শীতের আমেজ চলে এসেছে। তবে তা উপভোগ এর জন্য সকাল সকাল ঘুম থেকে উঠতে হবে। শীতের সকাল হাল্কা কুয়াশায় মুখরিত চারপাশ। কুয়াশা-কে উপেক্ষা করে উঁকি দিচ্ছে সূর্য, ধানের ডগায় শিশিরের ছোঁয়া মুগ্ধতা ছড়িয়ে দিচ্ছে মনে প্রানে। শীতের সকাল অনুচ্ছেদ শীতের কবিতাসহ তুলে ধরা হলো আজকের আর্টিকেলে আশা করি আপনাদের ভালো লাগবে। শীতও শীতের সকাল রচনা
শীতের সকাল অনুচ্ছেদ
আমার একটি মনোমুগ্ধকর শীতের সকাল
একটা সুন্দর শীত শীত সকাল
আজ সকালে যখন ওজু করতে ওঠলাম তখন চারিদিকে শুধু কুয়াশা আর কুয়াশা। মনে হচ্ছিলো যেন মেঘেরা বুঝি নেমে এসেছে আমাদের ওঠানে….
ময়মনসিংহ শহরে হাড় কাপানো শীতের ঘ্রাণ পাওয়া খুব দুর্লভ বিষয়! ধারণাকে পাল্টে দিয়ে কত সুন্দর একটা সকাল উপহার দিলেন সৃষ্টিকর্তা।
শরীর ক্লান্ত থাকলে বা মন খারাপ থাকলে শীতল বাতাস শরীরে লাগালে শরীর ও মন দুটোই ভালো হয়ে যায়।এরকম শীতল বাতাসের সাথে সকাল শুরু হলে মন ভালো না রাখার অবকাশ নেই
ছোটবেলায় পরীক্ষার খাতায় যখন শীতের সকাল রচনা লিখতে হত তখন বানিয়ে বানিয়ে কত কিছুই না লিখতাম। সাধারণত শীতের সকাল মানে আমার চোখের সামনে ভেসে উঠে গ্রামের শীতের সকাল।ছোটবেলা থেকে আমার বেড়ে উঠা গ্রামে এখন হয়ত পড়ার শোনার সূত্রে শহরে থাকা হয়। শীতের দিনে সকালে উঠে সবাই মিলে আগুন তাপানো তাছাড়া খেজুরের রস আর ভাপা পিঠা খাবার জন্য বায়না করতাম আম্মার কাছে। প্রতিদিন তো পিঠা বানিয়ে দিত না কিন্তু মাঝে মাঝে দিতো।
তবে এবার ভাপা নয় খেলুম পেয়াজ মরিচ ভর্তা দিয়ে মরিচের পিঠা ও গুডা পিঠা।
ধন্যবাদ আম্মাকে, একটি শীতের সকালকে আরো সুন্দর করে তোলার জন্য।।
সবাইকে শীতের পিঠা খাওয়ার দাওয়াত রইলো।
আরও পড়তে পারেন–বাছাইকৃত সেরা বন্ধু নিয়ে স্ট্যাটাস, ক্যাপশন, উক্তি, ছন্দ ও কবিতা
একটি শীতের সকাল
ভোর ছ’টা! ৷কনকনে ঠান্ডায় আড়ষ্ট,তাতে কি!
ক্যামেরা হাতে রাস্তায় নেমে হাঁটা দিলাম। পেছনে ভেঁপু বাজছে।
” চল্ একটা জিনিস দেখবি?”
চোখ বন্ধ করে উঠে পড়লাম। রু বললো,”আমি জানিতো তোকে কিভাবে বাগে আনতে হয় হা হা হা ”
আমরা চারজন । সাথে ড্রাইভার।ব্যস!
অনন্ত যুগ পর আজ আবার মনেমনে পড়ছি ছোটবেলার মুখস্থ বাংলা রচনা ,” একটি শীতের সকাল”!
ইশশ! কুয়াশাচাদরে ঢাকা মিষ্টি ভোরের হাওয়াটা নস্টালজিক করে দিল যে বড়ো! শৈশবের স্মৃতিময় মূহুর্তগুলোর পদচারণায় মুখর সবাই । গল্পে গল্পে খেজুর রসে গরম গরম ভাপা পিঠাটা সত্যিই বড় মিস করছি ।
এই ছোট ছোট সুখগুলোকে লালন করে বেঁচে থাকতে ভাল লাগে।
শীতের নিমন্ত্রণ
বোরহান মেহেদী
ভোরের বাতাস কুয়াশায় মোড়া,
সীমান্তে সূর্য লুকিয়ে গ্রাম ছাড়া।
শীত আসছে হিম ওমের নেশায়,
মুগ্ধ হরিৎ খেলে চোখের কুলায়।
গায়ের ওপাড় রঙ্গের লুকোচুরি,
রবির রাগে আলোর পরাণ ধরি।
মন চায় মিশে যাই মাঠের পথে,
মিতালী গড়ি ওই ঘাসের সাথে।
টানজলে শাপলা ফোটা সকাল,
দখিনা ত্বরে ঘ্রাণের বায়ু মাতাল।
শিশির স্পর্শে ধানের শীষ হাসে,
বাঁচার ভাষা, স্বপ্ন ছড়িয়ে ভাসে।
দিন বদলের সুখে ঋতু বদলায়,
নতুন স্বাদ মজে প্রাণ আঙ্গিনায়।
দুঃখ ঝেরে আনন্দ জড়ায় গাও,
ঘরবাহিরে এটাই জীবনের রাও।
শীতের হাতে বসন্তের আমন্ত্রণ,
উৎসবে মাতে দেশ মায়ের মন।
শীতের সকাল রচনা
একটি শীতের সকাল নামে পরীক্ষায় রচনা অাসতো। অামরা মুখস্ত করে যাওয়া রচনার টটস্ত রুপ খাতায় লিখে অাসতাম। প্যারা সংখ্যা বৃদ্ধি করে বেশি মার্কস পাওয়ার চেষ্টা করতাম।অাসুন এবার সত্যিকারের শীতের সকালের গল্প লিখি।জীবন থেকে নেওয়া গল্প।কুয়াশার চাদরে মোড়ানো একটি সকালের গল্প।
একটি শীতের সকাল অনেক ভালোলাগার অনেক ভালোবাসার ছিলো। কুয়াশার চাদরে ঢাকা মেঠো পথ ধরে কাঁধে ভার নিয়ে খেজুর রসওয়ালা অাসতো। দুলে দুলে। গ্রাম বাংলার এক অকৃত্রিম দৃশ্য এঁকে।রসওয়ালাকে কেউ বিশ্বাস করতে চাইতো না। সবার মনে হতো সে রসে পানি মিশিয়েছে। খালের স্বচ্ছ পানি। যা খেজুর রসের সাথে মিশে একাকার হয়ে গেছে। তবুও অনেকে কিনতো। একটু অাশায়, অনেক ভালোবাসায়, শীতের বিশেষ পানীয় বলে।
গাছেদের ভীড়ে পূব অাকাশে যখন রঙিন সূর্যটা মৃদু মিষ্টি অালোর অাভা নিয়ে জেগে উঠতো তখন ভোর হতো। একটি মিষ্টি ভোর।একটি নতুন ভোর।
পুরনো খড়কুটো দিয়ে বাড়ির অদূরে অথবা অাঙিনায় অাগুন পোহানোর ব্যবস্তা করা হতো।ছেলে বুড়োরা চারদিকে গোল হয়ে বসে বসে অাগুন পোহাতো।মহিলারা অালাদাভাবে ঘরের অাঙিনায় বা উঠোনের কোণে অাগুন পোহানোর ব্যবস্থা করতো।বাড়ির বুড়ো-বুড়ির কাছে থাকতো মাটিয়া পাতিল যাতে কিছু দীর্ঘস্থায়ী কয়লা দিয়ে পায়ের নিচে রেখে অারামচে অাগুন পোহাতো। যখন কোনও নতুন সদস্য অাগুন পোহাতে অাসতো তখন তার এন্টি হওয়ার জন্য সুন্দর একটা নিয়ম ছিলো। তাকে কিছু খড়কুটো অানতে হবে। তা না হলে তাকে অাগুন পোহাতে দিলে অন্যরা নাখোশ হতো।সবাই তার দিকে রাগান্বিত দৃষ্টিতে তাকিয়ে থাকতো।
শীতকালে সাধারণত গ্রামের সব পুকুরে গোসল করা হতো না।অবশ্য শীতকাল অাসলে গোসলধারীর সংখ্যা অর্ধেকে লোপ পেত।গাঁয়ের যে পুকুরের চারিপাশে গাছ থাকতো না সে পুকুরে সাধারণত সূর্যের অালো সরাসরি পড়তো।ফলে সে পুকুরের পানি অন্যন্য পুকুরের পানির তুলনায় গরম থাকতো। লোকজন দু তিন বাড়ি ফেলে সে পুকুরে এসে গোসল করতো।গরমকালে পানি থেকে ওঠানো যায় না এমন শিশুদের শীতকালে এসে পুকুরের অাশেপাশেও খুঁজে পাওয়া যেত না। দু তিন দিন পর মা-বাবারা ধরে এনে উত্তম-মাধ্যম দিয়ে গোসল করাতো। (অামিও হয়তোবা এর থেকে মুক্ত ছিলাম না ) চোখে-মুখে থাকতো অশ্রু এবং ভয়।তীব্র ঠান্ডা পানির কনকনে ভয়!
শীতের সকাল অনুচ্ছেদ
শীতের সকাল
এম.এইচ পলক
কুয়াশার চাদরে ঢাকা গ্রাম
সুখের জোয়ারে মেতেছে মন
উনুনের পাশে বসে মায়ের হাতে বানানো
শীতের পিঠা কত স্নেহ কতো ভালবাসা
গাছে গাছে ডাকে ধান শালিকের ছা
উঠোনের মিষ্টি রোদে নাচে কোকিল টিয়া
মন মাতানো উল্লাসে হিয়া
হিম শীতল পরশ ছোয়া
হাড় কাঁপানো কনকনে ঠান্ডা
শীতের সকাল শীতের সকাল মনে হয়েছে আজ
আরও পড়তে পারেন–শীতের কবিতা। চমৎকার ৫টি শীতের ছড়া/কবিতা
শীত
চারিদিকে শীতের আমেজ। পাতা ঝরা, ধোঁয়া উঠা ভাপা পিঠার ঘ্রাণ। সকালে ঘুম থেকে উঠতে আলস্যে। একটা কাক কুয়াশায় জবুথবু হয়ে বসে আছে নারিকেল গাছের মাথায়। আমাদের বারান্দার কর্ণারে ঝুলছে একটি নয়নতারা গাছ। গুনে গুনে চারটা ফুল ফুটেছে। গাছটাও কুয়াশা থেকে আড়াল চাইছে।
আমাদের বাসায় সবচেয়ে অবহেলিত এই নয়নতারা গাছটা। রোদে শুকিয়ে আধমরা হয়ে গেলে মনে পড়ে, ‘ইশ্ গাছটাকে ছায়াতে আনা হয়নি। ‘
মাটি শুকিয়ে খরা দেখা গেলে মনে হয়, “এইরে যা পানি দিতে এক্কেবারে ভুলে-ই গেলাম।”
তারপরও আমাদের মতো, বাগান করার স্বপ্নে মগ্ন থাকা, পরীক্ষা খাতায় আমার হোবি বাগান করা। রচনা লিখে আসা মানুষগুলোর জন্য, অনন্ত গাছটা এই যাত্রায় বেঁচে আছে৷
আমি নীরব মানুষ। চোখ ভর্তি স্বপ্নের গিজগিজ। বারান্দায় একটা চেয়ার পেতে ওই দূরের কাকটার মতো জবুথবু হয়ে বসি। গায়ে মোটা চাদর পেঁচিয়ে কুয়াশা দেখি। শহরে কুয়াশা চেয়ে গেছে, দূরে কোন কিছু দেখার বৃথা চেষ্টা করি।
আম্মা আড়মোড়া ভেঙে ঘুম থেকে উঠে জিজ্ঞেস করেন, “এত ভোরে কি দেখিস?’
“কুয়াশা দেখি আম্মা। দেখবে?”
আম্মার ভুরু কুঁচকে যায়, তিনি ভাবেন কুয়াশা আবার দেখার জিনিস নাকি?
আমি ভাবি কুয়াশাও দেখার মতো। এর আলাদা সৌন্দর্য আছে, কিভাবে ঘাসের উপর শিশির জমে থাকে! কিভাবে পুরো শহরের প্রতিটি দালান চেয়ে যায় কুয়াশায়, কিভাবে লোকেরা কুয়াশার অন্ধকারের চাদরে মুড়ি দিয়ে খেজুরের রস সংগ্রহ করে।
সবকিছুর-ই আলাদা আলাদা সৌন্দর্য আছে। সবকিছু চোখে দেখা যায় না, অনুভব করতে হয়!
শীতের সকাল অনুচ্ছেদ
শীতের শিহরণ
মোঃ হারুন অর রশিদ প্রধান
তনু – মনে শীত, শিহরণ জাগে
দিয়ে দাও বন্ধু শীত বস্ত্র আগে
অযাথায় ঘর কোণে জামা স্তুুপ
অসহায় -অনাহারে দাও রূপ।
দেহে -মনে জ্বলে রাখ সুখ ধুপ
দরদী হ’বন্ধু, কান্না – করো চুপ
ওমর ওসমানের – মতে খুঁজো
তুমি চিরযৌবনা’হ বীর সাজো।
প্রভু দেখে নিচ্ছি —
কারে করো খোঁজ
কার সাথে আড্ডা —
কার সাথে ভোজ।
হিসাব কষতে হবেই তোমায় —
নয়তে হবে শুধু শুধুই ক্ষয়।