সূরা আনফাল হল পবিত্র কুরআনের ৮ম সূরা। এটি মদিনায় নাযিল হয়েছে এবং এর আয়াত সংখ্যা ৭৫টি। এই সূরার নাম “আল-আনফাল” (যুদ্ধলব্ধ সম্পদ) এসেছে প্রথম আয়াত থেকে, যেখানে গনীমত বা যুদ্ধলব্ধ সম্পদ বণ্টনের নিয়ম সম্পর্কে আলোচনা করা হয়েছে। সূরাটি বদর যুদ্ধের প্রেক্ষাপটে নাযিল হয়েছে, যা ইসলামের ইতিহাসে একটি গুরুত্বপূর্ণ ঘটনা।
সূরা আনফাল সম্পর্কে ২০টি শর্ট
১. সূরা আল-আনফাল কুরআনের কততম সূরা?
উত্তর: সূরা আল-আনফাল কুরআনের ৮ম সূরা।
২. সূরা আল-আনফাল কতটি আয়াত নিয়ে গঠিত?
উত্তর: সূরা আল-আনফাল ৭৫টি আয়াত নিয়ে গঠিত।
৩. সূরা আল-আনফাল কোন যুদ্ধের প্রেক্ষাপটে নাযিল হয়েছে?
উত্তর: সূরা আল-আনফাল বদর যুদ্ধের প্রেক্ষাপটে নাযিল হয়েছে।
৪. আল-আনফাল শব্দের অর্থ কী?
উত্তর: আল-আনফাল শব্দের অর্থ “যুদ্ধলব্ধ সম্পদ” বা “গনীমতের মাল”।
৫. সূরা আল-আনফালের মূল বিষয়বস্তু কী?
উত্তর: সূরা আল-আনফালের মূল বিষয়বস্তু হলো যুদ্ধের নিয়ম-কানুন, আল্লাহর সাহায্য, ঈমান ও তাকওয়ার গুরুত্ব।
৬. বদর যুদ্ধে মুসলিম বাহিনীর সংখ্যা কত ছিল?
উত্তর: বদর যুদ্ধে মুসলিম বাহিনীর সংখ্যা ছিল ৩১৩ জন।
৭. বদর যুদ্ধে কাফির বাহিনীর সংখ্যা কত ছিল?
উত্তর: বদর যুদ্ধে কাফির বাহিনীর সংখ্যা ছিল প্রায় ১০০০ জন।
৮. সূরা আল-আনফালে আল্লাহ তাআলা মুমিনদের কীভাবে সাহায্য করার কথা বলেছেন?
উত্তর: আল্লাহ তাআলা ফেরেশতা পাঠিয়ে মুমিনদের সাহায্য করার কথা বলেছেন।
৯. সূরা আল-আনফালে গনীমতের মাল বণ্টনের নিয়ম কী?
উত্তর: গনীমতের মালের এক পঞ্চমাংশ আল্লাহ, রাসূল, নিকটাত্মীয়, এতিম, মিসকিন ও মুসাফিরের জন্য বণ্টন করার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
১০. সূরা আল-আনফালে আল্লাহ তাআলা মুমিনদের কী উপদেশ দিয়েছেন?
উত্তর: আল্লাহ তাআলা মুমিনদেরকে ধৈর্য, তাকওয়া ও আল্লাহর উপর ভরসা রাখার উপদেশ দিয়েছেন।
১১. সূরা আল-আনফালে আল্লাহ তাআলা কাফিরদের সম্পর্কে কী বলেছেন?
উত্তর: আল্লাহ তাআলা বলেছেন, কাফিরদের চক্রান্ত দুর্বল এবং আল্লাহ তাদেরকে ধ্বংস করবেন।
১২. সূরা আল-আনফালে আল্লাহ তাআলা মুমিনদেরকে কীভাবে যুদ্ধ করতে বলেছেন?
উত্তর: আল্লাহ তাআলা মুমিনদেরকে সংঘবদ্ধভাবে, ধৈর্য ও আল্লাহর উপর ভরসা রেখে যুদ্ধ করতে বলেছেন।
১৩. সূরা আল-আনফালে আল্লাহ তাআলা মুমিনদেরকে কীভাবে পরীক্ষা করেন?
উত্তর: আল্লাহ তাআলা মুমিনদেরকে ভয়, ক্ষুধা, সম্পদ ও জীবনের ক্ষতি দিয়ে পরীক্ষা করেন।
১৪. সূরা আল-আনফালে আল্লাহ তাআলা মুমিনদেরকে কীভাবে সফলতা দান করেন?
উত্তর: আল্লাহ তাআলা মুমিনদেরকে ঈমান, তাকওয়া ও আল্লাহর উপর ভরসা করার মাধ্যমে সফলতা দান করেন।
১৫. সূরা আল-আনফালে আল্লাহ তাআলা মুমিনদেরকে কীভাবে সতর্ক করেছেন?
উত্তর: আল্লাহ তাআলা মুমিনদেরকে বিভেদ ও অহংকার থেকে সতর্ক করেছেন।
১৬. সূরা আল-আনফালে আল্লাহ তাআলা মুমিনদেরকে কীভাবে ঐক্যবদ্ধ থাকতে বলেছেন?
উত্তর: আল্লাহ তাআলা মুমিনদেরকে আল্লাহর রজ্জুকে শক্তভাবে ধারণ করে ঐক্যবদ্ধ থাকতে বলেছেন।
১৭. সূরা আল-আনফালে আল্লাহ তাআলা মুমিনদেরকে কীভাবে শত্রুর মোকাবেলা করতে বলেছেন?
উত্তর: আল্লাহ তাআলা মুমিনদেরকে শক্তিশালী প্রস্তুতি নিয়ে শত্রুর মোকাবেলা করতে বলেছেন।
১৮. সূরা আল-আনফালে আল্লাহ তাআলা মুমিনদেরকে কীভাবে ক্ষমা ও দয়া প্রদর্শন করতে বলেছেন?
উত্তর: আল্লাহ তাআলা মুমিনদেরকে ক্ষমা ও দয়া প্রদর্শন করে শান্তির পথ অবলম্বন করতে বলেছেন।
১৯. সূরা আল-আনফালে আল্লাহ তাআলা মুমিনদেরকে কীভাবে সত্যের পথে চলতে বলেছেন?
উত্তর: আল্লাহ তাআলা মুমিনদেরকে সত্যের পথে অবিচল থাকতে এবং মিথ্যা থেকে দূরে থাকতে বলেছেন।
২০. সূরা আল-আনফালে আল্লাহ তাআলা মুমিনদেরকে কীভাবে জিহাদ করতে বলেছেন?
উত্তর: আল্লাহ তাআলা মুমিনদেরকে আল্লাহর পথে জিহাদ করতে এবং অন্যায়ের বিরুদ্ধে সংগ্রাম করতে বলেছেন।
সূরা আনফাল সম্পর্কে ২৫টি MCQ:
১. সূরা আল-আনফাল কুরআনের কততম সূরা?
ক) ৫ম
খ) ৮ম
গ) ১০ম
ঘ) ১২তম
উত্তর: খ) ৮ম
২. সূরা আল-আনফাল কতটি আয়াত নিয়ে গঠিত?
ক) ৬০
খ) ৭৫
গ) ৮০
ঘ) ৯০
উত্তর: খ) ৭৫
৩. সূরা আল-আনফাল কোন যুদ্ধের প্রেক্ষাপটে নাযিল হয়েছে?
ক) উহুদ
খ) বদর
গ) খন্দক
ঘ) তাবুক
উত্তর: খ) বদর
৪. আল-আনফাল শব্দের অর্থ কী?
ক) যুদ্ধলব্ধ সম্পদ
খ) দান
গ) নামাজ
ঘ) রোজা
উত্তর: ক) যুদ্ধলব্ধ সম্পদ
৫. বদর যুদ্ধে মুসলিম বাহিনীর সংখ্যা কত ছিল?
ক) ২০০
খ) ৩১৩
গ) ৪০০
ঘ) ৫০০
উত্তর: খ) ৩১৩
৬. বদর যুদ্ধে কাফির বাহিনীর সংখ্যা কত ছিল?
ক) ৫০০
খ) ৭০০
গ) ১০০০
ঘ) ১৫০০
উত্তর: গ) ১০০০
৭. সূরা আল-আনফালে আল্লাহ তাআলা মুমিনদেরকে কীভাবে সাহায্য করেছেন?
ক) ফেরেশতা পাঠিয়ে
খ) বৃষ্টি দিয়ে
গ) সম্পদ দিয়ে
ঘ) শক্তি দিয়ে
উত্তর: ক) ফেরেশতা পাঠিয়ে
৮. সূরা আল-আনফালে গনীমতের মাল বণ্টনের নিয়ম কী?
ক) এক চতুর্থাংশ
খ) এক পঞ্চমাংশ
গ) এক তৃতীয়াংশ
ঘ) অর্ধেক
উত্তর: খ) এক পঞ্চমাংশ
৯. সূরা আল-আনফালে আল্লাহ তাআলা মুমিনদেরকে কী উপদেশ দিয়েছেন?
ক) ধৈর্য ও তাকওয়া
খ) সম্পদ সংগ্রহ
গ) শক্তি প্রদর্শন
ঘ) শত্রুকে ভয় দেখানো
উত্তর: ক) ধৈর্য ও তাকওয়া
১০. সূরা আল-আনফালে আল্লাহ তাআলা কাফিরদের সম্পর্কে কী বলেছেন?
ক) তাদের চক্রান্ত দুর্বল
খ) তারা বিজয়ী হবে
গ) তারা সঠিক পথে আছে
ঘ) তারা মুমিনদের বন্ধু
উত্তর: ক) তাদের চক্রান্ত দুর্বল
১১. সূরা আল-আনফালে আল্লাহ তাআলা মুমিনদেরকে কীভাবে যুদ্ধ করতে বলেছেন?
ক) সংঘবদ্ধভাবে
খ) একাকী
গ) গোপনে
ঘ) শত্রুকে ভয় দেখিয়ে
উত্তর: ক) সংঘবদ্ধভাবে
১২. সূরা আল-আনফালে আল্লাহ তাআলা মুমিনদেরকে কীভাবে পরীক্ষা করেন?
ক) ভয়, ক্ষুধা ও সম্পদের ক্ষতি দিয়ে
খ) শুধু সম্পদ দিয়ে
গ) শুধু ভয় দিয়ে
ঘ) শুধু ক্ষুধা দিয়ে
উত্তর: ক) ভয়, ক্ষুধা ও সম্পদের ক্ষতি দিয়ে
১৩. সূরা আল-আনফালে আল্লাহ তাআলা মুমিনদেরকে কীভাবে সফলতা দান করেন?
ক) ঈমান ও তাকওয়ার মাধ্যমে
খ) সম্পদের মাধ্যমে
গ) শক্তির মাধ্যমে
ঘ) বুদ্ধির মাধ্যমে
উত্তর: ক) ঈমান ও তাকওয়ার মাধ্যমে
১৪. সূরা আল-আনফালে আল্লাহ তাআলা মুমিনদেরকে কীভাবে সতর্ক করেছেন?
ক) বিভেদ ও অহংকার থেকে
খ) সম্পদ থেকে
গ) শক্তি থেকে
ঘ) বন্ধুত্ব থেকে
উত্তর: ক) বিভেদ ও অহংকার থেকে
১৫. সূরা আল-আনফালে আল্লাহ তাআলা মুমিনদেরকে কীভাবে ঐক্যবদ্ধ থাকতে বলেছেন?
ক) আল্লাহর রজ্জুকে শক্তভাবে ধারণ করে
খ) সম্পদ দিয়ে
গ) শক্তি দিয়ে
ঘ) বুদ্ধি দিয়ে
উত্তর: ক) আল্লাহর রজ্জুকে শক্তভাবে ধারণ করে
১৬. সূরা আল-আনফালে আল্লাহ তাআলা মুমিনদেরকে কীভাবে শত্রুর মোকাবেলা করতে বলেছেন?
ক) শক্তিশালী প্রস্তুতি নিয়ে
খ) গোপনে
গ) শত্রুকে ভয় দেখিয়ে
ঘ) শত্রুকে উপেক্ষা করে
উত্তর: ক) শক্তিশালী প্রস্তুতি নিয়ে
১৭. সূরা আল-আনফালে আল্লাহ তাআলা মুমিনদেরকে কীভাবে ক্ষমা ও দয়া প্রদর্শন করতে বলেছেন?
ক) শান্তির পথ অবলম্বন করে
খ) শত্রুকে আক্রমণ করে
গ) শত্রুকে ভয় দেখিয়ে
ঘ) শত্রুকে উপেক্ষা করে
উত্তর: ক) শান্তির পথ অবলম্বন করে
১৮. সূরা আল-আনফালে আল্লাহ তাআলা মুমিনদেরকে কীভাবে সত্যের পথে চলতে বলেছেন?
ক) সত্যের পথে অবিচল থাকতে
খ) মিথ্যার পথে চলতে
গ) শত্রুর পথে চলতে
ঘ) সম্পদের পথে চলতে
উত্তর: ক) সত্যের পথে অবিচল থাকতে
১৯. সূরা আল-আনফালে আল্লাহ তাআলা মুমিনদেরকে কীভাবে জিহাদ করতে বলেছেন?
ক) আল্লাহর পথে
খ) সম্পদের জন্য
গ) শক্তির জন্য
ঘ) বুদ্ধির জন্য
উত্তর: ক) আল্লাহর পথে
২০. সূরা আল-আনফালে আল্লাহ তাআলা মুমিনদেরকে কীভাবে শত্রুর সাথে আচরণ করতে বলেছেন?
ক) ন্যায়বিচার ও দয়া প্রদর্শন করে
খ) শত্রুকে ধ্বংস করে
গ) শত্রুকে ভয় দেখিয়ে
ঘ) শত্রুকে উপেক্ষা করে
উত্তর: ক) ন্যায়বিচার ও দয়া প্রদর্শন করে
২১. সূরা আল-আনফালে আল্লাহ তাআলা মুমিনদেরকে কীভাবে আল্লাহর নেয়ামত স্মরণ করতে বলেছেন?
ক) কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করে
খ) সম্পদ দিয়ে
গ) শক্তি দিয়ে
ঘ) বুদ্ধি দিয়ে
উত্তর: ক) কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করে
২২. সূরা আল-আনফালে আল্লাহ তাআলা মুমিনদেরকে কীভাবে আল্লাহর উপর ভরসা করতে বলেছেন?
ক) তাওয়াক্কুলের মাধ্যমে
খ) সম্পদ দিয়ে
গ) শক্তি দিয়ে
ঘ) বুদ্ধি দিয়ে
উত্তর: ক) তাওয়াক্কুলের মাধ্যমে
২৩. সূরা আল-আনফালে আল্লাহ তাআলা মুমিনদেরকে কীভাবে আল্লাহর নেয়ামতের অপব্যবহার থেকে সতর্ক করেছেন?
ক) অহংকার থেকে দূরে থাকতে
খ) সম্পদ দিয়ে
গ) শক্তি দিয়ে
ঘ) বুদ্ধি দিয়ে
উত্তর: ক) অহংকার থেকে দূরে থাকতে
২৪. সূরা আল-আনফালে আল্লাহ তাআলা মুমিনদেরকে কীভাবে আল্লাহর নেয়ামতের শুকরিয়া আদায় করতে বলেছেন?
ক) কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করে
খ) সম্পদ দিয়ে
গ) শক্তি দিয়ে
ঘ) বুদ্ধি দিয়ে
উত্তর: ক) কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করে
২৫. সূরা আল-আনফালে আল্লাহ তাআলা মুমিনদেরকে কীভাবে আল্লাহর নেয়ামতের অপব্যবহার থেকে সতর্ক করেছেন?
ক) অহংকার থেকে দূরে থাকতে
খ) সম্পদ দিয়ে
গ) শক্তি দিয়ে
ঘ) বুদ্ধি দিয়ে
উত্তর: ক) অহংকার থেকে দূরে থাকতে
সূরা আল-আনফালের গুরুত্বপূর্ণ দিক:
১. যুদ্ধের নিয়ম-কানুন: সূরাটিতে যুদ্ধের সময় মুসলিমদের করণীয় ও বর্জনীয় বিষয়গুলো বিস্তারিতভাবে আলোচনা করা হয়েছে।
২. গনীমতের মাল বণ্টন: যুদ্ধলব্ধ সম্পদ বণ্টনের নিয়ম ও এর হিকমত সম্পর্কে বলা হয়েছে।
৩. আল্লাহর সাহায্য ও ফেরেশতাদের ভূমিকা: বদর যুদ্ধে আল্লাহর সাহায্য ও ফেরেশতাদের অবদান সম্পর্কে আলোচনা করা হয়েছে।
৪. ঈমান ও তাকওয়ার গুরুত্ব: ঈমান ও তাকওয়ার মাধ্যমে আল্লাহর সাহায্য লাভের বিষয়টি সূরার মূল বার্তা।
৫. মুমিনদের ঐক্য ও সংহতি: মুমিনদেরকে ঐক্যবদ্ধ থাকার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
সূরা আল-আনফালের শিক্ষা:
১. আল্লাহর উপর ভরসা: মুমিনদেরকে আল্লাহর উপর পূর্ণ ভরসা রাখতে হবে এবং তাঁর সাহায্যের জন্য ধৈর্য ধারণ করতে হবে।
২. যুদ্ধের নিয়ম-কানুন মেনে চলা: যুদ্ধের সময় ইসলামী নিয়ম-কানুন মেনে চলা এবং ন্যায়বিচার প্রতিষ্ঠা করা।
৩. গনীমতের মালের সঠিক বণ্টন: যুদ্ধলব্ধ সম্পদ সঠিকভাবে বণ্টন করা এবং আল্লাহর নির্দেশ মেনে চলা।
৪. ঈমান ও তাকওয়ার গুরুত্ব: ঈমান ও তাকওয়ার মাধ্যমে আল্লাহর নৈকট্য লাভ করা এবং সফলতা অর্জন করা।
৫. শত্রুর সাথে ন্যায়বিচার: শত্রুর সাথেও ন্যায়বিচার ও দয়া প্রদর্শন করা।
৬. ঐক্য ও সংহতি: মুমিনদেরকে বিভেদ ও অহংকার থেকে দূরে থাকতে হবে এবং ঐক্যবদ্ধ থাকতে হবে।
সূরা আল-আনফালের মূল বিষয়বস্তু:
১. যুদ্ধ ও গনীমতের বিধান: সূরাটিতে যুদ্ধের নিয়ম-কানুন এবং গনীমতের মাল বণ্টনের বিধান আলোচনা করা হয়েছে।
২. আল্লাহর সাহায্য ও ফেরেশতাদের ভূমিকা: বদর যুদ্ধে আল্লাহর সাহায্য ও ফেরেশতাদের অবদান সম্পর্কে বলা হয়েছে।
৩. ঈমান ও তাকওয়ার গুরুত্ব: ঈমান ও তাকওয়ার মাধ্যমে আল্লাহর সাহায্য লাভের বিষয়টি সূরার মূল বার্তা।
৪. মুমিনদের ঐক্য ও সংহতি: মুমিনদেরকে ঐক্যবদ্ধ থাকার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে এবং বিভেদ ও অহংকার থেকে সতর্ক করা হয়েছে।
৫. শত্রুর সাথে আচরণ: শত্রুর সাথে ন্যায়বিচার ও দয়া প্রদর্শনের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
৬. আল্লাহর নেয়ামতের শুকরিয়া: আল্লাহর নেয়ামতের শুকরিয়া আদায় এবং অহংকার থেকে দূরে থাকার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
সূরা আল-আনফাল মুসলিমদেরকে যুদ্ধ, সম্পদ বণ্টন, ঈমান ও তাকওয়ার মাধ্যমে আল্লাহর সাহায্য লাভ এবং সমাজে ন্যায়বিচার প্রতিষ্ঠার গুরুত্ব শেখায়। এটি মুমিনদের জন্য একটি পূর্ণাঙ্গ জীবনবিধান প্রদান করে।
সূরা আনফাল মদিনায় অবতীর্ণ কুরআনের একটি সূরা। এটি যুদ্ধ ও শত্রুদের সাথে সম্পর্কিত বিভিন্ন বিষয় নিয়ে আলোচনা করে। আপনার উল্লেখিত আয়াতগুলোর অর্থ ও ব্যাখ্যা নিম্নে দেওয়া হলো:
সূরা আনফাল আয়াত ২
আয়াত:
إِنَّمَا الْمُؤْمِنُونَ الَّذِينَ إِذَا ذُكِرَ اللَّهُ وَجِلَتْ قُلُوبُهُمْ وَإِذَا تُلِيَتْ عَلَيْهِمْ آيَاتُهُ زَادَتْهُمْ إِيمَانًا وَعَلَىٰ رَبِّهِمْ يَتَوَكَّلُونَ
অর্থ:
প্রকৃত মুমিন তো তারাই, যাদের অন্তর আল্লাহর নাম শুনলে ভীত হয়ে পড়ে, আর যখন তাঁর আয়াতসমূহ তাদের কাছে পাঠ করা হয়, তখন তা তাদের ঈমান বৃদ্ধি করে এবং তারা তাদের রবের উপরই ভরসা করে।
ব্যাখ্যা:
এই আয়াতে মুমিনদের বৈশিষ্ট্য বর্ণনা করা হয়েছে। প্রকৃত মুমিনরা আল্লাহর নাম শুনলে তাদের অন্তর ভয়ে কম্পিত হয় এবং আল্লাহর আয়াত শুনলে তাদের ঈমান বৃদ্ধি পায়। তারা সবসময় আল্লাহর উপর ভরসা করে এবং তাঁর নির্দেশনা অনুসরণ করে।
সূরা আনফাল আয়াত ২০
আয়াত:
يَا أَيُّهَا الَّذِينَ آمَنُوا أَطِيعُوا اللَّهَ وَرَسُولَهُ وَلَا تَوَلَّوْا عَنْهُ وَأَنْتُمْ تَسْمَعُونَ
অর্থ:
হে ঈমানদারগণ! তোমরা আল্লাহ ও তাঁর রাসূলের আনুগত্য কর এবং তাঁর থেকে মুখ ফিরিয়ে নিও না, অথচ তোমরা শুনছ।
ব্যাখ্যা:
এই আয়াতে আল্লাহ মুমিনদেরকে তাঁর ও তাঁর রাসূলের আনুগত্য করার নির্দেশ দিয়েছেন। মুমিনদের উচিত আল্লাহ ও রাসূলের নির্দেশনা মেনে চলা এবং তা থেকে বিমুখ না হওয়া।
৩সূরা আনফাল আয়াত ২৮
আয়াত:
وَاعْلَمُوا أَنَّمَا أَمْوَالُكُمْ وَأَوْلَادُكُمْ فِتْنَةٌ وَأَنَّ اللَّهَ عِنْدَهُ أَجْرٌ عَظِيمٌ
অর্থ:
আর জেনে রাখ, তোমাদের ধন-সম্পদ ও সন্তান-সন্ততি তো একটি পরীক্ষা এবং আল্লাহর কাছেই রয়েছে মহাপুরস্কার।
ব্যাখ্যা:
এই আয়াতে আল্লাহ বলেছেন যে, ধন-সম্পদ ও সন্তান-সন্ততি মানুষের জন্য একটি পরীক্ষা। মানুষকে এগুলোকে আল্লাহর পথে ব্যবহার করতে হবে এবং এগুলোর প্রতি অতিরিক্ত মোহ না রাখতে হবে। আল্লাহর কাছেই রয়েছে মহাপুরস্কার।
সূরা আনফাল আয়াত ৭০
আয়াত:
يَا أَيُّهَا النَّبِيُّ قُل لِّمَن فِي أَيْدِيكُم مِّنَ الْأَسْرَىٰ إِن يَعْلَمِ اللَّهُ فِي قُلُوبِكُمْ خَيْرًا يُؤْتِكُمْ خَيْرًا مِّمَّا أُخِذَ مِنكُمْ وَيَغْفِرْ لَكُمْ ۗ وَاللَّهُ غَفُورٌ رَّحِيمٌ
অর্থ:
হে নবী! আপনি তাদের বলুন, যারা তোমাদের হাতে বন্দী হয়েছে, যদি আল্লাহ তোমাদের অন্তরে কোনো ভালো জিনিস জানতে পারেন, তবে তিনি তোমাদেরকে তোমাদের থেকে যা নেয়া হয়েছে তার চেয়ে উত্তম কিছু দেবেন এবং তোমাদেরকে ক্ষমা করবেন। আর আল্লাহ ক্ষমাশীল, দয়ালু।
ব্যাখ্যা:
এই আয়াতে আল্লাহ রাসূল (সা.)-কে নির্দেশ দিয়েছেন যে, তিনি যেন বন্দীদেরকে বলেন যে, যদি তাদের অন্তরে ভালো উদ্দেশ্য থাকে, তবে আল্লাহ তাদেরকে তাদের হারানো সম্পদের চেয়ে উত্তম কিছু দেবেন এবং তাদেরকে ক্ষমা করবেন। আল্লাহ ক্ষমাশীল ও দয়ালু।
সূরা আনফাল আয়াত ৩০
আয়াত:
وَإِذْ يَمْكُرُ بِكَ الَّذِينَ كَفَرُوا لِيُثْبِتُوكَ أَوْ يَقْتُلُوكَ أَوْ يُخْرِجُوكَ ۚ وَيَمْكُرُونَ وَيَمْكُرُ اللَّهُ ۖ وَاللَّهُ خَيْرُ الْمَاكِرِينَ
অর্থ:
আর স্মরণ কর, যখন কাফিররা তোমাকে বন্দী করতে, হত্যা করতে বা বহিষ্কার করতে চক্রান্ত করছিল। তারা চক্রান্ত করছিল এবং আল্লাহও চক্রান্ত করছিলেন। আর আল্লাহ是最善于策划的।
ব্যাখ্যা:
এই আয়াতে আল্লাহ রাসূল (সা.)-কে সান্ত্বনা দিয়েছেন যে, কাফিররা তাঁর বিরুদ্ধে চক্রান্ত করছিল, কিন্তু আল্লাহ তাদের চক্রান্ত ব্যর্থ করে দিয়েছেন। আল্লাহ অর্থাৎ তিনি সবচেয়ে ভালো পরিকল্পনাকারী।
সূরা আনফাল আয়াত ১৭
আয়াত:
فَلَمْ تَقْتُلُوهُمْ وَلَٰكِنَّ اللَّهَ قَتَلَهُمْ ۚ وَمَا رَمَيْتَ إِذْ رَمَيْتَ وَلَٰكِنَّ اللَّهَ رَمَىٰ ۚ وَلِيُبْلِيَ الْمُؤْمِنِينَ مِنْهُ بَلَاءً حَسَنًا ۚ إِنَّ اللَّهَ سَمِيعٌ عَلِيمٌ
অর্থ:
অতএব, তোমরা তাদেরকে হত্যা করনি, বরং আল্লাহই তাদেরকে হত্যা করেছেন। আর যখন তুমি নিক্ষেপ করেছ, তখন তুমি নিক্ষেপ করনি, বরং আল্লাহই নিক্ষেপ করেছেন। আর তিনি মুমিনদেরকে তাঁর পক্ষ থেকে উত্তম পরীক্ষায় ফেলেছেন। নিশ্চয় আল্লাহ সর্বশ্রোতা, সর্বজ্ঞ।
ব্যাখ্যা:
এই আয়াতে আল্লাহ বলেছেন যে, বদরের যুদ্ধে মুসলিমরা শত্রুদের হত্যা করেনি, বরং আল্লাহই তাদের হত্যা করেছেন। রাসূল (সা.)-এর নিক্ষেপও আল্লাহর পক্ষ থেকে হয়েছিল। এটি মুমিনদের জন্য একটি উত্তম পরীক্ষা ছিল। আল্লাহ সব শুনেন ও জানেন।
এই আয়াতগুলো মুমিনদের জন্য গুরুত্বপূর্ণ শিক্ষা ও নির্দেশনা বহন করে।