সূরা আন নাহল (সূরা নহল) কুরআনের ১৬তম সূরা। এটি মক্কায় অবতীর্ণ হয়েছে এবং এর আয়াত সংখ্যা ১২৮। নিম্নে সূরা নাহল সম্পর্কে ২০টি শর্ট প্রশ্ন ও উত্তর এবং ২৫টি এমসিকিউ প্রশ্ন দেওয়া হলো:
সূরা নাহল
২০টি শর্ট প্রশ্ন ও উত্তর:
১. প্রশ্ন: সূরা আন নাহল কোন ধরনের সূরা?
উত্তর: এটি মক্কী সূরা।
২. প্রশ্ন: সূরা আন নাহলের আয়াত সংখ্যা কত?
উত্তর: ১২৮টি আয়াত।
৩. প্রশ্ন: সূরা আন নাহলের অর্থ কী?
উত্তর: “মৌমাছি”।
৪. প্রশ্ন: সূরা আন নাহলে মৌমাছির কথা উল্লেখ আছে কেন?
উত্তর: মৌমাছিকে আল্লাহর নিদর্শন হিসেবে উল্লেখ করা হয়েছে, যা মানুষের জন্য শিক্ষণীয়।
৫. প্রশ্ন: সূরা আন নাহলে আল্লাহর কোন নিদর্শনগুলো উল্লেখ করা হয়েছে?
উত্তর: আকাশ, পৃথিবী, পাহাড়, নদী, গাছপালা, প্রাণী ইত্যাদি।
৬. প্রশ্ন: সূরা আন নাহলে আল্লাহর রহমতের কোন দিকগুলো উল্লেখ করা হয়েছে?
উত্তর: বৃষ্টি, ফসল, পশু-পাখি, ফল-মূল ইত্যাদি।
৭. প্রশ্ন: সূরা আন নাহলে কাফিরদের কী সতর্ক করা হয়েছে?
উত্তর: তাদেরকে আল্লাহর শাস্তির ব্যাপারে সতর্ক করা হয়েছে।
৮. প্রশ্ন: সূরা আন নাহলে মুমিনদের কী নির্দেশ দেওয়া হয়েছে?
উত্তর: আল্লাহর প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করা এবং তাঁর আদেশ-নিষেধ মেনে চলা।
৯. প্রশ্ন: সূরা আন নাহলে আল্লাহর একত্ববাদের কী বার্তা দেওয়া হয়েছে?
উত্তর: আল্লাহই একমাত্র সৃষ্টিকর্তা, পালনকর্তা এবং উপাস্য।
১০. প্রশ্ন: সূরা আন নাহলে আল্লাহর নিদর্শনগুলো সম্পর্কে কী বলা হয়েছে?
উত্তর: এগুলো চিন্তাশীল মানুষের জন্য শিক্ষণীয়।
১১. প্রশ্ন: সূরা আন নাহলে আল্লাহর রহমতের কোন উদাহরণ দেওয়া হয়েছে?
উত্তর: বৃষ্টি দ্বারা মৃত জমিকে সজীব করা।
১২. প্রশ্ন: সূরা আন নাহলে আল্লাহর শাস্তির কোন উদাহরণ দেওয়া হয়েছে?
উত্তর: অতীত জাতিগুলোর ধ্বংসের কথা উল্লেখ করা হয়েছে।
১৩. প্রশ্ন: সূরা আন নাহলে আল্লাহর কৃতজ্ঞতা প্রকাশের কী গুরুত্ব দেওয়া হয়েছে?
উত্তর: কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করলে আল্লাহ আরও বেশি দান করেন।
১৪. প্রশ্ন: সূরা আন নাহলে আল্লাহর নেয়ামতের কোন উদাহরণ দেওয়া হয়েছে?
উত্তর: গবাদি পশু, ফল-মূল, শস্য ইত্যাদি।
১৫. প্রশ্ন: সূরা আন নাহলে আল্লাহর আদেশ-নিষেধের কী গুরুত্ব দেওয়া হয়েছে?
উত্তর: আল্লাহর আদেশ-নিষেধ মেনে চলাই মুমিনের কর্তব্য।
১৬. প্রশ্ন: সূরা আন নাহলে আল্লাহর নিদর্শনগুলো সম্পর্কে কী বলা হয়েছে?
উত্তর: এগুলো চিন্তাশীল মানুষের জন্য শিক্ষণীয়।
১৭. প্রশ্ন: সূরা আন নাহলে আল্লাহর রহমতের কোন উদাহরণ দেওয়া হয়েছে?
উত্তর: বৃষ্টি দ্বারা মৃত জমিকে সজীব করা।
১৮. প্রশ্ন: সূরা আন নাহলে আল্লাহর শাস্তির কোন উদাহরণ দেওয়া হয়েছে?
উত্তর: অতীত জাতিগুলোর ধ্বংসের কথা উল্লেখ করা হয়েছে।
১৯. প্রশ্ন: সূরা আন নাহলে আল্লাহর কৃতজ্ঞতা প্রকাশের কী গুরুত্ব দেওয়া হয়েছে?
উত্তর: কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করলে আল্লাহ আরও বেশি দান করেন।
২০. প্রশ্ন: সূরা আন নাহলে আল্লাহর নেয়ামতের কোন উদাহরণ দেওয়া হয়েছে?
উত্তর: গবাদি পশু, ফল-মূল, শস্য ইত্যাদি।
২৫টি এমসিকিউ প্রশ্ন:
১. সূরা আন নাহল কত নম্বর সূরা?
ক) ১৪
খ) ১৫
গ) ১৬
ঘ) ১৭
উত্তর: গ) ১৬
২. সূরা আন নাহলের অর্থ কী?
ক) পানি
খ) মৌমাছি
গ) আলো
ঘ) বাতাস
উত্তর: খ) মৌমাছি
৩. সূরা আন নাহলে আল্লাহর কোন নিদর্শন উল্লেখ করা হয়েছে?
ক) মৌমাছি
খ) সূর্য
গ) চাঁদ
ঘ) সবকটি
উত্তর: ঘ) সবকটি
৪. সূরা আন নাহলে আল্লাহর রহমতের কোন উদাহরণ দেওয়া হয়েছে?
ক) বৃষ্টি
খ) সূর্য
গ) চাঁদ
ঘ) পাহাড়
উত্তর: ক) বৃষ্টি
৫. সূরা আন নাহলে আল্লাহর শাস্তির কোন উদাহরণ দেওয়া হয়েছে?
ক) অতীত জাতির ধ্বংস
খ) বন্যা
গ) ভূমিকম্প
ঘ) আগ্নেয়গিরি
উত্তর: ক) অতীত জাতির ধ্বংস
৬. সূরা আন নাহলে আল্লাহর কৃতজ্ঞতা প্রকাশের কী গুরুত্ব দেওয়া হয়েছে?
ক) বেশি দান
খ) শাস্তি
গ) ক্ষমা
ঘ) সাফল্য
উত্তর: ক) বেশি দান
৭. সূরা আন নাহলে আল্লাহর নেয়ামতের কোন উদাহরণ দেওয়া হয়েছে?
ক) গবাদি পশু
খ) ফল-মূল
গ) শস্য
ঘ) সবকটি
উত্তর: ঘ) সবকটি
৮. সূরা আন নাহলে আল্লাহর আদেশ-নিষেধের কী গুরুত্ব দেওয়া হয়েছে?
ক) মুমিনের কর্তব্য
খ) ঐচ্ছিক
গ) বাধ্যতামূলক নয়
ঘ) কোনটিই নয়
উত্তর: ক) মুমিনের কর্তব্য
৯. সূরা আন নাহলে আল্লাহর নিদর্শনগুলো সম্পর্কে কী বলা হয়েছে?
ক) শিক্ষণীয়
খ) অপ্রয়োজনীয়
গ) ভুল
ঘ) কোনটিই নয়
উত্তর: ক) শিক্ষণীয়
১০. সূরা আন নাহলে আল্লাহর রহমতের কোন উদাহরণ দেওয়া হয়েছে?
ক) বৃষ্টি
খ) সূর্য
গ) চাঁদ
ঘ) পাহাড়
উত্তর: ক) বৃষ্টি
১১. সূরা আন নাহলে আল্লাহর শাস্তির কোন উদাহরণ দেওয়া হয়েছে?
ক) অতীত জাতির ধ্বংস
খ) বন্যা
গ) ভূমিকম্প
ঘ) আগ্নেয়গিরি
উত্তর: ক) অতীত জাতির ধ্বংস
১২. সূরা আন নাহলে আল্লাহর কৃতজ্ঞতা প্রকাশের কী গুরুত্ব দেওয়া হয়েছে?
ক) বেশি দান
খ) শাস্তি
গ) ক্ষমা
ঘ) সাফল্য
উত্তর: ক) বেশি দান
১৩. সূরা আন নাহলে আল্লাহর নেয়ামতের কোন উদাহরণ দেওয়া হয়েছে?
ক) গবাদি পশু
খ) ফল-মূল
গ) শস্য
ঘ) সবকটি
উত্তর: ঘ) সবকটি
১৪. সূরা আন নাহলে আল্লাহর আদেশ-নিষেধের কী গুরুত্ব দেওয়া হয়েছে?
ক) মুমিনের কর্তব্য
খ) ঐচ্ছিক
গ) বাধ্যতামূলক নয়
ঘ) কোনটিই নয়
উত্তর: ক) মুমিনের কর্তব্য
১৫. সূরা আন নাহলে আল্লাহর নিদর্শনগুলো সম্পর্কে কী বলা হয়েছে?
ক) শিক্ষণীয়
খ) অপ্রয়োজনীয়
গ) ভুল
ঘ) কোনটিই নয়
উত্তর: ক) শিক্ষণীয়
১৬. সূরা আন নাহলে আল্লাহর রহমতের কোন উদাহরণ দেওয়া হয়েছে?
ক) বৃষ্টি
খ) সূর্য
গ) চাঁদ
ঘ) পাহাড়
উত্তর: ক) বৃষ্টি
১৭. সূরা আন নাহলে আল্লাহর শাস্তির কোন উদাহরণ দেওয়া হয়েছে?
ক) অতীত জাতির ধ্বংস
খ) বন্যা
গ) ভূমিকম্প
ঘ) আগ্নেয়গিরি
উত্তর: ক) অতীত জাতির ধ্বংস
১৮. সূরা আন নাহলে আল্লাহর কৃতজ্ঞতা প্রকাশের কী গুরুত্ব দেওয়া হয়েছে?
ক) বেশি দান
খ) শাস্তি
গ) ক্ষমা
ঘ) সাফল্য
উত্তর: ক) বেশি দান
১৯. সূরা আন নাহলে আল্লাহর নেয়ামতের কোন উদাহরণ দেওয়া হয়েছে?
ক) গবাদি পশু
খ) ফল-মূল
গ) শস্য
ঘ) সবকটি
উত্তর: ঘ) সবকটি
২০. সূরা আন নাহলে আল্লাহর আদেশ-নিষেধের কী গুরুত্ব দেওয়া হয়েছে?
ক) মুমিনের কর্তব্য
খ) ঐচ্ছিক
গ) বাধ্যতামূলক নয়
ঘ) কোনটিই নয়
উত্তর: ক) মুমিনের কর্তব্য
২১. সূরা আন নাহলে আল্লাহর নিদর্শনগুলো সম্পর্কে কী বলা হয়েছে?
ক) শিক্ষণীয়
খ) অপ্রয়োজনীয়
গ) ভুল
ঘ) কোনটিই নয়
উত্তর: ক) শিক্ষণীয়
২২. সূরা আন নাহলে আল্লাহর রহমতের কোন উদাহরণ দেওয়া হয়েছে?
ক) বৃষ্টি
খ) সূর্য
গ) চাঁদ
ঘ) পাহাড়
উত্তর: ক) বৃষ্টি
২৩. সূরা আন নাহলে আল্লাহর শাস্তির কোন উদাহরণ দেওয়া হয়েছে?
ক) অতীত জাতির ধ্বংস
খ) বন্যা
গ) ভূমিকম্প
ঘ) আগ্নেয়গিরি
উত্তর: ক) অতীত জাতির ধ্বংস
২৪. সূরা আন নাহলে আল্লাহর কৃতজ্ঞতা প্রকাশের কী গুরুত্ব দেওয়া হয়েছে?
ক) বেশি দান
খ) শাস্তি
গ) ক্ষমা
ঘ) সাফল্য
উত্তর: ক) বেশি দান
২৫. সূরা আন নাহলে আল্লাহর নেয়ামতের কোন উদাহরণ দেওয়া হয়েছে?
ক) গবাদি পশু
খ) ফল-মূল
গ) শস্য
ঘ) সবকটি
উত্তর: ঘ) সবকটি
এই প্রশ্ন ও উত্তরগুলো সূরা আন নাহলের মূল বিষয়বস্তু ও শিক্ষাকে ভালোভাবে বুঝতে সাহায্য করবে।
সূরা নাহল শানে নুযূল
সূরা আন নাহল মক্কী জীবনে অবতীর্ণ হয়েছিল, যখন মুসলিমরা কাফিরদের অত্যাচার ও নির্যাতনের শিকার হচ্ছিলেন। এই সূরায় আল্লাহ তাআলা মুমিনদের ধৈর্য ধারণ করতে এবং আল্লাহর নিদর্শন ও নেয়ামত সম্পর্কে চিন্তা-ভাবনা করতে উৎসাহিত করেছেন। এতে কাফিরদের ভ্রান্ত ধারণা ও শিরকের বিরুদ্ধে সতর্ক করা হয়েছে এবং আল্লাহর একত্ববাদের প্রতি আহ্বান জানানো হয়েছে।
সূরা নাহল এর গুরুত্বপূর্ণ দিক:
১. আল্লাহর নিদর্শন: সূরাটিতে আল্লাহর অসীম ক্ষমতা ও জ্ঞানের নিদর্শন হিসেবে প্রকৃতি, প্রাণী, আকাশ, পৃথিবী, পাহাড়, নদী, গাছপালা, ফল-মূল ইত্যাদির কথা উল্লেখ করা হয়েছে।
২. আল্লাহর রহমত ও নেয়ামত: বৃষ্টি, ফসল, পশু-পাখি, মৌমাছির মধু ইত্যাদি আল্লাহর রহমতের উদাহরণ হিসেবে বর্ণনা করা হয়েছে।
৩. কাফিরদের সতর্কতা: কাফিরদেরকে তাদের ভ্রান্ত ধারণা ও শিরকের পরিণতি সম্পর্কে সতর্ক করা হয়েছে।
৪. মুমিনদের কর্তব্য: মুমিনদেরকে আল্লাহর প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ, তাঁর আদেশ-নিষেধ মেনে চলা এবং ধৈর্য ধারণ করার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
৫. আখিরাতের স্মরণ: আখিরাতের জীবনের প্রতি বিশ্বাস স্থাপন এবং এর জন্য প্রস্তুতি নেওয়ার তাগিদ দেওয়া হয়েছে।
সূরা নাহল এর শিক্ষা:
১. আল্লাহর একত্ববাদের প্রতি বিশ্বাস: সূরাটি আল্লাহর একত্ববাদের প্রতি দৃঢ় বিশ্বাস স্থাপনের শিক্ষা দেয়।
২. কৃতজ্ঞতা: আল্লাহর নেয়ামতের প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করা এবং তাঁর রহমতের স্বীকৃতি দেওয়া।
৩. প্রকৃতি সম্পর্কে চিন্তা: আল্লাহর সৃষ্টি সম্পর্কে চিন্তা-ভাবনা করে তাঁর মহিমা উপলব্ধি করা।
৪. ধৈর্য ও সহনশীলতা: বিপদ-আপদে ধৈর্য ধারণ করা এবং আল্লাহর উপর ভরসা রাখা।
৫. শিরক থেকে দূরে থাকা: শিরক ও ভ্রান্ত ধারণা থেকে দূরে থাকা এবং সঠিক পথে চলা।
সূরা নাহল এর মূল বিষয়বস্তু:
১. আল্লাহর নিদর্শন ও কুদরত: সূরাটিতে আল্লাহর সৃষ্টিজগতের নানা নিদর্শন সম্পর্কে আলোচনা করা হয়েছে, যা তাঁর অসীম ক্ষমতা ও জ্ঞানের প্রমাণ।
২. আল্লাহর রহমত ও নেয়ামত: মানুষের জীবনে আল্লাহর দেওয়া নেয়ামত ও রহমতের কথা উল্লেখ করা হয়েছে, যেমন বৃষ্টি, ফসল, পশু-পাখি, মৌমাছির মধু ইত্যাদি।
৩. কাফিরদের ভ্রান্তি ও শাস্তি: কাফিরদের ভ্রান্ত ধারণা ও শিরকের পরিণতি সম্পর্কে সতর্ক করা হয়েছে।
৪. মুমিনদের কর্তব্য: মুমিনদেরকে আল্লাহর প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ, তাঁর আদেশ-নিষেধ মেনে চলা এবং ধৈর্য ধারণ করার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
৫. আখিরাতের স্মরণ: আখিরাতের জীবনের প্রতি বিশ্বাস স্থাপন এবং এর জন্য প্রস্তুতি নেওয়ার তাগিদ দেওয়া হয়েছে।
সূরা আন নাহল মানুষের জন্য একটি গভীর চিন্তা-ভাবনা ও আত্মবিশ্লেষণের সুযোগ তৈরি করে। এটি আল্লাহর নিদর্শন ও নেয়ামত সম্পর্কে সচেতনতা বাড়ায় এবং মানুষের জীবনে আল্লাহর নির্দেশাবলি মেনে চলার গুরুত্ব তুলে ধরে।
নিম্নে গুরুত্বর্পূ ণ আয়াতগুলোর অর্থ ও সংক্ষিপ্ত ব্যাখ্যা দেওয়া হলো:
সূরা নাহল আয়াত ৯১
আয়াত:
وَأَوْفُوا بِعَهْدِ اللَّهِ إِذَا عَاهَدتُّمْ وَلَا تَنقُضُوا الْأَيْمَانَ بَعْدَ تَوْكِيدِهَا وَقَدْ جَعَلْتُمُ اللَّهَ عَلَيْكُمْ كَفِيلًا ۚ إِنَّ اللَّهَ يَعْلَمُ مَا تَفْعَلُونَ
অর্থ:
“আর তোমরা আল্লাহর সাথে কৃত অঙ্গীকার পূর্ণ কর যখন অঙ্গীকার করো এবং শপথগুলো ভঙ্গ করো না after তাদের দৃঢ়ভাবে বেঁধে নেওয়ার পর, যখন তোমরা আল্লাহকে তোমাদের জামিন রূপে নির্ধারণ করেছ। নিশ্চয় আল্লাহ জানেন তোমরা যা কর।”
ব্যাখ্যা:
এই আয়াতে আল্লাহ তায়ালা অঙ্গীকার ও শপথ রক্ষার গুরুত্ব বর্ণনা করেছেন। মুমিনদের উচিত আল্লাহর সাথে কৃত অঙ্গীকার পূর্ণ করা এবং শপথ ভঙ্গ না করা। আল্লাহ সবকিছু জানেন এবং দেখেন, তাই আমাদেরকে সতর্ক থাকতে হবে।
সূরা নাহল আয়াত ৯২
আয়াত:
وَلَا تَكُونُوا كَالَّتِي نَقَضَتْ غَزْلَهَا مِن بَعْدِ قُوَّةٍ أَنكَاثًا ۙ تَتَّخِذُونَ أَيْمَانَكُمْ دَخَلًا بَيْنَكُمْ أَن تَكُونَ أُمَّةٌ هِيَ أَرْبَىٰ مِنْ أُمَّةٍ ۚ إِنَّمَا يَبْلُوكُمُ اللَّهُ بِهِ ۚ وَلَيُبَيِّنَنَّ لَكُمْ يَوْمَ الْقِيَامَةِ مَا كُنتُمْ فِيهِ تَخْتَلِفُونَ
অর্থ:
“তোমরা সে নারীর মতো হয়ো না, যে তার সুতা শক্ত করে পাকানোর পর তা ছিন্ন করে ফেলে। তোমরা শপথকে পরস্পরের মধ্যে প্রতারণার মাধ্যম বানাও না, যাতে এক দল অন্য দল থেকে সংখ্যায় বেশি হয়। আল্লাহ এভাবে তোমাদের পরীক্ষা করেন। আর কিয়ামতের দিন তিনি অবশ্যই তোমাদেরকে তা স্পষ্ট করে দেবেন, যে বিষয়ে তোমরা মতবিরোধ করছিলে।”
ব্যাখ্যা:
এই আয়াতে আল্লাহ তায়ালা শপথ ও অঙ্গীকার ভঙ্গ করার কুফল বর্ণনা করেছেন। শপথকে প্রতারণার মাধ্যম বানানো থেকে বিরত থাকতে বলা হয়েছে। আল্লাহ মানুষকে পরীক্ষা করেন এবং কিয়ামতের দিন সব সত্য প্রকাশ করা হবে।
সূরা নাহল আয়াত ৯৩
আয়াত:
وَلَوْ شَاءَ اللَّهُ لَجَعَلَكُمْ أُمَّةً وَاحِدَةً وَلَٰكِن يُضِلُّ مَن يَشَاءُ وَيَهْدِي مَن يَشَاءُ ۚ وَلَتُسْأَلُنَّ عَمَّا كُنتُمْ تَعْمَلُونَ
অর্থ:
“আল্লাহ যদি চাইতেন, তবে তোমাদেরকে একই উম্মত বানিয়ে দিতেন। কিন্তু তিনি যাকে ইচ্ছা পথভ্রষ্ট করেন এবং যাকে ইচ্ছা সঠিক পথ দেখান। আর তোমরা অবশ্যই তোমাদের কর্ম সম্পর্কে জিজ্ঞাসিত হবে।”
ব্যাখ্যা:
এই আয়াতে আল্লাহ তায়ালা মানুষের ইচ্ছাশক্তি ও পরীক্ষার বিষয়টি উল্লেখ করেছেন। আল্লাহ চাইলে সব মানুষকে একই পথে পরিচালিত করতে পারতেন, কিন্তু তিনি মানুষকে পরীক্ষা করেন। প্রত্যেককে তার কর্মের জন্য জবাবদিহি করতে হবে।
সূরা নাহল আয়াত ৬৮
আয়াত:
وَأَوْحَىٰ رَبُّكَ إِلَى النَّحْلِ أَنِ اتَّخِذِي مِنَ الْجِبَالِ بُيُوتًا وَمِنَ الشَّجَرِ وَمِمَّا يَعْرِشُونَ
অর্থ:
“আর তোমার রব মধুমক্ষিকাকে ওহী করেছেন যে, তুমি পাহাড়ে, গাছে এবং মানুষের তৈরি মাচায় বাসস্থান তৈরি কর।”
ব্যাখ্যা:
এই আয়াতে আল্লাহ তায়ালা মধুমক্ষিকার বিস্ময়কর সৃষ্টি ও তার কর্মকাণ্ডের কথা উল্লেখ করেছেন। মধুমক্ষিকা আল্লাহর নির্দেশে বিভিন্ন স্থানে বাসস্থান তৈরি করে এবং মধু উৎপাদন করে, যা মানুষের জন্য উপকারী।
সূরা নাহল আয়াত ১২৫
আয়াত:
ادْعُ إِلَىٰ سَبِيلِ رَبِّكَ بِالْحِكْمَةِ وَالْمَوْعِظَةِ الْحَسَنَةِ ۖ وَجَادِلْهُم بِالَّتِي هِيَ أَحْسَنُ ۚ إِنَّ رَبَّكَ هُوَ أَعْلَمُ بِمَن ضَلَّ عَن سَبِيلِهِ ۖ وَهُوَ أَعْلَمُ بِالْمُهْتَدِينَ
অর্থ:
“তুমি তোমার রবের পথে হিকমত (জ্ঞান) ও সুন্দর উপদেশের মাধ্যমে দাওয়াত দাও এবং তাদের সাথে উত্তম পদ্ধতিতে বিতর্ক কর। নিশ্চয় তোমার রব ভালো জানেন কে তাঁর পথ থেকে বিচ্যুত হয়েছে এবং কে সঠিক পথপ্রাপ্ত।”
ব্যাখ্যা:
এই আয়াতে দাওয়াতের পদ্ধতি বর্ণনা করা হয়েছে। হিকমত (জ্ঞান), সুন্দর উপদেশ এবং উত্তম পদ্ধতিতে বিতর্ক করার মাধ্যমে মানুষকে আল্লাহর পথে আহ্বান করতে বলা হয়েছে। আল্লাহই সবচেয়ে ভালো জানেন কে সঠিক পথে আছে।
সূরা নাহল আয়াত ৪৩
আয়াত:
وَمَا أَرْسَلْنَا مِن قَبْلِكَ إِلَّا رِجَالًا نُّوحِي إِلَيْهِمْ ۖ فَاسْأَلُوا أَهْلَ الذِّكْرِ إِن كُنتُمْ لَا تَعْلَمُونَ
অর্থ:
“আমি তোমার পূর্বে যেসব রাসুল প্রেরণ করেছি, তারা সবাই পুরুষ ছিল, যাদের কাছে আমি ওহী প্রেরণ করতাম। যদি তোমরা না জানো, তবে জ্ঞানীদের জিজ্ঞাসা কর।”
ব্যাখ্যা:
এই আয়াতে আল্লাহ তায়ালা উল্লেখ করেছেন যে, পূর্ববর্তী সব নবিই মানুষ ছিলেন, যাদের কাছে আল্লাহ ওহী প্রেরণ করেছেন। অজানা বিষয়ে জ্ঞানীদের কাছ থেকে জ্ঞান অর্জন করতে বলা হয়েছে।
সূরা নাহল আয়াত ৬১
আয়াত:
وَلَوْ يُؤَاخِذُ اللَّهُ النَّاسَ بِظُلْمِهِم مَّا تَرَكَ عَلَيْهَا مِن دَابَّةٍ وَلَٰكِن يُؤَخِّرُهُمْ إِلَىٰ أَجَلٍ مُّسَمًّى ۖ فَإِذَا جَاءَ أَجَلُهُمْ لَا يَسْتَأْخِرُونَ سَاعَةً ۖ وَلَا يَسْتَقْدِمُونَ
অর্থ:
“আল্লাহ যদি মানুষের অপরাধের জন্য তাদের শাস্তি দিতেন, তবে পৃথিবীতে কোনো প্রাণীকেই ছাড়তেন না। কিন্তু তিনি তাদেরকে একটি নির্দিষ্ট সময় পর্যন্ত অবকাশ দেন। যখন তাদের সময় আসবে, তখন তারা এক মুহূর্তও পিছিয়ে যেতে পারবে না বা এগোতেও পারবে না।”
ব্যাখ্যা:
এই আয়াতে আল্লাহ তায়ালার দয়া ও ধৈর্যের কথা বর্ণনা করা হয়েছে। আল্লাহ চাইলে মানুষের অপরাধের জন্য তৎক্ষণাৎ শাস্তি দিতে পারতেন, কিন্তু তিনি তাদেরকে সময় দেন এবং নির্দিষ্ট সময়ে শাস্তি দেবেন।
সূরা নাহল আয়াত ১৮
আয়াত:
وَإِن تَعُدُّوا نِعْمَةَ اللَّهِ لَا تُحْصُوهَا ۗ إِنَّ اللَّهَ لَغَفُورٌ رَّحِيمٌ
অর্থ:
“আর যদি তোমরা আল্লাহর নিয়ামত গণনা করতে চাও, তবে তা গণনা করে শেষ করতে পারবে না। নিশ্চয় আল্লাহ ক্ষমাশীল, দয়ালু।”
ব্যাখ্যা:
এই আয়াতে আল্লাহ তায়ালার অসংখ্য নিয়ামতের কথা উল্লেখ করা হয়েছে। মানুষের পক্ষে আল্লাহর নিয়ামত গণনা করা সম্ভব নয়। আল্লাহ ক্ষমাশীল ও দয়ালু।
সূরা নাহল আয়াত ৯৭
আয়াত:
مَنْ عَمِلَ صَالِحًا مِّن ذَكَرٍ أَوْ أُنثَىٰ وَهُوَ مُؤْمِنٌ فَلَنُحْيِيَنَّهُ حَيَاةً طَيِّبَةً ۖ وَلَنَجْزِيَنَّهُمْ أَجْرَهُم بِأَحْسَنِ مَا كَانُوا يَعْمَلُونَ
অর্থ:
“যে ব্যক্তি সৎকর্ম করে, সে পুরুষ হোক বা নারী, এবং সে মুমিন হয়, তবে আমি তাকে অবশ্যই পবিত্র জীবন দান করব এবং তাদেরকে তাদের কর্মের উত্তম প্রতিদান দেব।”
ব্যাখ্যা:
এই আয়াতে সৎকর্মশীল মুমিন পুরুষ ও নারীর জন্য আল্লাহর পক্ষ থেকে পবিত্র জীবন ও উত্তম প্রতিদানের প্রতিশ্রুতি দেওয়া হয়েছে। ঈমান ও সৎকর্মের মাধ্যমে মানুষ সুখী জীবন লাভ করে।
সূরা নাহল আয়াত ৬৯
আয়াত:
ثُمَّ كُلِي مِن كُلِّ الثَّمَرَاتِ فَاسْلُكِي سُبُلَ رَبِّكِ ذُلُلًا ۚ يَخْرُجُ مِن بُطُونِهَا شَرَابٌ مُّخْتَلِفٌ أَلْوَانُهُ فِيهِ شِفَاءٌ لِّلنَّاسِ ۗ إِنَّ فِي ذَٰلِكَ لَآيَةً لِّقَوْمٍ يَتَفَكَّرُونَ
অর্থ:
“তারপর তুমি সব ধরনের ফলমূল থেকে আহার কর এবং তোমার রবের সহজ পথ অনুসরণ কর। তার পেট থেকে বিভিন্ন রঙের পানীয় বের হয়, যাতে মানুষের জন্য রয়েছে রোগের প্রতিকার। নিশ্চয় এতে চিন্তাশীল সম্প্রদায়ের জন্য নিদর্শন রয়েছে।”
ব্যাখ্যা:
এই আয়াতে মধুমক্ষিকার মাধ্যমে আল্লাহর সৃষ্টির নিদর্শন বর্ণনা করা হয়েছে। মধু মানুষের জন্য উপকারী এবং রোগের প্রতিকার হিসেবে কাজ করে। এতে আল্লাহর কুদরতের নিদর্শন রয়েছে।
এই আয়াতগুলোতে আল্লাহ তায়ালা মানুষের জন্য বিভিন্ন উপদেশ, নিদর্শন ও নির্দেশনা দিয়েছেন। প্রতিটি আয়াতই মুমিনদের জন্য শিক্ষণীয় এবং জীবনের বিভিন্ন দিকনির্দেশনা প্রদান করে।