কতিপয় আলেম নামের জালেমরা সাবধান!!
পবিত্র কুরআন শুধু মুসলিমদের সম্পদ নয়। পৃথিবীতে কুরআন এসেছে দল মত ধর্ম বর্ণ নির্বিশেষে সমগ্র বিশ্ববাসীর মুক্তির সনদ তথা হেদায়েতের আলো হিসেবে। তাই কুরআনে মুসলমানদের মতো অন্যান্য ধর্মের সব মানুষের ১০০% অধিকার আছে। কুরআন তাদেরও মহা মূল্যবান ধর্ম গ্রন্হ।
অথচ দুঃখজনক হলেও সত্য যে, আমাদের কিছু ধর্মান্ধ আলেম নামের জালেমরা কুরআনে শুধু নিজেদেরই একচেটিয়া অধিকার মনে করে। অন্যান্য ধর্মের লোকদের অনুবাদসহ কুরআন বুঝে পড়ার জন্যে উৎসাহ দেয় না! এমনকি কোনো জেনারেল লাইনের শিক্ষিত লোকও যখন কুরআনের স্টাডি-গবেষণা করে পান্ডিত্যের সাথে জনপ্রিয় হয়ে যান তখন সেই কতিপয় আলেম নামের জালেমদের যেনো মাথার চাঁদি গরম হয়ে যায়! এ জাতীয় মুনাফেকগুলো আবার হক্কানি আলেম যাঁরা আল্লাহর জমিনে আল্লাহর শাসনরুপি ফরজ দায়িত্ব পালন করতে চায় তাঁদের বিরুদ্ধে লেগে গিয়ে তলে তলে তাগুতের পায়ে পানি ঢালে! জেনারেল লাইনের কিছু শিক্ষিত লোকদের ধর্মীয় জ্ঞানের পান্ডিত্য ও বাগ্মি শক্তির জাদুকরি আকর্ষণে উচ্চ শিক্ষিত শ্রোতারা আশাতীতভাবে আকৃষ্ট হচ্ছে! তাতে তারা নিজেদের জনপ্রিয়তা ধীরে ধীরে শূন্যের কোঠায় চলে যাবে ভেবে নিদারুণ ঈর্ষান্বিত হয়ে তাঁদের পেছনে লেগে যায়! গীবত, সমালোচনা, গাল মন্দ করতে থাকে!
আরও পড়তে পারেন–মাওলানা মওদূদী(রঃ)-কে নিয়ে বিতর্কের কারণ
আর তাদের একটা কমন বুলি থাকে যে,কুরআনের আলোচনা করতে হলে আলেম হতে হবে এবং ১৮ থেকে অধিক বিষয়ে জ্ঞান থাকতে হবে। আমার কথা হলো জেনারেল লাইনের লোকেরা যেখানে গবেষণার মাধ্যমে জ্ঞানার্জনের জন্যে দুঃসাহসিক অভিযানে রকেটে চড়ে মহাশূন্যের গ্রহ থেকে গ্রহান্তরে ঘুরে বেড়ায় ইচ্ছে করলে তাঁদের জন্যে কুরআন বোঝার বিষয়গুলো আয়ত্ত করা কি তেমন কঠিন কিছু ?
যুক্তির খাতিরে ধরে নিলাম, যদি কঠিন কিছু হয়েও থাকে তাহলে যারা এ সব বিষয় জেনে কুরআনের তাফসির লিখেছেন জেনারেল লাইনের লোকেরা তো সেটাই পড়ে তাদের কথাগুলো অবিকল প্রচার করেন, তাই না? তাতে যদি তাঁদের বক্তব্য ভুল বা অপব্যাখ্যা বলা হয় তাহলে সেটা তো সেই কুরআনের মুফাচ্ছের সাহেবেরই তাফসিরের ভুল বা অপব্যাখ্যার ফসল হবে! সে ক্ষেত্রে জেনারেল লাইনের সেই ব্যক্তির পিছু লাগাটা আত্মঘাতি বিষয় বৈ কিছু নয়! আবার কেউ কেউ বলে মাদ্রাসায় না পড়লে কিংবা মাদ্রাসার ডিগ্রি ছাড়া আলেম হওয়া যায় না। সেটিও দুর্বল যুক্তি। কারণ আলেম মানে যদি বিশেষতঃ ‘ধর্মীয় জ্ঞানী ব্যক্তি’ বুঝায় তাহলে ধর্মীয় জ্ঞানার্জনের অদম্য আগ্রহ থাকলে কি বাসায় টিচার রেখে কিংবা ব্যক্তিগতভাবে স্টাডি গবেষণা করে ধর্মীয় বিষয়ে পান্ডিত্য অর্জন করলে তাঁকে আলেম বলা যাবে না?
মনে রাখতে হবে এক জন জেনারেল লাইনের শিক্ষিত লোকও ধর্মের যেটুকু অংশের স্টাডি গবেষণা করে জ্ঞানার্জন করেন তাঁকে সেটুকু অংশের জন্যে আলেম বলা যাবে। যদি জেনারেল লাইনের লোকদের দ্বারা ধর্মীয় জ্ঞানে পান্ডিত্য অর্জন করা অসম্ভব কিছু হতো তবে ডাঃ জাকির নায়েকের মতো একজন জেনারেল লাইনের ডাক্তার মানুষ সব ধর্মের গুরুসহ বিশ্বের উঁচুস্তরের জ্ঞানী গুণী বিজ্ঞানী দার্শনিকদের কাছে জনপ্রিয় বক্তা হতেন না! পক্ষান্তরে আমাদের সেই কতিপয় আলেম নামের জালেমদের ওয়াজ শুনতে কারা যায়? কিছু রিক্সা, ভ্যান, ঠেলাওয়ালা, বাদাম বিক্রেতা জাতীয় অল্প শিক্ষিত কিংবা অশিক্ষিতরাই যায়।
তাদের অনেকে আবার ওয়াজ শেষে কিছু বিরিয়ানি পাওয়ার আশায় ভিড় জমায়! তাদের কাছে ধর্মের সঠিক ব্যাখ্যা অপব্যাখ্যা বুঝবার জ্ঞান নেই। তারা এ বিষয়ে অন্ধ। তারা ভাবে হুজুর যা বলে তা-ই মহা সত্য। এ ছাড়া দর্শনে অনার্স মাস্টার্স আবু ত্বহা বিন আদনান তো ধর্মীয় আলোচনায় শত সহস্র আলেমকেও পেছনে ফেলে সুধী মহলে জনপ্রিয় হয়ে ওঠেছেন। নিচে তাঁদের ছবি দিলাম।
এ ছাড়া জেনারেল লাইনের আরো অনেকেই থাকতে পারেন। তাহলে আমাদের আর বুঝতে বাকি রইলো না যে, কতিপয় আলেম রুপি জালেম জেনারেল লাইনের লোকদের ধর্মীয় পান্ডিত্যে শুধু ঈর্ষান্বিত হয়েই তাঁদের বিরুদ্ধে ওঠে পড়ে লেগে থাকে। অথচ তাদের উচিৎ ছিল জেনারেল কেউ যদি ধর্মীয় লাইনে পান্ডিত্য অর্জন করেন তবে তাঁদের প্রশংসা করা, উৎসাহ উদ্দীপনা দেয়া!
মসজিদের ইমাম খতিবদের উচিৎ ছিল জেনারেল লাইনের সবাইকে প্রতি দিন কুরআন অর্থসহ বুঝে পড়ার পরামর্শ দেয়া । কারণ পৃথিবীতে কুরআন এসেছে কুরআন বুঝে পড়া এবং কুরআন দিয়ে বক্তি জীবন, পারিবারিক জীবন ও রাষ্ট্রীয় জীবন গড়ে তোলার জন্যে ! তারা সেই পরামর্শ দেয় না! কারণ তারা হয়তো ভাবে তাতে তাদের ভাত মরে যাবে! আওয়ামরা তখন আলেমদের আলোচনার ভুল ধরতে পারবে! এমনকি তাদের চেয়েও ধর্মীয় আলোচনায় বেশি জনপ্রিয় হয়ে যেতে পারে! আল্লাহ আমাদের সবার অন্তর থেকে হিংসা বিদ্বেষ দূরীভূত করে দিয়ে আমাদের সবাইকে দ্বীনের সহীহ বুঝ দিন-আমিন !!