You are currently viewing ড্রাগন ফল- কাঁঠাল-আম-লিচু-বেল কেন খাবেন? উপকারিতা কি?
৩৩টি ফলের উপকারিতা ও বিভিন্ন পুষ্টি গুণ

ড্রাগন ফল- কাঁঠাল-আম-লিচু-বেল কেন খাবেন? উপকারিতা কি?

ড্রাগন ফল

বাংলাদেশে নতুন একটি ফল যা ইতমধ্যে সকলের পছন্দের তালিকায় উঠে এসেছে কারন এর রয়েছে অসাধারণ সাস্থ্য উপকারিতা ও অনেক পুষ্টিগুণ। দেখতে দারুণ লাগলেও স্বাদে ততটা নয়। ভিটামিন, খনিজ এবং অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট সমৃদ্ধ ড্রাগন রক্তে শর্করার মাত্রা নিয়ন্ত্রণ করে, ক্যান্সারের ঝুঁকি কমায়।

ড্রাগন ফলের পুষ্টিগুণ ও উপকারিতা

ড্রাগন ফলের পুষ্টিগুণ ও উপকারিতা

ফলটিতে রয়েছে ভিটামিন, খনিজ পদার্থ, ফাইবার, ক্যালোরির, ম্যাগনেসিয়ামের, আয়রনের, ফ্ল্যাভোনয়েড, ফেনোলিক অ্যাসিড, ওমেগা-৩ এবং ওমেগা-৯  ফ্যাটি অ্যাসিড সহ আরো অনেক পুষ্টিগুণ।

  • ড্রাগনে থাকা অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট শরীরের কোষগুলিকে ফ্রি ব়্যাডিক্যালের হাত থেকে রক্ষা করে।
  • এটি রক্তে শর্করার মাত্রা নিয়ন্ত্রণে রাখে এবং প্রচুর ফাইবার থাকায় ডায়াবেটিসের ঝুঁকি কমিয়ে আনে।
  • ড্রাগন বিভিন্ন দীর্ঘস্থায়ী রোগ যেমন, ক্যান্সার, ডায়াবেটিস, অ্যালজাইমার এবং পারকিনসন এর মতো ভয়ংকর রোগের হাত থেকে মুক্তি পেতে সহায়তা করে।
  • এটি শরীরে ভাল ব্যাকটেরিয়া বৃদ্ধিতে ভুমিকা রাখে। ফলে হজম ক্ষমতা বাড়িয়ে পরিপাকতন্ত্রকে ভাল রাখতে সাহায্য করে।
  • এর বিচি এটি হার্ট ভাল রাখার পাশাপাশি, রক্তচাপ ও ওজন নিয়ন্ত্রণে ভুমিকা রাখে।
  • এছাড়াও চোখের বিভিন্ন সমস্যা দূর করে, হার্ট ভালো রাখে, হাড় মজবুত করে, ত্বককে স্বাস্থ্যোজ্জ্বল করে।

কাঁঠাল

আকারে বেশ বড় এবং পুষ্টিগুণ সমৃদ্ধ কাঠাল বাংলাদেশের জাতীয় ফল হিসেবে পরিচিত। সহজ লভ্য এবং বাংলাদেশের সব অঞ্চলেই কম- বেশি কাঁঠাল পাওয়া যায়। ভিটামিন সমৃদ্ধ কাঁঠালে রয়েছে প্রচুর পরিমাণে ক্যালরি। কাঁঠাল অপুষ্টিজনিত সমস্যা যেমন- রাতকানা এবং রাতকানা থেকে অন্ধত্ব প্রতিরোধে খুবই উপকারী।কাঁচা কাঁঠালে রয়েছে প্রচুর আমিষ ও ভিটামিন যা তরকরি হিসেবে রান্না করে খাওয়া যায়। পাঁকা কাঁঠালের বিচি রান্না করে খেতে সকলেই খুবই পছন্দ করেন। এমনকি কাঁঠালের বিচি ভেজে পরিষ্কার করে ভর্ত করে খেতেও দারুণ মজাদার।

আরও পড়ুন–ইসলাম বিরোধীতা এবং নাস্তিক্যবাদ- শেখ আবুল কাসেম মিঠুন

কাঁঠালের পুষ্টিগুণ ও উপকারিতা

  • কাঁঠালে রয়েছে শক্তিশালী অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট যে কারনে ক্ষতিকর ফ্রির‌্যাডিকেলস থেকে শরীরকে রক্ষা করে।
  • সর্দি-কাশি রোগের সংক্রমণের হাত থেকে রক্ষা করে।
  • কাঁঠাল বদহজম রোধ করে।
  • কাঁঠালে থাকা খনিজ উপাদান ম্যাঙ্গানিজ যা রক্তে শর্করা বা চিনির পরিমাণ নিয়ন্ত্রণে ভুমিকা রাখে।
  • কাঁঠালে রয়েছে প্রচুর ম্যাগনেসিয়াম যা হাড়ের গঠন ও হাড় শক্তিশালী করণে ভূমিকা রাখে।
  • কাঁঠাল হৃদরোগের ঝুঁকি কমায়।
  • গর্ভবতী মায়েরা কাঁঠাল খেলে তার স্বাস্থ্য স্বাভাবিক থাকে এবং গর্ভস্থসন্তানের স্বাভাবিক বৃদ্ধি হয়।
  • কাঁঠালে রয়েছে প্রচুর আঁশ ফলে কাঁঠাল খেলে কোষ্ঠকাঠিণ্য দূর হয়।
  • কাঁঠালে থাকা প্রচুর ভিটামিন এ যা রাতকানা রোগ প্রতিরোধ করে।
  • কাঁঠালে রয়েছে ফাইটোনিউট্রিয়েন্টস যা, আলসার, ক্যান্সার, উচ্চ রক্তচাপ এবং বার্ধক্য প্রতিরোধে বিশেষ ভুমিকা রাখে।
  • কাঁঠালে থাকা ভিটামিন “সি” রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধিসহ দাঁতের মাড়িকে শক্তিশালী করে।
  • কাঁঠালে চর্বির পরিমাণ খুবই কম ফলে এই ফল খাওয়ার কারণে ওজন বৃদ্ধি হবার ভয় নেই।
  • উচ্চ রক্তচাপ কমাতে কাঠাল খুব উপকারী কারন এতে রয়েছে পটাশিয়ামের উৎকৃষ্ট উৎস
  • দুগ্ধদানকারী মায়েদের জন্য কাঠাল অনেক উপকারী কারন কাঁঠাল খেলে দুধের পরিমাণ বৃদ্ধি পায়।
  • কাঁঠাল দেহের রক্তাল্পতা দূর করে।

 

আম

ছেট বড় সকলের নিকট খুব পছন্দের ফল আম। আমাদের দেশে শত প্রজাতির আম পাওয়া যায় একেক প্রজাতির আম একেক স্বদের। কাঁচা পাঁকা উভয় অবস্থাতেই আম খাওয়া য়ায়। আম দিয়ে নানা স্বাদের বিভিন্ন রকমের আঁচার, জুস, জেলি, আমস্বত্ব তৈরি করা হয়।

আমের মৌসুমকে বলা হয় মধুমাস। এই সময়গুলোতে বাজারে নানা জাতের সহজ লভ্য প্রচুর আম পাওয়া যায়। আমে রয়েছে প্রচুর ভিটামিন এ ও ভিটামিন সি। আয়ুর্বেদ ও ইউনানি পদ্ধতির চিকিৎসায় পাকা ফল ল্যাকজেটিভ, রোচক ও টনিক বা বলকারকরূপে ব্যবহৃত হয় । রাতকানা ও অন্ধত্ব প্রতিরোধে আম মহৌষধের কাজ করে।

আমের বিভিন্ন উপকারিতা ও পুষ্টিগুণ

আমের বিভিন্ন উপকারিতা ও পুষ্টিগুণ

  • আমে রয়েছে উচ্চ মাত্রার ভিটামিন সি ও ফাইবার যা রক্তে উচ্চমাত্রার কোলেস্টেরল নিয়ন্ত্রণের সহায়তা করে।
  • ওজন কমাতে আম বিশেষ ভুমিকা রাখে ।
  • চোখ ভালো রাখতে আম বেশ উপকারী।
  • গরমে আম বেশ উপকারী। অতিরিক্ত গরম থেকে শরীররকে শীতল রাখতে আম ভুমিকা রাখে।
  • আম শরীরের রোগ প্রতিরোধের ক্ষমতা বৃদ্ধি করে।
  • মনযোগ ও স্মৃতিশক্তি বৃদ্ধি করতে আম বেশ উপকারী।
  • বদহজম কোষ্ঠকাঠিন্য থেকে আম রক্ষা করে ফলে পাকস্থলী সংক্রান্ত অনেক রোগ থেকেও রক্ষা পাওয়া যায়।
  • আমে বিভিন্ন ধরনের অ্যাসিড রয়েছে যেমন- টারটারিক অ্যাসিড, ম্যালিক অ্যাসিড, সাইট্রিক অ্যাসিড যা শরীরের অ্যালকালি নামের রাসায়নিকের ভারসাম্য ঠিক রাখতে সহায়তা করে।
  • আম ত্বকের সৈন্দর্য্য বৃদ্ধি করে।
  • আম বিভিন্ন ধরনের ক্যান্সার যেমন- স্তন ক্যান্সার, কোলন ক্যান্সার, প্রোস্টেট ক্যান্সারের বিরুদ্ধ কাজ করতে বেশ কার্যকর।

সতর্কতা: কোন কিছুই বেশি খাওয়া উচিত নয় বিশেষ করে ডায়াবেটিস রোগীরা আম খাওয়ার আগে পুষ্টিবিদের পরামর্শ নিয়ে নিবেন।

লিচু

চমৎকার স্বাদের একটি মৌসুমী ফল লিচু। গ্রীষ্মকালীন এই ফলটি খুব কম সময় বাজারে থাকে। ফলটি ছোট বড় সকলের কাছেই খুব প্রিয়। পুষ্টি সমৃদ্ধ এই ফলটি নানা রকম রোগ থেকে আপনাকে রক্ষা করবে। তবে খুব বেশি খাওয়া ঠিক নয়।

লিচুর পুষ্টিগুণ ও উপকারিতা

লিচুর ফলের উপকারিতা

  • লিচু রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ায়।
  • বয়সের ছাপ পড়তে বাধা দেয় এবং ত্বক উজ্জল করে।
  • রক্তের উপাদান তৈরি করতে ভুমকিা রাখে কারন লিচুতে রয়েছে বিভিন্ন ভিটামিন ও নানা খনিজ উপাদান।
  • শরীরের বিভিন্ন ধরনের ব্যাথা দূর করে।
  • লিচু শরীরের ওজন বৃদ্ধি করে।

 

লিচুর ক্ষতিকর দিক

  • খালি পেটে লিচু খাওয়া ঠিক নয় কারন, খালি পেটে লিচু খেলে শরীরে বিষক্রিয়া হতে পারে।
  • মাত্রাতিরিক্ত লিচু খেলে শরীরের রক্তচাপ অস্বাভাবিকভাবে কমে যাওয়ার সম্ভাবনা থাকে।
  • বেশি পরিমান লিচু খেলে রক্তের গ্লুকোজ কমে যায়।

 

বেল

বেল একটি ঔষধী ফল। বেলের রয়েছে হাজারও উপকারিতা। অনেক সময় ঔষধের চেয়েও বেল শক্তিশালী ভুমিকা রাখে। গরমে বেলের শরবত খেতে সকলেই পছন্দ করেন। বেল কাঁচা পাঁকা উভয় অবস্থাতেই সমান উপকারী। কোষ্ঠকাঠিন্য, আমাশয়ে বেলের বিকল্প নাই। বেল পাতার রস, মধু ও গোল মরিচের গুঁড়া মিশিয়ে পান করলে জন্ডিস রোগ নিরাময় হয়।

 

বেলের উপকারিতা ও পুষ্টিগুণ

  • ডায়াবেটিস রোগিদের জন্য বেল বেশ উপকারী। পাঁকা বেলে মেথানল নামের একটি উপাদান থাকে, যা ব্লাড সুগার কমাতে দারুণ ভাবে কাজ করে। এক্ষেত্রে শরবত ছাড়া পাঁকা বেল খেতে হবে।
  • আলসারের ঔষধ হিসেবে বেল উপযোগী।
  • বেল কোষ্ঠকাঠিন্য কমাতে ভুমিকা রাখে।
  • শরীরে শক্তি ও রোগ প্রতিরোধের ক্ষমতা বাড়াতে বেল ভুমিকা রাখে।
  • নিয়মিত বেলের শরবত খেলে ব্লাড প্রেসার কমে যায়।
  • ক্যান্সার প্রতিরোধে বেল দারুণ ভুমিকা রাখে।
  • শরীরের বিভিন্ন ব্যাথা দূর করতে বেল খুব উপকারী।

 

কদবেল

টক স্বাদযুক্ত কদবেল মোটামুটি সকলের কাছেই পরিচিত। কদবেলে রয়েছে প্রচুর পরিমাণ পুষ্টি উপাদান।শরীরকে সুস্থ ও রোগ প্রতিরোধের ক্ষমতা বৃদ্ধি করতে কদবেল বেশ উপকারী। কাঁঠাল ও পেয়ারার প্রায় সমান খাদ্যশক্তি রয়েছে কদবেলে। আম, কাঠাল, লিচু, আমলকী, আনারস,পেঁপের চেয়ে তিন গুনের বেশি পুষ্টি উপাদান রয়েছে।

কদবেলের উপকারিতা ও পুষ্টিগুণ

কদবেলের উপকারিতা ও পুষ্টিগুণ

  • কদবেলে রয়েছে- পানীয়, খাদ্যশক্তি, খনিজপদার্থ, আমিষ, ক্যালসিয়াম, লৌহ, চর্বি, ভিটামিন-বি, ভিটামিন-সি
  • এটি দীর্ঘস্থায়ী কোষ্ঠকাঠিন্য ও দীর্ঘস্থায়ী আমাশয় দূর করে।
  • কদবেল রক্ত পরিষ্কার করতে ভুমিকা রাখে এবং রক্ত পরিষ্কার করতে সহায়তা করে
  • গলায় ঘা বা ক্ষত হলে ও ঘনঘন হেঁচকি উঠলে কদবেল খেলে দ্রুত সেরে যায়।
  • সর্দিকাশির জন্য বেশ উপকারী ।
  • এর টক মিষ্টি স্বাদ খাবারে রুচি রাড়াতে সহায়তা করে।
  • ব্রণ ও মেছতার সমস্যা সমাধানে কাঁচা কদবেলের রস মুখে মাখলে বেশ উপকার পাওয়া যায়।

Leave a Reply