কার বিচার করলেন আপনারা!
‘শিকদার’ না ‘সাঈদীর’??
আমার পরম শ্রদ্ধেয় আব্বা আল্লামা দেলাওয়ার হোসাইন সাঈদী রাহিমাহুল্লাহ’র বিরুদ্ধে আওয়ামী জালিম সরকার উত্থাপিত তথাকথিত যুদ্ধাপরাধ অভিযোগের মূল বিষয় ছিল, আমার আব্বার নামের বিষয়টি। সরকার বলছে, আল্লামা সাঈদীর নাম শুরুতে ছিল ‘দেলোয়ার শিকদার’ বা ‘দেলু শিকদার’। স্বাধীনতার পর তিনি নাম বদল করে ‘দেলাওয়ার হোসাইন সাঈদী’ হয়েছেন। এবং তারা সাঈদী নামধারী দেলোয়ার শিকদারের বিচার করছেন।
আর আমরা হাজারবার ট্রাইব্যুনালে দালিলিক প্রমানাদি সহকারে বলেছি, তিনি কখনোই ‘দেলোয়ার শিকদার’ ছিলেন না, জন্মলগ্ন থেকেই তিনি ‘দেলাওয়ার হোসাইন সাঈদী।’
এর প্রমান সহকারে আমি মাসুদ সাঈদী নিজে ট্রাইবুনালে ডিফেন্স স্বাক্ষী নম্বর ১৩ হিসেবে আমার আব্বার ১৯৫৭ সালের দাখিল (এসএসসি) পরীক্ষার সার্টিফিকেট, ১৯৬৪ সালে (বাংলা ১৩৬৯ সাল) যশোরে আল্লামা সাঈদীর একটি মাহফিলের লিফলেট এবং ১৯৬৯ সালে বি.এন কাঠি হাই স্কুলের অষ্টম শ্রেণী থেকে আমার ছোট চাচা (বর্তমানে মৃত) মুস্তাফা কামাল সাঈদীর স্কুল ট্রান্সফার সার্টিফিকেট (যেখানে আমার দাদার নাম ইউসুফ সাঈদী হিসেবে উল্লেখ আছে) কথিত ‘আন্তর্জাতিক’ অপরাধ ট্রাইবুনালে উপস্থাপন করেছিলাম। যেখানে প্রত্যেকটি ডকুমেন্ট প্রমান করছে আমার পিতার নাম জন্মলগ্ন থেকেই “দেলাওয়ার হোসাইন সাঈদী” এবং আমার দাদার নাম “ইউসুফ সাঈদী।”
আদালতে দাখিলকৃত আমাদের প্রত্যকটি ডকুমেন্টই ছিল মহান স্বাধীনতা যুদ্ধেরও বহু বছর আগের। এর কোনোটি স্বাধীনতা যুদ্ধের ১৪ বছর আগের, কোনোটি ৭ বছর আগের আবার কোনোটি যুদ্ধ শুরুর ২ বছর আগের।
আরও পড়তে পারেন–আমার দেখা আল্লামা দেলাওয়ার হোসাইন সাঈদী (রহ:)
যে ব্যক্তি স্বাধীনতা যুদ্ধের ১৪ বছর আগেও ‘দেলাওয়ার হোসাইন সাঈদী’, সেই ব্যক্তি কী করে ৭১ সালে ‘দেলোয়ার শিকদার’ বা ‘দেলু শিকদার’ হলেন?
সরকারের আজ্ঞাবহ প্রসিকিউটর ও তদন্ত সংস্থার সদস্যরা আমাদের সেই দালিলিক প্রমানাদি সামান্যতম আমলে না নিয়েই কোরআনের আওয়াজকে স্তব্ধ করা ও কোরআনের পাখিকে জনগন থেকে বিচ্ছিন্ন করার নীল নকশা বাস্তবায়নের জন্যই আল্লামা দেলাওয়ার হোসাইন সাঈদীকে ‘দেলোয়ার শিকদার’ বা ‘দেলু শিকদার’ বানিয়ে তার উপর হাজারো অপরাধের বোঝা ক্ষমতার জোড়ে চাপিয়ে দিয়েছে।
আদালত আমাদের দালিলিক প্রমানাদি আমলে নেননি, হয়তো প্রয়োজন বোধ-ই করেননি। কেননা, স্কাইপি কেলেংকারী ফাঁস হওয়ার পর বিশ্ববাসীর মতো আমরাও জানতে পেরেছিলাম- তথাকথিত এই বিচার ও বিচারের ফায়সালা (রায়) কোনকিছুই বাংলাদেশের মাটিতে হচ্ছেনা। এর সবকিছুই সরকার আর তাদের দোসরদের ভিনদেশী প্রভুর ইশারা ইংগিত আর নীল নকশায় পরিচালিত হচ্ছে। তাই কে ‘সাঈদী’ আর কে ‘শিকদার’- তা দেখার বা যাচাই বাছাই করার সময় আর প্রয়োজন কোনটাই তাদের ছিল না। কিন্তু আমরা বিশ্বাস করি সকল বিচারকের শ্রেষ্ঠ বিচারক মহান আল্লাহ রাব্বুল আলামীনের আদালতে আমাদের সকল বক্তব্য আমলে নেয়া হবে। সেদিন আমরা হব বাদী আর এরা সবাই হবে আসামী। ইনশাআল্লাহ।
কোনো সন্দেহ নাই, সর্বশ্রেষ্ঠ বিচারক আল্লাহ সুবহানাহু ওয়া তায়ালার পবিত্র আদালতে আল্লামা দেলাওয়ার হোসাইন সাঈদী রাহিমাহুল্লাহ’র উপর যে যতটুকুন জুলুম করেছে তার পুঙ্খানুপুঙ্খু হিসাব জালিমেরা সেদিন পেয়ে যাবে। ইনশাআল্লাহ।
#এই_পোষ্টে_সংযুক্ত
০১. ১৯৫৭ সালে আল্লামা সাঈদীর দাখিল পরীক্ষার সার্টিফিকেট।
০২. ১৯৬৪ সালে আল্লামা সাঈদীর তাফসীর মাহফিলের লিফলেট।
০৩. ১৯৬৯ সালে আমার চাচার স্কুল ট্রান্সফার সার্টিফিকেট।