You are currently viewing যে ভাবে নাটক সিনেমায় ইসলাম বিদ্বেষ ছড়ানো হয় ও আমার অভিজ্ঞতা
যে ভাবে নাটক সিনেমায় ইসলাম বিদ্বেষ ছড়ানো হয়

যে ভাবে নাটক সিনেমায় ইসলাম বিদ্বেষ ছড়ানো হয় ও আমার অভিজ্ঞতা

নাটক সিনেমায় ইসলাম বিদ্বেষ ও আমার অভিজ্ঞতা

আজ আমি বেশ কিছু ইসলাম বিদ্বেষ অভিজ্ঞতা অর্জণ করেছি জীবনে প্রথম শিল্পকলা একাডেমীতে একটি নাটক দেখে।

আজ একটি থিয়েটার গ্রুপে অভিনয় কর্মশালা শেষে ভার্সিটিতে যাব। সন্ধ্যা সাতটায় ভার্সিটির ক্লাস শুরু কিন্তু এখানেই পৌনে সাতটা বেজেগেল। তাই ভার্সিটিতে আর যাওয়া হলো না। যাক এখানে এক ঘন্টা ঘুরা-ফেরা করে বাসায় যাব।

এই যায়গাটি হল বাংলাদেশের শিল্প সংস্কৃতির কেন্দ্রস্থল। অর্থাৎ বাংলাদেশ শিল্পকলা একাডেমী। এখানে আমি সময় কাটাতে বা বিনোদনের জন্য আসি না। অভিজ্ঞতার জন্য, জনার জন্য, চেনার জন্য, বুঝার জন্য আসি। এখানে প্রতিদিন বিভিন্ন নাট্যদলের নাটক পঞ্চস্থ হয়। শত শত লোকজন এখানে টাকা খরচ করে টিকিট নিয়ে নাটক দেখে। এ ছাড়াও বিভিন্ন আলোচনা অনুষ্ঠান হয়। দু এক দিন বিনা টিকিটে নাটক দেখানো হয়।

আমারা কয়েকজন বন্ধু মিলে মঞ্চের হলের পাশে ভিতরে ছোফায় বসে কাগজে লেখা লেখির কাজ করছি। আমি কখনো এখানে নাটক দেখিনি তাই আমার একটা ইচ্ছা অনেকদিন থেকে কখন এখানে নাটক দেখব। গরিব মানুষ টাকা দিয়ে নাটক দেখব কেমনে। মনে মনে ভাবছি যখন দড়জা খুলে ভিতরে কেউ ঢুকবে তখন ঐ ফাঁকে একটু নাটক দেখে নিব। তখনই বসা থেকে উঠে দড়জার পাশে এসে দাড়ালাম দেখি কোনো দারোয়ান নেই একটু দড়জা খুলে চেয়ে দেখি মঞ্চে কিছু ব্যাক্তি বর্গ। একজন বক্তব্য দিচ্ছে। তখন দুই পা ভিতরে প্রবেশ করলাম চার মিনিট ওখানে দাড়িয়ে তাদের বক্তব্য শুনলাম। সেখানে দেখলাম এটিএম শামসুজ্জামান , একজন মন্ত্রী , আর কিছু ব্যাক্তিবর্গ। সেখানের দর্শক, ব্যানারের নাটকের নাম, আর তাদের বক্তব্য, খুব মনোযোগের সাথে পর্যবেক্ষণ করে বুঝলাম আজকে নাটক ফ্রী মাগনা দেখাবে। এই সুযোগটা আজ কাজে লাগাই তাই ভিতরে গিয়ে চেয়ারে বসলাম।

আরও পড়তে পারেন–কী ভাবে অন্যের সমালোচনা করবেন? – আলানূর হোসাঈন

এটি এম সামসুজ্জামান তার আলোচনায় একটা কথা বলেছেন যা আমি খাতায় নোট করে রাখলাম। তিনি বলেছেন, ’মুরগিতে ডিম পেরে কক কক করে ক্যান? সবাইকে জানানোর জন্য। আরেকটা কথা বলেছেন, তাকে একজন বলেছেন, ’ব্যবসার মুলধন যদি টাকা হয়, তাহলে লেখকের মূলধন হলো মানুষ’।

নাটকের নামের পাশে শ্লোগান ছিল ’সাম্প্রদায়ীক সন্ত্রাসী মৌলবাদীর বিরুদ্ধে’। এই শ্লোগান দেখে নাটক দেখার আগ্রহ আরো বেড়ে গেলো।

আমি হলে প্রবেশ থেকে শেষ পর্যন্ত পর্যবেক্ষণ করেছি। নাটকে একজন মুক্তি যোদ্ধা যার এক পা খোঁড়া, তার একজন নাতনী ২২ বছর বয়স হবে। একজন এলাকার চেয়ারম্যান, পরনে পাঞ্জাবী মুখে দাড়ি তার সহযোগীরও সেইম পাঞ্জাবী, টুপি। কিন্তু অভিনয়ে তাদের চরিত্র দিয়েছে খুবই খারাপ। যাতে মানুষের মনে দাড়ি, টুপি, পাঞ্জাবীর প্রতি ঘৃণা, বিদ্বেষ তৈরি হয়। তাদের খারাপ চরিত্র দিয়ে বিশ্বাস করানো যে তারা সমাজের খুব খারাপ মানুষ খুবই ঘৃণিত। নাটকটিতে দেখনো হয় এরা বিভিন্ন সময় খুব খারাপ আচরণ করে নারীদের সাথে। টাকা দিয়ে বিভিন্ন জনকে দিয়ে বিভিন্ন কাজ করায়। এরাই আবার সমাজের প্রধান বিচারকর্তা। একপ্রকার এরা ভালোর মুখশে খারাপ কাজ করে। এরা মুক্তি যোদ্ধার নাতনীকে বিভিন্ন প্রলোবন দেখায়। মেয়েটির নাম রাখা হয় ’মাটি’। সে বলে আমি বাংলাদেশের মাটি আমাকে দিয়ে খারাপ কাজ করাতে পারবেনা বলে, এই বলতে বলতে চেয়ারম্যানকে চড় মেরে তাড়িয়ে দেয় ।

নাতনী তার দাদাকে এই ঘটনা বলল । তখন দাদা বলল, তুমি ভুল কাজ করলে তুমি জানো ওরা খুব ভয়ানক ও খারাপ মানুষ ছিল, ৭১ সালের শান্তি কমিটির চেয়ারম্যান। তোমার বাবা মাকে ওরা নির্মম ভাবে খুন করেছে। এই কথা শুনে নাতনী তার বাবা মায়ের খুনের প্রতিশোধ নিতে চায়। অন্যদিকে চেয়ারম্যান এক বাটপারকে টাকা দিয়ে বলে ফাঁক বুঝে তার নাতনীর ঘরের চকির তলে লুকিয়ে থাকবে। কৌশলমত চেয়ারম্যান চৌকিদার নিয়ে ঐবাড়িতে এসে মুক্তিযোদ্ধাকে শাসাতে থাকে, এবং বলে নাতনিকে দিয়ে ভালোই ব্যাবসা করছ। চৌকিদার ঘর থেকে ঐ লোকটাকে বের করে আনে। এবং এলাকায় মাইকিং করে তাদের বিচারের আয়োজন করে প্রধান বিচরক হলেন চেয়ারম্যান। তার পাশে থাকে একজন ফতোয়াবাজ জুব্বা টুপি দাড়িয়াল এক মাওলানা। ছেলের ১০০ বেত্রাঘাত মেয়েকেও তাই ।

ছেলেটি মাইরের কথা শুনে ভয় পেয়ে বলেদেয় যে, চেয়ারম্যান আমাকে দিয়ে এসব করিয়েছেন। তখন ফতোয়াবাজ বলেন, আপনার নামে মিথ্যা বলায় ওকে ২০০ বেত্রাঘাত দিতে হবে। এর মধ্যে ছেলের মা প্রতিবাদ করে বলে এই সেই টাকা যে টাকা চেয়ারম্যান দিয়েছিল । চেয়ারম্যান খুব বেকায়দায় পড়েগেল। এই দৃশ্য দেখে সবাই খেঁপে গেল। তখন মুক্তিযোদ্ধা দাদা বলল, কুত্তার বাচ্চা তুই ছিল রাজাকার শান্তি কমিটির চেয়ারম্যান আর আর এই মোল্লা ছিল মেমবার। এই বলে মেয়েটিকে দিয়ে চেয়ারম্যানের গালে চড় দেয়ায় , জুতা দিয়ে পিটাতে চায়। তোদের একটাকেও ছাড়া হবেনা রাজাকার জামায়াত এই মাটিতে তোদের ঠাঁই হবে না।। (প্রকৃত সত্য হলো খারাপ চরিত্রগুলোর সাথে রাজাকার, শান্তিবাহীনী, ধর্ষক এদের কোন সম্পর্ক ছিলো না। বরং ইতিহাস পর্যবেক্ষণ করলে দেখা যায় এসব চরিত্রের লোকজনের কোন দাড়ি, টুপি, পাঞ্জাবী ছিলো না।) নাটক, আলোচক এবং দর্শকদের

পর্যবেক্ষণ করে দেখেছি ইসলাম, ধর্ম, হুজুর দাড়ি, টূপি পাঞ্জাবীর প্রতি তাদের চড়ম বিদ্বেষ। তাদের সংলাপে দেশের প্রতি কঠিন প্রেম । তরুন প্রজন্ম যারা ইসলাম, মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ে অজ্ঞ এরা তাদেরকে এসব নাটক অভিনয়ের মাধ্যমে মগজ ধোলাই করছে । এ সব সামাজিক , রাজনৈতিক , ধর্মীয় নাটক মানুষের জীবনে চড়ম প্রভাব ফেলে। তখন মানুষ যা দেখে তাকেই সত্য মেনে বিশ্বাস করে। আমার আশে-পাশে যারা বসা ছিল তাদেরকেও খানিক পর্যবেক্ষণ করেছি। বুঝতে পেরেছি এসব কর্মীদের মাঝে প্রবল ইস্পৃহা। এরা চেতানাকে সতেজ রাখে লালন করে । অর্থ সময় ধৈর্য্য চিন্তা সাধনা ব্যায় করে। যা আমি সঠিক পথের দিশারীদের মাঝে এখনও পাইনি।এরা নিজেদের সুবিধা মতো ইতিহাস লিখে ইসলাম বিদ্বেষের বীজ রোপণ করছে প্রজন্ম থেকে প্রজন্মের মাঝে।

এভাবেই বাংলাদের প্রতিটি নাটক, সিনেমায় তারা খারাপ চরিত্রগুলোকে দাড়ি, টুপি, পাঞ্জাবী ইত্যাদি ধর্মীয় রুপ দিয়ে ইসলামকে কটাক্ষা করে। তাদের বলাহয় তারা ধর্মন্ধ, মৌলবাদী, অশিক্ষিত, আনস্মার্ট, গেয়োঁ ভুত, ইত্যাদি বিশেষণে প্রচার করে। এসব ইসলাম বিরোধী চক্র সুকৌশলে তাদের পরিকল্পনা বাস্তবায়ন করে চলেছে। আর তাদের সাথেই সুর মিলাচ্ছে আওয়ামীলীগের অন্ধ অনুসারীরা। এদের জন্য বাংলাদেশের ভবিষ্যৎ খুবই অন্ধকার। এরা মিথ্যাকেই তাদের হাতিয়ার বানাচ্ছে। যারা সত্য জানে না তারা জানতে চয় না আর যারা জানে তারা জেনেও নাজানর ভান করে মিথ্যাকেই সত্য বলে প্রচার করে। মহান রব এদের হেদায়েত দান করুন। আর যদি তাদের কপালে হেদায়েত না থাকে তাদের ধংস করে দিন। আমিন।

ভ্রাতৃত্বের করুণ পরিণতি বনাম অশান্ত পৃথিবী- আলানূর হোসাঈন

একটা জাতি এতো বিভক্তি কেন?-আলানূর হোসাঈন