You are currently viewing ফাতেমা জাহান লুবনা’র চারটি আর্টিকেল
বই পড়া

ফাতেমা জাহান লুবনা’র চারটি আর্টিকেল

বাইরের খোলস নয়; ভিতরের মানুষটাই দামী

-ফাতেমা জাহান লুবনা
বাইরের সাজসজ্জা তথা খোলসের চেয়ে ভিতরের মানুষটাই দামী।
শার্ট টাই স্যূট পরলেই কেউ ভদ্র হয়ে যায় না; ভদ্রতা থাকে বিনয় ও সদাচারণে।
বোরখা হিজাব পরলেই কেউ খুব পবিত্র হয়ে যায় না যদি পবিত্রতা না থাকে অন্তরের গভীরে।
তবে বাইরের পবিত্রতা ও পরিচ্ছন্নতা আর স্মার্টনেস দোষণীয় কিছু নয়। সবাই সৌন্দর্যকে পছন্দ করে।
কিন্তু প্রথম ও প্রধান খেয়ালটা দিতে হবে অন্তরের দিকেই। অন্তরে কালিমা রেখে বাহিরটাকে সুরভিত করলেও তা কার্যত অসুন্দরই থেকে যায়।
মানুষকে ফর্সা/কালো, বেটে/লম্বা, ইত্যাদির কারণে মূল্যায়ন করবে না; মূল্যায়ন কর তার অন্তরের প্রশস্ততা ও গভীরতা দেখে।
তুমি কোন দেশের কোন শহরের বা গ্রামের কোন বংশে জন্মগ্রহণ করেছ, কত ধনী বা ক্ষমতাসম্পন্ন তোমার পিতা বা তুমি এটাও বড় নয়, এগুলোও বাহ্যিক বিষয় যেটা তোমার কর্মকে মহিমান্বিত করবে না; তুমিই তোমার জন্মকে মহিমান্বিত করবে তোমার সৎকর্ম দ্বারা। তোমার কর্ম যদি নিকৃষ্ট হয় তাহলে তোমার বংশ, অর্থ, ক্ষমতা তোমাকে উন্নীত করতে সক্ষম হবে না। কিন্তু তোমার কর্ম ও অন্তরই তোমাকে ধন সম্পদ, বংশ , দেশ সব ছাড়িয়ে উচ্চ মর্যাদায় আসীন করতে পারে।
তাই যে যাই বলে বলুক- তুমি মানুষের খোলসের প্রেমে পরবে না; বরং ভিতরের মানুষটাকেই অধিক মূল্যায়ন কর আর নিজের ভিতরের মানুষটাকেও পরিশুদ্ধ এবং আলোকিত কর।

বিফলতা তখনই বিফল যখন তুমি হাল ছেড়ে দাও

– ফাতেমা জাহান লুবনা
মহান আল্লহ কখনও কারো পরিশ্রমকে বিফল করেন না তবে বিফলতা দিয়ে কখনও কখনও তিনি মানুষকে পরীক্ষা করেন।
যদি তুমি ভালো কাজে বারবার বিফলতা সত্ত্বেও লেগে থাক আর সঠিকভাবে পরিশ্রম করতেই থাক তাহলে একদিন আল্লহ ইংশাআল্লহ তোমাকে এতটাই সফল করবেন যে অতীতের সকল বিফলতাকে মিটিয়েও বহুগুণে বৃদ্ধি করবেন আর তুমি অত্যন্ত সন্তুষ্ট হয়ে যাবে।
পার্থিব জীবনের দুঃখ কষ্টগুলোও তেমনই কিছুটা করল্লার তিতার মত যেটা প্রথমে ততটা ভালো না লাগলেও শরীরের জন্য উপকারী। তুমি আজ যত কষ্ট, ব্যথা, বেদনা অনুভব করছ না কেন যদি তোমার দুঃখ কষ্টগুলো হাসিমুখে বরণ করে মহান আল্লহর ইবাদতে মশগুল হতে পার আর তোমার দায়িত্বগুলো সচেতন হয়ে পালন করতে পার তাহলে একদিন ইংশাআল্লহ তোমার মত সুখী আর কেউ হবে না।
আরেকটু ধৈর্য ধর আর ভালোকাজের সাথে হাসিমুখে লেগে থাক। পার্থিব জীবন পরকালের তুলনায় বিশাল সমুদ্রের বুকে এক ফোঁটা পানির মত।

যুদ্ধ মানে পৃথিবীর মৃত্যু; মানুষের হাতেই মানুষের ধ্বংস

(People for the Planet or Planet for the People; War destroys both)
-ফাতেমা জাহান লুবনা
যুদ্ধের কারণে মানুষ যেমন সরাসরি মৃত্যুবরণ করছে, তেমনই প্রতিটি যুদ্ধ পৃথিবীতে বসবাসকারী ভিন্ন প্রান্তের মানুষদেরও ক্ষতিগ্রস্ত করছে আর পৃথিবীর মৃত্যুর সময়কেও ঘনীভূত করছে, নিকটবর্তী করছে।
১) অক্সিজেনের ঘাটতি সৃষ্টি:
যুদ্ধের কারণে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে গাছ, ধ্বংস হচ্ছে বনাঞ্চল ও আবাদি জমি। এক একটি বৃক্ষ যেন এক একটি অক্সিজেনের ফ্যাক্টরি যেটা শুধু একটি এলাকাতেই সীমাবদ্ধ থাকে না, ছড়িয়ে পরে পুরো পৃথিবীতে। আর পৃথিবীর বায়ুমণ্ডলের ভারসাম্য রক্ষা করতে সহযোগিতা করে। কিন্তু যুদ্ধের কারণে একটি এলাকার গাছ ধ্বংস হয়ে পৃথিবীর অক্সিজেনের ঘাটতি সৃষ্টি করে যেটা আশেপাশের এলাকাগুলিতে এবং পুরো পৃথিবীতে প্রভাব ফেলতে পারে।
২) কার্বন-ডাই-অক্সাইড গ্যাস নিঃসরণ:
যুদ্ধের সময় ব্যবহৃত বিভিন্ন বোমা কার্বন-ডাই-অক্সাইড গ্যাস নিঃসরণের মাত্রাকে অতিরিক্ত হারে বৃদ্ধি করে। এই গ্রীনহাউজ গ্যাসটা পৃথিবীর বায়ুমন্ডলকে অধিক উত্তপ্ত করে তোলে। এতে গলে যায় মেরু অঞ্চলের বয়ফ আর বাড়তে থাকে সমুদ্রের পানির লেভেল। বিভিন্ন অঞ্চল তাতে তলিয়ে যায় পানির নীচে আবার অন্যত্র দেখা দেয় তীব্র পানির সংকট। অর্থাৎ এই কার্বন-ডাই-অক্সাইড প্রবৃদ্ধির কারণে পুরো পৃথিবীই বসবাসের অযোগ্য হয়ে যাচ্ছে দিন দিন আর যুদ্ধের সময় ব্যবহৃত গোলাবারুদ অতি অল্প সময়ে এই কাজটি দ্রুতগতিতে করছে।
৩) তাপমাত্রা বৃদ্ধি:
যুদ্ধের সময় ব্যবহৃত গোলাবারুদ, বোমা ইত্যাদি বৈশ্বিক তাপমাত্রা বৃদ্ধিতে সরাসরি ও পরোক্ষভাবে কাজ করছে। একদিকে যেমন এগুলো নিক্ষেপের কারণে সরাসরি আগুন ও উত্তাপ তৈরি হয়ে তাপমাত্রা বৃদ্ধি করছে, তেমনই বোমায় ব্যবহৃত কার্বন-ডাই-অক্সাইড ও অন্যান্য গ্যাস পৃথিবীর বায়ুমণ্ডলে গ্রীনহাউজ ইফেক্টকে জটিল করছে ও তাপমাত্রা বৃদ্ধি করছে।
স্ত্রীর সুপরামর্শ এবং সহযোগিতা আর কুপরামর্শ আর অসহযোগিতা -এই দুইয়ের মাঝে আকাশ ও পাতাল ব্যবধান রয়েছে।
বিয়ের আগে যে ছেলেটি ভালো থাকে সেও স্ত্রীর অসহযোগিতা এবং কুপরামর্শ ও জেদের কারণে পরিবারের সবার সাথে স্বার্থপরতা করতে পারে, একটি গুছালো সংসারে সবার মাথার উপর দুশ্চিন্তার পাহাড় ঢেলে সবার ঘুম হারাম করতে পারে।
আবার যে ছেলেটি একটু কড়া টাইপের ছিল সেও একটি নারীর সহযোগিতা ও সুপরামর্শ এবং সহমর্মিতার কারণে স্যাক্রিফাইজ করে পরিবারের সবাই মিলেমিশে আনন্দে থাকতে পারে, সংসারের সবাই তার সহযোগিতায় একটু হলেও ভালো থাকতে পারে।
***তাই নারীর বিয়ের সময় কিছু যোগ্যতা কম দেখতে হয় যেমন-
১) সৌন্দর্য
২) পড়ালেখার সার্টিফিকেটের অহংকার
৩) উচ্চ বংশের গৌরব
৪) টাকা-পয়সার বাহাদুরী
৫) ক্ষমতার বাহাদুরী ইত্যাদি।
তারপরও যদি ভাগ্যে পারিবারিক কলহবৃদ্ধিকারিনী আর স্বার্থপর নারী জুটেই যায় তাহলে সন্তান থাকলে তাদের দিকে তাকিয়ে হলেও সংসার করলেও পুরুষের মেরুদন্ড সোজা রাখতে হয়, বুঝাতে হয় সঠিকভাবে যাতে করে পরিবারের সবার স্বার্থ রক্ষা পেয়ে পরিবারে শান্তি বজায় থাকে, সমৃদ্ধি বজায় থাকে।
আর নারীদেরও বুঝতে হয় আজ সে যে শিক্ষা হাতে ও কলমে তার সন্তানদের দিচ্ছে কাল তা তারই কাল হয়ে দাঁড়াতে পারে…উত্তম কাজের ফলাফল উত্তম হয় আর মন্দের ফলাফল মন্দ।