You are currently viewing সূরা ত্বহা সম্পর্কে ৪৫টি কুইজ প্রশ্ন উত্তর সহ বিস্তারিত
সূরা ত্বহা

সূরা ত্বহা সম্পর্কে ৪৫টি কুইজ প্রশ্ন উত্তর সহ বিস্তারিত

সূরা ত্বা-হা পবিত্র কুরআনের ২০তম সূরা। এটি মাক্কী সূরা এবং ১৬তম প্যারাতে অবস্থিত। সূরাটি ১৩৫টি আয়াত নিয়ে গঠিত। সূরার নাম “ত্বা-হা” এর মাধ্যমে শুরু হয়েছে, যা মুকাত্তাআত হরফ (বিচ্ছিন্ন অক্ষর) হিসেবে পরিচিত। সূরাটিতে হযরত মুসা (আ.)-এর কাহিনী বিস্তারিতভাবে বর্ণিত হয়েছে, যা আল্লাহর নবী ও রাসূলদের সংগ্রাম, তাওহীদ ও আল্লাহর উপর ভরসার শিক্ষা প্রদান করে।

সূরা ত্বহা

সূরা ত্বা-হা সম্পর্কে ২০টি শর্ট প্রশ্ন ও উত্তর:

১. প্রশ্ন:  সূরা ত্বা-হা কুরআনের কততম সূরা?  

উত্তর: ২০তম সূরা।

২. প্রশ্ন:  সূরা ত্বা-হা কোন ধরনের সূরা?  

উত্তর: এটি মাক্কী সূরা।

৩. প্রশ্ন:  সূরা ত্বা-হা কতটি আয়াত নিয়ে গঠিত?  

উত্তর: ১৩৫টি আয়াত।

৪. প্রশ্ন:  সূরা ত্বা-হা কোন প্যারাতে অবস্থিত?  

উত্তর: ১৬তম প্যারাতে।

৫. প্রশ্ন:  সূরা ত্বা-হা নামের অর্থ কী?  

 উত্তর: “ত্বা-হা” একটি মুকাত্তাআত হরফ, এর নির্দিষ্ট অর্থ আল্লাহই ভালো জানেন।

৬. প্রশ্ন:  সূরা ত্বা-হায় কোন নবীর কাহিনী বর্ণিত হয়েছে?  

উত্তর: হযরত মুসা (আ.)-এর কাহিনী।

৭. প্রশ্ন:  সূরা ত্বা-হায় ফেরাউনের কী ঘটনা উল্লেখ আছে?  

উত্তর: ফেরাউনের অহংকার ও তার ধ্বংসের ঘটনা।

৮. প্রশ্ন:  সূরা ত্বা-হায় মুসা (আ.)-এর কী মুজিজার কথা বলা হয়েছে?  

উত্তর: লাঠি সাপে পরিণত হওয়ার মুজিজা।

৯. প্রশ্ন:  সূরা ত্বা-হায় মুসা (আ.)-এর ভাই কে ছিলেন?  

উত্তর: হযরত হারুন (আ.)।

১০. প্রশ্ন:  সূরা ত্বা-হায় মুসা (আ.)-এর সাথে আল্লাহর কথোপকথন কীভাবে শুরু হয়?  

উত্তর: আল্লাহ তাকে ডেকে বলেন, “ত্বা-হা, আমি তোমাকে নির্বাচিত করেছি।”

১১. প্রশ্ন:  সূরা ত্বা-হায় মুসা (আ.)-এর কী দোয়া উল্লেখ আছে?  

উত্তর: “রব্বিশ রাহলী সাদরী” (হে আমার রব, আমার বক্ষ প্রশস্ত করে দাও)।

১২. প্রশ্ন:  সূরা ত্বা-হায় মুসা (আ.)-এর কী ভয় প্রকাশ করা হয়েছে?  

উত্তর: তিনি ফেরাউনের ভয় প্রকাশ করেন।

১৩. প্রশ্ন:  সূরা ত্বা-হায় মুসা (আ.)-এর কী সাহায্য চাওয়া হয়েছে?  

উত্তর: তিনি তার ভাই হারুন (আ.)-কে তার সহযোগী হিসেবে চেয়েছেন।

১৪. প্রশ্ন:  সূরা ত্বা-হায় মুসা (আ.)-এর কী নির্দেশ দেওয়া হয়েছে?  

উত্তর: ফেরাউনের কাছে যাওয়ার নির্দেশ।

১৫. প্রশ্ন:  সূরা ত্বা-হায় মুসা (আ.)-এর কী সতর্কতা দেওয়া হয়েছে?  

উত্তর: ফেরাউনের অহংকার ও শক্তির বিরুদ্ধে সতর্ক করা হয়েছে।

১৬. প্রশ্ন:  সূরা ত্বা-হায় মুসা (আ.)-এর কী প্রতিশ্রুতি দেওয়া হয়েছে?  

উত্তর: আল্লাহ তাকে সাহায্য করার প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন।

১৭. প্রশ্ন:  সূরা ত্বা-হায় মুসা (আ.)-এর কী শিক্ষা দেওয়া হয়েছে?  

উত্তর: আল্লাহর উপর ভরসা করার শিক্ষা।

১৮. প্রশ্ন:  সূরা ত্বা-হায় মুসা (আ.)-এর কী ঘটনা উল্লেখ আছে?  

উত্তর: তিনি তার লাঠি সাপে পরিণত করেছিলেন।

১৯. প্রশ্ন:  সূরা ত্বা-হায় মুসা (আ.)-এর কী ঘটনা উল্লেখ আছে?  

উত্তর: তিনি তার হাত উজ্জ্বল করে দেখিয়েছিলেন।

২০. প্রশ্ন:  সূরা ত্বা-হায় মুসা (আ.)-এর কী ঘটনা উল্লেখ আছে?  

উত্তর: তিনি ফেরাউনের জাদুকরদের পরাজিত করেছিলেন।

আরও পড়তে পারেন– সূরা মারিয়াম সম্পর্কে ৪৫টি কুইজ প্রশ্ন

 সূরা ত্বা-হা সম্পর্কে ২৫টি MCQ:

১. সূরা ত্বা-হা কততম সূরা?  

ক) ১০ম

খ) ১৫ম

গ) ২০তম

ঘ) ২৫তম

উত্তর: গ) ২০তম

২. সূরা ত্বা-হা কোন ধরনের সূরা?  

ক) মাদানী

খ) মাক্কী

গ) মিশ্র

ঘ) কোনোটিই নয়

উত্তর: খ) মাক্কী

৩. সূরা ত্বা-হা কতটি আয়াত নিয়ে গঠিত?  

ক) ১০০

খ) ১২০

গ) ১৩৫

ঘ) ১৫০

উত্তর: গ) ১৩৫

৪. সূরা ত্বা-হা কোন প্যারাতে অবস্থিত?

ক) ১০ম

খ) ১৬তম

গ) ২০তম

ঘ) ২৫তম

উত্তর: খ) ১৬তম

 

৫. সূরা ত্বা-হা নামের অর্থ কী?

ক) আলো

খ) মুকাত্তাআত হরফ

গ) পানি

ঘ) আগুন

উত্তর: খ) মুকাত্তাআত হরফ

 

৬. সূরা ত্বা-হায় কোন নবীর কাহিনী বর্ণিত হয়েছে?

ক) ইব্রাহিম (আ.)

খ) মুসা (আ.)

গ) ঈসা (আ.)

ঘ) নূহ (আ.)

উত্তর: খ) মুসা (আ.)

 

৭. সূরা ত্বা-হায় ফেরাউনের কী ঘটনা উল্লেখ আছে?

ক) তার ঈমান আনা

খ) তার অহংকার ও ধ্বংস

গ) তার ক্ষমা প্রার্থনা

ঘ) তার বিজয়

উত্তর: খ) তার অহংকার ও ধ্বংস

 

৮. সূরা ত্বা-হায় মুসা (আ.)-এর কী মুজিজার কথা বলা হয়েছে?

ক) লাঠি সাপে পরিণত হওয়া

খ) পানি থেকে আগুন বের করা

গ) মৃতকে জীবিত করা

ঘ) আকাশ থেকে খাদ্য পাঠানো

উত্তর: ক) লাঠি সাপে পরিণত হওয়া

 

৯. সূরা ত্বা-হায় মুসা (আ.)-এর ভাই কে ছিলেন?

ক) ইব্রাহিম (আ.)

খ) হারুন (আ.)

গ) ইসমাইল (আ.)

ঘ) ইয়াকুব (আ.)

উত্তর: খ) হারুন (আ.)

 

১০. সূরা ত্বা-হায় মুসা (আ.)-এর সাথে আল্লাহর কথোপকথন কীভাবে শুরু হয়?

ক) “ইকরা”

খ) “ত্বা-হা”

গ) “ইয়া সীন”

ঘ) “আলিফ লাম মীম”

উত্তর: খ) “ত্বা-হা”

 

১১. সূরা ত্বা-হায় মুসা (আ.)-এর কী দোয়া উল্লেখ আছে?

ক) “রব্বিশ রাহলী সাদরী”

খ) “রব্বি যিদনী ইলমা”

গ) “রব্বি ইন্নী লিমা আনজালতা ইলাইয়া মিন খাইরিন ফাকীর”

ঘ) “রব্বি ইগফিরলী”

উত্তর: ক) “রব্বিশ রাহলী সাদরী”

 

১২. সূরা ত্বা-হায় মুসা (আ.)-এর কী ভয় প্রকাশ করা হয়েছে?

ক) ফেরাউনের ভয়

খ) জাদুকরদের ভয়

গ) বনী ইসরাইলের ভয়

ঘ) আল্লাহর ভয়

উত্তর: ক) ফেরাউনের ভয়

১৩. সূরা ত্বা-হায় মুসা (আ.)-এর কী সাহায্য চাওয়া হয়েছে?  

ক) তার ভাই হারুন (আ.)-এর সাহায্য

খ) আল্লাহর সাহায্য

গ) জাদুকরদের সাহায্য

ঘ) বনী ইসরাইলের সাহায্য

উত্তর: ক) তার ভাই হারুন (আ.)-এর সাহায্য

১৪. সূরা ত্বা-হায় মুসা (আ.)-এর কী নির্দেশ দেওয়া হয়েছে?  

ক) ফেরাউনের কাছে যাওয়ার নির্দেশ

খ) জাদুকরদের কাছে যাওয়ার নির্দেশ

গ) বনী ইসরাইলের কাছে যাওয়ার নির্দেশ

ঘ) আল্লাহর কাছে যাওয়ার নির্দেশ

উত্তর: ক) ফেরাউনের কাছে যাওয়ার নির্দেশ

১৫. সূরা ত্বা-হায় মুসা (আ.)-এর কী সতর্কতা দেওয়া হয়েছে?  

ক) ফেরাউনের অহংকার

খ) জাদুকরদের অহংকার

গ) বনী ইসরাইলের অহংকার

ঘ) আল্লাহর অহংকার

উত্তর: ক) ফেরাউনের অহংকার

১৬. সূরা ত্বা-হায় মুসা (আ.)-এর কী প্রতিশ্রুতি দেওয়া হয়েছে?  

ক) আল্লাহর সাহায্য

খ) জাদুকরদের সাহায্য

গ) বনী ইসরাইলের সাহায্য

ঘ) ফেরাউনের সাহায্য

উত্তর: ক) আল্লাহর সাহায্য

১৭. সূরা ত্বা-হায় মুসা (আ.)-এর কী শিক্ষা দেওয়া হয়েছে?  

ক) আল্লাহর উপর ভরসা

খ) জাদুকরদের উপর ভরসা

গ) বনী ইসরাইলের উপর ভরসা

ঘ) ফেরাউনের উপর ভরসা

উত্তর: ক) আল্লাহর উপর ভরসা

১৮. সূরা ত্বা-হায় মুসা (আ.)-এর কী ঘটনা উল্লেখ আছে?  

ক) লাঠি সাপে পরিণত হওয়া

খ) পানি থেকে আগুন বের করা

গ) মৃতকে জীবিত করা

ঘ) আকাশ থেকে খাদ্য পাঠানো

উত্তর: ক) লাঠি সাপে পরিণত হওয়া

১৯. সূরা ত্বা-হায় মুসা (আ.)-এর কী ঘটনা উল্লেখ আছে?  

ক) হাত উজ্জ্বল করা

খ) পানি থেকে আগুন বের করা

গ) মৃতকে জীবিত করা

ঘ) আকাশ থেকে খাদ্য পাঠানো

উত্তর: ক) হাত উজ্জ্বল করা

২০. সূরা ত্বা-হায় মুসা (আ.)-এর কী ঘটনা উল্লেখ আছে?  

ক) জাদুকরদের পরাজিত করা

খ) পানি থেকে আগুন বের করা

গ) মৃতকে জীবিত করা

ঘ) আকাশ থেকে খাদ্য পাঠানো

উত্তর: ক) জাদুকরদের পরাজিত করা

২১. সূরা ত্বা-হায় মুসা (আ.)-এর কী ঘটনা উল্লেখ আছে?  

ক) ফেরাউনের ধ্বংস

খ) পানি থেকে আগুন বের করা

গ) মৃতকে জীবিত করা

ঘ) আকাশ থেকে খাদ্য পাঠানো

উত্তর: ক) ফেরাউনের ধ্বংস

২২. সূরা ত্বা-হায় মুসা (আ.)-এর কী ঘটনা উল্লেখ আছে?  

ক) বনী ইসরাইলের মুক্তি

খ) পানি থেকে আগুন বের করা

গ) মৃতকে জীবিত করা

ঘ) আকাশ থেকে খাদ্য পাঠানো

উত্তর: ক) বনী ইসরাইলের মুক্তি

২৩. সূরা ত্বা-হায় মুসা (আ.)-এর কী ঘটনা উল্লেখ আছে?  

ক) সমুদ্র বিভক্ত করা

খ) পানি থেকে আগুন বের করা

গ) মৃতকে জীবিত করা

ঘ) আকাশ থেকে খাদ্য পাঠানো

উত্তর: ক) সমুদ্র বিভক্ত করা

২৪. সূরা ত্বা-হায় মুসা (আ.)-এর কী ঘটনা উল্লেখ আছে?  

ক) তুর পাহাড়ে আল্লাহর সাথে কথা বলা

খ) পানি থেকে আগুন বের করা

গ) মৃতকে জীবিত করা

ঘ) আকাশ থেকে খাদ্য পাঠানো

উত্তর: ক) তুর পাহাড়ে আল্লাহর সাথে কথা বলা

২৫. সূরা ত্বা-হায় মুসা (আ.)-এর কী ঘটনা উল্লেখ আছে?  

ক) ফেরাউনের সৈন্যবাহিনীর ধ্বংস

খ) পানি থেকে আগুন বের করা

গ) মৃতকে জীবিত করা

ঘ) আকাশ থেকে খাদ্য পাঠানো

উত্তর: ক) ফেরাউনের সৈন্যবাহিনীর ধ্বংস

 

শানেনুযূল (নাযিলের প্রেক্ষাপট):

সূরা ত্বা-হা মক্কায় নাযিল হয়েছে, যখন নবী মুহাম্মদ (সা.)-এর উপর ইসলামের দাওয়াতের চাপ বৃদ্ধি পাচ্ছিল এবং কুরাইশদের বিরোধিতা তীব্র হয়ে উঠছিল। এই সূরাটি নবী (সা.)-কে সান্ত্বনা দেওয়ার জন্য নাযিল হয়েছিল এবং তাকে ধৈর্য ও আল্লাহর উপর ভরসা রাখার শিক্ষা দেয়। হযরত মুসা (আ.)-এর কাহিনীর মাধ্যমে নবী (সা.)-কে বুঝানো হয়েছিল যে, আল্লাহ তাঁর নবীদেরকে সবসময় সাহায্য করেন এবং তাদের সংগ্রামের মাধ্যমে সত্যের বিজয় হয়।

সূরাটির গুরুত্বপূর্ণ দিক:

১. হযরত মুসা (আ.)-এর কাহিনী: সূরাটিতে মুসা (আ.)-এর জীবন, ফেরাউনের সাথে তার সংগ্রাম, মুজিজা এবং বনী ইসরাইলের মুক্তির ঘটনা বিস্তারিতভাবে বর্ণিত হয়েছে।

২. তাওহীদের বার্তা: সূরাটি আল্লাহর একত্ববাদ ও তাঁর অসীম ক্ষমতার উপর জোর দেয়।

৩. আখিরাতের সতর্কতা: সূরাটিতে আখিরাতের দিনের হিসাব-নিকাশ ও জাহান্নামের ভয়াবহতা সম্পর্কে সতর্ক করা হয়েছে।

৪. নবীদের সংগ্রাম: হযরত মুসা (আ.)-এর মাধ্যমে নবীদের সংগ্রাম ও আল্লাহর সাহায্যের প্রতিশ্রুতির কথা বলা হয়েছে।

৫. মানুষের দায়িত্ব: সূরাটিতে মানুষের দায়িত্ব ও আল্লাহর আদেশ-নিষেধ মেনে চলার গুরুত্ব তুলে ধরা হয়েছে।

সূরাটির শিক্ষা:

১. আল্লাহর উপর ভরসা: হযরত মুসা (আ.)-এর কাহিনী থেকে শিক্ষা যে, আল্লাহর উপর ভরসা করলে সব বাধা অতিক্রম করা সম্ভব।

২. ধৈর্য ও সংগ্রাম: নবীদের জীবন থেকে ধৈর্য ও সংগ্রামের শিক্ষা পাওয়া যায়।

৩. তাওহীদের গুরুত্ব: আল্লাহর একত্ববাদ ও তাঁর আদেশ-নিষেধ মেনে চলার গুরুত্ব।

৪. অহংকারের পরিণতি: ফেরাউনের অহংকার ও তার ধ্বংসের মাধ্যমে অহংকারের ভয়াবহ পরিণতির শিক্ষা।

৫. আখিরাতের প্রস্তুতি: আখিরাতের দিনের হিসাব-নিকাশের জন্য প্রস্তুতি নেওয়ার আহ্বান।

সূরাটির মূল বিষয়বস্তু:

১. তাওহীদ ও রিসালাত: সূরাটি আল্লাহর একত্ববাদ ও নবীদের মিশনের উপর জোর দেয়।

২. হযরত মুসা (আ.)-এর কাহিনী: মুসা (আ.)-এর জন্ম, ফেরাউনের সাথে সংগ্রাম, মুজিজা এবং বনী ইসরাইলের মুক্তির ঘটনা।

৩. আখিরাতের সতর্কতা: আখিরাতের দিনের হিসাব-নিকাশ, জান্নাত ও জাহান্নামের বর্ণনা।

৪. মানুষের দায়িত্ব: আল্লাহর আদেশ-নিষেধ মেনে চলা এবং সৎপথে চলার আহ্বান।

৫. নবীদের সংগ্রাম: নবীদের সংগ্রাম ও আল্লাহর সাহায্যের প্রতিশ্রুতি।

সূরা ত্বা-হা একটি গভীর শিক্ষামূলক সূরা, যা তাওহীদ, রিসালাত, আখিরাত এবং মানুষের দায়িত্বের উপর আলোকপাত করে। এটি মুমিনদের জন্য আল্লাহর উপর ভরসা ও ধৈর্য ধারণের অনুপ্রেরণা যোগায়।

সূরা ত্বহা এর আলোকে ৫টি বিষয়ভিত্তিক আয়াত অর্থসহ ব্যাখ্যা:

১. আয়াত ২৫-২৮:
অর্থ: “হে আমার রব! আমার বক্ষ প্রশস্ত করে দিন, আমার কাজ সহজ করে দিন এবং আমার জিহ্বার জড়তা দূর করে দিন, যাতে তারা আমার কথা বুঝতে পারে।”
ব্যাখ্যা: হযরত মুসা (আ.) আল্লাহর কাছে দোয়া করছেন যেন তার কথা মানুষ বুঝতে পারে এবং তার দায়িত্ব পালন সহজ হয়।

২. আয়াত ৩৯:
অর্থ: “আমি তোমাকে আমার প্রতি থেকে বিশেষ যত্নে লালন-পালন করব এবং তোমাকে আমার বার্তা বহনকারী করব।”
ব্যাখ্যা: আল্লাহ হযরত মুসা (আ.)-কে নিরাপদে লালন-পালন করবেন এবং তাকে নবুওয়াত দান করবেন।

৩. আয়াত ৪৬:
অর্থ: “তোমরা ভয় করো না, নিশ্চয়ই আমি তোমাদের সাথে আছি, আমি শুনি এবং দেখি।”
ব্যাখ্যা: আল্লাহ হযরত মুসা (আ.) ও হারুন (আ.)-কে সাহস দিচ্ছেন এবং তাদের সাথে আছেন বলে আশ্বস্ত করছেন।

৪. আয়াত ৬৯:
অর্থ: “আর যা কিছু তারা করেছে, তা ফেলে দাও এবং বলো, ‘আসল জিনিসটি আগে আসুক।'”
ব্যাখ্যা: হযরত মুসা (আ.)-কে আল্লাহ নির্দেশ দিচ্ছেন যেন তিনি জাদুকরদের জাদুকে মিথ্যা প্রমাণ করেন।

৫. আয়াত ১২৪:
অর্থ: “যে আমার স্মরণ থেকে মুখ ফিরিয়ে নেবে, তার জীবন সংকীর্ণ হবে এবং আমি তাকে কিয়ামতের দিন অন্ধ অবস্থায় উত্থিত করব।”
ব্যাখ্যা: আল্লাহর স্মরণ থেকে দূরে সরে গেলে জীবনে সংকীর্ণতা আসে এবং পরকালে শাস্তি পেতে হয়।

সূরা ত্বহা এর নির্দিষ্ট আয়াতের অর্থ ও ব্যাখ্যা:

১. আয়াত ৪৬:
অর্থ: “তোমরা ভয় করো না, নিশ্চয়ই আমি তোমাদের সাথে আছি, আমি শুনি এবং দেখি।”
ব্যাখ্যা: আল্লাহ হযরত মুসা (আ.) ও হারুন (আ.)-কে সাহস দিচ্ছেন এবং তাদের সাথে আছেন বলে আশ্বস্ত করছেন।

২. আয়াত ৬৯:
অর্থ: “আর যা কিছু তারা করেছে, তা ফেলে দাও এবং বলো, ‘আসল জিনিসটি আগে আসুক।'”
ব্যাখ্যা: হযরত মুসা (আ.)-কে আল্লাহ নির্দেশ দিচ্ছেন যেন তিনি জাদুকরদের জাদুকে মিথ্যা প্রমাণ করেন।

৩. আয়াত ৩৯:
অর্থ: “আমি তোমাকে আমার প্রতি থেকে বিশেষ যত্নে লালন-পালন করব এবং তোমাকে আমার বার্তা বহনকারী করব।”
ব্যাখ্যা: আল্লাহ হযরত মুসা (আ.)-কে নিরাপদে লালন-পালন করবেন এবং তাকে নবুওয়াত দান করবেন।

৪. আয়াত ১২৪:
অর্থ: “যে আমার স্মরণ থেকে মুখ ফিরিয়ে নেবে, তার জীবন সংকীর্ণ হবে এবং আমি তাকে কিয়ামতের দিন অন্ধ অবস্থায় উত্থিত করব।”
ব্যাখ্যা: আল্লাহর স্মরণ থেকে দূরে সরে গেলে জীবনে সংকীর্ণতা আসে এবং পরকালে শাস্তি পেতে হয়।

৫. আয়াত ২৫-২৮:
অর্থ: “হে আমার রব! আমার বক্ষ প্রশস্ত করে দিন, আমার কাজ সহজ করে দিন এবং আমার জিহ্বার জড়তা দূর করে দিন, যাতে তারা আমার কথা বুঝতে পারে।”
ব্যাখ্যা: হযরত মুসা (আ.) আল্লাহর কাছে দোয়া করছেন যেন তার কথা মানুষ বুঝতে পারে এবং তার দায়িত্ব পালন সহজ হয়।

৬. আয়াত ৯৪:
অর্থ: “হে আমার মাতৃভ্রাতা হারুন! আমার দাড়ি ও মাথার চুল ধরে টেনো না। আমি ভয় করছিলাম যে তুমি বলবে, ‘তুমি বনি ইসরাঈলের মধ্যে বিভেদ সৃষ্টি করেছ এবং আমার কথা মান্য করনি।'”
ব্যাখ্যা: হযরত মুসা (আ.) তার ভাই হারুন (আ.)-কে সম্বোধন করে বলছেন যে তিনি ভয় পেয়েছিলেন হারুন (আ.) তাকে দোষারোপ করবেন।

সূরা ত্বহা ফজিলত

সূরা ত্বহা পবিত্র কুরআনের একটি গুরুত্বপূর্ণ সূরা, যা ২০তম সূরা হিসেবে মক্কায় অবতীর্ণ হয়েছে। এটি ১৩৫ আয়াত বিশিষ্ট এবং এর ফজিলত ও মর্যাদা অত্যন্ত উচ্চ। সূরা ত্বহা এর ফজিলত ও শানে নুযুল (অবতরণের প্রেক্ষাপট) সম্পর্কে কিছু গুরুত্বপূর্ণ তথ্য নিম্নে উল্লেখ করা হলো:

সূরা ত্বহা এর ফজিলত:

১. মানসিক প্রশান্তি ও সান্ত্বনা: সূরা ত্বহা তিলাওয়াত করলে মানসিক প্রশান্তি লাভ হয়। এটি মানুষের অন্তরে শান্তি ও স্থিরতা আনে।

২. কঠিন সময়ে সাহায্য: এই সূরা পাঠ করলে আল্লাহ তায়ালা বান্দার কঠিন সময়ে সাহায্য করেন এবং সমস্যা থেকে মুক্তি দেন।

৩. দোয়া কবুলের মাধ্যম: সূরা ত্বহা পাঠ করে দোয়া করলে আল্লাহ তায়ালা বান্দার দোয়া কবুল করেন।

৪. রাসূল (সা.) এর প্রিয় সূরা: এই সূরা রাসূলুল্লাহ (সা.) এর অত্যন্ত প্রিয় ছিল। তিনি এ সূরা তিলাওয়াত করতেন এবং এর ফজিলত সম্পর্কে উল্লেখ করেছেন।

৫. আখিরাতে সুপারিশ: সূরা ত্বহা কিয়ামতের দিন পাঠকারীর জন্য সুপারিশ করবে বলে হাদিসে বর্ণিত আছে।

সূরা ত্বহা এর শানে নুযুল

সূরা ত্বহা মক্কী জীবনে অবতীর্ণ হয়েছে, যখন নবী মুহাম্মদ (সা.) এবং মুসলিম সম্প্রদায় অত্যন্ত কঠিন পরিস্থিতির মুখোমুখি হয়েছিলেন। এই সূরার মাধ্যমে আল্লাহ তায়ালা নবী (সা.) কে সান্ত্বনা দিয়েছেন এবং তাঁর দায়িত্ব সম্পর্কে স্মরণ করিয়ে দিয়েছেন।

১. নবী (সা.) এর মানসিক অবস্থা: নবী (সা.) যখন ইসলামের দাওয়াত দেওয়া শুরু করেন, তখন কুরাইশদের অত্যাচার ও বিরোধিতার মুখে তিনি মানসিকভাবে ক্লান্ত হয়ে পড়েছিলেন। এই সূরার মাধ্যমে আল্লাহ তায়ালা তাঁকে সান্ত্বনা দেন এবং তাঁর দায়িত্বের গুরুত্ব স্মরণ করিয়ে দেন।

২. মূসা (আ.) এর কাহিনী: সূরা ত্বহায় হযরত মূসা (আ.) এর কাহিনী বিস্তারিতভাবে বর্ণনা করা হয়েছে। এই কাহিনীর মাধ্যমে নবী (সা.) কে সান্ত্বনা দেওয়া হয়েছে এবং তাঁর প্রতি আল্লাহর সাহায্য ও সমর্থনের প্রতিশ্রুতি দেওয়া হয়েছে।

৩. তাওহীদের বার্তা: এই সূরায় তাওহীদের মূলনীতি এবং আল্লাহর একত্ববাদের বার্তা স্পষ্টভাবে বর্ণনা করা হয়েছে। এটি মুশরিকদের বিরুদ্ধে একটি শক্তিশালী যুক্তি হিসেবে কাজ করে।

৪. আখিরাতের সতর্কবার্তা: সূরা ত্বহায় আখিরাতের দিনের হিসাব-নিকাশ এবং জাহান্নামের শাস্তির কথা উল্লেখ করা হয়েছে, যা মানুষকে সতর্ক করে এবং আল্লাহর আনুগত্যের দিকে আহ্বান করে।

সূরা ত্বহা এর ফজিলত ও শানে নুযুল সম্পর্কে জানা এবং এর তিলাওয়াত করা মুমিনদের জন্য অত্যন্ত উপকারী। এটি মানুষের ঈমানকে শক্তিশালী করে এবং আল্লাহর নৈকট্য লাভের মাধ্যম হিসেবে কাজ করে।

সূরা ত্বহা আয়াত ১২৪ , ৬৯, ৩৯. ২৫-২৮, ২৯, ১২৪-১২৬, ৬৫- ৬৯, ৪৬, ৯৪ অর্থসহ ব্যাখ্যা

সূরা ত্বহা পবিত্র কুরআনের একটি গুরুত্বপূর্ণ সূরা, যাতে আল্লাহ তায়ালা বিভিন্ন বিষয়ে নির্দেশনা ও উপদেশ দিয়েছেন। আপনি যে আয়াতগুলো উল্লেখ করেছেন, সেগুলোর অর্থ ও ব্যাখ্যা নিম্নে দেওয়া হলো:

১. সূরা ত্বহা, আয়াত ১২৪:

আয়াত:

وَمَنْ أَعْرَضَ عَن ذِكْرِي فَإِنَّ لَهُ مَعِيشَةً ضَنكًا وَنَحْشُرُهُ يَوْمَ الْقِيَامَةِ أَعْمَىٰ

অর্থ:

“আর যে আমার স্মরণ (কুরআন ও হিদায়াত) থেকে মুখ ফিরিয়ে নেবে, তার জন্য হবে সংকীর্ণ জীবন, এবং কিয়ামতের দিন আমরা তাকে অন্ধ অবস্থায় উঠাব।”

ব্যাখ্যা:
এই আয়াতে আল্লাহ তায়ালা সতর্ক করেছেন যে, যে ব্যক্তি আল্লাহর স্মরণ (কুরআন ও হিদায়াত) থেকে মুখ ফিরিয়ে নেবে, তার জীবন সংকীর্ণ ও কষ্টকর হয়ে যাবে। দুনিয়াতে সে শান্তি ও সুখ থেকে বঞ্চিত হবে এবং আখিরাতে তাকে অন্ধ অবস্থায় উঠানো হবে, অর্থাৎ সে হিদায়াতের আলো থেকে বঞ্চিত হবে।

সূরা ত্বহা আয়াত ৬৯

আয়াত:

وَأَلْقِ مَا فِي يَمِينِكَ تَلْقَفْ مَا صَنَعُوا ۖ إِنَّمَا صَنَعُوا كَيْدُ سَاحِرٍ ۖ وَلَا يُفْلِحُ السَّاحِرُ حَيْثُ أَتَىٰ

অর্থ:

“আর তোমার ডান হাতে যা আছে তা নিক্ষেপ কর, তা তাদের তৈরি জিনিসকে গিলে ফেলবে। তারা যা করেছে তা শুধু জাদুকরের কৌশল। আর জাদুকর যেখানেই যায়, সফল হয় না।”

ব্যাখ্যা:
এই আয়াতে হযরত মূসা (আ.) এর ঘটনা বর্ণনা করা হয়েছে। যখন ফেরাউনের জাদুকররা তাদের জাদু দেখাল, তখন আল্লাহ মূসা (আ.) কে নির্দেশ দিলেন তাঁর লাঠি নিক্ষেপ করতে। মূসা (আ.) এর লাঠি সাপ হয়ে জাদুকরদের জাদুকে গিলে ফেলল। এই ঘটনা দ্বারা প্রমাণিত হয় যে, আল্লাহর ক্ষমতার সামনে জাদু বা কুফরি শক্তি তুচ্ছ।

সূরা ত্বহা আয়াত ৩৯

আয়াত:

أَنِ اقْذِفِيهِ فِي التَّابُوتِ فَاقْذِفِيهِ فِي الْيَمِّ فَلْيُلْقِهِ الْيَمُّ بِالسَّاحِلِ يَأْخُذْهُ عَدُوٌّ لِّي وَعَدُوٌّ لَّهُ ۚ وَأَلْقَيْتُ عَلَيْكَ مَحَبَّةً مِّنِّي وَلِتُصْنَعَ عَلَىٰ عَيْنِي

অর্থ:

“তুমি তাকে (মূসাকে) একটি সিন্দুকে রাখো, তারপর সিন্দুকটিকে নদীতে ভাসিয়ে দাও। নদী তাকে তীরে পৌঁছে দেবে, তখন আমার এবং তার শত্রু তাকে তুলে নেবে। আর আমি তোমার উপর আমার পক্ষ থেকে ভালোবাসা স্থাপন করেছি এবং যাতে তুমি আমার চোখের সামনে লালিত-পালিত হও।”

ব্যাখ্যা:
এই আয়াতে হযরত মূসা (আ.) এর শৈশবের ঘটনা বর্ণনা করা হয়েছে। যখন ফেরাউন শিশুদের হত্যা করার আদেশ দিয়েছিল, তখন মূসা (আ.) এর মা তাঁকে একটি সিন্দুকে রেখে নদীতে ভাসিয়ে দেন। আল্লাহর ইচ্ছায় সিন্দুকটি ফেরাউনের প্রাসাদে পৌঁছে যায়, এবং ফেরাউনের স্ত্রী মূসা (আ.) কে লালন-পালন করেন। এই ঘটনায় আল্লাহর রহমত ও পরিকল্পনার প্রকাশ ঘটে।

সূরা ত্বহা আয়াত ২৫-২৮

আয়াত:

قَالَ رَبِّ اشْرَحْ لِي صَدْرِي ﴿٢٥﴾ وَيَسِّرْ لِي أَمْرِي ﴿٢٦﴾ وَاحْلُلْ عُقْدَةً مِّن لِّسَانِي ﴿٢٧﴾ يَفْقَهُوا قَوْلِي ﴿٢٨﴾

অর্থ:

“মূসা বললেন, হে আমার রব! আমার বক্ষ প্রশস্ত করে দিন। (২৫) এবং আমার কাজ সহজ করে দিন। (২৬) এবং আমার জিহ্বার জড়তা দূর করে দিন। (২৭) যাতে তারা আমার কথা বুঝতে পারে। (২৮)”

ব্যাখ্যা:
এই আয়াতে হযরত মূসা (আ.) আল্লাহর কাছে দোয়া করছেন। তিনি তাঁর বক্ষ প্রশস্ত করার জন্য, তাঁর কাজ সহজ করার জন্য এবং তাঁর জিহ্বার জড়তা দূর করার জন্য দোয়া করছেন, যাতে মানুষ তাঁর কথা বুঝতে পারে। এই দোয়া প্রতিটি মুমিনের জন্য শিক্ষণীয়, বিশেষ করে যখন কেউ আল্লাহর পথে দাওয়াতের কাজ করে।

সূরা ত্বহা আয়াত ১২৪-১২৬

আয়াত:

وَمَنْ أَعْرَضَ عَن ذِكْرِي فَإِنَّ لَهُ مَعِيشَةً ضَنكًا وَنَحْشُرُهُ يَوْمَ الْقِيَامَةِ أَعْمَىٰ ﴿١٢٤﴾ قَالَ رَبِّ لِمَ حَشَرْتَنِي أَعْمَىٰ وَقَدْ كُنتُ بَصِيرًا ﴿١٢٥﴾ قَالَ كَذَٰلِكَ أَتَتْكَ آيَاتُنَا فَنَسِيتَهَا ۖ وَكَذَٰلِكَ الْيَوْمَ تُنسَىٰ ﴿١٢٦﴾

অর্থ:

“আর যে আমার স্মরণ থেকে মুখ ফিরিয়ে নেবে, তার জন্য হবে সংকীর্ণ জীবন, এবং কিয়ামতের দিন আমরা তাকে অন্ধ অবস্থায় উঠাব। (১২৪) সে বলবে, হে আমার রব! কেন আমাকে অন্ধ অবস্থায় উঠালে, অথচ আমি তো দেখতে পেতাম? (১২৫) আল্লাহ বলবেন, এমনিভাবে আমার আয়াতগুলো তোমার কাছে এসেছিল, কিন্তু তুমি তা ভুলে গিয়েছিলে। আর আজ তেমনিভাবে তোমাকে ভুলে যাওয়া হবে। (১২৬)”

ব্যাখ্যা:
এই আয়াতগুলোতে আল্লাহ তায়ালা সতর্ক করেছেন যে, যারা তাঁর স্মরণ (কুরআন ও হিদায়াত) থেকে মুখ ফিরিয়ে নেবে, তাদের দুনিয়ার জীবন সংকীর্ণ ও কষ্টকর হবে। আখিরাতে তারা অন্ধ অবস্থায় উঠানো হবে এবং তাদেরকে জিজ্ঞাসা করা হবে কেন তারা আল্লাহর আয়াতগুলোকে উপেক্ষা করেছিল। এই আয়াতগুলো মানুষের জন্য একটি বড় সতর্কবার্তা।

 সূরা ত্বহা আয়াত ৬৫-৬৯

আয়াত:

قَالُوا يَا مُوسَىٰ إِمَّا أَن تُلْقِيَ وَإِمَّا أَن نَّكُونَ أَوَّلَ مَنْ أَلْقَىٰ ﴿٦٥﴾ قَالَ بَلْ أَلْقُوا ۖ فَإِذَا حِبَالُهُمْ وَعِصِيُّهُمْ يُخَيَّلُ إِلَيْهِ مِن سِحْرِهِمْ أَنَّهَا تَسْعَىٰ ﴿٦٦﴾ فَأَوْجَسَ فِي نَفْسِهِ خِيفَةً مُّوسَىٰ ﴿٦٧﴾ قُلْنَا لَا تَخَفْ إِنَّكَ أَنتَ الْأَعْلَىٰ ﴿٦٨﴾ وَأَلْقِ مَا فِي يَمِينِكَ تَلْقَفْ مَا صَنَعُوا ۖ إِنَّمَا صَنَعُوا كَيْدُ سَاحِرٍ ۖ وَلَا يُفْلِحُ السَّاحِرُ حَيْثُ أَتَىٰ ﴿٦٩﴾

অর্থ:

“তারা বলল, হে মূসা! হয় তুমি নিক্ষেপ কর, নাহয় আমরা প্রথমে নিক্ষেপ করব। (৬৫) মূসা বললেন, বরং তোমরাই নিক্ষেপ কর। তখন তাদের রশি ও লাঠিগুলো তাদের জাদুর প্রভাবে তার কাছে মনে হচ্ছিল যেন সেগুলো ছুটে বেড়াচ্ছে। (৬৬) তখন মূসা তাঁর মনে কিছু ভয় অনুভব করলেন। (৬৭) আমরা বললাম, ভয় করো না, নিশ্চয়ই তুমি বিজয়ী হবে। (৬৮) আর তোমার ডান হাতে যা আছে তা নিক্ষেপ কর, তা তাদের তৈরি জিনিসকে গিলে ফেলবে। তারা যা করেছে তা শুধু জাদুকরের কৌশল। আর জাদুকর যেখানেই যায়, সফল হয় না। (৬৯)”

ব্যাখ্যা:
এই আয়াতগুলোতে হযরত মূসা (আ.) ও ফেরাউনের জাদুকরদের মধ্যে সংঘটিত ঘটনা বর্ণনা করা হয়েছে। জাদুকররা তাদের জাদু দেখালে মূসা (আ.) কিছুটা ভয় পেলেন, কিন্তু আল্লাহ তাঁকে সাহস দিলেন এবং তাঁর লাঠি নিক্ষেপ করার নির্দেশ দিলেন। মূসা (আ.) এর লাঠি সাপ হয়ে জাদুকরদের জাদুকে গিলে ফেলল। এই ঘটনা দ্বারা প্রমাণিত হয় যে, আল্লাহর ক্ষমতার সামনে জাদু বা কুফরি শক্তি তুচ্ছ।

সূরা ত্বহা আয়াত ৪৬

আয়াত:

قَالَ لَا تَخَافَا ۖ إِنَّنِي مَعَكُمَا أَسْمَعُ وَأَرَىٰ

অর্থ:

“আল্লাহ বললেন, তোমরা ভয় করো না, নিশ্চয়ই আমি তোমাদের সাথে আছি, আমি শুনি এবং দেখি।”

ব্যাখ্যা:
এই আয়াতে আল্লাহ তায়ালা হযরত মূসা (আ.) ও তাঁর ভাই হারুন (আ.) কে সান্ত্বনা দিচ্ছেন। যখন তারা ফেরাউনের কাছে গিয়েছিলেন, তখন আল্লাহ তাদের বললেন যে, তারা যেন ভয় না পান, কারণ আল্লাহ তাদের সাথে আছেন এবং সবকিছু দেখছেন ও শুনছেন। এই আয়াতটি মুমিনদের জন্য একটি বড় সান্ত্বনা যে, আল্লাহ সবসময় তাঁর বান্দাদের সাথে আছেন।

সূরা ত্বহা আয়াত ৯৪

আয়াত:

قَالَ يَبْنَؤُمَّ لَا تَأْخُذْ بِلِحْيَتِي وَلَا بِرَأْسِي ۖ إِنِّي خَشِيتُ أَن تَقُولَ فَرَّقْتَ بَيْنَ بَنِي إِسْرَائِيلَ وَلَمْ تَرْقُبْ قَوْلِي

অর্থ:

“মূসা বললেন, হে আমার মায়ের পুত্র! আমার দাড়ি ও মাথার চুল ধরে টান দিয়ো না। আমি ভয় করেছিলাম যে, তুমি বলবে, তুমি বনি ইসরাঈলের মধ্যে বিভেদ সৃষ্টি করেছ এবং আমার কথা রক্ষা করনি।”

ব্যাখ্যা:
এই আয়াতে হযরত মূসা (আ.) তাঁর ভাই হারুন (আ.) কে সম্বোধন করছেন। যখন মূসা (আ.) তুর পাহাড়ে গিয়েছিলেন, তখন হারুন (আ.) বনি ইসরাঈলদের মধ্যে সাময়িকভাবে বিভেদ সৃষ্টি হওয়া ঠেকাতে পারেননি। মূসা (আ.) হারুন (আ.) কে সান্ত্বনা দিচ্ছেন এবং তাঁর অবস্থান বুঝতে চাইছেন। এই আয়াতটি নেতৃত্ব ও দায়িত্ব সম্পর্কে একটি গুরুত্বপূর্ণ শিক্ষা দেয়।

এই আয়াতগুলো সূরা ত্বহা এর গুরুত্বপূর্ণ অংশ, যা মানুষের জন্য আল্লাহর নির্দেশনা, সান্ত্বনা ও সতর্কবার্তা বহন করে।