– নির্মলেন্দু গুণ
আমি বলছি না ভালোবাসতেই হবে , আমি চাই
কেউ একজন আমার জন্য অপেক্ষা করুক,
শুধু ঘরের ভেতর থেকে দরোজা খুলে দেবার জন্য ।
বাইরে থেকে দরোজা খুলতে খুলতে আমি এখন ক্লান্ত ।
আমি বলছি না ভালোবাসতেই হবে, আমি চাই
কেউ আমাকে খেতে দিক । আমি হাতপাখা নিয়ে
কাউকে আমার পাশে বসে থাকতে বলছি না,
আমি জানি, এই ইলেকট্রিকের যুগ
নারীকে মুক্তি দিয়েছে স্বামী -সেবার দায় থেকে ।
আমি চাই কেউ একজন জিজ্ঞেস করুক :
আমার জল লাগবে কি না, নুন লাগবে কি না,
পাটশাক ভাজার সঙ্গে আরও একটা
তেলে ভাজা শুকনো মরিচ লাগবে কি না ।
এঁটো বাসন, গেঞ্জি-রুমাল আমি নিজেই ধুতে পারি ।
আমি বলছি না ভলোবাসতেই হবে, আমি চাই
কেউ একজন ভিতর থেকে আমার ঘরের দরোজা
খুলে দিক । কেউ আমাকে কিছু খেতে বলুক ।
কাম-বাসনার সঙ্গী না হোক, কেউ অন্তত আমাকে
জিজ্ঞেস করুক : তোমার চোখ এতো লাল কেন ?
* জয় গোস্বামী
থাক না বলায় থাক
যে কথা হয়নি বলা আগে
শুরুতেই যে কথা শেষ হয়ে গেছে
সে কথা তুলে আর কি হবে ?
আমিতো বেশ আছি ভালো
গুছিয়ে নিজেকে নিজেই
না বলে গিয়েছো চলে,নিয়েছি তো মেনে
পা ধরে sorry বলার অভ্যাস আমার নেই
হয়তো কোনদিন স্মৃতির দুয়ার খুলে খুজবো তোমায়
অগভীর রাতে কিছু চিরচেনা স্বপ্নেরা হানা দিতে পারে
তবুও ভুল করে ডাকবোনা তোমায়
আমার দেওয়া পুরানো নামটি ধরে
না রয় সব সম্পর্ক চিরজীবন
না হয় মানুষের সব চাওয়া পূরণ
এখনও সেই পুরানো জায়গায় রোজ বিকেলে বসি
সময় পেলে একদিন এসো
গল্প করা যাবে,বসে পাশাপাশি ৷
~ মহাদেব সাহা
ভালোবাসা আমি তোমাকে নিয়েই
সবচেয়ে বেশি বিব্রত আজ
তেমাকে নিয়েই এমন আহত
এতো অপরাধী, এতো অসহায়!
তোমাকে নিয়েই পালিয়ে বেড়াই
তোমাকে নিয়েই ব্যাকুল ফেরারী।
ভালোবাসা তুমি ফুল হলে তার
ফুলদানি পেতে অভাব ছিলো না,
মেঘ হলে তুমি সুদূর নীলিমা
তোমাকে দিতাম উড়ে বেড়াবার:
জল হলে তুমি সমুদ্র ছিলো
তোমারই জন্য অসীম পাত্র-
প্রসাধনী হলে তোমাকে রাখার
ছিলো উজ্জ্বল অশেষ শো-কেস,
এমনকি তুমি শিশির হলেও
বক্ষে রাখার তৃণ ছিলো, আর
সবুজ পাতাও তোমার জন্য
হয়তোবা হতো স্মৃতির রুমাল।
ভালোবাসা তুমি পাখি হতে যদি
তোমাকে রাখার ভাবনা কি ছিলো
এই নীলকাশ তোমারই জন্য
অনায়াসে হতো অনুপম খাঁচা!
কিন্তু তুমি তো ফুল নও কোনো
মেঘ নও কোনো দূর আকাশের,
ভালোবাসা তুমি টিপ নও কোনো
তোমাকে কারো বা কপালে পরাবো:
ঘর সাজাবার মেহগনি হলে
ভালোবাসা তুমি কথা তো ছিলো না
তুমি তো জানোই ভালোবাসা তুমি
চেয়েছো মাত্র উষ্ণ হৃদয়!
খোঁপায় তোমাকে পরালেই যদি
ভালোবাসা তুমি ফুটতে বকুল,
কারো চোখে যদি রাখলেই তুমি
হতে ভালোবাসা স্নিগ্ধ গোধূলি-
তাহলে আমার তোমাকে নিয়ে কি
বলো ভালোবাসা এমন দৈন্য,
আমি তো জানিই তোমার জন্য
পাইনি যা সে তো একটি হৃদয়
সামান্যতম সিক্ত কোমল,
স্পর্শকাতর অনুভূতিশীল!
~ মহাদেব সাহা
ভালোবাসা তুমি এমনি সুদূর
স্বপ্নের চেও দূরে,
সুনীল সাগরে তোমাকে পাবে না
আকাশে ক্লান্ত উড়ে!
ভালোবাসা তুমি এমনি উধাও
এমনি কি অগোচর
তোমার ঠিকানা মানচিত্রের
উড়ন্ত ডাকঘর
সেও কি জানে না? এমনি নিখোঁজ
এমনি নিরুদ্দেশ।
পাবে না তোমাকে মেধা ও মনন
কিংবা অভিনিবেশ?
তুমি কি তাহলে অদৃশ্য এতো
এতোই লোকোত্তর,
সব প্রশ্নের সম্মুখে তুমি
স্থবির এবং জড়?
ভালোবাসা তবে এমনি সুদূর
এমনি অলীক তুমি
এমনি স্বপ্ন? ছোঁওনি কি কভু
বাস্তবতার ভূমি?
তাই বা কীভাবে ভালোবাসা আমি
দেখেছি পরস্পর
ধুলো ও মাটিতে বেঁধেছো তোমার
নশ্বরতার ঘর!
ভালোবাসা, বলো, দেখিনি তোমাকে
সলজ্জ চঞ্চল,
মুগ্ধ মেঘের মতোই কখনো
কারো তৃষ্ণার জল।
আবার জন্মালে তোমাকে ভালোবাসার কথা বলবো-
পৈত্রিক দ্বীপে বালিকার হাতে তুলে দিবো আমাদের সংসার
পৃথিবীর সব স্বপ্ন চাষের জমিতে- ফসলের রেণু নিয়ে
রঙিন প্রজাপতি উড়ে
হাত থেকে দানা খেয়ে যায় বসন্ত পাখি-
পাখিরা রংধনু হয়- রংধনু পাখি।
তুমি ছুয়ে দিলে ভূমি- গর্ভবতী-
বীজ বুনে যায় বনদেবী-
জল দিয়ে যায় আচল হয়ে নদী
আমি হবো তোমার
ছায়ার জীবন অস্বীকার করে
তোমাকেও জন্মাতে হবে একবার।
__ বিষন্নতা,,,,শূন্যতা,,,,,,,,,,,,!!
~নেই কোন নির্দিষ্ট ভালোবাসা,,
– থাকুক শুধু প্রকৃতি নিয়ে আসা ও প্রত্যাশা,,!
– তুমি তো ছুঁয়েছ অন্য নীল, নগর পরিবেশ,,!!
– আমি পছন্দ করি নিরিবিলি পরিবেশ,,!
– ভেবোনা এটা আমার আলস মনের ব্যকুলতা,,!
– মনে পড়ে ভালোবেসে মিষ্টি ভরা সেই ভোরের দৃশ্য,!
– যতই লিখি ভালোবাসার কবিতা, মনের গহিনে
– অবহেলা আর শূন্যতা,,!
– মনের গহিনে অজান্তে অনুভূতির তাপ,,!
-থাকুক না কিছু বিষন্নতার ছাপ,,,,,,,!!