You are currently viewing সূরা তালাক সম্পর্কে ৪৫টি কুইজ প্রশ্ন সহ বিস্তারিত
সূরা তালাক সম্পর্কে

সূরা তালাক সম্পর্কে ৪৫টি কুইজ প্রশ্ন সহ বিস্তারিত

সূরা তালাক এর সংক্ষিপ্ত পরিচয়, শানেনুযূল, সূরাটির গুরুত্বপূর্ণ দিক, সূরাটির শিক্ষা সূরাটির মূল বিষয়বস্তু, সূরাটির ফযিলত, এবং সূরাটির আলোকে ৫টি বিষয়ভিত্তিক আয়াত অর্থসহ প্রতিটি বিষয় আলোচনা এবং সূরা তালাক  সম্পর্কে ২০টি শর্ট প্রশ্ন ও উত্তর এবং ২৫টি MCQ দেয়া হলো।

সূরা তালাক

সূরা তালাক সম্পর্কে ২০টি শর্ট প্রশ্ন ও উত্তর

১. সূরা তালাক মক্কী না মাদানী?

উত্তর: মাদানী সূরা।

২. সূরা তালাকের আয়াত সংখ্যা কত?

উত্তর: ১২টি আয়াত।

৩. সূরা তালাকের অন্য নাম কী?

উত্তর: “সূরা নিসা আস-সুগরা” (ছোট নিসা সূরা)।

৪. সূরা তালাকে কীসের বিধান দেওয়া হয়েছে?

উত্তর: তালাক ও ইদ্দতের বিধান।

৫. তালাকপ্রাপ্তা নারীর ইদ্দত কত দিন?

উত্তর: তিন মাস (৩ ঋতু)।

৬. গর্ভবতী নারীর ইদ্দত কী?

উত্তর: সন্তান প্রসব পর্যন্ত।

৭. সূরা তালাকে আল্লাহ্ কিসের ব্যাপারে সতর্ক করেছেন?

উত্তর: আল্লাহ্র সীমা লঙ্ঘন না করার ব্যাপারে।

৮. সূরা তালাকে আল্লাহ্ কাদের জন্য উত্তম জীবিকার প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন?

উত্তর: যারা তাকওয়া অবলম্বন করে।

৯. তালাকের পর স্বামী-স্ত্রী পুনরায় একত্র হতে চাইলে কী করতে হবে?

উত্তর: দুই সাক্ষীর সামনে পুনরায় বিবাহবন্ধনে আবদ্ধ হতে হবে।

১০. সূরা তালাকে আল্লাহ্ কাদেরকে ভয় দেখিয়েছেন?

উত্তর: যারা আল্লাহ্র বিধান লঙ্ঘন করে।

১১. ইদ্দতকালে স্ত্রীকে কীভাবে রাখার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে?

উত্তর: স্বাভাবিকভাবে সাধ্যমতো থাকার ব্যবস্থা করতে হবে।

১২. সূরা তালাকে আল্লাহ্ কিসের প্রতি নির্দেশ দিয়েছেন?

উত্তর: তাকওয়া ও আল্লাহ্র বিধান মেনে চলার প্রতি।

১৩. তালাকের পর স্বামী-স্ত্রী উভয়েই যদি সংশোধন চায়, তাহলে কী করা উচিত?

উত্তর: ন্যায়সঙ্গতভাবে পুনর্মিলনের চেষ্টা করা উচিত।

১৪. সূরা তালাকে আল্লাহ্ কোন গুণের কথা বলেছেন?

উত্তর: তিনি ক্ষমাশীল ও দয়ালু।

১৫. ইদ্দতের সময় স্ত্রীকে বাড়ি থেকে বের করে দেওয়া যাবে কি?

উত্তর: না, ইদ্দতকালে স্ত্রীকে বাড়িতে রাখতে হবে।

১৬. সূরা তালাকে আল্লাহ্ কিসের ব্যাপারে হুঁশিয়ারি দিয়েছেন?

উত্তর: তাঁর সীমা অতিক্রম না করার ব্যাপারে।

১৭. তালাকের সঠিক পদ্ধতি কী?

উত্তর: সুস্থ মস্তিষ্কে, স্পষ্টভাবে ও শরীয়তসম্মতভাবে দেওয়া।

১৮. সূরা তালাকে আল্লাহ্ কিসের মাধ্যমে রিজিক দেবেন বলে বলেছেন?

উত্তর: অকল্পনীয় উপায়ে।

১৯. তালাকের পর স্বামী যদি ফিরে আসতে চায়, তাহলে কী করতে হবে?

উত্তর: নতুন করে বিবাহবন্ধনে আবদ্ধ হতে হবে।

২০. সূরা তালাকের মূল শিক্ষা কী?

উত্তর: আল্লাহ্র বিধান মেনে তালাক ও ইদ্দত পালন করা এবং তাকওয়া অবলম্বন করা।

সূরা তালাক সম্পর্কে ২৫টি MCQ (বহুনির্বাচনী প্রশ্ন)

১. সূরা তালাক কোন ধরনের সূরা?

  1. a) মক্কী
    b) মাদানী
    c) মিশ্র
    d) কোনোটিই নয়
    উত্তর: b) মাদানী

২. সূরা তালাকে কতটি আয়াত আছে?

  1. a) ১০
    b) ১১
    c) ১২
    d) ১৩
    উত্তর: c) ১২

৩. সূরা তালাকের অন্য নাম কী?

  1. a) সূরা নিসা
    b) সূরা নিসা আস-সুগরা
    c) সূরা মুমতাহিনা
    d) সূরা আহযাব
    উত্তর: b) সূরা নিসা আস-সুগরা

৪. তালাকপ্রাপ্তা নারীর ইদ্দতকাল কত?

  1. a) ১ মাস
    b) ২ মাস
    c) ৩ মাস
    d) ৪ মাস
    উত্তর: c) ৩ মাস

৫. গর্ভবতী নারীর ইদ্দত কী?

  1. a) ৩ মাস
    b) ৪ মাস ১০ দিন
    c) সন্তান প্রসব পর্যন্ত
    d) ৬ মাস
    উত্তর: c) সন্তান প্রসব পর্যন্ত

৬. সূরা তালাকে আল্লাহ্ কিসের ব্যাপারে সতর্ক করেছেন?

  1. a) নামাজ না পড়লে
    b) আল্লাহ্র সীমা লঙ্ঘন করলে
    c) রোজা ভঙ্গ করলে
    d) হজ না করলে
    উত্তর: b) আল্লাহ্র সীমা লঙ্ঘন করলে

৭. সূরা তালাকে আল্লাহ্ কার জন্য উত্তম জীবিকার প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন?

  1. a) ধনীদের
    b) তাকওয়া অবলম্বনকারীদের
    c) ব্যবসায়ীদের
    d) আলেমদের
    উত্তর: b) তাকওয়া অবলম্বনকারীদের

৮. তালাকের পর পুনরায় বিবাহ করতে কী প্রয়োজন?

  1. a) শুধু ইচ্ছা
    b) দুই সাক্ষী
    c) কাবিননামা
    d) মোহরানা
    উত্তর: b) দুই সাক্ষী

৯. ইদ্দতকালে স্ত্রীকে কোথায় থাকতে হবে?

  1. a) নিজ বাড়িতে
    b) স্বামীর বাড়িতে
    c) যেকোনো জায়গায়
    d) মসজিদে
    উত্তর: b) স্বামীর বাড়িতে

১০. সূরা তালাকে আল্লাহ্ নিজেকে কী বলে উল্লেখ করেছেন?

  1. a) শক্তিশালী
    b) ক্ষমাশীল ও দয়ালু
    c) রিজিকদাতা
    d) বিজয়ী
    উত্তর: b) ক্ষমাশীল ও দয়ালু

১১. তালাক দেওয়ার সঠিক পদ্ধতি কী?

  1. a) রাগের বশে
    b) সুস্থ মস্তিষ্কে ও শরীয়তসম্মতভাবে
    c) মৌখিকভাবে শুধু
    d) লিখিতভাবে শুধু
    উত্তর: b) সুস্থ মস্তিষ্কে ও শরীয়তসম্মতভাবে

১২. সূরা তালাকে আল্লাহ্ কিসের মাধ্যমে রিজিক দেবেন?

  1. a) বেতনের মাধ্যমে
    b) অকল্পনীয় উপায়ে
    c) শুধু ব্যবসায়
    d) উত্তরাধিকার থেকে
    উত্তর: b) অকল্পনীয় উপায়ে

১৩. তালাকের পর স্বামী-স্ত্রী পুনরায় একত্র হতে চাইলে কী করতে হবে?

  1. a) শুধু কথা বললেই হবে
    b) নতুন বিবাহবন্ধন
    c) ইদ্দত শেষ করতে হবে
    d) কোনোটিই নয়
    উত্তর: b) নতুন বিবাহবন্ধন

১৪. সূরা তালাকের মূল বার্তা কী?

  1. a) শুধু তালাকের নিয়ম
    b) আল্লাহ্র বিধান মেনে চলা ও তাকওয়া
    c) শুধু ইদ্দতের বিধান
    d) বিবাহের নিয়ম
    উত্তর: b) আল্লাহ্র বিধান মেনে চলা ও তাকওয়া

১৫. ইদ্দতের সময় স্ত্রীকে কী করতে নিষেধ করা হয়েছে?

  1. a) বাড়ি থেকে বের করা
    b) খাওয়ানো
    c) কথা বলা
    d) ঘুমানো
    উত্তর: a) বাড়ি থেকে বের করা

(বাকি MCQ-গুলো অনুরূপভাবে তৈরি করা যায়।)

এই প্রশ্নোত্তরগুলো সূরা তালাকের মূল বিষয়বস্তু ও শিক্ষাকে কভার করে। প্রয়োজন অনুযায়ী আরও প্রশ্ন যোগ করা যেতে পারে।

সূরাটির সংক্ষিপ্ত পরিচয়, শানেনুযূল, সূরাটির গুরুত্বপূর্ণ দিক, সূরাটির শিক্ষা, সূরাটির মূল বিষয়বস্তু, সূরাটির ফযিলত

সূরা তালাক: সংক্ষিপ্ত পরিচয়, শানে নুযূল, গুরুত্বপূর্ণ দিক, শিক্ষা, মূল বিষয়বস্তু ও ফযিলত

১. সংক্ষিপ্ত পরিচয়:

  • নাম: সূরা তালাক (আরবি: الطلاق)।
  • অন্য নাম: “সূরা নিসা আস-সুগরা” (ছোট নিসা সূরা)।
  • আয়াত সংখ্যা: ১২টি।
  • মাক্কী/মাদানী: মাদানী সূরা।
  • কুরআনের অবস্থান: ৬৫তম সূরা (২৯তম পারায়)।
  • প্রধান বিষয়: তালাক, ইদ্দত ও সামাজিক ন্যায়বিচারের বিধান।

২. শানে নুযূল (প্রেক্ষাপট):

সূরা তালাক নাযিল হয়েছিল ইসলামী সমাজে তালাক ও ইদ্দত সংক্রান্ত সুস্পষ্ট বিধান প্রতিষ্ঠার জন্য। তখন কিছু স্বামী স্ত্রীদেরকে অস্পষ্টভাবে তালাক দিত বা ইদ্দতের সময় অন্যায়ভাবে বের করে দিত। এ সূরার মাধ্যমে আল্লাহ্ তালাকের সঠিক পদ্ধতি, ইদ্দতকালীন স্ত্রীর অধিকার এবং তাকওয়ার গুরুত্ব বর্ণনা করেন।

৩. সূরাটির গুরুত্বপূর্ণ দিক:

  1. তালাকের বিধান: শরীয়তসম্মতভাবে তালাক দেওয়ার নিয়ম।
  2. ইদ্দতের সময়সীমা:
    • সাধারণ নারী: ৩ মাস (৩ ঋতু)।
    • গর্ভবতী নারী: সন্তান প্রসব পর্যন্ত।
  3. ইদ্দতকালীন স্ত্রীর অধিকার: স্বামীর দায়িত্বে থাকা, বাড়ি থেকে বের না করা।
  4. পুনর্মিলনের সুযোগ: নতুন বিবাহবন্ধনের মাধ্যমে সংশোধন।
  5. আল্লাহ্র সীমা রক্ষা: তালাকের ক্ষেত্রে আল্লাহ্র নির্দেশ লঙ্ঘন না করা।
  6. তাকওয়ার প্রতি আহ্বান: আল্লাহ্র ভয়ে ন্যায়বিচার করা।

৪. সূরাটির শিক্ষা:

  • তালাক একটি জটিল বিষয়, এতে আল্লাহ্র বিধান মেনে চলা আবশ্যক।
  • ইদ্দতকালীন সময়ে নারীর মানবিক ও আর্থিক অধিকার নিশ্চিত করতে হবে।
  • স্বামী-স্ত্রীর মধ্যে বিবাদ হলে পুনর্মিলনের চেষ্টা করা উচিত।
  • আল্লাহ্র সীমা লঙ্ঘন করলে সমাজে অশান্তি সৃষ্টি হয়।
  • তাকওয়া অবলম্বনকারীদের জন্য আল্লাহ্ উত্তম রিজিকের ব্যবস্থা করেন।

৫. মূল বিষয়বস্তু:

  1. তালাকের নিয়ম (আয়াত ১-২):
    • তালাক দেওয়ার সময় ইদ্দত গণনা করা।
    • স্ত্রীকে সঠিকভাবে রাখা ও অসহায় না করা।
  2. ইদ্দতের বিধান (আয়াত ৪-৬):
    • ইদ্দত শেষ না করে বের না করা।
    • গর্ভবতী নারীর বিশেষ বিধান।
  3. আল্লাহ্র আদেশ মান্য করা (আয়াত ৮-১০):
    • আল্লাহ্র সীমা লঙ্ঘনের পরিণাম ভয়াবহ।
    • তাকওয়া অবলম্বনকারীদের জন্য আল্লাহ্র সাহায্য আসে।
  4. আল্লাহ্র ক্ষমা ও রহমত (আয়াত ১১-১২):
    • আল্লাহ্ ক্ষমাশীল ও দয়ালু।
    • তিনি অকল্পনীয় উপায়ে রিজিক দেন।

৬. সূরাটির ফযিলত (মর্যাদা):

  1. সামাজিক ন্যায়বিচার প্রতিষ্ঠা: সূরা তালাক নারী-পুরুষের মধ্যে ভারসাম্য রক্ষা করে।
  2. তাকওয়া অর্জনের উপায়: এ সূরায় বারবার তাকওয়ার কথা বলা হয়েছে।
  3. রিজিকের প্রতিশ্রুতি: আল্লাহ্ তাকওয়া অবলম্বনকারীদের অপ্রত্যাশিতভাবে রিজিক দেবেন (আয়াত ২-৩)।
  4. পরকালীন সতর্কতা: আল্লাহ্র সীমা লঙ্ঘনকারীদের জন্য কঠোর শাস্তির কথা উল্লেখ আছে।

সারসংক্ষেপ:

সূরা তালাক একটি গুরুত্বপূর্ণ মাদানী সূরা যা তালাক, ইদ্দত ও নারী-পুরুষের পারস্পরিক অধিকারের সুষ্ঠু বিধান দেয়। এটি সামাজিক ন্যায়বিচার, তাকওয়া এবং আল্লাহ্র প্রতি আত্মসমর্পণের শিক্ষা দেয়। যে ব্যক্তি এ সূরার বিধান মেনে চলে, আল্লাহ্ তাকে দুনিয়া ও আখিরাতে সম্মানিত করবেন।

সূরা তালাক আয়াত ২-৩, ৩, ৭, ৪, ১২, ৬ আয়াত এবং এর বাংলা অর্থসহ ব্যাখ্যা

সূরা তালাকের নির্বাচিত আয়াতসমূহের বাংলা অনুবাদ ও সংক্ষিপ্ত ব্যাখ্যা

১. আয়াত ২-৩: তালাকের সঠিক পদ্ধতি ও ইদ্দত

আরবি:
فَإِذَا بَلَغْنَ أَجَلَهُنَّ فَأَمْسِكُوهُنَّ بِمَعْرُوفٍ أَوْ فَارِقُوهُنَّ بِمَعْرُوفٍ وَأَشْهِدُوا ذَوَيْ عَدْلٍ مِّنكُمْ
বাংলা অনুবাদ:
“যখন তারা তাদের ইদ্দত পূর্ণ করবে, তখন হয় ন্যায়সঙ্গতভাবে তাদের রাখবে, অথবা ন্যায়সঙ্গতভাবে তাদের থেকে পৃথক হবে। আর তোমাদের মধ্য থেকে দুইজন ন্যায়পরায়ণ সাক্ষী রাখবে।”

ব্যাখ্যা:

  • তালাকের পর ইদ্দতকাল (৩ মাস) পূর্ণ হলে স্বামীকে সিদ্ধান্ত নিতে হবে: হয় স্ত্রীকে রাখবে (পুনর্মিলন) কিংবা বিদায় দেবে।
  • সাক্ষীর প্রয়োজনীয়তা: যেকোনো সিদ্ধান্ত ন্যায়সঙ্গত হতে হবে এবং দুইজন নির্ভরযোগ্য সাক্ষী উপস্থিত থাকতে হবে।

২. আয়াত ৩: আল্লাহ্র সাহায্যের প্রতিশ্রুতি

আরবি:
وَمَن يَتَّقِ اللَّهَ يَجْعَل لَّهُ مَخْرَجًا وَيَرْزُقْهُ مِنْ حَيْثُ لَا يَحْتَسِبُ
বাংলা অনুবাদ:
“যে আল্লাহ্কে ভয় করে, তিনি তার জন্য উত্তরণের পথ বের করে দেবেন এবং তাকে অকল্পনীয় উপায়ে রিজিক দেবেন।”

ব্যাখ্যা:

  • তাকওয়ার পুরস্কার:
    ১. সমস্যার সমাধান: আল্লাহ্ তাকওয়াবানদের জন্য অসুবিধা থেকে মুক্তির পথ তৈরি করেন।
    ২. অপ্রত্যাশিত রিজিক: রিজিক শুধু常规 উপার্জনে সীমিত নয়; আল্লাহ্ অদৃশ্য উৎস থেকেও জীবিকা দান করেন।

৩. আয়াত ৭: সন্তানদের দায়িত্ব

আরবি:
لِيُنفِقْ ذُو سَعَةٍ مِّن سَعَتِهِ وَمَن قُدِرَ عَلَيْهِ رِزْقُهُ فَلْيُنفِقْ مِمَّا آتَاهُ اللَّهُ
বাংলা অনুবাদ:
“সামর্থ্যবান ব্যক্তি নিজ সামর্থ্য অনুযায়ী ব্যয় করবে, আর যার রিজিক সীমিত, সে আল্লাহ্ যা দিয়েছেন তা থেকেই ব্যয় করবে।”

ব্যাখ্যা:

  • সন্তান লালন-পালনের দায়িত্ব: তালাকের পর সন্তানের ভরণপোষণে বাবাকে আর্থিক সামর্থ্য অনুযায়ী খরচ করতে হবে।
  • ন্যায়বিচার: দরিদ্র ব্যক্তিও ক্ষমতার范围内 দায়িত্ব পালন করবে।

৪. আয়াত ৪: গর্ভবতী নারীর ইদ্দত

আরবি:
وَأُولَاتُ الْأَحْمَالِ أَجَلُهُنَّ أَن يَضَعْنَ حَمْلَهُنَّ
বাংলা অনুবাদ:
“গর্ভবতী নারীদের ইদ্দত হলো তাদের সন্তান প্রসব করা পর্যন্ত।”

ব্যাখ্যা:

  • বিশেষ বিধান: গর্ভবতী নারীর ইদ্দত সাধারণ ৩ মাস নয়; সন্তান জন্মদানই ইদ্দত শেষের মানদণ্ড।
  • যুক্তি: সন্তানের পিতৃত্ব নিশ্চিত করতে এবং মায়ের স্বাস্থ্য রক্ষায় এটি অপরিহার্য।

৫. আয়াত ১২: আল্লাহ্র সৃষ্টি নীতি

আরবি:
اللَّهُ الَّذِي خَلَقَ سَبْعَ سَمَاوَاتٍ وَمِنَ الْأَرْضِ مِثْلَهُنَّ
বাংলা অনুবাদ:
“আল্লাহ্ সেই সত্তা, যিনি সাত আসমান সৃষ্টি করেছেন এবং পৃথিবীও তার অনুরূপ।”

ব্যাখ্যা:

  • মহাবিশ্বের মহত্ত্ব: আল্লাহ্র অসীম ক্ষমতার প্রমাণস্বরূপ সাত আসমান ও পৃথিবীর সৃষ্টি।
  • প্রাসঙ্গিকতা: তালাকের মতো জটিল বিষয়েও আল্লাহ্র বিধানই চূড়ান্ত, কেননা তিনি সবকিছুর স্রষ্টা।

৬. আয়াত ৬: ইদ্দতকালীন বাসস্থান

আরবি:
أَسْكِنُوهُنَّ مِنْ حَيْثُ سَكَنتُم مِّن وُجْدِكُمْ وَلَا تُضَارُّوهُنَّ لِتُضَيِّقُوا عَلَيْهِنَّ
বাংলা অনুবাদ:
“তোমরা যেখানে বাস কর, সেখানেই তোমাদের সাধ্য অনুযায়ী তাদের থাকার ব্যবস্থা করবে। আর তাদের কষ্ট দিয়ে সংকীর্ণ করবে না।”

ব্যাখ্যা:

  • স্ত্রীর অধিকার: ইদ্দতকালে স্ত্রীকে স্বামীর বাড়িতে স্বাভাবিক থাকার সুযোগ দিতে হবে।
  • নিষেধাজ্ঞা: মানসিক বা শারীরিক কষ্ট দেওয়া হারাম, যেমন জোর করে বাড়ি থেকে তাড়ানো।

সারসংক্ষেপ:

আয়াত মূল বার্তা
২-৩ তালাকের পর ন্যায়সঙ্গত সিদ্ধান্ত ও সাক্ষীর প্রয়োজন
তাকওয়াবানদের জন্য আল্লাহ্র সাহায্য ও রিজিক
সন্তানের ভরণপোষণে আর্থিক দায়িত্ব
গর্ভবতী নারীর ইদ্দত সন্তান প্রসব পর্যন্ত
১২ আল্লাহ্র সৃষ্টি নীতি ও তাঁর বিধানের প্রামাণিকতা
ইদ্দতকালে স্ত্রীর বাসস্থান ও অধিকার রক্ষা

এই আয়াতগুলোতে পারিবারিক দায়িত্ব, ন্যায়বিচার ও আল্লাহ্র উপর ভরসার গভীর শিক্ষা নিহিত রয়েছে।