You are currently viewing রাজনীতি কি ? কেন আপনাকে অবশ্যই রাজনীতি করতে হবে- আলানূর হোসাঈন
রাজনীতি কি ?

রাজনীতি কি ? কেন আপনাকে অবশ্যই রাজনীতি করতে হবে- আলানূর হোসাঈন

যারা মনে করেন রাজনীতি না করে ভালো আছি এবং সব কিছুতে রাজনীতী মুক্ত চান তাদের জন্য খুবই গুরত্বপূর্ণ এই পোস্ট !

ණණණණ

রাজনীতি

ණණණණ

রাজনীতির বীপরিত শব্দ হল দুর্নীতী । রাজনীতির মানেই হলো নীতির রাজা। যেসব ব্যাক্তির মাঝে রয়েছে উন্নত চিন্তা , সমাজের কোন অপরাধের সাথে জড়িত নন, ন্যায় পড়ায়ণ, তার কথা এবং কাজের মাধ্যমে কোন ব্যাক্তি কষ্ট পান না, সমাজ সচেতন, পরিবার, সমাজ ও দেশের কল্যাণ নিয়ে ভাবেন, নিজের সাধ্যমতো জণ ক্যাণে কাজ করেন তিনিই হলেন একজন প্রকৃত রাজনীতিপরায়ন কিংবা রাজনীতিবীদ। এইসব গুন যাদের মাঝে নেই তারা আর যাই হোক রাজনৈতিক ব্যাক্তি নন। রাজনৈতিক হতে হলে যে কোন দলের কর্মী, সদস্য বা নেতা হতে হবে এরকম জানা বা ধারনা করা চড়ম ভুল।

যখন কোনও নিন্মবৃত্ত শ্রেণীর লোক কারও অজান্তে কোন সম্পদ আত্মসাৎ করে তখন তাকে বলে চুরি , ঠিক একই কাজ কোনও উচ্চ শ্রেণী বা প্রশাসন শ্রেণীর কেউ করে তখন বলে দূর্নিতী।

একই ভাবে কোন সাধারণ মানুষ সমাজে ন্যায় পরায়ণ , কল্যাণকর কিংবা ইনসাফ , সুবিচার করলে আমরা এক কথায় বলি লোকটি খুব  ভালো , সে ভালো কাজ করেছে।

#ঠিক একই কাজ বা চরিত্র কোনও জনপ্রতিনিধী বা  দায়িত্ব প্রাপ্ত ব্যক্তি করেন তখন বলে রাজনীতী । কেন এই অর্থ প্রয়োগের বিভাজন কাজ তো একটাই ?

#আমরা বেশির ভাগ মানুষ ভুল ব্যাখা করি রাজনীতী মানে দল , ভোট , নির্বাচন ক্ষমতা , মারামারি , জেল , হরতাল ইত্যাদি ইত্যাদি ।।রাজনীতীর মানে কি আসলে তাই ?

#মানুষের মনে এই অর্থ প্রতিষ্ঠার মানে হল অসৎ শাসক বর্গ , ক্ষমতা লিপ্সু গোষ্ঠিরা রাজনীতী শব্দটাকে নিজেদের ব্যক্তিগত হাতিয়ার বানিয়ে নিয়েছে ।,. আর এটাই মানুষ যুগ যুগ দেখে আসছে ,,ফলে এ অর্থই মানুষের মননে প্রতিষ্ঠিত হয়ে আছে।।

#একটি গৃহ থেকে শুরু করে রাষ্ট্র পরিচালনার জন্য কিছু সৎ গুনি সব দিকদিয়ে অন্য সকলের চেয়ে ভালো ব্যক্তির প্রয়োজন হয় । গৃহের প্রধান পরিচালক হলেন বাবা । এখানে ভোটের দরকার নেই , কারন কারো দ্বিমত নেই । বাবার অবর্তমানে বড় ছেলে , কারন সে বেশি অভিজ্ঞ ।

#একটি স্কুলে ক্লাস ক্যাপ্টেন বানাতে গিয়ে দেখলেন ক্যাপ্টেনের গুন পাঁচটি ছেলের মাঝেই আছে , পাঁচ জনই হতে চাচ্ছে এবং এই পাঁচ জনকে ক্লাসের সবাই সমান চোখে দেখে না । এখন আপনি কি ভাবে সিলেক্ট করবেন ?

#আপনাকে অবশ্যই ভোটের মাধ্যমে নির্বাচন করতে হবে , হয় মৌখিক কিংবা ব্যালট । এখানে যদি আপনি সবার মতামত বাদ দিয়ে নিজের খেয়াল খুশিমত কাউকে বানাতেন তখন দুর্নিতী করা হবে, সকলের প্রতি ইনসাফ হবে না কারন সবাই যেগ্য এবং দাবীদার । এভাবে ‍ইউনিয়ন থেকে রাষ্ট্রের সর্বোচ্চ পর্যন্ত প্রতিটি বিভাগে প্রতিনিধি নিয়োগ করা হয় ।

#আপনার ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যানদের এ যাবৎ দেখে আসছেন , তারা ঘুষ খায় , গরিবের সরকারি গম আত্বসাৎ করে , ত্রানের কার্ড তার আত্মীয়ের মাঝে বিতরন করে ! ! আপনি তাই দেখে দু:খ করেন, তাদের গালাগাল করেন, তাদের দূর্নীতিবাজ কিংবা চোর বাটপার বলেন। কিন্তু  আপনি সৎ ন্যায় পরায়ণ , যোগ্য , গুনী খোদাভীরু ব্যাক্তিকে কেন খুজেন না চেয়াম্যানের চেয়ারে বসাতে বা এই গুনগুলো আপনার ভেতর থাকলে কেন আপনি চেষ্টা করেন না সেই চেয়ারে বসে সকল অন্যায়ের অবসান ঘটাতে । আপনি যদি চেষ্টা না করেন অসৎ ব্যক্তিরাই তো বার বার চেয়ারটি দখল করে রাখবে । পরিষদের চেয়ার কখনো খালি  তো থাকবে না বা আপনাকে কেউ সেধে বসতে দেবে না।

#এখন আপনি কোনটা করবেন , অসহায় , বঞ্চিত , অবহেলিত নিযার্তিত মানুষের আত্মাচিৎকারে আত্মতৃপ্তির ঢেকুর তুলবেন ? না কি দূর্বল চিত্তে অন্যায় মেনে নেবেন? নাকি অসৎ জুলুম বাজদের ভোটের সময় ভোট দিয়ে তাদের শক্তি যোগাবেন ? নাকি একজন পরিচালকের গুন অর্জন ও খোদার প্রতি আত্ম সমর্পন করে ঐ চেয়ারে বসার চেষ্টা করবেন? নিজে বসতে না পারলে ভালো লোকদের খুজেঁ তাদের চেয়ারে বসাতে চেষ্ট করবেন?

#আপনি যদি শেষের অপশনটি বেছে নন , তাহলে গুনগুলো থাকার পর আপনাকে সবার সামনে তুলে ধরতে হবে , আপনাকে ভোট যুদ্ধে নামতে হবে ।। যেহেতেু সমাজের নেতৃত্ব দেয় জনপ্রতিনিধরা আর জনপ্রতিনিধি নির্বাচন হয় ভোটের মাধ্যমে । তাই আপনাকে সে চেষ্টাই করতে হবে।

#এখন অবশ্যই বুঝতে পেরেছেন রাজনীতী কেন করা প্রয়োজন?

অনেকেই রাজনীতিকে গালাগাল করেন। তারা বলেন রাজনীতি করে খারাপ মানুষে। কিন্ত রাজনীতি তো খারাপ মানুষে দখল করে তাকে কলুষিত করেছে। মানুষ তাকে ঘৃণা করতে গিয়ে রাজনীতিকে ঘৃণা করেন। আবার সমাজে যখন কোন আলেম, ধর্মীয় ন্যায় পরায়ণ ব্যাক্তি রাজনীতি করেন বা ভোটে আসেন তখন ঐ অসৎশ্রেণীর মানুষরা  বা যারা মনে করে রাজনীতি তাদের  ব্যাক্তিগত সম্পত্তি তারা তিরষ্কার করেন, হাসি ঠাট্টা করেন, ধর্মব্যাবসায়ী বলেন এবং বলেন হুজুর কেন রাজনীতি করবে? সে থাকবে মসজিদে। আমরা তার পিছনে নামাজ পড়বো, তাকে আমরা সম্মান করি । সে কেন ভোটা ভুটিতে আসবে , তারও ক্ষমতায় যাবার লোভ হয়েছে। তিনি আমাদের নেতার বিরুদ্ধে নির্বাচন করছেন এটা তার উচিত হয়নি । আবার বলে হুজুরে রাজনীতির কি বুঝেন ইত্যাদি নানা ফতোয়া। এসবের ভিতরেও যারা সমাজের প্রতিনিধি হতে এগিয়ে আসে তাদেরকে তারা   তাদের সর্বশক্তি, ক্ষমতা, নানা সোর্স মিডিয়া, মুভি, নাটক ইত্যাদি সব কিছুর মাধ্যমে এই আলেম বা ইসলামীক দলের নেতাদের  চরিত্র হরণ, সমাজে হেয় প্রতিপন্ন, ইসলাম বিদ্বেষের বিষ ছড়ানো, ইত্যাদি মাধ্যমে তাদেরকে রুখে দেয়ার সকল কৌশল প্রয়োগ করে।

এতক্ষণে আমি রাজনীতির দুটি দিন আলোচনা করেছি। একজন সৃষ্টির সেরা জীব মানুষ হিসেবে মহান রব মানুষকে তার প্রতিনিধি হিসেবে পাঠিয়েছেন। সমাজে, রাষ্ট্রে , ইনসাফ প্রতিষ্ঠা করে শান্তি স্থাপন করা প্রত্যেক সচেতনের দায়িত্ব। এই দায়িত্ব এড়ানো বা এসব আমাদের কাজ না বলে দূরে থাকা মোটেই উচিত নয় বরং আল্লাহর নির্দেশও বটে। সুতরাং আপনাকে সচেতন ভাবে ভাবতে হবে। কাজ করতে হবে মানব কল্যাণে সঠিক পথে, সত্য ও ন্যায় ইনসাফের সাথে। মহান আল্লাহ সবাইকে সঠিক বুঝ দান করুন। আমিন।

যে ভাবে নাটক সিনেমায় ইসলাম বিদ্বেষ ছড়ানো হয় ও আমার অভিজ্ঞতা