্য করে।
  • ওজন কমাতে প্রতিদিন সকালে হালকা গরম পানির সাথে মেথি ও লেবুর-রস মিশিয়ে খেলে বেশ উপকার পাওয়া যায়।
  • লেবু রস গল ব্যাথা ও মুখের ঘা দূর করতে ভুমিকা রাখে।

 

সফেদা

একটি সুস্বাদু, মিষ্টি ও পুষ্টিতে পরিপূর্ণ ফল সফেদা। এতে রয়েছে শর্করা, ভিটামিন, আমিষ , ক্যালসিয়াম, সোডিয়াম, জিংক, আয়রন, ম্যাগনেসিয়াম ছাড়াও এতে রয়েছে ভিটামিন-এ, ভিটামিন -সি ভিটামিন -ই, তামা, লোহা, ইত্যাদি।

সফেদা ফলের কি কি পুষ্টিগুণ ও উপকারিতা রয়েছে?

সফেদা ফলের কি কি পুষ্টিগুণ ও উপকারিতা রয়েছে?

  • সফেদায় রয়েছে প্রয়োজনীয় খাদ্য আঁশ যা বদহজম ও কোষ্ঠকাঠিন্য দূর করতে সাহায্য করে।
  • আন্ত্রিক প্রদাহ, পেট জ্বলা, গ্যাস্ট্রিক ইত্যাদি রোগের সমাধান করে।
  • নিয়মিত সফেদা খেলে মুখের ক্যান্সার প্রতিরোধসহ মানসিক ক্লান্তি দূর করে , দাত ভালো রাখে।
  • সফেদা খেলে ফুসফুস ভালোরাখে ফলে শ্বাষকষ্ট, শরীরের কোষের ক্ষতিসাধন, এবং ঘন ঘন ঠান্ডা লাগা দূর করে।
  • সফেদায় চর্বিজতীয় উপাদান না থাকায় শরীর ফিট রাখে এবং ওজন কমাতে সাহয্য করে।
  • গর্ভবতী মায়েদের জন্য সফেদা বেশ উপকারী। গর্ভাবস্থায় বমি বমি ভাব এবং মাথা ঘোরা বন্ধ করতে ভুমিকা রাখে।
  • সফেদায় থাকা ফসফরাস, ক্যালসিয়াম, ও আয়রন হাড়কে মজবুত ও শক্ত করে।
  • সর্দি, কাশিতে সফেদা বেশ উপকারী।
  • সফেদা ত্বকের আর্দ্রতা রক্ষা করে, স্নায়ু শান্ত রাখে, শরীরকে সতেজ রাখে।

 

মাল্টা

আত্মীয়ের বাড়ি বেড়াতে গেলে মাল্টা সাথে নিবে না এমন মানুষ খুব কমই আছে সুতরং বুঝতেই পারছেন মাল্টা কতটা জনপ্রিয় আমাদের দেশে। এটি সহজলভ্য এবং বাজারে সবসময় পাওয়া যায়। ছোট বড় সকলেই ফলটি পছন্দ করেন। কিন্তু এর পুষ্টি গুন সম্পর্কে আমারা অনেকেই জানি না।

মাল্টাতে রয়েছে ভিটামিন সি, ভিটামিন বি, ফসফরাস, ক্যালসিয়াম এবং চর্বিমুক্ত ক্যালোরি।

 

মাল্টা ফলে কি কি উপকারিতা ও পুষ্টিগুণ রয়েছে?

  • হাঁচি-কাশি,সর্দি, গলাব্যাথা, জ্বর জ্বর ভাব দূরকরে শরীরকে সুস্থ রাখে।
  • নিয়মিত মাল্টা খেলে পাকস্থলীকে সুস্থ থাকে। এছাড়াও আলসার ও কোষ্ঠকাঠিন্য থেকে রক্ষা করে।
  • ত্বককে সজিব রাখে। বয়সের ছাপ দূর করে।
  • চুল, দাঁত, নখের ও ত্বকের পুষ্টি যোগায়। এছাড়াও জিহ্বা ও ঠোটের ঘা সহ অনেক রোগ থোকে রক্ষা করে।
  • ক্লোন ক্যান্সার ও ব্রেস্ট ক্যান্সারের হাত থেকে রক্ষা পেতে নিয়মিত মাল্টা খান।
  • মাল্টা দৃষ্টিশক্তি ও স্মৃতি শক্তি বাড়াতে ভুমিকা রাখে।
  • নিয়মিত মাল্টা খেলে শরীরে রোগ প্রতিরোধের ক্ষমতা বৃদ্ধি করে।

 

বরই

আমাদের দেশের প্রায় বাড়িতে বরই গাছ দেখতে পাওয়া যায়। ছোট বড় সবাই বরই খেতে পছন্দ করেন। বরই বিভিন্ন স্বাদের হয়ে থাকে। কাঁচা, পাকা উভয় অবন্থাতেই বরই খাওয়া যায়। অনেকে বানিজ্যিক ভাবে বরই উৎপাদন করে আচাড় তৈরি করে। বরই সহজলভ্য যা বাজারে কিনতে পাওয়া যায়।

 

বরই ফলের কি কি সাস্থ্যোপকারিতা ও পুষ্টিগুণ রয়েছে?

  • ক্যান্সার প্রতিরোধে বরই সায্য করে। এতে বিভিন্ন অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট উপাদান রয়েছে যা শরীরে ক্যান্সার প্রতিরোধে গুরুত্বপূর্ণ ভুমিক রাখে।
  • বরইতে থাকে শক্তিশালী ক্যামিক্যাল যা অনিদ্রা, দুশ্চিন্তা, অবসাদ এবং ক্লান্তি দূর করে।
  • রক্ত পরিষ্কার এবং হজম প্রক্রিয়া সহজ করতে বরই বেশ উপকারী।
  • বরইতে আছে প্রচুর অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট যা শরীরের ফ্রি র‍্যাডিকেলগুলোকে নিষ্ক্রিয় করে দেয়।
  • এছাড়াও লিভার সুরক্ষা করে, ওজন নিয়ন্ত্রণ করে, হাড় মজবুত করে, রক্ত সঞ্চালনের প্রক্রিয়া বৃদ্ধি করে, পেটের সমস্যা দূর করে এবং মাংসপেশি শক্তিশালী করে।

 

কলা

কলা খায়নি এমন মানুষ খুঁজে পাওয়া যাবে না। খুব সহজলভ্য সব যায়গাতেই পাওয়া যায়। অনেক সময় কলা ওষুধের চেয়েও অনেক কার্যকরী। প্রোটিন, ভিটামিন এবং অন্যান্য পুষ্টিগুণে পরিপূর্ণ মজাদার একটি ফল কলা। কলায় রয়েছে প্রচুর পরিমাণ ফাইবার যা বিভিন্ন রোগ থেকে রক্ষা করে।

 

কলায় কি কি পুষ্টিগুণ ও উপকারিতা রয়েছে?

  • কলায় রয়েছে প্রচুর পরিমাণ আয়রন, যা হিমোগ্লোবিনের পরিমাণ বাড়ায় এবং যাদের রক্তস্বল্পতা রয়েছে তাদের রক্তস্বল্পতা কাটিয়ে উঠতে সহায়তা করে।
  • পাকস্থলির এসিডকে নিয়ন্ত্রণ এবং আলসার রোধে কলা বিশেষ ভুমিকা রাখে।
  • কলায় রয়েছে প্রচুর পরিমাণ ফাইবার। কোষ্টকাঠিন্য দূর করতে পাকা কলা বেশ কার্যকরী।
  • কলায় থাকা বিভিন্ন ভিটামিন রক্তে শর্করা গঠনে কাজ করে।
  • কলা শরীরকে দূর্বল থেকে সতেজ করে।
  • দেহের হরমোনের ভারসাম্য বজায় রাখতে কলা ভুমিকা রাখে।
  • নিয়মিত কলা খেলে স্মৃতিশক্তি বৃদ্ধি হয়।
  • কলায় প্রচুর এনার্জি তথা শক্তি রয়েছে।
  • মানসিক চাপ, বিষণ্ণতা রোধে কলা বেশ উপকারী।
  • কলায় আছে প্রচুর পরিমাণ ক্যালসিয়াম এবং সামান্য পরিমাণ লবণ যা রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণ করে এবং হৃদপিণ্ড ভালো রাখে।

 

কাঁঠাল

আকারে বেশ বড় এবং পুষ্টিগুণ সমৃদ্ধ কাঠাল বাংলাদেশের জাতীয় ফল হিসেবে পরিচিত। সহজ লভ্য এবং বাংলাদেশের সব অঞ্চলেই কম- বেশি কাঁঠাল পাওয়া যায়। ভিটামিন সমৃদ্ধ কাঁঠালে রয়েছে প্রচুর পরিমাণে ক্যালরি। কাঁঠাল অপুষ্টিজনিত সমস্যা যেমন- রাতকানা এবং রাতকানা থেকে অন্ধত্ব প্রতিরোধে খুবই উপকারী।কাঁচা কাঁঠালে রয়েছে প্রচুর আমিষ ও ভিটামিন যা তরকরি হিসেবে রান্না করে খাওয়া যায়। পাঁকা কাঁঠালের বিচি রান্না করে খেতে সকলেই খুবই পছন্দ করেন। এমনকি কাঁঠালের বিচি ভেজে পরিষ্কার করে ভর্ত করে খেতেও দারুণ মজাদার।

 

কাঁঠালের পুষ্টিগুণ ও উপকারিতা

  • কাঁঠালে রয়েছে শক্তিশালী অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট যে কারনে ক্ষতিকর ফ্রির‌্যাডিকেলস থেকে শরীরকে রক্ষা করে।
  • সর্দি-কাশি রোগের সংক্রমণের হাত থেকে রক্ষা করে।
  • কাঁঠাল বদহজম রোধ করে।
  • কাঁঠালে থাকা খনিজ উপাদান ম্যাঙ্গানিজ যা রক্তে শর্করা বা চিনির পরিমাণ নিয়ন্ত্রণে ভুমিকা রাখে।
  • কাঁঠালে রয়েছে প্রচুর ম্যাগনেসিয়াম যা হাড়ের গঠন ও হাড় শক্তিশালী করণে ভূমিকা রাখে।
  • কাঁঠাল হৃদরোগের ঝুঁকি কমায়।
  • গর্ভবতী মায়েরা কাঁঠাল খেলে তার স্বাস্থ্য স্বাভাবিক থাকে এবং গর্ভস্থসন্তানের স্বাভাবিক বৃদ্ধি হয়।
  • কাঁঠালে রয়েছে প্রচুর আঁশ ফলে কাঁঠাল খেলে কোষ্ঠকাঠিণ্য দূর হয়।
  • কাঁঠালে থাকা প্রচুর ভিটামিন এ যা রাতকানা রোগ প্রতিরোধ করে।
  • কাঁঠালে রয়েছে ফাইটোনিউট্রিয়েন্টস যা, আলসার, ক্যান্সার, উচ্চ রক্তচাপ এবং বার্ধক্য প্রতিরোধে বিশেষ ভুমিকা রাখে।
  • কাঁঠালে থাকা ভিটামিন “সি” রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধিসহ দাঁতের মাড়িকে শক্তিশালী করে।
  • কাঁঠালে চর্বির পরিমাণ খুবই কম ফলে এই ফল খাওয়ার কারণে ওজন বৃদ্ধি হবার ভয় নেই।
  • উচ্চ রক্তচাপ কমাতে কাঠাল খুব উপকারী কারন এতে রয়েছে পটাশিয়ামের উৎকৃষ্ট উৎস
  • দুগ্ধদানকারী মায়েদের জন্য কাঠাল অনেক উপকারী কারন কাঁঠাল খেলে দুধের পরিমাণ বৃদ্ধি পায়।
  • কাঁঠাল দেহের রক্তাল্পতা দূর করে।

 

আম

ছেট বড় সকলের নিকট খুব পছন্দের ফল আম। আমাদের দেশে শত প্রজাতির আম পাওয়া যায় একেক প্রজাতির আম একেক স্বদের। কাঁচা পাঁকা উভয় অবস্থাতেই আম খাওয়া য়ায়। আম দিয়ে নানা স্বাদের বিভিন্ন রকমের আঁচার, জুস, জেলি, আমস্বত্ব তৈরি করা হয়।

আমের মৌসুমকে বলা হয় মধুমাস। এই সময়গুলোতে বাজারে নানা জাতের সহজ লভ্য প্রচুর আম পাওয়া যায়। আমে রয়েছে প্রচুর ভিটামিন এ ও ভিটামিন সি। আয়ুর্বেদ ও ইউনানি পদ্ধতির চিকিৎসায় পাকা ফল ল্যাকজেটিভ, রোচক ও টনিক বা বলকারকরূপে ব্যবহৃত হয় । রাতকানা ও অন্ধত্ব প্রতিরোধে আম মহৌষধের কাজ করে।

আমের বিভিন্ন উপকারিতা ও পুষ্টিগুণ

আমের বিভিন্ন উপকারিতা ও পুষ্টিগুণ

  • আমে রয়েছে উচ্চ মাত্রার ভিটামিন সি ও ফাইবার যা রক্তে উচ্চমাত্রার কোলেস্টেরল নিয়ন্ত্রণের সহায়তা করে।
  • ওজন কমাতে আম বিশেষ ভুমিকা রাখে ।
  • চোখ ভালো রাখতে আম বেশ উপকারী।
  • গরমে আম বেশ উপকারী। অতিরিক্ত গরম থেকে শরীররকে শীতল রাখতে আম ভুমিকা রাখে।
  • আম শরীরের রোগ প্রতিরোধের ক্ষমতা বৃদ্ধি করে।
  • মনযোগ ও স্মৃতিশক্তি বৃদ্ধি করতে আম বেশ উপকারী।
  • বদহজম কোষ্ঠকাঠিন্য থেকে আম রক্ষা করে ফলে পাকস্থলী সংক্রান্ত অনেক রোগ থেকেও রক্ষা পাওয়া যায়।
  • আমে বিভিন্ন ধরনের অ্যাসিড রয়েছে যেমন- টারটারিক অ্যাসিড, ম্যালিক অ্যাসিড, সাইট্রিক অ্যাসিড যা শরীরের অ্যালকালি নামের রাসায়নিকের ভারসাম্য ঠিক রাখতে সহায়তা করে।
  • আম ত্বকের সৈন্দর্য্য বৃদ্ধি করে।
  • আম বিভিন্ন ধরনের ক্যান্সার যেমন- স্তন ক্যান্সার, কোলন ক্যান্সার, প্রোস্টেট ক্যান্সারের বিরুদ্ধ কাজ করতে বেশ কার্যকর।

সতর্কতা: কোন কিছুই বেশি খাওয়া উচিত নয় বিশেষ করে ডায়াবেটিস রোগীরা আম খাওয়ার আগে পুষ্টিবিদের পরামর্শ নিয়ে নিবেন।

লিচু

চমৎকার স্বাদের একটি মৌসুমী ফল লিচু। গ্রীষ্মকালীন এই ফলটি খুব কম সময় বাজারে থাকে। ফলটি ছোট বড় সকলের কাছেই খুব প্রিয়। পুষ্টি সমৃদ্ধ এই ফলটি নানা রকম রোগ থেকে আপনাকে রক্ষা করবে। তবে খুব বেশি খাওয়া ঠিক নয়।

লিচুর পুষ্টিগুণ ও উপকারিতা

লিচুর পুষ্টিগুণ ও উপকারিতা

  • লিচু রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ায়।
  • বয়সের ছাপ পড়তে বাধা দেয় এবং ত্বক উজ্জল করে।
  • রক্তের উপাদান তৈরি করতে ভুমকিা রাখে কারন লিচুতে রয়েছে বিভিন্ন ভিটামিন ও নানা খনিজ উপাদান।
  • শরীরের বিভিন্ন ধরনের ব্যাথা দূর করে।
  • লিচু শরীরের ওজন বৃদ্ধি করে।

 

লিচুর ক্ষতিকর দিক

  • খালি পেটে লিচু খাওয়া ঠিক নয় কারন, খালি পেটে লিচু খেলে শরীরে বিষক্রিয়া হতে পারে।
  • মাত্রাতিরিক্ত লিচু খেলে শরীরের রক্তচাপ অস্বাভাবিকভাবে কমে যাওয়ার সম্ভাবনা থাকে।
  • বেশি পরিমান লিচু খেলে রক্তের গ্লুকোজ কমে যায়।

 

বেল

বেল একটি ঔষধী ফল। বেলের রয়েছে হাজারও উপকারিতা। অনেক সময় ঔষধের চেয়েও বেল শক্তিশালী ভুমিকা রাখে। গরমে বেলের শরবত খেতে সকলেই পছন্দ করেন। বেল কাঁচা পাঁকা উভয় অবস্থাতেই সমান উপকারী। কোষ্ঠকাঠিন্য, আমাশয়ে বেলের বিকল্প নাই। বেল পাতার রস, মধু ও গোল মরিচের গুঁড়া মিশিয়ে পান করলে জন্ডিস রোগ নিরাময় হয়।

 

বেলের উপকারিতা ও পুষ্টিগুণ

  • ডায়াবেটিস রোগিদের জন্য বেল বেশ উপকারী। পাঁকা বেলে মেথানল নামের একটি উপাদান থাকে, যা ব্লাড সুগার কমাতে দারুণ ভাবে কাজ করে। এক্ষেত্রে শরবত ছাড়া পাঁকা বেল খেতে হবে।
  • আলসারের ঔষধ হিসেবে বেল উপযোগী।
  • বেল কোষ্ঠকাঠিন্য কমাতে ভুমিকা রাখে।
  • শরীরে শক্তি ও রোগ প্রতিরোধের ক্ষমতা বাড়াতে বেল ভুমিকা রাখে।
  • নিয়মিত বেলের শরবত খেলে ব্লাড প্রেসার কমে যায়।
  • ক্যান্সার প্রতিরোধে বেল দারুণ ভুমিকা রাখে।
  • শরীরের বিভিন্ন ব্যাথা দূর করতে বেল খুব উপকারী।

 

কদবেল

টক স্বাদযুক্ত কদবেল মোটামুটি সকলের কাছেই পরিচিত। কদবেলে রয়েছে প্রচুর পরিমাণ পুষ্টি উপাদান।শরীরকে সুস্থ ও রোগ প্রতিরোধের ক্ষমতা বৃদ্ধি করতে কদবেল বেশ উপকারী। কাঁঠাল ও পেয়ারার প্রায় সমান খাদ্যশক্তি রয়েছে কদবেলে। আম, কাঠাল, লিচু, আমলকী, আনারস,পেঁপের চেয়ে তিন গুনের বেশি পুষ্টি উপাদান রয়েছে।

কদবেলের উপকারিতা ও পুষ্টিগুণ

কদবেলের উপকারিতা ও পুষ্টিগুণ

  • কদবেলে রয়েছে- পানীয়, খাদ্যশক্তি, খনিজপদার্থ, আমিষ, ক্যালসিয়াম, লৌহ, চর্বি, ভিটামিন-বি, ভিটামিন-সি
  • এটি দীর্ঘস্থায়ী কোষ্ঠকাঠিন্য ও দীর্ঘস্থায়ী আমাশয় দূর করে।
  • কদবেল রক্ত পরিষ্কার করতে ভুমিকা রাখে এবং রক্ত পরিষ্কার করতে সহায়তা করে
  • গলায় ঘা বা ক্ষত হলে ও ঘনঘন হেঁচকি উঠলে কদবেল খেলে দ্রুত সেরে যায়।
  • সর্দিকাশির জন্য বেশ উপকারী ।
  • এর টক মিষ্টি স্বাদ খাবারে রুচি রাড়াতে সহায়তা করে।
  • ব্রণ ও মেছতার সমস্যা সমাধানে কাঁচা কদবেলের রস মুখে মাখলে বেশ উপকার পাওয়া যায়।

 

আতা

পুষ্টি গুণে ভরা আতাফল আমাদের দেশে  সুপরিচিত এবং।ফলটি খেতে সুস্বাদু এবং ভারি মিষ্টি লাগে।ফলটিতে রয়েছে দারুণ সুগন্ধ এবং একটা নরম শাঁসালো ভাব। খাওয়ার সময় জিভে চিনির মতো মিহি দানা দানা লাগে। তবে আতা ফল আমাদের দেশে খুব কমেই উৎপাদান হয়। বাজারেও সবসময় পাওয়া যায় না। ফলে এর দামও বেশি থাকে।

আতা ফলের পুষ্টিগুন ও উপকারিতা

আতা ফলের পুষ্টিগুন ও উপকারিতা

  • আতাফলে থাকা ভিটামিন-এ দৃষ্টিশক্তি বাড়াতে বিশেষ ভুমিকা রাখে।
  • আতাফলে রয়েছে প্রচুর আয়রন যা লোহিত রক্তকণিকা বাড়তেও সাহায্য করে। ফলে যাদের রক্তশূণ্যতা রয়েছে তাদের জন্য ফলটি খুব উপকারী।
  • আতাফলে থাকা ক্যালশিয়াম শরীরের হার মজবুত ও গঠন করতে ভুমিকা রারখে।
  • আতা ফল খেলে রক্তচাপ ক্রমে নিয়ন্ত্রণে আসে । এবং শরীরে থাকা খারাপ কোলেস্টেরলকে বের করে দেয়।
  • হৃদরুগীদের জন্য আতা ফল দারণ উপকারী ।
  • আতাফলে রয়েছে ফসফরাস যা খাবারের হজম শক্তিকে বাড়িয়ে তুলতে ভুমিকা রাখে।
  • আতাফল রোগ প্রতিরোধে বিশেষ ভুমিকা পালন করে।
  • আতা ফ্লেভোনয়েড সমৃদ্ধ ফল যা বিভিন্ন ধরনের টিউমার এবং ক্যান্সারের চিকিৎসায় সহায়কভুমিকা রাখে।
  • এছাড়াও আতা ফল এনিমিয়া রোধ করে, চুলের বৃদ্ধি ঘটায়, উকুন থেকে মুক্তি দেয়, আতা ফল তারুণ্য ধরে রাখে, ওজন বাড়াতে সহায়তা করে এবং আলসার, গ্যাস্ট্রিকের সমস্যা প্রতিরোধ করে।

 

ফুটি

নানা স্বাস্থ্য উপকারী গুণে ভরপুর ফুটি গ্রীষ্মকালের অন্যতম একটি ফল। অনেকেই ফুটি খেতে বেশ পছন্দ করেন। সহজ লভ্য এই ফলটিতে রয়েছে নানা পুষ্টি গুনে ভরপুর। সুগন্ধযুক্ত এই ফলটি খাওয়ার আগে জেনে নিন এর নানা পুষ্টিগুণ ও উপকারিতা সম্পর্কে।

 

ফুটিতে রয়েছে যেসব পুষ্টিগুণ ও উপকারিতা

  • যাদের রক্তশুণ্যতা আছে তাদের জন্য ফুটি খুব উপকারি ফল। কারণ এতে রয়েছে প্রচুর পরিমাণে ফলিক অ্যাসিড যা রক্ত তৈরিতে বিশেষ ভুমিকা রাখে।
  • শরীরের ওজন কমাতে এবং উচ্চ রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে ফুটি খুব উপকারি।
  • শরীরের ক্ষত দ্রুত সারাতে ফুটি বেশ উপকারী। কারন এতে রয়েছে ক্যারোটিন ও ভিটামিন সি।
  • গরমে ফুটি বেশ উপকারী কারন এতে রয়েছে প্রচুর পরিমাণে পানি।
  • ফুটিতে থাকা প্রচুর পরিমাণ খাদ্যআঁশ হজমশক্তি বৃদ্ধিতে ভুমিকা রাখে।
  • এছাড়াও ক্ষুধামান্দ্য ও নিদ্রাহীনতা দূর করে। ত্বক উজ্জল করে, ব্রণের সমস্যা দূর করে।

 

গাব

আমাদের সকলের পরিচিত একটি দেশীয় ফল গাব। পুষ্টিগুণ সমৃদ্ধ সুস্বাদু, মিষ্টি এবং কোষযুক্ত ফলটির রয়ে অনেক উপকারিতা। দেখতে এবং দামে খুব সাধারণ মনে হলেও পুষ্টিতে কোন অংশে সাধারণ নয়।

 

গাবের ফলের  স্বাস্থ্য উপকারিতা ও গুনাগুণ

  • গাবে রয়েছে প্রচুর আঁশ যা কোষ্ঠ-কাঠিন্য দূর করতে ভুমিকা রাখে এবং কোলন ক্যানসারের ঝুঁকি কমায়।
  • গাবে থাকা ভিটামিন ভিটামিন ‘সি’ এবং ‘এ’ শরীরের রোগ প্রতিরোধের ক্ষমতা বৃদ্ধি করে।
  • গাবে থাকা আয়রণ রক্ত চলাচলের উন্নতি ঘটায় এবং দেহের গুরুত্বপূর্ণ টিস্যুগুলোতে অক্সিজেন প্রবাহ বৃদ্ধি করে।
  • গাবে রয়েছে প্রচুর আঁশ যা শরীরে কোলেস্টেরল কমায় ফলে রক্ত চাপ, হার্টঅ্যাটাক এবং স্ট্রোকের ঝুঁকি কমাতে কার্যকর ভুমিকা রাখে।
  • এছাড়াও সর্দি-কাশি থেকে মুক্তি পাওয়া যায়, অ্যাজমা দূর করে, কোষ্ঠকাঠিন্য এবং অন্যান্য গ্যাস্ট্রিক জাতীয় সমস্যা দূর করে, রক্ত চাপ, হার্টঅ্যাটাক এবং স্ট্রোকের ঝুঁকি কমাতে সাহায্য করে, পেশি গঠন, চুলের বৃদ্ধি এবং হজমক্রিয়ার উন্নতি ঘটায়, শারীরিক দুর্বলতা কমায়, রক্তচাপ ও ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণ করে।

 

তরমুজ

গ্রীষ্মকালীন একটি জনপ্রিয় ফল তরমুজ।ফলটিতে প্রচুর পরিমাণে ভিটামিন, মিনারেল, অ্যামাইনো অ্যাসিড, অ্যান্টিঅক্সিজেনের মতো নানা পুষ্টি উপাদান। শরীরের পানিশুণ্যতা রোধে তরমুজ বেশ উপকারী। উচ্চ রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে এবং হৃদযন্ত্রের সুস্থতায় তরমুজ বেশ উপকারী ফল।

 

তরমুজ ফলের পুষ্টিগুণ ও উপকারিতা

  • তরমুজ ক্যান্সার প্রতিরোধে ভুমিকা রাখে। কারন এতে থাকা বিশেষ উপাদান ক্যান্সারের কোষ বৃদ্ধি রোধ করে।
  • তরমুজ ওজন কমাতে সহায়তা করে। শরীরের কার্যক্ষমতা, রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়াতেও ভিুমিকা রাখে।
  • তরমুজে থাকা বিটা ক্যারোটিন, ম্যাগানিজ আপনার ত্বক মসৃণ করে ব্রণের সমস্যা দূর করতে ভুমিকা রাখবে।
  • সর্দি কাশি কিংবা ঠাণ্ডা জ্বরের মতো সমস্যায় তরমুজ ওষুধের মতো কাজ করে থাকে।
  • ডায়াবেটিস রোগীরাও অনায়াসে খেতে পারেন তরমুজ। তাদের জন্য উপকারিও বটে।
  • চোখের সমস্যা দূর করতেও তরমুজের ভুমিকা আছে।

 

পেয়ারা

সকলের কছেই খুব পরিচিত এবং সুস্বাদু একটি ফল পেয়ারা।বর্ষা মৌসুমের ফল হলেও পেয়ারা সারা বছরই পাওয়া যায়। বিশেষ করে ভিটামিন ‘সি’ এর পরিমাণ আমলকির চেয়েওে অনেক বেশি পেয়ারাতে।পুষ্টিগওণেও পেয়ারা সমৃদ্ধ।

 

পেয়ারার বিভিন্ন উপকারিতা ও পুষ্টিগুণ

  • পেয়ারাতে থাকা প্রচুর পরিমাণ ভিটামিন সি শরীরের রোগ প্রতিরোধর ক্ষমতা বৃদ্ধি করে। এছাড়াও পেয়ারায় রয়েছে ক্যারটিনয়েড, পলিফেনল, লিউকোসায়ানিডিন ও অ্যামরিটোসাইড নামক অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট।
  • নিয়মিত পেয়ারা খেলে উচ্চ রক্তচাপ নিয়ন্ত্রনে আসে।
  • পেয়ারায় উচ্চ পরিমাণে আয়রন এবং ভিটামিন সি থাকায় ঠান্ডাজনিত সমস্যা দূর করতে ভুমিকা রাখে।
  • দৃষ্টিশক্তিবাড়াতে পেয়ারা বেশ উপকারী এবং রাতকানা রোগ প্রতিরোধে বিশেষ ভুমিকা রাখে।
  • মাসিক চলাকালিন সময়ে পেয়ারার পাতা চিবিয়ে বা রস খেলে পেট ব্যাথা দূর করে।
  • এছাড়াও পাকস্থলী ভালোরাখে, ক্যান্সারের ঝুঁকি কমায়, শরীরের পেশী এবং স্নায়ু শিথিল করতে সাহায্য করে, রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধ করে।

 

 

আমড়া

পুষ্টিতে ভরপুর টক মিষ্টি একটি অতি পরিচিত ফল আমড়া।সাধারণত আমড়া কাঁচাই খাওয়া হয়। এছাড়াও আমড়া দিয়ে আচার, চাটনি এবং জেলি তৈরি করা যায়। ফলটিতে রয়েছে প্রচুর পরিমাণে পুষ্টিগুণ। আমড়াতে রয়েছে প্রোটিন, ক্যালসিয়াম, আয়রন ভিটামিন সি ।

আমড়ার পুষ্টি গুণাগুণ ও উপকারিতা

আমড়ার পুষ্টি গুণাগুণ ও উপকারিতা

  • আমড়ায় থকা অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট ও ফাইবার হজম শক্তি বৃদ্ধিতে ভুমিকা রাখে।
  • ফ্রি র‍্যাডিকেলের ক্ষতি থেকে শরীরকে রক্ষা করে।কারন আমড়ায় রয়েছে প্রচুর ভিটামিন সি।
  • পেয়ারা বদ হজম, পেট ফাঁপা, কোষ্ঠকাঠিন্যের মত রোগ থেকে মুক্তি পেতে সাহায্য করে।
  • সর্দি কাশি, ইনফ্লুয়েঞ্জা রোগের জীবাণু থেকে রক্ষা পেতে ভুমিকা রাখে।
  • মুখে রুচি ও ক্ষুধা বৃদ্ধি এবং ক্যালসিয়ামের চাহিদা মেটাতে ভুমিকা রাখে।
  • নিয়মিত আমেড়া খেলে লাল রক্ত কণিকার উৎপাদন বৃদ্ধি করে। রক্ত চলাচল স্বাভাবিক রাখে।
  • আমড়াতে থাকা প্রচুর পরিমাণে ফাইবার বা খাদ্যআঁশ থাকে যা তাই ওজন কমতে সাহায্য করে এবং বদহজম ও কোষ্ঠকাঠিন্য প্রতিরোধে সায্য করে।
  • এছাড়াও অ্যানেমিয়া বা রক্তশূন্যতা দূর করে। ত্বক উজ্জল ও নিরাপদ রাখে। সর্দি কাশি,ইনফ্লুঞ্জার সংক্রমণ থেকে বাঁচাতে সাহায্য করে। আয়রন এর অভাব পূরন করে।

চেরি ফল

কামরাঙ্গা

আমাদের দেশের কামরাঙ্গা একটি পরিচিত ফল। যদিও দিন দিন ফলটি হারিয়ে যাচ্ছে। বাজারেও খুব একটা পাওয়া যায় না। কামরাঙা ফলের রয়েছে বিভিন্ন ধরণের ঔষধিগুণ। কামরাঙ্গায় থাকা ভিটামিন-বি এবং ফাইবার আপনার পাচন স্বাস্থ্যের খেয়াল রাখে, তেমনই স্ট্রোক এবং হার্টের বিভিন্ন রোগের হাত থেকে মুক্তি পেতে সাহায্য করে।

কামরাঙ্গা ফলের পুষ্টিগুণ ও উপকারিতা

কামরাঙ্গা ফলের পুষ্টিগুণ ও উপকারিতা

  • এই ফলে প্রচুর রয়েছে পরিমাণে ফাইবার এবং ক্যালোরির পরিমাণ অত্যন্ত কম থাকায় শরীরের ওজন কমাতে ভুমিকা রাখে।
  • নিয়মিত কামরাঙ্গা খেলে ক্যান্সারের ঝুঁকি কমে।
  • ডায়াবেটিসরোধ করতে কামরাঙ্গা বিশেষ ভুমিকা রাখে।
  • রোগপ্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়াতে সাহায্য করে।
  • কোষ্ঠকাঠিন্যের সমস্যা দূর করে হজম শক্তি বাড়াতে সাহয্য করে।
  • হার্টেকে সুস্থ ও স্বাভাবিক রাখতে কামরাঙ্গা বিশেষ ভুমিকা রাখে।
  • কোলেস্টেরলেরস্তরের ভারসাম্য বজায় রাখতে কামরাঙ্গা সাহায্য করে।
  • কামরাঙায় অ্যান্টি-অক্সিডেন্ট আয়রন, জিংক, ফসফরাস এবং ম্যাগনেশিয়াম থাকায় অ্যাজমার মতো শ্বাস সম্পর্কিত বিভিন্ন সমস্যার সমাধানে ভুমিকা রাখে।
  • এছাড়া শরীরের হাড় মজবুত করে, ত্বক উজ্জ্বল ও মসৃণ করে, ব্রণ সমস্যার সমাধান করে।

চেরি ফল

বেদানা

পুষ্টিগুণে সমৃদ্ধ অতি পরিচিত ও সকলের পছন্দের ফল বেদানা। অনেকে ফলটিকে ডালিম বা আনারও বলে থাকে। ফলটিতে থাকা ভিটামিন সি, অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট এবং আরও নানাবিধ শক্তিশালী পুষ্টি ও ঔষধী উপাদান দেহে প্রবেশ করা মাত্রই শরীরের প্রতিটি কোষ, শিরা-উপশিরাকে, সেই সঙ্গে গুরুত্বপূর্ণ অঙ্গগুলোর কার্যক্ষমতা বাড়িয়ে তোলে। বেদানার পুষ্টিগুণ বিভিন্ন রোগ প্রতিরোধে অনন্য ভুমিকা রাখে।

ডালিম তথা বেদনা ফলের পুষ্টিগুণ ও উপকারিতা

ডালিম তথা বেদনা ফলের পুষ্টিগুণ ও উপকারিতা

  • বেদানায় থাকা অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট ব্রেইনে সমস্যা এবং স্মৃতিশক্তি বৃদ্ধিতে বেশ উপকারীঅ
  • শরীর সচল এবং সুস্থ রাখতে আমাদের শীরের যেসব ভিটামিনের প্রয়োজন তার সবকটি রয়েছে বেদানায়।
  • বেদানায় পেটের বিভিন্ন ব্যাথা দূর করে।
  • হার্ট অ্যাটাক বা স্ট্রোকের মতো ভয়ংকর রোগে আক্রান্ত হওয়া থেকে রক্ষা পেতে বেদনা সাহায্য করে।
  • চুল পড়া রোধ করে এবং ত্বকের সৌন্দর্য বৃদ্ধি করে।
  • অ্যানিমিয়ার মতো রোগ থেকে মুক্তিপাওয়া সম্ভব।
  • নিয়মিত ডালিম খেলে ডায়াবেটিসের মতো রোগ থেকে দূরে থাকা সম্ভব।
  • রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে ডালিম বেশ উপকারী।
  • হাড়ের জয়েন্টের সচলতা বৃদ্ধি করে। দাঁত শক্ত করে।

চেরি ফল

পেঁপে

আমাদের দেশের ছোট বড় সকলের কাছেই পছন্দের একটি ফল পেঁপে।ফলটি স্বাদে ও গুনে অনন্য।এতে রয়েছে ভিটামিন এ, সি, এবং কে, নিয়াসিন, ম্যাগনেসিয়াম, পটাসিয়াম, প্রোটিনসহ নানা পুষ্টিগুণ। কাঁচা অথবা পাঁকা উভয় ভাবেই খাওয়া যায়। কাঁচা পেঁপে তরকারী হিসেবে আমরা খেয়ে থাকি।

 

পেঁপের বিভিন্ন পুষ্টিগুণ ও উপকারিতা

  • নিয়মিত পেঁপে খেলে হৃদরোগ থেকে রক্ষা পাওয়া সম্ভব।
  • দৃষ্টিশক্তি বাড়াতে এবং চোখের নানা সমস্যা দূর করতে পেপে বেশ উপকারী।
  • পাঁকা পেঁপে বদহজম দূর করতে সাহায্য করে। মুখে রুচি বাড়ে, কোষ্ট পরিস্কার করে এবং বায়ু দূর করে।
  • পেঁপেতে কোনো কোলেস্টেরল নেই আছে প্রচুর ফাইবার। আপনার শরীরের কোলেস্টেরলের মাত্রা নিয়ন্ত্রণে থাকবে।
  • পেঁপেতে থাকা প্রচুর পরিমাণে অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট, বিটা ক্যারোটিন, ফ্লেভানয়েড, লুটেইন, ক্রিপ্টোক্সান্থিন যা ক্যানসারের ঝুঁকি কমাতে ভুমিকা রাখে।
  • এছাড়াও চুলের যত্নে, ত্বকের যত্নে, ব্রণের দাগ দূর করতে পেপের ব্যাবহার রয়েছে।

 

আমলকি

আমলকি একটি ঔষধি ফল । এর মাঝে রয়েছে বিভিন্ন পুষ্টিগুণ ও বিভিন্ন রোগের প্রতিকার । যে কেউ ফলটি খেতে পারেন এর কোন পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া নেই। আমলকি কাঁচা খাওয়া ছাড়াও বিভিন্ন ভাবে খেতে পারেন, যেমন- আচার, মোরব্বা, পাউডার করে।

 

আমলকীর বিভিন্ন পুষ্টিগুণ ও উপকারতিা

  • চুলের যত্নে আমলকী খুব কার্যকরী। চুলের খুসকি দূর করে, চুল পাকা প্রতিরোধ করে। চুলের গোড়া মজবুত করে, চুল বৃদ্ধিতে ভুমিকা রাখে।
  • কোষ্ঠকাঠিন্য ও পাইলসের সমস্যা দূর করতে আমলকী বেশ উপকারী। পেটের সমস্যা, বদহজম দূর করতে সাহায্য করে।
  • খাবারের সঙ্গে আমলকীর আচার খেলে খাবারে রুচি, স্বাদ বারে ফলে হজমশক্তি বৃদ্ধি পায়।
  • নিয়মিত আমলকীর রসের সঙ্গে মধু মিশিয়ে খেলে ত্বকের কালো দাগ দূর করে ত্বকের উজ্জ্বলতা বৃদ্ধি করবে।
  • আমলকী চোখের বিভিন্ন সমস্যা দূর করাসহ দৃষ্টিশক্তি বাড়াতে সাহায্য করে।
  • আমলকী দাত মজবুত ও শক্ত রাখে।
  • মানসিক চাপ কমাতে এবং রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়াতে আমলকী ভুমিকা রাখে।
  • নিয়মিত আমলকী খেলে শরীরের কার্যক্ষমতা বাড়িয়ে তোলে।পেশী মজবুত করে। কফ, বমি, অনিদ্রা, ব্যথা দূর করে।
  • হৃদযন্ত্র এবং ফুসফুসকে শক্তিশালী করে। শরীরের ওজন কমাতে সাহয্য করে।
  • রক্ত থেকে দূষিত কণা বের করে রক্তকে সচ্ছ রাখে এবং লোহিত রক্তকণিকার সংখ্যা বাড়িয়ে দাঁত ও নখ ভাল রাখে।
  • ডায়াবেটিস রোগিদের জন্য আমলকী বেশ উপকারি কারন আমলকী ব্লাড সুগার লেভেল নিয়ন্ত্রণে রাখে এবং কোলেস্টেরল লেভেলেও কম রাখাতে সাহায্য করে।

তিন ফল

জামরুল

সকলের কাছে জামরুল খুব পরিচিত একটি ফল। ফলটি কম বেশি সব জাগাতেই পাওয়া যায়। এতে রয়েছে পানি, প্রোটিন, কার্বোহাইড্রেট, ডায়েটারি ফাইবার, চর্বি, কোলেস্টেরল, ভিটামিন সি, ভিটামিন এ, ভিটামিন বি১, ভিটামিন বি৩, ক্যালসিয়াম, আয়রন, ম্যাগনেসিয়াম, ফসফরাস, পটাশিয়াম, সোডিয়াম।

জামরুল ফলের বিভিন্ন উপকারিতা ও পুষ্টিগুণ

জামরুল ফলের বিভিন্ন উপকারিতা ও পুষ্টিগুণ

  • ক্যানসারের ঝুঁকি কমায়।
  • রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ায়।
  • কোলেস্টেরল তৈরিকে নিয়ন্ত্রণ করে।
  • রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণ করে ও স্ট্রোকের ঝুঁকি কমায়।
  • হজমশক্তি বাড়ায় এবং শরীরের ওজন নিয়ন্ত্রণ রাখে।
  • কোষ্ঠকাঠিন্য দূর করে হজম শক্তি বৃদ্ধি করে।
  • লিভার কোষ ধ্বংস করা থেকে রক্ষা করে লিভার ভালো রাখে।
  • রক্তের গ্লুকোজের মাত্রাকে নিয়ন্ত্রণ করে ফলে ডায়াবেটিস কমে যায়।

তিন ফল

তেঁতুল

তেতুল মানেই জিভে জল আসা। শরীরের জন্য তেঁতুল খুবই উপকারী। তবে অতিরিক্ত খেলে ক্ষতি হবার সম্ভাবনা আছে এবং ভরাপেটেই তেঁতুল খাওয়া ভালো। তেঁতুল মস্তিষ্ক ভালো রাখে। হৃদরোগসহ বিভিন্ন রোগ থেকে মুক্তি পেতে তেঁতুল খুব উপকারী। তেঁতুলে থাকা আয়রন মস্তিষ্ক ও শরীরের জন্য অনেক উপকারী। তেঁতুলগাছের পাতা, ছাল, ফলের কাঁচা ও পাকা শাঁস, পাকা ফলের খোসা, বীজের খোসা সব কিছুই বিভিন্ন রোগের ঔষধের ভুমিকা রাখে। তেঁতুল বিভিন্ন ভাবে খাওয়া যায়। তেঁতুলের আঁচার, চাটনী সকলের কাছে প্রিয়।

 

খনিজ পদার্থ, আঁশ, খাদ্যশক্তি, আমিষ, চর্বি, শর্করা, ক্যালসিয়াম, আয়রন, ক্যারোটিন, ভিটামিন বি, ভিটামিন সি, ফসফরাস , পটাশিয়াম, ভিটামিন ই, বিটা ক্যারোটিন, সেলেনিয়াম, সোডিয়াম, দস্তা, ম্যাগনেসিয়াম, তামা ইত্যাদি।

তিন ফল

তেঁতুলের বিভিন্ন উপকারিতা

  • তেঁতুল শরীর থেকে বিষাক্ত পদার্থ বের করে শরীররেকে সুস্থ রাখে।
  • বিশেষজ্ঞদের মতে, যদি কেউ প্রতি দিন এক ঘণ্টা দ্রুত হাঁটে এবং কমপক্ষে ২৫ গ্রাম তেঁতুল খায়,তা হলে তার হার্ট ব্লক হতে পারে না।
  • মুখের ঘা এবং ত্বকের ব্যাথা দূর করে।
  • তেঁতুল ক্যান্সার প্রতিরোধে ভুমিকা রাখে।
  • ম্যালেরিয়া জ্বর কমাতে তেঁতুল পাতার চা খুব উপকারী।
  • জন্ডিস রোগের জন্য তেতুল খুব উপকারী।
  • যে কোনো ফলের চেয়ে তেতুলে খনিজ পদার্থ অনেক বেশি থাকে।
  • ডায়াবেটিস কমাতে চাইলে নিয়মিত তেতুল খান।
  • কাশির সমস্যা দূর করতে পুরোনো তেতুল বেশ উপকারী।
  • তেঁতুলে রয়েছে প্রচুর ক্যালশিয়াম যা বিভিন্ন ফলের চেয়েও চেয়ে প্রায় ৫ থেকে ১৭ গুণ বেশি।
  • বাত ব্যাথা, হাড়ের বিভিন্ন জয়েন্টের ব্যাথা কমায়।
  • গর্ভবতী মায়েদের বমি ভাব দূর করে।
  • পাইলসের সমস্যা সমাধানেও ভুমিকা রাখে।
  • শিশুদের পেটের কৃমি কমাতে ভুমিকা রাখে।
  • তেঁতুল রক্তে কোলেস্টেরল কমিয়ে দেহে উচ্চ রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে রাখে।
  • হার্ট ভালো রাখে।
  • হাত-পা জ্বালা করলে তেঁতুলের শরবত খেলে চমৎকার উপকার পাওয়া যায়।
  • রক্তে অতিরিক্ত চর্বি কমানোয় বিশেষ ভূমিকা রাখে। ফলে হার্ট ব্লক হবার সম্ভাবনা থাকে না।
  • তেঁতুল পাতার রস দিয়ে শরবত বানিয়ে খেলে সর্দি-কাশি,পাইলস ও প্রস্রাবের জ্বালাপোড়া কমে যায়।
  • মুখের লালা তৈরি করে, খাবারের রুচি বাড়ায়, পরিপাকক্ষমতা বাড়ায়, রক্ত পরিষ্কার করে।

তিন ফল

জাম

স্বাদে গুনে সকলের পরিচিত চমৎকার একটি ফল জাম। ভিটামিন সি, আয়রন, পটাসিয়াম, অ্যান্টি-অক্সিডেন্টসহ বিভিন্ন উপাদানসহ অনেক পুষ্টিগুণ রয়েছে জামে। জামের বিচি ঔষধি উপাদান হিসেবে ব্যাবহার করা হয়।

জাম ফলের বিভিন্ন গুণাগুন ও উপকারিতা

জাম ফলের বিভিন্ন গুণাগুন ও উপকারিতা

  • ডায়াবেটিস রোগীরা নিয়মিত জাম খেলে দুর্বলতা, ঘন ঘন তৃষ্ণা এবং প্রস্রাবের লক্ষণগুলোও নিরাময় করে।
  • জামে রয়েছে ৮৮ শতাংশ মিনারেল, ফসফরাস এবং আয়োডিন যা গরমে শরীর ঠান্ডা ও আর্দ্র রাখে।
  • জামে রয়েছে ভিটামিন বি-১, বি-২, বি-৩, বি-৬, অ্যান্টি-অক্সিডেন্ট যা র্যাডিক্যালের আক্রমণ থেকে শরীরকে মুক্ত রাখে।
  • জামে থাকা আয়রন, ক্যালসিয়াম, ম্যাগনেসিয়াম এবং পটাসিয়াম শরীরের হাড় ও দাতকে শক্ত ও মজবুত করে।
  • নিয়মিত জাম খেলে রক্ত পরিষ্কার থাকে এবং রক্তে হিমোগ্লোবিন বাড়ায়।
  • জামে থাকা অ্যান্টি-অক্সিডেন্ট ক্যান্সার প্রতিরোধে ভুমিকা রাখে।
  • বিভিন্ন সংক্রমণ রোধে জাম বিশেষ ভুমিকা রাখে।
  • এছাড়াও হজমক্ষমতা বাড়ায়, উচ্চ রক্তচাপ, হৃদরোগ এবং স্ট্রোক থেকে রক্ষা করে, ব্রণ সমস্যা দূর করে।

সতর্কতা: প্রতিদিন ১০০ গ্রামের বেশি জাম খাওয়া ঠিক নয়।খালি পেটে খাবেন না। গর্ভবতী এবং স্তন্যদানকারী মায়েদের জাম খাওয়া ঠিক নয়।

ড্রাগন ফল

জলপাই

টক স্বাদের একটি চমৎকার ফল জলপাই। পুষ্টিগুণে সমৃদ্ধ ফলটি আমাদের দেশে বেশ কদর কারন এর মাধ্যমে বিভিন্ন রকমের আঁচার, চাটনি তৈরি করা হয়।

জলপাইয়ের পুষ্টিগুণ ও উপকারিতা

জলপাইয়ের বিভিন্ন পুষ্টিগুণ ও উপকারিতা

  • জলপাইয়ে রয়েছে খাদ্যশক্তি, ক্যালরি, শর্করা, ক্যালসিয়াম ভিটামিন-সি যা বিভিন্ন রোগ প্রতিরোধে ভুমিকা রাখে।
  • ত্বক ও চুলের যত্নে জলপাই অনন্য। জলপাইয়ের তেলে রয়েছে প্রচুর ফ্যাটি অ্যাসিড ও অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট, যা ত্বক ও চুলের যত্নে ভুমিকা রাখে।
  • জলপাইয়ে তেল হাড়ের ক্ষয়রোধ করতে সাহায্য করে।
  • নিয়মিত জলপাইয়ের তেল ব্যাবহারে হার্ট অ্যাটাকের ঝুঁকি কমায়।
  • জলপাইয়ে থাকা ভিটামিন-ই ফ্রি র্যাডিকেল ধ্বংস করে এবং কোষের অস্বাভাবিক গঠনে বাধা দেয় ফলে ক্যানসারের ঝুঁকি কমে যায়।
  • নিয়মিত জলপাই খেলে গ্যাস্ট্রিক ও আলসার দূর করতে সাহায্য করে।
  • ডায়াবেটিস রোগীদের জন্য জলপাই উপকারী কারন জলপাই রক্তের চিনি নিয়ন্ত্রণে রাখতে সাহায্য করে।
  • জলপাইয়ে রয়েছে ভিটামিন-এ যা চোখ ভালো রাখতে সাহায্য করে।
  • এছাড়াও জলপাই বিভিন্ন রোগ প্রতিরোধর ক্ষমতা বাড়ায়।

ড্রাগন ফল

খেজুর

পুষ্টিকর সুস্বাদু খেজুর ছোট বড় সকলের কাছেই খুব পছন্দের। বিশেষ করে রমজান মাসে খেজুর ছাড়া যেন ইফতারই হয় না।বুঝতেই পারছেন খেজুর কতটা জনপ্রিয় । খেজুরে রয়েছে প্রচুর পুষ্টি উপাদান ও উপকারিতা। এতে আছে ক্যালোরি, প্রোটিন, ক্যালসিয়াম, ফাইবার, অ্যাসিড, প্রচুর শক্তি, শর্করা, ভিটামিন ও মিনারেল। ড্রাই খেজুর সারারাত ভিজিয়ে রেখে সকালে সেই পানি খালি পেটে খেলে কোষ্ঠকাঠিন্যের সমস্যা দূর হবে।

 

খেজুরের বিভিন্ন পুষ্টিগুণ ও উপকারিতা

  • খেজেুরে রয়েছে প্রচুর প্রোটিন যা পেশি গঠন করে শরীরকে সুস্থ রাখে।
  • খেজুরে থাকা আয়রন হৃৎপিন্ডের কার্যক্ষমতা বৃদ্ধি করে।
  • খেজুর দৃষ্টিশক্তি বৃদ্ধি করার পাশাপাশি রাতকানা রোগ প্রতিরোধে গুরুত্বপূর্ণ ভুমিকা রাখে কারন এতে রয়েছে ভিটামিন বি১, বি২, বি৩ এবং বি৫
  • নিয়মিত খেজুর খেলে হাড়কে মজবুত ও শক্ত করে এবং শিশুদের মাড়ি শক্ত করতে ভুমিকা রাখে।
  • নিয়মিত খেজুর খেলে ক্যানসারের ঝুঁকি কমে আসে।
  • শিশুদের খাবারে রুচি ফেরাতে খেজুর বেশ উপকারী।

 

ডেউয়া

টক মিষ্টির মজাদার একটি ফল ডেউয়া। তবে দিন দিন ফলটি হারিয়ে যেতে বসেছে। এই মৌসুমী ফলটি বাজারে খুব একটা দেখা যায় না । কিন্ত এর রয়েছে অসাধারণ ঔষধী পুষ্টিগুণ। গরমে এর ভর্তা খেতে দারুণ স্বাদ লাগে।

ডেউয়া ফলের পুষ্টিগুণ ও উপকারিতা

ডেউয়া ফলের পুষ্টিগুণ ও উপকারিতা

ভিটামিন সি ও ক্যালসিয়ামে ভরপুর ডেউয়ায় রয়েছে খাদ্যশক্তি, কিলোক্যালরি, আমিষ, শর্করা, ক্যালসিয়াম, লৌহ, ভিটামিন বি১, ভিটামিন বি২, ভিটামিন সি, পটাশিয়াম।

  • স্মৃতিশক্তিও বাড়াতে ডেউয়া বেশ উপকারী।
  • ডেউয়া ভর্তা মুখের রুচি বাড়াতে সাহয্য করে।
  • শরীরের অতিরিক্ত ওজন কমাতে চাইলে নিমিত ডোউয়া খেতে পারেন।
  • গরম পানির সঙ্গে কাঁচা ডেউয়া বাটা মিশিয়ে খেলে পেটের গণ্ডগোল থেকে মুক্তি পাওয়া যায়।
  • ডেউয়া শরীরের শুষ্কভাব দূর করে শরীররকে মসৃণ ভাব ফিরিয়ে আনে।
  • ডেউয়ায় থাকা ক্যালসিয়াম দাঁত ও হাড়ের ক্ষয় প্রতিরোধ করতে ভুমিকা রাখে।

 

স্ট্রবেরি

খুব বেশিদিন হয় না স্টোবেরি বাংলাদেশে জনপ্রিয় হয়েছে। বিদেশী এই ফলটি এখন বাংলাদেশেও ব্যাপকভাবে চাষ হচ্ছে। এর রয়েছে বিভিন্ন পুষ্টিগুণ ও সাস্থ্য উপকারিতা।

স্ট্রবেরি ফলের পুষ্টিগুন ও বিভিন্ন উপকারিতা

স্ট্রবেরি ফলের পুষ্টিগুন ও বিভিন্ন উপকারিতা

  • শরীরের রোগ প্রতিরোধের ক্ষমতা বৃদ্ধি করে কারন স্ট্রবেরিতে রয়েছে প্রচুর ভিটামিন সি। কাশি ও ঠাণ্ডা জাতীয় সমস্যা দূর করতেও ভুমিকা রাখে।
  • স্ট্রবেরিতে থাকা অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট হার্টের ফাংশন ভালো রাখতে ভুমিকা রাখে, রক্ত চলাচল স্বাভাবিক রাখে, উচ্চ রক্তচাপ কমাতে সাহায্য করে।
  • চোখ ভালো রাখতে স্ট্রবেরি বিশেষ ভুমিকা রাখে।
  • স্ট্রবেরি ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণে ভুমিকা রখে।
  • স্ট্রবেরিতে আয়োডিন, ভিটামিন সি এবং ফাইটোকেমিক্যাল থাকার কারনে মস্তিষ্কের ফাংশন ভালো রাখে এবং মস্তিস্কে রক্ত প্রবাহ বৃদ্ধি করে।
  • এছাড়াও স্ট্রবেরি ওজন কমাতে সাহায্য করে, ব্রণ প্রতিরোধ করে, মৃত চামড়ার কোষগুলো দূর করে এবং রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ায়।

ড্রাগন ফল

ড্রাগন

বাংলাদেশে নতুন একটি ফল যা ইতমধ্যে সকলের পছন্দের তালিকায় উঠে এসেছে কারন এর রয়েছে অসাধারণ সাস্থ্য উপকারিতা ও অনেক পুষ্টিগুণ। দেখতে দারুণ লাগলেও স্বাদে ততটা নয়। ভিটামিন, খনিজ এবং অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট সমৃদ্ধ ড্রাগন রক্তে শর্করার মাত্রা নিয়ন্ত্রণ করে, ক্যান্সারের ঝুঁকি কমায়।

ড্রাগন ফলের পুষ্টিগুণ ও উপকারিতা

ড্রাগন ফলের পুষ্টিগুণ ও উপকারিতা

ফলটিতে রয়েছে ভিটামিন, খনিজ পদার্থ, ফাইবার, ক্যালোরির, ম্যাগনেসিয়ামের, আয়রনের, ফ্ল্যাভোনয়েড, ফেনোলিক অ্যাসিড, ওমেগা-৩ এবং ওমেগা-৯  ফ্যাটি অ্যাসিড সহ আরো অনেক পুষ্টিগুণ।

  • ড্রাগনে থাকা অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট শরীরের কোষগুলিকে ফ্রি ব়্যাডিক্যালের হাত থেকে রক্ষা করে।
  • এটি রক্তে শর্করার মাত্রা নিয়ন্ত্রণে রাখে এবং প্রচুর ফাইবার থাকায় ডায়াবেটিসের ঝুঁকি কমিয়ে আনে।
  • ড্রাগন বিভিন্ন দীর্ঘস্থায়ী রোগ যেমন, ক্যান্সার, ডায়াবেটিস, অ্যালজাইমার এবং পারকিনসন এর মতো ভয়ংকর রোগের হাত থেকে মুক্তি পেতে সহায়তা করে।
  • এটি শরীরে ভাল ব্যাকটেরিয়া বৃদ্ধিতে ভুমিকা রাখে। ফলে হজম ক্ষমতা বাড়িয়ে পরিপাকতন্ত্রকে ভাল রাখতে সাহায্য করে।
  • এর বিচি এটি হার্ট ভাল রাখার পাশাপাশি, রক্তচাপ ও ওজন নিয়ন্ত্রণে ভুমিকা রাখে।
  • এছাড়াও চোখের বিভিন্ন সমস্যা দূর করে, হার্ট ভালো রাখে, হাড় মজবুত করে, ত্বককে স্বাস্থ্যোজ্জ্বল করে।

ড্রাগন ফল

আঙ্গুর

অতি পরিতিচ ও সকলের অন্যতম প্রিয় একটি ফল আঙ্গুর । সুস্বাদু ফলটি অন্যসব ফলের চেয়ে দামও একটু বেশি। সারাবছর ফলটি বাজারে পাওয়া যায়। আঙ্গুরে রয়েছে বিভিন্ন পুষ্টিগুণ ও উপকারিতা। ফলটি দিয়ে ওয়াইন, রস, এবং জেলি-জ্যাম তৈরি করা হয়। আঙ্গুর শুকিয়ে হয় কিশমিশ করা হয় তাতেও রয়েছে পুষ্টিগুণের ভিন্ন মাত্রা। বিভিন্ন মজাদার খাবার তৈরিতে কিশমিশ ব্যবহার করা হয়ে থাকে।

 

আঙ্গুর ফলের বিভিন্ন পুষ্টিগুণ ও উপকারিতা

  • আঙ্গুরের জুসে রয়েছে অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট ও অ্যান্টিইনফামিটরির মতো গুরুত্বপূর্ণ উপাদান যা ক্যানসার নিরাময়ে ভুমিকা রাখে।
  • আঙ্গুরে থাকা ভিটামিন সি, ফাইটো কেমিক্যাল ও ফাইটো নিউট্রিয়েন্ট ত্বককে সুরক্ষিত রাখে ।
  • নিয়মিত আঙ্গুর খেলে বয়সের ছাপে বাধা সৃষ্টি করে।
  • কিডনি ভালো রাখতে আঙ্গুর বেশ উপকারী।
  • আঙ্গুরে মধ্যে থাকা ফাইটোনিউট্রিয়েন্টস রক্তকে সচ্ছ রাখে এবং নিয়মিত রক্ত সঞ্চালনে ভুমিকা রাখে।
  • স্মৃতিশক্তি বাড়াতে আঙ্গুর খুব উপবারী।
  • যেসব মায়েরা স্তন ক্যান্সারের ঝুঁকিতে আছেন আপনারা নিয়মিত আঙ্গুর খেলে স্তন ক্যান্সার থেকে মুক্তি পাবেন।
  • নিয়মিত আঙ্গুর খেলে চুল মজবুত, শক্ত, কালো হয় এবং চুলের বিভিন্ন সমস্যা দূর করাসহ চুলের খুশকি থেকে মুক্তি পাওয়া যায়।
  • কোলেস্টেরলের মাত্রা কমাতে ভুমিকা রাখে।
  • আঙ্গুরে থাকা তামা, লোহা ও ম্যাংগানিজের মতো খনিজ পদার্থ হাড় গঠন ও হাড় শক্ত করতে সাহায্য করে।
  • এছাড়াও মাথাব্যথা দূর করে, চোখ ভালো রাখে, শরীরে ফুসফুসে আর্দ্রতার পরিমাণ বাড়ায়, বদহজম দূর করতে, অ্যাজমা প্রতিরোধ করে।ফল

ফল

Leave a Reply