ফেসবুকে কবির অভাব নেই | তবে “সবাই কবি নয়, কেউ-কেউ কবি ” !
ফেসবুকে যাঁরা কবিতা লিখেন তাঁদের ৯৮ % মনে করেন লাইনের শেষে গিয়ে উপরে-নিচে ‘ভাই’এর সাথে ‘যাই’ এর মতো শব্দের মিল দিতে পারলেই কবিতা হয়ে যায় !
একেই বলে কবিতার ছন্দ ! বাস্তবে তা নয় ! লাইন শেষে অন্তঃমিল দিলে কবিতাটিকে সাধারণতঃ অক্ষরবৃত্ত / মাত্রাবৃত্ত/ কিংবা স্বরবৃত্ত ছন্দের মধ্যে থাকতে হয় | নতুবা অন্তঃমিল না দিয়ে গদ্য কবিতা লেখাই ভালো |
তবে রবীন্দ্রনাথের ভাষায় গদ্য কবিতাকে ও হতে হবে “পদ্যের রং লাগা গদ্য ” |
আজকাল আমাদের কবিদের অনেকেই গদ্য কবিতা বলতে পাথরের মতো জটিল ও দুর্বোধ্য কিছু কথামালাকে বুঝেন | ঐ সব কবিতা পাঠকদের কোন উপকারে আসেনা ! রবীন্দ্র-নজরুলের মতো বিখ্যাত কবিদের গদ্য কবিতা ও জটিল-দুর্বোধ্য নয় ! যারা কবিতাকে পাথরের মতো জটিল ও দুর্বোধ্য করেন বংকিম চন্দ্র চট্টোপাধ্যায় তাদেরকে কবি নামের কলঙ্গক তথা ” পাষন্ড” বলে গাল মন্দ করতেন !
আমাদের মতো নগণ্য পাঠকরা ফেসবুকের কবিদের কাছে গদ্য কবিতার নামে পাথর চাইনা !
ফেসবুকে অনেকে আবার লেখার খাতিরেই লিখে থাকেন ! যাঁরা ভালো লিখতে পারেন না তাঁরা ভালো লেখকের লেখাগুলো শেয়ার করতে পারেন ! নতুবা কোরান-হাদীস কিংবা মনীষীদের বাণী-ও দিতে পারেন |তাতে লেখক-পাঠক সবাই উপকৃত হবে|
আমি এখন অমুক ” হোটেলে চাইনিজ খাচ্ছি ” -এ সব ফেসবুকে দেয়াটাকি বেশী জরুরী ?
এটা কী বুঝায় জানেন ?
বুঝায় আমার চৌদ্দ-পুরুষ ও কখনো চাইনিজ খায়নি ! আমি খাচ্ছি ! তোমরা যারা খেতে পারবেনা তারা দেখে দেখে জিভে জল আনো নতুবা কষ্ট পা ও !
কেউ কেউ লিখে “আমি রাস্তায় দাঁড়িয়ে আছি “! আরো কিছু দিন পর হয়তোবা কেউ লিখবে, “বন্ধুরা আমি এখন টয়লেটে বসে আছি ” ! এসব কি ফেসবুকে লেখার বিষয় ? যারা পুরুষ হয়ে লেডিজ সাজে মুহাম্মদ (দঃ ) তাদের উপর আল্লাহর গজব (অভিশাপ ) বলেছেন !
ফেসবুকে ও যারা পুরুষ হয়ে লেডিজ সাজে আমরা দোয়া করি আল্লাহ যেন তাদেরকে সত্যবাদী বানান নতুবা পুরুষ থেকে লেডিজ বানিয়ে দিয়ে তাদের মনের আশা পুরণ করেন !
ফেসবুকে মিথ্যে তথ্য দিয়ে যারা প্রোফাইল সাজায় তারা আসলে তাদের মনের অজান্তেই নিজেকে চোর বলে প্রমাণ করে !
আবার অনুমতি ছাড়া যারা কারো নামে কোন লেখা কিংবা ছবি ট্যাগ করে তারা যে তাদের মা-বাবাকে কী পরিমান গাল-মন্দ শোনান তা তারা জানেনা !
তারা ফেসবুকের আবর্জনা ! এক আজব প্রজাতির জন্তু !
ফেসবুকে কেউ কেউ বার বার বিভিন্ন জায়গায় বিভিন্ন স্টাইলে তোলা সেল্ফি দিয়ে লাইক-কমেন্ট চান ! বাস্তবে সত্যিকার কোন গুণী জন কিংবা সৃজনশীল মানুষ ফেসবুকে বার বার ওসব ছবি-টবি দেয়ার মাঝে প্রদর্শনচ্ছা ছাড়া অন্য কোন অর্থ ই খুঁজে পান না !কোরানে দেখা যায় আমাদের প্রতিটা কথা ( লেখা ) কাঁধের ফেরেস্তারা সঙ্গে সঙ্গেই আমাদের পাপ-পুণ্যের আমল নামায় রেকর্ড করে ফেলে !
তাই আমাদের সবার লেখা হোক সুন্দর-সুসঙ্গত ও কল্যাণকর !ফেসবুক হোক আমাদের সবার ইহলোক ও পরলোকের জীবনকে সার্থক ও সমৃদ্ধ করার উত্তম হাতিয়ার |
……………………………………………………….
রাত-১টা ৩০ মিনিট, ১৭-৮-২০১৫ ঈসায়ী
ফটিকছড়ি, চট্টগ্রাম | ফেসবুকের ছবি , ফেসবুকের প্রতিষ্ঠাতা কে , Facebook