You are currently viewing হাসির পিছনে লুকিয়ে ছিলো পুলিশ, ডিবির অমানবিক নির্যাতন
হাসির পিছনে লুকিয়ে ছিলো পুলিশ, ডিবির অমানবিক নির্যাতন

হাসির পিছনে লুকিয়ে ছিলো পুলিশ, ডিবির অমানবিক নির্যাতন

হাসির পিছনে লুকিয়ে ছিলো পুলিশ , ডিবির অমানবিক নির্যাতন আর ভয়ংকর অভিজ্ঞতা

হাসিমাখা ছবিটি তোলা হয় ২৬শে মার্চ ২০২১-এ। এর আগের দিন অর্থাৎ ২৫ শে মার্চ আনুমানিক ১১ঃ৩০-১২ টার মধ্যে পুরানো পল্টন মোড় থেকে গ্রেফতার হই। গ্রেফতারের পর থেকে অশালীন ভাষায় গালিগালাজ করে প্রিজনভ্যানে উঠায়। কিছুক্ষণ পর রমনা জোনের এডিসি হারুন প্রিজনভ্যানে ডুকে অকথ্য ভাষায় গালিগালাজ করে নির্যাতন করতে থাকে। বিশেষ করে বন্ধু নাহিদ উদ্দিন তারেক কে বেশী মারতে থাকে,ঐই সময় কথা বলায় Shishir Ahmed ভাইকে ও প্রচন্ডভাবে মারে। ঘন্টাখানেক পরে আমাদেরকে পল্টন থানায় নিয়ে আসে।

প্রিজনভ্যান থেকে নামানোর সময় আমাকে মারতে মারতে থানায় নিয়ে যায়। থানায় অবস্থানরত ডিউটি অফিসার নাম জিগ্যেস করে আর পিছন থেকে দুইজন তাদের ব্যবহৃত লাঠি দিয়ে আঘাত করে। পরবর্তীতে একজন এসআই আরেকজন কনস্টেবল আমাকে থানার গারদের নিয়ে যাওয়ার সময় সংগঠনের নাম ধরে গালি দিয়ে চড় থাপ্পর মারে।গারদ থেকে সন্ধ্যার দিকে জিগ্যাসবাবদ করার জন্য ২য় তলায় কনফারেন্স রুমে নেওয়া হয়। সেখানে ডিবি পুলিশ সহ পুলিশের বিভিন্ন উইংয়ের উচ্চ পর্যায়ের অফিসার ছিলেন। এক পর্যায়ে ডিবির একজন আমাকে বেদড়ক মারতে থাকে। আমার চখে ঘুষি মারে

চোখের চশমা ভেঙ্গে যায়,দুইটা লেন্স আলাদা হয়ে গেলে সেটা আমি নিচে খুঁজতেছি (চশমা ছাড়া আমি ক্লিয়ারলি দেখতে পাই না)। পরবর্তীতে আমাকে ফ্লোরে শোয়ায়ে বুট দিয়ে লাথি মারতে থাকে।বুট দিয়ে গলায় চাপ দিয়ে ধরে রাখে এক পর্যায় ডিবির আরেকজন অফিসার আমাকে বাঁচান। কিছুক্ষণ পরে গারদে নিয়ে যায়

আবার কয়েকদফা জিগ্যেস করার জন্য কনফারেন্স রুমে আনে। আনুমানিক রাত ১২ টার দিকে আমাদের ৬জনকে (নাজমুল,তারেক, Sakal Ahmed Rahul Islam , Sohel Mridha, Muntajul Islam) ডিবি কার্যালয় মিন্টু রোডে নেওয়ার জন্য গাড়িতে উঠানো হয়। গাড়ীতে উঠানোর সাথে সাথেই ডিবির একজন আমার বুকে ঘুষি মেরে চাপ দিয়ে ধরে রাখে। তখন নিঃশ্বাস নিতে কষ্ট হচ্ছিলো মনে হচ্ছে মরে যাবো। তোদেরকে খেয়ে দেওয়াই ব্যাপারনা খান***লারা অকথ্য ভাষায় গালিগালাজ করে। সোহেল মৃধা ভাইকে ও মারে। সেই সাথে সবাইকে জঘন্য ভাষায় গালিগালাজ তো ফ্রিতে চলছেই। তখন মনে হচ্ছিলো তারা সামরিক ট্রেনিংয়ের পাশাপাশি গালিগালাজের জন্য ও বিশেষ ট্রেনিং প্রাপ্ত। পরবর্তীতে অফিস রুমে নিয়ে চলে আরো নির্যাতন। এভাবে রাত কেটে যায়

সকাল ৯টার দিকে আমাদের ডিবি কার্যালয় থেকে মতিঝিল থানায় নিয়ে আসে। এখান থেকে ১০/১০ঃ৩০ টায় কোর্টে নিয়ে যায়, এর মধ্যে বলাবলি করতে শুনি এমন ধারা দিছি রাজনীতি পু*** দিয়ে বের হয়ে যাবে। পরে দেখলাম ১২ টা ধারা দিয়েছে।

আরও পড়তে পারেন–

কোর্টের হাজতে বসে ভাবতে থাকলাম বাহিরে আমার সহযোদ্ধাদের না কতোই টর্চার করছে (২৫শে মার্চ আমাদের শান্তিপূর্ণ বিক্ষোভ মিছিলে পুলিশ সন্ত্রাসীদের ন্যায় হামলা করে।

গ্রেফতারের আগ মুহূর্তে শুনেছি প্রায় অর্ধশতাধিক নেতাকর্মী আহত হয়ে বিভিন্ন হসপিটালে ভর্তি হয়েছে। বিশেষ করে নুর ভাই,কাজী,নেহাল,সূর্বনার কথা শুনেছিলাম) মনে মনে ভাবলাম স্বৈরাচারের বিরুদ্ধে স্লোগান দিচ্ছি এগুলো তো সহ্য করতেই হবে

আমিতো বড়ই ভাগ্যবান ইলিয়াস আলীর মতো গুম হয়নি আবরারের মতো খুন হইনি।

চেয়েছি আমার হাসিমাখা মুখ দেখে যেনো আমার সহযোদ্ধারা উৎসাহ পায়,তারা যেনো দ্বিগুন শক্তি নিয়ে স্বৈরাচারের বিরুদ্ধে কথা বলার শক্তি পায়, তারা যেনো দেশের সার্বভৌমত্ব রক্ষায়,দেশের মানুষের মুক্তির জন্য কথা বলতে থাকে।

সহযোদ্ধা ও ছোট ভাই Nazmul Hasan কথাগুলো লিখেছেন, পড়তে গিয়ে হাত কাঁপছিল। মোদী বিরোধী আন্দোলনে আমাদের সংগঠনের পুলিশের অন্যতম প্রধান টার্গেট ছিলাম আমি।যেটা আটককৃতদের মুখ থেকে জানতে পারি। তাদের সাথে যেটা ঘটেছে, হয়তো এর থেকেও জঘন্যতম কিছু আমার সাথে ঘটতে পারতো। আসলে, রাখে আল্লাহ মারে কে!!

ঘটনা:২৫শে মার্চ ২০২১

লিখা —২৬শে মার্চ ২০২২