আমার লেখা কিছু সংজ্ঞা
।। নাসীমুল বারী।।
কখনো কখনো কোনো ভাবনা এসে মনের দুয়ারে কড়া নেড়ে বলে, এটা কী? ওটা কী? ভাবনার সে জ্বালাতন থেকে বাঁচতে আমিও দিয়ে দেই তার জবাব। ওমা একি! সে জবাব যে একটা সংজ্ঞা হয়ে গেল! না, না আমি কোনো সংজ্ঞাবিশারদ নই- শুধু মনের ভাবনার জবাব দিতেই ওগুলো জন্মেছে। তারপর নিজের ওয়ালেও পোস্ট করেছি। পরবর্তীতে এসব সংজ্ঞার প্রায় সবগুলোই আমার প্রবন্ধে বা গল্পে কোনো না কোনোভাবে ব্যবহার করেছি।
১. সংজ্ঞার সংজ্ঞা কী?
বিষয়, বস্তু বা চেতনার লাক্ষণিক পরিচিতিকে শৃঙ্ক্ষলিত ধারায় আখ্যায়িত করাটাই সংজ্ঞা।
■ সামাজিক বিষয়াবলির সংজ্ঞা
°°°°°°°°°°°°°°°°°°°°°°°°°°
২. রাজনীতির সংজ্ঞা কী?
মানুষের অধিকার বিষয়ক চেতনার প্রয়োগিক উপস্থাপনই রাজনীতি।
৩. গণতন্ত্রের সংজ্ঞা কী?
নিজের চিন্তা ও চেতনায় সমাজের বৃহত্তর কল্যাণে যে কোনো সিদ্ধান্ত গ্রহণের উপযুক্ততাই গণতন্ত্র।
৪. মূল্যবোধের সংজ্ঞা কী?
নিজের চিন্তা বোধ চেতনার সাথে ধারণ করা সামজিক ও রাষ্ট্রিয় পরিবেশের সমন্বিত ও সময়গত প্রকাশই মূল্যবোধ।
৫. সুশাসনের সংজ্ঞা কী?
নাগরিক অধিকারের প্রত্যয়ে সুষ্ঠু, স্বচ্ছ, জবাবদিহিতায় রাষ্ট্র ব্যবস্থাপনা গড়ে তোলার শৃঙ্খলিত ও কার্যকরি পদক্ষেপই সুশাসন।
৬. নৈতিকতার সংজ্ঞা কী?
দায়িত্ববোধের চেতনায় কল্যাণকর মানসিক ক্রিয়ার কার্যকর প্রকাশটাই নৈতিকতা।
৭. ঔচিত্যবোধের সংজ্ঞা কী?
সামাজিক অস্তিত্বে বোধের ইতিবাচক-নেতিবাচকের উপযোগিতা, ন্যায্যতা নিরূপণ করার মতো মানুষের মনের অবস্থানই ঔচিত্য।
৮. বিদ্রোহের সংজ্ঞা কী?
শাষিতের বঞ্চনার বিরুদ্ধে শোষিত, নির্যাতিত, নিষ্পেষিত মানবতার আত্মাধিকারের লক্ষ্যে প্রতিবাদ করাই বিদ্রোহ।
৯. বিচার-এর সংজ্ঞা কী?
পারস্পরিক বৈষম্য নিরসনে তৃতীয় পক্ষের সুশীল চৈতনিক অবস্থানে কর্মযোগের যথার্থতা নিরূপণই বিচার।
আরও পড়তে পারেন-– সৃজনশীল লেখার নিয়ম-আঙ্গিক ধারা-সাহিত্যের ধারা-প্রমিত বাংলা ভাষার ব্যাকরণ
রূপতত্ত্বের আলোচ্য বিষয় – প্রমিত বাংলা ভাষার ব্যাকরণ-নাসীমুল বারী
■ সাহিত্য বিষয়ক সংজ্ঞা
°°°°°°°°°°°°°°°°°°°
১০. সাহিত্যের সংজ্ঞা কী?
মনের মাঝে বিরাজ করা ভাবনাগুলোকে প্রকাশ করার ভাষাকৌশলই সাহিত্য।
১১. গদ্যসাহিত্যের সংজ্ঞা কী?
স্বাভাবিক কথপোকথনের ধারায় মনের ভাবনাগুলোর সাহিত্য প্রকাশই গদ্যসাহিত্য।
১২. পদ্যসাহিত্যের সংজ্ঞা কী?
মনের ভাবনার কথপোকথন ছন্দ-মিলের সাহিত্য প্রকাশই পদ্যসাহিত্য।
১৩. ছড়ার সংজ্ঞা কী?
স্বতঃস্ফূর্ত অনুভবে ছোট্ট ছন্দ-তালের দোলই ছড়া।
১৪. কবিতার সংজ্ঞা কী?
মানস অনুভবের বিমূর্ততা শব্দের কারুকাজে প্রকাশ করাই কবিতা।
১৫. ছোটগল্পের সংজ্ঞা কী?
অনুভবে গড়ে উঠা অল্পকথার কল্পচিত্রের সাহিত্যরূপই ছোটগল্প।
১৬. অণুগল্পের সংজ্ঞা কী?
অল্পকথায় সাহিত্যরূপের বিমূর্ত নির্যাসই অণুগল্প।
১৭. উপন্যাসের সংজ্ঞা কী ?
বৃহত্তর পটভূমিতে চরিত্র-উপচরিত্রের সম্মিলনে জীবনের দ্বন্দ্ব-সংঘাত, আনন্দ-বেদনা, রাগ-অনুরাগ, প্রেম-বিরহ, দৈনন্দিন জীবনযাত্রা, সমাজ, প্রথা, ধর্ম ইত্যাদির সাহিত্যশৈলি দর্শনচেতনিক মানসচিত্রের প্রকাশই উপন্যাস।
১৮. আখ্যানভাগের সংজ্ঞা কী?
মূলকাহিনী এবং পরম্পরা উপ-কাহিনীর সমন্বয়ে গড়া বিস্তৃত সাহিত্য উপাদান উপন্যাসের কাহিনীসমগ্রই আখ্যানভাগ বা Plot.
১৯. প্রবন্ধের সংজ্ঞা কী?
আত্মযুক্তি ও দর্শনের মিশেলে লেখা চিন্তাশীল সাহিত্য সত্তার প্রকাশই প্রবন্ধ।
২০. নিবন্ধের সংজ্ঞা কী?
বর্ণনা-বিবরণে যৌক্তিক প্রকাশের মননশীল সাহিত্যই নিবন্ধ।
২১. নাটকের সংজ্ঞা কী?
প্রয়োগিক মাধ্যমে সাহিত্যকে চলমান ধারা প্রকাশ করাই নাটক।
২২. বানানের সংজ্ঞা কী?
বর্ণকে সাজিয়ে ভাব প্রকাশের উপযোগী শব্দ তৈরির বিধিই বানান।
■ মানসিক বিষয়াবলি
°°°°°°°°°°°°°°°°°°°°°°°°
২৩. আবেগের সংজ্ঞা কী?
বিষয় ভাবনায় অনুভবের চঞ্চলতায় মনের নির্মল অভিব্যক্তিই আবেগ।
২৪. অনুভূতির সংজ্ঞা কী?
মনের বিশেষ ক্ষণের স্নায়ুবিক উপস্থিতিটাই অনুভূতি।
২৫. কল্পনার সংজ্ঞা কী?
অনুভবে জেগে উঠা সত্তাহীন দৃশ্যভাবনাই কল্পনা।
■ বিবিধ বিষয় সংজ্ঞা
°°°°°°°°°°°°°°°
২৬. খেলার সংজ্ঞা কী?
মানসিক দৃঢ়তায় শারীরিক পারদর্শিতার বিনোদনী প্রকাশই খেলা।
==============================
কাব্যকলার মোজেজাই রূপক উপমা।
কবিতা হলো সাহিত্যের নোলকপরা নববধূ।
আরও পড়ুন–
সংগ্রহ করতে পারেন লেখকের চমৎকার একটি গল্পের বই ‘’হঠাৎ দেখা হলো’’