You are currently viewing ডেঙ্গু রোগের লক্ষণ, কারন, প্রতিকার, করনীয় ও ডেঙ্গু জ্বরের চিকিৎসা
ডেঙ্গু রোগের লক্ষণ

ডেঙ্গু রোগের লক্ষণ, কারন, প্রতিকার, করনীয় ও ডেঙ্গু জ্বরের চিকিৎসা

বাংলাদেশে প্রতি বছর ডেঙ্গু জ্বর একটি ভয়াবহ আকার ধারণ করে। প্রতি বছরের ন্যায় এবরও বেড়েই চলছে ডেঙ্গুতে আক্রান্ত মৃতের সংখ্যা। শনিবারও ছয় জনের মৃত্যু হয়েছে। এ নিয়ে চলতি বছর ডেঙ্গুতে মৃতের সংখ্যা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ১৩৪ জনে। ভয় ধরাচ্ছে দৈনিক আক্রান্তের সংখ্যাও। আমরা একটু সচেতন ও সাবধানতা অবলম্বন করলে ডেঙ্গুর আক্রমণ থেকে বাঁচতে পারবে। আজকের আর্টিকেলে আলোচনা করা হলো ডেঙ্গু কি? ডেঙ্গু রোগের লক্ষণ ও প্রতিকার সহ ডেঙ্গু হলে করণীয় কি ইত্যাদি।

ডেঙ্গু কি?

ডেঙ্গু একটি ভাইরাসের নাম যা এডিস মশা বহণ করে থাকে। যখন সেই মশা কাউকে কামড়ায়, তখন মশার লালার মাধ্যমে ভাইরাস ত্বকের ভিতর প্রবেশ করে। এবং সেই ভাইরাস  শ্বেত রক্তকোষে প্রবেশ করে ধীরে ধীরে শরীরের সর্বত্র ছড়িয়েপরে। ভাইরাস সংক্রমণের তিন থেকে পনেরো দিনের মধ্যে সচরাচর ডেঙ্গু জ্বরের উপসর্গগুলো দেখা দেয়।

এবার এই আক্রান্ত ব্যক্তিকে কোনো জীবাণুবিহীন এডিস মশা কামড়ালে সেই মশাটি ডেঙ্গু জ্বরের জীবাণুবাহী মশায় পরিণত হয়। এভাবে একজন থেকে অন্যজনে মশার মাধ্যমে ডেঙ্গু ছড়িয়ে থাকে।

  • ডেঙ্গু ভাইরাস চার ধরনের হয়। তাই ডেঙ্গু জ্বরও চারবার হতে পারে।
  • তবে যারা আগেও ডেঙ্গু জ্বরে আক্রান্ত হয়েছে, তাদের ক্ষেত্রে পরবর্তী সময়ে রোগটি হলে সেটি মারাত্মক হওয়ার ঝুঁকি থাকে।

ডেঙ্গু রোগের লক্ষণ:

সাধারণভাবে ডেঙ্গুর লক্ষণ হচ্ছে জ্বর। ১০১ ডিগ্রি থেকে ১০৩ ডিগ্রি তাপমাত্রা থাকতে পারে। জ্বর একটানা থাকতে পারে, আবার ঘাম দিয়ে জ্বর ছেড়ে দেয়ার পর আবারও জ্বর আসতে পারে।

ডেঙ্গুর অন্যতম লক্ষণ শরীরে ব্যথা। সঙ্গে মাথাব্যথা, চোখের পেছনে ব্যথা হতে পারে। সঙ্গে চামড়ায় লালচে দাগ বা র‌্যাশ থাকতে পারে।

শরীর ঠান্ডা হচ্ছে মনে হতে পারে। ক্ষুধা কমে যাওয়া, শরীর ম্যাজম্যাজ করার লক্ষণও দেখা দিতে পারে।

সিভিয়ার ডেঙ্গুর ক্ষেত্রে তীব্র পেট ব্যথা, পেট ফুলে যাওয়া, রক্তবমি, মাড়ি থেকে রক্তক্ষরণ, ত্বকের নিচে রক্তক্ষরণ, শ্বাসকার্য কঠিন বা দ্রুত হওয়া, শরীর ঠান্ডা অনুভব বা ঘাম হওয়া, দ্রুত নাড়ি স্পন্দন এবং ঘুম ঘুম ভাব/চেতনা হারানো।

ডেঙ্গুর খারাপ লক্ষণ

জ্বর চলে যাওয়ার পরে সমস্যাগুলো দেখা দেয়।

অতিরিক্ত শরীর খারাপ লাগা, অতিরিক্ত অসুস্থ।

পেট ব্যথা, বমিভাব, তার সাথে প্রেশার কমে যাওয়ার লক্ষণ।

রক্তক্ষরণের নমুনা দেখা যায়—মাড়ির গোড়ায় বা কাশির সাথে বা বমির সাথে।

এসব লক্ষণগুলো দেখা দিলে দ্রুত চিকিৎসকের পরামর্শ নিতে হবে

ডেঙ্গু রোগের লক্ষণ ও প্রতিকার

ডেঙ্গু (DENG-gey) জ্বর হল একটি মশা-বাহিত ভাইরাস-ঘটিত রোগ। বেশীর ভাগ ক্ষেত্রে প্রথমবার ডেঙ্গু-তে আক্রান্ত রোগীর বিশেষ কোন উপসর্গ বা লক্ষণ দেখা যায় না। শুধু অল্প কিছু ক্ষেত্রেই রোগের প্রভাব গভীর হয়। ডেঙ্গুর সাধারণ উপসর্গ গুলি হোল –

উচ্চ জ্বর (40°C/104°F)

তীব্র মাথার যন্ত্রণা

চোখের পিছনে ব্যথার অনুভূতি

মাংসপেশি এবং অস্থি সন্ধি (bone) তে যন্ত্রণা

বমিভাব । ডেঙ্গু রোগের লক্ষণ ও প্রতিকার

মাথাঘোরা

গ্রন্থি ফুলে যাওয়া

ত্বকে বিভিন্ন স্থানে ফুসকুড়ি

এই উপসর্গ গুলি রোগ সংক্রমণের 4 থেকে 10 দিনের মধ্যে দেখা দেয়। সাধারণত 2 থেকে 7 দিন পর্যন্ত উপসর্গ স্থায়ী হতে পারে। দ্বিতীয় বার ডেঙ্গু তে আক্রান্ত হলে রোগের ভয়াভয়তা বৃদ্ধি পায়। সেই কারনে পূর্বে ডেঙ্গু তে আক্রান্ত ব্যক্তিদের অতিরিক্ত সতর্কতা মেনে চলতে বলা হয়।

বাড়িতে কী করবেন

১.পরিপূর্ণ বিশ্রামে থাকতে হবে। ডেঙ্গু রোগের লক্ষণ ও প্রতিকার

২.প্রচুর তরলজাতীয় খাবার গ্রহণ করতে হবে। ডাবের পানি, লেবুর শরবত, ফলের জুস এবং খাবার স্যালাইন পান করুন একটু পরপর।

কী করবেন নাহ

১.ভারি কাজ করবেন নাহ

২. প্রচন্ড রোদে বেশিক্ষণ থাকবেন নাহ।

ডেঙ্গু নির্ণয়ে প্রাথমিক পরীক্ষা সমূহ :

  • CBC, With Platelet Count
  • NS1 Antigen for Dengue
  • Dengue Antibody (IgM & IgG)

ডেঙ্গুর জ্বরের উপসর্গ  

প্রচণ্ড পেট ব্যথা

ক্রমাগত বমি হওয়া

মারি বা নাক থেকে রক্তপাত

প্রস্রাবে এবং মলের সাথে রক্তপাত

অনিয়ন্ত্রিত পায়খানা

ত্বকের নিচে রক্তক্ষরণ (যা ক্ষতের মতো দেখাতে পারে)

দ্রুত শ্বাস প্রশ্বাস

ক্লান্তি

বিরক্তি এবং অস্থিরতা

ডেঙ্গুর জীবাণু মানুষের শরীরের রক্তনালীগুলিকে ক্ষতিগ্রস্ত করে। ফলে রক্তনালীতে ছিদ্র তৈরি হয়। রক্ত রবাহে ক্লট-তৈরির কোষগুলির (প্ল্যাটলেট) সংখ্যা কমে যেতে থাকে। এর জন্য মানুষের শরীরে শক লাগা, শরীরের বিভিন্ন অংশ থেকে রক্তপাত, যে কোন অঙ্গের ক্ষতি এবং শেষ পর্যন্ত রোগীর মৃত্যু হতে পারে। রোগীর শরীরে গুরুতর উপসর্গ গুলির কোন একটি দেখা দিলে অতি অবশ্যই দ্রুত ডাক্তারের সাথে যোগাযোগ করা উচিত বা রোগী কে নিকটবর্তী হসপিটালে ভর্তি করানো দরকার। অন্যথায় রোগীর প্রাণসংকট হতে পারে।

ডেঙ্গু হলে করণীয় : কখন হাসপাতালে যেতে হয়

ডেঙ্গু হলে কী ধরনের চিকিৎসা নেবেন, বাসায় না হাসপাতালে থাকবেন—নির্ভর করে এর ধরন বা ক্যাটাগরির ওপর। ডেঙ্গু জ্বরের তিনটি ধরন বা ক্যাটাগরি আছে—‘এ’, ‘বি’ ও ‘সি’। প্রথম ক্যাটাগরির রোগীরা স্বাভাবিক থাকে। তাদের শুধু জ্বর থাকে। অধিকাংশ ডেঙ্গু রোগী ‘এ’ ক্যাটাগরির। তাদের হাসপাতালে ভর্তি হওয়ার কোনো প্রয়োজন নেই। বাড়িতে বিশ্রাম নেওয়াই যথেষ্ট।

‘বি’ ক্যাটাগরির ডেঙ্গু রোগীদের হাসপাতালে ভর্তি হওয়া লাগতে পারে। কিছু লক্ষণ, যেমন পেটে ব্যথা, বমি, ডায়াবেটিস, স্থূলতা, অন্তঃসত্ত্বা, জন্মগত সমস্যা, কিডনি বা লিভারের সমস্যা থাকলে হাসপাতালে ভর্তি হওয়াই ভালো।

‘সি’ ক্যাটাগরির ডেঙ্গু জ্বর সবচেয়ে খারাপ। এতে লিভার, কিডনি, মস্তিষ্ক ক্ষতিগ্রস্ত হতে পারে। কিছু ক্ষেত্রে নিবিড় পরিচর্যা কেন্দ্র বা আইসিইউর প্রয়োজন হতে পারে।

আরও পড়তে পারেন–জ্বর, সর্দি, কাশি, গলাব্যাথা হলে করণীয়-ফাতেমা জাহান লুবনা

ডেঙ্গু হলে যেসব ঔষধ খাওয়া উচিত নয়

অধ্যাপক তাহমিনা বলেন, ”ডেঙ্গু জ্বর হলে প্যারাসিটামল খাওয়া যাবে। স্বাভাবিক ওজনের একজন প্রাপ্ত বয়স্ক ব্যক্তি প্রতিদিন সর্বোচ্চ চারটি প্যারাসিটামল খেতে পারবে।”

চিকিৎসকরা বলছেন, প্যারাসিটামলের সর্বোচ্চ ডোজ হচ্ছে প্রতিদিন চার গ্রাম। কিন্তু কোন ব্যক্তির যদি লিভার, হার্ট এবং কিডনি সংক্রান্ত জটিলতা থাকে, তাহলে প্যারাসিটামল সেবনের আগে অবশ্যই ডাক্তারের পরামর্শ নিতে হবে।

ডেঙ্গু জ্বরে আক্রান্ত হলে গায়ে ব্যথার জন্য অ্যাসপিরিন জাতীয় ঔষধ খাওয়া যাবে না। ডেঙ্গুর সময় অ্যাসপিরিন জাতীয় ঔষধ গ্রহণ করলে রক্তক্ষরণ হতে পারে।

ডেঙ্গু কোনো ছোঁয়াচে রোগ নয়। কেবল ভাইরাসবাহী এডিস মশার কামড়েই ডেঙ্গু হয় ।

ডেঙ্গু জ্বরের লক্ষণ কি?

জ্বর , মাথা ব্যাথা, মাথা ঘোরানো, শরীর ঘেমে যাওয়া, বমি বমি ভাব , শরীরের চামড়া লালচে দাগ হওয়া বা ফুসকুড়ি । সাধারণত চোখের পিছনে ব্যথা , পেশী বা জয়েন্ট ব্যথা ।

ডেঙ্গু হলে করণীয় কি ?

১.আপনার যদি জ্বর হয় বা ডেঙ্গুর লক্ষণ থাকে তাহলে একজন স্বাস্থ্যসেবা প্রদানকারীর সাথে যোগাযোগ করুন।

২.হাইড্রেটেড থাকার জন্য প্রচুর পরিমাণে তরল পান করুন ।

৩.যতটা সম্ভব বিশ্রাম করুন ।

ডেঙ্গু জ্বরে কোন খাবার দ্রুত আরোগ্য লাভ করতে সাহায্য করে …

পেঁপে পাতা , ডালিম , নারিকেলের পানি , ব্রকলি , ভেষজ চা ,লেবুর রস , ফলের জুস , দই , খাবার স্যালাইন এবং প্রচুর পরিমাণ পানি ।

*****বৃষ্টির পানি , বাড়ির ছাদে , বারান্দা , রাস্তাঘাটে বা কোন পাত্রে যদি পানি জমে সেই পানিতে এসিড মশা বিস্তার ঘটে। তাই কোথাও পানি জমে থাকলে শুকিয়ে যাওয়ার ব্যবস্থা করবেন যার ফলে এসিড মশা থেকে মুক্ত থাকতে পারবেন।***** ডেঙ্গু হলে করণীয়

ডেঙ্গু হলে কখন চিকিৎসকের কাছে যাবেন?

যে কোন ধরনের জ্বরই ৩দিনের বেশি হলে চিকিৎসকের কাছে যেতে হবে

ডেঙ্গু প্রতিরোদে বাচ্চাদের জন্য কি করনীয় :-

মশারীর ব্যবস্থা করতে হবে

Odomos ক্রিম অথবা লোশন লাগাতে পারেন

জ্বর হলে প্যারাসিটামল খাওয়া যাবে?স্বাভাবিক ওজনের একজন প্রাপ্তবয়স্ক ব্যক্তি প্রতিদিন সর্বোচ্চ আটটি প্যারাসিটামল খেতে পারবে। কিন্তু কোনো ব্যক্তির যদি লিভার, হার্ট এবং কিডনি–সংক্রান্ত জটিলতা থাকে, তাহলে প্যারাসিটামল সেবনের আগে অবশ্যই চিকিৎসকের পরামর্শ নিতে হবে।

কোন ধরনের মেডিসিন নেয়া যাবে নাহ?

ডেঙ্গু জ্বরে আক্রান্ত হলে গায়ে ব্যথার জন্য অ্যাসপিরিন, ক্লোফেনাক, আইবুপ্রোফেন–জাতীয় ওষুধ খাওয়া যাবে না। ডেঙ্গুর সময় এ–জাতীয় ওষুধ গ্রহণ করলে রক্তক্ষরণ হতে পারে।

প্লাটিলেট নিয়ে উদ্বিগ্ন হওয়ার কোনো প্রয়োজন আছে কি?

জ্বরের ক্ষেত্রে প্লাটিলেট এখন আর মূল বিষয় নয়। প্লাটিলেট হিসাব নিয়ে উদ্বিগ্ন হওয়ার কোনো প্রয়োজন নেই।

প্লাটিলেট কাউন্ট ১০ হাজারের নিচে নামলে বা শরীরের কোনো জায়গা থেকে রক্তপাত হলে প্রয়োজন বোধে প্লাটিলেট বা ফ্রেশ রক্ত দেওয়া যেতে পারে। এ ধরনের পরিস্থিতি খুবই কম দেখা যায়।

ডায়াবেটিস এর মেডিসিন কি সেবন করা যাবে?

জ্বি যাবে।

এন্টিবায়োটিক কি সেবন করা যাবে:- জ্বি নাহ।

হেমোরেজিক জ্বর কি– Dengue Hemorrhagic Fever

  • এই অবস্থাটা সবচেয়ে জটিল। এই জ্বরে ক্লাসিক্যাল ডেঙ্গু জ্বরের লক্ষণ ও উপসর্গের পাশাপাশি আরো যে সমস্যাগুলো হয়ঃ
  • শরীরে বিভিন্ন অংশ থেকে রক্ত পড়া শুরু হয়।
  • এই রোগের বেলায় অনেক সময় বুকে পানি, পেটে পানি ইত্যাদি উপসর্গ দেখা দিতে পারে।
  • অনেক সময় লিভার আক্রান্ত হয়ে রোগীর জন্ডিস, কিডনিতে আক্রান্ত হয়ে রেনাল ফেইলিউর ইত্যাদি জটিলতা দেখা দিতে পারে।

ডেঙ্গু হলে করণীয়

ডেঙ্গু জ্বরের চিকিৎসা

ডেঙ্গুরচিকিৎসার বিশেষ কোন ওষুধ বা প্রতিষেধক এখনো পর্যন্ত আবিষ্কৃত হয়নি। গবেষকরা কাজ করে যাচ্ছেন। বেশিরভাগ ক্ষেত্রে ডেঙ্গুর সংক্রমণ ঘরোয়া চিকিৎসাতেই কমে যায়। চিকিৎসকরা পেরাসিটামিল জাতীয় ওষুধ দিয়ে যন্ত্রণা এবং জ্বরের মাত্রা নিয়ন্ত্রণ করেন। Non-steroidal প্রদাহ-প্রতিরোধী ওষুধের রক্ত ক্ষরণের সম্ভাবনা নিয়ন্ত্রণ করা হয়। রোগের মাত্রা অতিরিক্ত ভাবে বৃদ্ধি পেলে রোগী কে হসপিটালে ভর্তি এবং ডাক্তারি নজরদারি তে রাখা একান্ত জরুরী। হসপিটালে ডেঙ্গু রোগীদের শিরায় (IV) ইলেক্ট্রোলাইট (লবণ) তরল দেওয়া হয়। এতে শরীরে প্রয়োজনীয় জল এবং লবণের যোগান বজায় থাকে।

ডেঙ্গুতে প্লেটলেটের সংখ্যা 

ডেঙ্গুজ্বরের ক্ষেত্রে প্লাটিলেট এখন আর মূল বিষয় নয়। প্লাটিলেট হিসাব নিয়ে উদ্বিগ্ন হওয়ার কোনো প্রয়োজন নেই।

প্লাটিলেট কাউন্ট ১০ হাজারের নিচে নামলে বা শরীরের কোনো জায়গা থেকে রক্তপাত হলে প্রয়োজন বোধে প্লাটিলেট বা ফ্রেশ রক্ত দেওয়া যেতে পারে। এ ধরনের পরিস্থিতি খুবই কম দেখা যায়। স্বাভাবিক স্বাস্থ্য সম্পন্ন একজন প্রাপ্ত বয়স্ক একজন মানুষের প্লেটলেট সংখ্যা হয় 150,000 থেকে 450,000 প্লেটলেট প্রতি microliter রক্তে। উচ্চ-ঝুঁকিপূর্ণ ডেঙ্গু-আক্রান্ত রোগীদের এই সংখ্যা 20,000 এর নিচে চলে যেতে পারে। এই সময় রক্তপাতের ঝুঁকি সর্বোচ্চ হয়। মাঝারি ঝুঁকি পূর্ণ রোগীদের প্লেটলেট সংখ্যা 21-40,000/cumm মধ্যে থাকে। অবশ্য ডেঙ্গু সংক্রমণে অনেক ক্ষেত্রেই প্লেটলেট সংখ্যার দ্রুত পরিবর্তন হয়। প্লেটলেট কাউন্ট কম এবং রক্তক্ষরণের লক্ষণ প্রকাশ পেলে তবেই প্লেটলেট প্রতিস্থাপনের প্রয়োজন হয়। অন্যথায় সংক্রমণ কমার সাথে সাথে আমাদের শরীরে স্বাভাবিক ভাবে প্লেটলেট কাউন্ট বৃদ্ধি পায়। এর জন্য প্রয়োজন প্রচুর পরিমাণে ভিটামিন সি, ভিটামিন ই, ভিটামিন কে, ফোলেট এবং পটাসিয়াম সমৃদ্ধ খাদ্য গ্রহন।

কখন হাসপাতালে যাবেন

ডেঙ্গু হলে কী ধরনের চিকিৎসা নেবেন, বাসায় না হাসপাতালে থাকবেন—নির্ভর করে এর ধরন বা ক্যাটাগরির ওপর।  জ্বরের তিনটি ধরন বা ক্যাটাগরি আছে—‘এ’, ‘বি’ ও ‘সি’। প্রথম ক্যাটাগরির রোগীরা স্বাভাবিক থাকে। তাদের শুধু জ্বর থাকে। অধিকাংশ রোগী ‘এ’ ক্যাটাগরির। তাদের হাসপাতালে ভর্তি হওয়ার কোনো প্রয়োজন নেই। বাড়িতে বিশ্রাম নেওয়াই যথেষ্ট।

‘বি’ ক্যাটাগরির  রোগীদের হাসপাতালে ভর্তি হওয়া লাগতে পারে। কিছু লক্ষণ, যেমন পেটে ব্যথা, বমি, ডায়াবেটিস, স্থূলতা, অন্তঃসত্ত্বা, জন্মগত সমস্যা, কিডনি বা লিভারের সমস্যা থাকলে হাসপাতালে ভর্তি হওয়াই ভালো।

‘সি’ ক্যাটাগরির জ্বর সবচেয়ে খারাপ। এতে লিভার, কিডনি, মস্তিষ্ক ক্ষতিগ্রস্ত হতে পারে। কিছু ক্ষেত্রে নিবিড় পরিচর্যা কেন্দ্র বা আইসিইউর প্রয়োজন হতে পারে।

ডেঙ্গু হলে করণীয়

ডেঙ্গু রোগের চিকিৎসা এবং সাবধানতা

ডেঙ্গুহলে ওষুধ হিসেবে শুধু প্যারাসিটামল খাওয়ার পরামর্শ দিয়ে থাকেন চিকিৎসকরা। অনেকে না জেনে শরীরের বিভিন্ন অংশের তীব্র ব্যথা কমানোর জন্য ব্যথানাশক ওষুধ খেয়ে থাকেন। এক্ষেত্রে বিপদ ঘটতে পারে বলে সতর্ক করছেন চিকিৎসকরা। কারণ, ব্যথানাশক ওষুধ শরীরে রক্তক্ষরণ ঘটাতে পারে। যা ডেকে আনতে পারে মৃত্যু।

বরং এক্ষেত্রে চিকিৎসকরা বেশি বেশি তরল খাবার খাওয়ার পরামর্শ দিচ্ছেন। যেমন- ভাতের মাড়, স্যালাইন, ডাবের পানি, স্যুপ, ফলের রস, লেবুর পানি ইত্যাদি। তরল খাবার ৯০ শতাংশ কমায় ডেঙ্গুর তীব্রতা। শরীরে রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়াতে প্রোটিন-সমৃদ্ধ খাবার ডাল, ডিম, মুরগির মাংস, ছোট মাছের ঝোল বেশি করে রাখতে হবে খাদ্যতালিকায়।

পেঁপে পাতার রস খেলে প্লাটিলেট বাড়ে- এমন একটি কথা প্রচলিত আছে। এ তথ্যের কোনো ভিত্তি নেই। উল্টো পেঁপে পাতার রস কোষ্ঠকাঠিন্যসহ নানা সমস্যার কারণ হতে পারে। কোনো কারণে রোগীর প্লাটিলেট ১০ হাজারের নিচে নেমে গেলে চিকিৎসক চাইলে রোগীকে প্লাটিলেট বা ফ্রেস ব্লাড দিতে পারেন।