You are currently viewing সূরা দুখান সম্পর্কে ৪৫টি কুইজ প্রশ্ন সহ বিস্তারিত
সূরা দুখান

সূরা দুখান সম্পর্কে ৪৫টি কুইজ প্রশ্ন সহ বিস্তারিত

সূরা দুখান এর সংক্ষিপ্ত পরিচয়, শানেনুযূল, সূরাটির গুরুত্বপূর্ণ দিক, সূরাটির শিক্ষা সূরাটির মূল বিষয়বস্তু, সূরাটির ফযিলত, এবং সূরাটির আলোকে ৫টি বিষয়ভিত্তিক আয়াত অর্থসহ প্রতিটি বিষয় আলোচনা এবং সূরা দুখান  সম্পর্কে ২০টি শর্ট প্রশ্ন ও উত্তর এবং ২৫টি MCQ দেয়া হলো।

সূরা দুখান সম্পর্কে ২০টি শর্ট প্রশ্ন ও উত্তর এবং ২৫টি MCQ

সূরা দুখান সম্পর্কে ২০টি শর্ট প্রশ্ন ও উত্তর

  1. প্রশ্ন: সূরা দুখান মক্কায় নাকি মদিনায় নাযিল হয়েছে?
    উত্তর: মক্কায় নাযিল হয়েছে।
  2. প্রশ্ন: সূরা দুখানের আয়াত সংখ্যা কত?
    উত্তর: ৫৯টি আয়াত।
  3. প্রশ্ন: সূরা দুখানের কোন আয়াতে “দুখান” (ধোঁয়া) এর কথা উল্লেখ আছে?
    উত্তর: সূরা দুখানের ১০ নং আয়াতে।
  4. প্রশ্ন: দুখান কী?
    উত্তর: এটি কিয়ামতের একটি নিদর্শন, যা ধোঁয়ার আকারে আসবে।
  5. প্রশ্ন: সূরা দুখানে কিয়ামতের আর কোন নিদর্শনের কথা বলা হয়েছে?
    উত্তর: কিয়ামতের দিন আসমান খুলে যাওয়া এবং পর্বতগুলো উড়ে যাওয়ার কথা বলা হয়েছে।
  6. প্রশ্ন: সূরা দুখানে কোন নবী ও তাঁর সম্প্রদায়ের কথা বলা হয়েছে?
    উত্তর: হযরত মুসা (আ.) ও ফিরাউনের কথা বলা হয়েছে।
  7. প্রশ্ন: ফিরাউন ও তার সম্প্রদায়ের কী শাস্তি দেওয়া হয়েছিল?
    উত্তর: তাদের উপর বিভিন্ন আযাব দেওয়া হয়েছিল, শেষে লোহিত সাগরে ডুবিয়ে মারা হয়।
  8. প্রশ্ন: সূরা দুখানে জান্নাতের কী নামে উল্লেখ করা হয়েছে?
    উত্তর: “জান্নাতুল মা’ওয়া” (আশ্রয়ের জান্নাত)।
  9. প্রশ্ন: সূরা দুখানে কোন রাতকে বরকতময় রাত বলা হয়েছে?
    উত্তর: লাইলাতুল কদর (কদরের রাত)।
  10. প্রশ্ন: সূরা দুখানে আল্লাহ তাআলা কুরআনকে কী হিসেবে অবতীর্ণ করেছেন?
    উত্তর: বরকতময় গ্রন্থ হিসেবে।
  11. প্রশ্ন: সূরা দুখানে কাফিররা মুমিনদের প্রতি কী ধরনের আচরণ করত?
    উত্তর: তারা মুমিনদের উপহাস করত এবং তাদেরকে হেয় প্রতিপন্ন করত।
  12. প্রশ্ন: সূরা দুখানে আল্লাহ কাফিরদের শাস্তি সম্পর্কে কী বলেছেন?
    উত্তর: তাদের জন্য রয়েছে মর্মন্তুদ শাস্তি।
  13. প্রশ্ন: সূরা দুখানে আল্লাহর কোন গুণবাচক নাম উল্লেখ করা হয়েছে?
    উত্তর: “রাব্বুল আলামীন” (জগৎসমূহের পালনকর্তা)।
  14. প্রশ্ন: সূরা দুখানের শুরুতে কোন দুটি বর্ণ দিয়ে সূরা শুরু হয়েছে?
    উত্তর: “হা-মীম”।
  15. প্রশ্ন: সূরা দুখানে আল্লাহ মানুষকে কোন উপাদান থেকে সৃষ্টি করেছেন বলে উল্লেখ আছে?
    উত্তর: পানি থেকে।
  16. প্রশ্ন: সূরা দুখানে আল্লাহর নিদর্শনগুলো নিয়ে কারা ঠাট্টা-বিদ্রূপ করত?
    উত্তর: কাফিররা।
  17. প্রশ্ন: সূরা দুখানে মুমিনদের জন্য কী সুসংবাদ দেওয়া হয়েছে?
    উত্তর: তাদের জন্য রয়েছে ক্ষমা ও সম্মানজনক রিজিক।
  18. প্রশ্ন: সূরা দুখানে আল্লাহ কাফিরদের কীসের সাথে তুলনা করেছেন?
    উত্তর: তারা ধোঁয়ার মতো বিলীন হয়ে যাবে।
  19. প্রশ্ন: সূরা দুখানে আল্লাহ মানুষকে কোন বিষয়ে সতর্ক করেছেন?
    উত্তর: কিয়ামত ও আখিরাতের শাস্তি সম্পর্কে সতর্ক করেছেন।
  20. প্রশ্ন: সূরা দুখানের শেষ আয়াতে আল্লাহ কী বলেছেন?
    উত্তর: আল্লাহ বলেছেন, “নিশ্চয়ই আমি সতর্ককারী পাঠিয়েছি।”
আরও পড়তে পারেন-- সূরা কাসাস সম্পর্কে ৪৫টি কুইজ প্রশ্ন এবং MCQ

সূরা দুখান সম্পর্কে ২৫টি MCQ (বহুনির্বাচনী প্রশ্ন)

  1. সূরা দুখান কত নং সূরা?
    • (ক) ৪৪
    • (খ) ৪৫
    • (গ) ৪৬
    • (ঘ) ৪৭
      উত্তর: (ক) ৪৪
  2. সূরা দুখানে “দুখান” কী?
    • (ক) আগুন
    • (খ) ধোঁয়া
    • (গ) বৃষ্টি
    • (ঘ) বজ্রপাত
      উত্তর: (খ) ধোঁয়া
  3. সূরা দুখানে কার কথা বলা হয়েছে?
    • (ক) হযরত নূহ (আ.)
    • (খ) হযরত মুসা (আ.)
    • (গ) হযরত ঈসা (আ.)
    • (ঘ) হযরত ইব্রাহীম (আ.)
      উত্তর: (খ) হযরত মুসা (আ.)
  4. সূরা দুখানে ফিরাউনের পরিণতি কী হয়েছিল?
    • (ক) সে ক্ষমা পেয়েছিল
    • (খ) সে ডুবে মরেছিল
    • (গ) সে পালিয়ে গিয়েছিল
    • (ঘ) সে মুসলিম হয়েছিল
      উত্তর: (খ) সে ডুবে মরেছিল
  5. সূরা দুখানে জান্নাতের কী নাম বলা হয়েছে?
    • (ক) জান্নাতুল ফিরদাউস
    • (খ) জান্নাতুল মা’ওয়া
    • (গ) জান্নাতুন নাঈম
    • (ঘ) জান্নাতুল আদন
      উত্তর: (খ) জান্নাতুল মা’ওয়া
  6. সূরা দুখানে কোন রাতকে বরকতময় বলা হয়েছে?
    • (ক) শবে বরাত
    • (খ) লাইলাতুল কদর
    • (গ) শবে মেরাজ
    • (ঘ) ঈদের রাত
      উত্তর: (খ) লাইলাতুল কদর
  7. সূরা দুখানে আল্লাহ কুরআনকে কী বলেছেন?
    • (ক) সতর্কবাণী
    • (খ) বরকতময় গ্রন্থ
    • (গ) হিদায়াত
    • (ঘ) রহমত
      উত্তর: (খ) বরকতময় গ্রন্থ
  8. সূরা দুখানের শুরুতে কোন হরফ দিয়ে শুরু হয়েছে?
    • (ক) আলিফ-লাম-মীম
    • (খ) হা-মীম
    • (গ) তা-সীন
    • (ঘ) কাফ-হা-ইয়া-আইন-সাদ
      উত্তর: (খ) হা-মীম
  9. সূরা দুখানে আল্লাহ মানুষকে কী থেকে সৃষ্টি করেছেন?
    • (ক) মাটি থেকে
    • (খ) পানি থেকে
    • (গ) আগুন থেকে
    • (ঘ) আলো থেকে
      উত্তর: (খ) পানি থেকে
  10. সূরা দুখানে কাফিররা মুমিনদের কী করত?
    • (ক) সম্মান করত
    • (খ) উপহাস করত
    • (গ) সাহায্য করত
    • (ঘ) ভয় দেখাত
      উত্তর: (খ) উপহাস করত
  11. সূরা দুখানে আল্লাহ কাফিরদের কীসের সাথে তুলনা করেছেন?
    • (ক) পাথরের মতো
    • (খ) ধোঁয়ার মতো
    • (গ) বাতাসের মতো
    • (ঘ) আগুনের মতো
      উত্তর: (খ) ধোঁয়ার মতো
  12. সূরা দুখানে আল্লাহ কিয়ামতের দিন আসমানকে কী করবেন?
    • (ক) ধ্বংস করবেন
    • (খ) খুলে দেবেন
    • (গ) রঙিন করবেন
    • (ঘ) অন্ধকার করবেন
      উত্তর: (খ) খুলে দেবেন
  13. সূরা দুখানে আল্লাহর কোন গুণবাচক নাম এসেছে?
    • (ক) আল-রহমান
    • (খ) আল-মালিক
    • (গ) রাব্বুল আলামীন
    • (ঘ) আল-কাদির
      উত্তর: (গ) রাব্বুল আলামীন
  14. সূরা দুখানে মুমিনদের জন্য কী সুসংবাদ দেওয়া হয়েছে?
    • (ক) ক্ষমা ও সম্মানজনক রিজিক
    • (খ) শুধু ক্ষমা
    • (গ) শুধু রিজিক
    • (ঘ) শাস্তি
      উত্তর: (ক) ক্ষমা ও সম্মানজনক রিজিক
  15. সূরা দুখানে আল্লাহ কাফিরদের শাস্তি সম্পর্কে কী বলেছেন?
    • (ক) তারা ক্ষমা পাবে
    • (খ) তাদের জন্য মর্মন্তুদ শাস্তি রয়েছে
    • (গ) তাদের শাস্তি হালকা হবে
    • (ঘ) তাদের কোনো শাস্তি নেই
      উত্তর: (খ) তাদের জন্য মর্মন্তুদ শাস্তি রয়েছে
  16. সূরা দুখানে আল্লাহ মানুষকে কোন বিষয়ে সতর্ক করেছেন?
    • (ক) ব্যবসায়
    • (খ) কিয়ামত ও আখিরাত
    • (গ) পরিবারের ব্যাপারে
    • (ঘ) স্বাস্থ্যের ব্যাপারে
      উত্তর: (খ) কিয়ামত ও আখিরাত
  17. সূরা দুখানের শেষ আয়াতে আল্লাহ কী বলেছেন?
    • (ক) আমি সৃষ্টিকর্তা
    • (খ) আমি ক্ষমাশীল
    • (গ) আমি সতর্ককারী পাঠিয়েছি
    • (ঘ) আমি রিজিকদাতা
      উত্তর: (গ) আমি সতর্ককারী পাঠিয়েছি
  18. সূরা দুখানে আল্লাহ কুরআনকে কোন মাসে নাযিল করেছেন?
    • (ক) রমজান মাসে
    • (খ) শাওয়াল মাসে
    • (গ) মুহাররম মাসে
    • (ঘ) রজব মাসে
      উত্তর: (ক) রমজান মাসে
  19. সূরা দুখানে আল্লাহ কাফিরদের কীভাবে শাস্তি দেবেন?
    • (ক) ধীরে ধীরে
    • (খ) হঠাৎ করে
    • (গ) শাস্তি দেবেন না
    • (ঘ) তাদেরকে ক্ষমা করবেন
      উত্তর: (খ) হঠাৎ করে
  20. সূরা দুখানে আল্লাহ মুমিনদের কী দান করবেন?
    • (ক) শুধু জান্নাত
    • (খ) শুধু রিজিক
    • (গ) ক্ষমা ও সম্মানজনক রিজিক
    • (ঘ) শুধু ক্ষমা
      উত্তর: (গ) ক্ষমা ও সম্মানজনক রিজিক
  21. সূরা দুখানে আল্লাহ কাফিরদেরকে কীসের মাধ্যমে শাস্তি দিয়েছিলেন?
    • (ক) বন্যা
    • (খ) ভূমিকম্প
    • (গ) প্লেগ
    • (ঘ) বিভিন্ন আযাব
      উত্তর: (ঘ) বিভিন্ন আযাব
  22. সূরা দুখানে আল্লাহর নিদর্শনগুলো নিয়ে কারা ঠাট্টা করত?
    • (ক) মুমিনরা
    • (খ) কাফিররা
    • (গ) ফেরেশতারা
    • (ঘ) নবী-রাসূলরা
      উত্তর: (খ) কাফিররা
  23. সূরা দুখানে আল্লাহ মানুষকে কীসের মাধ্যমে সৃষ্টি করেছেন?
    • (ক) শুধু মাটি
    • (খ) শুধু পানি
    • (গ) পানি ও মাটি
    • (ঘ) আগুন
      উত্তর: (গ) পানি ও মাটি
  24. সূরা দুখানে আল্লাহ কাফিরদের ধ্বংসের কারণ কী?
    • (ক) তারা দান-খয়রাত করত
    • (খ) তারা আল্লাহর আয়াতকে অস্বীকার করত
    • (গ) তারা নামাজ পড়ত
    • (ঘ) তারা সত্য গ্রহণ করত
      উত্তর: (খ) তারা আল্লাহর আয়াতকে অস্বীকার করত
  25. সূরা দুখানে আল্লাহ কাফিরদের শাস্তিকে কী বলেছেন?
    • (ক) সাময়িক
    • (খ) মর্মন্তুদ
    • (গ) সহনীয়
    • (ঘ) অস্তিত্বহীন
      উত্তর: (খ) মর্মন্তুদ

বিঃদ্রঃ এই প্রশ্নোত্তরগুলো সূরা দুখানের মূল বিষয়বস্তু ও তাফসীরের আলোকে তৈরি করা হয়েছে। আরও গভীর জ্ঞানের জন্য তাফসীর গ্রন্থ অধ্যয়ন করুন।

সূরাটির সংক্ষিপ্ত পরিচয়, শানেনুযূল, সূরাটির গুরুত্বপূর্ণ দিক, সূরাটির শিক্ষা, সূরাটির মূল বিষয়বস্তু, সূরাটির ফযিলত, এবং সূরাটির আলোকে ৫টি বিষয়ভিত্তিক আয়াত অর্থসহ প্রতিটি বিষয় বিস্তারিত চাই

সূরা দুখান: সংক্ষিপ্ত পরিচয়, শানে নুযূল, গুরুত্বপূর্ণ দিক, শিক্ষা, মূল বিষয়বস্তু, ফযিলত ও বিষয়ভিত্তিক আয়াত

১. সূরাটির সংক্ষিপ্ত পরিচয়

  • নাম: সূরা দুখান (আরবি: سورة الدخان)
  • অর্থ: “ধোঁয়া”
  • আয়াত সংখ্যা: ৫৯
  • রুকু সংখ্যা:
  • সিজদাহ: নেই
  • নাযিলের স্থান: মক্কা
  • নাযিলের ক্রম: ৬৪তম (তাফসীরে জালালাইনের মতে)
  • পারার অবস্থান: ২৫তম পারায় (আয়াত ১-৫৯)

২. শানে নুযূল (প্রেক্ষাপট)

সূরা দুখান মক্কী জীবনে নাযিল হয়, যখন কুরাইশ নেতারা রাসূল (সা.)-কে কষ্ট দিচ্ছিল এবং ইসলামের দাওয়াত প্রত্যাখ্যান করছিল। এই সূরায় কাফিরদের ভয় দেখানো হয়েছে যে, তারা যদি তাওবা না করে, তবে আল্লাহ তাদের উপর “দুখান” (ধোঁয়া) প্রেরণ করবেন, যা তাদের জন্য কষ্টদায়ক হবে। কিছু তাফসীরবিদ বলেন, এটি কিয়ামতের নিদর্শন, আবার কারও মতে এটি ফিরাউনের সময়ের একটি আযাবের ইঙ্গিত।

৩. সূরাটির গুরুত্বপূর্ণ দিক

  1. কিয়ামতের আলামত: দুখান (ধোঁয়া) কিয়ামতের একটি বড় নিদর্শন।
  2. কুরআনের মর্যাদা: এটিকে “বরকতময় রজনী” (লাইলাতুল কদর)-এ নাযিল করা হয়েছে।
  3. আখিরাতের সতর্কবাণী: কাফিরদের জন্য ভয়াবহ শাস্তির বর্ণনা।
  4. ঐতিহাসিক উপদেশ: ফিরাউন ও তার সম্প্রদায়ের ধ্বংসের কাহিনী।
  5. মুমিনদের পুরস্কার: জান্নাতুল মা‘ওয়া ও আল্লাহর রহমতের প্রতিশ্রুতি।

৪. সূরাটির শিক্ষা

  1. আল্লাহর আযাব থেকে সতর্কতা: অবিশ্বাসীদের জন্য কঠিন শাস্তি রয়েছে।
  2. কুরআনের গুরুত্ব: এটি আল্লাহর পক্ষ থেকে নাযিলকৃত হিদায়াত।
  3. ইতিহাস থেকে শিক্ষা: ফিরাউনের মতো অহংকারীদের পরিণতি ধ্বংস।
  4. তাওবার আহ্বান: আল্লাহ ক্ষমাশীল, কিন্তু অবাধ্যতার শাস্তি অনিবার্য।
  5. মুমিনদের জন্য সুসংবাদ: আখিরাতে তাদের জন্য রয়েছে মহাপুরস্কার।

৫. সূরাটির মূল বিষয়বস্তু

  1. কুরআন নাযিলের মহিমা (আয়াত ১-৬)
  2. কিয়ামত ও দুখানের বর্ণনা (আয়াত ১০-১৬)
  3. ফিরাউন ও তার সম্প্রদায়ের ধ্বংস (আয়াত ১৭-৩৩)
  4. কাফিরদের শাস্তি ও মুমিনদের পুরস্কার (আয়াত ৪৩-৫৯)
  5. আল্লাহর একত্ব ও রিসালাতের দাবি (সূরার বিভিন্ন অংশে)

৬. সূরাটির ফযিলত

  1. রাসূল (সা.) বলেছেন:
    • “যে ব্যক্তি সূরা দুখান রাতে পাঠ করবে, সকালে ৭০ হাজার ফেরেশতা তার জন্য ক্ষমা প্রার্থনা করবে।” (তিরমিযী)
  2. মৃত্যুর সময় সহজ হওয়া:
    • এটি পাঠ করলে মৃত্যুযন্ত্রণা লাঘব হয়।
  3. জিন-শয়তানের অনিষ্ট থেকে হিফাজত:
    • নিয়মিত তিলাওয়াতকারীকে জিনের কুমন্ত্রণা স্পর্শ করে না।

৭. সূরাটির আলোকে ৫টি বিষয়ভিত্তিক আয়াত (অর্থসহ)

(১) কুরআনের মর্যাদা

আয়াত ৩:

“নিশ্চয়ই আমি একে (কুরআন) নাযিল করেছি এক বরকতময় রাতে, নিশ্চয়ই আমি সতর্ককারী।”
শিক্ষা: কুরআন লাইলাতুল কদরে নাযিল হয়েছে, যা অত্যন্ত বরকতময়।

(২) কিয়ামতের নিদর্শন (দুখান)

আয়াত ১০-১১:

“অতএব, আপনি আকাশের অপেক্ষা করুন, যে দিন তা স্পষ্ট ধোঁয়া নিয়ে আসবে। যা মানুষকে ঘিরে ফেলবে; এটি এক যন্ত্রণাদায়ক শাস্তি।”
শিক্ষা: আল্লাহর শাস্তি আসবে হঠাৎ, তাই তাওবা জরুরি।

(৩) ফিরাউনের শাস্তি

আয়াত ২৪-২৫:

“অতঃপর তারা (ফিরাউন ও তার সৈন্যরা) পালিয়ে গেল। তখন আমি তাদেরকে সমুদ্রে ডুবিয়ে দিলাম।”
শিক্ষা: অহংকার ও আল্লাহর অবাধ্যতার পরিণতি ধ্বংস।

(৪) মুমিনদের পুরস্কার

আয়াত ৫১-৫২:

“নিশ্চয়ই মুত্তাকীরা থাকবে নিরাপদ স্থানে, উদ্যান ও প্রস্রবণে। তারা পরিধান করবে সূক্ষ্ম রেশম ও মোটা রেশম, পরস্পর মুখোমুখি হয়ে বসবে।”
শিক্ষা: মুমিনদের জন্য রয়েছে জান্নাতের অফুরন্ত নেয়ামত।

(৫) আল্লাহর ক্ষমতা

আয়াত ৩৮-৩৯:

“আমি আসমান, যমীন ও এতদুভয়ের মধ্যবর্তী সবকিছু খেলাচ্ছলে সৃষ্টি করিনি। আমি এগুলো সৃষ্টি করেছি যথার্থ উদ্দেশ্যে, কিন্তু তাদের অধিকাংশই জানে না।”
শিক্ষা: পৃথিবী ও আসমানের সবকিছুর পেছনে আল্লাহর মহাজ্ঞান রয়েছে।

৮. উপসংহার

সূরা দুখান কিয়ামত, আল্লাহর শাস্তি, ইতিহাসের শিক্ষা ও মুমিনদের জন্য সুসংবাদ নিয়ে আলোচনা করে। এটি মানুষকে সতর্ক করে এবং আল্লাহর দিকে ফিরে আসার আহ্বান জানায়। নিয়মিত এ সূরা তিলাওয়াত করলে আধ্যাত্মিক ও পার্থিব কল্যাণ লাভ হয়।

📖 পড়ুন, আমল করুন ও অন্যকে জানান!