সূরা আন নিসা (আরবি: سورة النساء) কুরআন মজিদের ৪র্থ সূরা। এটি মদিনায় অবতীর্ণ একটি মাদানি সূরা। সূরাটি ১৭৬টি আয়াত নিয়ে গঠিত এবং এটি কুরআনের তৃতীয় দীর্ঘতম সূরা। সূরাটির নাম “আন-নিসা” (নারী) এ কারণে যে, এতে নারীদের অধিকার, দায়িত্ব ও মর্যাদা সম্পর্কে বিস্তারিত আলোচনা করা হয়েছে। সূরাটি সামাজিক ন্যায়বিচার, পরিবার, উত্তরাধিকার, আইন-কানুন ও নৈতিকতা সম্পর্কে গুরুত্বপূর্ণ নির্দেশনা প্রদান করে। সূরা আন নিসা সম্পর্কে শর্ট প্রশ্ন এমসিকিউ সহ বিস্তারিত আলোচনা করা হলো।
সূরা আন নিসা সম্পর্কে ২০টি শর্ট প্রশ্ন ও উত্তর:
১. প্রশ্ন: সূরা আন-নিসা কুরআনের কততম সূরা?
উত্তর: সূরা আন-নিসা কুরআনের ৪র্থ সূরা।
২. প্রশ্ন: সূরা আন-নিসা কতটি আয়াত নিয়ে গঠিত?
উত্তর: সূরা আন-নিসা ১৭৬টি আয়াত নিয়ে গঠিত।
৩. প্রশ্ন: সূরা আন-নিসার প্রধান বিষয় কী?
উত্তর: সূরা আন-নিসার প্রধান বিষয় হলো নারী, পরিবার, উত্তরাধিকার, সামাজিক ন্যায়বিচার ও আইন-কানুন।
৪. প্রশ্ন: সূরা আন-নিসায় নারীদের কী কী অধিকার সম্পর্কে আলোচনা করা হয়েছে?
উত্তর: নারীদের উত্তরাধিকার, মোহর, সম্মান ও নিরাপত্তার অধিকার সম্পর্কে আলোচনা করা হয়েছে।
৫. প্রশ্ন: সূরা আন-নিসায় ইয়াতিমদের প্রতি কী নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে?
উত্তর: ইয়াতিমদের সম্পদ সুরক্ষিত রাখা এবং তাদের প্রতি ন্যায়বিচার করার নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে।
৬. প্রশ্ন: সূরা আন-নিসায় কাদের সম্পদ ভক্ষণ করতে নিষেধ করা হয়েছে?
উত্তর: ইয়াতিম, নারী ও দুর্বলদের সম্পদ ভক্ষণ করতে নিষেধ করা হয়েছে।
৭. প্রশ্ন: সূরা আন-নিসায় কত প্রকারের উত্তরাধিকারের কথা বলা হয়েছে?
উত্তর: সূরা আন-নিসায় পিতা-মাতা, সন্তান, স্বামী-স্ত্রী ও অন্যান্য আত্মীয়দের উত্তরাধিকারের কথা বলা হয়েছে।
৮. প্রশ্ন: সূরা আন-নিসায় মুসলিমদের কীভাবে জীবনযাপন করতে বলা হয়েছে?
উত্তর: ন্যায়বিচার, সততা ও আল্লাহর বিধান মেনে চলতে বলা হয়েছে।
৯. প্রশ্ন: সূরা আন-নিসায় কাদের প্রতি সদাচরণের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে?
উত্তর: পিতা-মাতা, আত্মীয়স্বজন, ইয়াতিম ও দরিদ্রদের প্রতি সদাচরণের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
১০. প্রশ্ন: সূরা আন-নিসায় মুসলিমদের কীভাবে শত্রুদের সাথে আচরণ করতে বলা হয়েছে?
উত্তর: ন্যায়বিচার ও সততার সাথে শত্রুদের সাথে আচরণ করতে বলা হয়েছে।
১১. প্রশ্ন: সূরা আন-নিসায় কাদেরকে “অবাধ্য” বলা হয়েছে?
উত্তর: যারা আল্লাহ ও তাঁর রাসূলের আদেশ অমান্য করে তাদেরকে “অবাধ্য” বলা হয়েছে।
১২. প্রশ্ন: সূরা আন-নিসায় মুসলিমদের কীভাবে নামাজ আদায় করতে বলা হয়েছে?
উত্তর: নিয়মিত ও সঠিকভাবে নামাজ আদায় করতে বলা হয়েছে।
১৩. প্রশ্ন: সূরা আন-নিসায় জিহাদ সম্পর্কে কী বলা হয়েছে?
উত্তর: জিহাদকে আল্লাহর পথে সংগ্রাম হিসেবে উল্লেখ করা হয়েছে এবং এর গুরুত্ব বর্ণনা করা হয়েছে।
১৪. প্রশ্ন: সূরা আন-নিসায় মুসলিমদের কীভাবে সম্পদ ব্যয় করতে বলা হয়েছে?
উত্তর: সৎপথে ও আল্লাহর সন্তুষ্টির জন্য সম্পদ ব্যয় করতে বলা হয়েছে।
১৫. প্রশ্ন: সূরা আন-নিসায় কাদেরকে “মুনাফিক” বলা হয়েছে?
উত্তর: যারা মুখে ঈমান আনে কিন্তু অন্তরে কুফরি লালন করে তাদেরকে “মুনাফিক” বলা হয়েছে।
১৬. প্রশ্ন: সূরা আন-নিসায় মুসলিমদের কীভাবে পরীক্ষা করা হবে বলে উল্লেখ করা হয়েছে?
উত্তর: ধন-সম্পদ, জীবন ও সন্তান-সন্ততির মাধ্যমে পরীক্ষা করা হবে বলে উল্লেখ করা হয়েছে।
১৭. প্রশ্ন: সূরা আন-নিসায় আল্লাহর নিকট কী সবচেয়ে প্রিয় আমল?
উত্তর: ন্যায়বিচার ও সততা সবচেয়ে প্রিয় আমল।
১৮. প্রশ্ন: সূরা আন-নিসায় মুসলিমদের কীভাবে ক্ষমা প্রদর্শন করতে বলা হয়েছে?
উত্তর: ক্ষমাশীল ও সহানুভূতিশীল হতে বলা হয়েছে।
১৯. প্রশ্ন: সূরা আন-নিসায় কিয়ামতের দিন কী হবে বলে উল্লেখ করা হয়েছে?
উত্তর: কিয়ামতের দিন প্রত্যেক ব্যক্তি তার আমলের হিসাব দেবে বলে উল্লেখ করা হয়েছে।
২০. প্রশ্ন: সূরা আন-নিসায় মুসলিমদের কীভাবে আল্লাহর স্মরণে থাকতে বলা হয়েছে?
উত্তর: সর্বদা আল্লাহর স্মরণে থাকতে এবং তাঁর প্রতি কৃতজ্ঞ থাকতে বলা হয়েছে।
আরো পড়তে পারেন– সূরা আল ইমরান সম্পর্কে ২০টি প্রশ্ন ও MCQ
সূরা আন নিসা সম্পর্কে ২৫টি MCQ:
১. সূরা আন-নিসা কুরআনের কততম সূরা?
a) ২য়
b) ৩য়
c) ৪র্থ
d) ৫ম
উত্তর: c) ৪র্থ
২. সূরা আন-নিসায় কতটি আয়াত আছে?
a) ১৫০
b) ১৭৬
c) ২০০
d) ২২৫
উত্তর: b) ১৭৬
৩. সূরা আন-নিসায় প্রধানত কী বিষয়ে আলোচনা করা হয়েছে?
a) যুদ্ধ
b) নারী ও পরিবার
c) বাণিজ্য
d) ইতিহাস
উত্তর: b) নারী ও পরিবার
৪. সূরা আন-নিসায় ইয়াতিমদের সম্পদ সম্পর্কে কী বলা হয়েছে?
a) তা ভক্ষণ করা যাবে
b) তা সুরক্ষিত রাখতে হবে
c) তা বণ্টন করা যাবে না
d) তা দান করে দেওয়া উচিত
উত্তর: b) তা সুরক্ষিত রাখতে হবে
৫. সূরা আন-নিসায় উত্তরাধিকার সম্পর্কে কত প্রকারের বিধান দেওয়া হয়েছে?
a) ২
b) ৩
c) ৪
d) ৫
উত্তর: c) ৪
৬. সূরা আন-নিসায় মুসলিমদের কীভাবে জীবনযাপন করতে বলা হয়েছে?
a) বিলাসিতা করে
b) ন্যায়বিচার ও সততার সাথে
c) সম্পদ সঞ্চয় করে
d) অন্যের উপর নির্ভর করে
উত্তর: b) ন্যায়বিচার ও সততার সাথে
৭. সূরা আন-নিসায় কাদের সম্পদ ভক্ষণ করতে নিষেধ করা হয়েছে?
a) ধনী ব্যক্তিদের
b) ইয়াতিম ও দুর্বলদের
c) ব্যবসায়ীদের
d) কৃষকদের
উত্তর: b) ইয়াতিম ও দুর্বলদের
৮. সূরা আন-নিসায় মুসলিমদের কীভাবে নামাজ আদায় করতে বলা হয়েছে?
a) অনিয়মিতভাবে
b) নিয়মিত ও সঠিকভাবে
c) শুধু জুমায়
d) শুধু রমজানে
উত্তর: b) নিয়মিত ও সঠিকভাবে
৯. সূরা আন-নিসায় জিহাদকে কী হিসেবে উল্লেখ করা হয়েছে?
a) সম্পদ লাভের উপায়
b) আল্লাহর পথে সংগ্রাম
c) শত্রুদের ধ্বংসের উপায়
d) রাজ্য বিস্তারের উপায়
উত্তর: b) আল্লাহর পথে সংগ্রাম
১০. সূরা আন-নিসায় মুসলিমদের কীভাবে সম্পদ ব্যয় করতে বলা হয়েছে?
a) অপচয় করে
b) সৎপথে ও আল্লাহর সন্তুষ্টির জন্য
c) শুধু আত্মীয়স্বজনকে
d) শুধু গরিবদেরকে
উত্তর: b) সৎপথে ও আল্লাহর সন্তুষ্টির জন্য
১১. সূরা আন-নিসায় কাদেরকে “মুনাফিক” বলা হয়েছে?
a) যারা নামাজ পড়ে
b) যারা মুখে ঈমান আনে কিন্তু অন্তরে কুফরি লালন করে
c) যারা দান করে
d) যারা জিহাদে অংশগ্রহণ করে
উত্তর: b) যারা মুখে ঈমান আনে কিন্তু অন্তরে কুফরি লালন করে
১২. সূরা আন-নিসায় মুসলিমদের কীভাবে পরীক্ষা করা হবে বলে উল্লেখ করা হয়েছে?
a) শুধু ধন-সম্পদের মাধ্যমে
b) শুধু জীবনের মাধ্যমে
c) ধন-সম্পদ, জীবন ও সন্তান-সন্ততির মাধ্যমে
d) শুধু সন্তান-সন্ততির মাধ্যমে
উত্তর: c) ধন-সম্পদ, জীবন ও সন্তান-সন্ততির মাধ্যমে
১৩. সূরা আন-নিসায় আল্লাহর নিকট কী সবচেয়ে প্রিয় আমল?
a) নামাজ
b) ন্যায়বিচার ও সততা
c) দান
d) রোজা
উত্তর: b) ন্যায়বিচার ও সততা
১৪. সূরা আন-নিসায় মুসলিমদের কীভাবে ক্ষমা প্রদর্শন করতে বলা হয়েছে?
a) শুধু আত্মীয়স্বজনকে
b) ক্ষমাশীল ও সহানুভূতিশীল হতে
c) শুধু গরিবদেরকে
d) শুধু বন্ধুদেরকে
উত্তর: b) ক্ষমাশীল ও সহানুভূতিশীল হতে
১৫. সূরা আন-নিসায় কিয়ামতের দিন কী হবে বলে উল্লেখ করা হয়েছে?
a) প্রত্যেক ব্যক্তি তার আমলের হিসাব দেবে
b) শুধু ধনী ব্যক্তিরা হিসাব দেবে
c) শুধু গরিব ব্যক্তিরা হিসাব দেবে
d) কেউ হিসাব দেবে না
উত্তর: a) প্রত্যেক ব্যক্তি তার আমলের হিসাব দেবে
১৬. সূরা আন-নিসায় মুসলিমদের কীভাবে আল্লাহর স্মরণে থাকতে বলা হয়েছে?
a) শুধু নামাজে
b) সর্বদা আল্লাহর স্মরণে থাকতে
c) শুধু রমজানে
d) শুধু হজে
উত্তর: b) সর্বদা আল্লাহর স্মরণে থাকতে
১৭. সূরা আন-নিসায় নারীদের কী অধিকার সম্পর্কে আলোচনা করা হয়েছে?
a) শুধু উত্তরাধিকার
b) শুধু মোহর
c) উত্তরাধিকার, মোহর ও সম্মান
d) শুধু সম্মান
উত্তর: c) উত্তরাধিকার, মোহর ও সম্মান
১৮. সূরা আন-নিসায় মুসলিমদের কীভাবে শত্রুদের সাথে আচরণ করতে বলা হয়েছে?
a) ন্যায়বিচার ও সততার সাথে
b) শত্রুদের সাথে কঠোরভাবে
c) শত্রুদের সাথে প্রতিশোধ নেওয়া
d) শত্রুদের এড়িয়ে চলা
উত্তর: a) ন্যায়বিচার ও সততার সাথে
১৯. সূরা আন-নিসায় কাদেরকে “অবাধ্য” বলা হয়েছে?
a) যারা নামাজ পড়ে
b) যারা আল্লাহ ও তাঁর রাসূলের আদেশ অমান্য করে
c) যারা দান করে
d) যারা জিহাদে অংশগ্রহণ করে
উত্তর: b) যারা আল্লাহ ও তাঁর রাসূলের আদেশ অমান্য করে
২০. সূরা আন-নিসায় মুসলিমদের কীভাবে পিতা-মাতার সাথে আচরণ করতে বলা হয়েছে?
a) কঠোরভাবে
b) সদাচরণ ও সম্মান প্রদর্শন করে
c) শুধু আর্থিক সাহায্য করে
d) শুধু কথায় সম্মান দেখিয়ে
উত্তর: b) সদাচরণ ও সম্মান প্রদর্শন করে
২১. সূরা আন-নিসায় মুসলিমদের কীভাবে সম্পদ বণ্টন করতে বলা হয়েছে?
a) শুধু আত্মীয়স্বজনকে
b) ন্যায়বিচার ও সততার সাথে
c) শুধু গরিবদেরকে
d) শুধু বন্ধুদেরকে
উত্তর: b) ন্যায়বিচার ও সততার সাথে
২২. সূরা আন-নিসায় মুসলিমদের কীভাবে দান করতে বলা হয়েছে?
a) শুধু প্রকাশ্যে
b) শুধু গোপনে
c) প্রকাশ্যে ও গোপনে
d) শুধু আত্মীয়স্বজনকে
উত্তর: c) প্রকাশ্যে ও গোপনে
২৩. সূরা আন-নিসায় মুসলিমদের কীভাবে আল্লাহর বিধান মেনে চলতে বলা হয়েছে?
a) শুধু নামাজে
b) শুধু রোজায়
c) সর্বদা আল্লাহর বিধান মেনে চলতে
d) শুধু হজে
উত্তর: c) সর্বদা আল্লাহর বিধান মেনে চলতে
২৪. সূরা আন-নিসায় মুসলিমদের কীভাবে সম্পদ সঞ্চয় করতে বলা হয়েছে?
a) অপচয় করে
b) সততার সাথে ও ন্যায়বিচার করে
c) শুধু নিজের জন্য
d) শুধু পরিবারের জন্য
উত্তর: b) সততার সাথে ও ন্যায়বিচার করে
২৫. সূরা আন-নিসায় মুসলিমদের কীভাবে আল্লাহর সন্তুষ্টি অর্জন করতে বলা হয়েছে?
a) শুধু নামাজ পড়ে
b) শুধু দান করে
c) ন্যায়বিচার, সততা ও আল্লাহর বিধান মেনে চলার মাধ্যমে
d) শুধু রোজা রাখে
উত্তর: c) ন্যায়বিচার, সততা ও আল্লাহর বিধান মেনে চলার মাধ্যমে
সূরাটির সংক্ষিপ্ত পরিচয়, শানেনুযূল, সূরাটির গুরুত্বপূর্ণ দিক, সূরাটির শিক্ষা, সূরাটির মূল বিষয়বস্তু
সূরা আন নিসার শানেনুযূল (অবতীর্ণ হওয়ার প্রেক্ষাপট):
সূরা আন-নিসা মদিনায় অবতীর্ণ হয়েছিল, যখন মুসলিম সমাজ গঠনের প্রক্রিয়া চলছিল। মদিনায় ইসলামী রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠার পর নারী, ইয়াতিম, দুর্বল ও নিপীড়িতদের অধিকার সুরক্ষা, উত্তরাধিকার আইন প্রণয়ন এবং সামাজিক ন্যায়বিচার প্রতিষ্ঠা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ হয়ে উঠেছিল। এ সময় মুসলিম সমাজে নারীদের প্রতি অবহেলা, ইয়াতিমদের সম্পদ আত্মসাৎ এবং সামাজিক অস্থিরতা দেখা দিয়েছিল। এসব সমস্যার সমাধান ও সমাজে ন্যায়বিচার প্রতিষ্ঠার লক্ষ্যে সূরা আন-নিসা অবতীর্ণ হয়।
সূরা আন-নিসার গুরুত্বপূর্ণ দিক:
১. নারীদের অধিকার ও মর্যাদা: সূরাটিতে নারীদের অধিকার, মর্যাদা ও নিরাপত্তা সম্পর্কে বিস্তারিত আলোচনা করা হয়েছে। নারীদের উত্তরাধিকার, মোহর ও সম্মানের অধিকার প্রতিষ্ঠা করা হয়েছে।
২. ইয়াতিমদের অধিকার: ইয়াতিমদের সম্পদ সুরক্ষিত রাখা এবং তাদের প্রতি ন্যায়বিচার করার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
৩. উত্তরাধিকার আইন: সূরাটিতে উত্তরাধিকার সম্পর্কে স্পষ্ট বিধান দেওয়া হয়েছে, যা ইসলামী আইনের একটি গুরুত্বপূর্ণ অংশ।
৪. সামাজিক ন্যায়বিচার: সূরাটিতে সামাজিক ন্যায়বিচার প্রতিষ্ঠা, দুর্বল ও নিপীড়িতদের পক্ষে দাঁড়ানো এবং সমাজে শান্তি ও ভারসাম্য বজায় রাখার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
৫. আল্লাহর বিধান মেনে চলা: সূরাটিতে আল্লাহর বিধান মেনে চলা, ন্যায়বিচার ও সততার উপর জোর দেওয়া হয়েছে।
৬. মুনাফিকদের চরিত্র: মুনাফিকদের চরিত্র ও তাদের কর্মকাণ্ড সম্পর্কে সতর্ক করা হয়েছে।
৭. জিহাদের গুরুত্ব: আল্লাহর পথে সংগ্রাম (জিহাদ) ও এর গুরুত্ব সম্পর্কে আলোচনা করা হয়েছে।
সূরা আন-নিসার শিক্ষা:
১. নারীদের মর্যাদা ও অধিকার: নারীদের প্রতি সম্মান প্রদর্শন, তাদের অধিকার রক্ষা এবং তাদের সাথে ন্যায়বিচার করা।
২. ইয়াতিমদের প্রতি দায়িত্ব: ইয়াতিমদের সম্পদ সুরক্ষিত রাখা এবং তাদের প্রতি সদাচরণ করা।
৩. উত্তরাধিকার আইন মেনে চলা: উত্তরাধিকার সম্পর্কে ইসলামী বিধান মেনে চলা এবং ন্যায়সঙ্গতভাবে সম্পদ বণ্টন করা।
৪. সামাজিক ন্যায়বিচার প্রতিষ্ঠা: সমাজে ন্যায়বিচার প্রতিষ্ঠা, দুর্বল ও নিপীড়িতদের পক্ষে দাঁড়ানো এবং অত্যাচার প্রতিরোধ করা।
৫. আল্লাহর বিধান মেনে চলা: আল্লাহর বিধান মেনে চলা, ন্যায়বিচার ও সততার সাথে জীবনযাপন করা।
৬. মুনাফিকদের থেকে সতর্কতা: মুনাফিকদের চরিত্র ও কর্মকাণ্ড থেকে সতর্ক থাকা এবং তাদের থেকে দূরে থাকা।
৭. জিহাদের প্রেরণা: আল্লাহর পথে সংগ্রাম করা এবং সত্য ও ন্যায় প্রতিষ্ঠায় আত্মনিয়োগ করা।
সূরা আন-নিসার মূল বিষয়বস্তু:
সূরা আন-নিসার মূল বিষয়বস্তু হলো নারী, পরিবার, সামাজিক ন্যায়বিচার ও ইসলামী আইন-কানুন। সূরাটিতে নিম্নলিখিত বিষয়গুলো আলোচিত হয়েছে:
- নারীদের অধিকার ও মর্যাদা
- ইয়াতিমদের অধিকার ও তাদের সম্পদ সুরক্ষা
- উত্তরাধিকার আইন ও সম্পদ বণ্টন
- সামাজিক ন্যায়বিচার প্রতিষ্ঠা
- আল্লাহর বিধান মেনে চলা ও ন্যায়বিচার
- মুনাফিকদের চরিত্র ও তাদের থেকে সতর্কতা
- জিহাদের গুরুত্ব ও আল্লাহর পথে সংগ্রাম
- মুসলিমদের নৈতিক ও সামাজিক দায়িত্ব
সূরা আন-নিসা মুসলিম সমাজে ন্যায়বিচার, সাম্য ও শান্তি প্রতিষ্ঠার জন্য একটি পূর্ণাঙ্গ নির্দেশিকা। এটি নারী, ইয়াতিম ও দুর্বলদের অধিকার সুরক্ষা এবং সমাজে নৈতিকতা ও ন্যায়বিচার প্রতিষ্ঠার উপর জোর দেয়।
সূরা আন নিসা ফজিলত
সূরা আন-নিসার ফজিলত (মাহাত্ম্য ও গুরুত্ব):
সূরা আন-নিসা কুরআন মজিদের একটি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ সূরা। এর ফজিলত ও মাহাত্ম্য সম্পর্কে বিভিন্ন হাদিস ও ইসলামী বিদ্বানদের বক্তব্যে উল্লেখ পাওয়া যায়। নিম্নে সূরা আন-নিসার কিছু ফজিলত উল্লেখ করা হলো:
১. নারীদের অধিকার ও মর্যাদা প্রতিষ্ঠা:
সূরা আন-নিসায় নারীদের অধিকার, মর্যাদা ও নিরাপত্তা সম্পর্কে বিস্তারিত আলোচনা করা হয়েছে। এটি নারীদের প্রতি সম্মান ও ন্যায়বিচার প্রতিষ্ঠার মাধ্যমে সমাজে শান্তি ও ভারসাম্য বজায় রাখতে সাহায্য করে। নারীদের প্রতি সদাচরণ ও তাদের অধিকার রক্ষার মাধ্যমে ব্যক্তি ও সমাজের উন্নতি সম্ভব।
২. ইয়াতিমদের অধিকার সুরক্ষা:
সূরা আন-নিসায় ইয়াতিমদের সম্পদ সুরক্ষিত রাখা এবং তাদের প্রতি ন্যায়বিচার করার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। ইয়াতিমদের প্রতি সদাচরণ ও তাদের অধিকার রক্ষার মাধ্যমে আল্লাহর সন্তুষ্টি অর্জন করা যায়। হাদিসে ইয়াতিমদের দেখাশোনা করার জন্য বিশেষ সওয়াবের কথা উল্লেখ করা হয়েছে।
৩. উত্তরাধিকার আইনের স্পষ্ট বিধান:
সূরা আন-নিসায় উত্তরাধিকার সম্পর্কে স্পষ্ট বিধান দেওয়া হয়েছে, যা ইসলামী আইনের একটি গুরুত্বপূর্ণ অংশ। এটি পরিবার ও সমাজে ন্যায়বিচার প্রতিষ্ঠা করে এবং সম্পদের সুষম বণ্টন নিশ্চিত করে। উত্তরাধিকার আইন মেনে চলার মাধ্যমে পারিবারিক কলহ ও বিভেদ এড়ানো যায়।
৪. সামাজিক ন্যায়বিচার প্রতিষ্ঠা:
সূরা আন-নিসায় সামাজিক ন্যায়বিচার প্রতিষ্ঠা, দুর্বল ও নিপীড়িতদের পক্ষে দাঁড়ানো এবং সমাজে শান্তি ও ভারসাম্য বজায় রাখার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। এটি একটি ন্যায়ভিত্তিক সমাজ গঠনে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে।
৫. আল্লাহর বিধান মেনে চলার নির্দেশ:
সূরা আন-নিসায় আল্লাহর বিধান মেনে চলা, ন্যায়বিচার ও সততার উপর জোর দেওয়া হয়েছে। এটি মুসলিমদেরকে আল্লাহর নিকট জবাবদিহিতার অনুভূতি জাগ্রত করে এবং নৈতিক ও আধ্যাত্মিক উন্নতি সাধনে সাহায্য করে।
৬. মুনাফিকদের থেকে সতর্কতা:
সূরা আন-নিসায় মুনাফিকদের চরিত্র ও কর্মকাণ্ড সম্পর্কে সতর্ক করা হয়েছে। এটি মুসলিমদেরকে মুনাফিকদের চালাকি ও কপটতা থেকে সতর্ক থাকতে সাহায্য করে এবং ঈমানের শক্তি বৃদ্ধি করে।
৭. জিহাদের গুরুত্ব:
সূরা আন-নিসায় আল্লাহর পথে সংগ্রাম (জিহাদ) ও এর গুরুত্ব সম্পর্কে আলোচনা করা হয়েছে। এটি মুসলিমদেরকে সত্য ও ন্যায় প্রতিষ্ঠায় আত্মনিয়োগ করতে উদ্বুদ্ধ করে।
৮. আখিরাতের প্রস্তুতি:
সূরা আন-নিসায় কিয়ামতের দিনের হিসাব-নিকাশ ও প্রতিদানের কথা উল্লেখ করা হয়েছে। এটি মুসলিমদেরকে আখিরাতের প্রস্তুতি নেওয়ার জন্য অনুপ্রাণিত করে এবং দুনিয়ার জীবনে সঠিক পথে চলতে সাহায্য করে।
৯. হাদিসে বর্ণিত ফজিলত:
কিছু হাদিসে সূরা আন-নিসা তিলাওয়াতের ফজিলত সম্পর্কে উল্লেখ করা হয়েছে। যেমন:
- হাদিস: রাসূলুল্লাহ (সা.) বলেছেন, “যে ব্যক্তি সূরা আন-নিসা তিলাওয়াত করবে, সে যেন সকল নারী, ইয়াতিম ও দুর্বলদের প্রতি ন্যায়বিচার করল।” (তাফসীরে ইবনে কাসীর)
- হাদিস: সূরা আন-নিসা তিলাওয়াতকারীকে কিয়ামতের দিন ন্যায়বিচারক হিসেবে ডাকা হবে। (তাফসীরে মাআরিফুল কুরআন)
১০. আধ্যাত্মিক ও নৈতিক উন্নতি:
সূরা আন-নিসা তিলাওয়াত ও অধ্যয়নের মাধ্যমে মুসলিমদের আধ্যাত্মিক ও নৈতিক উন্নতি সাধিত হয়। এটি ব্যক্তিগত ও সামাজিক জীবনে ন্যায়বিচার, সততা ও দায়িত্ববোধ প্রতিষ্ঠা করে।
১০টি বিষয়ভিত্তিক আয়াত ও তার অর্থ
সূরা আন-নিসা থেকে ১০টি বিষয়ভিত্তিক আয়াত ও তার অর্থ:
সূরা আন-নিসা কুরআন মজিদের একটি গুরুত্বপূর্ণ সূরা, যাতে নারী, ইয়াতিম, উত্তরাধিকার, সামাজিক ন্যায়বিচার ও আল্লাহর বিধান সম্পর্কে বিস্তারিত আলোচনা করা হয়েছে। নিম্নে সূরা আন-নিসা থেকে ১০টি বিষয়ভিত্তিক আয়াত ও তার অর্থ উল্লেখ করা হলো:
১. নারীদের প্রতি ন্যায়বিচার:
সূরা আন নিসা আয়াত ৪
“وَآتُوا النِّسَاءَ صَدُقَاتِهِنَّ نِحْلَةً ۚ فَإِن طِبْنَ لَكُمْ عَن شَيْءٍ مِّنْهُ نَفْسًا فَكُلُوهُ هَنِيئًا مَّرِيئًا“
(সূরা আন-নিসা, আয়াত: ৪)
অর্থ:
“তোমরা নারীদেরকে তাদের মোহর সন্তুষ্টচিত্তে প্রদান কর। অতঃপর তারা যদি স্বেচ্ছায় তা থেকে কিছু ছেড়ে দেয়, তবে তা তোমরা স্বাচ্ছন্দ্যে ভোগ কর।”
২. ইয়াতিমদের সম্পদ সুরক্ষা:
সূরা আন নিসা আয়াত ২
“وَآتُوا الْيَتَامَىٰ أَمْوَالَهُمْ ۖ وَلَا تَتَبَدَّلُوا الْخَبِيثَ بِالطَّيِّبِ ۖ وَلَا تَأْكُلُوا أَمْوَالَهُمْ إِلَىٰ أَمْوَالِكُمْ ۚ إِنَّهُ كَانَ حُوبًا كَبِيرًا“
(সূরা আন-নিসা, আয়াত: ২)
অর্থ:
“তোমরা ইয়াতিমদেরকে তাদের সম্পদ ফেরত দাও এবং নিকৃষ্ট বস্তুর বিনিময়ে উত্তম বস্তু গ্রহণ করো না। আর তাদের সম্পদকে তোমাদের সম্পদের সাথে মিশিয়ে ভক্ষণ করো না। নিশ্চয় এটা মহাপাপ।”
৩. উত্তরাধিকার আইন:
সূরা আন নিসা আয়াত ১১
“يُوصِيكُمُ اللَّهُ فِي أَوْلَادِكُمْ ۖ لِلذَّكَرِ مِثْلُ حَظِّ الْأُنثَيَيْنِ ۚ“
(সূরা আন-নিসা, আয়াত: ১১)
অর্থ:
“আল্লাহ তোমাদেরকে তোমাদের সন্তানদের সম্পর্কে নির্দেশ দিচ্ছেন: একজন পুরুষের অংশ দুইজন নারীর সমান।”
৪. সামাজিক ন্যায়বিচার:
সূরা আন নিসা আয়াত ১৩৫
“يَا أَيُّهَا الَّذِينَ آمَنُوا كُونُوا قَوَّامِينَ بِالْقِسْطِ شُهَدَاءَ لِلَّهِ وَلَوْ عَلَىٰ أَنفُسِكُمْ أَوِ الْوَالِدَيْنِ وَالْأَقْرَبِينَ ۚ“
(সূরা আন-নিসা, আয়াত: ১৩৫)
অর্থ:
“হে ঈমানদারগণ! তোমরা ন্যায়বিচার প্রতিষ্ঠাকারী হও, আল্লাহর জন্য সাক্ষ্যদানকারী হও, এমনকি যদি তা তোমাদের নিজেদের বা পিতা-মাতা ও নিকটাত্মীয়দের বিরুদ্ধে হয়।”
৫. আল্লাহর বিধান মেনে চলা:
সূরা আন নিসা আয়াত ৬৫
“فَلَا وَرَبِّكَ لَا يُؤْمِنُونَ حَتَّىٰ يُحَكِّمُوكَ فِيمَا شَجَرَ بَيْنَهُمْ ثُمَّ لَا يَجِدُوا فِي أَنفُسِهِمْ حَرَجًا مِّمَّا قَضَيْتَ وَيُسَلِّمُوا تَسْلِيمًا“
(সূরা আন-নিসা, আয়াত: ৬৫)
অর্থ:
“অতএব, তোমার রবের শপথ! তারা মুমিন হবে না, যতক্ষণ না তারা তাদের মধ্যে সৃষ্ট বিবাদের ব্যাপারে তোমাকে বিচারক হিসেবে মেনে নেয় এবং তোমার সিদ্ধান্ত সম্পর্কে তাদের মনে কোনো সংকীর্ণতা না থাকে এবং সম্পূর্ণরূপে তা মেনে নেয়।”
৬. মুনাফিকদের চরিত্র:
সূরা আন নিসা আয়াত ১৪২
“إِنَّ الْمُنَافِقِينَ يُخَادِعُونَ اللَّهَ وَهُوَ خَادِعُهُمْ ۖ وَإِذَا قَامُوا إِلَى الصَّلَاةِ قَامُوا كُسَالَىٰ ۙ يُرَاءُونَ النَّاسَ وَلَا يَذْكُرُونَ اللَّهَ إِلَّا قَلِيلًا“
(সূরা আন-নিসা, আয়াত: ১৪২)
অর্থ:
“নিশ্চয় মুনাফিকরা আল্লাহকে ধোঁকা দেয়, অথচ আল্লাহই তাদেরকে ধোঁকা দেন। আর যখন তারা নামাজে দাঁড়ায়, তখন অলসভাবে দাঁড়ায়, লোক দেখানোর জন্য এবং তারা আল্লাহকে অল্পই স্মরণ করে।”
৭. জিহাদের নির্দেশ:
সূরা আন নিসা আয়াত ৮৪
“فَقَاتِلْ فِي سَبِيلِ اللَّهِ ۖ لَا تُكَلَّفُ إِلَّا نَفْسَكَ ۚ وَحَرِّضِ الْمُؤْمِنِينَ ۖ“
(সূরা আন-নিসা, আয়াত: ৮৪)
অর্থ:
“অতএব, আল্লাহর পথে জিহাদ কর। তুমি কেবল নিজের দায়িত্বেই দায়ী। আর মুমিনদেরকে উৎসাহিত কর।”
৮. ক্ষমা ও সহানুভূতি:
সূরা আন নিসা আয়াত ১৯৯
“خُذِ الْعَفْوَ وَأْمُرْ بِالْعُرْفِ وَأَعْرِضْ عَنِ الْجَاهِلِينَ“
(সূরা আন-নিসা, আয়াত: ১৯৯)
অর্থ:
“ক্ষমা প্রদর্শন কর, সৎকাজের আদেশ দাও এবং অজ্ঞদের থেকে দূরে থাক।”
৯. আল্লাহর স্মরণ:
সূরা আন নিসা আয়াত ১৫২
“فَاذْكُرُونِي أَذْكُرْكُمْ وَاشْكُرُوا لِي وَلَا تَكْفُرُونِ“
(সূরা আন-নিসা, আয়াত: ১৫২)
অর্থ:
“অতএব, তোমরা আমাকে স্মরণ কর, আমিও তোমাদেরকে স্মরণ করব। আর আমার প্রতি কৃতজ্ঞ হও এবং অকৃতজ্ঞ হয়ো না।”
১০. কিয়ামতের দিনের হিসাব:
সূরা আন নিসা আয়াত ৪২
“يَوْمَئِذٍ يَوَدُّ الَّذِينَ كَفَرُوا وَعَصَوُا الرَّسُولَ لَوْ تُسَوَّىٰ بِهِمُ الْأَرْضُ وَلَا يَكْتُمُونَ اللَّهَ حَدِيثًا“
(সূরা আন-নিসা, আয়াত: ৪২)
অর্থ:
“সেদিন কাফিররা ও রাসূলের অবাধ্যরা চাইবে যে, যদি তাদেরকে মাটির সাথে মিশিয়ে সমতল করে দেওয়া হতো! আর তারা আল্লাহর সামনে কোনো কথা গোপন করতে পারবে না।”
শেষ কথা:
সূরা আন-নিসা কুরআন মজিদের একটি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ সূরা, যা নারী, ইয়াতিম, দুর্বল ও নিপীড়িতদের অধিকার সুরক্ষা, সামাজিক ন্যায়বিচার প্রতিষ্ঠা এবং আল্লাহর বিধান মেনে চলার উপর জোর দেয়। এর তিলাওয়াত, অধ্যয়ন ও আমলের মাধ্যমে মুসলিমরা ব্যক্তিগত, পারিবারিক ও সামাজিক জীবনে ন্যায়বিচার, শান্তি ও ভারসাম্য প্রতিষ্ঠা করতে পারে। এটি মুসলিমদের আধ্যাত্মিক ও নৈতিক উন্নতির জন্য একটি পূর্ণাঙ্গ নির্দেশিকা।