বর্তমানে যানবাহনেও নারী ধর্ষণের ঘটনা ঘটছে যেগুলো অধিকাংশ ক্ষেত্রে গণধর্ষণের পর্যায়ে পড়ে যার বর্বরতা পশুদেরও হার মানায় ।এবিষয়ে আমাদের করণীয় :- ধর্ষণ কমে যাবে
যানবাহনে ধর্ষণ প্রতিকারে আমাদের করণীয়
1)অভিভাবকদের কর্তব্য হবে নারীদের একা দূরে যাত্রা করতে না দেয়া।অবশ্যই সাথে কারো থাকতে হবে যেমন স্বামী,বাবা, ভাই অথবা কয়েক জন বিশ্বস্ত বান্ধবী একান্তই কাউকে না পাওয়া গেলে ।
2)যানবাহনে চলাচলের ক্ষেত্রে অবশ্যই পর্দা করতে হবে; এতে পুরুষদের মাঝে বিভ্রান্তি সৃষ্টি হবার সম্ভাবনা থাকে না।
3)রাতের বেলা একা যানবাহনে কোনমতেই যাতায়াত করা ঠিক নয়।একান্ত প্রয়োজন হলে অবশ্যই পর্দা করে কেবল স্বামী, বাবা ও ভাইয়ের সাথে যেতে হবে ।
4)যানবাহনে বসে থাকা অবস্থায় উচ্চ কন্ঠস্বরে কথা বলা,হাসাহাসি করা বা বিভিন্ন দৈহিক অঙ্গ ভঙ্গিমা করা উচিত নয়।এতে অনেক সময় পুরুষ আকৃষ্ট হতে পারে ।
5)ড্রাইভারের পাশাপাশি যে সিটগুলো আছে সেখানে নারীদের বসা ঠিক নয়।এতে গাড়ি চলাকালীন সহজেই ড্রাইভারের দৃষ্টি পাশের সিটে পড়ে ।
6)একেবারে শেষের দিকের সিটগুলোতেও বসাও ঠিক হবে না।কারণ শেষের সিটটি টানা লম্বা থাকায় লম্পটরা সেগুলো ব্যবহার করে থাকে ধর্ষণের ক্ষেত্রে । ধর্ষণ কমে যাবে
7)মাঝের সিটগুলো ব্যবহারে সচেষ্ট হতে হবে । ধর্ষণ কমে যাবে
8 ) যাত্রা পথে সবসময়ই যে কেউ থাকবেই তা নাও হতে পারে ।দৈনন্দিন কাজের ক্ষেত্রে অনেক সময় নারীকে একা যাতায়াত করতে হতে পারে ।তবে সেক্ষেত্রে অবশ্যই খেয়াল রাখতে হবে: বাসে কোন লোকজন নেই এমন বাসে উঠা যাবে না ।আর বাসে লোকজন আছে কিন্তু কিছুদূর যাওয়ার পরে সবাই নেমে গেলে যদি সম্ভব হয় নেমে গিয়ে যে বাসে লোকজন আছে সেটাতে উঠতে হবে ।
9)যানবাহনের মালিক সমিতির কর্তব্য নারীদের নিরাপত্তা বিশেষ গুরুত্ব দিয়ে ড্রাইভার, হেলপারদের বুঝিয়ে দেয়া।এরপর ও যদি কিছু অনৈতিক ঘটনা ঘটে (নারীদের সাথে অশালীন কথাবার্তা, শ্লীলতাহানি বা ধর্ষণের মতো জঘন্য ঘটনা )সেক্ষেত্রে অবশ্যই যথাযথ বিচার করতে হবে ।প্রয়োজনে আইনের কাছে সমর্পণ করতে হবে ।তাদের দ্বারা যানবাহন চালানো নিষিদ্ধ করতে হবে ।
10)যানবাহনের ক্ষেত্রে বহির্বিশ্বকে অনুসরণ করা গেলে যানবাহনে ধর্ষণ রোধ করা যাবে ।সেখানে আগে থেকেই টিকিট কেটে টাকা পরিশোধ করা হয় যেটা কিছু কিছু যানবাহনে আমাদের দেশে করা হয়।তবে সবগুলোতেই এমনটি করতে হবে ।প্রতিটি বাসের সাথে সিসিটিভির ব্যবস্থা করতে হবে ।বাস কেবলমাত্র সরকারি পর্যায়ে চলবে ।কারণ বেসরকারি বা ব্যক্তিগত পর্যায়ের যানবাহনে এই ধরণের ন্যাক্কার জনক ঘটনা ঘটে থাকে।যদি বাস বেসরকারীভাবে থাকেও তবু তা কেন্দ্র থেকে নিয়ন্ত্রিত হবে।বাস নির্ধারিত স্ট্যান্ড ছাড়া যত্রতত্র থামা যাবে না।বাসে কেবল ড্রাইভার থাকবে তার সাথে হেল্পার দরকার হবে না;তার জন্য ছোট কাঁচঘরের মতো পৃথক ব্যবস্থা করতে হবে যেখানে ছোট ছোট কিছু ছিদ্র থাকবে যেটা দিয়ে একান্ত প্রয়োজনে যাত্রীরা তার সাথে কথা বলতে পারবে।প্রতিটি বাস কেন্দ্র থেকে নিয়ন্ত্রিত হবে।বাসে কি ঘটছে তা কতৃপক্ষ দেখতে পারবেন। বাসের পিছনের সীট তুলনামূলকভাবে কিছু উঁচু করে তৈরি করতে হবে আর সেটা যেন টানা না হয়ে মাঝে কিছু হাতল থাকে সেই বন্দোবস্ত করতে হবে ।
পরিশেষে বলব নিরাপদ যানবাহন নিশ্চিত করতে হলে সবাইকে এগিয়ে আসতে হবে । ধর্ষণ কমে যাবে
ধর্ষণের মতো জঘন্য পাপকর্ম হতে দেশ ও দেশের মানুষকে বাঁচাতে হলে আমাদের সবাইকে একযোগে এগিয়ে আসতে হবে। এক্ষেত্রে গৃহ হতে শুরু করে অফিস,আদালত, শিক্ষাঙ্গন, যানবাহন, মাঠে ঘাটে রাস্তায় সর্বত্র দরকার সচেতনতা বৃদ্ধি।
***অভিভাবকদের দায়িত্ব :
১) ছেলেমেয়েদের সঠিক মানবিকতা -ধর্ম ও নৈতিকতার শিক্ষা দিতে হবে শিশুকাল হতেই। তাদেরকে পাপ-পূণ্য শিক্ষা দিতে হবে।
২) ছেলে মেয়েদের জন্য পৃথক বিছানা দিন নয় বছর বয়স হয়ে গেলে।
৩) বাড়িতে আসা ছেলে /এমনকী বিবাহিত পুরুষ শিক্ষক /অতিথি/হুজুর কারো কাছে আপনার মেয়ে নিরাপদেই আছে ভেবে নিশ্চিন্ত থাকবেন না। সব সময় চোখে চোখে রাখবেন। আর কারো চরিত্রের বিষয়ে সন্দিহান হলে অবশ্যই তাদের এড়িয়ে চলতে হবে। যেমন যদি কোনও শিক্ষক /হুজুর সম্পর্কে কিছু সন্দেহজনক কথা /কাজ পরিলক্ষিত হয় তবে তার কাছে না পড়ানোই উত্তম হবে।আর সর্বোত্তম হয় নারী শিক্ষক /হুজুরের নিকট পড়ানো।
৪) মেয়ের বয়স সাত বছর হয়ে গেলে তাকে পর্দা করার জন্য অনুপ্রাণিত করুন; আট বছরে কড়াকড়ি করতে হবে । এবং নয় বছরে অবশ্যই তাকে যথাযথ পর্দা করতে হবে।পর্দার ক্ষেত্রে লক্ষ্য রাখতে হবে টাইট ফিট পোশাকে কেবল মাথায় ওড়না জুড়ে দিলেই পর্দা হবে না। পোশাক অবশ্যই ঢিলে ঢালা হতে হবে।
৫) সাত/আট বছর হতে মেয়েদের ছেলেদের সাথে খেলতে দিবেন না। আর বড় হলেও ছেলে বন্ধুদের সাথে মেলামেশার বিষয়টিকে গুরুত্বের সাথে নিষেধ করবেন।মেয়ে বন্ধু রাখতে অনুপ্রাণিত করুন ।
৬) আপনার সন্তান স্কুলে যাওয়ার কথা বলে অন্যত্র যায় কিনা লক্ষ্য করুন। প্রয়োজনে স্কুলে যোগাযোগ রাখুন।
৭) কোথাও বেড়াতে গেলেও আপনার সন্তানের দিকে লক্ষ্য রাখুন। গল্পে পড়ে তাদের হতে দৃষ্টি সরিয়ে নেবেন না।
৮) দুঃসম্পর্কের মামা-চাচা,চাচাতো /খালাত/মামাতো /ফুফাত ভাইয়ের সাথে কোথাও বেড়াতে পাঠাবেন না। ধর্ষণ কমে যাবে
৯) যানবাহনে একা মেয়েদের চলাচল করতে দিবেন না।যদি একান্ত প্রয়োজনে কোথাও যেতে হয় তবে সঙ্গে বান্ধবী /আত্মীয় নারী যেন থাকে খেয়াল রাখতে হবে। একাকী যানবাহনে চলাচল করা বর্তমান প্রক্ষাপটে নিরাপদ নয়। ধর্ষণ কমে যাবে
১০) রাতের বেলা মেয়েদের ঘর থেকে বের হতে দিবেন না।একান্ত প্রয়োজন হলে আপনাদের কেউ তার সঙ্গে যাবেন।
১১) আপনার সন্তান কোন ধরণের সঙ্গী রাখছে খেয়াল করুন। কথায় বলে-‘সঙ্গ দোষে লোহা ভাসে’। সঙ্গী বা বন্ধু নির্বাচনে তাকে সহযোগিতা করতে পারেন।
১২) আপনার সন্তান মোবাইলে/কম্পিউটারে কি করে /কি দেখে খেয়াল রাখুন। অশ্লীলতা পূর্ণ কিছু দেখার আগেই তাকে সতর্ক করুন।
১৩) আপনি তাকে পর্যাপ্ত সময় দিন যেন সে সুন্দর কাজে আত্মবিশ্বাসী ও আদর্শবান হয়ে গড়ে ওঠে। আদর্শের শিক্ষা নিয়ে যদি ছোট বেলা থেকেই গড়ে ওঠে তবে আপনার সন্তান আপনার জন্য দুনিয়া ও পরকালে বয়ে আনবে সফলতা এবং সম্মান। আর যারা প্রকৃতপক্ষে নীতিবান এবং ব্যক্তিত্বসম্পন্ন তারা ধর্ষক নামধারী হয় না কখনও।
১৪) সন্তানদের সময়মত বিবাহ দিন। আঠারো বছর হতে উপযুক্ত পাত্র/পাত্রী পেলে বিবাহ দেবার চেষ্টা করুন। কিন্তু যদি সে ধরণের পাত্র পাত্রী পাওয়া না যায় তবে আরও কয়েক বছর অপেক্ষা করুন কিন্তু পড়াশোনা বা প্রতিষ্ঠিত হবার কথা বলে বিলম্ব বিবাহ না দেওয়াই শ্রেয়।
১৫) আজকাল ছেলেমেয়েদের মাঝে প্রেমের সম্পর্ক স্থাপন অনেক সহজ হয়ে গেছে। আর এসব সম্পর্কে জড়িয়ে অনেক ছেলেমেয়েরা নিজেদের চরিত্র বিনষ্ট করে যেগুলো হতে আপনার সন্তানদের রক্ষা করার উপযুক্ত পন্থা হল তাদের বিবাহ দেয়া। বিবাহের পর তারা তাদের লেখাপড়া যাতে চালিয়ে যেতে পারে সেদিকে উভয় পরিবারকে খেয়াল রাখতে হবে।