সূরা আশ শুআরা মূল বিষয়বস্তু হলো তাওহীদ, রিসালাত, আখিরাত এবং পূর্ববর্তী নবীদের কাহিনী। সূরা আশ শুআরা এর ফজিলত সহ সূরাটি সম্পর্কে ৪৫টি কুইজ প্রশ্ন এ উত্তর দেয়া হলো । নিচে সূরা আশ-শুআরা সম্পর্কে ২০টি শর্ট প্রশ্ন ও উত্তর এবং ২৫টি MCQ দেয়া হলো
সূরা আশ শুআরা
সূরা আশ-শুআরা সম্পর্কে ২০টি শর্ট প্রশ্ন ও উত্তর
১. প্রশ্ন: সূরা আশ-শুআরা মক্কায় নাযিল হয়েছে নাকি মদিনায়?
উত্তর: মক্কায় নাযিল হয়েছে।
২. প্রশ্ন: সূরা আশ-শুআরা কত নম্বর সূরা?
উত্তর: ২৬ নম্বর সূরা।
৩. প্রশ্ন: সূরা আশ-শুআরা কয়টি আয়াত নিয়ে গঠিত?
উত্তর: ২২৭টি আয়াত।
৪. প্রশ্ন: সূরা আশ-শুআরার মূল বিষয় কী?
উত্তর: তাওহীদ, রিসালাত, আখিরাত এবং পূর্ববর্তী নবীদের কাহিনী।
৫. প্রশ্ন: সূরা আশ-শুআরায় কয়জন নবীর কাহিনী বর্ণনা করা হয়েছে?
উত্তর: ৭ জন নবীর কাহিনী বর্ণনা করা হয়েছে।
৬. প্রশ্ন: সূরা আশ-শুআরায় বর্ণিত প্রথম নবী কে?
উত্তর: হযরত মুসা (আ.)।
৭. প্রশ্ন: সূরা আশ-শুআরায় ফেরাউনের কী ঘটনা বর্ণনা করা হয়েছে?
উত্তর: ফেরাউনের অহংকার এবং তার ধ্বংসের ঘটনা।
৮. প্রশ্ন: সূরা আশ-শুআরায় হযরত ইব্রাহিম (আ.)-এর কী দাওয়াতের কথা বলা হয়েছে?
উত্তর: তিনি তার সম্প্রদায়কে মূর্তিপূজা ত্যাগ করে এক আল্লাহর ইবাদতের দাওয়াত দিয়েছিলেন।
৯. প্রশ্ন: সূরা আশ-শুআরায় হযরত নূহ (আ.)-এর সম্প্রদায়ের কী পরিণতি হয়?
উত্তর: তারা নূহ (আ.)-এর দাওয়াত প্রত্যাখ্যান করলে মহাপ্লাবনে ধ্বংসপ্রাপ্ত হয়।
১০. প্রশ্ন: সূরা আশ-শুআরায় হযরত হুদ (আ.)-এর সম্প্রদায়ের কী পরিণতি হয়?
উত্তর: তারা হুদ (আ.)-এর দাওয়াত প্রত্যাখ্যান করলে প্রলয়ঙ্করী ঝড়ে ধ্বংস হয়।
১১. প্রশ্ন: সূরা আশ-শুআরায় হযরত সালেহ (আ.)-এর সম্প্রদায়ের কী পরিণতি হয়?
উত্তর: তারা সালেহ (আ.)-এর দাওয়াত প্রত্যাখ্যান করলে ভূমিকম্পে ধ্বংস হয়।
১২. প্রশ্ন: সূরা আশ-শুআরায় হযরত লুত (আ.)-এর সম্প্রদায়ের কী পরিণতি হয়?
উত্তর: তারা লুত (আ.)-এর দাওয়াত প্রত্যাখ্যান করলে পাথর বৃষ্টিতে ধ্বংস হয়।
১৩. প্রশ্ন: সূরা আশ-শুআরায় হযরত শুআইব (আ.)-এর সম্প্রদায়ের কী পরিণতি হয়?
উত্তর: তারা শুআইব (আ.)-এর দাওয়াত প্রত্যাখ্যান করলে ভয়াবহ শাস্তিতে ধ্বংস হয়।
১৪. প্রশ্ন: সূরা আশ-শুআরায় কুরাইশদের কী সতর্ক করা হয়েছে?
উত্তর: তাদেরকে পূর্ববর্তী সম্প্রদায়ের ধ্বংসের কথা স্মরণ করিয়ে সতর্ক করা হয়েছে।
১৫. প্রশ্ন: সূরা আশ-শুআরায় আল্লাহর কী গুণবাচক নাম উল্লেখ করা হয়েছে?
উত্তর: “আর-রহমান” (পরম দয়ালু)।
১৬. প্রশ্ন: সূরা আশ-শুআরায় কাফিরদের কী শাস্তির কথা বলা হয়েছে?
উত্তর: জাহান্নামের শাস্তির কথা বলা হয়েছে।
১৭. প্রশ্ন: সূরা আশ-শুআরায় মুমিনদের কী পুরস্কারের কথা বলা হয়েছে?
উত্তর: জান্নাতের পুরস্কারের কথা বলা হয়েছে।
১৮. প্রশ্ন: সূরা আশ-শুআরায় কুরআনের কী বিশেষত্ব উল্লেখ করা হয়েছে?
উত্তর: কুরআন হলো স্পষ্ট আরবি ভাষায় নাযিলকৃত কিতাব।
১৯. প্রশ্ন: সূরা আশ-শুআরায় নবীদের দাওয়াতের মূল বার্তা কী ছিল?
উত্তর: এক আল্লাহর ইবাদত করা এবং মূর্তিপূজা ত্যাগ করা।
২০. প্রশ্ন: সূরা আশ-শুআরায় আল্লাহর নিদর্শন সম্পর্কে কী বলা হয়েছে?
উত্তর: আল্লাহর নিদর্শনগুলো চিন্তাশীলদের জন্য শিক্ষণীয়।
সূরা আশ-শুআরা সম্পর্কে ২৫টি MCQ
১. সূরা আশ-শুআরা কত নম্বর সূরা?
a) ২৫
b) ২৬
c) ২৭
d) ২৮
উত্তর: b) ২৬
২. সূরা আশ-শুআরা কয়টি আয়াত নিয়ে গঠিত?
a) ২০০
b) ২২৭
c) ২৫০
d) ২৭৫
উত্তর: b) ২২৭
৩. সূরা আশ-শুআরা কোন ধরনের সূরা?
a) মাদানী
b) মক্কী
c) মিশ্র
d) কোনোটিই নয়
উত্তর: b) মক্কী
৪. সূরা আশ-শুআরায় কয়জন নবীর কাহিনী বর্ণনা করা হয়েছে?
a) ৫
b) ৬
c) ৭
d) ৮
উত্তর: c) ৭
৫. সূরা আশ-শুআরায় বর্ণিত প্রথম নবী কে?
a) হযরত ইব্রাহিম (আ.)
b) হযরত মুসা (আ.)
c) হযরত নূহ (আ.)
d) হযরত লুত (আ.)
উত্তর: b) হযরত মুসা (আ.)
৬. সূরা আশ-শুআরায় ফেরাউনের কী ঘটনা বর্ণনা করা হয়েছে?
a) তার ঈমান আনা
b) তার অহংকার এবং ধ্বংস
c) তার দানশীলতা
d) তার বিজয়
উত্তর: b) তার অহংকার এবং ধ্বংস
৭. সূরা আশ-শুআরায় হযরত ইব্রাহিম (আ.)-এর সম্প্রদায় কী করেছিল?
a) তার দাওয়াত গ্রহণ করেছিল
b) তার দাওয়াত প্রত্যাখ্যান করেছিল
c) তার সাথে যুদ্ধ করেছিল
d) তার সাথে বন্ধুত্ব করেছিল
উত্তর: b) তার দাওয়াত প্রত্যাখ্যান করেছিল
৮. সূরা আশ-শুআরায় হযরত নূহ (আ.)-এর সম্প্রদায়ের কী পরিণতি হয়?
a) তারা বিজয়ী হয়
b) তারা মহাপ্লাবনে ধ্বংস হয়
c) তারা ক্ষমা পায়
d) তারা সম্পদশালী হয়
উত্তর: b) তারা মহাপ্লাবনে ধ্বংস হয়
৯. সূরা আশ-শুআরায় হযরত হুদ (আ.)-এর সম্প্রদায়ের কী পরিণতি হয়?
a) তারা ঝড়ে ধ্বংস হয়
b) তারা ভূমিকম্পে ধ্বংস হয়
c) তারা পাথর বৃষ্টিতে ধ্বংস হয়
d) তারা বন্যার ফলে ধ্বংস হয়
উত্তর: a) তারা ঝড়ে ধ্বংস হয়
১০. সূরা আশ-শুআরায় হযরত সালেহ (আ.)-এর সম্প্রদায়ের কী পরিণতি হয়?
a) তারা ভূমিকম্পে ধ্বংস হয়
b) তারা ঝড়ে ধ্বংস হয়
c) তারা পাথর বৃষ্টিতে ধ্বংস হয়
d) তারা বন্যার ফলে ধ্বংস হয়
উত্তর: a) তারা ভূমিকম্পে ধ্বংস হয়
১১. সূরা আশ-শুআরায় হযরত লুত (আ.)-এর সম্প্রদায়ের কী পরিণতি হয়?
a) তারা পাথর বৃষ্টিতে ধ্বংস হয়
b) তারা ঝড়ে ধ্বংস হয়
c) তারা ভূমিকম্পে ধ্বংস হয়
d) তারা বন্যার ফলে ধ্বংস হয়
উত্তর: a) তারা পাথর বৃষ্টিতে ধ্বংস হয়
১২. সূরা আশ-শুআরায় হযরত শুআইব (আ.)-এর সম্প্রদায়ের কী পরিণতি হয়?
a) তারা ভয়াবহ শাস্তিতে ধ্বংস হয়
b) তারা ঝড়ে ধ্বংস হয়
c) তারা পাথর বৃষ্টিতে ধ্বংস হয়
d) তারা বন্যার ফলে ধ্বংস হয়
উত্তর: a) তারা ভয়াবহ শাস্তিতে ধ্বংস হয়
১৩. সূরা আশ-শুআরায় কাফিরদের কী শাস্তির কথা বলা হয়েছে?
a) জাহান্নাম
b) ক্ষমা
c) সম্পদ
d) বিজয়
উত্তর: a) জাহান্নাম
১৪. সূরা আশ-শুআরায় মুমিনদের কী পুরস্কারের কথা বলা হয়েছে?
a) জান্নাত
b) সম্পদ
c) ক্ষমা
d) বিজয়
উত্তর: a) জান্নাত
১৫. সূরা আশ-শুআরায় কুরআনের কী বিশেষত্ব উল্লেখ করা হয়েছে?
a) এটি স্পষ্ট আরবি ভাষায় নাযিলকৃত
b) এটি কবিতা
c) এটি গল্প
d) এটি ইতিহাস
উত্তর: a) এটি স্পষ্ট আরবি ভাষায় নাযিলকৃত
১৬. সূরা আশ-শুআরায় নবীদের দাওয়াতের মূল বার্তা কী ছিল?
a) এক আল্লাহর ইবাদত করা
b) সম্পদ অর্জন করা
c) যুদ্ধ করা
d) মূর্তিপূজা করা
উত্তর: a) এক আল্লাহর ইবাদত করা
১৭. সূরা আশ-শুআরায় আল্লাহর নিদর্শন সম্পর্কে কী বলা হয়েছে?
a) চিন্তাশীলদের জন্য শিক্ষণীয়
b) অপ্রয়োজনীয়
c) শুধু বিজ্ঞানীদের জন্য
d) শুধু ধর্মীয় নেতাদের জন্য
উত্তর: a) চিন্তাশীলদের জন্য শিক্ষণীয়
১৮. সূরা আশ-শুআরায় আল্লাহর কোন গুণবাচক নাম উল্লেখ করা হয়েছে?
a) আর-রহমান
b) আল-মালিক
c) আল-কাদির
d) আল-হাকিম
উত্তর: a) আর-রহমান
১৯. সূরা আশ-শুআরায় কুরাইশদের কী সতর্ক করা হয়েছে?
a) পূর্ববর্তী সম্প্রদায়ের ধ্বংসের কথা
b) সম্পদ অর্জনের কথা
c) যুদ্ধের কথা
d) ক্ষমার কথা
উত্তর: a) পূর্ববর্তী সম্প্রদায়ের ধ্বংসের কথা
২০. সূরা আশ-শুআরায় হযরত মুসা (আ.)-এর সাথে ফেরাউনের কী ঘটনা বর্ণনা করা হয়েছে?
a) ফেরাউনের অহংকার এবং ধ্বংস
b) ফেরাউনের ঈমান আনা
c) ফেরাউনের বিজয়
d) ফেরাউনের দানশীলতা
উত্তর: a) ফেরাউনের অহংকার এবং ধ্বংস
২১. সূরা আশ-শুআরায় হযরত ইব্রাহিম (আ.)-এর সম্প্রদায় কী করেছিল?
a) মূর্তিপূজা করেছিল
b) তার দাওয়াত গ্রহণ করেছিল
c) তার সাথে যুদ্ধ করেছিল
d) তার সাথে বন্ধুত্ব করেছিল
উত্তর: a) মূর্তিপূজা করেছিল
২২. সূরা আশ-শুআরায় হযরত নূহ (আ.)-এর সম্প্রদায়ের ধ্বংসের কারণ কী ছিল?
a) তাদের অবাধ্যতা
b) তাদের দানশীলতা
c) তাদের বিজয়
d) তাদের ক্ষমা
উত্তর: a) তাদের অবাধ্যতা
২৩. সূরা আশ-শুআরায় হযরত হুদ (আ.)-এর সম্প্রদায়ের ধ্বংসের কারণ কী ছিল?
a) তাদের অবাধ্যতা
b) তাদের দানশীলতা
c) তাদের বিজয়
d) তাদের ক্ষমা
উত্তর: a) তাদের অবাধ্যতা
২৪. সূরা আশ-শুআরায় হযরত সালেহ (আ.)-এর সম্প্রদায়ের ধ্বংসের কারণ কী ছিল?
a) তাদের অবাধ্যতা
b) তাদের দানশীলতা
c) তাদের বিজয়
d) তাদের ক্ষমা
উত্তর: a) তাদের অবাধ্যতা
২৫. সূরা আশ-শুআরায় হযরত লুত (আ.)-এর সম্প্রদায়ের ধ্বংসের কারণ কী ছিল?
a) তাদের অবাধ্যতা
b) তাদের দানশীলতা
c) তাদের বিজয়
d) তাদের ক্ষমা
উত্তর: a) তাদের অবাধ্যতা
সূরাটির সংক্ষিপ্ত পরিচয়, শানেনুযূল, সূরাটির গুরুত্বপূর্ণ দিক, সূরাটির শিক্ষা,
সূরা আশ-শুআরার সংক্ষিপ্ত পরিচয়
সূরার নাম: সূরা আশ-শুআরা
অর্থ: কবিগণ
নাযিলের স্থান: মক্কা
আয়াত সংখ্যা: ২২৭
রুকু সংখ্যা: ১১
পারা: ১৯ ও ২০
নাযিলের ক্রম: ৪৭
হরফ: ৫টি (ত্ব, সীন, মীম, আলিফ, লাম)
সূরা আশ শুআরা শানেনুযূল
সূরা আশ-শুআরা মক্কায় নাযিল হয়েছিল, যখন মুসলমানরা কাফিরদের অত্যাচার ও নির্যাতনের শিকার হচ্ছিলেন। এই সময়ে নবী মুহাম্মদ (সা.) এবং তাঁর অনুসারীদের উপর কুরাইশদের চাপ বৃদ্ধি পাচ্ছিল। সূরাটি নাযিলের মাধ্যমে মুসলমানদেরকে সান্ত্বনা দেওয়া হয়েছে এবং পূর্ববর্তী নবীদের সংগ্রাম ও তাদের সম্প্রদায়ের পরিণতির কথা স্মরণ করিয়ে দেওয়া হয়েছে। এতে মুসলমানদেরকে ধৈর্য ধারণ করতে এবং আল্লাহর উপর ভরসা রাখতে উৎসাহিত করা হয়েছে।
সূরাটির গুরুত্বপূর্ণ দিক
১. তাওহীদের বার্তা: সূরাটিতে এক আল্লাহর ইবাদতের প্রতি জোর দেওয়া হয়েছে এবং শিরক ও মূর্তিপূজার নিন্দা করা হয়েছে।
২. নবীদের কাহিনী: সূরাটিতে ৭ জন নবীর কাহিনী বর্ণনা করা হয়েছে, যারা তাদের সম্প্রদায়কে সত্যের দিকে আহ্বান করেছিলেন। তাদের মধ্যে রয়েছেন হযরত মুসা (আ.), হযরত ইব্রাহিম (আ.), হযরত নূহ (আ.), হযরত হুদ (আ.), হযরত সালেহ (আ.), হযরত লুত (আ.) এবং হযরত শুআইব (আ.)।
৩. আখিরাতের সতর্কতা: সূরাটিতে আখিরাতের দিনের শাস্তি ও পুরস্কারের কথা উল্লেখ করা হয়েছে, যা মানুষকে সতর্ক করে।
৪. কুরআনের মহিমা: সূরাটিতে কুরআনের মহিমা ও এর সত্যতা সম্পর্কে আলোচনা করা হয়েছে। এটি স্পষ্ট আরবি ভাষায় নাযিলকৃত কিতাব হিসেবে উল্লেখ করা হয়েছে।
৫. কাফিরদের পরিণতি: সূরাটিতে কাফিরদের ধ্বংসের ইতিহাস বর্ণনা করা হয়েছে, যা মুসলমানদেরকে সান্ত্বনা ও সাহস জোগায়।
সূরা আশ-শুআরা সূরাটির শিক্ষা
১. তাওহীদের গুরুত্ব: সূরাটি এক আল্লাহর ইবাদতের গুরুত্ব শিক্ষা দেয় এবং শিরক থেকে দূরে থাকার নির্দেশনা দেয়।
২. ধৈর্য ও সংগ্রাম: নবীদের কাহিনী থেকে আমরা শিখতে পারি যে, সত্যের পথে সংগ্রামে ধৈর্য ধারণ করা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।
৩. আখিরাতের প্রস্তুতি: সূরাটি আখিরাতের দিনের জন্য প্রস্তুতি নেওয়ার শিক্ষা দেয় এবং দুনিয়ার জীবনের মোহ ত্যাগ করতে উৎসাহিত করে।
৪. কুরআনের অনুসরণ: সূরাটি কুরআনের নির্দেশনা অনুসরণ করার গুরুত্ব তুলে ধরে এবং এটি আল্লাহর পক্ষ থেকে নাযিলকৃত সত্য কিতাব হিসেবে উল্লেখ করে।
৫. অহংকার ত্যাগ: ফেরাউনের কাহিনী থেকে আমরা শিখতে পারি যে, অহংকার ও আল্লাহর নির্দেশনা প্রত্যাখ্যান করার পরিণতি ভয়াবহ।
৬. সম্প্রদায়ের দায়িত্ব: নবীদের কাহিনী থেকে আমরা শিখতে পারি যে, সম্প্রদায়ের নেতৃত্ব ও দায়িত্বশীলতা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।
৭. আল্লাহর উপর ভরসা: সূরাটি আল্লাহর উপর ভরসা রাখার শিক্ষা দেয় এবং বিপদে ধৈর্য ধারণ করতে উৎসাহিত করে।
সূরা আশ-শুআরা মুসলমানদের জন্য একটি গুরুত্বপূর্ণ শিক্ষণীয় সূরা, যা তাওহীদ, রিসালাত, আখিরাত এবং নবীদের সংগ্রামের মাধ্যমে মানবজাতিকে সত্যের পথে চলার নির্দেশনা দেয়।
সূরাটির মূল বিষয়বস্তু, সূরাটির ফযিলত, এবং সূরাটির আলোকে ৫টি বিষয়ভিত্তিক আয়াত অর্থসহ প্রতিটি বিষয় বিস্তারিত চাই
সূরা আশ-শুআরার মূল বিষয়বস্তু
সূরা আশ-শুআরার মূল বিষয়বস্তু নিম্নরূপ:
১. তাওহীদ: এক আল্লাহর ইবাদতের প্রতি আহ্বান এবং শিরক ও মূর্তিপূজার নিন্দা।
২. রিসালাত: নবী-রাসূলদের মিশন এবং তাদের সম্প্রদায়ের প্রতি দাওয়াত।
৩. আখিরাত: আখিরাতের দিনের শাস্তি ও পুরস্কারের বর্ণনা।
৪. নবীদের কাহিনী: ৭ জন নবীর কাহিনী বর্ণনা, যারা তাদের সম্প্রদায়কে সত্যের দিকে আহ্বান করেছিলেন।
৫. কুরআনের মহিমা: কুরআনের সত্যতা ও এর ভাষার বিশুদ্ধতা সম্পর্কে আলোচনা।
৬. কাফিরদের পরিণতি: কাফিরদের ধ্বংসের ইতিহাস এবং তাদের অহংকারের পরিণতি।
আরও পড়তে পারেন– সূরা ত্বহা সম্পর্কে ৪৫টি কুইজ প্রশ্ন
সূরা আশ-শুআরার ফযিলত
১. নবীদের কাহিনীর শিক্ষা: সূরাটিতে নবীদের কাহিনী বর্ণনা করা হয়েছে, যা মুসলমানদের জন্য শিক্ষণীয় এবং অনুপ্রেরণাদায়ক।
২. তাওহীদের বার্তা: সূরাটি তাওহীদের গুরুত্ব তুলে ধরে, যা ঈমানের মূল ভিত্তি।
৩. আখিরাতের সতর্কতা: সূরাটি আখিরাতের দিনের শাস্তি ও পুরস্কারের কথা স্মরণ করিয়ে দেয়, যা মানুষকে সতর্ক করে।
৪. কুরআনের মহিমা: সূরাটি কুরআনের সত্যতা ও এর ভাষার বিশুদ্ধতা সম্পর্কে আলোচনা করে, যা মুসলমানদের জন্য গর্বের বিষয়।
৫. ধৈর্য ও সংগ্রামের শিক্ষা: নবীদের কাহিনী থেকে ধৈর্য ও সংগ্রামের শিক্ষা পাওয়া যায়, যা মুসলমানদের জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।
সূরাটির আলোকে ৫টি বিষয়ভিত্তিক আয়াত অর্থসহ
১. তাওহীদের বার্তা
আয়াত:
وَإِنَّ رَبَّكَ لَهُوَ الْعَزِيزُ الرَّحِيمُ
অর্থ: “নিশ্চয়ই তোমার রব পরাক্রমশালী, পরম দয়ালু।” (সূরা আশ-শুআরা, আয়াত: ৯)
ব্যাখ্যা:
এই আয়াতে আল্লাহর দুটি গুণবাচক নাম উল্লেখ করা হয়েছে: “আল-আযীয” (পরাক্রমশালী) এবং “আর-রাহীম” (পরম দয়ালু)। এটি তাওহীদের বার্তা দেয় যে, আল্লাহই একমাত্র ইবাদতের যোগ্য এবং তিনি সর্বশক্তিমান ও দয়ালু।
২. নবীদের দাওয়াত
আয়াত:
إِنَّ فِي ذَٰلِكَ لَآيَةً ۖ وَمَا كَانَ أَكْثَرُهُم مُّؤْمِنِينَ
অর্থ: “নিশ্চয়ই এতে নিদর্শন রয়েছে, কিন্তু তাদের অধিকাংশই বিশ্বাসী নয়।” (সূরা আশ-শুআরা, আয়াত: ৮)
ব্যাখ্যা:
এই আয়াতে নবীদের দাওয়াতের প্রতি মানুষের প্রতিক্রিয়া বর্ণনা করা হয়েছে। অধিকাংশ মানুষ নবীদের দাওয়াত গ্রহণ করেনি, যা মানুষের অহংকার ও জিদের পরিচয় দেয়।
৩. আখিরাতের সতর্কতা
আয়াত:
وَمَا تُغْنِي الْآيَاتُ وَالنُّذُرُ عَن قَوْمٍ لَّا يُؤْمِنُونَ
অর্থ: “আয়াত ও সতর্কবাণী তাদের জন্য কোনো কাজে আসে না, যারা ঈমান আনে না।” (সূরা আশ-শুআরা, আয়াত: ১৯০)
ব্যাখ্যা:
এই আয়াতে আখিরাতের সতর্কতা দেওয়া হয়েছে। যারা আল্লাহর আয়াত ও সতর্কবাণীকে প্রত্যাখ্যান করে, তাদের জন্য কোনো সতর্কতা কাজে আসে না।
৪. কুরআনের মহিমা
আয়াত:
وَإِنَّهُ لَتَنزِيلُ رَبِّ الْعَالَمِينَ
অর্থ: “নিশ্চয়ই এটি বিশ্বজগতের রবের পক্ষ থেকে নাযিলকৃত।” (সূরা আশ-শুআরা, আয়াত: ১৯২)
ব্যাখ্যা:
এই আয়াতে কুরআনের মহিমা বর্ণনা করা হয়েছে। এটি আল্লাহর পক্ষ থেকে নাযিলকৃত কিতাব, যা সমগ্র মানবজাতির জন্য হিদায়াত।
৫. কাফিরদের পরিণতি
আয়াত:
فَكَذَّبُوهُ فَأَخَذَهُمْ عَذَابُ يَوْمِ الظُّلَّةِ ۚ إِنَّهُ كَانَ عَذَابَ يَوْمٍ عَظِيمٍ
অর্থ: “অতঃপর তারা তাঁকে মিথ্যা বলল, ফলে তাদেরকে আচ্ছাদন দিবসের শাস্তি পাকড়াও করল। নিশ্চয়ই এটি ছিল এক মহাদিবসের শাস্তি।” (সূরা আশ-শুআরা, আয়াত: ১৮৯)
ব্যাখ্যা:
এই আয়াতে কাফিরদের পরিণতি বর্ণনা করা হয়েছে। তারা নবীদের দাওয়াত প্রত্যাখ্যান করলে ভয়াবহ শাস্তির সম্মুখীন হয়।
প্রতিটি বিষয়ের বিস্তারিত ব্যাখ্যা
১. তাওহীদের বার্তা:
সূরাটি শুরু হয়েছে আল্লাহর গুণবাচক নাম দ্বারা, যা তাওহীদের মূল বার্তা দেয়। আল্লাহই একমাত্র ইবাদতের যোগ্য এবং তিনি সর্বশক্তিমান ও দয়ালু।
২. নবীদের দাওয়াত:
সূরাটিতে ৭ জন নবীর কাহিনী বর্ণনা করা হয়েছে, যারা তাদের সম্প্রদায়কে এক আল্লাহর ইবাদতের দিকে আহ্বান করেছিলেন। তাদের দাওয়াতের মূল বার্তা ছিল তাওহীদ।
৩. আখিরাতের সতর্কতা:
সূরাটিতে আখিরাতের দিনের শাস্তি ও পুরস্কারের কথা উল্লেখ করা হয়েছে, যা মানুষকে সতর্ক করে এবং সৎপথে চলতে উৎসাহিত করে।
৪. কুরআনের মহিমা:
সূরাটিতে কুরআনের সত্যতা ও এর ভাষার বিশুদ্ধতা সম্পর্কে আলোচনা করা হয়েছে। এটি আল্লাহর পক্ষ থেকে নাযিলকৃত সত্য কিতাব।
৫. কাফিরদের পরিণতি:
সূরাটিতে কাফিরদের ধ্বংসের ইতিহাস বর্ণনা করা হয়েছে, যা মুসলমানদেরকে সান্ত্বনা ও সাহস জোগায়।
সূরা আশ-শুআরা মুসলমানদের জন্য একটি গুরুত্বপূর্ণ শিক্ষণীয় সূরা, যা তাওহীদ, রিসালাত, আখিরাত এবং নবীদের সংগ্রামের মাধ্যমে মানবজাতিকে সত্যের পথে চলার নির্দেশনা দেয়।