You are currently viewing ভালোবাসার কবিতা । নির্বাচিত ৫০ টি সেরা প্রেমের কবিতা
ভালোবাসার কবিতা

ভালোবাসার কবিতা । নির্বাচিত ৫০ টি সেরা প্রেমের কবিতা

অনন্ত প্রেম ভালোবাসার কবিতা

– রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর

তোমারেই যেন ভালোবাসিয়াছি শত রূপে শতবার

জনমে জনমে যুগে যুগে অনিবার।

চিরকাল ধরে মুগ্ধ হৃদয় গাঁথিয়াছে গীতহার–

কত রূপ ধরে পরেছ গলায়, নিয়েছ সে উপহার

জনমে জনমে যুগে যুগে অনিবার।

যত শুনি সেই অতীত কাহিনী, প্রাচীন প্রেমের ব্যথা,

অতি পুরাতন বিরহমিলন কথা,

অসীম অতীতে চাহিতে চাহিতে দেখা দেয় অবশেষে

কালের তিমিররজনী ভেদিয়া তোমারি মুরতি এসে

চিরস্মৃতিময়ী ধ্রুবতারকার বেশে।

আমরা দুজনে ভাসিয়া এসেছি যুগলপ্রেমের স্রোতে

অনাদি কালের হৃদয়-উৎস হতে।

আমরা দুজনে করিয়াছি খেলা কোটি প্রেমিকের মাঝে

বিরহবিধুর নয়নসলিলে, মিলনমধুর লাজে–

পুরাতন প্রেম নিত্যনূতন সাজে।

আজি সেই চির-দিবসের প্রেম অবসান লভিয়াছে,

রাশি রাশি হয়ে তোমার পায়ের কাছে।

নিখিলের সুখ, নিখিলের দুখ, নিখিল প্রাণের প্রীতি,

একটি প্রেমের মাঝারে মিশেছে সকল প্রেমের স্মৃতি–

সকল কালের সকল কবির গীতি।

স্ত্রীকে নিয়ে ভালোবাসার কবিতা

বউ ভালোবাসার কবিতা

– নির্মলেন্দু গুণ

কে কবে বলেছে হবে না? হবে,বউ থেকে হবে ।

একদিন আমিও বলেছিঃ ওসবে হবে না ।

বাজে কথা। আজ বলি, হবে, বউ থেকে হবে ।

বউ থেকে হয় মানুষের পুনর্জন্ম, মাটি,লোহা,

সোনার কবিতা, —কী সে নয়?

গোলাপ, শেফালি, যুঁই, ভোরের আকাশে প্রজাপতি,

ভালোবাসা, ভাগ্য, ভাড়াবাড়ি ইতিপূর্বে এভাবে মিশেনি ।

ছড়িয়ে ছিটিয়ে ছিল, দুইজন্ম এবার মিশেছে, দেখা যাক ।

হতচ্ছাড়া ব্যর্থ প্রেম, গাঁজা, মদ, নৈঃসঙ্গ আমার

ভালোবেসে হে তরুণ, তোমাকে দিলাম, তুমি নাও ।

যদি কোনদিন বড় কবি হও, আমার সাফল্য

কতদূর একদিন তুমি তা বুঝিবে ।

আমি কতো ভালোবাসা দুপায়ে মাড়িয়ে অবশেষে,

কল্পনার মেঘলোক ছেড়ে পৌঁছেছি বাস্তব মেঘে ।

আজ রাত বৃষ্টি হবে মানুষের চিরকাম্য দাবির ভিতরে ।

তার শয্যাপাশে আমার হয়েছে স্থান, মুখোমুখি,

অনায়াসে আমি তা বলি না, বলে যারা জানে দূর থেকে ।

আমি কাছে থেকে জানি, বিনিময়ে আমাকে হয়েছে দিতে

জীবনের নানা মূল্যে কেনা বিশ্বখানি, তার হাতে তুলে ।

অনায়াসে আমিও পারিনি । ক্রমে ক্রমে, বিভিন্ন কিস্তিতে

আমি তা দিয়েছি, ফুলে ফুলে ভালোবেসে যেভাবে প্রেমিক ।

প্রথমে আত্মার দ্যুতি, তারপর তাকে ঘিরে মুগ্ধ আনাগোনা ।

স্বর্গের সাজানো বাগানে পদস্পর্শে জ্বলে গেছি দূরে, তারপর

পেয়েছি বিশ্রাম । আজ রাত সম্পর্কের ভিতরে এসেছি ।

সবাই মিলবে এসে মৌন-মিহি শিল্পে অতঃপর,

তোমার প্রদত্ত দানে পূর্ণ হবে পৃথিবী আমার ।

ভালোবাসার কবিতা কষ্টের

তুই কি আমার দুঃখ হবি?

আনিসুল হক ভালোবাসার কবিতা

*তুই কি আমার দুঃখ হবি?

এই আমি এক উড়নচন্ডী আউলা বাউ

রুখো চুলে পথের ধুলো

চোখের নীচে কালো ছায়া।

সেইখানে তুই রাত বিরেতে স্পর্শ দিবি।

তুই কি আমার দুঃখ হবি?

তুই কি আমার শুষ্ক চোখে অশ্রু হবি?

মধ্যরাতে বেজে ওঠা টেলিফোনের ধ্বনি হবি?

তুই কি আমার খাঁ খাঁ দুপুর

নির্জনতা ভেঙে দিয়ে

ডাকপিয়নের নিষ্ঠ হাতে

ক্রমাগত নড়তে থাকা দরজাময় কড়া হবি?

একটি নীলাভ এনভেলাপে পুরে রাখা

কেমন যেন বিষাদ হবি।

তুই কি আমার শুন্য বুকে

দীর্ঘশ্বাসের বকুল হবি?

নরম হাতের ছোঁয়া হবি?

একটুখানি কষ্ট দিবি।

নিজের ঠোট কামড়ে ধরা রোদন হবি?

একটুখানি কষ্ট দিবি।

প্রতীক্ষার এই দীর্ঘ হলুদ বিকেল বেলায়

কথা দিয়েও না রাখা এক কথা হবি?

একটুখানি কষ্ট দিবি। ভালোবাসার কবিতা

তুই কি একা আমার হবি?

তুই কি আমার একান্ত এক দুঃখ হবি?

সবটা দিয়ে ভালবাসলে ভালোবাসা ঘন হয়।

জীবন দিয়ে আগলাতে হয় তাকে ,

যার কাছে মনের খবর থাকে।

যে তার সবটা দিয়ে শুধু তোমায় ভালোবাসে।

ছন্দরীতি । ভালোবাসার কবিতা

– মহাদেব সাহা

তোমাদের কথায় কথায় এতো ব্যকরণ

তোমাদের উঠতে বসতে এতো অভিধান,

কিন্তু চঞ্চল ঝর্ণার কোনো ব্যাকরণ নেই

আকাশের কোনো অভিধান নেই, সমুদ্রের নেই।

ভালোবাসা ব্যাকরণ মানে না কখনো

হৃদয়ের চেয়ে বড়ো কোনো সংবিধান নেই

হৃদয় যা পারে তা জাতিসঙ্ঘ পারে না

গোলাপ ফোটে না কোনো ব্যাকরণ বুঝে।

প্রেমিক কি ছন্দ পড়ে সম্বোধন করে?

নদী চিরছন্দময়, কিন্তু সে কি ছন্দ কিছু জানে,

পাখি গান করে কোন ব্যাকরণ মেনে?

তোমারাই বলো শুধু ব্যাকরণ, শুধু অভিধান!

বলো প্রেমের কি শুদ্ধ বই, শুদ্ধ ব্যাকরণ

কেউ কি কখনো সঠিক বানান খোঁজে প্রেমের চিঠিতে

কেউ কি জানতে চায় প্রেমালাপ স্বরে না মাত্রায়?

নীরব চুম্বনই জানি পৃথিবীর শ্রেষ্ঠ ছন্দরীতি।

নয়ন তোমারে পায় না দেখিতে