You are currently viewing সূরা ফুরকান সম্পর্কে ৪৫টি কুইজ প্রশ্ন
সূরা ফুরকান

সূরা ফুরকান সম্পর্কে ৪৫টি কুইজ প্রশ্ন

সূরা ফুরকান কুরআন মজীদের ২৫তম সূরা। এটি মক্কায় অবতীর্ণ হয়েছে এবং এর আয়াত সংখ্যা ৭৭। সূরাটির নাম “আল-ফুরকান” (সত্য-মিথ্যার পার্থক্যকারী) এর প্রথম আয়াত থেকে নেওয়া হয়েছে। এই সূরায় কুরআনের মর্যাদা, তাওহীদ, রিসালাত, আখিরাত এবং কাফিরদের অপপ্রচারের জবাব দেওয়া হয়েছে।

সূরা ফুরকান

সূরা আল-ফুরকান সম্পর্কে ২০টি শর্ট প্রশ্ন ও উত্তর:

১. প্রশ্ন: সূরা আল-ফুরকান মক্কী না মাদানী সূরা?
উত্তর: মক্কী সূরা।

২. প্রশ্ন: সূরা আল-ফুরকান কত নং সূরা?
উত্তর: ২৫ নং সূরা।

৩. প্রশ্ন: সূরা আল-ফুরকানে কয়টি আয়াত আছে?
উত্তর: ৭৭টি আয়াত।

৪. প্রশ্ন: সূরা আল-ফুরকানের মূল বিষয় কী?
উত্তর: কুরআনের মর্যাদা, তাওহীদ, রিসালাত ও আখিরাত।

৫. প্রশ্ন: আল-ফুরকান শব্দের অর্থ কী?
উত্তর: সত্য-মিথ্যার পার্থক্যকারী।

৬. প্রশ্ন: সূরা আল-ফুরকানে কাফিরদের কী কী অভিযোগের উত্তর দেওয়া হয়েছে?
উত্তর: তারা নবীকে জাদুকর, পাগল ইত্যাদি বলত, তার জবাব দেওয়া হয়েছে।

৭. প্রশ্ন: সূরা আল-ফুরকানে আল্লাহর কী কী নিদর্শনের কথা বলা হয়েছে?
উত্তর: রাত ও দিনের পরিবর্তন, বৃষ্টি, নদী-নালা, পাহাড়-পর্বত ইত্যাদি।

৮. প্রশ্ন: সূরা আল-ফুরকানে মুমিন বান্দাদের কী কী গুণ বলা হয়েছে?
উত্তর: তারা নম্রভাবে চলাফেরা করে, অহংকার করে না, রাত জেগে ইবাদত করে ইত্যাদি।

৯. প্রশ্ন: সূরা আল-ফুরকানে কাফিরদের কী শাস্তির কথা বলা হয়েছে?
উত্তর: জাহান্নামের শাস্তি।

১০. প্রশ্ন: সূরা আল-ফুরকানে আল্লাহর নেয়ামতগুলোর কী কী উদাহরণ দেওয়া হয়েছে?
উত্তর: সমুদ্র, নদী, ফল-ফসল, জীবজন্তু ইত্যাদি।

১১. প্রশ্ন: সূরা আল-ফুরকানে নবীজির প্রতি কী কী অভিযোগ উত্থাপিত হয়েছিল?
উত্তর: তিনি জাদুকর, পাগল, কবি ইত্যাদি।

১২. প্রশ্ন: সূরা আল-ফুরকানে আল্লাহ কাফিরদের কী বলে সম্বোধন করেছেন?
উত্তর: তারা অজ্ঞ ও পথভ্রষ্ট।

১৩. প্রশ্ন: সূরা আল-ফুরকানে আল্লাহর কী কী গুণবাচক নাম উল্লেখ করা হয়েছে?
উত্তর: রহমান, রহীম, মালিক ইত্যাদি।

১৪. প্রশ্ন: সূরা আল-ফুরকানে আল্লাহ কীভাবে কুরআনের মহত্ত্ব বর্ণনা করেছেন?
উত্তর: এটি সত্য-মিথ্যার পার্থক্যকারী এবং হিদায়াতের উৎস।

১৫. প্রশ্ন: সূরা আল-ফুরকানে আল্লাহ কীভাবে নবীর মিশন বর্ণনা করেছেন?
উত্তর: তিনি সতর্ককারী ও সুসংবাদদাতা।

১৬. প্রশ্ন: সূরা আল-ফুরকানে আল্লাহ কীভাবে কাফিরদের যুক্তিগুলো খণ্ডন করেছেন?
উত্তর: তাদের যুক্তিগুলো অজ্ঞতা ও অহংকারের ভিত্তিতে।

১৭. প্রশ্ন: সূরা আল-ফুরকানে আল্লাহ কীভাবে মুমিনদের পুরস্কারের কথা বলেছেন?
উত্তর: জান্নাত ও আল্লাহর সান্নিধ্য।

১৮. প্রশ্ন: সূরা আল-ফুরকানে আল্লাহ কীভাবে কাফিরদের ভাগ্য বর্ণনা করেছেন?
উত্তর: তারা ধ্বংস ও লাঞ্ছনার শিকার হবে।

১৯. প্রশ্ন: সূরা আল-ফুরকানে আল্লাহ কীভাবে নবীর ধৈর্যের প্রশংসা করেছেন?
উত্তর: তিনি কাফিরদের বিরোধিতা সত্ত্বেও ধৈর্য ধারণ করেছেন।

২০. প্রশ্ন: সূরা আল-ফুরকানে আল্লাহ কীভাবে কুরআনের সত্যতা প্রমাণ করেছেন?
উত্তর: এটি আল্লাহর বাণী এবং কোনো মানুষের পক্ষে এটি তৈরি করা সম্ভব নয়।

সূরা আল-ফুরকান সম্পর্কে ২০টি MCQ:

১. সূরা আল-ফুরকান কত নং সূরা?
a) ২০
b) ২৫
c) ৩০
d) ৩৫
উত্তর: b) ২৫

২. সূরা আল-ফুরকানে কয়টি আয়াত আছে?
a) ৭৭
b) ৮৮
c) ৯৯
d) ১১১
উত্তর: a) ৭৭

৩. আল-ফুরকান শব্দের অর্থ কী?
a) রহমত
b) সত্য-মিথ্যার পার্থক্যকারী
c) আলো
d) শান্তি
উত্তর: b) সত্য-মিথ্যার পার্থক্যকারী

৪. সূরা আল-ফুরকান কোন ধরনের সূরা?
a) মাদানী
b) মক্কী
c) মিশ্র
d) কোনোটিই নয়
উত্তর: b) মক্কী

৫. সূরা আল-ফুরকানে আল্লাহ কীভাবে কাফিরদের সম্বোধন করেছেন?
a) জ্ঞানী
b) অজ্ঞ
c) ধার্মিক
d) সৎ
উত্তর: b) অজ্ঞ

৬. সূরা আল-ফুরকানে আল্লাহ কীভাবে নবীর মিশন বর্ণনা করেছেন?
a) শাসক
b) সতর্ককারী
c) ব্যবসায়ী
d) কৃষক
উত্তর: b) সতর্ককারী

৭. সূরা আল-ফুরকানে আল্লাহ কীভাবে কুরআনের মহত্ত্ব বর্ণনা করেছেন?
a) মানুষের বাণী
b) সত্য-মিথ্যার পার্থক্যকারী
c) কবিতা
d) গল্প
উত্তর: b) সত্য-মিথ্যার পার্থক্যকারী

৮. সূরা আল-ফুরকানে আল্লাহ কীভাবে মুমিনদের পুরস্কারের কথা বলেছেন?
a) ধন-সম্পদ
b) জান্নাত
c) ক্ষমতা
d) খ্যাতি
উত্তর: b) জান্নাত

৯. সূরা আল-ফুরকানে আল্লাহ কীভাবে কাফিরদের ভাগ্য বর্ণনা করেছেন?
a) সম্মান
b) ধ্বংস
c) সম্পদ
d) ক্ষমা
উত্তর: b) ধ্বংস

১০. সূরা আল-ফুরকানে আল্লাহ কীভাবে নবীর ধৈর্যের প্রশংসা করেছেন?
a) তিনি ধৈর্য ধারণ করেছেন
b) তিনি ভয় পেয়েছেন
c) তিনি পালিয়ে গেছেন
d) তিনি হতাশ হয়েছেন
উত্তর: a) তিনি ধৈর্য ধারণ করেছেন

১১. সূরা আল-ফুরকানে আল্লাহ কীভাবে কাফিরদের যুক্তিগুলো খণ্ডন করেছেন?
a) তাদের যুক্তিগুলো সঠিক
b) তাদের যুক্তিগুলো অজ্ঞতা ও অহংকারের ভিত্তিতে
c) তাদের যুক্তিগুলো যৌক্তিক
d) তাদের যুক্তিগুলো সত্য
উত্তর: b) তাদের যুক্তিগুলো অজ্ঞতা ও অহংকারের ভিত্তিতে

১২. সূরা আল-ফুরকানে আল্লাহ কীভাবে নেয়ামতগুলোর কথা বলেছেন?
a) শুধু ধন-সম্পদ
b) শুধু স্বাস্থ্য
c) সমুদ্র, নদী, ফল-ফসল ইত্যাদি
d) শুধু বৃষ্টি
উত্তর: c) সমুদ্র, নদী, ফল-ফসল ইত্যাদি

১৩. সূরা আল-ফুরকানে আল্লাহ কীভাবে কাফিরদের শাস্তির কথা বলেছেন?
a) ক্ষমা
b) জাহান্নাম
c) পুরস্কার
d) সম্মান
উত্তর: b) জাহান্নাম

১৪. সূরা আল-ফুরকানে আল্লাহ কীভাবে মুমিন বান্দাদের গুণ বর্ণনা করেছেন?
a) তারা অহংকারী
b) তারা নম্র
c) তারা লোভী
d) তারা অলস
উত্তর: b) তারা নম্র

১৫. সূরা আল-ফুরকানে আল্লাহ কীভাবে নবীর প্রতি অভিযোগের উত্তর দিয়েছেন?
a) তিনি জাদুকর
b) তিনি পাগল
c) তিনি আল্লাহর রাসূল
d) তিনি কবি
উত্তর: c) তিনি আল্লাহর রাসূল

১৬. সূরা আল-ফুরকানে আল্লাহ কীভাবে কুরআনের সত্যতা প্রমাণ করেছেন?
a) এটি মানুষের বাণী
b) এটি আল্লাহর বাণী
c) এটি কবিতা
d) এটি গল্প
উত্তর: b) এটি আল্লাহর বাণী

১৭. সূরা আল-ফুরকানে আল্লাহ কীভাবে নবীর মিশন বর্ণনা করেছেন?
a) তিনি শাসক
b) তিনি সতর্ককারী ও সুসংবাদদাতা
c) তিনি ব্যবসায়ী
d) তিনি কৃষক
উত্তর: b) তিনি সতর্ককারী ও সুসংবাদদাতা

১৮. সূরা আল-ফুরকানে আল্লাহ কীভাবে কাফিরদের ভাগ্য বর্ণনা করেছেন?
a) তারা সম্মানিত হবে
b) তারা ধ্বংস হবে
c) তারা ক্ষমা পাবে
d) তারা পুরস্কৃত হবে
উত্তর: b) তারা ধ্বংস হবে

১৯. সূরা আল-ফুরকানে আল্লাহ কীভাবে মুমিনদের পুরস্কারের কথা বলেছেন?
a) তারা ধন-সম্পদ পাবে
b) তারা জান্নাত পাবে
c) তারা ক্ষমতা পাবে
d) তারা খ্যাতি পাবে
উত্তর: b) তারা জান্নাত পাবে

২০. সূরা আল-ফুরকানে আল্লাহ কীভাবে নবীর ধৈর্যের প্রশংসা করেছেন?
a) তিনি ধৈর্য ধারণ করেছেন
b) তিনি ভয় পেয়েছেন
c) তিনি পালিয়ে গেছেন
d) তিনি হতাশ হয়েছেন
উত্তর: a) তিনি ধৈর্য ধারণ করেছেন

সূরা ফুরকান শানে নুযূল:

সূরা আল-ফুরকান মক্কী জীবনে অবতীর্ণ হয়েছিল, যখন নবী মুহাম্মদ (সা.)-এর উপর ইসলামের দাওয়াতের চাপ বৃদ্ধি পাচ্ছিল। কাফিররা নবীজিকে জাদুকর, পাগল, কবি ইত্যাদি অপবাদ দিত এবং কুরআনকে মানুষের রচনা বলে দাবি করত। এই সূরায় তাদের এসব অপপ্রচারের জবাব দেওয়া হয়েছে এবং কুরআনের সত্যতা ও মহত্ত্ব প্রমাণ করা হয়েছে।

সূরা ফুরকান গুরুত্বপূর্ণ দিক:

১. কুরআনের মর্যাদা: সূরাটি কুরআনকে “আল-ফুরকান” (সত্য-মিথ্যার পার্থক্যকারী) হিসেবে বর্ণনা করে এবং এটি আল্লাহর পক্ষ থেকে অবতীর্ণ হওয়ার প্রমাণ দেয়।
২. তাওহীদ ও রিসালাত: আল্লাহর একত্ববাদ এবং নবী মুহাম্মদ (সা.)-এর রিসালাতের সত্যতা প্রতিষ্ঠা করা হয়েছে।
৩. কাফিরদের যুক্তি খণ্ডন: কাফিরদের অপবাদ ও যুক্তিগুলো খণ্ডন করে তাদের অজ্ঞতা ও অহংকারের মুখোশ উন্মোচন করা হয়েছে।
৪. মুমিনদের গুণাবলী: মুমিনদের চারিত্রিক বৈশিষ্ট্য ও আচরণ বর্ণনা করা হয়েছে।
৫. আখিরাতের আলোচনা: কিয়ামত, হিসাব-কিতাব, জান্নাত ও জাহান্নামের বর্ণনা দেওয়া হয়েছে।

সূরা ফুরকান শিক্ষা ও মূল বিষয়বস্তু:

১. কুরআনের সত্যতা: কুরআন আল্লাহর বাণী এবং এটি মানুষের রচনা নয়। এটি সত্য-মিথ্যার পার্থক্যকারী।
২. তাওহীদের গুরুত্ব: আল্লাহ এক ও অদ্বিতীয়, তিনি ছাড়া কোনো ইলাহ নেই।
৩. নবীর মিশন: নবী মুহাম্মদ (সা.) সতর্ককারী ও সুসংবাদদাতা হিসেবে প্রেরিত হয়েছেন।
৪. মুমিনদের বৈশিষ্ট্য: মুমিনরা নম্র, ধৈর্যশীল, রাত জেগে ইবাদত করে এবং অহংকার থেকে দূরে থাকে।
৫. কাফিরদের পরিণতি: কাফিররা তাদের অহংকার ও জিদের কারণে জাহান্নামের শাস্তি ভোগ করবে।
৬. আল্লাহর নিদর্শন: প্রকৃতিতে আল্লাহর নিদর্শনগুলো চিন্তা করে ঈমান দৃঢ় করা।
৭. আখিরাতের প্রস্তুতি: দুনিয়ার জীবন ক্ষণস্থায়ী, আখিরাতের জন্য প্রস্তুতি নেওয়া জরুরি।

সূরা ফুরকান ফজিলত

১. কুরআনের মর্যাদা বৃদ্ধি: এই সূরা তিলাওয়াত করলে কুরআনের মর্যাদা ও মহত্ত্ব সম্পর্কে জ্ঞান বৃদ্ধি পায়।
২. ঈমানের দৃঢ়তা: সূরাটি তিলাওয়াত ও অধ্যয়ন করলে ঈমানের দৃঢ়তা বৃদ্ধি পায়।
৩. কাফিরদের অপপ্রচারের জবাব: এই সূরায় কাফিরদের যুক্তি ও অপপ্রচারের জবাব দেওয়া হয়েছে, যা মুমিনদের জন্য শিক্ষণীয়।
৪. মুমিনদের গুণাবলী অর্জন: সূরাটি মুমিনদের চারিত্রিক বৈশিষ্ট্য বর্ণনা করে, যা অনুসরণ করা উচিত।
৫. আখিরাতের স্মরণ: সূরাটি আখিরাতের আলোচনা করে দুনিয়ার জীবনের ক্ষণস্থায়ীতা ও আখিরাতের চিরস্থায়ী জীবনের কথা স্মরণ করিয়ে দেয়।

উপসংহার:

সূরা আল-ফুরকান কুরআনের একটি গুরুত্বপূর্ণ সূরা, যা তাওহীদ, রিসালাত, আখিরাত এবং কুরআনের মর্যাদা সম্পর্কে সুস্পষ্ট দিকনির্দেশনা দেয়। এটি মুমিনদের জন্য ঈমানী শক্তি ও চারিত্রিক উন্নতির উৎস। এই সূরার শিক্ষা ও ফজিলত অনুধাবন করে আমাদের জীবনকে আল্লাহর পথে পরিচালিত করা উচিত।

সূরা ফুরকান আয়াত ৭৪, ২৫, ৬১, ৬৩-৭৭ , ২৮ আয়াত, অর্থসহ ব্যাখ্যা

সূরা আল-ফুরকানের নির্দিষ্ট কিছু আয়াতের অর্থ ও সংক্ষিপ্ত ব্যাখ্যা নিম্নে দেওয়া হলো:

আয়াত ৭৪:

আর যারা বলে, ‘হে আমাদের রব! আমাদের জন্য আমাদের স্ত্রী ও সন্তানদের থেকে চোখের শীতলতা দান করুন এবং আমাদেরকে মুত্তাকীদের জন্য নেতা বানিয়ে দিন।’

ব্যাখ্যা:
এই আয়াতে মুমিনদের একটি গুরুত্বপূর্ণ দোয়া শেখানো হয়েছে। তারা আল্লাহর কাছে প্রার্থনা করে যে, তাদের স্ত্রী ও সন্তানরা যেন তাদের জন্য চোখের শীতলতা ও আনন্দের কারণ হয়। এছাড়াও তারা আল্লাহর কাছে প্রার্থনা করে যে, তারা যেন মুত্তাকী (আল্লাহভীরু) লোকদের জন্য নেতা বা আদর্শ হিসেবে প্রতিষ্ঠিত হয়। এই দোয়া মুমিনদের পারিবারিক ও সামাজিক দায়িত্ববোধ এবং আল্লাহর কাছে আত্মসমর্পণের একটি চমৎকার উদাহরণ।

আয়াত ২৫:

“এবং সেদিন আসমান টুকরো টুকরো হয়ে মেঘমালার মতো হয়ে যাবে এবং ফেরেশতাদেরকে অবতীর্ণ করা হবে, এক মহা অবতরণ।”

ব্যাখ্যা:
এই আয়াতে কিয়ামতের দিনের ভয়াবহ অবস্থা বর্ণনা করা হয়েছে। সেদিন আকাশ বিদীর্ণ হয়ে যাবে এবং ফেরেশতারা মহা সমারোহে পৃথিবীতে অবতরণ করবে। এটি কিয়ামতের ভয়াবহতা ও আল্লাহর ক্ষমতার একটি চিত্র তুলে ধরে, যা মানুষকে আখিরাতের প্রতি সচেতন করে।

আয়াত ৬১:

“যিনি আসমানের মধ্যে নক্ষত্রপুঞ্জ সৃষ্টি করেছেন এবং সেখানে একটি দীপস্তম্ভ ও আলোকিত চন্দ্র স্থাপন করেছেন।”

ব্যাখ্যা:
এই আয়াতে আল্লাহর সৃষ্টির মহিমা বর্ণনা করা হয়েছে। তিনি আকাশে নক্ষত্রপুঞ্জ, সূর্য ও চন্দ্র সৃষ্টি করেছেন, যা মানুষের জন্য আলো ও সময়ের হিসাবের উৎস। এটি আল্লাহর অসীম ক্ষমতা ও জ্ঞানের প্রমাণ এবং মানুষকে তাঁর সৃষ্টির নিদর্শনগুলো সম্পর্কে চিন্তা করতে উৎসাহিত করে।

আয়াত ৬৩-৭৭:

এই অংশে মুমিনদের চারিত্রিক বৈশিষ্ট্য ও আচরণ বর্ণনা করা হয়েছে। কিছু গুরুত্বপূর্ণ আয়াতের সংক্ষিপ্ত ব্যাখ্যা নিম্নে দেওয়া হলো:

  • আয়াত ৬৩: মুমিনরা নম্রভাবে চলাফেরা করে এবং অজ্ঞরা তাদের সাথে বাজে আচরণ করলে তারা শান্তিপূর্ণভাবে জবাব দেয়।
  • আয়াত ৬৪: তারা রাত জেগে ইবাদত করে এবং আল্লাহর কাছে ক্ষমা প্রার্থনা করে।
  • আয়াত ৬৫: তারা আল্লাহর শাস্তির ভয়ে সতর্ক থাকে এবং তাঁর রহমতের আশা করে।
  • আয়াত ৬৭: তারা অপচয় বা কৃপণতা করে না, বরং মধ্যপন্থা অবলম্বন করে।
  • আয়াত ৭২: তারা মিথ্যা সাক্ষ্য দেয় না এবং অসার কথাবার্তায় জড়ায় না।
  • আয়াত ৭৪: তারা আল্লাহর কাছে প্রার্থনা করে যে, তাদের স্ত্রী ও সন্তানরা যেন তাদের জন্য চোখের শীতলতা হয় এবং তারা যেন মুত্তাকীদের নেতা হয়।

ব্যাখ্যা:
এই আয়াতগুলো মুমিনদের আদর্শ চরিত্র ও আচরণ বর্ণনা করে। তারা নম্র, ধৈর্যশীল, ইবাদতকারী, মধ্যপন্থী এবং আল্লাহর আদেশ-নিষেধ মেনে চলে। তাদের জীবনযাপন ও আচরণ অন্যান্য মানুষের জন্য আদর্শ।

আয়াত ২৮:

“হায় আমার দুর্ভাগ্য! আমি যদি অমুককে বন্ধু হিসেবে গ্রহণ না করতাম!”

ব্যাখ্যা:
এই আয়াতে কিয়ামতের দিন কাফিরদের আফসোসের চিত্র তুলে ধরা হয়েছে। তারা তাদের মন্দ বন্ধুদের অনুসরণ করার জন্য অনুতপ্ত হবে এবং বলবে, “হায়! আমি যদি অমুককে বন্ধু হিসেবে গ্রহণ না করতাম!” এটি সঠিক বন্ধু নির্বাচনের গুরুত্ব এবং মন্দ সঙ্গের পরিণতি সম্পর্কে সতর্ক করে।

সারমর্ম:

সূরা আল-ফুরকানের এই আয়াতগুলোতে মুমিনদের আদর্শ চরিত্র, আল্লাহর সৃষ্টির নিদর্শন, কিয়ামতের ভয়াবহতা এবং কাফিরদের পরিণতির চিত্র ফুটে উঠেছে। এই আয়াতগুলো আমাদেরকে আল্লাহর আদেশ-নিষেধ মেনে চলা, সঠিক পথে থাকা এবং আখিরাতের জন্য প্রস্তুতি নেওয়ার শিক্ষা দেয়।