You are currently viewing সূরা আল মুদ্দাসসির সম্পর্কে ৪৫টি কুইজ প্রশ্ন সহ বিস্তারিত
সূরা আল মুদ্দাসসির সম্পর্কে

সূরা আল মুদ্দাসসির সম্পর্কে ৪৫টি কুইজ প্রশ্ন সহ বিস্তারিত

সূরা আল মুদ্দাসসির এর সংক্ষিপ্ত পরিচয়, শানেনুযূল, সূরাটির গুরুত্বপূর্ণ দিক, সূরাটির শিক্ষা সূরাটির মূল বিষয়বস্তু, সূরাটির ফযিলত, এবং সূরাটির আলোকে ৫টি বিষয়ভিত্তিক আয়াত অর্থসহ প্রতিটি বিষয় আলোচনা এবং সূরা আল মুদ্দাসসির  সম্পর্কে ২০টি শর্ট প্রশ্ন ও উত্তর এবং ২৫টি MCQ দেয়া হলো।

সূরা আল মুদ্দাসসির

সূরা আল মুদ্দাসসির সম্পর্কে ২০টি শর্ট প্রশ্ন ও উত্তর এবং ২৫টি MCQ

প্রশ্নোত্তর:

  1. সূরা আল-মুদ্দাসসির কাকে সম্বোধন করে শুরু হয়েছে?
    • উত্তর: নবী মুহাম্মাদ (সা.)-কে।
  2. সূরাটির প্রথম আয়াতে কী বলা হয়েছে?
    • উত্তর: “হে চাদর আবৃতকারী!”
  3. সূরা আল-মুদ্দাসসির কোন পারায় অবস্থিত?
    • উত্তর: ২৯তম পারায়।
  4. সূরাটি মক্কী না মাদানী?
    • উত্তর: মক্কী সূরা।
  5. সূরাটির আয়াত সংখ্যা কত?
    • উত্তর: ৫৬টি।
  6. কাফিরদের প্রতি হুঁশিয়ারি হিসেবে কিসের উল্লেখ আছে?
    • উত্তর: জাহান্নামের শাস্তির।
  7. সূরায় কাদেরকে “ওয়াইল” (ধ্বংস) বলা হয়েছে?
    • উত্তর: মুনাফিক ও সত্য প্রত্যাখ্যানকারীদের।
  8. কিয়ামতের দিন কাফিররা কী বলবে?
    • উত্তর: “হায়! আমরা যদি পৃথিবীতে ফিরে যেতে পারতাম!”
  9. সূরায় কোন নবীর কথা উল্লেখ আছে?
    • উত্তর: মূসা (আ.) ও ফেরাউনের কথা।
  10. কোন প্রাণীকে অভিশাপ দেওয়া হয়েছে?
    • উত্তর: আবু লাহাবের স্ত্রী উম্মে জামিলকে (যে কাঠবোঝাই করে নবীকে কষ্ট দিত)।
  11. সূরায় নামাজ ও ধৈর্য ধারণের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে কি?
    • উত্তর: হ্যাঁ।
  12. কোন আয়াতে দান-খয়রাতের কথা বলা হয়েছে?
    • উত্তর: আয়াত ৩৮-৩৯।
  13. কোন আয়াতে কুরআনকে উপদেশ বলা হয়েছে?
    • উত্তর: আয়াত ৫৪।
  14. সূরায় শয়তানকে কী বলা হয়েছে?
    • উত্তর: মানবজাতির প্রকাশ্য শত্রু।
  15. কোন আয়াতে আল্লাহর একত্ববাদের কথা বলা হয়েছে?
    • উত্তর: আয়াত ১১।
  16. কাফিররা নবী (সা.)-কে কী বলত?
    • উত্তর: “তুমি যাদুগ্রস্ত।”
  17. সূরায় কিসের শপথ করা হয়েছে?
    • উত্তর: চন্দ্র, রাত ও সকালের।
  18. কোন আয়াতে জাহান্নামের রক্ষীদের উল্লেখ আছে?
    • উত্তর: আয়াত ২৯-৩১।
  19. সূরার শেষে কী বলা হয়েছে?
    • উত্তর: কুরআন সতর্ককারী, যার ইচ্ছা সে তা গ্রহণ করবে।
  20. সূরার মূল বার্তা কী?
    • উত্তর: তাওহিদ, আখিরাতে বিশ্বাস ও নৈতিক দায়িত্বের প্রতি আহ্বান।

সূরা আল-মুদ্দাসসির সম্পর্কে ২৫টি MCQ প্রশ্নোত্তর

  1. সূরা আল-মুদ্দাসসির কোন ধরনের সূরা?
    • (ক) মাদানী
    • (খ) মক্কী ✅
    • (গ) মিশ্র
    • (ঘ) কোনোটিই নয়
  2. সূরাটি কত নং সূরা?
    • (ক) ৭৩
    • (খ) ৭৪ ✅
    • (গ) ৭৫
    • (ঘ) ৭৬
  3. প্রথম আয়াতে নবী (সা.)-কে কী বলা হয়েছে?
    • (ক) হে নবী
    • (খ) হে রাসূল
    • (গ) হে চাদর আবৃতকারী ✅
    • (ঘ) হে পর্দানশীন
  4. সূরায় কিসের ভয় দেখানো হয়েছে?
    • (ক) দুনিয়াবি শাস্তি
    • (খ) জাহান্নাম ✅
    • (গ) বন্যা
    • (ঘ) ভূমিকম্প
  5. “ওয়াইল” শব্দটি কার জন্য ব্যবহৃত হয়েছে?
    • (ক) মুমিনদের
    • (খ) কাফিরদের ✅
    • (গ) ফেরেশতাদের
    • (ঘ) নবী-রাসূলদের
  6. কোন নবীর কথা এ সূরায় এসেছে?
    • (ক) ইব্রাহিম (আ.)
    • (খ) মূসা (আ.) ✅
    • (গ) ঈসা (আ.)
    • (ঘ) নূহ (আ.)
  7. সূরায় কাকে অভিশাপ দেওয়া হয়েছে?
    • (ক) আবু জাহেল
    • (খ) আবু লাহাবের স্ত্রী ✅
    • (গ) ফেরাউন
    • (ঘ) কারুন
  8. কোন আয়াতে নামাজের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে?
    • (ক) আয়াত ১
    • (খ) আয়াত ৩৮
    • (গ) আয়াত ৭৪
    • (ঘ) আয়াত ১-৭ ✅
  9. সূরায় কিসের শপথ করা হয়েছে?
    • (ক) সূর্য
    • (খ) চন্দ্র ✅
    • (গ) পাহাড়
    • (ঘ) সমুদ্র
  10. কাফিররা নবী (সা.)-কে কী বলত?
    • (ক) কবি
    • (খ) যাদুকর ✅
    • (গ) পাগল
    • (ঘ) জ্যোতিষী
  11. জাহান্নামের রক্ষীদের সংখ্যা কত?
    • (ক) ১০
    • (খ) ১৫
    • (গ) ১৯ ✅
    • (ঘ) ২০
  12. সূরায় কিসের উপদেশ দেওয়া হয়েছে?
    • (ক) ধৈর্য ধারণ ✅
    • (খ) যুদ্ধ করা
    • (গ) ব্যবসা করা
    • (ঘ) হিজরত করা
  13. কোন আয়াতে দানের কথা বলা হয়েছে?
    • (ক) ৩৮-৩৯ ✅
    • (খ) ২০-২১
    • (গ) ৫০-৫১
    • (ঘ) ১-২
  14. সূরার শেষে কিসের কথা বলা হয়েছে?
    • (ক) জান্নাতের বর্ণনা
    • (খ) কুরআন সতর্ককারী ✅
    • (গ) নবীর জীবনী
    • (ঘ) কিয়ামতের আলামত
  15. “সাকার” কী?
    • (ক) জান্নাতের নাম
    • (খ) জাহান্নামের নাম ✅
    • (গ) ফেরেশতার নাম
    • (ঘ) পাহাড়ের নাম
  16. নবী (সা.)-কে প্রথমে কী করতে বলা হয়েছে?
    • (ক) নামাজ পড়তে
    • (খ) দাওয়াত দিতে ✅
    • (গ) হিজরত করতে
    • (ঘ) যুদ্ধ করতে
  17. কুরআনকে কী বলা হয়েছে?
    • (ক) কবিতা
    • (খ) উপদেশ ✅
    • (গ) যাদু
    • (ঘ) ইতিহাস
  18. সূরায় শয়তানকে কী বলা হয়েছে?
    • (ক) বন্ধু
    • (খ) শত্রু ✅
    • (গ) সাহায্যকারী
    • (ঘ) পথপ্রদর্শক
  19. কিয়ামতের দিন কাফিররা কী চাইবে?
    • (ক) জান্নাত
    • (খ) পৃথিবীতে ফিরে যেতে ✅
    • (গ) মৃত্যু
    • (ঘ) ক্ষমা
  20. সূরায় কোন প্রাকৃতিক বিষয়ের শপথ করা হয়েছে?
    • (ক) বৃষ্টি
    • (খ) রাত ও সকাল ✅
    • (গ) বাতাস
    • (ঘ) আগুন
  21. সূরায় কার কথা বিশেষভাবে উল্লেখ হয়েছে?
    • (ক) আবু বকর (রা.)
    • (খ) আবু লাহাব ✅
    • (গ) উমর (রা.)
    • (ঘ) আলী (রা.)
  22. “মালিক” শব্দটি সূরায় কী অর্থে ব্যবহৃত হয়েছে?
    • (ক) রাজা
    • (খ) জাহান্নামের রক্ষী ✅
    • (গ) নবীর উপাধি
    • (ঘ) ফেরেশতা
  23. সূরায় কিসের প্রতি আহ্বান করা হয়েছে?
    • (ক) শিরক ত্যাগ ✅
    • (খ) সম্পদ কুক্ষিগত করা
    • (গ) অহংকার করা
    • (ঘ) প্রতিশোধ নেওয়া
  24. কোন আয়াতে আল্লাহর একত্ববাদের কথা বলা হয়েছে?
    • (ক) ১১ ✅
    • (খ) ২২
    • (গ) ৩৩
    • (ঘ) ৪৪
  25. সূরার মূল শিক্ষা কী?
    • (ক) অর্থনৈতিক উন্নতি
    • (খ) তাওহিদ ও আখিরাতে বিশ্বাস ✅
    • (গ) রাজনৈতিক ক্ষমতা
    • (ঘ) সামরিক শক্তি

✅ সঠিক উত্তর চিহ্নিত

এই প্রশ্নোত্তরগুলো সূরা আল-মুদ্দাসসিরের মূল বিষয়বস্তু ও শিক্ষাকে কভার করে। আশা করি উপকারী হবে!

সূরাটির সংক্ষিপ্ত পরিচয়, শানেনুযূল, সূরাটির গুরুত্বপূর্ণ দিক, সূরাটির শিক্ষা, সূরাটির মূল বিষয়বস্তু, সূরাটির ফযিলত

সূরা আল-মুদ্দাসসিরের সংক্ষিপ্ত পরিচয়

নাম: সূরা আল-মুদ্দাসসির (আরবি: المدثر)
অর্থ: “চাদর আবৃতকারী”
আয়াত সংখ্যা: ৫৬
পারা: ২৯তম পারা
নাযিলের স্থান: মক্কা (মক্কী সূরা)
নাযিলের ক্রম: ৪র্থ (প্রাথমিক পর্যায়ে নাযিলকৃত সূরা)

শানে নুযূল (নাযিলের প্রেক্ষাপট)

সূরা আল-মুদ্দাসসির নবী মুহাম্মাদ (সা.)-এর নবুয়তের প্রাথমিক পর্যায়ে নাযিল হয়। হেরা গুহায় ওহী প্রাপ্তির পর নবী (সা.) ভয় ও উদ্বেগে কাঁপছিলেন এবং বাড়িতে ফিরে নিজেকে চাদর দিয়ে জড়িয়ে নেন। তখন এই সূরার প্রথম আয়াত নাযিল হয়:

“হে চাদর আবৃতকারী! উঠুন এবং সতর্ক করুন…” (৭৪:১-২)

এটি ইসলামের দাওয়াতের সূচনাকে চিহ্নিত করে, যেখানে নবী (সা.)-কে প্রকাশ্যে আল্লাহর বাণী প্রচারের নির্দেশ দেওয়া হয়।

সূরাটির গুরুত্বপূর্ণ দিক

  1. দাওয়াতের সূচনা: নবী (সা.)-কে সর্বপ্রথম প্রকাশ্যে দাওয়াত দানের আদেশ।
  2. কাফিরদের জন্য সতর্কবাণী: জাহান্নামের ভয়াবহ শাস্তির বর্ণনা।
  3. আবু লাহাব ও তার স্ত্রীর অভিশাপ: সূরায় তাদের ধ্বংসের预言 (ভবিষ্যদ্বাণী) করা হয়েছে।
  4. নৈতিক নির্দেশনা: নামাজ, ধৈর্য, দান-খয়রাত ও আল্লাহর একত্ববাদের প্রতি আহ্বান।
  5. কুরআনের মর্যাদা: একে “উপদেশ” (ذِكْرٌ) হিসেবে উল্লেখ করা হয়েছে।

সূরাটির শিক্ষা

  1. দায়িত্বশীলতা: নবী (সা.)-এর মতোই প্রতিটি মুমিনের দায়িত্ব হলো সত্যের দাওয়াত দেওয়া।
  2. আখিরাতের প্রস্তুতি: জাহান্নামের শাস্তি থেকে বাঁচতে ইমান ও নেক আমল জরুরি।
  3. অহংকার ত্যাগ: আবু লাহাব ও তার স্ত্রীর উদাহরণে অহংকার ও শত্রুতার পরিণতি শিক্ষণীয়।
  4. আল্লাহর একত্ববাদ: সব কর্মের কেন্দ্রে তাওহিদ থাকা আবশ্যক।
  5. সামাজিক দায়িত্ব: দান-খয়রাত ও ন্যায়পরায়ণতার মাধ্যমে সমাজের কল্যাণ সাধন।

সূরাটির মূল বিষয়বস্তু

  1. নবুয়তের দায়িত্ব: নবী (সা.)-কে দাওয়াতের আদেশ (আয়াত ১-৭)।
  2. কাফিরদের ভাগ্য: জাহান্নাম ও ১৯ জন ফেরেশতা দ্বারা শাস্তির বর্ণনা (আয়াত ৮-৩১)।
  3. কুরআনের মহত্ত্ব: এটি মানুষের জন্য উপদেশ (আয়াত ৫৪-৫৫)।
  4. ব্যক্তিগত উদাহরণ: আবু লাহাব ও তার স্ত্রীর ধ্বংসের ভবিষ্যদ্বাণী (আয়াত ১১-২৬)।
  5. মানবজাতির স্বাধীন ইচ্ছা: সত্য গ্রহণ বা প্রত্যাখ্যানের অধিকার (আয়াত ৫৬)।

সূরাটির ফযিলত (মর্যাদা)

  1. প্রথম দিকের ওহী: এটি ইসলামের মৌলিক শিক্ষার ভিত্তি স্থাপন করে।
  2. জাহান্নামের বর্ণনা: ভয় প্রদর্শনের মাধ্যমে ইমান দৃঢ় করে।
  3. আবু লাহাবের অভিশাপ: কুরআনের ভবিষ্যদ্বাণী সত্য হওয়ার প্রমাণ (আবু লাহাব ইসলাম গ্রহণ না করেই মারা যায়)।
  4. নামাজের গুরুত্ব: প্রাথমিক পর্যায়েই নামাজের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
  5. সতর্ককারী হিসেবে কুরআন: সূরার শেষে কুরআনকে “সতর্ককারী” বলা হয়েছে, যা এর বিশ্বজনীন বার্তাকে নির্দেশ করে।

হাদিস: রাসূল (সা.) বলেছেন,
“যে ব্যক্তি সূরা আল-মুদ্দাসসির তিলাওয়াত করবে, আল্লাহ তার জন্য দশটি নেকী লিখে দেবেন।” (তিরমিজি)

উপসংহার

সূরা আল-মুদ্দাসসির ইসলামের দাওয়াতের সূচনা, আখিরাতের সতর্কবাণী ও নৈতিক দিকনির্দেশনার একটি গুরুত্বপূর্ণ সূরা। এটি মুমিনদেরকে দায়িত্বশীলতা, তাওহিদ ও সমাজের প্রতি কর্তব্য স্মরণ করিয়ে দেয়।

সূরাটির আলোকে ৫টি বিষয়ভিত্তিক আয়াত ও তার অর্থ

সূরা আল-মুদ্দাসসির থেকে ৫টি বিষয়ভিত্তিক আয়াত ও তার অর্থ

১. দাওয়াত ও সতর্কবার্তা (আয়াত ১-২)

আয়াত:

يَا أَيُّهَا الْمُدَّثِّرُ (১) قُمْ فَأَنذِرْ (২)
অর্থ:
“হে চাদর আবৃতকারী! উঠুন এবং সতর্ক করুন…”

ব্যাখ্যা:
এটি নবী মুহাম্মাদ (সা.)-কে সর্বপ্রথম প্রকাশ্যে ইসলামের দাওয়াত দেওয়ার নির্দেশ। আল্লাহ তাকে দায়িত্ব দিয়েছেন মানুষকে শিরক ও গোমরাহি থেকে সতর্ক করার।

২. জাহান্নামের শাস্তির বর্ণনা (আয়াত ২৬-২৯)

আয়াত:

سَأُصْلِيهِ سَقَرَ (٢٦) وَمَا أَدْرَاكَ مَا سَقَرُ (٢٧) لَا تُبْقِي وَلَا تَذَرُ (٢٨) لَوَّاحَةٌ لِّلْبَشَرِ (٢٩)
অর্থ:
“আমি তাকে সাকারে (জাহান্নামে) নিক্ষেপ করব। আপনি জানেন, সাকার কি? তা নিশ্চিহ্ন করে দেবে, কিছুই অবশিষ্ট রাখবে না। এটি মানুষের জন্য চিরস্থায়ী শাস্তি।”

ব্যাখ্যা:
এ আয়াতে কাফিরদের জন্য প্রস্তুত ভয়াবহ জাহান্নামের বর্ণনা দেওয়া হয়েছে, যা তাদের চর্ম ও অঙ্গ-প্রত্যঙ্গ পুড়িয়ে ধ্বংস করবে।

৩. দান ও নেক আমলের নির্দেশ (আয়াত ৩৮-৩৯)

আয়াত:

كُلُّ نَفْسٍۭ بِمَا كَسَبَتْ رَهِينَةٌ (٣٨) إِلَّآ أَصْحَٰبَ ٱلْيَمِينِ (٣٩)
অর্থ:
“প্রত্যেক ব্যক্তি নিজ কর্মের জন্য জিম্মাদার। তবে ডানপন্থীরা (সৎকর্মশীলরা) এর ব্যতিক্রম।”

ব্যাখ্যা:
এখানে ইমানদারদেরকে দান-খয়রাত ও নেক আমলের মাধ্যমে আখিরাতের শাস্তি থেকে মুক্তির পথ দেখানো হয়েছে।

৪. কুরআনের মর্যাদা (আয়াত ৫৪-৫৫)

আয়াত:

إِنَّهُۥ تَذْكِرَةٌۭ (٥٤) فَمَن شَآءَ ذَكَرَهُۥ (٥٥)
অর্থ:
“নিশ্চয় এটি (কুরআন) এক উপদেশ। অতএব, যে চাইল, সে তা গ্রহণ করবে।”

ব্যাখ্যা:
কুরআন মানুষের জন্য হিদায়াত ও সতর্কবাণী, কিন্তু এটি জবরদস্তি নয়—বরং মানুষ স্বাধীনভাবে তা গ্রহণ বা প্রত্যাখ্যান করতে পারে।

৫. কাফিরদের আফসোস (আয়াত ৪৬-৪৮)

আয়াত:

بَلْ يُرِيدُ ٱلْإِنسَٰنُ لِيَفْجُرَ أَمَامَهُۥ (٤٦) يَسْـَٔلُ أَيَّانَ يَوْمُ ٱلدِّينِ (٤٧) فَإِذَا بَرِقَ ٱلْبَصَرُ (٤٨)
অর্থ:
“বরং মানুষ সামনে অগ্রসর হয়ে পাপ করতে চায়। তারা জিজ্ঞাসা করে, ‘কিয়ামতের দিন কখন আসবে?’ যখন চোখ ঝলসে যাবে (সেদিন)।”

ব্যাখ্যা:
কাফিররা দুনিয়াতে কিয়ামতকে উপহাস করত, কিন্তু আখিরাতে তারা আফসোস করবে এবং তাদের চোখ ভয়ে বিস্ফোরিত হবে।

সংক্ষিপ্ত সারাংশ

বিষয় আয়াত নং মূল বার্তা
দাওয়াতের নির্দেশ ১-২ নবী (সা.)-কে সতর্ককারী হিসেবে প্রেরণ
জাহান্নামের শাস্তি ২৬-২৯ কাফিরদের জন্য চিরস্থায়ী শাস্তি
নেক আমলের গুরুত্ব ৩৮-৩৯ ইমানদাররা তাদের আমলের ফল পাবে
কুরআনের মর্যাদা ৫৪-৫৫ এটি একটি স্বাধীন পছন্দের উপদেশ
কাফিরদের আখিরাতে আফসোস ৪৬-৪৮ তারা দুনিয়াতে পাপ করে পরকাল ভুলে ছিল

এই আয়াতগুলো সূরা আল-মুদ্দাসসিরের মূল শিক্ষা ও বিষয়বস্তুকে সুস্পষ্টভাবে উপস্থাপন করে।