রিজিক মানে কী
রিজিক(রিজক) আরবি শব্দ। -এর অর্থ: জীবনসামগ্রী, জীবন যাপনের উপায় উপকরণ। রিযিক বৃদ্ধির দোয়া
রিজিক বলতে কী বুঝায়?
রিজিক মানে কেবল অর্থকড়ি নয় , তোমার বাবা মা তোমার রিজিক। তোমার স্ত্রী তোমার রিজিক। তোমার সন্তান-সন্ততি তোমার রিজিক। তোমার সুস্বাস্থ্য তোমার রিজিক। তোমার দৃষটিশক্তি তোমার রিজিক। তোমার শ্রবণশক্তি তোমার রিজিক। তোমার চলনশক্তি তোমার রিজিক। তোমার পোশাকআশাক তোমার রিজিক। তোমার বাসস্থান তোমার রিজিক। তোমার আত্মীয়সজন তোমার রিজিক। তোমার বেঁচে থাকার সমস্ত উপায়-উপকরণ । তোমার জীবন ধারণের সমস্ত উপায় উপকরণ তোমার জীবন পরিচালনার সমস্ত উপায়- উপকরণ তোমার রিজিক। তোমার আনন্দিত হবার, সুখী হবার যতো উপায় উপকরণ-তোমাকে দেয়া হয়েছে সেগুলো সবই তোমার রিজিক। —আবদুস শহীদ নাসিম
রিযিক বৃদ্ধির দোয়া
দ্রুত রিযিক বৃদ্ধির আমল (বড়োদের পরীক্ষিত আমল)
জুমুয়ার দিন বাদ যোহর থেকে আসর পর্যন্ত সময়ের মাঝে নীচের আমলটি করতে হবে- ক) বিসমিল্লাহসহ ১০০ বার সূরা ইখলাস।
খ) ১০০ বার এই দুয়া-
اللّٰهُمَّ صَلِّ وَ سَلِّمْ وَ بَارِكْ عَلَیٰ سَيِّدِنَا مُحَمَّدٍ وأٰلِهِ كَمَا لَا نِهَايَةَ لِكَمَالِ اللّٰهِ وَكَمَا يَلِيْقُ بِكَمَالِهِ.
গ) নীচের দুয়াটি ৭০ বার –
اللّٰهُمَّ أَغْنِنِيْ بِحَلَالِكَ عَنْ حَرَامِكَ وَ بِفَضْلِكَ عَنْ مَّنْ سِوَاكَ.
পড়ে দুয়া করবেন। শর্ত হলো, নীচের বিষয়গুলো মাথায় রাখবেন-
১) আল্লাহই রিযিকদাতা। তিনি ছাড়া কেউ রিযিক দেয় না। এই বিশ্বাস রেখে আমলটি করা।
২) গোনাহ না করা। কেননা গোনাহ মানুষের রিযিকের দুয়ার বন্ধ করে দেয়।
৩) রিযিকের হালাল মাধ্যম অন্বেষণ করা ও লেগে থাকা। বসে না থাকা।
রিযিক নিয়ে আয়াত
রিযিক বৃদ্ধির জন্য সব চেয়ে বড় আমল হচ্ছে:
প্রথমত: আল্লাহর ভয় বা তাকওয়া। যে ব্যক্তি তাকওয়া অবলম্বন করবে তথা সকল ফরয-ওয়াজিব সম্পাদন করবে এবং সকল হারাম থেকে বেঁচে থাকবে, তাকে আল্লাহ্ রিযিক দান করবেন। আল্লাহ্ তা’আলা বলেন,
وَمَنْ يَتَّقِ اللَّهَ يَجْعَلْ لَهُ مَخْرَجًا وَيَرْزُقْهُ مِنْ حَيْثُ لَا يَحْتَسِبُ
“যে ব্যক্তি আল্লাহকে ভয় করে চলবে আল্লাহ তার জন্য উপায় বের করে দিবেন এবং তাকে কল্পনাতীত উপায় থেকে রিযিক দান করবেন”। (সূরা ত্বালাক: ২-৩)
সুতরাং আল্লাহর ভয় জীবনের সকল ক্ষেত্রে যদি আপনি অবলম্বন করেন তাহলে আল্লাহ্ আপনাকে রিযিক দান করবেন ।
দ্বিতীয়ত: তাওবা করা ও ইস্তেগফার পাঠ করা। খুব বেশি বেশি আস্তাগফিরুল্লাহ পড়লে এর মাধ্যমে আল্লাহ রিযিকের ব্যবস্থা করে দিবেন। আল্লাহ্ তা’আলা বলেন,
اسْتَغْفِرُوا رَبَّكُمْ إِنَّهُ كَانَ غَفَّارًا يُرْسِلِ السَّمَاءَ عَلَيْكُمْ مِدْرَارًا وَيُمْدِدْكُمْ بِأَمْوَالٍ وَبَنِينَ وَيَجْعَلْ لَكُمْ جَنَّاتٍ وَيَجْعَلْ لَكُمْ أَنْهَارًا
“তোমরা তোমাদের পালনকর্তার নিকট ক্ষমা প্রার্থনা করো, নিশ্চয় তিনি ক্ষমাশীল। তিনি আকাশ থেকে মুষলধারে উপকারী বৃষ্টি দান করবেন, তোমাদেরকে প্রচুর ধন-সম্পদ ও সন্তান দান করবেন, আর তোমাদের যে ফসলের বাগিচা রয়েছে সেটাকে তিনি সমৃদ্ধ করবেন এবং তোমাদের নদী গুলোকে প্রবাহিত রাখবেন”। (সূরা নূহ: ১০-১২)
অতএব বুঝা গেলো বেশি বেশি ইস্তেগফার করলে রিযিক বৃদ্ধি পায়।
রিযিক সম্পর্কে হাদিস
আল্লাহর নবী (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেন,
যে ব্যক্তি বেশি বেশি ইস্তেগফার পাঠ করবে আল্লাহ্ তার সকল দুশ্চিন্তা দূর করে দিবেন। তার সংকীর্ণ অবস্থাকে প্রশস্ততা দিয়ে পরিবর্তন করে দিবেন। এবং তাকে কল্পনাতীত উপায়ে রিযিক দান করবেন। (আবু দাউদ ও ইবনে মাজাহ, সনদ যঈফ)
তৃতীয়ত: দান করলে রিযিক বৃদ্ধি পায়। আল্লাহর নবী (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেন,
ماَ نَقَصَ مَالُ عَبْدٍ مِنْ صَدَقَةٍ
সাদাকা করলে বান্দার সম্পদ কমে না। (মুসলিম)
অন্য এক হাদিসে আছে, নবী (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেন, যারা দান করে তাদের জন্য ফেরেশতা দোয়া করে এবং বলে,
اللَّهُمَّ أَعْطِ مُنْفِقًا خَلَفًا
“হে আল্লাহ্ তুমি তার এই দানের বিনিময়ে তার সম্পদ বৃদ্ধি করে দাও”। (বুখারী ও মুসলিম)
চতুর্থত: আত্মীয়দের সাথে সুসম্পর্ক বজায় রাখলেও রিযিক বৃদ্ধি পায়। আল্লাহর নবী (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেন,
مَنْ سَرَّهُ أَنْ يُبْسَطَ لَهُ رِزْقُهُ ، أَوْ يُنْسَأَ لَهُ فِي أَثَرِهِ فَلْيَصِلْ رَحِمَهُ
যে ব্যক্তি কামনা করে যে তার হায়াত বাড়িয়ে দেয়া হোক এবং রিযিক বৃদ্ধি করা হোক, তাহলে সে যেনো আত্মীয়তার সম্পর্ক বজায় রেখে চলে। (সহীহ বুখারী)
রিযিক বৃদ্ধির দোয়া
পঞ্চমত: দুয়া: সর্বোপরি আল্লাহর কাছে দোয়া করবেন, হে আল্লাহ্ আমার রিযিক বাড়িয়ে দিন। আল্লাহ্ তা’আলা আমাদেরকে দোয়া শিখিয়ে দিয়েছেন,
رَبَّنَا آتِنَا فِي الدُّنْيَا حَسَنَةً وَفِي الْآخِرَةِ حَسَنَةً وَقِنَا عَذَابَ النَّارِ
অর্থ: হে আমার রব, আপনি আমাদেরকে দুনিয়াতে কল্যাণ দান করুন, এবং পরকালেও কল্যাণ দান করুন এবং জাহান্নাম থেকে রক্ষা করুন ।
রিযিক সংখ্যায় বৃদ্ধি পাওয়াটা জরুরী নয়; বরং আল্লাহ্ যে রিযিক দিবেন তাতে বরকত হওয়াটা জরুরী। এই জন্য আল্লাহর কাছে সর্বদা বরকত কামনা করতে হবে। আল্লাহর নবী (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) এই দুয়াটি পড়তেন,
اللَّهُمَّ إنِّيْ أسْألُكَ عِلْماً ناَفِعاً وَرِزْقاً طَيِّباً وَعَمَلاً مُتَقَبَّلاً
“হে আল্লাহ্ আমি প্রার্থনা করছি তোমার কাছে উপকারী জ্ঞান, আরো প্রার্থনা করছি পবিত্র রিযিক এবং এমন আমল যা তুমি কবুল করবে”।
অতএব রিযিক হলেই হবে না সেটা যেনো পবিত্র হয় তা আল্লাহর কাছে চাইতে হবে।
সর্বোপরি যেটুকু রিযিক আল্লাহ্ দিবেন তাতে যদি বান্দা সন্তুষ্ট হয়, তাহলে সেটা তার জন্য অনেক বড় প্রাপ্তি। কেননা অনেক ধনী মানুষ আছে, যাদের অনেক সম্পদ রয়েছে কিন্তু তারা সন্তুষ্ট না তৃপ্ত না। তাদের লোভ লালসা এতো বেশি যে যতই পায় ততই চায়। ফলে ঐ রিযিক তাদের কোন উপকারে আসে না।
হে আল্লাহ আপনি আমাদেরকে কল্যাণময় পবিত্র ও উপকারী রিযিক দান করুন এবং তাতে বরকত দিন। আমীন
====================
উত্তর প্রদানে:
আবদুল্লাহ আল কাফী বিন আবদুল জলিল
দাঈ, দক্ষিণ জেদ্দা ইসলামী দাওয়া সেন্টার
রিযিকের স্তর
রিযিকঃ
রিযিকেরর সর্বনিম্ন স্তর হচ্ছেঃ টাকা, পয়সা, অর্থ এবং সম্পদ।
রিযিক এর সর্বোচ্চ স্তর হচ্ছেঃ শারীরিক এবং মানসিক সুস্থতা।
রিযিকের সর্বোত্তম স্তর হচ্ছেঃ পুণ্যবান স্ত্রী এবং পরিশুদ্ধ নেক সন্তান এবং
রিযিক এর পরিপূর্ণ স্তর হচ্ছেঃ মহান আল্লাহর সন্তুষ্টি।
রিযিক খুব গভীর একটি বিষয়, যদি আমরা তা বুঝতে পারি।
আমি পুরো জীবনে কত টাকা আয় করবো সেটা লিখিত, কে আমার জীবনসঙ্গী হবে সেটা লিখিত, কবে কোথায় মারা যাবো সেটাও লিখিত এবং কতটা খাবার ও পানীয় গ্রহণ করবো তাও লিখিত বা নির্দিষ্ট।
আশ্চর্যের ব্যাপার হচ্ছে, আমি কতগুলো দানা বা ভাত দুনিয়াতে খেয়ে তারপর মারা যাবো সেটা লিখিত। একটি দানাও কম না এবং একটিও বেশি না।
ধরুন এটা লিখিত যে আমি সারাজীবনে এক কোটি টাকা আয় করবো, এই সিদ্ধান্ত আল্লাহ্ তা’আলা নিয়েছেন।
কিন্তু, আমি হালাল উপায়ে আয় করবো না হারাম উপায়ে আয় করবো সেই সিদ্ধান্ত একান্তই আমার।
যদি ধৈর্য ধারণ করি, আল্লাহ্ তা’আলার কাছে চাই, তাহলে হালাল উপায়ে ওই এক কোটি টাকা আয় করেই আমি মারা যাবো। আর হারাম উপায়ে হলেও ওই এক কোটিই… নাথিং মোর, নাথিং লেস!
আমি যেই ফলটি আজকে টেকনাফ বসে খাচ্ছি, সেটা হয়ত ইতালি কিংবা থাইল্যান্ড থেকে ইমপোর্ট করা। ওই গাছে যখন মুকুল ধরেছে তখনই নির্ধারিত হয়েছে যে, সেটি আমার কাছে পৌঁছাবে। এর মধ্যে কত পাখি ওই ফলের উপর বসেছে, কত মানুষ এই ফলটি পাড়তে গেছে, দোকানে অনেকে এই ফলটি নেড়েচেড়ে রেখে গেছে, পছন্দ হয় নি বা কিনেনি। এই সব ঘটনার কারণ একটাই, ফলটি আমার রিযিকে লিখিত। যতক্ষণ না আমি কিনতে যাচ্ছি, ততক্ষণ সেটা ওখানেই থাকবে।
এর মধ্যে আমি মারা যেতে পারতাম, অন্য কোথাও চলে যেতে পারতাম, কিন্তু না! রিযিকে যেহেতু লিখিত আমি এই ফলটি না খেয়ে মারা যাবো না।
রিযিক জিনিসটা এতোটাই শক্তিশালী!
কিংবা যেই আত্মীয় কিংবা বন্ধু-বান্ধব আমার বাসায় আসছে, সে আসলে আমার খাবার খাচ্ছে না। এটা তারই রিযিক, শুধুমাত্র আল্লাহ্ তা’ইলা আমার মাধ্যমে তার কাছে পৌঁছে দিচ্ছেন। হতে পারে এর মধ্যে আমাদের জন্য মঙ্গল রয়েছে। আলহামদুলিল্লাহ!
কেউ কারওটা খাচ্ছে না, যে যার রিযিকের ভাগই খাচ্ছেন।
আমরা হালাল না হারাম উপায়ে খাচ্ছি, সেটা নির্ভর করছে আমি আল্লাহ্ তা’আলার উপর কতটুকু তাওয়াক্কাল আছি, কতটুকু ভরসা করে আছি। কেননা,
আরও পড়তে পারেন–যে কারণে মধ্যবিত্তরা সর্বস্বান্ত হন
রিযিক বৃদ্ধির আমল
আল্লাহ তা’আলা বলেনঃ
——-“দুনিয়ায় বিচরণকারী এমন কোনো প্রাণী নেই, যার রিযিকের দায়িত্ব আল্লাহর ওপর নেই। তাদের স্থায়ী এবং অস্থায়ী অবস্থানস্থল সম্পর্কে তিনি অবহিত। সব কিছুই একটি সুস্পষ্ট কিতাবে লেখা আছে।”
—–(সুরা হুদ : আয়াত ৬)
আল্লাহ তা’আলা অন্যত্র বলেনঃ
——-“যে আল্লাহকে ভয় করে, আল্লাহ তার জন্য কোনো না কোনো পথ বের করে দেবেন। আর তাকে (এমন উৎস থেকে) রিযিক দেবেন, যা সে ধারণাও করতে পারবে না।”
—–(সুরা ত্বালাক : আয়াত ২-৩)
মহান আল্লাহ্ তা’আলা আমাদের সঠিক পথ এবং হালাল ও প্রশস্ত কামাই রোজগার ও রিযিক এর ব্যবস্থা করে দিন এবং সকল প্রকার হারাম কামাই রোজগার ও রিযিক থেকে হিফাযত করুন এবং আমাদের সবাইকে ক্ষমা করুন, এবং হিফাযত করুন
মানুষ যে বিষয়গুলো নিয়ে হতাশ হয় সেগুলোর তালিকা করলে সবার উপরে সম্ভবত “রিযিক” এর অবস্থান। যদিও রিযিক শুধু চাকুরী, ব্যবসা কিংবা আয়ের একটা মাধ্যম বুঝায় না। ব্যাপক অর্থবোধক শব্দ এটি। আমরা যদি এই সাধারণ অর্থটাই ধরি তবে সম্ভবত এগুলোর জন্যই মানুষ বেশী হতাশ হয়, পেরেশানীতে থাকে। কিন্তু বাস্তবতা হলো এ বিষয়গুলোর সামান্যতম অংশও মানুষের হাতে নেই। মানুষ শুধু চেষ্টা করতে পারে, কাজ করতে পারে কিন্তু কতটুকু রিযিক সে পাবে এর পুরো কার্যক্রমটা রাব্বুল আলামিনের কাছে। মানুষের এখানে ০.০০০০১% ও কর্তৃত্ব নেই। বিশ্বাস করুন, আমরা এই বিশ্বাসটাই করতে পারিনা। যার মধ্যে এই বিশ্বাস যত বেশী থাকবে তার জীবনটা তত সহজ হবে, আত্মবিশ্বাস বাড়বে।
কুরআনে রিযিক সম্পর্কে সে আয়াতগুলো আছে সেগুলোতে বারবারই আল্লাহর উপর ভরসা করার, আল্লাহকে ভয় করার কথাগুলো খুব গুরুত্ব সহকারে আলোচনা করা হয়েছে। সূরা তালাকের একদম শুরুর দিকের আয়াতগুলোই যদি উল্লেখ করি,
“যে ব্যক্তিই আল্লাহকে ভয় করে চলবে আল্লাহ তার জন্য কঠিন অবস্থা থেকে রক্ষা করার উপায় সৃষ্টি করে দিবেন। এবং এমন পন্থায় তাকে রিযিক দিবেন যা সে কল্পনাও করতে পারে না। যে আল্লাহর উপর নির্ভর করে আল্লাহ তার জন্য যথেষ্ট। আল্লাহ তার কাজ সম্পন্ন করে থাকেন। আল্লাহ প্রতিটি জিনিষের জন্য একটি মাত্রা ঠিক করে রেখেছেন” (সূরা তালাক, ২-৩)
তার মানে এই নয় যে, আল্লাহর উপর ভরসা করে বসে থাকলেই মান্না-সালওয়ার (হযরত মূসা (আ.) এর সময় বনী ইসরাইলেদের জন্য যে খাবার আল্লাহ প্রেরণ করতেন) মত রিযিক অটোমেটিক বাসায় চলে আসবে। বরং কুরআন আমাদেরকে স্পষ্ট করে বলে যে, চেষ্টা করতে হবে, পরিশ্রম করতে হবে। পরিশ্রম কিংবা চেষ্টা করা সংক্রান্ত আয়াতগুলো পড়লে আমাদের সামনে এটাই ভেসে আসে যে, মানুষকে কাজ, চেষ্টা এবং পরিশ্রম করার জন্যই সৃষ্টি করা হয়েছে (সূরা বালাদের ৪ নম্বর আয়াত দেখুন)। আর এই সব কাজগুলোই ইবাদতের অংশ হবে যখন বিশ্বাস এবং আন্তরিকতা (খুলুুসিয়াত) এখানে যুক্ত হবে।
সুতরাং রিযিক নিয়ে হতাশা কমানোর জন্য দুটি বিষয় গুরুত্বপূর্ণ। ১. আল্লাহর উপর আস্থা ,বিশ্বাস এবং ভরসা বাড়ানো। ২. লেগে থেকে চেষ্টা ও অত্যাধিক পরিশ্রম করে যাওয়া এবং হতাশ না হওয়া। প্রসঙ্গত, মানুষ হিসেবে আমরা খুব তাড়াহুড়ো করি বিশেষত রিযিক প্রসঙ্গে। এখনো হচ্ছেনা, কবে হবে। আর কত ধৈর্য্য ধরবো! এ ধরনের বিষয়গুলো জীবনের নানা পর্যায়ে সামনে আসে। এক্ষেত্রে মাওলানা রুমীর কয়েকটি লাইন আমার খুবই প্রিয়,
“সব কিছুই তার সময়ের অপেক্ষা করে, রিযিক বৃদ্ধির দোয়া
ফুল যেমন তার সময়ের আগে ফুটেনা,
সূর্য্য যেমন তার সময়ের আগে উদীত হয়না,
আর তাই অপেক্ষা করো, তোমার জিনিষ তোমার কাছেই আসবে”