সূরা আম্বিয়া পবিত্র কুরআনের ২১তম সূরা। এটি মক্কায় অবতীর্ণ হয়েছে এবং এর আয়াত সংখ্যা ১১২। এই সূরার নামকরণ করা হয়েছে “আম্বিয়া” (নবীগণ) শব্দ থেকে, কারণ এতে বহু নবীর কাহিনী ও তাদের জীবন থেকে শিক্ষণীয় বিষয়গুলো বর্ণনা করা হয়েছে। সূরাটি তাওহীদ, রিসালাত, আখিরাত এবং নবীদের সংগ্রাম ও ধৈর্যের উপর আলোকপাত করে।
সূরা আম্বিয়া
সূরা আম্বিয়া সম্পর্কে ২০টি শর্ট প্রশ্ন ও উত্তর
১. প্রশ্ন: সূরা আম্বিয়া কুরআনের কততম সূরা?
উত্তর: সূরা আম্বিয়া কুরআনের ২১তম সূরা।
২. প্রশ্ন: সূরা আম্বিয়াতে কতটি আয়াত আছে?
উত্তর: সূরা আম্বিয়াতে ১১২টি আয়াত আছে।
৩. প্রশ্ন: সূরা আম্বিয়ার মূল বিষয় কী?
উত্তর: সূরা আম্বিয়ার মূল বিষয় হলো তাওহীদ, রিসালাত, আখিরাত এবং নবীদের কাহিনী।
৪. প্রশ্ন: সূরা আম্বিয়াতে কতজন নবীর কথা উল্লেখ করা হয়েছে?
উত্তর: সূরা আম্বিয়াতে ১৮ জন নবীর কথা উল্লেখ করা হয়েছে।
৫. প্রশ্ন: সূরা আম্বিয়াতে কোন নবীর কাহিনী সবচেয়ে বেশি বর্ণিত হয়েছে?
উত্তর: সূরা আম্বিয়াতে ইব্রাহীম (আ.)-এর কাহিনী সবচেয়ে বেশি বর্ণিত হয়েছে।
৬. প্রশ্ন: সূরা আম্বিয়াতে কিয়ামতের কী কী আলোচনা করা হয়েছে?
উত্তর: সূরা আম্বিয়াতে কিয়ামতের ভয়াবহতা, পুনরুত্থান এবং হিসাব-নিকাশের আলোচনা করা হয়েছে।
৭. প্রশ্ন: সূরা আম্বিয়াতে আল্লাহর কী কী গুণবাচক নাম উল্লেখ করা হয়েছে?
উত্তর: সূরা আম্বিয়াতে আল্লাহর গুণবাচক নাম যেমন “الرحمن” (আর-রহমান), “الرحيم” (আর-রহীম) ইত্যাদি উল্লেখ করা হয়েছে।
৮. প্রশ্ন: সূরা আম্বিয়াতে শিরকের কী পরিণতি বর্ণনা করা হয়েছে?
উত্তর: সূরা আম্বিয়াতে শিরকের পরিণতি হিসেবে জাহান্নামের শাস্তির কথা বর্ণনা করা হয়েছে।
৯. প্রশ্ন: সূরা আম্বিয়াতে কোন নবীকে “خليل الله” (আল্লাহর বন্ধু) বলা হয়েছে?
উত্তর: সূরা আম্বিয়াতে ইব্রাহীম (আ.)-কে “خليل الله” (আল্লাহর বন্ধু) বলা হয়েছে।
১০. প্রশ্ন: সূরা আম্বিয়াতে নূহ (আ.)-এর কাহিনীতে কী শিক্ষা দেওয়া হয়েছে?
উত্তর: নূহ (আ.)-এর কাহিনীতে ধৈর্য ও আল্লাহর উপর ভরসার শিক্ষা দেওয়া হয়েছে।
১১. প্রশ্ন: সূরা আম্বিয়াতে দাউদ (আ.) ও সুলাইমান (আ.)-এর কী কী মুজিজার কথা বলা হয়েছে?
উত্তর: দাউদ (আ.)-কে লোহা নরম করার ক্ষমতা এবং সুলাইমান (আ.)-কে জীবজন্তু ও জিনদের উপর কর্তৃত্ব দেওয়ার কথা বলা হয়েছে।
১২. প্রশ্ন: সূরা আম্বিয়াতে আইয়ুব (আ.)-এর কী পরীক্ষার কথা উল্লেখ করা হয়েছে?
উত্তর: আইয়ুব (আ.)-এর রোগ ও কষ্টের পরীক্ষার কথা উল্লেখ করা হয়েছে।
১৩. প্রশ্ন: সূরা আম্বিয়াতে ইউনুস (আ.)-এর কী ঘটনা বর্ণনা করা হয়েছে?
উত্তর: ইউনুস (আ.)-এর মাছের পেটে থাকার ঘটনা বর্ণনা করা হয়েছে।
১৪. প্রশ্ন: সূরা আম্বিয়াতে জাকারিয়া (আ.)-এর কী দোয়া উল্লেখ করা হয়েছে?
উত্তর: জাকারিয়া (আ.)-এর সন্তান প্রার্থনার দোয়া উল্লেখ করা হয়েছে।
১৫. প্রশ্ন: সূরা আম্বিয়া তে মরিয়ম (আ.)-এর কী বিশেষত্ব উল্লেখ করা হয়েছে?
উত্তর: মরিয়ম (আ.)-এর পবিত্রতা ও ঈসা (আ.)-এর জন্মের ঘটনা উল্লেখ করা হয়েছে।
১৬. প্রশ্ন: সূরা আম্বিয়াতে আল্লাহর নিদর্শন হিসেবে কী কী উল্লেখ করা হয়েছে?
উত্তর: আকাশ, পৃথিবী, পাহাড়, নদী, বৃষ্টি ইত্যাদি আল্লাহর নিদর্শন হিসেবে উল্লেখ করা হয়েছে।
১৭. প্রশ্ন: সূরা আম্বিয়াতে কাফিরদের কী কী অভিযোগের উত্তর দেওয়া হয়েছে?
উত্তর: কাফিরদের অভিযোগের উত্তর হিসেবে আল্লাহর একত্ব ও রিসালাতের সত্যতা প্রমাণিত হয়েছে।
১৮. প্রশ্ন: সূরা আম্বিয়াতে আল্লাহর কী কী শক্তির কথা বলা হয়েছে?
উত্তর: আল্লাহর সৃষ্টি, রিজিক প্রদান ও মৃত্যু ও জীবনের নিয়ন্ত্রণের কথা বলা হয়েছে।
১৯. প্রশ্ন: সূরা আম্বিয়াতে মুমিনদের কী কী গুণের কথা বলা হয়েছে?
উত্তর: মুমিনদের ধৈর্য, আল্লাহর উপর ভরসা ও ইবাদতের গুণের কথা বলা হয়েছে।
২০. প্রশ্ন: সূরা আম্বিয়ার শেষ আয়াতে কী বলা হয়েছে?
উত্তর: সূরা আম্বিয়ার শেষ আয়াতে বলা হয়েছে, “وَأُزْلِفَتِ الْجَنَّةُ لِلْمُتَّقِينَ” (জান্নাত মুত্তাকীদের নিকটবর্তী করা হয়েছে)।
সূরা আম্বিয়া সম্পর্কে ২৫টি MCQ (বহু নির্বাচনী প্রশ্ন)
১. সূরা আম্বিয়া কুরআনের কততম সূরা?
ক) ২০তম
খ) ২১তম
গ) ২২তম
ঘ) ২৩তম
উত্তর: খ) ২১তম
২. সূরা আম্বিয়াতে কতটি আয়াত আছে?
ক) ১০০
খ) ১১২
গ) ১২০
ঘ) ১৫০
উত্তর: খ) ১১২
৩. সূরা আম্বিয়াতে কতজন নবীর কথা উল্লেখ করা হয়েছে?
ক) ১০
খ) ১৫
গ) ১৮
ঘ) ২০
উত্তর: গ) ১৮
৪. সূরা আম্বিয়াতে কোন নবীকে “আল্লাহর বন্ধু” বলা হয়েছে?
ক) মুসা (আ.)
খ) ইব্রাহীম (আ.)
গ) ঈসা (আ.)
ঘ) নূহ (আ.)
উত্তর: খ) ইব্রাহীম (আ.)
৫. সূরা আম্বিয়াতে নূহ (আ.)-এর কাহিনীতে কী শিক্ষা দেওয়া হয়েছে?
ক) ধৈর্য
খ) সাহস
গ) দানশীলতা
ঘ) কৃতজ্ঞতা
উত্তর: ক) ধৈর্য
৬. সূরা আম্বিয়াতে দাউদ (আ.)-কে কী মুজিজা দেওয়া হয়েছে?
ক) লোহা নরম করার ক্ষমতা
খ) জীবজন্তু নিয়ন্ত্রণ
গ) বৃষ্টি আনার ক্ষমতা
ঘ) অদৃশ্য হওয়ার ক্ষমতা
উত্তর: ক) লোহা নরম করার ক্ষমতা
৭. সূরা আম্বিয়াতে সুলাইমান (আ.)-কে কী ক্ষমতা দেওয়া হয়েছে?
ক) জীবজন্তু ও জিনদের উপর কর্তৃত্ব
খ) বৃষ্টি আনার ক্ষমতা
গ) রোগ নিরাময়ের ক্ষমতা
ঘ) অদৃশ্য হওয়ার ক্ষমতা
উত্তর: ক) জীবজন্তু ও জিনদের উপর কর্তৃত্ব
৮. সূরা আম্বিয়াতে আইয়ুব (আ.)-এর কী পরীক্ষার কথা উল্লেখ করা হয়েছে?
ক) ধন-সম্পদ হারানো
খ) রোগ
গ) সন্তান হারানো
ঘ) সবকিছু
উত্তর: খ) রোগ
৯. সূরা আম্বিয়াতে ইউনুস (আ.)-এর কী ঘটনা বর্ণনা করা হয়েছে?
ক) মাছের পেটে থাকা
খ) আগুনে নিক্ষিপ্ত হওয়া
গ) পাহাড় চূর্ণ করা
ঘ) বৃষ্টি আনা
উত্তর: ক) মাছের পেটে থাকা
১০. সূরা আম্বিয়াতে জাকারিয়া (আ.)-এর কী দোয়া উল্লেখ করা হয়েছে?
ক) সন্তান প্রার্থনা
খ) ধন-সম্পদ প্রার্থনা
গ) ক্ষমা প্রার্থনা
ঘ) সুস্থতা প্রার্থনা
উত্তর: ক) সন্তান প্রার্থনা
১১. সূরা আম্বিয়াতে মরিয়ম (আ.)-এর কী বিশেষত্ব উল্লেখ করা হয়েছে?
ক) পবিত্রতা
খ) ধন-সম্পদ
গ) জ্ঞান
ঘ) ক্ষমতা
উত্তর: ক) পবিত্রতা
১২. সূরা আম্বিয়াতে আল্লাহর নিদর্শন হিসেবে কী উল্লেখ করা হয়েছে?
ক) আকাশ
খ) পৃথিবী
গ) পাহাড়
ঘ) সবকিছু
উত্তর: ঘ) সবকিছু
১৩. সূরা আম্বিয়াতে কাফিরদের কী অভিযোগের উত্তর দেওয়া হয়েছে?
ক) আল্লাহর একত্ব
খ) রিসালাত
গ) আখিরাত
ঘ) সবকিছু
উত্তর: ঘ) সবকিছু
১৪. সূরা আম্বিয়াতে আল্লাহর শক্তির কী দিক উল্লেখ করা হয়েছে?
ক) সৃষ্টি
খ) রিজিক প্রদান
গ) মৃত্যু ও জীবন
ঘ) সবকিছু
উত্তর: ঘ) সবকিছু
১৫. সূরা আম্বিয়াতে মুমিনদের কী গুণের কথা বলা হয়েছে?
ক) ধৈর্য
খ) আল্লাহর উপর ভরসা
গ) ইবাদত
ঘ) সবকিছু
উত্তর: ঘ) সবকিছু
১৬. সূরা আম্বিয়ার শেষ আয়াতে কী বলা হয়েছে?
ক) জান্নাত মুত্তাকীদের নিকটবর্তী করা হয়েছে
খ) জাহান্নাম কাফিরদের জন্য প্রস্তুত
গ) আল্লাহর রহমত ব্যাপক
ঘ) সবকিছু
উত্তর: ক) জান্নাত মুত্তাকীদের নিকটবর্তী করা হয়েছে
১৭. সূরা আম্বিয়াতে কোন নবীর কাহিনী সবচেয়ে বেশি বর্ণিত হয়েছে?
ক) ইব্রাহীম (আ.)
খ) মুসা (আ.)
গ) ঈসা (আ.)
ঘ) নূহ (আ.)
উত্তর: ক) ইব্রাহীম (আ.)
১৮. সূরা আম্বিয়াতে শিরকের কী পরিণতি বর্ণনা করা হয়েছে?
ক) জাহান্নাম
খ) ক্ষমা
গ) পুরস্কার
ঘ) সবকিছু
উত্তর: ক) জাহান্নাম
১৯. সূরা আম্বিয়াতে আল্লাহর গুণবাচক নাম কী উল্লেখ করা হয়েছে?
ক) আর-রহমান
খ) আর-রহীম
গ) আল-মালিক
ঘ) সবকিছু
উত্তর: ঘ) সবকিছু
২০. সূরা আম্বিয়াতে কিয়ামতের কী আলোচনা করা হয়েছে?
ক) ভয়াবহতা
খ) পুনরুত্থান
গ) হিসাব-নিকাশ
ঘ) সবকিছু
উত্তর: ঘ) সবকিছু
২১. সূরা আম্বিয়াতে আল্লাহর কী শক্তির কথা বলা হয়েছে?
ক) সৃষ্টি
খ) রিজিক প্রদান
গ) মৃত্যু ও জীবন
ঘ) সবকিছু
উত্তর: ঘ) সবকিছু
২২. সূরা আম্বিয়াতে মুমিনদের কী গুণের কথা বলা হয়েছে?
ক) ধৈর্য
খ) আল্লাহর উপর ভরসা
গ) ইবাদত
ঘ) সবকিছু
উত্তর: ঘ) সবকিছু
২৩. সূরা আম্বিয়ার শেষ আয়াতে কী বলা হয়েছে?
ক) জান্নাত মুত্তাকীদের নিকটবর্তী করা হয়েছে
খ) জাহান্নাম কাফিরদের জন্য প্রস্তুত
গ) আল্লাহর রহমত ব্যাপক
ঘ) সবকিছু
উত্তর: ক) জান্নাত মুত্তাকীদের নিকটবর্তী করা হয়েছে
২৪. সূরা আম্বিয়াতে কোন নবীর কাহিনী সবচেয়ে বেশি বর্ণিত হয়েছে?
ক) ইব্রাহীম (আ.)
খ) মুসা (আ.)
গ) ঈসা (আ.)
ঘ) নূহ (আ.)
উত্তর: ক) ইব্রাহীম (আ.)
২৫. সূরা আম্বিয়াতে শিরকের কী পরিণতি বর্ণনা করা হয়েছে?
ক) জাহান্নাম
খ) ক্ষমা
গ) পুরস্কার
ঘ) সবকিছু
উত্তর: ক) জাহান্নাম
সূরা আম্বিয়ার শানেনুযূল (অবতীর্ণের প্রেক্ষাপট)
সূরা আম্বিয়া মক্কী সূরা হিসেবে মক্কায় অবতীর্ণ হয়েছে। এই সময়ে মুশরিকরা নবী মুহাম্মাদ (সা.)-এর দাওয়াতকে প্রত্যাখ্যান করছিল এবং কুরআনের বাণীকে মিথ্যা বলছিল। এই সূরার মাধ্যমে আল্লাহ তাআলা মুশরিকদের ভ্রান্ত ধারণাগুলো খণ্ডন করেছেন এবং নবীদের মাধ্যমে প্রেরিত সত্যের প্রতি মানুষকে সচেতন করেছেন। এতে নবীদের কাহিনীগুলো বর্ণনা করে তাদের সংগ্রাম, ধৈর্য ও আল্লাহর প্রতি আনুগত্যের দৃষ্টান্ত তুলে ধরা হয়েছে।
সূরা আম্বিয়ার গুরুত্বপূর্ণ দিক
১. নবীদের কাহিনী: এই সূরায় ১৮ জন নবীর কাহিনী সংক্ষেপে বর্ণনা করা হয়েছে, যেমন ইব্রাহীম (আ.), মুসা (আ.), ঈসা (আ.), নূহ (আ.), দাউদ (আ.), সুলাইমান (আ.), আইয়ুব (আ.), ইউনুস (আ.) প্রমুখ।
২. তাওহীদের বার্তা: সূরাটি আল্লাহর একত্ব ও তাঁর সৃষ্টি নিদর্শনের উপর জোর দেয়।
৩. আখিরাতের আলোচনা: কিয়ামত, পুনরুত্থান ও হিসাব-নিকাশের বিষয়ে সতর্ক করা হয়েছে।
৪. শিরকের প্রত্যাখ্যান: শিরক ও মূর্তিপূজার ভ্রান্তি সম্পর্কে স্পষ্ট বক্তব্য দেওয়া হয়েছে।
৫. মুমিনদের গুণাবলী: ধৈর্য, আল্লাহর উপর ভরসা ও ইবাদতের গুরুত্ব তুলে ধরা হয়েছে।
সূরা আম্বিয়ার শিক্ষা
১. তাওহীদের গুরুত্ব: আল্লাহ এক ও অদ্বিতীয়, তাঁর সাথে কাউকে শরিক করা যাবে না।
২. ধৈর্য ও সংগ্রাম: নবীদের জীবন থেকে ধৈর্য ও সংগ্রামের শিক্ষা নেওয়া।
৩.আখিরাতের প্রস্তুতি: কিয়ামত ও আখিরাতের জন্য প্রস্তুতি নেওয়া এবং আল্লাহর আদেশ-নিষেধ মেনে চলা।
৪. শিরক থেকে দূরে থাকা: শিরক ও ভ্রান্ত বিশ্বাস থেকে বেঁচে থাকা।
৫. আল্লাহর নিদর্শন সম্পর্কে চিন্তা: সৃষ্টিজগতের নিদর্শনগুলো নিয়ে চিন্তা করে আল্লাহর মহিমা উপলব্ধি করা।
সূরা আম্বিয়ার মূল বিষয়বস্তু
১. তাওহীদ: আল্লাহর একত্ব ও তাঁর সৃষ্টি ক্ষমতার উপর জোর দেওয়া হয়েছে।
২. রিসালাত: নবীদের মাধ্যমে আল্লাহর বাণী প্রেরণের উদ্দেশ্য ও তাদের সংগ্রামের কথা বর্ণনা করা হয়েছে।
৩. আখিরাত: কিয়ামত, পুনরুত্থান ও হিসাব-নিকাশের বিষয়ে সতর্ক করা হয়েছে।
৪. শিরকের প্রত্যাখ্যান: শিরক ও মূর্তিপূজার ভ্রান্তি সম্পর্কে স্পষ্ট বক্তব্য দেওয়া হয়েছে।
৫. নবীদের কাহিনী: বিভিন্ন নবীর জীবন থেকে শিক্ষণীয় বিষয়গুলো তুলে ধরা হয়েছে।
৬. মুমিনদের গুণাবলী: ধৈর্য, আল্লাহর উপর ভরসা ও ইবাদতের গুরুত্ব বর্ণনা করা হয়েছে।
সূরা আম্বিয়া মুমিনদের জন্য একটি পথনির্দেশিকা, যা তাদেরকে তাওহীদ, রিসালাত ও আখিরাতের প্রতি দৃঢ় বিশ্বাসী হতে সাহায্য করে এবং শিরক ও ভ্রান্তি থেকে দূরে থাকার শিক্ষা দেয়।
সূরা ত্বহা এর ফযিলত:
১. এই সূরাটি তিলাওয়াত করলে কিয়ামতের দিন মহান প্রতিদান দেওয়া হবে।
২. হাদিসে বর্ণিত আছে, সূরা ত্বহা তিলাওয়াতকারীকে আল্লাহ ক্ষমা করে দেন।
৩. এই সূরাটি তিলাওয়াত করলে অন্তরে প্রশান্তি আসে এবং দুশ্চিন্তা দূর হয়।
৪. এটি নবীজি (সা.)-এর প্রিয় সূরাগুলোর মধ্যে একটি।
আরও পড়তে পারেন– সূরা ত্বহা সম্পর্কে ৪৫টি কুইজ প্রশ্ন উত্তর সহ বিস্তারিত
সূরা ত্বহা এর আলোকে ৫টি বিষয়ভিত্তিক আয়াত অর্থসহ ব্যাখ্যা:
১. আয়াত ২৫-২৮:
অর্থ: “হে আমার রব! আমার বক্ষ প্রশস্ত করে দিন, আমার কাজ সহজ করে দিন এবং আমার জিহ্বার জড়তা দূর করে দিন, যাতে তারা আমার কথা বুঝতে পারে।”
ব্যাখ্যা: হযরত মুসা (আ.) আল্লাহর কাছে দোয়া করছেন যেন তার কথা মানুষ বুঝতে পারে এবং তার দায়িত্ব পালন সহজ হয়।
২. আয়াত ৩৯:
অর্থ: “আমি তোমাকে আমার প্রতি থেকে বিশেষ যত্নে লালন-পালন করব এবং তোমাকে আমার বার্তা বহনকারী করব।”
ব্যাখ্যা: আল্লাহ হযরত মুসা (আ.)-কে নিরাপদে লালন-পালন করবেন এবং তাকে নবুওয়াত দান করবেন।
৩. আয়াত ৪৬:
অর্থ: “তোমরা ভয় করো না, নিশ্চয়ই আমি তোমাদের সাথে আছি, আমি শুনি এবং দেখি।”
ব্যাখ্যা: আল্লাহ হযরত মুসা (আ.) ও হারুন (আ.)-কে সাহস দিচ্ছেন এবং তাদের সাথে আছেন বলে আশ্বস্ত করছেন।
৪. আয়াত ৬৯:
অর্থ: “আর যা কিছু তারা করেছে, তা ফেলে দাও এবং বলো, ‘আসল জিনিসটি আগে আসুক।'”
ব্যাখ্যা: হযরত মুসা (আ.)-কে আল্লাহ নির্দেশ দিচ্ছেন যেন তিনি জাদুকরদের জাদুকে মিথ্যা প্রমাণ করেন।
৫. আয়াত ১২৪:
অর্থ: “যে আমার স্মরণ থেকে মুখ ফিরিয়ে নেবে, তার জীবন সংকীর্ণ হবে এবং আমি তাকে কিয়ামতের দিন অন্ধ অবস্থায় উত্থিত করব।”
ব্যাখ্যা: আল্লাহর স্মরণ থেকে দূরে সরে গেলে জীবনে সংকীর্ণতা আসে এবং পরকালে শাস্তি পেতে হয়।
সূরা ত্বহা এর নির্দিষ্ট আয়াতের অর্থ ও ব্যাখ্যা:
১. আয়াত ৪৬:
অর্থ: “তোমরা ভয় করো না, নিশ্চয়ই আমি তোমাদের সাথে আছি, আমি শুনি এবং দেখি।”
ব্যাখ্যা: আল্লাহ হযরত মুসা (আ.) ও হারুন (আ.)-কে সাহস দিচ্ছেন এবং তাদের সাথে আছেন বলে আশ্বস্ত করছেন।
২. আয়াত ৬৯:
অর্থ: “আর যা কিছু তারা করেছে, তা ফেলে দাও এবং বলো, ‘আসল জিনিসটি আগে আসুক।'”
ব্যাখ্যা: হযরত মুসা (আ.)-কে আল্লাহ নির্দেশ দিচ্ছেন যেন তিনি জাদুকরদের জাদুকে মিথ্যা প্রমাণ করেন।
৩. আয়াত ৩৯:
অর্থ: “আমি তোমাকে আমার প্রতি থেকে বিশেষ যত্নে লালন-পালন করব এবং তোমাকে আমার বার্তা বহনকারী করব।”
ব্যাখ্যা: আল্লাহ হযরত মুসা (আ.)-কে নিরাপদে লালন-পালন করবেন এবং তাকে নবুওয়াত দান করবেন।
৪. আয়াত ১২৪:
অর্থ: “যে আমার স্মরণ থেকে মুখ ফিরিয়ে নেবে, তার জীবন সংকীর্ণ হবে এবং আমি তাকে কিয়ামতের দিন অন্ধ অবস্থায় উত্থিত করব।”
ব্যাখ্যা: আল্লাহর স্মরণ থেকে দূরে সরে গেলে জীবনে সংকীর্ণতা আসে এবং পরকালে শাস্তি পেতে হয়।
৫. আয়াত ২৫-২৮:
অর্থ: “হে আমার রব! আমার বক্ষ প্রশস্ত করে দিন, আমার কাজ সহজ করে দিন এবং আমার জিহ্বার জড়তা দূর করে দিন, যাতে তারা আমার কথা বুঝতে পারে।”
ব্যাখ্যা: হযরত মুসা (আ.) আল্লাহর কাছে দোয়া করছেন যেন তার কথা মানুষ বুঝতে পারে এবং তার দায়িত্ব পালন সহজ হয়।
৬. আয়াত ৯৪:
অর্থ: “হে আমার মাতৃভ্রাতা হারুন! আমার দাড়ি ও মাথার চুল ধরে টেনো না। আমি ভয় করছিলাম যে তুমি বলবে, ‘তুমি বনি ইসরাঈলের মধ্যে বিভেদ সৃষ্টি করেছ এবং আমার কথা মান্য করনি।'”
ব্যাখ্যা: হযরত মুসা (আ.) তার ভাই হারুন (আ.)-কে সম্বোধন করে বলছেন যে তিনি ভয় পেয়েছিলেন হারুন (আ.) তাকে দোষারোপ করবেন।
১. সূরা আম্বিয়া, আয়াত ৮৭:
বাংলা উচ্চারণ:
“ওয়া যান নুনি ইয যাহাবা মুগাদ্বিবান ফা যান্না আল্লাম নাকদিরু আলাইহি আন নাদা ফীয যুলুমাতি আন লা ইলাহা ইল্লা আনতা সুবহানাকা ইন্নি কুন্তু মিনায যলিমিন।”
অর্থ ও ব্যাখ্যা:
এই আয়াতে হযরত ইউনুস (আ.)-এর ঘটনা বর্ণিত হয়েছে। তিনি মাছের পেটে অবস্থানকালে অন্ধকারে এই দোয়া পাঠ করেছিলেন: “হে আল্লাহ! তুমি ছাড়া কোনো ইলাহ নেই, তুমি পবিত্র। নিশ্চয়ই আমি জালিমদের অন্তর্ভুক্ত হয়েছি।” এই দোয়ার মাধ্যমে তিনি আল্লাহর কাছে ক্ষমা প্রার্থনা করেন এবং আল্লাহ তার দোয়া কবুল করেন। এটি তাওবার গুরুত্ব এবং আল্লাহর রহমতের উদাহরণ।
২. সূরা আম্বিয়া, আয়াত ৮৯:
বাংলা উচ্চারণ:
“ওয়া যাকারিয়্যা ইয নাদা রাব্বাহু রাব্বি লা তাযারনি ফারদাও ওয়া আনতা খাইরুল ওয়ারিসিন।”
অর্থ ও ব্যাখ্যা:
এই আয়াতে হযরত যাকারিয়া (আ.)-এর দোয়া উল্লেখ করা হয়েছে। তিনি আল্লাহর কাছে প্রার্থনা করেছিলেন: “হে আমার রব! আমাকে একা রেখো না, আর তুমিই উত্তম উত্তরাধিকারী।” তিনি সন্তানহীন ছিলেন এবং বৃদ্ধ বয়সে আল্লাহর কাছে সন্তান চেয়েছিলেন। আল্লাহ তার দোয়া কবুল করেন এবং তাকে হযরত ইয়াহিয়া (আ.)-এর মতো পুত্র দান করেন।
৩. সূরা আম্বিয়া, আয়াত ৮৩:
বাংলা উচ্চারণ:
“ওয়া আইয়ুবা ইয নাদা রাব্বাহু আন্নি মাসসানিয়ায যুররু ওয়া আনতা আরহামুর রাহিমিন।”
অর্থ ও ব্যাখ্যা:
এই আয়াতে হযরত আইয়ুব (আ.)-এর ধৈর্য ও দোয়ার কথা বলা হয়েছে। তিনি কঠিন রোগে আক্রান্ত হয়েছিলেন এবং আল্লাহর কাছে প্রার্থনা করেছিলেন: “হে আমার রব! আমাকে কষ্ট স্পর্শ করেছে, আর তুমিই সর্বশ্রেষ্ঠ দয়ালু।” আল্লাহ তার ধৈর্য ও বিশ্বাসের পুরস্কারস্বরূপ তাকে সুস্থতা দান করেন।
সূরা আম্বিয়া আয়াত ৮৮:
বাংলা উচ্চারণ:
“ফাসতাজাবনা লাহু ফা কাশাফনা মা বিহি দুররাহু ওয়া আতাইনাাহু আহলাহু ওয়া মিছলাহুম মাআহুম রাহমাতাম মিন্না ওয়া যিকরা লিল আবিদিন।”
অর্থ ও ব্যাখ্যা:
এই আয়াতে হযরত ইউনুস (আ.)-এর দোয়া কবুল হওয়ার কথা বলা হয়েছে। আল্লাহ তার কষ্ট দূর করেন এবং তাকে তার পরিবারের কাছে ফিরিয়ে দেন। এটি আল্লাহর রহমত ও অনুগ্রহের উদাহরণ, যা বান্দাদের জন্য স্মরণীয়।
সূরা আম্বিয়া আয়াত ৭০:
অর্থ ও ব্যাখ্যা:
এই আয়াতে হযরত ইব্রাহিম (আ.)-কে নমরুদের আগুন থেকে রক্ষা করার কথা বলা হয়েছে। আল্লাহ আগুনকে শীতল ও নিরাপদ করে দিয়েছিলেন, যা আল্লাহর ক্ষমতা ও মুজিযার প্রমাণ।
সূরা আম্বিয়া আয়াত ১০৫
অর্থ ও ব্যাখ্যা:
এই আয়াতে বলা হয়েছে, “নিশ্চয়ই আমার সৎকর্মশীল বান্দাদের জন্য এই কিতাবে (কুরআনে) ওয়াদা করা হয়েছে যে, তারা পৃথিবীর উত্তরাধিকারী হবে।” এটি মুমিনদের জন্য আল্লাহর ওয়াদা যে তারা পৃথিবীতে শান্তি ও ন্যায় প্রতিষ্ঠা করবে।
সূরা আম্বিয়া আয়াত ১০৭
অর্থ ও ব্যাখ্যা:
এই আয়াতে বলা হয়েছে, “আমি আপনাকে সমগ্র বিশ্বের জন্য রহমতস্বরূপ প্রেরণ করেছি।” এটি নবী মুহাম্মদ (সা.)-এর বিশ্বব্যাপী রহমত ও অনুগ্রহের ভূমিকার কথা বলে। তিনি সমগ্র মানবতার জন্য আল্লাহর রহমতের বার্তাবাহক।
এই আয়াতগুলির মাধ্যমে আল্লাহর নবী-রাসূলদের ধৈর্য, তাওবা, এবং আল্লাহর রহমতের উদাহরণ ফুটে উঠেছে। প্রতিটি আয়াত মুমিনদের জন্য শিক্ষণীয় এবং আল্লাহর প্রতি বিশ্বাস ও আস্থা বৃদ্ধি করে।