You are currently viewing কোরবানির ঈদ ২০২৪ । কোরবানির দোয়া ও জরুরী মাসয়ালা
কোরবানির ঈদ ২০২৪

কোরবানির ঈদ ২০২৪ । কোরবানির দোয়া ও জরুরী মাসয়ালা

কোরবানির ঈদ ২০২৪ কিছু প্রশ্ন

কুরবানীর পশুর বয়স কত হতে হবে?

উট কমপক্ষে ৫ বছরের হতে হবে। গরু ও মহিষ কমপক্ষে ২ বছরের হতে হবে। আর ছাগল, ভেড়া ও দুম্বা কমপক্ষে ১ বছরের হতে হবে।

তবে ভেড়া ও দুম্বা যদি ১ বছরের কিছু কমও হয়, কিন্তু এমন হৃষ্টপুষ্ট হয় যে, দেখতে ১ বছরের মতো মনে হয় তাহলে তা দ্বারাও কুরবানী করা জায়েয। অবশ্য এক্ষেত্রে কমপক্ষে ৬ মাস বয়সের হতে হবে। উল্লেখ্য, ছাগলের বয়স ৬ বছরের কম হলে কোনো অবস্থাতেই তা দ্বারা কুরবানী জায়েয হবে না।

ফাতাওয়া কাযীখান; বাদায়েউস সানায়ে

কুরবানির শরীকদের নিয়ত সহীহ না হলে কী হবে?

যদি কেউ আল্লাহ তাআলার হুকুম পালনের উদ্দেশ্যে কুরবানী না করে শুধু গোশত খাওয়ার নিয়তে কুরবানী করে তাহলে তার কুরবানী সহীহ হবে না। তাকে অংশীদার বানালে শরীকদের কারো কুরবানী হবে না। তাই অত্যন্ত সতর্কতার সাথে শরীক নির্বাচন করতে হবে।

বাদায়েউস সানায়ে

কুরবানীর শরীকদারের উপার্জন হারাম হলে কী হবে?

শরীকদের কারো পুরো বা অধিকাংশ উপার্জন যদি হারাম হয় তাহলে কারো কুরবানী  সহীহ হবে না

কুরবানী কয়ভাগে দেওয়া যাবে?

উট, গরু, মহিষ সাত ভাগে এবং সাতের কমে যেকোনো সংখ্যা যেমন দুই, তিন, চার, পাঁচ ও ছয় ভাগে কুরবানী করা জায়েয।

অর্থাৎ কুরবানীর পশুতে এক সপ্তমাংশ বা এর অধিক যে কোন অংশে অংশীদার হওয়া জায়েয। এক্ষেত্রে ভগ্নাংশ- যেমন, দেড় ভাগ, আড়াই ভাগ, সাড়ে তিন ভাগ হলেও কোনো সমস্যা নেই।

সহীহ মুসলিম; বাদায়েউস সানায়ে । কোরবানির ঈদ ২০২৪

কুরবানী মৃতর ব্যক্তির পক্ষ থেকে দেওয়া হলে গোশত খাওয়া যাবে?

কুরবানীর স্বাভাবিক গোশতের মতো তা নিজেরাও খেতে পারবে এবং আত্মীয়-স্বজনকেও দিতে পারবে। আর যদি মৃত ব্যক্তি কুরবানীর ওসিয়ত করে গিয়ে থাকে তবে এর গোশত নিজেরা খেতে পারবে না। গরীব-মিসকীনদের মাঝে সদকা করে দিতে হবে

কুরবানির পশু জবায়ের কত সময় পর চামড়া খসাতে হবে?

নিস্তেজ হওয়ার আগে চামড়া খসানো বা অন্য কোনো অঙ্গ কাটা
মাকরূহ । আদ্দুররুল মুখতার । কোরবানির ঈদ ২০২৪

কুরবানীর পশুর গোশত, চর্বি বিক্রি করা জায়েজ হবে?

কুরবানীর গোশত, চর্বি ইত্যাদি বিক্রি করা

জায়েয নয় বিক্রি করলে পূর্ণ মূল্য সদকা করে দিতে হবে

কুরবানির পশুতে আকীকার অংশ কীভাবে হবে?

কুরবানীর গরু, মহিষ ও উটে আকীকার নিয়তে শরীক হতে পারবে। এতে কুরবানী ও আকীকা দুটোই সহীহ হবে। ছেলের জন্য দুই অংশ আর মেয়ের জন্য এক অংশ দিতে হবে।

ফতোয়ায়ে শামী, রদ্দুল মুহতার । কোরবানির ঈদ ২০২৪

শরীকে কুরবানির গোশত অনুমান করে বণ্টন কি জায়েজ?

শরীকে কুরবানী করলে ওজন করে গোশত বণ্টন করতে হবে। অনুমান করে ভাগ করা

জায়েয নয় আদ্দুররুল মুখতার

কুরবানির পশু থেকে জবাইয়ের আগে উপকৃত হওয়া যাবে?

কুরবানীর পশু কেনার পর বা নির্দিষ্ট করার পর তা থেকে উপকৃত হওয়া জায়েয নয়। যেমন হালচাষ করা, আরোহণ করা, পশম কাটা ইত্যাদি। সুতরাং কুরবানীর পশু দ্বারা এসব করা যাবে না। যদি করে তবে পশমের মূল্য, হালচাষের মূল্য ইত্যাদি সদকা করে দিবে।

মুসনাদে আহমদ, ইলাউস সুনান ।

কুরবানীর পশুর গোশত গৃহকর্মী ও জবাইকারীকে দেওয়া যাবে?

কুরবানীর পশুর কোনো কিছু পারিশ্রমিক হিসাবে দেওয়া জায়েয নয়

চুক্তি না করে হাদিয়া হিসেবে গোশত খাওয়ানো বা গোশত দেওয়া যাবে

এক পশুকে অন্য পশুর সামনে জবাই করবে না
জবাইয়ের সময় প্রাণীকে প্রয়োজনের অধিক কষ্ট দিবে না।

কুরবানীর পশুতে আকীকার অংশ রাখা যাবে?

কুরবানীর গরু, মহিষ ও উটে আকীকার নিয়তে শরীক হতে পারবে। এতে কুরবানী ও আকীকা দুটোই সহীহ হবে।

হাশিয়াতুত তাহতাবী আলাদ্দুর; রদ্দুল মুহতার

কুরবানী ঈদ ২০২৪
কুরবানী ঈদ ২০২৪

কুরবানী কার উপর ওয়াজিব

প্রাপ্তবয়স্ক, সুস্থমস্তিষ্ক সম্পন্ন প্রত্যেক মুসলিম নর-নারী, যে ১০ যিলহজ্ব ফজর থেকে ১২ যিলহজ্ব সূর্যাস্ত পর্যন্ত সময়ের মধ্যে প্রয়োজন-অতিরিক্ত নেসাব পরিমাণ সম্পদের মালিক হবে তার উপর কুরবানী করা ওয়াজিব।

নিসাব হল স্বর্ণের ক্ষেত্রে সাড়ে সাত (৭.৫) ভরি, রূপার ক্ষেত্রে সাড়ে বায়ান্ন (৫২.৫) ভরি। টাকা-পয়সা ও অন্যান্য বস্তুর ক্ষেত্রে নিসাব হল সাড়ে বায়ান্ন তোলা রূপার মূল্যের সমপরিমাণ হওয়া । আর সোনা বা রূপা কিংবা টাকা-পয়সা এগুলোর কোনো একটি যদি পৃথকভাবে নেসাব পরিমাণ না থাকে কিন্তু প্রয়োজন অতিরিক্ত একাধিক বস্তু মিলে সাড়ে বায়ান্ন তোলা রূপার মূল্যের সমপরিমাণ হয়ে যায় তাহলেও তার উপর কুরবানী করা ওয়াজিব। যেমন কারো নিকট কিছু স্বর্ণ ও কিছু টাকা আছে, যা সর্বমোট সাড়ে বায়ান্ন তোলা রূপার মূল্য সমান হয় তাহলে তার উপরও।

কুরবানির পশু নিজে জবাই করা উত্তম।
তবে অন্যকে দিয়েও জবাই করাতে পারবে। এক্ষেত্রে কুরবানীদাতা পুরুষ হলে জবাইস্থলে তার উপস্থিত থাকা ভালো । মুসনাদে আহমদ, বাদায়েউস সানায়ে।

কুরবানির পশু দূর্বল হলে কুরবানি জায়েজ হবে?

এমন শুকনো দুর্বল পশু, যা জবাইয়ের স্থান পর্যন্ত হেঁটে যেতে পারে না তা দ্বারা কুরবানী করা জায়েয নয়
জামে তিরমিযী, আলমগীরী

কুরবানীর গোশত বিধর্মীকে দেওযা যাবে?

কুরবানীর গোশত হিন্দু ও অন্য ধর্মাবলম্বীকে দেওয়া জায়েয । ইলাউস সুনান

কুরবানীর পশুর কান বা লেজ কাটা হলে কী হবে?

যে পশুর লেজ বা কোনো কান অর্ধেক বা তারও বেশি কাটা সে পশুর কুরবানী জায়েয নয়।

আর যদি অর্ধেকের কম হয় তাহলে তার কুরবানী জায়েয। তবে জন্মগতভাবেই যদি কান ছোট হয় তাহলে অসুবিধা নেই।

জামে তিরমিযী; মুসনাদে আহমাদ; ইলাউস সুনান; ফাতাওয়া কাযীখান; আলমগীরী

কুরবানীর পশুর বয়স কত হতে হবে?

উট কমপক্ষে ৫ বছরের হতে হবে। গরু ও মহিষ কমপক্ষে ২ বছরের হতে হবে। আর ছাগল, ভেড়া ও দুম্বা কমপক্ষে ১ বছরের হতে হবে।

তবে ভেড়া ও দুম্বা যদি ১ বছরের কিছু কমও হয়, কিন্তু এমন হৃষ্টপুষ্ট হয় যে, দেখতে ১ বছরের মতো মনে হয় তাহলে তা দ্বারাও কুরবানী করা জায়েয। অবশ্য এক্ষেত্রে কমপক্ষে ৬ মাস বয়সের হতে হবে। উল্লেখ্য, ছাগলের বয়স ৬ বছরের কম হলে কোনো অবস্থাতেই তা দ্বারা কুরবানী জায়েয হবে না।

ফাতাওয়া কাযীখান; বাদায়েউস সানায়ে

কুরবানী কি মৃতর পক্ষ থেকে দেওয়া যায়?

মৃতের পক্ষ থেকে কুরবানী করা জায়েয। মৃত ব্যক্তি যদি ওসিয়ত না করে থাকে তবে সেটি নফল কুরবানী হিসেবে গণ্য হবে।

কেউ যদি ১২ তারিখ সূর্যাস্তের আগেও নিসাব পরিমাণ অর্থের মালিক হয়, তাহলে তার ওপর কোরবানি ওয়াজিব।

কোরবানিতে নির্দিষ্ট পশু জবাই করতে হয়। পশুগুলোর কিছু বৈশিষ্ট্য ও গুণাগুণ থাকতে হয়। না হয়, কোরবানি আদায় হয় না।

আবার যারা কোরবানি করবেন, তাদের অর্থ ও নিয়তের ক্ষেত্রে পরিচ্ছন্নতা থাকতে হয়। না হয়, কোরবানির নামে শুধু গোশত খাওয়া হলেও সওয়াব লাভ হয় না।

কোরবানির দোয়া

পশু কিবলার দিকে ফিরিয়ে যে দোয়া পড়বেন-

وجهت وجهي للذي فطر السموات والأرض حنيفا وما أنا من المشركين، إِنَّ صَلَاتِي وَنُسُكِي وَمَحْيَايَ وَمَمَاتِي لِلَّهِ رَبِّ الْعَالَمِينَ، لَا شَرِيكَ لَهُ ۖ وَبِذَٰلِكَ أُمِرْتُ وَأَنَا أَوَّلُ الْمُسْلِمِينَ، بسم الله الله أكبر.

উচ্চারণ : ইন্নি ওয়াজ জাহতু ওয়াজ হিয়া লিল্লাযি ফাতারাছ ছামাওয়াতি ওয়াল আরদা হানিফাও ওয়ামা আনা মিনাল মুশরিকিন। ইন্না সালাতি ওয়া নুসুকি ওয়া মাহ ইয়ায়া ওয়া মামাতি লিল্লাহি রাব্বিল আলামিন। লা শারিকা লাহু ওয়া বিজালিকা উমিরতু ওয়া আনা মিনাল মুসলিমিন।…বিসমিল্লাহি আল্লাহু আকবার।

অর্থ : নিশ্চয়ই আমি দৃঢ়ভাবে সেই মহান সত্তার অভিমুখী হলাম, যিনি আসমান ও জমিন সৃষ্টি করেছেন। আমি মুশরিকদের অন্তর্গত নই।

নিশ্চয়ই আমার নামাজ, আমার কোরবানি, আমার জীবন ও আমার মরণ সবই বিশ্ব প্রতিপালক মহান আল্লাহর জন্য নিবেদিত। তার কোনো শরিক নেই। আমি এ কাজের জন্য আদিষ্ট হয়েছি।

আর আমি আত্মসমর্পণকারীদের একজন। আল্লাহর নামে, আল্লাহ সবচেয়ে মহান। (আবু দাউদ, হাদিস : ২৭৮৬; ইবনে মাজাহ, হাদিস : ৩১২১)

পশু জবেহ করার সময় কুরবানির এই দোয়া পড়বেন

اللهم مِنكَ وَلَكَ

আল্লাহুম্মা মিনকা ওয়া লাকা।

অর্থ : হে আল্লাহ, (এই কোরবানির পশু) তোমার পক্ষ থেকে প্রাপ্ত এবং তোমারই জন্য উৎসর্গকৃত।

এরপর بسم الله الله أكبر পড়বেন।

উচ্চারণ : বিসমিল্লাহি আল্লাহু আকবার

অর্থ : মহান আল্লাহর নামে শুরু করছি। আল্লাহ সবচেয়ে বড়।

জবেহ করার পর কুরবানির এই দোয়া পড়বেন

اللهم تقبل منا كما تقبل من حبيقك محمد وخليلك إبراهيم عليه السلام

উচ্চারণ : আল্লাহুম্মা তাকাব্বালহু মিন্নি কামা তাকাব্বালতা মিন হাবিবিকা মুহাম্মাদিন ওয়া খলিলিকা ইবরাহিমা আলাইহিমাস সালাম।

অর্থ : হে আল্লাহ, এই কোরবানি আমার পক্ষ থেকে কবুল করুন, যেভাবে আপনি তা কবুল করেছিলেন আপনার প্রিয় বন্ধুদ্বয় মুহাম্মদ (সা.) ও ইবরাহিম (আ.)-এর পক্ষ থেকে।’ (মেশকাত : ১/১২৮)

কোরবানির পশু জবাইয়ের জন্য প্রস্তুত করে কিবলার দিকে ফিরালে, জবাই করার সময় ও জবাই শেষে বিভিন্ন দোয়া পড়তে হয়। তাহলে দোয়া পড়ার সুন্নত আদায়ের পাশাপাশি সওয়াবও লাভ হয়।

কোরবানি মাসযালা

যৌথ পরিবারে একজন কুরবানী করলে সবার পক্ষ থেকে কুরবানী হয়ে যাবে?

প্রশ্নঃ আসসালামুআলাইকুম। কোরবানি বিষয়ে আমি একটি প্রশ্ন করছি। আর তা হলো । আমরা তিন ভাই দুই বোন। বাবা ও মা সহ যৌথ পরিবার। আমরা সবাই বিবাহিত। আমরা তিন ভাই -ই শহরে বাস করি। শুধু প্রতি ঈদে অথবা বাড়িতে কোনো অনুষ্ঠান হলে গ্রামের বাড়ি আসি। প্রতি কোরবানির ঈদে দেখা যায় আমার আব্বা একটি কোরবানি করে, বড় ভাই দুই জনও আলাদা আলাদা কোরবানি করে।(গ্রামের বাড়িতে) এক্ষনে আমাদের প্রত্যেক কে কি আলাদা অালাদা কোরবানি করতে হবে। নাকি পরিবারের কর্তা হিসেবে আমার আব্বাই শুধু কোরবানি করবেন? কোরআন ও সুন্নাহ সহ জানতে চাই। যাযাকাল্লাহু খাইয়ান।

উত্তর

وعليكم السلام ورحمة الله وبركاته

بسم الله الرحمن الرحيم

নামায পড়া ওয়াজিব। বলুনতো, যৌথ পরিবারে প্রাপ্ত বয়স্ক একজন নামায পড়লেই কি বাকি প্রাপ্ত বয়স্ক সবার নামায হয়ে যাবে? বাকিদের আর পড়তে হবে না?

নিশ্চয় জবাবে বলবেন, না, হবে না। কারণ, নামায এটি ইবাদত। আর ইবাদত মূলত প্রতিটি ব্যক্তির ব্যক্তিগত বিষয়। একজনের আদায়ের দ্বারা অন্যের আদায় হয় না।

কুরবানীও একটি ইবাদত। এটি প্রতিটি নিসাব পরিমাণ সম্পদের মালিক ব্যক্তির উপর আবশ্যক হয়। যা সংশ্লিষ্ট ব্যক্তির আদায় করা আবশ্যক। পরিবারের প্রতিটি সদস্য প্রাপ্ত বয়স্ক এবং নেসাব পরিমাণ সম্পদের মালিক হলে প্রতিজনের উপরই কুরবানী আবশ্যক। সেই সাথে প্রতিজনেরই কুরবানী করতে হবে। একজনের কুরবানী করার দ্বারা বাকিদের কুরবানী আদায় হবে না।

হ্যাঁ, এমন হতে পারে যে, যৌথ পরিবারের সদস্যদের মাঝে ৫ জনের উপর কুরবানী করা আবশ্যক। এখন এ ৫জন মিলে একটি কুরবানীর গরুতে অংশ নিল। তাতে বাহ্যিকভাবে গরু একটি হলেও যেহেতু প্রতিজনের ভাগেই অন্তত এক ভাগ পড়ছে, তাই সবার ওয়াজিব কুরবানী আদায় হয়ে যাবে।

কিংবা কুরবানীর পশু কিনল একজন। আর বাকিদের কাছ থেকে অনুমতি নিয়ে উক্ত কুরবানী বাকিদের পক্ষ থেকে কুরবানী করে দিলে, সবার কুরবানী আদায় হবে। বাকিদের জানিয়ে তাদের অনুমতিক্রমে তাদের পক্ষ থেকে কুরবানীর নিয়তে জবাই না করলে বাকিদের কুরবানী আদায় হবে না।

আশা করি মাসআলাটি পরিস্কার বুঝতে পেরেছেন ইনশাআল্লাহ।

أَلَّا تَزِرُ وَازِرَةٌ وِزْرَ أُخْرَىٰ [٥٣:٣٨

কিতাবে এই আছে যে,কোন ব্যক্তি কারও বোঝা নিজে বহন করবে না। [সূরা নাজম-৩৮}

এ প্রশ্নোত্তরটিও দেখে নিতে পারেন-

এক পরিবারের পক্ষ থেকে একটি কুরবানী করলেই সবার পক্ষ থেকে আদায় হয়ে যাবে কিনা?

والله اعلم بالصواب

উত্তর লিখনে

লুৎফুর রহমান ফরায়েজী

পরিচালক-তালীমুল ইসলাম ইনষ্টিটিউট এন্ড রিসার্চ সেন্টার ঢাকা।

কোরবানির ঈদ ২০২৩

হত্যা করে গরু কুরবানী করছেন না তো?

“”একটি ছোট্ট ভুল এবং বাতিল হয়ে যাওয়া কুরবানী।””

সকল কুরবানী দাতাদের জন্য অত্যন্ত জরুরী একটি বিষয়।

১০-১৫ মিনিট সময় বাঁচাতে গিয়ে আমাদের করা, ছোট্ট একটি ভুলের কারনে সম্পূর্নরুপে বাতিল হয়ে যেতে পারে আমাদের অত্যন্ত যত্নের সাথে আদায়কৃত আল্লাহর মহান হুকুম কুরবানী।

★পশু জবেহ সম্পন্ন হবার পর, একটি ছোট তীক্ষ্ণ ছুড়ি দ্বারা জবেহের স্থানে খোঁচা দেয়ার একটা সিস্টেমের সাথে আমরা কমবেশি প্রায় সবাই পরিচিত, আমাদের অনেকেরই ধারনা এই কাজটার মাধ্যমে পশু দ্রুত মারা যায় এবং কষ্ট কম পায়।

এই ছোট্ট একটা ভুলই আমাদের কুরবানী বরবাদ করে দেবার জন্য যথেষ্ট।

★পশু জবেহ সহীহ হবার শর্ত হলো:-

পশুর অন্তত মূল তিনটি রগ কেটে দেয়া। আর মূল তিনটি রগ কেটে দিলে, রক্তক্ষরনের স্বাভাবিক ফলস্বরুপ পশুটি খুব দ্রুত মারা যায়।

★আমরা একটু অতিরিক্ত তাড়াহুড়ো করতে গিয়ে, পশুটার মেরুদন্ডের ভেতর তীক্ষ্ণ ছুড়ি ঢুকিয়ে “মেরুরজ্জু বা স্পাইনাল কর্ড” বিচ্ছিন্ন করে দ্রুত মেরে ফেলার চেষ্টা করি। স্পাইনাল কর্ড বিচ্ছিন্ন হয়ে গেলে পশুর মস্তিষ্ক, দেহ থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে যায় আর এর ফলে পশুটি হার্ট এটাক করে এবং মারা যায়।

অনেক সময় এভাবে দ্রুত পশুটিকে শান্ত করতে গিয়ে, কুরবানীর উদ্দেশ্য ব্যাহত হয় এবং পশুটি জবেহ না হয়ে, হত্যা হিসেবে পরিগনিত হয়।

★চিকিৎসা বিজ্ঞানের দৃষ্টিতেও এই পন্থা অত্যন্ত গর্হিত এবং বিপদজনক। স্পাইনাল কর্ড কেঁটে গেলে পশুর দেহের মাংশপেশিতেই রক্ত জমাট বেঁধে যায় এবং ফলশ্রুতিতে গোশত দূষিত হয়ে পরে। এই গোশত ভক্ষনে অন্তত ১৮ প্রকার জটিল রোগ সৃষ্টি হতে পারে। যেমন ক্যান্সার।

এতএব,

কুরবানী দাতা সকলের কাছে বিনীত অনুরোধ থাকবে, ১০-১৫ মিনিট সময় বাঁচাতে গিয়ে, দয়া করে আপনার কুরবানী কে বরবাদ হয়ে যাবার সুযোগ দিবেন না।

কোরবানি ঈদ ২০২৩ কত তারিখে

প্রশ্ন এসেছে,

স্যার, কোরবানি কি সুন্নাহ নাকি ওয়াজিব?

একজন শায়খ বলেছে কোরবানি সুন্নাহ বা নফল;

পশু প্রেমীরা তো ওনার কথায় বেজায় খুশি।

উত্তর:

কোরবানি দেয়া ওয়াজিব ;

এই মত ইমাম আজম আবু হানিফা র. এর

এবং ইবনে তাইমিয়া র. এর।

যারা কুরবানীকে নফল / সুন্নাহ বলেন তাদের কুরআনের জ্ঞান খুব কম।

বিস্তারিত ব্যাখ্যা আমি আমার YouTube চ্যানেল এ দিয়েছি ২ বছর পূর্বে।

সামর্থ থাকা সত্ত্বেও কোরবানি না করলে গুনাহগার হতে হব।

আমি জেনে শুনেই উপরোক্ত অভিমত দিচ্ছি।

আমার কথা কেউ গ্রহণ করতে হবে কাউকে বলছিনা।

শুধু পশু প্রেমীরা কেন, ইবলিস ও খুশি হয় কোরবানি না করলে।

আমার দ্বর্থহীন মত কোরবানি ওয়াজিব।

কোন Shykh , ড. কি বলেছে তা আমি ভাবিনা।

আমি ভাবি কুরআন সুন্নাহ কি বলেছে।

পরিশেষে বলছি,

কোরবানি ছাড়া আপনার দ্বীন -তাকওয়া কোনো দিন পরিপূর্ণতা পাবেনা।

আর পড়তে পারেন–রিযিক অর্থ কি । রিযিক বৃদ্ধির দোয়া

2024 সালের কোরবানির ঈদ কত তারিখ?

ঈদুল আজহা ২০২৪ কত তারিখে সৌদি আরব

যেহেতু পবিত্র ঈদুল আযহা অনুষ্ঠিত হয় আরবী ক্যালেন্ডারের জ্বিলহজ্জ মাসের ১০ তারিখে । আর জ্বিলহজ্জ মাস অনুযায়ী, এবছর ১০ জ্বিলহজ্জ হচ্ছে জুন মাসের ২৮ তারিখ। এই তারিখ অনুযায়ী সৌদি আরবে ঈদ অনুষ্ঠিত হবে।

ঈদুল আযহা কি ৩ দিন?

ঈদ-উল-আধা, বা কোরবানির পরব, বিশ্বব্যাপী মুসলমানদের দ্বারা তিন থেকে চার দিনের জন্য পালিত একটি প্রধান ছুটি। বেশিরভাগ মুসলমান মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র এবং সারা বিশ্বের প্রধান মসজিদ এবং ইসলামিক কেন্দ্রগুলিতে অনুষ্ঠিত বিশেষ প্রার্থনায় অংশ নেবেন। মুসলমানরা সাধারণত নতুন পোশাক পরে এবং কিছু বিনিময় উপহার দেয়।