You are currently viewing ঈদ নিয়ে ৫৫ জন তরুণ কবির ৬৯টি ছড়া/ কবিতা
কবিতা

ঈদ নিয়ে ৫৫ জন তরুণ কবির ৬৯টি ছড়া/ কবিতা

কবিতা- ঈদ মোবারক  – কাজী নজরুল ইসলাম

ঈদ মোবারক

……কাজী নজরুল ইসলাম

শত যোজনের কত মরুভূমি পারায়ে গো,

কত বালু চরে কত আঁখি-ধারা ঝরায়ে গো,

বরষের পরে আসিল ঈদ!

ভূখারীর দ্বারে সওগাত বয়ে রিজওয়ানের,

কন্টক-বনে আশ্বাস এনে গুল-বাগের,

সাকীরে ”জা’মের” দিলে তাগিদ!

খুশীর পাপিয়া পিউ পিউ গাহে দিগ্বিদিক,

বধু-জাগে আজ নিশীথ-বাসরে নির্নিমিখ্।

কোথা ফুলদানী, কাঁদিছে ফুল!

সুদূর প্রবাসে ঘুম নাহি আসে কার সখার,

মনে পড়ে শুধু সোঁদা সোঁদা বাস এলো খোঁপার,

আকুল কবরী উলঝলুল্!!

ওগো কা’ল সাঁঝে দ্বিতীয়া চাঁদের ইশারা কোন্

মুজদা এনেছে, সুখে ডগমগ মুকুলী মন!

আশাবরী-সুরে ঝুরে সানাই।

আতর সুবাসে কাতর হ’ল গো পাথর-দিল্,

দিলে দিলে আজ বন্ধকী দেনা—-নাই দলীল,

কবুলিয়াতের নাই বালাই।।

আজিকে এজিদে হাসেনে হোসেনে গলাগলি,

দোজখে বেহেশ্তে ফুলে ও আগুনে ঢলাঢলি,

শিরীঁ ফরহাদে জড়াজড়ি।

সাপিনীর মত বেঁধেছে লায়লি কায়েসে গো,

বাহুর বন্ধে চোখ বূঁজে বঁধু আয়েসে গো।

গালে গালে চুমু গড়াগড়ি।।

দাউ দাউ জ্বলে আজি স্ফুর্তির জাহান্নাম

শয়তান আজ বেহেশ্তে বিলায় শরাব-জাম,

দুশমন দোস্ত্ এক-জামাত!

আজি আরাফাত্-ময়দান পাতা গাঁয়ে গাঁয়ে,

কোলাকুলি করে বাদশা-ফকীরে ভায়ে ভায়ে,

কা’বা ধ’রে নাচে ”লাত্-মানাত”।।

আজি ইসলামী-ডঙ্কা গরজে ভরি’ জাহান,

নাই বড় ছোট–সকল মানুষ এক সমান,

রাজা প্রজা নয় কারো কেহ।

কে আমীর তুমি নওয়াব বাদশা বালাখানায়?

সকল কালের কলঙ্ক তুমি: জাগালে হায়

ইসলামে তুমি সন্দেহ।।

ইসলাম বলে, সকলের তরে মোরা সবাই,

সুখ-দুখ সম-ভাগ ক’রে নেব সকলে ভাই,

নাই অধিকার সঞ্চয়ের।

কারো অখিঁ-জলে কারো ঝাড়ে কিরে জ্বলিবেদীপ?

দু’জনার হবে বুলন্দ-নসিব, লাখে লাখে হবে বদনসিব?

এ নহে বিধান ইসলামের।।

ঈদ্-অল-ফিতর আনিয়াছে তাই নব বিধান,

ওগো সঞ্চয়ী, উদ্বৃত্ত যা করিবে দান,

ক্ষুধার অন্ন হোক তোমার!

ভোগের পিয়ালা উপচায়ে পড়ে তব হাতে,

তৃষ্ণাতুরের হিসসা আছে ও পিয়ালাতে,

দিয়া ভোগ কর, বীর, দেদারঅঅ

বুক খালি ক’রে আপনারে আজ দাও জাকাত,

ক’রো না হিসাবী, আজি হিসাবের অঙ্কপাত!

একদিন কর ভূল হিসাব

দিলে দিলে আজ খুনসুড়ি করে দিললগী,

আজিকে ছায়েলা-লায়েলা-চুমায় লাল যোগী!

জামশেদ-বেচে চায় শরাব।।

পথে পথে আজ হাঁকিব, বন্ধু,

ঈদ-মোবারক! আসসালাম!

ঠোঁটে ঠোঁটে আজ বিলাব শিরনী ফুল-কালাম!

বিলিয়ে দেওয়ার আজিকে ঈদ।

আমার দানের অনুরাগে-রাঙা ঈদগা’ রে!

সকলের হাতে দিয়ে দিয়ে আজ আপনারে—

দেহ নয়, দিল হবে শহীদ।।

কলিকাতা

১৯শে চৈত্র, ১৩৩৩

 

ঈদের কবিতা – আসাদ বিন হাফিজ

ঈদের কবিতা

.আসাদ বিন হাফিজ

 

ঈদকে নিয়ে কেউ কখনো করোনা আর মশকরা

লোক দেখানো ইবাদতে যায় না খোদায় বশ করা।

খাদ্যে মেশায় ভেজাল যে জন, মজুদ করে মাল

ঈদের আগেই ঝরঝরা হয় তাদের পরকাল।

.

করলো রোজা, পড়লো নামাজ, খাচ্ছে তবু ঘুষ

ঈদ আনন্দ কেমনে পাবে এমন অলম্বুশ?

মনের ভেতর লুকিয়ে রেখে হাজার রকম পাপ

কেমনে তুমি আশা করো খোদার রহম, বাপ?

.

সুযোগ পেলেই ধর্ম টাকে দুহাত দিয়ে তাড়াও

তারপরেও ঈদের মাঠে কেমনে তুমি খাঁড়াও?

মনের ভেতর লোক ঠকানোর হাজার রকম ফন্দি

ঈদ আনন্দ কেমনে পাবে পাপ না করলে বন্দী?

.

জনগণের টাকায় যেজন করলো নানা ইফতারী

কে ঠেকাবে তাকে বলো খোদার হাতে গ্রেফতারী?

দাওনা জাকাত, হচ্ছো ডাকাত, মারছো পরের হক

ঈদের খুশি তবু কি চাও নিজেই যখন ঠগ?

.

তাইতো বলি ঈদকে নিয়ে কেউ করোনা মশকরা

লোক দেখানো ইবাদতে যায় না খোদায় বশ করা।

 

কবিতা- ঈদ সমাচার  – আসলাম প্রধান

ঈদ সমাচার

আসলাম প্রধান

.

আল্লাহ তা’লার নামটি জপে ধরেছি লেখনি

ঈদের কথা শোনো শ্রোতা, বলতেছি এখনি ।।

একটা পেপার খবর দিল, ঈদের বাজার ভালো

বেচা-কেনা চলছে দেদার, বাজারটা জমকালো ।।

অন্য পেপার বলছে আবার ভিন্নরকম কথা

বিকিকিনি হচ্ছে না ঠিক- সামর্থ্য স্বল্পতা ।।

পত্রিকাতে লম্বা হেডিং, যানবাহনের ভিড়ে

আপন দেশে ছুটছে মানুষ লাগাম ছিঁড়ে ছিঁড়ে ।।

ট্রেনেতে কেউ, লঞ্চেতে কেউ – কেউবা বাসে চড়ে

কেউবা আবার আকাশপথে যাচ্ছে উড়ে উড়ে ।।

দীর্ঘ ছুটি, চলছে সবাই ঈদুল আযহা, ঈদে-

দুষ্ট যারা, সুযোগ খুঁজবে লোকশূন্য বাড়িতে ।।

যাওয়ার সময় বাসায় লাগাও শক্তিশালী তালা

তালা দেখেই পালায় যেন চোরচোট্টা সব শালা ।।

ঢাকার বাসায় হচ্ছেটা কী, থাকবা না টেনশনে

ঈদের দিনে সবকে নিয়ে ফুর্তি রাখবা মনে ।।

অলস ছেড়ে সকাল সকাল নিদ্রা থেকে ওঠো

নতুন জামা কাপড় পড়ে ঈদের মাঠে ছোটো ।।

তাকবির পড়ে পড়ে বান্দা ঈদগাহেতে যায়

কদমে কদমে গুণাহ মাফ করে আল্লা’য় ।।

নিজের ঘরে রান্না যা যা, অন্যকে পাঠাও

সবার সাথে খুশির দিনটা আনন্দে কাটাও ।।

গরীব দুখি কে কোন হালে, একটু কাছে ডেকো

সময় করে সাধ্যমত তাদের পাশে থেকো ।।

ফিন্নি সেমাই জদ্দা-পোলাও- বানাও স্বাদের খানা-

ইলিশ মাছের নামটা যেন মেনুতে রাখবা না ??

এত ইলিশ যায় যে কোথায়, কোন দেশে সফরে

সর্ষেবাটা নিয়ে গিন্নি দু:খ প্রকাশ করে ।।

ঈদের দিনে কী আনন্দ টিভি চ্যানেলগুলোয়

দেখতে থেকো আপন মনে চক্ষু যত কুলোয় ।।

ভালো ভালো অনুষ্ঠান হয় রাত বারোটার পরে

মানুষ যখন ঘুমোতে যায়, দ্যাখে নিশাচরে !!

 

ঈদ – নাজীর হুসাইন খান

ঈদ

নাজীর হুসাইন খান

আনন্দ ও খুশির জোয়ার

নিয়ে আসুক ঈদ

দূর করে সব দুখ বেদনা

মনের কালো জিদ

ঈদের দিনে ভালোবাসা

সবার মাঝে থাকে

ধনীরাও গরীবদেরে

আপন করে ডাকে

ঈদ থেকে আজ শিক্ষা নেব

ভালোবাসা প্রীতি

জনম জনম রাখবো ধরে

ঈদের দিনের স্মৃতি।

ঈদে যেমন গরীব ধনী

নেই ভেদাভেদ কেউ

ঈদের পরে থাকে যেন

এমন খুশির ঢেউ।

 

কবিতা – কই হারালো ঈদের খুশি  -মাহবুব এ রহমান

কই হারালো ঈদের খুশি

মাহবুব এ রহমান

.

কই হারালো ঈদের খুশি মিষ্টিমুখের হাসি

কই হারালো অবুঝমনের ভালোবাসাবাসি।

কই হারালো ঈদের কেনা পছন্দসই জামা

ভিন্নরঙের টুপির সাথে পাঞ্জাবী-পাজামা।

কই হারালো ঈদের আগের নাঘুমানো রাত

কই হারালো টুকটুকে লাল মেহদিরাঙা হাত।

কই হারালো ঈদের গানের মনভোলানো সুর

কই হারালো মায়ের স্নেহের অরুণরাঙা ভোর।

কই হারালো ঈদ সকালে পুকুরজলে ডুব

কার আগে কে করবে গোসল কম্পিটিশন খুব।

কই হারালো ঈদের দিনে ফিরনি পায়েস খাওয়া

আব্বু, আপু-ভাইয়া থেকে ঈদসেলামী পাওয়া।

কই হারালো বন্ধু মিলে কেবল ঘোরাঘুরি

প্রজাপতির ডানার মতো সবার ওড়াওড়ি।

কই হারালো, কই লুকালো, কোথায় গেলো সব

ঈদের খুশি নেই যে তেমন নেই তো কলরব।

আগের মতো সবার মাঝে নেই মমতা-প্রীতি

এখন তো আর নেই রে ওসব আজ কেবলই স্মৃতি।

 

ঈদের খুশি  -উম্মুল খাইর

ঈদের খুশি

উম্মুল খাইর

.

রোজার শেষে ঈদ যে আসে

নিয়ে পরম সুখ

কারো ঘরে নিঁদ যে আসে

নিয়ে চরম দুখ।

কারো মনে উপচে পড়ে

ঈদের খুশির ঢল

কারো আবার মনের দুঃখে

অশ্রু টলোমল।

কারো ঘরে হরেক ভোজ আর

কেনাকাটার ধুম

কারো আবার শত চিন্তায়

নিত্য হারাম ঘুম।

ধনী-গরিব এই ভেদাভেদ

করছে বলো কে?

ঈদের খুশি সবার তরে

হওয়ার ছিল যে।

জীর্ণ জামায় শীর্ণ দেহে

কাটে যাদের রোজ

ঈদের খুশি বিলিয়ে দিতে

নিচ্ছি তাদের খোঁজ?

সবার ঘরে সমান তালে

আসবে যেদিন ঈদ

তবেই কেবল গাইবো আমি

ঈদের খুশির গীত।

আরও পড়ুন– দশ টাকার ঈদ -ছোট গল্প-আজিজ হাকিম

ঈদ আসে ঈদ যায়  -আজিজ হাকিম

ঈদ আসে ঈদ যায়

আজিজ হাকিম

 

ঈদ আসে ঈদ যায়

গরিবের নিঁদ যায়

মার্কেট হয়নি তো গতবার

কত টাকা সঞ্চিত!

পরিবার বঞ্চিত

সান্তনা পাবে ওরা কতবার!

তেল আটা ময়দায়

দাম বাড়ে কায়দায়

বাড়ে নাতো শ্রমিকের রোজগার

শহরেই হাহাকার

কতজন অনাহার

রাখবে কে বহুদূর খোঁজ গাঁর।

ঈদ হলো আয়েসের

সির্নি ও পায়েসের

গরিবের নেই সেই কারবার

ঈদ হলো বিষাদের

মেলা ভার হিসাবের

অর্থের কাছে হারে বারবার।

ঈদ মানে হাসি গান

আনন্দে রাশি প্রাণ

হাসি নেই যার কোনো ঘর নেই

এসো করি পণ আজ

আপনের ধন আজ

বণ্টন করে দেই পরকেই।

আরও পড়ুন – রমজানের ৩০ ছড়া- শাহিন ইসলাম

নীল বেদনার ঈদ- আতিফ আবু বকর

নীল বেদনার ঈদ

আতিফ আবু বকর

 

ঈদের খুশি লীন হয়েছে

মলিন মায়ের মুখ,

প্রিয় বাবা খুন হয়েছে

কোমায় গেছে সুখ।

কমাস ধরে নেইযে খবর

গুম হয়েছে ভাই,

অলিগলি সব খুঁজেছি

হদিস না তার পাই।

বোনটা ভীষণ অভিমানী

শোকটা বেশি তার,

অবাক চোখে চেয়ে থাকে

মুখটি করে ভার।

সোনার সুদিন নেইযে এখন

শুকনো চোখের জল,

ঈদের খুশি নীল বেদনা

খেল তামাশার ছল।

আরও পড়ুন–

কবিতা – ঈদ- জাহিন রাকিব

ঈদ

জাহিন রাকিব

 

সিয়াম ও কিয়ামের দরিয়ায় ভেসে

একমাস অবিরাম সাধনার শেষে,

ঈদ এসে মলিনতা দূর করে দিয়ে

উৎসবে মেতে ওঠে আমাদের নিয়ে।

ঈদ এসে ধরাধাম করে মাতোয়ারা

আসমান থেকে বয় রহমের ধারা,

রমজানে যেই ফুল ফুঁটেছে যে মনে

সেই ফুল মালা গাঁথে হৃদয়ের কোণে।

ঈদ হলো উপহার রমজান শেষে

শান্তির ছোঁয়া দেয় প্রতিবার এসে,

ঝিরিঝিরি সমিরণে আসে কোমলতা

ঈদ হলো সিয়ামের পরিপূর্ণতা।

রোজাদার মাফ পেয়ে যায় এই দিনে

প্রতিদান নেই কিছু জান্নাত বিনে,

হাতছানি দিয়ে তাকে রাইয়ান ডাকে

আমলের তুলি দিয়ে আল্পনা আঁকে।

ঈদ এসে পাপরাশি ঠেলে দিক দূরে

আন্ধার অন্তর ভরে দিক নূরে,

তাকোয়ার সমুদ্র শোভা পাক নীলে

প্রশান্তি ঢেলে দিক মুমিনের দিলে।

 

কবিতা- ঈদ মোবারক-আমিন আজাদ

ঈদ মোবারক

আমিন আজাদ

 

ঈদ মোবারক ঈদ এসেছে রঙিন মেঘের নায়

ঈদ এসেছে শহর ঘুরে কিষাণ-পল্লী গাঁয়।

সবখানে আজ খুশির খবর মজা ও হইচই

শিশু-কিশোর সবার প্রাণে আনন্দ থই থই।

ঈদ মানে তো সাম্য-প্রীতি সুখের আলাপন

খুশির দিনে আজকে সবার সবুজ সবুজ মন।

ঈদ মানে তো খুশবু মাখা নতুন জামা পরা

ঈদগাহেতে নামাজ পড়া কোলাকুলি করা।

কিন্তু যে জন খুব অসহায় খাবারও নেই যার

ঈদের এত হাসি খুশি কোথায় বলো তার?

যে ছেলেটি রাত্রি কাটায় ল্যাম্পোস্টের নিচে

তার জীবনে ঈদের সকাল আনন্দহীন মিছে!

ঈদ এসে দিক বিভেদ ভেঙে মিলাক আপন-পরে

ঈদের খুশি ছড়িয়ে যাক সকল ঘরে ঘরে।

 

কবিতা- ঈদ হোক দুখিদের  -জয়নব জোনাকি

ঈদ হোক দুখিদের

-জয়নব জোনাকি

 

তাকওয়ার পূর্ণতা পাওয়া যায় ঈদে,

অতীতের পাপরাশি মনে এসে বিঁধে।

মাসব্যাপী সিয়ামের উপবাস শেষে –

বোঝা যায় অনাহারী গরীবের ক্ষিধে।

নেক কাজে জমিয়েছো যা এই ঈদে

করো না তা বরবাদ হানাহানি জিদে,

কালিমাখা অন্তর শুদ্ধতা পেয়ে-

আলোর আবেশ যেন বয়ে যায় হৃদে।

আজ ঈদ হোক সব দুখিদের সাথে

মুসাফাহা হবে এই হাত রেখে হাতে।

শুভেচ্ছা বিনিময়ে সুখ বেড়ে যাবে

রেষারেষি,বিদ্বেষ থাকবে না তাতে।

হাসি-খুশি মন নিয়ে ভোর বেলা ঈদে

পাঞ্জাবী পরে সবে ছোটে মাসজিদে,

আনন্দে ভেদাভেদ যায় সব ভুলে-

মেতে ওঠে একতার সুর সঙ্গীতে।

 

ঈদ মানে কষ্ট  -ইসমাঈল হোসেন দিনাজী

ঈদ মানে কষ্ট

ইসমাঈল হোসেন দিনাজী

 

ঈদ কারো কষ্ট কারো কারো কান্না,

পথকলিদের ঘরে হয় নাকো রান্না।

ঈদ আসে ঈদ যায় কারো গোপনে,

কেউ কেউ খায় ওটা রাত্রে স্বপনে।

কারো গায়ে নীল জামা কারো লাল,

অভিমানে ফুলিয়েছে কেউ দুইগাল।

কেউ কেনে গাড়িঘোড়া গল্পের বই,

কারো টাকা নেই তাই ঘোরে টইটই।

কারো নেই মাতাপিতা ঠাঁই ফুটপাত,

কেউ ঐ ছুঁড়ে ফেলে মাখা দুধভাত।

কারো ঘরে ফিরনি ও পায়েসের বন্যা,

না-খেয়েই কাঁদে কারো শিশুকন্যা।

পদতলে মরে যদি কারো শিশুপুত্র,

পায়না সে খুঁজে কোনও ঈদ-সুত্র।

ঈদ মানে তার কাছে কষ্ট ও কান্না,

লাভ কী এই ঈদে করে কিছু রান্না!

ঈদ মানে হাহাকার ঈদ মানে কষ্ট,

ঈদ মানে অনেকেরই স্বপ্নেরা নষ্ট।

আরও দেখুন- ঈদের গান লিরিক্স। ভিডিওসহ ১৩টি ঈদের ইসলামীক গান

আজ আমাদের ঈদ  -সাজিদুর রহমান

আজ আমাদের ঈদ

সাজিদুর রহমান

.

আজ আমাদের ঈদ ওভাই

আজ আমাদের ঈদ।

চাঁদ উঠেছে নীল আকাশে

খোকা খুকি সবাই হাসে,

নেইতো চোখে নিদ।

আজ আমাদের ঈদ ওভাই

আজ আমাদের ঈদ।

সব ভেদাভেদ ভূলে গিয়ে

গরিব দুখী সাথে নিয়ে

গাইবো সুখের গীত।

আজ আমাদের ঈদ ওভাই

আজ আমাদের ঈদ।

সবার সাথে করবো খেলা

আনন্দে যে কাটবে বেলা

থাকবেনা আর জীদ।

আজ আমাদের ঈদ ওভাই

আজ আমাদের ঈদ।

ঈদের মাঠে নামাজ শেষে

কোলাকুলি করবো হেসে

হাসবে সবার হৃদ।

আজ আমাদের ঈদ ওভাই

আজ আমাদের ঈদ।

 

এই ঈদ- নূরুজ্জামান ফিরোজ

এই ঈদ

– নূরুজ্জামান ফিরোজ

 

এই ঈদ নেই নীদ

জেগে আছে খুকু

শেষ হবে আর কবে

এই রাতটুকু ?

ওঠে চাঁদ কাটে রাত

যেই হয় ভোর,

আলোকিত পুলকিত

হলো অন্তর।

এলো ঈদ গেয়ে গীত

বসে ভাবে খোকা,

ঈদ জামা সারেগামা

বুঝি একচোখা?

কেউ খায় কেউ চায়

কেনো জনে জনে,

ঈদ তাই মিথ্যা ই

কারো কারো মনে।

 

ঈদ কার?-নাজীর হুসাইন খান

ঈদ কার?

— নাজীর হুসাইন খান

 

ঈদ আসে ঈদ যায় বলো ঈদ কার?

আজ ঈদ তার লাগি যিনি রোজাদার।

রমজানে দিনে যে করে পানাহার

পূণ্য তো নেই তার পাপের পাহাড়।

শুনে রেখো মন দিয়ে ঈদ নেই তার

তার আবার কিসের ঈদ সে তো গুণাহগার।

আল্লাহ্‌র প্রতি যে রেখে বিশ্বাস

রমজানে রেখেছেন রোজা পুরো মাস।

শুনে রেখো মন দিয়ে ঈদ হলো তার

পুরো মাস রোজা রাখে যেই রোজাদার।

অন্তরে আছে যার আল্লাহ্‌র ভয়

ঈদে তার প্রতিদান পাবে নিশ্চয়।

 

ঈদ এসেছে  -জয়নব জোনাকি

 

ঈদ এসেছে

জয়নব জোনাকি।

ঈদ এসেছে প্রদীপ হাতে

কান্নাভেজা সন্ধ্যারাতে

নয়তো সুখেরবার্তা

ঈদ এসেছে সুখপ্রভাতে

গরীব-দুঃখীর পান্তা-ভাতে

যায়কি বলা আর তা !

ঈদ এসেছে সুখবিলাতে

মনের সাথে মনমিলাতে

শান্তি সবার আত্মা ।

ঈদ এসেছে দুখপালাতে

আঁধার ঘরে দীপজ্বালাতে

পায়কি ওরা পাত্তা !

ঈদ এসেছে নিদভাঙ্গাতে

ভালোবাসায় মনরাঙ্গাতে

হচ্ছে কি আর আজ তা !

ঈদ এসেছে জল ডাঙ্গাতে

হচ্ছে বিলীন খুন দাঙ্গাতে

নেই কি বাঁচার রাস্তা?

 

ঈদ সমাচার-আনিস আরমান

ঈদ সমাচার

আনিস আরমান

 

ঈদ আসে ঘুরেফিরে

সকলের বাড়িতে

ঈদ আসে আঙিনায়

লালনীল শাড়িতে

ঈদ আসে মামাদের

মিষ্টির হাড়িতে।

.

ঈদ আসে সন্ধ্যায়

ঈদ আসে সাঁঝেতে

ঈদ আসে সুখ নিয়ে

গরিবের মাঝেতে

ঈদ আসে লালজুতা,

পাঞ্জাবি, তাজেতে।

.

ঈদ আসে আলতায়

কিশোরীর পায়েতে

ঈদ আসে রঙেচঙে

পালতোলা নায়েতে

ঈদ আসে বেলাশেষে

শহর বা গাঁয়েতে।

.

ঈদ আসে খোঁপা পরে

বালিকার কেশেতে

ঈদ আসে মেঘে ভেসে

এ সবুজ দেশেতে

ঈদ আসে বাঁকাচাঁদে

পথিকের বেশেতে।

 

ঈদের পণ-এমআর রকি

ঈদের পণ

……এমআর রকি

বস্তি কিবা পথের ধারে

জীবন যাদের গাথা,

ঘুমোয় যারা ঘাসের বুকে

জড়িয়ে ধুলোর কাথা।

সমাজ যাদের টোকাই নামে

তুই বলে দেয় ডাক,

অনাদরের অশ্রু যাদের

ভেজায় পথের বাঁক।

রোযা তাদের মুখের হাসি

ঈদের আগাম সুখ,

কুড়িয়ে পাতা, ফুল কি লতা

স্বপ্নে ভরায় বুক।

নতুন মানে যাদের কাছে

ছেড়া তালিহীন জামা,

পরিস্কারটাই পবিত্রতা

হোক তা ভেজা ঘামা।

ওরা মোদের পাশেই থাকে

দেখাও মিলে রোজ,

হয়কি নেয়া আপন ভেবে

একটু খানি খোঁজ ?

আমার – তোমার পর্ষী ওরা

বড়ই কাছের জন,

এবার ঈদ হোক ওদের সাথেই

করি ঈদের পণ।

ঈদের দিনে ওদের মুখে

হাসির ঝলক খানি

বৈষম্যের দেয়াল ভেঙে

মুছুক সকল গ্লানি।

[ঘামের স্রোত ]

আরও পড়ুন —রমজানের গান লিরিক্স । ভিডিওসহ ১৯ টি জনপ্রিয় রমজানের গান

ঈদ সকলের-আদিল হাসান

ঈদ সকলের

আদিল হাসান

 

ঈদ মানে খুশি

আনন্দ হাসি,

ঝরে রাশিরাশি।

ঈদ মানে সুখ

বুক ফাটা দুখ,

কারো কালোমুখ।

ঈদ বাঁকা চাঁদ

মিঠে তেতো স্বাদ,

রাঙা দু’টি হাত

ফুটপাতে কাত।

ঈদ মার্কেটে,

দারওয়ান গেটে

মরে শুধু খেটে।

ঈদ সকলের

ধনী-গরিবের,

নয় জালেমের

ঈদ এল ফের।।

এই ঈদে

 

ঈদ-মুজাহিদুল ইসলাম স্বাধীন

ঈদ

মুজাহিদুল ইসলাম স্বাধীন

 

যারা দীন অসহায়

এ ঈদে তাদের গায়

যদি দিই নতুনজামা, তবে

ঈদটাকে ঈদ মনে হবে।

:

যারা থাকে খুব দুখে

এ ঈদে তাদের মুখে

যদি দিই খাবার তুলে, তবে

ঈদটাকে ঈদ মনে হবে।

:

ভেদাভেদ ভুলে গিয়ে

দুখীদের সাথে নিয়ে

যদি কাটাই এ ঈদটা, তবে

ঈদটাকে ঈদ মনে হবে।

 

খুকির ঈদ -কবিতা মাহবুবা

খুকির ঈদ

কবিতা মাহবুবা

 

ঈদ এসেছে ঈদ এসেছে

আনলো খুশি ঈদ বয়ে,

বর্ষাকালে রাস্তা খারাপ

পড়লো খুকি চিত হয়ে।

দেখে শুনে দিস না কি পা

আম্মু দিলেন বকা ,

খুকির ব্যথায় দুঃখ পেয়ে

কাঁদলো প্রাণের সখা।

ঈদের খুশি পন্ড হলো

কাঁদছে খুকি দুখে,

এমন সময় আব্বু এলো

তুলে নিলেন বুকে।

মমতারী পরশ পেয়ে

প্রাণটা গেলো ভরে,

ঈদের খুশি আবার যেন

ফিরলো তাহার ঘরে।

 

ঈদ চাই -আবুযর গিফারী

ঈদ চাই

-আবুযর গিফারী

 

চাঁদ হাসে ঈদ আসে

ঈদ যায় বারবার

ঈদ বুঝি আজ শুধু

ধনিদের কারবার।

নেই জামা নেই হাসি

বস্তির ছেলেটার

ভোর হয় সাদাসিধে

যেমনটা রোজকার।

মা কাঁদে মুখ বুজে

ছেলেটার বায়নায়

ঈদ তারে জ্বেলে যায়

হৃদয়ের যাতনায়।

ঈদ আজি ঈদ চাই

ঈদ হোক সকলের

হাত বাড়াও নাও বুকে

রাস্তার শিশুদের।

 

ঈদ তুমি -সাজিদুর রহমান

ঈদ তুমি

সাজিদুর রহমান

.

ঈদ তুমি না এসোনা এই জীবনে আর,

শোন তোমায় নিষেধ করি আমি বারংবার।

তুমি এলে সুখ পাখিরা যায় চলে যায় দূর,

এই হৃদয়ে তখন বাজে ব্যথার করুণ সুর।

তুমি এলে যায় ভেঙে যায় আমার মনের কূল,

মনবাগানে আর ফোটেনা তখন কোনো ফুল।

তুমি এলে যায় নিভে যায় আশার আলো সব,

বুকের ভেতর তখন যে হয় ব্যথার অনুভব।

তুমি এলে যায় থেমে যায় সুখের কোলাহল,

দুই নয়নে তখন আমার ঝরে শুধু জল।

তুমি এলে যায় বয়ে যায় ব্যথার তুমুল ঝড়,

সুখের বাগান তখন আমার হয় যে বালুচর।

তুমি এলে যায় হয়ে যায় বন্ধ মুখের বাক,

এই জীবনে তুমি যেনো অশুভ এক কাক।

 

অব্যক্ত কাব্য -আরিফ আজাদ

অব্যক্ত কাব্য

আরিফ আজাদ

 

আরকানে আর ঈদ আসেনা, ঈদ আসেনা কাশ্মীরে

ইরাক-আফগান-ফিলিস্তিনের কান্না শুনতে পাস কি রে?

নিত্য যেথা পড়ছে বোমা, মরছে মানুষ ঐ

বিশ্ব মোড়ল হাসছে বসে, দেখছে তারা কই?

ইসরায়েলের মারন বোমায় পুড়ছে ফিলিস্তিন

বার্মাতে ঐ রক্ত দিয়ে শোধাচ্ছে আজ ঋন

কাশ্মীর জুড়ে ক্রন্দন রোলে আকাশ-বাতাস ভার

মুসলিম পেলেই জবাই করা, দৃশ্য নিত্যকার

ইরাক জুড়ে ওঁৎ পেতে আছে আমেরিকার ফাঁদ

জাতিসংঘের কানে যায় না এসব আর্তনাদ;

রক্ত নিয়ে চলছে খেলা, মাতছে মোড়ল বিশ্ব

শক্তিমানের চলছে লীলা, দূর্বলেরা নি:স্ব;

 

ঈদ -মোঃ গোলাম মোস্তফা টুটুল

ঈদ

মোঃ গোলাম মোস্তফা টুটুল

 

ঈদ এসেছে ঈদ এসেছে

ঈদ এসেছে ঈদ

খুকির মনে রঙ লেগেছে

নেই যে চোখে নীঁদ

.

সাজবে খুকি ইচ্ছেমতো

লালজামাটা গায়

আলতামেখে ঘুরবে সবে

পরবে নূপুর পায়।

.

দলবেঁধে সব ছুটবে মাঠে

গাইবে সুখের গান

থাকবে না তো দুখের ছায়া

ভুলবে অভিমান

 

ঈদ শপিং-খোরশেদ মুকুল

ঈদ শপিং

খোরশেদ মুকুল

 

ঈদ শপিং

হয়ে গ্রুপিং চলে গ্রুমিং

শপিং করতে যাবে,

ফর্দ গড়ে লম্বা করে

সঞ্চয় গিলে খাবে।

যাবার আগে ঘন্টাখানেক

চলে যে প্রস্তুতি,

এই যেনো কেনাকাটা নয়

চলে বিয়ের গতি।

পত্নী চলে আগে আগে

পতি ধরে থলে,

সারা মার্কেট ঘুরেফিরে

গোবেচারা কলে।

কোথায় সালাত কোথায় সাওম

সিরিয়ালে পড়ে,

কিরণমালা- পাখি নিয়ে

ঈদ ডাকে যে ঘরে।

লেহেঙ্গা এলো এবার ঈদে

ছোট্টমণির জন্য,

জিদ করেছে দিতে হবে

না থাকলেও অন্ন।

ছেলেরাও পিছিয়ে নেই

পড়ে ছেড়া-তালি,

এক অংশ ঢাকা রাখলেও

আরেক অংশ খালি।

 

ঈদসালামি-জয়নব জোনাকি

ঈদসালামি

জয়নব জোনাকি

 

ঈদ এসেছে নিদ কেড়েছে

পড়ছে খুশীর ধুম ,

নীল আকাশে মেঘ টুটেছে

চাঁদমামা দেয় চুম ।

খুব সকালে যায় সকলে

ঈদের নামাজ পড়তে ,

ছোট্টসোনা করে বায়না

বাবার কাঁধে চড়তে।

খাচ্ছে পায়েস করছে আয়েস

ঘুরছে সবার বাড়ি ,

ফাঁকা রোডে চাকা ঘোরে

চলছে কতো গাড়ি।

ভরছেপকেট কিনছে রকেট

ঈদসালামি পেয়ে ,

ছেঁড়াকাপড় ছিন্নশিশু

অশ্রুসজল চেয়ে।

বিবেক তাড়া দেয়নিনাড়া

সিয়াম সাধন করে,

ঈদ আনন্দ নিরানন্দ

পথশিশুদের ঘরে।

 

ঈদ নিয়ে শিশুর ভাবনা-স্বপন শর্মা

ঈদ নিয়ে শিশুর ভাবনা

–স্বপন শর্মা

 

বলছে শিশু মায়ের কাছে

ক’দিন পরে ঈদ?

হিসেব শুনে শিশুর চোখে

ফুরিয়ে গেছে নীদ।

.

ঘুমোয়না সে হিসেব কষে

আর ক’টাদিন বাকি?

আকাশ পানে তাকিয়ে দেখে

চাঁদ উঠেছে নাকি?

.

সদায় খুঁজে মায়ের কাছে

আসছে নাকি মামা!

এবার ঈদে মামার কাছে

নেবে নতুন জামা।

.

কি আনন্দ এবার ঈদে

নতুন জামা পাবে,

সেমাই খেয়ে বাবার সাথে

ঈদের মাঠে যাবে।

.

আসছে ঈদে নামাজ শেষে

আর কি করা যায়?

ব্যস্ত সদায় শিশু হৃদয়

সেই সে ভাবনায়।

 

ঈদ -উম্মে হাবিবা রাহনুমা

ঈদ

উম্মে হাবিবা রাহনুমা

.

নতুন চাঁদে ঈদের খবর ছড়িয়ে গেলো কাল,

তারই সাথে হাজির হলো পহেলা শাওয়াল।

তিরিশ দিনের সংযমীদের খুশির প্রহর আজ,

শোকরগুজার বান্দা হয়ে পরবে নতুন সাজ।

সুখ আমেজে ভাসবে মুমিন ভাঙলে ঘুমের ঘোর,

আল্লাহপাকের রহম যেন খুলবে নতুন দোর।

গুনা’ মাফের রাতের শেষে এলো নতুন দিন,

সিয়াম, কিয়াম, ফিতরা, দানের দিন হয়েছে ক্ষীণ।

তবুও ভাই কৃতজ্ঞতায় ঈদের সালাত হয়,

তার আবেশে হৃদয় আকাশ আঁধার করে লয়।

ধনী গরীব বিভেদ ভেঙে আসুক জোয়ান দল,

আজ বিরহের প্রহর কেটে উঠুক কোলাহল।

 

ঈদ -আসাদ বিন হাফিজ

ঈদ

আসাদ বিন হাফিজ

 

ঈদ মানে নিঁদ নয় ঈদ মানে গীত

ঈদ মানে মুমীনের হয়েছে যে জিত।

সারা মাস রোজা আর এবাদত করে

এনেছে যে সাফল্য সব ঘরে ঘরে।

যে রাখেনি রোজা আর পড়েনি নামাজ

ঈদের পবিত্র মাঠে তার নেই কোন কাজ।

বয়কট করো তারে হোক বড় লোক

মুসলিম সমাজের এরা সব জোঁক।

বয়কট করো তারে খাস মোনাফিক

তার তরে শতবার ধিক শুধু ধিক।

তার ঘরে যেয়ো না, খেয়ো না খানা

এ কথা আমার নয় হাদিসের মানা।

রেখেছো রোজা যারা আনন্দ করো

খাও দাও, গান গাও, মনপ্রাণ ভরো।

ভুলে যাও অতীতের শোক, তাপ, দুখ

আনন্দে মেতে ওঠো, মনে নাও সুখ।

এ হুকুম আল্লাহর, হাসি খুশী, ঈদ

পৃথিবীর সবকিছু তোমার সুহৃদ।

আনন্দে আসে নাই সারা রাত নিঁদ

আনন্দের বার্তা দিলেন স্বয়ং তৌহিদ।

 

মহামারীর ঈদ-মোহাঃ শামীম আলী

মহামারীর ঈদ

মোহাঃ শামীম আলী

 

এবার না হয় ঈদ টা করি

ভীন্নভাবে উদযাপন,

নতুন পোশাক না কিনে তাই

দুস্থে করি সমর্পন।

তোমার আমার বেশ তো আছে

পূর্ণ পোশাক আলমারি,

এবার না হয় সেসব দিয়েই

ভিন্ন ভাবে ঈদ সারি।

বুক ফাঁটে যার মুখ ফোঁটেনা

এমন অনেক লোক আছে,

ঈদ বাজেটের সেই টাকাটা

গোপনে দিই তার কাছে ।

এতে তোমার কমবে না কো

ঈদ আমেজর বিন্দু রেশ,

মহামারীর কবল থেকে-

বাঁচলে গরীব,বাঁচবে দেশ।

:::::::::::::::::::::::::::::::::::::

চামাগ্রাম,বারঘরিয়া,চাঁপাইনবাবগঞ্জ

 

ঈদ -শেখ আবদুল্লাহ্ নূর

ঈদ

শেখ আবদুল্লাহ্ নূর

 

ঈদ ঈদ ঈদ;

কবে হবে ঈদ!

ভাবনাতে নিদ নাই,

চোখে তাই,

জেগে জেগে সারা ।

বউ বলে এটা চাই,

মেয়েটার ওটা নাই,

ছেলেটার সেটা নাই

—আমি দিশে হারা ।

অবশেষে কিবা আর,

টাইম নাই ভাববার,

—নিশি রাতে উঠে;

চুপি চুপি দরজার,

কাছে গিয়ে আরবার

—পালালাম ছুটে ।

কিছু দুরে যেয়ে যেই,

পিছু ফিরে তাকাতেই,

—হায় একি হলো !

বউ ছেলে মেয়ে ঝি,

ছুটে এসে বলে কি

—মার্কেটে চলো ।।

 

অন্যরকম ঈদ -এম.রাশেদুজ্জামান তাওহীদ

অন্যরকম ঈদ

এম.রাশেদুজ্জামান তাওহীদ

 

ঈদ এসেছে ঈদ এসেছে

আজকে খুশির বন্যা,

ঈদ এসেছে কাঁদছে তবু

সাহেরা চাচীর কন্যা।

সবার গায়ে নতুন জামা

তার পরনে ছেড়া,

নূপুর পায়ে শ্বেত শাড়িতে

ওর বয়সের মেয়েরা।

দলে দলে ছুটছে সবাই

ঈদ গাহের ওই পানে,

কিন্তু আজো ব্যথার নূপুর

বাজছে যে তার কানে।

ঈদ এসেছে খুশির মাতম

বইছে সবার বুকে,

এই দিনেও হাসির রেখা

নেই গরীবের মুখে।

 

কোন মনীষী -আবদুস সামাদ (নানা ভাই)

কোন মনীষী

আবদুস সামাদ

 

বছর ঘুরে রোজা শেষে

আসে খুশি ঈদ,

সেই খুশিতে হারায় দেখি

কত শান্তির নিঁদ ।

ভয় বিলাতে রোজা এসে

পরে খুশির তলে,

দশটি রোজা পার হলেই

কেনা দলে দলে।

সেকি! সবার কেনা চমক

হারায় যেন শোধ,

বরকতময় দশটি দিনেই

কোথা যায় বোধ ?

আসলে আমি জানতে চাই

ঈদ মানে কী ?

তাকওয়া শেষে খুশি ভেবে

করলো কোন মনীষী ?

 

আসলো খুশির ঈদ -রাবেয়া বেগম লাকী

আসলো খুশির ঈদ

রাবেয়া বেগম লাকী

 

বছর ঘুরে আবার ফিরে

আসলো খুশির ঈদ!

সেই খুশিতে খোকা খুকুর

নাই যে চোখে নিঁদ।

নতুন জুতা,নতুন জামা

আতর মেখে গায়,

দলে দলে দেখ সবাই

ঈদের মাঠে যায়।

সাদা, কালো ধনী, গরীব

হয়ে ভাই ভাই!

কোলাকুলি করছে দেখ

কোন তফাৎ নাই।

ফিরনী- পায়েস, কোরমা -পোলাও

খাবে মজা করে!

ঈদের দিনটি কাটবে সবার

নানান জায়গায় ঘুরে।

হিংসা- বিদ্বেষ ভুলে সবাই

ভালোবাসার তরে,

শত্রুতা আজ ভুলে গিয়ে

বাঁধবে বাহুডোরে।।

 

ঈদের প্রার্থনা -ফাতেমা জাহান লুবনা

ঈদের প্রার্থনা

-ফাতেমা জাহান লুবনা

ঈদের খুশি ঘরে ঘরে যাক ছড়িয়ে যাক না,

ধনী গরীব সব পরিবার ঈদের খুশি পাক না।

ঈদ উৎসবে উঠুক ফুটে মুখে মুখে হাসি,

এ হাসিটি আর কভুও না হয়ে যাক বাসি।

ঈদের ছোঁয়ায় এই ধরণী স্বর্গভূমি হোক না,

স্বর্গ আর ধরার মাঝে কিছু তফাৎ যাক না।

দূর হয়ে যাক হিংসা -বিদ্বেষ; দূর হয়ে যাক প্রবঞ্চনা,

ঈদের ছোঁয়ায় পবিত্র হোক এই করি আমি প্রার্থনা।

 

গরীবের ঈদ -এম.রাশেদুজ্জামান তাওহীদ

গরীবের ঈদ

এম.রাশেদুজ্জামান তাওহীদ

 

ঈদ তোমাদের নয় আমাদের

আমরা দুঃখী ভাই,

আজকে দেখ মোদের চুলায়

ভাতের হাঁড়ি নাই!

তোমরা খাবে কোর্মা-পোলাও

আমরা উপোস রোজ,

গরীব বলে এই সমাজের

কেউ রাখেনা খোঁজ।

প্রতিবছর ঈদ এনে দেয়

সুখ তোমাদের ঘরে,

কিন্তু সে ঈদ মোদের চোখে

অশ্রু হয়ে ঝরে।

পাইনা মোরা ভালো খাবার

চাইনা নতুন কিছু,

জন্ম থেকে মন্দ কপাল

দু’খ ছাড়েনা পিছু।

 

ঈদের ছড়া -আবিদা আন নিসা

ঈদের ছড়া

আবিদা আন নিসা

.

ঈদ এনেছে খুশির জোয়ার

সাম্য-সুখের গানে

খুলল সবার মনের দুয়ার

আনন্দ আহবানে।

.

ঈদ মোবারক ঈদ মোবারক

ঈদের দিনে বলি

ধনী-গরিব বিভেদ ভুলে

করব কোলাকুলি।

.

গুরুজনে সালাম করে

ঈদ-সেলামি পাব

ছোটদের আদর করে

ফিরনি-পোলাও খাব।

.

নতুন নতুন কাপড় পরে

যাব সবার বাড়ি

ঘৃনার সাগর পাড়ি দিয়ে

তুলব সকল আড়ি।

.

অনাথ বন্ধু আছে যারা

নেব তাদের খোঁজ

ঈদের ত্যাগ মনে রেখে

পথ চলব রোজ।

 

অবাক – মোহাম্মদ সুজন মাহমুদ

অবাক

মোহাম্মদ সুজন মাহমুদ

 

ঈদ এসেছে নিদ হারালো

খুকু মনির চোখে,

কাঁদছে বসে ঘরের কোনে

খোকন সোনা শোঁকে।

খুকুর বায়না পূর্ন হলো

তাই সে আছে সুখে,

খোকার বায়না হয়নি পুরন

কাঁদছে বসে দুঃখে।

দুঃখে ভরা খোকনের মন

থাকছে সবার আড়ালে,

ভাবছে শুধু কষ্ট হবে

ঈদটাকে সে হারালে।

ঈদের সকাল ডাকছে যে, মা

ওঠো আমার খোকা,

তোমার মুখটা থাকবে আঁধার

আমরা তো নই বোকা।

আমরা তোমায় করবো অবাক

সব রেখেছি লুকিয়ে,

বোকা ছেলের কেদেঁ কেদেঁ

মুখটা গেছে শুকিয়ে।

এ নাও তোমার নতুন জামা

মিষ্টি করে হাসো,

বললো খোকা, তোমরা আমায়

এত্ত ভালবাসো।

 

ঈদ মোবারক-ঈদ মোবারক -আব্দুর রশিদ

ঈদ মোবারক-ঈদ মোবারক

আব্দুর রশিদ

 

ঈদের খুশি ঘরে ঘরে

সুরের শানাই বাজে,

ছুটছে দেখো শিশু কিশোর

নিত্য নতুন সাজে।

.

পাড়ায় পাড়ায় ঈদের আমেজ

ফির্নি-সেমাই ঘ্রাণ,

বছর ঘোরে এলো আবার

মুসলমানের প্রাণ।

.

শহর ছেড়ে গাঁয়ের বাড়ি

আহা! কি-যে মজা ঈদ,

রাতে বসে উঠোন আড্ডা

নাই যে কারো নীদ।

.

ঈদ মোবারক-ঈদ মোবারক

বুলি সবার মুখে,

ধনী-গরিব/জোয়ান-বুড়ো

হাসছে সুখে দুখে।

 

স্বপনের ফুল -এহতেশামুল হক জুনায়েদ

স্বপনের ফুল

এহতেশামুল হক জুনায়েদ

 

ঈদ হোক হাসিখুশি আনন্দে ভরপুর

দুখব্যথা ভুলে গিয়ে সুখ ভরা মনপুর

বেদনার কালো ঠেলে আলোকিত এই বুক

যাতনার অমানিশা দূর করে সবটুক ।

ঈদ হোক সবে মিলে একিসাথে একিসুর

কাছাকাছি পাশাপাশি হৃদ্যতা সুমধুর

ভালোবাসা মায়াপ্রেম মমতার জ্বেলে নূর

তিক্ততা রিক্ততা যতসব করো দূর ।

ঈদ হোক দরিদ্র অসহায় মানুষের

নয় শুধু ধনীদের বিলাস ও ফানুসের

নয় শুধু নিজে নিজে নিজেরটা বোঝা বেশ

স্বার্থের কুয়াশায় ঢেকে থাকা মোহাবেশ ।

ঈদ হোক ভেঙে দিয়ে সমাজের ভুলচুক

নতুনের ওয়াদায় করে দাও উৎসুক

এঁকে দাও রেখে দাও স্বপনের এই ফুল-

একদিন উড়ে যাবে আধিয়ার সব ধুল ।

 

ঈদ বার্তা-জয়নব জোনাকি

ঈদ বার্তা

-জয়নব জোনাকি

 

আকাশ তুমি কাঁদছো কেন

হারিয়ে গেছে নীল?

তোমার জলে আজ ডুবেছে

সাগর নদী বিল,

ঈদের বার্তা দাও বিলিয়ে

উজাড় করে দিল।

আর কেঁদোনা আকাশ তুমি

বলছি তোমায় শোনো

আসছে ছুটে ঈদের খুশি

কান্না নেই আর কোনো,

রবির আলো ছড়িয়ে দিয়ে

ভালোবাসা বোনো।

চাঁদের হাসি বাজবে বাঁশি

খোকা খুকুর মুখে,

তুমিও তাই ছড়াও আলো

ভাসবেনা আর দুখে,

ঈদ আনন্দ দিকে দিকে

হাসবে সবাই সুখে।

 

ঈদ আনন্দে মাতো- নার্গিস নাহার রুনু

ঈদ আনন্দে মাতো

নার্গিস নাহার রুনু

 

সওয়ালেরই চাঁদ আকাশে ভাসে

বাঁধ ভাঙা ঢল ধরা যেনো হাসে

সিয়াম শেষে এলো খুশির ঈদ,

ধনীরা সব কোর্মা পোলাও খাবে

সেজে গুজে ঈদগাহেতে যাবে

ধনীর খোকার নেইতো চোখে নিঁদ।

গরিব লোকের পেটে থাকে খিধে

দুঃখ বেড়ে যায় যে তাদের ঈদে

চোখের জলে কাটায় যে চাঁদ রাত,

অল্প খেয়ে তুষ্ট তারা থাকে

তাদের ব্যথা বলবে বল কা’কে

ঈদের খুশি পেলে গরম ভাত।

ঈদের খুশি ভাগ করে নাও সবে

সাম্য প্রীতির বন্ধনে ঈদ হবে

ধনী যারা সদকা যাকাত দাও,

গরিবের হক আছে ধনীর ধনে

করুণা নয় রেখো সবাই মনে

অহম ছেড়ে বুকে টেনে নাও।

কোলাকুলি করো ওদের সাথে

কোর্মা পোলাও দাও না তুলে পাতে

খুশি হবেন মাখলুকাতের রব,

ঈদ আনন্দে মাতো সবাই মিলে

প্রভুর রহম উপচে পড়ুক দীলে

ঈদের দিনে হও একাকার সব।

 

ঈদ মানে -আজিজ হাকিম

ঈদ মানে

আজিজ হাকিম

.

ঈদ মানে ভাগাভাগি করে নেয়া সুখ

বুকে টেনে মুছে দেয়া দুখীদের দুখ।

ঈদ মানে ভুলে যাই সব ভেদাভেদ

একতায় মিলে যাই ঝেড়ে ফেলে জেদ।

ঈদ মানে হাসি খুশি আর কলরব

ঈদ মানে আনন্দ ঈদ উৎসব।

 

গাঁয়ের ঈদ – জাহিদ মাহবুর

গাঁয়ের ঈদ

জাহিদ মাহবুর

 

ঈদ এসেছে নবীন সাজে জেলখানায়,

ঈদ এসেছে ইস্টিশনে মেল খানায় !

ঈদ এসেছে বস্তিপাড়ায় খুপড়িতে;

ঈদ এসেছে রোডের ধারের ঝুপড়িতে !

ঈদ এসেছে এতিমখানা আশ্রমে,

ঈদ এসেছে কারার সাজায় সশ্রমে!

ঈদে যাদের কেনাকাটা সিঙ্গাপুর,

তাদের সাথে তফাত আমার অনেক দূর।

গাঁয়ের ঈদে লোক দেখানো ভাবটা নেই,

অসৎ কাজের জন্যে গলি ঘাপটা নেই!

ঈদ এখানে বটের ছায়ে লবন দাঁড়ি,

বৌচি খেলা সেমাই খাওয়া বাড়ি বাড়ি!

পল্লী গাঁয়ের ঈদ যদিও জীর্ণতর,

তবু ঈদের স্বাদ এখানে ভীন্নতর!

 

ঈদ নেই মনে  -আনিস আরমান

ঈদ নেই মনে

আনিস আরমান

 

ঈদের খুশি নেইতো আমার মনে

দুঃখগুলো জড়ায় ক্ষণেক্ষণে।

আজকে তুমি বাবা মায়ের সাথে

ঈদটা করো মিষ্টি নিয়ে হাতে।

কতজনকে করছো কোলাকুলি

বলছো কত হাসি-খুশির বুলি।

মিষ্টি তুলে দিচ্ছো কারো মুখে

ঈদ মোবারক বলছো কত সুখে।

ভাবছ কি অই ফিলিস্তীনের কথা?

ওদের কষ্টে লাগছে তোমার ব্যথা।

যতবারই ঈদের দিনটা আসে

ফিলিস্তীনের কান্না চোখে ভাসে।

অই যে শোন কাঁদছে তোমার ভায়ে

দুদিন আগে মরছে যে তাঁর মায়ে।

এইতো সেদিন বাবাও গেছে চলে

হানছে আঘাত হায়েনাদের দলে।

বোনটাকেও তাঁর গুলি করছে হাতে

সেই ব্যথাতে কাঁদছে দিনেরাতে।

অই যে শোনো মায়ের আহাজারি

কান্নাতে তাঁর হচ্ছে বাতাস ভারী।

চোখের সামনে শহিদ হলো ছেলে

মায়ের দুচোখ দেখছে সেদিন মেলে।

এত দুঃখ, কষ্টগুলো ঢেকে

ঈদটা করি কেমন ওদের রেখে?

এবার ঈদে পায়নি ওরা জামা

রঙিন জুতাও দেয়নি বাবা মামা।

ঈদের খাবার নেয়তো ওদের ঘরে

মনটা কাঁদে শুধুই ওদের তরে।

 

ভিন্নরকম ঈদ -উম্মে হাবিবা রাহনুমা

ভিন্নরকম ঈদ

উম্মে হাবিবা রাহনুমা

 

বছর বছর ঈদ আসে যায়

ঈদ আসে এই প্রাঙ্গনে,

দুস্থজনের মুখ কালো হয়

হৃদ-মননের ভাঙ্গনে।

বুকের মিলন বুকের সাথে

দুখের মিলন কোথায় হয়?

ঈদের খুশি পায় না যারা

ঈদ কি ওদের সঙ্গী নয়?

হাসলে আকাশ হাসত যে জন

এই ঈদে তার মন কালো,

উপায়বিহীন অশ্রুতে ঐ

চোখের কোটর ঝলকালো।

অশ্রু কোথায় অশ্রু কোথায়?

চোখ জুড়ে বয় লহুর নদ,

স্বজন হারা সায়েল যারা

বানাও তাদের প্রেমাস্পদ।

বিদ্রোহী কবিতা

ঈদের আতঙ্ক  -আব্দুল হাকিম

ঈদের আতঙ্ক

আব্দুল হাকিম

 

ঈদকে নিয়ে ইচ্ছে আছে

অনেককিছুই কিনব নিজে

মাস পেরুলেই পকেট ফাঁকা

ভাবনা তখন হবে কী যে!

ঈদের আগের কল্পনা খুব

এটা ওটা কতকিছু

ঈদটা এলেই হিসেব শেষে

দারিদ্রতা ডাকে পিছু।

মাকে দেওয়া হয়নি আমার

দুবছরও গয়না-শাড়ি

খালি হাতে কেমন করে

এবছরেও ফিরব বাড়ি ।

শার্টের কালার ফিক ধরেছে

বলছে লোকে পুরান ক্যানো?

আর কটাদিন ব্যবহারে

ধূসর হবে লুঙ্গি-প্যানও।

বাড়ির ছোট বাচ্চাগুলো

চেয়ে থাকে আনবে চাচা

আমার এদিক সিদ্ধান্ত হয়

কেমনে হবে মরা-বাঁচা।

যাওয়ার বেলায় কিছু নেবো

আম অথবা শবরী কলা ?

পকেট হাতাই কত আছে

এইকথাটা যায় না বলা।

ঈদ এলে তাই আতঙ্ক-ভয়

প্রেসার আমার হচ্ছে হাই-ই

বসে বসে ভাবনা শুধু

এ অবস্থার কে যে দায়ী?

 

ঈদ মানে -মুজাহিদুল ইসলাম স্বাধীন

ঈদ মানে

মুজাহিদুল ইসলাম স্বাধীন

.

ঈদ মানে কি দামি এবং

নতুন জামা পরা?

-ঈদের মানে কে জামাহীন

তা খুঁজে বের করা।

.

ঈদ মানে কি দামি খাবার

কোর্মা, পোলাও ভোজ?

-ঈদের মানে কে খাদ্যহীন

রাখা সেটার খোঁজ।

.

ঈদ মানে কি আনন্দ আর

ফুর্তিতে দিন ব্যয়?

-ঈদের মানে পরকে ভাবা

আপন ভাইয়ের ন্যায়।

 

প্রবাসের ঈদ -মাসুদুল ইসলাম ভূঁইয়া

প্রবাসের ঈদ

মাসুদুল ইসলাম ভূঁইয়া

 

এবার ঈদে আমি একা

আপন জনের নাই রে দেখা

তাই আসেনা নিদ

ঈদ এসেছে ঈদ

তবু আমি নয়তো দুখী

আমার তরে হলে সুখী

আপন জনের ঈদ

সেইতো আমার ঈদ।।

মায়ের আদর বাবার স্নেহ

চায় পেতে চায় নিতর দেহ

ঈদের দিনে ফিন্নি সেমাই

দেশের মতো স্বাদ নাহি পাই

সঙ্গের সাথি আছে যারা

শান্ত্বনা দেয় তখন তারা

মাঘ মাসেরই শীত

দূর প্রবাসের ঈদ।।

 

আজকে রোজার ঈদ  -আসাদ বিন হাফিজ

আজকে রোজার ঈদ

আসাদ বিন হাফিজ

 

আজ ঈদ, নাই জিদ

নাই তিত, নাই শীত

সবে মিলে গাই গীত

খুশি ভরা এই হৃদ।

আজকে রোজার ঈদ

নাই ঝগড়া, হারজিত

আজকে সকল হৃদ

খোশহালে গায় গীত।

আজকে রোজার ঈদরে

আজকে রোজার ঈদ

মুসলিম ঘরে ঘরে

আজকে নয়া উম্মীদ।

নতুন সাজে সেজেছে

সকল মসজিদ

মসজিদে যাই দলে দলে

গাইতে গাইতে গীত।

আজকে মুখে হাসি

আজকে সবাই খুশি

আজকে পাশাপাশি

আজকে ভালবাসি।

আজ নেই দাসদাসী

রাজা ফকির আসি

মন্ত্রী এবং চাষী

করে হাসাহাসি।

আজ যে দীল খোশ

পাই যে মনে জোশ

নাইরে কারো দোষ

গল্প করি বোস।

 

অন্য রকম ঈদ আনন্দ -মোঃনূরুল ইসলাম রাকিব

অন্য রকম ঈদ আনন্দে

____মোঃনূরুল ইসলাম রাকিব

.

মানব ঋণে দুঃখ বিনে

যাই হারিয়ে ঈদের দিনে

নিজ দুরত্ব রেখে,

গরীব সকল ভাইরাস ধকল

ঈদ উৎযাপন করছে নকল

এই করোনা দেখে!

.

মৃত্যুর রণে আঠাশ জনে

গতকাল কি আছে মনে

আজ খুশী তাই ফিকে?

নামাজ শেষে ক্ষমার বেশে

হাত তুলেছে বাংলাদেশে

মন প্রার্থনায় বিকে!

.

সবুর করো ধৈর্য্য ধরো

বিধি মানো নইতো মরো

এসব কথা নয়তো,

সব আক্রান্ত পরিশ্রান্ত

কি করে রই আমরা শান্ত

পাচ্ছি দুঃখ হয়তো?

.

ঈদ আনন্দে মজার ছন্দে

খেয়াল রাখো ভালো মন্দে

নয়তো ক্ষতি কারো,

গরীব দুখী থাকুক সুখী

হও সব আজ সাহায্য মূখী

দাওগো খাবার আরো!

.

আজ রবো’রে খোঁজ খবরে

সজাগ আগে নিজ হবো’রে

করতে দুখীর সেবা,

খুব অসহায় খায় বা না খায়

তাও বলে না সব নিরুপায়

আছে তাদের কে বা?

.

নজর কাড়া হৃদয় নাড়া

আর কে দিবে আল্লাহ ছাড়া

সজাগ আছেন তিনি,

প্রেমের ঋণে ঈদের দিনে

বাসুক ভালো মানব চিনে

খাবার দিলেন যিনি!

.

দিক গুরুত্ব নিজ দুরত্ব

বজায় রেখে হোক পুরত্ব

মানুক সকল মানব,

ভালো মন্দে দ্বিধা দ্বন্দ্বে

অন্য রকম ঈদ আনন্দে

হটাও মৃত্যুর দানব!

 

ঈদের ছড়া  -সাজিদুর রহমান

ঈদের ছড়া

সাজিদুর রহমান

.

বাঁকা চাঁদের ভেলায় চড়ে,

ঈদ এসেছে ঘরে ঘরে,

খুশি সবার মন!

আনন্দ আজ রাশি রাশি,

সবার মুখে মিষ্টি হাসি,

ঈদের উদযাপন!

নতুন জামা সবার গায়ে,

ভাসলো সবাই সুখের নায়ে,

এলো খুশির ঈদ!

সাজলো সবাই নতুন সাজে,

ঈদের খুশি সবার মাঝে,

নেই যে চোখে নিদ!

মেহেদীতে হাত সাজিয়ে,

বাঁশি এবং ঢোল বাজিয়ে,

শিশু, কিশোর দল!

চলছে তারা ঈদের মেলায়,

দিন কেটে যায় মজার খেলায়,

আজকে খুশির ঢল!

পাড়ার যত গরীব ধনী,

ঈদগাহে আজ সকল জনই,

মিলেমিশে এক!

খুললো সবার মনের দুয়ার,

চতুর্দিকে খুশির জোয়ার,

দেখরে চেয়ে দেখ!

 

কবিতা – ঈদ হোক দুখিদের -জয়নব জোনাকি

ঈদ হোক দুখিদের

-জয়নব জোনাকি

 

তাকওয়ার পূর্ণতা পাওয়া যায় ঈদে,

অতীতের পাপরাশি মনে এসে বিঁধে।

মাসব্যাপী সিয়ামের উপবাস শেষে –

বোঝা যায় অনাহারী গরীবের ক্ষিধে।

নেক কাজে জমিয়েছো যা এই ঈদে

করো না তা বরবাদ হানাহানি জিদে,

কালিমাখা অন্তর শুদ্ধতা পেয়ে-

আলোর আবেশ যেন বয়ে যায় হৃদে।

আজ ঈদ হোক সব দুখিদের সাথে

মুসাফাহা হবে এই হাত রেখে হাতে।

শুভেচ্ছা বিনিময়ে সুখ বেড়ে যাবে

রেষারেষি,বিদ্বেষ থাকবে না তাতে।

হাসি-খুশি মন নিয়ে ভোর বেলা ঈদে

পাঞ্জাবী পরে সবে ছোটে মাসজিদে,

আনন্দে ভেদাভেদ যায় সব ভুলে-

মেতে ওঠে একতার সুর সঙ্গীতে।

 

কবিতা – স্বৈরাচারের ঈদ -আসাদ বিন হাফিজ ঈদের কবিতা

স্বৈরাচারের ঈদ

-আসাদ বিন হাফিজ ঈদের কবিতা

হাহাকারের পোলাও রেঁধেছি, হৃদয়ের

রক্তক্ষণ দিয়ে রেধেঁছি জর্দা সেমাই,

চোখের দুধে ফিরনি পায়েস

খোকা তুই আসবি না!

তুই খুব পছন্দ করিস বলে

তোর জন্য রেধেঁছি বিলাপের গোশত,

কষ্টের নুনমাখা ভুনাখিচুড়ি, বেদনার

সালাদ

খোকা তুই আসবি না মায়ের কাছে?

কান্নার অশ্রু দিয়ে ধুয়েছি বাসন কোসন

ডাইনিং টেবিল সাজিয়ে রেখেছি

ভয়ার্ত আর্তনাদে

খোকা তুই কখন আসবি?

খোকা আমার চেতনার কোষে আঙুল রেখে

ফিসফিসিয়ে বলে, কেমন করে আসবো মা

আমি তো এবার নিজেই কোরবান হয়ে

গেছি।

তুমি কি জানো না গণতন্ত্রের মানসকন্যা

গণতন্ত্রের দোহাই দিয়ে খেয়ে ফেলেছে

তোমার ছেলে?

আমার রক্ত দিয়ে রেধেঁছে জর্দা সেমাই

চর্বি দিয়ে ফিরনি পায়েস এবং গরু ও

মহিষের বদলে

মানুষের গোশ্ত দিয়ে সেরেছে ঈদ! সাঈদীর

প্রহসনের নাটক ও ফাঁসির দন্ডাদেশের

পর সারাদেশে পাখির মত গুলি করে মেরে

ফেলেছে শত শত যুবক! শাপলা চত্ত্বরে রক্তগঙ্গা

বইয়ে দিয়েছে।

লাশ, লাশ, আর লাশ

সেই লাশের মিছিল এখন ছুটে চলেছে

জান্নাতের পথে।

মাগো, সেই মিছিলের একজন হিসাবে

আমার যে দাঁড়াবার সময়ও নেই! মা, মাগো,

তোমার চোখের আগুন যদি এখনি

স্বৈরাচারের গদি পুড়িয়ে দিতে না

পারে, তবে বাংলার সব কটি ঘরের ঈদ সে

একাই খেয়ে ফেলবে।

——

“ধূলোয় মলিন ঈদ”- জসিম বিন আখতার

“ধূলোয় মলিন ঈদ”

– জসিম বিন আখতার

বিদ্রোহী কবিতা

কতো দিন মাস বছর গেল

আমার জীবন থেকে,

এতো কঠিন যায়নি কভু

শোকের ছায়ায় ঢেকে!

ছোট্ট মণি রুহানিয়া

ডাকতো রুহি সবে,

এখন শুধুই অতীত স্মৃতি

নেই তো সে আর ভবে!

জানি আমার মা মণি টা

জান্নাতেরই পাখি,

যার বিয়োগের ব্যথায় তবু

অশ্রুসজল আঁখি!

নিত্য দিনের কাজের ফাঁকে

ভুলতে তারে চাই,

কেমনে ভুলে থাকবো তারে

ভুলার উপায় নাই!

আমার ঘরের দরোজা গুলো

রুহানিয়ার তরে,

খুলবে না আর এই দুনিয়ায়

দেখতে হৃদয় ভরে!

যেদিন গেছে সেদিন খানা

আসবে না আর ফিরে,

বাবা বলে ডাকবে না আর

আম জনতার ভিড়ে!

তেইশ ই মে দুহাজার বিশ

ঈদের দুদিন আগে,

রুহানিয়া চলে গেছে

জান্নাতী গুলবাগে!

সময় গিয়ে সময় আসে

ভাঙে কতো নিদ,

তার বিহনে শূন্য হৃদে

ধূলোয় মলিন ঈদ!

(ল্যান্ডফোর্স ইঞ্জিনিয়ার্স,

জাহরা-কুয়েত)

 

ঈদ মানে -মুস্তাফিজুর রহমান খান তাজী

ঈদ মানে

মুস্তাফিজুর রহমান খান তাজী

প্রেমের কবিতা

মজা পাই মজা খাই

আর ধরি বায়না,

যত পাই তত খাই

ঈদ মানে তাই না।

খুশি সব কলরব

আনন্দে ভেসে যায়,

দুখী আর অনাহারী

নীরবে কেঁদে সায়।

কেউ হাসে কেউ কাঁদে

এর নাম ঈদ না,

হিংসা, বিদ্বেষ, দম্ভ

থাকে যেথা ফিৎনা।

ঈদ মানে পাশে এসে

অন্যের উপকার,

দুখীজন পায় যদি

হাসিটি উপহার।

জাটিয়া,ঈশ্বরগঞ্জ, মোমেনশাহী

কবিতা

ঈদ (শিশুতোষ) -কুতুব উদ্দিন 

ঈদ (শিশুতোষ)

কুতুব উদ্দিন

 

ঈদের দিনে খুব সকালে নতুন জামা গায়ে

আতর মেখে সুরমা চোখে নতুন জুতো পায়ে।

দাঁড়িয়ে যাবো ঈদের গাহে এক কাতারে সব

সবার মনে আজকে শুধু ঈদের কলরব।।

ঈদের খুশি উদাস আমি পোষাক ঝলমল

খুশির জোয়ার সবার মনে করছি কোলাহল ।।

হঠাৎ দেখি একটা ছেলে আমারি ঠিক কাছে

ঈদের দিনে উদোম গায়ে পথে বসে আছে।।

বলছি তাকে ঈদের দিনে কাঁদছো কেনো ওরে!

বলে আমায় উপোস আমি খাইনি দুদিন ধরে।

ঈদ হাদীয়া দিয়ে সবাই বুকে মিলাই বুক

ঈদের খুশি ছড়িয়ে গেলো পেলাম বড় সুখ।।

বাবা বলেন এটাই হলো নবীর কথা কাজ

ধনী গরীব এক কাতারে করবে খুশি আজ।

সবাই যদি এমনি করে নবীর পথে চলি

ঈদের খুশি বিলিয়ে দিতে বেড়াই অলি গলি।

ছড়িয়ে যাবে ঈদের খুশি সবার ঘরে ঘরে

কান্না ভুলে হাসঁবে সবে বিশ্ব চরা চরে।

(দাম্মাম, সৌদি আরব)

 

ঈদ আছে বাবা নেই -এম. রাশেদুজ্জামান তাওহীদ

ঈদ আছে বাবা নেই

এম. রাশেদুজ্জামান তাওহীদ

কবিতা

আগের মত ঈদ আসেনা

এখন মোদের ঘরে,

আগের মত গাইনা তো গান

আমরা সমস্বরে।

আগের মত পাইনা আদর

পাইনা ভালবাসা,

যে দেবে ভাই সে বাবা মোর

স্বর্গে বাঁধেন বাসা ।

পনেরো বছর ত্রিশটি ঈদ

আসলো মোদের ঘরে,

নেই আনন্দ অশ্রু শুধু

ছিল বাবার তরে ।

বাবার জন্য দোয়া করি

স্বর্গে সে থাক সুখে,

পাথর চাপা কষ্ট মোদের

থাকনা ধরার বুকে!

কবিতা

ঈদের খুশি  -এম.হাবিব

ঈদের খুশি

এম.হাবিব

 

চাঁদ ওঠেছে রব ওঠেছে

আসছে খুশির ঈদ,

সেই খুশিতে মন মজেছে

নেইকো কারোর নিদ।

সাতসকালে গোসল সেরে

সাজবো নতুন সাজে,

ঈদের খুশি বিলিয়ে দিবো

গরীব দুঃখির মাঝে।

পিঠা পায়েস সবার ঘরে

ফিরনি সেমাই হবে,

ধনী গরীব ঈদের মাঠে

এক কাতেরেই রবে।

নামাজ শেষে খোদার কাছে

তুলবো দুটি হাত,

ঈদের খুশি বছর জুড়ে

থাকুক দিবা রাত।

কবিতা

ঈদের চাঁদ  -এম এ আশরাফ

ঈদের চাঁদ

এম এ আশরাফ

 

নীল আকাশে চাঁদ উঠেছে

শুকতারাটির পাশে

খোকন সোনা তাই না দেখে

ঈদ আনন্দে ভাসে।

সিয়াম শেষে খুশির ঢেউ

আসছে সবার ঘরে

পাতার কাছে বলছে দেখো

শিশির কণা ভোরে।

পাড়ার ছেলে করছে মজা

গায়ছে সুরে সুরে

আজকে খুশি কালকে ঈদ

দোলছে ঘুরে ঘুরে।

পরবে সবাই নতুন জামা

যাবে সে ইদগাহে

নামাজ শেষে মিলবে সবাই

কাঁধে কাঁধ রাহে।

করবে সবাই সালাম কালাম

ছোট বড় সবে

হাসি মুখে সুখে দুখে

ভালবাসা রবে।

কবিতা

ঈদের ছড়া  -আব্দুর রশিদ

ঈদের ছড়া

আব্দুর রশিদ

.

ঈদের খুশি তোমার মনে

জাগায় যখন ফাগুন,

আঁখি খুলে চেয়ে দেখো

তোমার পাশেই আগুন!

.

ঈদের খুশি তোমার মনে

দেয় যখন দোল,

সুমি-রুমি এতিম শিশুর

নাই কোন কুল!

.

ঈদের খুশি তোমার মনে

রঙ তামাশার খেল,

খবর নিয়ে দেখছো কী তা?

তোমার বন্ধুর জেল!

.

ঈদের খুশি তোমার মনে

কাপড় নামী দামী,

ঈদ আনন্দ নাইগো তাদের

জানে অন্তর্যামী!

কবিতা

ঈদ বাজার -মোঃ গোলাম মোস্তফা টুটুল

ঈদ বাজার

মোঃ গোলাম মোস্তফা টুটুল

 

প্রিয়তমা ফোন করেছে

ঈদ বাজারের জন্য

কিনতে হবে জামা কাপড়

হরেক রকম পন্য

.

বললো তিনি,

আমার জন্য আনবে কিনে

জামা জুতা শাড়ি

আনতে হবে সবচেয়ে ভালো

দাম যেন হয় ভারি।

.

কিনতে হবে কানের দুলও

হাতের দুটি বালা

বাদ দিওনা মনের ভুলেও

আমার গলার মালা।

.

কিনতে হবে মেহেদী আর

আইলানা মাশকারা

বাদ যদি হয় একটিও গো

পাবে না আশকারা

.

যা বলেছি কিনবা সবই

হয়না যেন ভুল

ভুল যদি হয় বাড়ি এলে

ছিরবো মাথার চুল।

.কবিতা

বললাম আমি মনে মনে

আসলো এ কোন যুগ

বউয়ের কথায় ভড়কে গিয়ে

বুক কাপে ধুক ধুক!

.কবিতা

ভাবছি এখন এই ঝামেলা

কেমনে করি পার

এই কি আমার প্রিয়তমা

বাম পাঁজরের হাড়?

(বিঃদ্রঃ ছড়াটা কাল্পনিক , আমার বউ এসব

কিচ্ছু বলে নাই সে খুব ভালো!)

কবিতা

সোনালী ঈদ! -আরজু আহমেদ নোমানী

সোনালী ঈদ!

আরজু আহমেদ নোমানী

 

ছোট্ট বেলার সোনালী ঈদ

হারিয়ে গেল কই,

ঈদের স্মৃতি পড়লে মনে

মনচায় ছোট হই।

ঈদের ভোরে মায়ের হাতে

খেতাম পায়েস,পুলি,

নামাজ শেষে ঈদগাহেতে

চলতো কোলাকুলি।

ঈদ সেলামি পাওয়ার আশে

ঘুরতাম পাড়াময়,

দু’এক টাকা পেলেই হত

আমার বিশ্বজয়।

বাবার হাতের আঙ্গুল ধরে

মেলায় ঘুরেফিরে,

খেলনা,খাবার নিয়ে সবাই

ফিরতাম সুখের নীড়ে।

 

ঈদ মানে -মোঃ রাকিবুল ইসলাম

ঈদ মানে

মোঃ রাকিবুল ইসলাম

কবিতা

ঈদ মানে হাসি আর খুশি শুধু নয়

ঈদ মানে মুমিনের ঈমানের জয়,

সারামাস রোজা রেখে

মালিকের প্রেম মেখে

হৃদয়ের বালুচরে বারিধারা বয়।

ঈদ মানে নয় শুধু নিজে ভালো থাকা

হৃদয়ের ক্যনভাসে আল্পনা আঁকা,

মালিকের নির্দেশে

অপরকে ভালোবেসে

ভাই ভাই একসাথে হাতে হাত রাখা।

ঈদ মানে নয় শুধু পোশাকাদি কেনা

ঈদ মানে শোধ করা মানবিক দেনা,

নিজে নিজে ভালো থাকে

অপরকে দূরে রাখে

রসুলের উম্মত কখনোই সে ‘ না।

ঈদ মানে শয়তান পেয়ে যায় ছাড়া

একে একে আমাদের করে পথহারা,

কিছুলোক পথে থেকে

আল্লাকে যায় ডেকে

ঈমানের শক্তিতে বলিয়ান তারা।

রোজাদার গুনাগুলো পেয়ে যায় মাপ

হৃদয়ের কালি যত ধুয়ে হয় সাফ,

বাকিসব পথহারা

থেকে যায় রোজা ছাড়া

ঈদ হলো তাহাদের কাছে অভিশাপ।

 

কবিতা- মহামারির ঈদে -নার্গিস নাহার রুনু

মহামারির ঈদে

নার্গিস নাহার রুনু

কবিতা

সিয়াম শেষে চাঁদটা হাসে

নীল আকাশের বুকে,

মহামারির থাবার অচল

মানুষ আছে দুখে।

বিশ্বমাঝে থমথমে ভাব

লাশের মিছিল বাড়ে,

প্রিয়জনের বিয়োগ ব্যথায়

ঘুম স্বজনের কাড়ে।

ঈদানন্দে পড়ে ভাটা

লকডাউনে বসে,

মধ্যবিত্ত ভূলুণ্ঠিত

হিসাব শুধু কষে।

দ্রব্যমূল্য আকাশ ছোঁয়া

পেটেতে টান পড়ে,

পেটের ক্ষুধা নিবারণে

প্রাণপণে যায় লড়ে।

নুন থাকেতো পান্তা ফুরায়

খাবার ও নেই ঘরে,

হয়নি কেনা নতুন পোশাক

ছেলেমেয়ের তরে।

করোনারই করাল গ্রাসে

ঈদ উঠেছে লাটে,

ঋণের বোঝায় জর্জরিত

উল্টো পথে হাটে।

এই ধরণীর মালিক যিনি

দাবী যে তাঁর কাছে,

দাও ফিরিয়ে আগের জীবন

মামুষ যেন বাঁচে।

কবিতা

বেরোজদারের ঈদ -মুস্তাকীম বিল্লাহ

বেরোজদারের ঈদ

–মুস্তাকীম বিল্লাহ

 

ঈদের খুশি

হৃদের ভেতর

উপচে পরে,

রয়নি রোজা

বুঝবে সেজন

কেমন করে!

,,

পরুক সেজন

অনেক দামি

পোশাক গায়ে,

অঙ্গরাগে

আসে কী সুখ

মনের নায়ে!

,,

ছোট্ট শিশুর

রোজা পালন

ওকে লাজে!

ভোজনপটু

সবি বুঝে

মানে না যে।

,,

বেরোজদারের

ঈদের মাঠে

যাওয়া মানা,

এই অপমান

করছে রাসূল

ষোলআনা।

 

সবার ঈদ-(শিশুতোষ ছড়া) -জয়নব জোনাকি

সবার ঈদ-(শিশুতোষ ছড়া)

-জয়নব জোনাকি

কবিতা

তিরিশ রোজার পরে এলো

খুশির ঈদুল ফিতর,

রাখবো না আর খুশির দিনে

হিংসা মনের ভিতর।

নেই ভেদাভেদ ধনী গরীব

আনন্দের এই দিনে,

দুঃখীর মুখে হাসি ফোটাও

নতুন জামা কিনে।

চলো সবাই ঈদগাহে যাই

লাগিয়ে সুরমা আতর,

আজ যেন হই অসহায়ের

দুঃখ ব্যথায় কাতর।

ঈদের নামাজ পড়তে যাবো

সবাই মিলে মিশে,

রাজা প্রজা সবাই মিলে

এক কাতারে এসে।

কররে সবাই কোলাকুলি

মিষ্টি হাসি হেসে।

রাখবো এ হাত হাতে হাতে

সুখের স্রোতে ভেসে।

 

আবদার -মাসুদুল ইসলাম ভূঁইয়া

আবদার

মাসুদুল ইসলাম ভূঁইয়া

কবিতা

ছেলেমেয়ে

বাবা তুমি এদিক আসো মিষ্টি করে একটু হাসো

কিছু কথা কই,

রমাদান যে যাচ্ছে চলে ঈদ আনন্দ আসবে বলে

অপেক্ষাতে রই।

বাবা

বলবি কিরে তাড়াতাড়ি চালাই আমি ভাড়াগাড়ি

জানিস তোরা সব,

কবে জানি টাকা হবে আমার একটা গাড়ি রবে

করবে দয়া রব।

ছেলেমেয়ে

পাঞ্জাবি আর নতুন জামা এবার এনে দেয়নি মামা

বাবা শুনে যাও,

বসে আছি বায়না ধরে ঈদের বোনাস দুহাত ভরে

দাও আমাদের দাও।

বাবা

চলছে এবার বিষণ খরা তোদের মামার মনটা মরা

চাকরিটা আর নেই,

বাবার কথা জানিস সবই খরচা আনতে কষ্ট খুবই

ক্যামনে টাকা দেই।

ছেলেমেয়ে

গতবারো এমনি করে লকডাউনের দোহাই ধরে

কিছুই দিলে না,

আবার ও তো একই খবর আর কত দিন ধরবো সবর

মন তো মানে না।

বাবা

ফুল ফসলে ভরে উঠুক অভাব কেটে হাসি ফুটুক

আসুক নতুন সাজ,

নতুন জামা দেবো তোদের আগামী ঈদ হোক আনন্দের

দো’আ করি আজ।

[gs-fb-comments]

 

 

Leave a Reply