You are currently viewing সূরা কাসাস সম্পর্কে ৪৫টি কুইজ প্রশ্ন এবং MCQ
সূরা কাসাস

সূরা কাসাস সম্পর্কে ৪৫টি কুইজ প্রশ্ন এবং MCQ

সূরা আল-কাসাস কুরআন মাজিদের ২৮তম সূরা। এটি মক্কায় অবতীর্ণ হয় এবং এর আয়াত সংখ্যা ৮৮। সূরাটির নাম “আল-কাসাস” (কাহিনী) রাখা হয়েছে কারণ এতে মুসা (আ.)-এর জীবনী এবং অন্যান্য ঐতিহাসিক কাহিনী বিস্তারিতভাবে বর্ণনা করা হয়েছে। সূরা কাসাস সম্পর্কে ৪৫টি কুইজ প্রশ্ন এবং MCQ সহ বিস্তারিত আলৈাচনা করা হলো

সূরা কাসাস

সূরা আল-কাসাস সম্পর্কে ২০টি শর্ট প্রশ্ন ও উত্তর:

১. প্রশ্ন: সূরা আল-কাসাস কুরআনের কততম সূরা?
উত্তর: সূরা আল-কাসাস কুরআনের ২৮তম সূরা।

২. প্রশ্ন: সূরা আল-কাসাস কতটি আয়াত নিয়ে গঠিত?
উত্তর: সূরা আল-কাসাস ৮৮টি আয়াত নিয়ে গঠিত।

৩. প্রশ্ন: সূরা আল-কাসাস কোন ধরনের সূরা?
উত্তর: এটি একটি মক্কী সূরা।

৪. প্রশ্ন: সূরা আল-কাসাসের প্রধান বিষয় কী?
উত্তর: এই সূরায় মুসা (আ.)-এর জীবনী, ফেরাউনের অত্যাচার এবং আল্লাহর নিদর্শন সম্পর্কে আলোচনা করা হয়েছে।

৫. প্রশ্ন: সূরা আল-কাসাসে মুসা (আ.)-এর জন্মের ঘটনা কীভাবে বর্ণনা করা হয়েছে?
উত্তর: মুসা (আ.)-এর মাকে আল্লাহ নির্দেশ দেন যেন তিনি মুসাকে নদীতে ভাসিয়ে দেন, পরে ফেরাউনের পরিবার তাকে তুলে নেয়।

৬. প্রশ্ন: সূরা আল-কাসাসে মুসা (আ.)-এর মায়ের প্রতি আল্লাহর কী প্রতিশ্রুতি দেওয়া হয়?
উত্তর: আল্লাহ প্রতিশ্রুতি দেন যে মুসা (আ.)-এর মা তাকে ফিরে পাবেন এবং তিনি একজন নবীর মা হবেন।

৭. প্রশ্ন: সূরা আল-কাসাসে মুসা (আ.)-এর মিসর ত্যাগের কারণ কী?
উত্তর: মুসা (আ.) একজন কপটীয় ব্যক্তিকে হত্যা করে ফেলেন এবং এরপর তিনি মিসর ত্যাগ করেন।



৮. প্রশ্ন: সূরা আল-কাসাসে মুসা (আ.) মাদিয়ানে কত বছর অবস্থান করেন?
উত্তর: তিনি মাদিয়ানে ১০ বছর অবস্থান করেন।

৯. প্রশ্ন: সূরা আল-কাসাসে মুসা (আ.)-এর স্ত্রীর নাম কী?
উত্তর: তাঁর স্ত্রীর নাম সফুরা।

১০. প্রশ্ন: সূরা আল-কাসাসে মুসা (আ.)-এর নবুয়ত প্রাপ্তির ঘটনা কীভাবে বর্ণনা করা হয়েছে?
উত্তর: মুসা (আ.) তুয়া উপত্যকায় আগুন দেখে সেখানে যান এবং আল্লাহর সাথে কথা বলেন, যেখানে তিনি নবুয়ত প্রাপ্ত হন।

১১. প্রশ্ন: সূরা আল-কাসাসে কারুনের কাহিনী কীভাবে বর্ণনা করা হয়েছে?
উত্তর: কারুন সম্পদ ও ক্ষমতার অহংকারে ভুগতেন এবং শেষ পর্যন্ত আল্লাহর শাস্তির মুখে পড়েন।

১২. প্রশ্ন: সূরা আল-কাসাসে আল্লাহর নিদর্শন সম্পর্কে কী বলা হয়েছে?
উত্তর: আল্লাহর নিদর্শনগুলি তাঁর অসীম ক্ষমতা ও জ্ঞানের প্রমাণ।

১৩. প্রশ্ন: সূরা আল-কাসাসে মুসা (আ.)-এর ভাইয়ের নাম কী?
উত্তর: তাঁর ভাইয়ের নাম হারুন (আ.)।

১৪. প্রশ্ন: সূরা আল-কাসাসে মুসা (আ.)-এর নবুয়ত প্রাপ্তির সময় আল্লাহ তাকে কী দিয়েছিলেন?
উত্তর: আল্লাহ তাকে একটি লাঠি এবং তাঁর হাতকে উজ্জ্বল করে দিয়েছিলেন।

১৫. প্রশ্ন: সূরা আল-কাসাসে মুসা (আ.)-এর লাঠির বিশেষত্ব কী ছিল?
উত্তর: এটি একটি সাধারণ লাঠি থেকে সাপে পরিণত হতে পারত এবং অন্যান্য অলৌকিক কাজ করতে পারত।

১৬. প্রশ্ন: সূরা আল-কাসাসে মুসা (আ.)-এর মিশনে হারুন (আ.)-এর ভূমিকা কী ছিল?
উত্তর: হারুন (আ.) মুসা (আ.)-এর সহযোগী হিসেবে নিযুক্ত হন এবং তাঁকে সাহায্য করেন।

১৭. প্রশ্ন: সূরা আল-কাসাসে ফেরাউনের শেষ পরিণতি কী হয়?
উত্তর: ফেরাউন সাগরে ডুবে মারা যায়।

১৮. প্রশ্ন: সূরা আল-কাসাসে মুসা (আ.)-এর কাহিনী থেকে কী শিক্ষা পাওয়া যায়?
উত্তর: আল্লাহর উপর ভরসা করা এবং অহংকার ত্যাগ করা।

১৯. প্রশ্ন: সূরা আল-কাসাসে আল্লাহর নিদর্শনগুলির উদ্দেশ্য কী?
উত্তর: মানুষকে সঠিক পথের দিকে পরিচালিত করা এবং আল্লাহর ক্ষমতা সম্পর্কে সচেতন করা।

২০. প্রশ্ন: সূরা আল-কাসাসে মুসা (আ.)-এর কাহিনী কেন গুরুত্বপূর্ণ?
উত্তর: এটি আল্লাহর নিদর্শন, নবীদের ধৈর্য এবং অত্যাচারী শক্তির বিরুদ্ধে সংগ্রামের শিক্ষা দেয়।



সূরা আল-কাসাস সম্পর্কে ২৫টি MCQ:

১. সূরা আল-কাসাস কুরআনের কততম সূরা?
a) ২৫তম
b) ২৮তম
c) ৩০তম
d) ৩৫তম
উত্তর: b) ২৮তম

২. সূরা আল-কাসাসে মুসা (আ.)-এর জন্মের সময় কী ঘটেছিল?
a) তিনি মিসরের রাজা হন
b) তাঁর মা তাকে নদীতে ভাসিয়ে দেন
c) তিনি সরাসরি নবুয়ত পান
d) তিনি মক্কায় চলে যান
উত্তর: b) তাঁর মা তাকে নদীতে ভাসিয়ে দেন

৩. মুসা (আ.)-এর মায়ের প্রতি আল্লাহর প্রতিশ্রুতি কী ছিল?
a) তিনি সম্পদশালী হবেন
b) তিনি মুসাকে ফিরে পাবেন
c) তিনি মিসরের রানী হবেন
d) তিনি একজন নবী হবেন
উত্তর: b) তিনি মুসাকে ফিরে পাবেন

৪. মুসা (আ.) মাদিয়ানে কত বছর অবস্থান করেন?
a) ৫ বছর
b) ১০ বছর
c) ১৫ বছর
d) ২০ বছর
উত্তর: b) ১০ বছর

৫. মুসা (আ.)-এর স্ত্রীর নাম কী?
a) মারিয়াম
b) সফুরা
c) খাদিজা
d) আয়েশা
উত্তর: b) সফুরা

৬. মুসা (আ.)-এর নবুয়ত প্রাপ্তির স্থান কোথায়?
a) মক্কা
b) মদিনা
c) তুয়া উপত্যকা
d) মিসর
উত্তর: c) তুয়া উপত্যকা

৭. মুসা (আ.)-এর লাঠির বিশেষত্ব কী ছিল?
a) এটি সোনার তৈরি ছিল
b) এটি সাপে পরিণত হতে পারত
c) এটি উড়তে পারত
d) এটি অদৃশ্য হতে পারত
উত্তর: b) এটি সাপে পরিণত হতে পারত

৮. কারুনের কাহিনীতে কী ঘটেছিল?
a) তিনি নবী হন
b) তিনি সম্পদের অহংকারে ধ্বংস হন
c) তিনি মুসা (আ.)-এর অনুসারী হন
d) তিনি মিসরের রাজা হন
উত্তর: b) তিনি সম্পদের অহংকারে ধ্বংস হন

৯. ফেরাউনের শেষ পরিণতি কী হয়?
a) তিনি মুসলিম হন
b) তিনি সাগরে ডুবে মারা যান
c) তিনি মদিনায় চলে যান
d) তিনি নবী হন
উত্তর: b) তিনি সাগরে ডুবে মারা যান

১০. সূরা আল-কাসাসে মুসা (আ.)-এর ভাইয়ের নাম কী?
a) ইব্রাহিম
b) হারুন
c) ইসহাক
d) ইসমাইল
উত্তর: b) হারুন



১১. সূরা আল-কাসাসে মুসা (আ.)-এর মায়ের প্রতি আল্লাহর নির্দেশ কী ছিল?
a) তাকে মিসরে নিয়ে যাও
b) তাকে নদীতে ভাসিয়ে দেওয়া
c) তাকে লুকিয়ে রাখা
d) তাকে মদিনায় পাঠানো
উত্তর: b) তাকে নদীতে ভাসিয়ে দেওয়া

১২. সূরা আল-কাসাসে মুসা (আ.)-এর মায়ের প্রতি আল্লাহর প্রতিশ্রুতি কী ছিল?
a) তিনি সম্পদশালী হবেন
b) তিনি মুসাকে ফিরে পাবেন
c) তিনি মিসরের রানী হবেন
d) তিনি একজন নবী হবেন
উত্তর: b) তিনি মুসাকে ফিরে পাবেন

১৩. সূরা আল-কাসাসে মুসা (আ.)-এর মিশনে হারুন (আ.)-এর ভূমিকা কী ছিল?
a) তিনি মুসা (আ.)-এর সহযোগী ছিলেন
b) তিনি মুসা (আ.)-এর বিরোধী ছিলেন
c) তিনি মিসরের রাজা ছিলেন
d) তিনি মুসা (আ.)-এর শিক্ষক ছিলেন
উত্তর: a) তিনি মুসা (আ.)-এর সহযোগী ছিলেন

১৪. সূরা আল-কাসাসে মুসা (আ.)-এর লাঠির বিশেষত্ব কী ছিল?
a) এটি সোনার তৈরি ছিল
b) এটি সাপে পরিণত হতে পারত
c) এটি উড়তে পারত
d) এটি অদৃশ্য হতে পারত
উত্তর: b) এটি সাপে পরিণত হতে পারত

১৫. সূরা আল-কাসাসে কারুনের কাহিনীতে কী ঘটেছিল?
a) তিনি নবী হন
b) তিনি সম্পদের অহংকারে ধ্বংস হন
c) তিনি মুসা (আ.)-এর অনুসারী হন
d) তিনি মিসরের রাজা হন
উত্তর: b) তিনি সম্পদের অহংকারে ধ্বংস হন

১৬. সূরা আল-কাসাসে ফেরাউনের শেষ পরিণতি কী হয়?
a) তিনি মুসলিম হন
b) তিনি সাগরে ডুবে মারা যান
c) তিনি মদিনায় চলে যান
d) তিনি নবী হন
উত্তর: b) তিনি সাগরে ডুবে মারা যান

১৭. সূরা আল-কাসাসে মুসা (আ.)-এর ভাইয়ের নাম কী?
a) ইব্রাহিম
b) হারুন
c) ইসহাক
d) ইসমাইল
উত্তর: b) হারুন

১৮. সূরা আল-কাসাসে মুসা (আ.)-এর মায়ের প্রতি আল্লাহর নির্দেশ কী ছিল?
a) তাকে মিসরে নিয়ে যাও
b) তাকে নদীতে ভাসিয়ে দেওয়া
c) তাকে লুকিয়ে রাখা
d) তাকে মদিনায় পাঠানো
উত্তর: b) তাকে নদীতে ভাসিয়ে দেওয়া

১৯. সূরা আল-কাসাসে মুসা (আ.)-এর মায়ের প্রতি আল্লাহর প্রতিশ্রুতি কী ছিল?
a) তিনি সম্পদশালী হবেন
b) তিনি মুসাকে ফিরে পাবেন
c) তিনি মিসরের রানী হবেন
d) তিনি একজন নবী হবেন
উত্তর: b) তিনি মুসাকে ফিরে পাবেন

২০. সূরা আল-কাসাসে মুসা (আ.)-এর মিশনে হারুন (আ.)-এর ভূমিকা কী ছিল?
a) তিনি মুসা (আ.)-এর সহযোগী ছিলেন
b) তিনি মুসা (আ.)-এর বিরোধী ছিলেন
c) তিনি মিসরের রাজা ছিলেন
d) তিনি মুসা (আ.)-এর শিক্ষক ছিলেন
উত্তর: a) তিনি মুসা (আ.)-এর সহযোগী ছিলেন

২১. সূরা আল-কাসাসে মুসা (আ.)-এর লাঠির বিশেষত্ব কী ছিল?
a) এটি সোনার তৈরি ছিল
b) এটি সাপে পরিণত হতে পারত
c) এটি উড়তে পারত
d) এটি অদৃশ্য হতে পারত
উত্তর: b) এটি সাপে পরিণত হতে পারত

২২. সূরা আল-কাসাসে কারুনের কাহিনীতে কী ঘটেছিল?
a) তিনি নবী হন
b) তিনি সম্পদের অহংকারে ধ্বংস হন
c) তিনি মুসা (আ.)-এর অনুসারী হন
d) তিনি মিসরের রাজা হন
উত্তর: b) তিনি সম্পদের অহংকারে ধ্বংস হন

২৩. সূরা আল-কাসাসে ফেরাউনের শেষ পরিণতি কী হয়?
a) তিনি মুসলিম হন
b) তিনি সাগরে ডুবে মারা যান
c) তিনি মদিনায় চলে যান
d) তিনি নবী হন
উত্তর: b) তিনি সাগরে ডুবে মারা যান

২৪. সূরা আল-কাসাসে মুসা (আ.)-এর ভাইয়ের নাম কী?
a) ইব্রাহিম
b) হারুন
c) ইসহাক
d) ইসমাইল
উত্তর: b) হারুন

২৫. সূরা আল-কাসাসে মুসা (আ.)-এর মায়ের প্রতি আল্লাহর নির্দেশ কী ছিল?
a) তাকে মিসরে নিয়ে যাও
b) তাকে নদীতে ভাসিয়ে দেওয়া
c) তাকে লুকিয়ে রাখা
d) তাকে মদিনায় পাঠানো
উত্তর: b) তাকে নদীতে ভাসিয়ে দেওয়া

এই প্রশ্ন ও উত্তরগুলি সূরা আল-কাসাসের বিষয়বস্তু ও শিক্ষা সম্পর্কে ধারণা দেবে।



সূরা কাসাস সংক্ষিপ্ত পরিচয়:

সূরা আল-কাসাস কুরআন মাজিদের ২৮তম সূরা। এটি মক্কায় অবতীর্ণ হয় এবং এর আয়াত সংখ্যা ৮৮। সূরাটির নাম “আল-কাসাস” (কাহিনী) রাখা হয়েছে কারণ এতে মুসা (আ.)-এর জীবনী এবং অন্যান্য ঐতিহাসিক কাহিনী বিস্তারিতভাবে বর্ণনা করা হয়েছে। এই সূরায় আল্লাহর নিদর্শন, নবীদের ধৈর্য, অত্যাচারী শক্তির বিরুদ্ধে সংগ্রাম এবং আল্লাহর উপর ভরসার গুরুত্ব ফুটে উঠেছে।

সূরা কাসাস শানে নুযূল (অবতরণের প্রেক্ষাপট):

সূরা আল-কাসাস মক্কী জীবনের শেষ দিকে অবতীর্ণ হয়। তখন মুসলিমরা কাফিরদের অত্যাচার ও নির্যাতনের শিকার হচ্ছিলেন। এই সূরায় মুসা (আ.)-এর কাহিনী বর্ণনা করে মুসলিমদের ধৈর্য ধারণ এবং আল্লাহর উপর ভরসা করার শিক্ষা দেওয়া হয়েছে। মুসা (আ.)-এর সংগ্রাম এবং ফেরাউনের পরাজয়ের মাধ্যমে আল্লাহর শক্তির প্রমাণ দেখানো হয়েছে, যা মুসলিমদের জন্য আশার বার্তা বহন করে।

সূরা কাসাস গুরুত্বপূর্ণ দিক:

  • মুসা (আ.)-এর জীবনী: সূরাটিতে মুসা (আ.)-এর জন্ম থেকে নবুয়ত প্রাপ্তি পর্যন্ত বিস্তারিত কাহিনী বর্ণনা করা হয়েছে।
  • ফেরাউনের অত্যাচার: ফেরাউনের জুলুম এবং তার পরিণতি সম্পর্কে আলোচনা করা হয়েছে।
  • কারুনের কাহিনী: সম্পদ ও ক্ষমতার অহংকারের পরিণতি সম্পর্কে শিক্ষা দেওয়া হয়েছে।
  • আল্লাহর নিদর্শন: আল্লাহর ক্ষমতা ও জ্ঞানের প্রমাণ হিসেবে বিভিন্ন নিদর্শন উপস্থাপন করা হয়েছে।
  • আখিরাতের স্মরণ: দুনিয়ার জীবনের মোহ ত্যাগ করে আখিরাতের প্রতি মনোযোগ দেওয়ার আহ্বান জানানো হয়েছে।

সূরা কাসাস শিক্ষা:

  • আল্লাহর উপর ভরসা করা এবং ধৈর্য ধারণ করা।
  • অত্যাচারী শক্তির বিরুদ্ধে সংগ্রামে আল্লাহর সাহায্য আসবে।
  • সম্পদ ও ক্ষমতার অহংকার ধ্বংসের কারণ।
  • আল্লাহর নিদর্শনগুলির মাধ্যমে তাঁর অসীম ক্ষমতা ও জ্ঞানের প্রমাণ।
  • দুনিয়ার জীবনের মোহ ত্যাগ করে আখিরাতের প্রস্তুতি নেওয়া।

সূরা কাসাস মূল বিষয়বস্তু:

সূরা আল-কাসাসের মূল বিষয়বস্তু হলো:

  • মুসা (আ.)-এর জীবনী এবং তাঁর মাধ্যমে আল্লাহর নিদর্শন প্রকাশ।
  • ফেরাউনের অত্যাচার ও তার পরিণতি।
  • কারুনের সম্পদ ও অহংকারের কাহিনী।
  • আল্লাহর ক্ষমতা ও জ্ঞানের প্রমাণ।
  • দুনিয়ার জীবনের মোহ ত্যাগ করে আখিরাতের প্রতি মনোযোগ দেওয়ার আহ্বান।

সূরা কাসাস ফযিলত:

  • এই সূরায় মুসা (আ.)-এর কাহিনী বর্ণনা করা হয়েছে, যা আল্লাহর নিদর্শন ও ক্ষমতার প্রমাণ।
  • সূরাটি তিলাওয়াত করলে আল্লাহর রহমত ও বরকত লাভ করা যায়।
  • এটি মুসলিমদের ধৈর্য ও আল্লাহর উপর ভরসা করার শিক্ষা দেয়।
  • সূরাটি তিলাওয়াত করলে আখিরাতের স্মরণ জাগ্রত হয় এবং দুনিয়ার মোহ থেকে মুক্তি পাওয়া যায়।

সূরা কাসাস আলোকে ৫টি বিষয়ভিত্তিক আয়াত অর্থসহ:

১. মুসা (আ.)-এর জন্ম ও মায়ের প্রতি আল্লাহর প্রতিশ্রুতি:

  • আয়াত (২৮:৭):
    “আর আমি মুসার মায়ের প্রতি ওহী পাঠালাম যে, তাকে স্তন্যপান করাও এবং যখন তার জন্য ভয় করো, তাকে নদীতে ভাসিয়ে দাও। আর ভয় করো না, দুঃখ করো না। নিশ্চয়ই আমি তাকে তোমার কাছে ফিরিয়ে দেব এবং তাকে রাসূলদের অন্তর্ভুক্ত করব।”
    শিক্ষা: আল্লাহর উপর ভরসা করা এবং তাঁর প্রতিশ্রুতিতে আস্থা রাখা।

২. মুসা (আ.)-এর নবুয়ত প্রাপ্তি:

  • আয়াত (২৮:৩০):
    “যখন তিনি তুয়া উপত্যকায় আগুন দেখলেন, তখন তিনি তাঁর পরিবারবর্গকে বললেন, তোমরা এখানে অপেক্ষা করো। আমি আগুন দেখেছি, সম্ভবত সেখান থেকে তোমাদের জন্য কিছু খবর আনতে পারব অথবা আগুনের একটি কণিকা নিয়ে আসতে পারব, যাতে তোমরা উষ্ণতা লাভ করতে পারো।”
    শিক্ষা: আল্লাহর নিদর্শন অনুসন্ধান করা এবং তাঁর নির্দেশনা মেনে চলা।

৩. ফেরাউনের অহংকার ও পরিণতি:

  • আয়াত (২৮:৩৯):
    “ফেরাউন ও তার সেনাবাহিনী পৃথিবীতে অন্যায়ভাবে অহংকার করল এবং তারা মনে করল যে, তারা আমার কাছে ফিরে আসবে না।”
    শিক্ষা: অহংকার ধ্বংসের কারণ এবং আল্লাহর শাস্তি থেকে সতর্ক থাকা।

৪. কারুনের সম্পদ ও অহংকার:

  • আয়াত (২৮:৭৬):
    “নিশ্চয়ই কারুন ছিল মুসার সম্প্রদায়ের অন্তর্ভুক্ত। কিন্তু সে তাদের প্রতি জুলুম করল। আমি তাকে এত সম্পদ দিয়েছিলাম যে, তার চাবিগুলো বহন করা একদল শক্তিশালী লোকের জন্য কঠিন ছিল।”
    শিক্ষা: সম্পদ ও ক্ষমতার অহংকার ত্যাগ করা এবং আল্লাহর নিয়ামতের শুকরিয়া আদায় করা।

৫. আল্লাহর নিদর্শন ও ক্ষমতা:

  • আয়াত (২৮:৮৮):
    “আল্লাহ ছাড়া অন্য কোনো ইলাহ নেই। সবকিছু ধ্বংসশীল, কেবল তাঁর চেহারা রয়ে যাবে। তাঁরই আদেশ এবং তাঁর কাছেই তোমরা ফিরে যাবে।”
    শিক্ষা: আল্লাহর একত্ববাদে বিশ্বাস করা এবং আখিরাতের প্রতি মনোযোগ দেওয়া।

এই বিস্তারিত আলোচনার মাধ্যমে সূরা আল-কাসাসের শিক্ষা, মূল বিষয়বস্তু এবং ফযিলত সম্পর্কে পরিষ্কার ধারণা লাভ করা যায়।

 

সূরা আল-কাসাসের নির্বাচিত আয়াত: বাংলা অর্থ ও ব্যাখ্যা

১. আয়াত ২৪:

আরবী:
فَسَقَىٰ لَهُمَا ثُمَّ تَوَلَّىٰ إِلَى الظِّلِّ فَقَالَ رَبِّ إِنِّي لِمَا أَنزَلْتَ إِلَيَّ مِنْ خَيْرٍ فَقِيرٌ

বাংলা অর্থ:
“অতঃপর তিনি তাদের জন্য পানি পান করালেন, তারপর ছায়ার দিকে ফিরে গেলেন এবং বললেন, হে আমার রব! আপনি আমার প্রতি যে কল্যাণ প্রেরণ করবেন, আমি তার মুখাপেক্ষী।”

ব্যাখ্যা:
এই আয়াতে মুসা (আ.)-এর মাদিয়ানে আগমনের ঘটনা বর্ণনা করা হয়েছে। তিনি দুই নারীকে তাদের পশুদের পানি পান করতে সাহায্য করেন। এরপর তিনি ছায়ায় বসে আল্লাহর কাছে দুআ করেন এবং তাঁর রিজিকের জন্য আল্লাহর উপর ভরসা প্রকাশ করেন। এই আয়াত থেকে শিক্ষা নেওয়া যায় যে, আল্লাহর উপর ভরসা করা এবং তাঁর নিয়ামতের জন্য কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করা একজন মুমিনের কর্তব্য।

২. আয়াত ৫৬:

আরবী:
إِنَّكَ لَا تَهْدِي مَنْ أَحْبَبْتَ وَلَٰكِنَّ اللَّهَ يَهْدِي مَن يَشَاءُ ۚ وَهُوَ أَعْلَمُ بِالْمُهْتَدِينَ

বাংলা অর্থ:
“নিশ্চয়ই আপনি যাকে ভালোবাসেন, তাকে হিদায়াত দিতে পারবেন না; বরং আল্লাহ যাকে ইচ্ছা হিদায়াত দেন। আর তিনি হিদায়াতপ্রাপ্তদের ভালো জানেন।”

ব্যাখ্যা:
এই আয়াতে আল্লাহ রাসূল (সা.)-কে সান্ত্বনা দিয়েছেন যে, হিদায়াত দেওয়ার মালিক একমাত্র আল্লাহ। রাসূল (সা.) চাইলেই কাউকে হিদায়াত দিতে পারবেন না। এটি মুমিনদের জন্য একটি গুরুত্বপূর্ণ শিক্ষা যে, দাওয়াতের দায়িত্ব পালন করার পরও হিদায়াত দেওয়ার মালিক আল্লাহ। আমাদের কাজ হলো দাওয়াত দেওয়া, হিদায়াত দেওয়া আল্লাহর হাতে।

৩. আয়াত ২৮:

আরবী:
قَالَ ذَٰلِكَ بَيْنِي وَبَيْنَكَ ۖ أَيَّمَا الْأَجَلَيْنِ قَضَيْتُ فَلَا عُدْوَانَ عَلَيَّ ۖ وَاللَّهُ عَلَىٰ مَا نَقُولُ وَكِيلٌ

বাংলা অর্থ:
“মুসা বললেন, এটি আমার ও আপনার মধ্যে চুক্তি। দুই সময়ের মধ্যে যে কোনো একটি আমি পূর্ণ করলে আমার প্রতি কোনো জুলুম হবে না। আর আমরা যা বলি, আল্লাহ তার উপর তত্ত্বাবধায়ক।”

ব্যাখ্যা:
এই আয়াতে মুসা (আ.)-এর মাদিয়ানের শুয়াইব (আ.)-এর সাথে চুক্তির ঘটনা বর্ণনা করা হয়েছে। মুসা (আ.) শুয়াইব (আ.)-এর কন্যাকে বিবাহ করার শর্তে ৮ বা ১০ বছর কাজ করার চুক্তি করেন। এই আয়াত থেকে শিক্ষা নেওয়া যায় যে, চুক্তি ও অঙ্গীকার পূরণ করা একজন মুমিনের কর্তব্য এবং আল্লাহর উপর ভরসা রাখা।

৪. আয়াত ১৬:

আরবী:
قَالَ رَبِّ إِنِّي ظَلَمْتُ نَفْسِي فَاغْفِرْ لِي فَغَفَرَ لَهُ ۚ إِنَّهُ هُوَ الْغَفُورُ الرَّحِيمُ

বাংলা অর্থ:
“মুসা বললেন, হে আমার রব! নিশ্চয়ই আমি আমার নিজের উপর জুলুম করেছি। অতএব, আমাকে ক্ষমা করুন। তখন আল্লাহ তাকে ক্ষমা করলেন। নিশ্চয়ই তিনি ক্ষমাশীল, পরম দয়ালু।”

ব্যাখ্যা:
এই আয়াতে মুসা (আ.)-এর তাওবার ঘটনা বর্ণনা করা হয়েছে। তিনি অনিচ্ছাকৃতভাবে একজন কপটীয় ব্যক্তিকে হত্যা করে ফেলেন এবং এরপর আল্লাহর কাছে ক্ষমা প্রার্থনা করেন। আল্লাহ তাঁর তাওবা কবুল করেন। এই আয়াত থেকে শিক্ষা নেওয়া যায় যে, কোনো গুনাহ হয়ে গেলে আল্লাহর কাছে তাওবা করা এবং তাঁর ক্ষমা প্রার্থনা করা একজন মুমিনের কর্তব্য। আল্লাহ ক্ষমাশীল ও দয়ালু।

এই আয়াতগুলির মাধ্যমে আমরা আল্লাহর উপর ভরসা, হিদায়াতের মালিকানা, চুক্তি পূরণের গুরুত্ব এবং তাওবার শিক্ষা লাভ করতে পারি।