সারাদেশে হঠাৎ করেই চোখ উঠা রোগ বেড়েছে। গরমে আর বর্ষায় চোখ ওঠার প্রকোপ বাড়ে। একে বলা হয় কনজাংটিভাইটিস বা চোখের আবরণ কনজাংটিভার প্রদাহ। সমস্যাটি চোখ ওঠা নামেই পরিচিত। রোগটি ছোঁয়াচে। ফলে দ্রুত অন্যদের মধ্যে ছড়িয়ে পড়ে। আজ আপনদের জন্য আলোচনা করবো চোখ উঠলে করণীয় কী , চোখ উঠার ড্রপ , চোখ উঠা কেন হয় ইত্যাদি নিয়ে।
চোখ উঠলে করণীয়
কনজাংটিভাইটিসের লক্ষণ হলো চোখের নিচের অংশ লাল হয়ে যাওয়া, চোখে ব্যথা, খচখচ করা বা অস্বস্তি। প্রথমে এক চোখ আক্রান্ত হয়, তারপর অন্য চোখে ছড়িয়ে পড়ে। এ রোগে চোখ থেকে পানি পড়তে থাকে। চোখের নিচের অংশ ফুলে ও লাল হয়ে যায়। চোখ জ্বলে ও চুলকাতে থাকে। আলোয় চোখে আরও অস্বস্তি হয়।
চোখ ওঠা বিরক্তিকর ও কষ্টকর সমস্যা হলেও এতে ভয়ের কিছু নেই। কয়েক দিন বা এক সপ্তাহ পর এটি আপনাআপনি সেরে যায়। দীর্ঘমেয়াদি হলে বা অন্য কোনো সমস্যা যেমন জ্বর, প্রচণ্ড ব্যথা, দৃষ্টি সমস্যা ইত্যাদি দেখা দিলে প্রয়োজনে চিকিৎসকের পরামর্শ নিন। |
চোখ ওঠা রোগে করণীয়:
● সাবানপানি দিয়ে কিছুক্ষণ পরপরই হাত পরিষ্কার করতে হবে।
● কোনো কারণে চোখ ভেজা থাকলে চোখ টিস্যু পেপার দিয়ে মুছে নিতে হবে। ব্যবহারের পর টিস্যু পেপারটি অবশ্যই ময়লার ঝুড়িতে ফেলে দিতে হবে। নইলে ব্যবহার করা টিস্যু পেপার থেকে সংক্রমণ ছড়াতে পারে।
● চোখ উঠলে চশমার ব্যবহার করুন। এতে চোখে স্পর্শ করা কমবে এবং ধুলাবালু, ধোঁয়া থেকে চোখ রক্ষা পাবে। আলোয় অস্বস্তিও কমবে।
● চিকিৎসকের পরামর্শে অ্যান্টিবায়োটিক ড্রপ ব্যবহার করতে পারেন।
● নিজের ব্যবহার করা প্রসাধনসামগ্রী ও ব্যক্তিগত কাপড়চোপড় অন্য কাউকে ব্যবহার করতে দেওয়া যাবে না। একইভাবে অন্যের ব্যবহৃত প্রসাধনসামগ্রী ও ব্যক্তিগত জিনিসপত্র রোগীর ব্যবহার করা চলবে না।
● চোখ ঘষে চুলকানো যাবে না। অন্য কারও আই ড্রপ ব্যবহার করা উচিত হবে না। এতে আবার কনজাংটিভাইটিস হতে পারে।
● প্রয়োজনে বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকের পরামর্শ নিতে হবে।
চোখ উঠা ও মধু ব্যবহার
বর্তমানে দেশব্যাপী চোখ ওঠার সে সমস্যা দেখা দিয়েছে
সাধারণ রোগ ভেবে চোখ ওঠা রোগে নিজে নিজে ফার্মেসি থেকে ঔষধ কিনে খাওয়া কিংবা ড্রপ কিনে চোখে লাগানোর ব্যপারে সাবধান হোন।
এতে আপনার চোখ চিরদিনের জন্য আলো হারিয়ে ফেলতে পারে।
দিলীপ দা’র একটি পোস্ট দেখে অনেকেই পরীক্ষামূলক এপ্লাই করে অনেকেই খুব ভালো ফলাফল পেয়েছে, আমিও পেয়েছি আলহামদুলিল্লাহ।
বিঃ দ্রঃ ভেজাল মধুর ব্যাপারে সাবধান
কনজাংটিভাইটিস বা চোখ উঠা যে কতটা বিপদজনক হতে পারে তা আমরা হাড়ে হাড়ে বুঝতে পারছি। বাসার প্রত্যেকের চোখ উঠেছে এবং চোখের সাদা অংশে ব্লিডিং হয়েছে। দুই চোখের পাতা ফুলে এক হয়ে গিয়েছিল। চোখের মধ্যে খচখচ এবং ভয়ানক যন্ত্রণা। এখনো চোখ দিয়ে পানি পড়ছে। তবে আজ কিছুটা স্বস্তি বোধ করছি।
সতর্কতা
১. চোখ ওঠা রোগ দেখা দেওয়ার সাথে সাথে একজন চক্ষু ডাক্তারের পরামর্শ নিতে হবে।
২. চোখ ওঠা রোগীর ব্যবহার্য সকল জিনিস আলাদা রাখতে হবে
৩. এলার্জি জাতীয় সকল ধরনের খাবার এড়িয়ে চলতে হবে।
৪. হাসপাতাল, ক্লিনিক, ডায়াগনস্টিক সেন্টার থেকে ফিরে চোখে মুখে হাত দেওয়া যাবে না, ভালো হবে হ্যান্ডওয়াশ দিয়ে হাত পরিষ্কার করতে হবে অথবা হ্যান্ড স্যানিটাইজার ব্যবহার করা যেতে পারে
চোখ উঠা
নীরবে মহামারীর মতো ছড়িয়ে পড়েছে…
‘চোখ উঠা’ বা ‘ভাইরাল কনজাংটিভাইটিস’।
করণীয়ঃ-
আক্রান্ত ব্যক্তি সংস্পর্শ এড়িয়ে চলুন।
চোখ লাল হয়ে গেলে জনসমাগম এড়িয়ে চলুন।
চোখে হাত লাগাবেন না।
চোখে পানি দিবেন না।
উজ্জ্বল আলো কিংবা সূর্যালোকে কালো চশমা কিংবা সানগ্লাস ব্যবহার করুন।
চোখের পাতা ফুলে গেলে শুকনো গরম সেঁক দিতে পারেন।
ব্যবহার্য জিনিসপত্র যেমন কাপড়চোপড়, গ্লাস, প্লেট, গরম পানি দিয়ে ধৌত করুন এবং আলাদা রাখুন।
কোনো অবস্থাতেই ফার্মেসী বা ঔষধের দোকান থেকে নিজে নিজে ঔষধ কিনে ব্যবহার শুরু করবেন না। চোখ অত্যন্ত সংবেদনশীল অঙ্গ। নিজে নিজে ডাক্তারির ফলে চোখের মারাত্মক ক্ষতি হতে পারে।
সাধারণত জটিল কোনো উপসর্গ না থাকলে ৭-১০দিনের মধ্যেই এটি সেরে যায়।
কখন চিকিৎসকের শরণাপন্ন হবেন?
চোখ থেকে অনবরত পানি ঝরতে থাকলে
কেতুরের জন্য চোখ খুলতে অসুবিধা হলে
চোখে পুর্বের চাইতে ঝাপসা দেখলে
চোখে ব্যথা শুরু হলে। চো
খ উঠলে করণীয়
চোখ উঠার রোগের দোয়াঃ চোখ উঠলে করণীয়
الهم عافني في بصري. আল্লাহুম্মা আফিনি ফি বাছারি । অর্থ,হে আল্লাহ আমার চোখে সুস্থতা দান করুন
আরও পড়তে পারেন–জ্বর, সর্দি, কাশি, গলাব্যাথা হলে করণীয়-ফাতেমা জাহান লুবনা
হঠাৎ চোখ উঠা বা কনজাংটিভাইটিস হলে কি করবেন?
গত কয়েকদিন ধরে চোখ উঠা বা কনজাংটিবাটিস বা পিঙ্কআই রোগের প্রাদুর্ভাব লক্ষ্য করা যাচ্ছে।
এটা কিভাবে ছড়ায় ?
এটা একটা অত্যন্ত ছোঁয়াচে রোগ,রোগীর সংস্পর্শে এলে বা ব্যবহারিত জিনিসপত্র, কাপড়, তাওয়াল ,টিস্যু, ইত্যাদি শেয়ার করলে, এমনকি চোখের কাছাকাছি এসে আক্রান্ত রোগীর চোখের দিকে সুস্থ ব্যক্তি তাকালেও এ রোগ হয়ে যেতে পারে।
রোগের লক্ষণ;
প্রথমে একটা চোখ আক্রান্ত হলেও বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই পরবর্তীতে দ্বিতীয় চোখটিও আক্রান্ত হয়।
শুরুতে চোখে ময়লা পরার অনুভূতি ,চোখ খচখচ করা, চোখ গোলাপি বা লাল হতে পারে ,চোখ ফুলে যেতে পারে, চোখে প্রচণ্ড রকম অস্বস্তি লাগতে পারে ,ব্যাথা হতে পারে , চোখে ঝাপসা দেখতে পারে ,চোখ দিয়ে অনবরত পানি ঝরতে পারে এমনকি পুঁজ ও বের হতে পারে।
রোগ হলে কি করবো ?
কোন আতঙ্কের দরকার নেই,বেশিরভাগ ক্ষেত্রে এটা ভাইরাস জনিত রোগ এবং পাঁচ থেকে সাত দিনের মধ্যে সম্পূর্ণ নিরাময় হয়ে যায়।অহেতুক আক্রান্ত চোখ ঘষা মজা করবেন না।চোখকে বিশ্রাম দিবেন, চোখের কাজ যেমন পড়ালেখা, টিভি, মোবাইল ব্যবহার সীমিত করবেন।
নিজের এবং অন্যের চোখ ঝুঁকিমুক্ত রাখতে চোখে কালো সানগ্লাস ব্যবহার করবেন। বেশি ব্যথা হলে কুসুম গরম ভাব ব্যবহার করা যেতে পারে,সাথে প্যারাসিটামল বা নাপা জাতীয় ওষুধ খাওয়া যেতে পারে এবং চুলকালে আন্টি হিস্টামিন বা এলাট্টল দিন একবারে করে খাওয়া যেতে পারে ।বেশিরভাগ ক্ষেত্রে কোন এন্টিবায়োটি ড্রপ বা মলমের প্রয়োজন পড়ে না।
কখন ডাক্তারের কাছে যেতে হবে?
চোখ দিয়ে আঠালো পূজ বের হলে,
সকালবেলা চোখ খুলতে না পারা,
প্রচন্ড মাথা ব্যাথা সাথে জ্বর হলে ,
চোখে ঝাপসা দেখা গেলে । চোখ উঠলে করণীয়
এক সপ্তার মধ্যে রোগীর কোন উন্নতি না হলে।
সর্বোপরি চোখের ব্যাপারে কোন রিস্ক না নিয়ে সুযোগ থাকলে রোগের যে কোন অবস্থাতেই পাস করা রেজিস্ট্রেট ডাক্তারের শরণাপন্ন হওয়া সমীচীন।
সবার জন্য সুস্থতা কামনা।
চোখ উঠার ড্রপ
সকালে সাফা মাদ্রাসায় যাওয়ার সময় বলেছিলো___
আম্মু তোমার চোখ লাল, ওর কথা শুনে ওকে বললাম কিছুই হয় নি ; তুমি ভুল দেখেছো।
সন্ধ্যার পর আমার শ্বশুরআব্বু, ছোট জা আর বাচ্চারা আমার বাসায় আসলো। সবকিছু ঠিকঠাক চলছিলো, হঠাৎ করে আমার জা এর মেয়ে ও বলছে___
চাচী আম্মা, আপনার চোখ লাল। সাফা আবারও বলছে আম্মু সত্যিই চোখ লাল, তুমি আয়নায় দেখো।
এবার আয়নায় চোখ দেখার পর আমিও ভীষন ভয় পেয়ে গেলাম। আমার রক্ত দেখলেই গা শিরশির করে, তার মধ্যে নিজের চোখ ; দেখেই আমার হাত-পা কাঁপা শুরু।
এমন হলো কেনো???? চোখ উঠলে করণীয়
শ্বশুরআব্বু বলছে, চোখে পানির ঝাপটা দাও।
পানির ঝাপটা দেওয়ার পর চোখ কিরকম যেনো বিধছে।
লেন্স পড়লে যেরকমটা লাগে ঠিক সেরকম, মনে হচ্ছিলো চোখের ভিতরের সেই রক্তের চাকাটা চোখে বিধছে।
খুব হাল্কা ব্যথা যেটা সহ্য করা যাচ্ছে।
কোথাও বারি খাই নি, কোনো খাবারে আমার এলার্জিও নেই।
মনেও আসছে না যে কোনোভাবে চোখে আঘাত পেয়েছি কি না!
নাকি চোখে রক্তক্ষরন হয়েছে সেটাও বুঝতে পারছি না!
এই চোখ দেখার পর থেকে আতঙ্কে আছি, ভালো হবে তো?
কেউ কি জানেন, এরকমটা হওয়ার কারন কি???
চোখ উঠা রোগ হলে যা করবেন….
চট্টগ্রামে হঠাৎ করে বেড়ে গেছে চোখ উঠা বা কনজাংটিভাইটিস রোগী। প্রতিবছর গ্রীষ্মে এ ভাইরাসজনিত ছোঁয়াচে রোগের দেখা মিললেও এবার শরতে বেড়েছে এর প্রকোপ। এই রোগে আক্রান্ত রোগীদের কি করণীয় তা জানিয়েছেন চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের চক্ষু বিভাগের সিনিয়র কনসালট্যান্ট ডা. মোহাম্মদ উল হক মেজবাহ।
তিনি বলেন, ‘চোখ উঠা বা কনজাংটিভাইটিস রোগটি বর্তমানে ভাইরাল পর্যায়ে পৌঁছে গেছে। তাই এটি এখন সবারই হচ্ছে। ঘরে ঘরে রোগীর সংখ্যা বাড়ছে। তবে এটি হলে ভয়ের কোনো কারণ নেই। চোখে পানি দিতে হবে বারবার। ব্যথা থাকলে প্যারাসিটামল খেতে হবে। আর সঙ্গে চোখের ডাক্তার দেখিয়ে অ্যান্টিবায়োটিক ড্রপ ব্যবহার করতে হবে। তবে রাস্তাঘাট বা বাড়ির পাশের ফার্মেসি থেকে এক্সট্রা ড্রপ কিনে ব্যবহার করা উচিত নয়।’
তিনি আরও বলেন, ‘চোখ উঠা ব্যক্তিকে আলাদা রাখতে হবে। তার চোখে মোছা টিস্যু, ব্যবহৃত জিনিস অন্য কেউ যাতে ব্যবহার না করেন, সে খেয়াল রাখতে হবে। আমার চেম্বারে প্রতিদিন চোখ ওঠা রোগী দেখছি। কিন্তু এতে ছোঁয়াচে রোগটি আমাকে আক্রমণ করছে না। কারণ আমি রোগীর ব্যবহৃত জিনিস স্পর্শ করছি না। আক্রান্ত ব্যক্তির চোখের রস বা লালা যে স্পর্শ করবে মূলত রোগটি তারই হবে। তবে আক্রান্ত ব্যক্তির দিকে তাকালেই এ রোগ হয় না। যখন চোখের পানি মুছতে যাই, তখনই এটি আমাদের হাতে এসে যায়। এরপর থেকেই সেই হাত দিয়েই আমরা যা কিছুই ছুঁই না কেন, সেখানে ভাইরাস চলে আসে। এজন্যই আক্রান্ত ব্যক্তিকে এই সময় বাসায় থাকতে হবে। রোগীর ব্যবহৃত জিনিসপত্রও কিছুটা আলাদা রাখা ভালো।’
আরও পড়তে পারেন-মাথা ব্যাথার ঔষধ , মাথা ব্যাথার ঘরোয়া চিকিৎসা