জ্বর, সর্দি, কাশি, গলাব্যাথা, ইত্যাদি সমস্যাগুলো অতি সাধারণ মনে হলেও পরবর্তীতে এইসব সমস্যা কঠিন বা জটিল আকার ধারণ করে সমস্যা অন্যদিকে মোড় নিতে পারে। কখনও কখনও মৃত্যুরও কারণ হতে পারে। তাই প্রাথমিক অবস্থাতেই নিজেকে এবং পরবারের অন্যান্য সদস্যদের গুরুত্ব দিয়ে এ থেকে পরিত্রাণের জন্য নেওয়া উচিত বিভিন্ন ধরণের পদক্ষেপ।
রোগের জীবাণু গলা থেকে সপ্তাহ খানিকের মধ্যে যদি ফুসফুসে প্রবেশ করে তাহলে শুরু হয়ে যেতে পারে শ্বাসকষ্ট। তাই গলাতেই ভাইরাসের জীবাণু মেরে ফেলা অত্যন্ত আবশ্যক। এক্ষেত্রে নিচের পদক্ষেপগুলো গ্রহণ করলে ইনশাআল্লাহ উপকৃত হবেন। সর্দি থেকে মুক্তির উপায়
গরম চা
এইসব ক্ষেত্রে গরম গরম বড় এক কাপ চা সকাল বিকাল পান করলে বেশ উপকার পাওয়া যায়। এই চা তৈরি করতে ব্যবহার করা যেতে পারে আদা, লবঙ্গ, এলাচ, পুদিনা পাতা, চাপাতি, লেবু ইত্যাদি। তবে সবগুলোই এক কাপ চায়ে দিতে হবে এমনটা নয়। যোগ করুন আপনার পছন্দমত আইটেম আর প্রতিদিন অবহেলা না করে অবশ্যই পান করুন। কারো জ্বর হলে তাকে সহ পরিবারের অন্যান্য সদস্যদেরও পান করতে দিন এই চা কারণ রোগের জীবাণু পরিবাহিত হতে পারে একজন হতে অন্য জনের শরীরেও। তাই আগে থেকেই সাবধানতা অবলম্বন করতে হবে। ডেঙ্গু জ্বরের লক্ষণ
গরম পানি
ঠাণ্ডা খাবার ও ঠাণ্ডা পানি এড়িয়ে চলুন আর শরীরে প্রবেশকৃত ভাইরাসের জীবাণুকে ধ্বংস করতে যথেষ্ট পরিমাণে গরম পানি পান করুন। এছাড়াও লবণ গরম পানি দিয়ে গড়গড়া করুন আর গরম পানির ভাপ নিন। ইনশাআল্লাহ আপনার শরীরে জীবাণু বংশ বিস্তারের পরিবেশ পাবে না এবং ধ্বংস হয়ে যাবে। জ্বর কমানোর ঘরোয়া উপায়
মালটা/কমলা
একটি মালটা মাঝ বরাবর কেটে হাত বা মালটার জুস তৈরির মেশিনে এর জুসটুকু বের করে একটা গ্লাসে নিন। এরসঙ্গে গ্লাসের বাকি অংশে গরম পানি যোগ করুন আর সেই সঙ্গে এক চিমটি লবণ ও চিনি যোগ করুন আর খেতে দিন রোগীকে। আর এভাবে জুস করার সময় ও সুযোগ না হলেও কেটে বা ছিলে খেলেও উপকৃত হবেন। জ্বরের সময় বা পরবর্তীতে মুখের রুচি ফিরিয়ে আনতে এবং জীবাণুর বিরুদ্ধে যুদ্ধে মালটা/কমলা অত্যন্ত শক্তিশালী ভূমিকা পালন করতে পারে। সর্দি থেকে মুক্তির উপায়
ডালিম/বেদানা:
জীবাণু ধ্বংসে এবং শরীরে রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি করতে ডালিম বা বেদানা অত্যন্ত কার্যকরী একটি ফল। ডালিমের কোয়া খুলে জুস তৈরি করে খেতে পারেন অথবা এমনিতেও খাওয়া যায়। ডালিমের ভেতরের সাদা অংশও বেশ উপকারী যদিও হালকা বিস্বাদের লাগতে পারে। কিন্তু ডালিমের কোয়ার সঙ্গে সঙ্গে এই সাদা অংশও যদি সামান্য খেতে পারেন তবে দ্রুত ভালো ফলাফল পাওয়া যায়।
আরও পড়ুন— শিশুর খাবারে অরুচি – কেন শিশু খেতে চায় না করনীয় কী?
অন্যান্য টকফল:
জামবুরা, জলপাই,লেবু ইত্যাদি টক জাতীয় ফল খেলে বেশ উপকার পাওয়া যায়। খাবারের সময় লেবুর ব্যবহার অত্যন্ত উপকারী। জামবুরা লবণ, চিনি, কাঁচা মরিচ ইত্যাদি যোগে খেলে মুখরোচক হয় অথবা এমনিতেও খাওয়া যেতে পারে। এইসব টক জাতীয় ফলমূল শুধু যে জ্বরের মহৌষধ তা নয়; এগুলো খেলে মুখ, ঠোঁট বা অন্যান্য স্থানের ঘা অতিদ্রুত শুকিয়ে যায় এবং খাবারের রুচি বৃদ্ধি পায়। কাশি হলে করনীয়
কালোজিরা:
কালোজিরা একটি মহৌষধ। জীবাণুর বিরুদ্ধে লড়াইয়ে দরকার রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি করা আর সেক্ষেত্রে কালোজিরা অত্যন্ত উপকারী। সবজি, মাছ , মাংস ইত্যাদি রান্নার সময় এক চা চামচ কালোজিরা ও চারভাগের এক চা চামচ মেথি তেলে টেলে রান্না করলে সেটা যেমন খাবারে আনতে পারে ভিন্নমাত্রা আর সেই সঙ্গে বৃদ্ধি করতে পারে পুষ্টিগত মান।
সরিষা অথবা অলিভ অয়েল:
রান্নার জন্য সয়াবিনের পরিবর্তে সরিষা অথবা অলিভ অয়েল ব্যবহার করুন বা এই দুই প্রকারের তেল একত্রে মিশিয়ে নিন আর রান্নার সময় ব্যবহার করুন। সয়াবিনের চেয়ে এই তেল দুটি বেশ স্বাস্থ্যকর। কাশি হলে করনীয়
আদা কুচি, লবঙ্গ, গোলমরিচ:
অনেক সময় জ্বর হলে ভাইরাস ঢুকে মুখটা বিস্বাদ করে দেয়। এতে খাবারের রুচি কমে যায় এবং স্বাদও কমে যায়। এই সমস্যাগুলো দূর করতে হলে মুখে আদা কুচি করে লবণ দিয়ে খাওয়া যায় অথবা খেতে পারেন গোলমরিচ কিম্বা লবঙ্গ। এই খাবারগুলোর ঝাঁঝে ভাইরাসের বংশ বিস্তারও ব্যহত হবে এবং ধ্বংস হয়ে যাবে।
আরও পড়ুন–কাঠ বাদাম । কাজু বাদাম । পেস্তা বাদাম । চিনা বাদাম এর উপকারিতা
প্যারাসিটামল:
জ্বর, ঠাণ্ডা ইত্যাদি উপশম করতে প্যারাসিটামল অত্যন্ত কার্যকরী একটি ঔষধ। কাশি হলে করনীয়
কাশির সিরাপ:
অতিরিক্ত কাশি হলে অবহেলা করে সেই কাশি নিয়ে বসে থাকবেন না; সিরাপ সেবন করুন ডাক্তারের পরামর্শ নিয়ে। কাশি দূর করার উপায়
অসুস্থ হলে খাবারের রুচি ও স্বাদ কমে যায়। কিন্তু তারপরেও শরীরে জীবাণুর বিরুদ্ধে লড়াইয়ে শক্তিশালী হতে খেতে হবে পুষ্টিকর খাবার দাবার যেমন দুধ, ডিম, মাছ, মাংস, শাকসবজি ইত্যাদি। একসাথে অনেকখানি বা পর্যাপ্ত খেতে না পারলেও বারবার করে অল্প অল্প করে খেতে হবে আর এক্ষেত্রে রোগীর পরিবারের সদস্যদের তার প্রতি অধিক যত্নশীল হওয়া উচিত আর সেইসঙ্গে কিছুটা দূরত্ব বজায় রাখতে হবে কারণ মানুষ আপন কিন্তু রোগ আপন নয়।
আবার অযত্ন আর অবহেলায় রোগীকে রাখলে তার সুস্থ হতে সময় লাগবে এমনকি আপনি হারাতে পারেন আপনার প্রিয়জনকে। তাই ব্যবধান বজায় রাখুন কিন্তু যত্ন যেন কম না হয় এবং অনুপ্রেরণা প্রদান করুন আর সেই সঙ্গে নিজেও চা, গরম পানি ইত্যাদি খাবেন কারণ সাবধানতা অবলম্বন করার পরও জীবাণু আপনাকেও আক্রান্ত করতে পারে আর সেইসঙ্গে পরিবারের সবার দিকেই খেয়াল রাখতে হবে। দোয়া করুন মহান প্রতিপালকের কাছে সুস্থতার জন্য যিনি মহাবিশ্বের সৃষ্টিকর্তা।
শেষ কথা: পোস্টটি আপনাদের কল্যাণের জন্য লেখা। যদি ভালো লেগে থাকে তবে প্লিজ শেয়ার করুন আর জানিয়ে দিন আপনার আত্মীয় স্বজন, বন্ধু বান্ধব ,প্রিয়জনদের মাঝে। হতে পারে আপনার একটি শেয়ারে উপকৃত হতে পারে অনেক মানুষ আর এজন্য ভালো কাজে অংশগ্রহণের পারসেনটিজ আপনি অবশ্যই পাবেন ইনশাআল্লাহ।
ভাইরাস জ্বর হলে করণীয়
– ফাতেমা জাহান লুবনা জ্বর সর্দি কাশি গলাব্যাথা , জ্বর সর্দি কাশি গলাব্যাথা, জ্বর সর্দি কাশি গলাব্যাথা